|
IT IS HOT NEWS. Some information and news unknown to everyone. Which is only possible in F S S T S T L. SO keeps watching and keeps telling others.
শুক্রবার, ১৩ এপ্রিল, ২০১২
৬শ’ সন্তানের পিতা!
মঙ্গলবার, ৩ এপ্রিল, ২০১২
সু ব ন্ধু স মী পে ষু
মস্যার কথা জানাতে পারেন।
সমস্যাটা আমার বোনের। আমার বোনের স্বামী সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং মানুষ হিসেবেও তার অনেক সুনাম আছে। আমার বোন এবং তার স্বামী এত সুখী ছিল যে আমরা ও আমাদের আত্মীয়স্বজন সবাই তাদের উদাহরণ হিসেবে নিতাম।
কয়েক মাস আগে আমার বোন বুঝতে পারে যে তার স্বামী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। প্রথমে সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারেনি। আমরা দুলাভাইয়ের মুঠোফোনের কললিস্ট দেখে চমকে যাই। একটা নম্বর থেকে কয়েক শ এসএমএস এবং ফোন এসেছে। বোনের স্বামীর মুঠোফোন থেকেও বেশ কিছু ফোন ও এসএমএস গিয়েছে। সেই নম্বরে খোঁজ নিয়ে ঠিকানা বের করে জানতে পারি, সে মেয়ে বিবাহিত, একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করে। তার সাত-আট বছরের একটি মেয়েও আছে।
মেয়েটির স্বামী বিদেশে থাকে এবং স্বামীর সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব খারাপ—এই অজুহাতে সে সবার সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করে।
আমার বোন ওর একমাত্র মেয়ে নিয়ে আমাদের কাছে চলে এসেছে এবং মানসিকভাবে এমন ভেঙে পড়েছে।সে কোনোভাবেই স্বামীর সংসারে যেতে চাইছে না। যদিও ওর স্বামী খুব অনুতপ্ত এবং লজ্জিত। এখন আমাদের কী করা উচিত? ওই মেয়েটির স্বামীকে কি সব জানানো উচিত, নাকি মেয়েটির অফিসে বিষয়টি জানানো উচিত?
সেতু
বনানী, ঢাকা।
দুটো সংসার। একটা আপনার বোনের, আরেকটা সংসার বা বলয় সেই মেয়েটির। যার সঙ্গে আপনার বোনের স্বামী জড়িয়ে পড়েছিলেন।
আপনাদের দায়িত্ব আপনার বোনের প্রতি। তার স্বামী যদি অনুতপ্ত হন এবং বিভিন্নভাবে সেটা প্রকাশ পায়, একসময় না একসময় আপনার বোনের মনে বিশ্বাস আসবে। হয়তো আবার সে সংসারে ফিরে যাবে। কেউ-ই চায় না সমাজে বা সংসারে ভারসাম্য নষ্ট হোক। আপনাদের উচিত হবে, আপনার বোন এবং তার স্বামীর সম্পর্ক যাতে আবার জোড়া লাগে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া।
আর অন্য মেয়েটির ব্যাপারে আপনারা কতটুকুই বা করতে পারবেন। ফোন কোম্পানি থেকে বের করতে পারেন সে কত জায়গায় সম্পর্ক তৈরি করেছে। তার পর?
দোষারোপ করে, রিপোর্ট করে এ ধরনের সমস্যা সমাধান করা যায় না বলেই আমার বিশ্বাস।
আমার বয়স ২২ বছর। ২০০৯ সালে আমার একটা ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক হয়। আমি তখন খুব আবেগপ্রবণ ছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে তার আচরণে বুঝতে পারি, আমার প্রতি তার কোনো শ্রদ্ধা বা সম্মানবোধ নেই। তার আচার-আচরণে আমি খুব কষ্ট পেতাম। আমার এ কষ্টগুলো তার এক বন্ধুর সঙ্গে ভাগ করতাম। একসময় সিদ্ধান্ত নিই, আমি আমার প্রেমিকের কাছ থেকে দূরে সরে যাব। এ সময় তার বন্ধুর সঙ্গে আমার খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়। দূরে সরে আসায় আমার প্রেমিক পাগলের মতো হয়ে যায়। ফলে আমাদের সম্পর্ক আবার জোড়া লাগে। কিন্তু সে আমাকে সন্দেহ ও অবিশ্বাস করতে শুরু করে। আমার প্রেমিকের একটাই কথা, তার বন্ধুকে ত্যাগ করতেই হবে। তার বন্ধুর সঙ্গে তার সম্পর্ক এখন খুব খারাপ। তার বন্ধু আমাকে অনেক সম্মান ও শ্রদ্ধা করে এবং সে আমার অনেক ভালো বন্ধু। তাকে ত্যাগ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি আমার প্রেমিকের ভালোবাসাকেও অনেক শ্রদ্ধা করতে থাকি। এখন আমি কী করব?
তাসিন, নারায়ণগঞ্জ।
তুমি একটু নিজেকে সত্যি করে প্রশ্ন করো যে তোমার প্রেমিকের বন্ধুর ওপর নির্ভরশীল হয়ে গেছ কি না। যদি বন্ধুর সঙ্গে সে রকমই নির্ভরশীলতার সম্পর্ক হয়, তবে আমি মনে করি, প্রথম পর্যায়ে তোমার প্রেমিকের সঙ্গে তোমার যে সম্পর্কের জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা থেকে নিস্তার পেতে তুমি এ বন্ধুকে বেছে নিয়েছিলে। যে সম্পর্ক তোমার প্রেমিকের সঙ্গে, সেটা আবার জোড়া লেগেছে একমাত্র এই বন্ধু পাশে আছে বলেই। আমি মনে করি, তোমার এ পর্যায়ে একটা ব্রেকের প্রয়োজন। তুমি দুজনের কাছ থেকেই সরে এসো। এতে তুমি নিজেকে নতুন করে চিনতে পারবে। তোমার মধ্যে যে দ্বন্দ্ব কাজ করছে, সেটার একটা সমাধান হবে।
আমি আমার পরিবারের সবার ছোট। ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছি। আমার একজন বড় ভাই আছেন। তিনি বিবাহিত। কিছুদিন আগে আমার ভাইয়ের শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে। তখন আমার পরীক্ষা ছিল। উল্লেখ্য, ভাইয়া ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ভাবি আমাকে সব কথা বলেন। তাঁর মাঝে মাতৃত্বের একটা চরম আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়, তখন আমরা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। ভাইয়া সবকিছু জানেন। তাঁর সমস্যার কারণে তিনি আমাদের অনুমতি দিয়েছেন এই শারীরিক সম্পর্কের জন্য। এখন ভাবি সন্তানসম্ভবা। আমার ভাইয়া এবং ভাবি দুজনই অনেক খুশি এই সন্তানের জন্য। কিন্তু আমার কেমন যেন ভয়ংকর অনুভূতি সৃষ্টি হয় এবং পড়ালেখায় ঠিকমতো মন বসে না। আমি এখন কী করলে সমস্যার সমাধান হবে?
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
ঘটনাটি তোমার জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এ রকম ঘটে, আমি শুনেছি, উন্নত দেশে। কোনো দম্পতি হয়তো স্বাভাবিকভাবে সন্তান ধারণ করতে পারছে না। স্বামীর শুক্রাণু এবং স্ত্রীর ডিম্বাণু নিয়ে তা আরেকজন নারীর গর্ভে স্থাপন করা হয়। সাধারণত এই নারীর সঙ্গে এই স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক থাকে না। একটা দূরত্বেই সন্তানসম্ভবা মহিলা সন্তান ধারণ করেন এবং প্রসবের পর শিশুটি সেই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। আমি শুনেছি, এত দূরত্ব সত্ত্বেও যে ‘বায়োলজিক্যাল মাদার’ তার মধ্যে একটা আবেগের চাপ তৈরি হয়। তবে তোমার বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। এ জটিল মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তুমি অবশ্যই কোনো কাউন্সেলার-সাইকোলজিস্ট কিংবা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের সাহায্য নেবে। মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য নেওয়াটা জরুরি।
সমস্যাটা আমার বোনের। আমার বোনের স্বামী সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং মানুষ হিসেবেও তার অনেক সুনাম আছে। আমার বোন এবং তার স্বামী এত সুখী ছিল যে আমরা ও আমাদের আত্মীয়স্বজন সবাই তাদের উদাহরণ হিসেবে নিতাম।
কয়েক মাস আগে আমার বোন বুঝতে পারে যে তার স্বামী বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছে। প্রথমে সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারেনি। আমরা দুলাভাইয়ের মুঠোফোনের কললিস্ট দেখে চমকে যাই। একটা নম্বর থেকে কয়েক শ এসএমএস এবং ফোন এসেছে। বোনের স্বামীর মুঠোফোন থেকেও বেশ কিছু ফোন ও এসএমএস গিয়েছে। সেই নম্বরে খোঁজ নিয়ে ঠিকানা বের করে জানতে পারি, সে মেয়ে বিবাহিত, একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করে। তার সাত-আট বছরের একটি মেয়েও আছে।
মেয়েটির স্বামী বিদেশে থাকে এবং স্বামীর সঙ্গে তার সম্পর্ক খুব খারাপ—এই অজুহাতে সে সবার সমবেদনা পাওয়ার চেষ্টা করে।
আমার বোন ওর একমাত্র মেয়ে নিয়ে আমাদের কাছে চলে এসেছে এবং মানসিকভাবে এমন ভেঙে পড়েছে।সে কোনোভাবেই স্বামীর সংসারে যেতে চাইছে না। যদিও ওর স্বামী খুব অনুতপ্ত এবং লজ্জিত। এখন আমাদের কী করা উচিত? ওই মেয়েটির স্বামীকে কি সব জানানো উচিত, নাকি মেয়েটির অফিসে বিষয়টি জানানো উচিত?
সেতু
বনানী, ঢাকা।
দুটো সংসার। একটা আপনার বোনের, আরেকটা সংসার বা বলয় সেই মেয়েটির। যার সঙ্গে আপনার বোনের স্বামী জড়িয়ে পড়েছিলেন।
আপনাদের দায়িত্ব আপনার বোনের প্রতি। তার স্বামী যদি অনুতপ্ত হন এবং বিভিন্নভাবে সেটা প্রকাশ পায়, একসময় না একসময় আপনার বোনের মনে বিশ্বাস আসবে। হয়তো আবার সে সংসারে ফিরে যাবে। কেউ-ই চায় না সমাজে বা সংসারে ভারসাম্য নষ্ট হোক। আপনাদের উচিত হবে, আপনার বোন এবং তার স্বামীর সম্পর্ক যাতে আবার জোড়া লাগে, সেদিকে মনোযোগ দেওয়া।
আর অন্য মেয়েটির ব্যাপারে আপনারা কতটুকুই বা করতে পারবেন। ফোন কোম্পানি থেকে বের করতে পারেন সে কত জায়গায় সম্পর্ক তৈরি করেছে। তার পর?
দোষারোপ করে, রিপোর্ট করে এ ধরনের সমস্যা সমাধান করা যায় না বলেই আমার বিশ্বাস।
আমার বয়স ২২ বছর। ২০০৯ সালে আমার একটা ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক হয়। আমি তখন খুব আবেগপ্রবণ ছিলাম। কিন্তু ধীরে ধীরে তার আচরণে বুঝতে পারি, আমার প্রতি তার কোনো শ্রদ্ধা বা সম্মানবোধ নেই। তার আচার-আচরণে আমি খুব কষ্ট পেতাম। আমার এ কষ্টগুলো তার এক বন্ধুর সঙ্গে ভাগ করতাম। একসময় সিদ্ধান্ত নিই, আমি আমার প্রেমিকের কাছ থেকে দূরে সরে যাব। এ সময় তার বন্ধুর সঙ্গে আমার খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়। দূরে সরে আসায় আমার প্রেমিক পাগলের মতো হয়ে যায়। ফলে আমাদের সম্পর্ক আবার জোড়া লাগে। কিন্তু সে আমাকে সন্দেহ ও অবিশ্বাস করতে শুরু করে। আমার প্রেমিকের একটাই কথা, তার বন্ধুকে ত্যাগ করতেই হবে। তার বন্ধুর সঙ্গে তার সম্পর্ক এখন খুব খারাপ। তার বন্ধু আমাকে অনেক সম্মান ও শ্রদ্ধা করে এবং সে আমার অনেক ভালো বন্ধু। তাকে ত্যাগ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি আমার প্রেমিকের ভালোবাসাকেও অনেক শ্রদ্ধা করতে থাকি। এখন আমি কী করব?
তাসিন, নারায়ণগঞ্জ।
তুমি একটু নিজেকে সত্যি করে প্রশ্ন করো যে তোমার প্রেমিকের বন্ধুর ওপর নির্ভরশীল হয়ে গেছ কি না। যদি বন্ধুর সঙ্গে সে রকমই নির্ভরশীলতার সম্পর্ক হয়, তবে আমি মনে করি, প্রথম পর্যায়ে তোমার প্রেমিকের সঙ্গে তোমার যে সম্পর্কের জটিলতা তৈরি হয়েছিল, তা থেকে নিস্তার পেতে তুমি এ বন্ধুকে বেছে নিয়েছিলে। যে সম্পর্ক তোমার প্রেমিকের সঙ্গে, সেটা আবার জোড়া লেগেছে একমাত্র এই বন্ধু পাশে আছে বলেই। আমি মনে করি, তোমার এ পর্যায়ে একটা ব্রেকের প্রয়োজন। তুমি দুজনের কাছ থেকেই সরে এসো। এতে তুমি নিজেকে নতুন করে চিনতে পারবে। তোমার মধ্যে যে দ্বন্দ্ব কাজ করছে, সেটার একটা সমাধান হবে।
আমি আমার পরিবারের সবার ছোট। ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজে স্নাতক (সম্মান) দ্বিতীয় বর্ষে পড়ছি। আমার একজন বড় ভাই আছেন। তিনি বিবাহিত। কিছুদিন আগে আমার ভাইয়ের শারীরিক সমস্যা ধরা পড়ে। তখন আমার পরীক্ষা ছিল। উল্লেখ্য, ভাইয়া ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। ভাবি আমাকে সব কথা বলেন। তাঁর মাঝে মাতৃত্বের একটা চরম আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়, তখন আমরা শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। ভাইয়া সবকিছু জানেন। তাঁর সমস্যার কারণে তিনি আমাদের অনুমতি দিয়েছেন এই শারীরিক সম্পর্কের জন্য। এখন ভাবি সন্তানসম্ভবা। আমার ভাইয়া এবং ভাবি দুজনই অনেক খুশি এই সন্তানের জন্য। কিন্তু আমার কেমন যেন ভয়ংকর অনুভূতি সৃষ্টি হয় এবং পড়ালেখায় ঠিকমতো মন বসে না। আমি এখন কী করলে সমস্যার সমাধান হবে?
নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক।
ঘটনাটি তোমার জন্য খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এ রকম ঘটে, আমি শুনেছি, উন্নত দেশে। কোনো দম্পতি হয়তো স্বাভাবিকভাবে সন্তান ধারণ করতে পারছে না। স্বামীর শুক্রাণু এবং স্ত্রীর ডিম্বাণু নিয়ে তা আরেকজন নারীর গর্ভে স্থাপন করা হয়। সাধারণত এই নারীর সঙ্গে এই স্বামী-স্ত্রীর কোনো সম্পর্ক থাকে না। একটা দূরত্বেই সন্তানসম্ভবা মহিলা সন্তান ধারণ করেন এবং প্রসবের পর শিশুটি সেই দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। আমি শুনেছি, এত দূরত্ব সত্ত্বেও যে ‘বায়োলজিক্যাল মাদার’ তার মধ্যে একটা আবেগের চাপ তৈরি হয়। তবে তোমার বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন। এ জটিল মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে তুমি অবশ্যই কোনো কাউন্সেলার-সাইকোলজিস্ট কিংবা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টের সাহায্য নেবে। মনোবিজ্ঞানীর সাহায্য নেওয়াটা জরুরি।
ডিকেন্সের গল্প নিয়ে নির্মিত পুরনো চলচ্চিত্র উদ্ধার
‘দ্য ডেথ অব পুওর জো’ নামের এ চলচ্চিত্রটি ১৯০১ সালের মার্চ মাসে তৈরি করা হয়। এক মিনিট দৈর্ঘ্যরে এই কাহিনীচিত্রটি নির্মাণ করেন পথিকৃৎ চলচ্চিত্রকার জর্জ অ্যালবার্ট স্মিথ।
গত ফেব্র“য়ারিতে ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউটের (বিএফআই) তত্ত্বাবধায়ক ব্রায়নি ডিক্সন এটি উদ্ধার করেন।
ডিক্সনের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, চলচ্চিত্রের কপিটি খুব ভালো অবস্থাতেই আছে।
এক তুষারপাতের রাতে একটি গির্জার দেয়ালের পাশে ‘জো’ নামের একটি মেয়ের মৃত্যুর সময়ের গল্প দেখানো হয়েছে এ চলচ্চিত্রটিতে। স্থানীয় এক প্রহরী তাকে পড়ে থাকতে দেখে এবং সেই প্রহরীর কোলে মাথা রেখেই জোয়ের মৃত্যু হয়।
বিএফআই জানায়, ধারণা করা হচ্ছে ‘জো’য়ের চরিত্রে পরিচালক জর্জ স্মিথের স্ত্রী লরা বেইল ও প্রহরীর চরিত্রে টম গ্রিন অভিনয় করেছিলেন। ইংল্যান্ডের ব্রাইটনে এটি নির্মাণ করা হয় বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৫৪ সালে কপিটি বিএফআইয়ের কাছে হস্তান্তর করেন ব্রাইটনের জনৈক স্মিথ। তবে এর নির্মাণ সময় তালিকাভুক্ত করা ছিলো ১৯০২ সালে।
চীনের প্রথমদিককার চলচ্চিত্র বিষয়ে গবেষণা করতে গিয়ে এটি খুঁজে পান ডিক্সন।
ডিকেন্সের আরেকটি গল্প ‘জো ইন ব্লিক হাউজ’র পরবর্তী পর্ব বলে ধরে নেওয়া হয় গল্পটিকে।
এর আগে ১৯০১ সালের নভেম্বরে নির্মিত ‘স্ক্রুজ অর মার্লি’জ ঘোস্ট’ চলচ্চিত্রটিকে চার্লস ডিকেন্সের গল্প নিয়ে নির্মিত সবচেয়ে পুরনো চলচ্চিত্র বলে মনে করা হয়।
ডিকেন্সের জন্মের দ্বিশতবার্ষিকী উপলক্ষে ৯ মার্চ ও ২৩ মার্চ লন্ডনের সাউথব্যাংকে ‘ডিকেন্স অন স্ক্রিন’ আয়োজনে এটি প্রদর্শন করা হবে বলে জানান ডিক্সন। এছাড়া পরবর্তীতে এর ডিভিডি বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বিএফআইয়ের।
মূত্রে ডিম সিদ্ধ!
চীনের পূর্বাঞ্চলে একটি জনপ্রিয় বসন্তকালীন জলখাবার কুমার বালকদের মূত্রে সিদ্ধ করা ডিম।
খাবারটির নাম ‘কুমার বালকদের ডিম’। ১০ বছরের কম বয়সী বালকদের মূত্রেই সাধারণত এ ডিম সিদ্ধ করা হয়।
“এ ডিম খেলে হিটস্ট্রোক হবে না। মূত্রে রান্না করা এ ডিমগুলো সুগন্ধযুক্ত। শরীরের জন্যও ভালো। প্রতি বেলায় খাবারের সময় আমরা এগুলো খাই। দংজিয়াংয়ের সব পরিবারই এ ডিম খেতে পছন্দ করে,” বলেন, দংজিয়াং শহরের ৫১ বছর বয়সী এক ডিম বিক্রেতা।
এই জলখাবার তৈরি করতে লেগে যায় পুরো একটি দিন। বালকদের পেশাবখানা থেকে মূত্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়ার শুরু। তারপর পাত্রভর্তি মূত্রের মধ্যে ডিমগুলো সিদ্ধ করা হয়।
এক সময় সিদ্ধ ডিমগুলোর খোসাগুলো ভেঙে যায়, এরপর আরো কয়েক ঘন্টা ডিমগুলোকে ওই মূত্রের মধ্যে রেখেই ঠান্ডা করা হয়।
যারা এ ডিম খেয়েছে তারা জানায়, এগুলো খাওয়ার পর তাদের দেহের উত্তাপ কমেছে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালনও ভালো হয়েছে।
দংজিয়াংয়ের ৫৯ বছর বয়সী বাসিন্দা লু ইয়াংজেনের উক্তি, “আমাদের পূর্বপুরুষরাও এগুলো খেয়েছেন। এই ডিমগুলো খাওয়ার কারণে আমাদের কোমরে, পায়ে ও জোড়ার জায়গাগুলোতে কোনো ব্যথা হবে না। এগুলো খাওয়ার পর কাজ করার জন্য বেশি শক্তি পাওয়া যায়।”
তবে অনেকে খেলেও দংজিয়াংয়ের সবাই এ ডিম খায় না। বিশেষত, সচেতন তরুণ বয়সীদের অনেকেই এসব কথায় বিশ্বাস করে না।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই ‘কুমার বালকদের ডিম’ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এই অদ্ভুত ‘সুখাদ্য’র জীবাণুমুক্ততার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন তাদের কেউ কেউ।
খাবারটির নাম ‘কুমার বালকদের ডিম’। ১০ বছরের কম বয়সী বালকদের মূত্রেই সাধারণত এ ডিম সিদ্ধ করা হয়।
“এ ডিম খেলে হিটস্ট্রোক হবে না। মূত্রে রান্না করা এ ডিমগুলো সুগন্ধযুক্ত। শরীরের জন্যও ভালো। প্রতি বেলায় খাবারের সময় আমরা এগুলো খাই। দংজিয়াংয়ের সব পরিবারই এ ডিম খেতে পছন্দ করে,” বলেন, দংজিয়াং শহরের ৫১ বছর বয়সী এক ডিম বিক্রেতা।
এই জলখাবার তৈরি করতে লেগে যায় পুরো একটি দিন। বালকদের পেশাবখানা থেকে মূত্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়ার শুরু। তারপর পাত্রভর্তি মূত্রের মধ্যে ডিমগুলো সিদ্ধ করা হয়।
এক সময় সিদ্ধ ডিমগুলোর খোসাগুলো ভেঙে যায়, এরপর আরো কয়েক ঘন্টা ডিমগুলোকে ওই মূত্রের মধ্যে রেখেই ঠান্ডা করা হয়।
যারা এ ডিম খেয়েছে তারা জানায়, এগুলো খাওয়ার পর তাদের দেহের উত্তাপ কমেছে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালনও ভালো হয়েছে।
দংজিয়াংয়ের ৫৯ বছর বয়সী বাসিন্দা লু ইয়াংজেনের উক্তি, “আমাদের পূর্বপুরুষরাও এগুলো খেয়েছেন। এই ডিমগুলো খাওয়ার কারণে আমাদের কোমরে, পায়ে ও জোড়ার জায়গাগুলোতে কোনো ব্যথা হবে না। এগুলো খাওয়ার পর কাজ করার জন্য বেশি শক্তি পাওয়া যায়।”
তবে অনেকে খেলেও দংজিয়াংয়ের সবাই এ ডিম খায় না। বিশেষত, সচেতন তরুণ বয়সীদের অনেকেই এসব কথায় বিশ্বাস করে না।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এই ‘কুমার বালকদের ডিম’ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এই অদ্ভুত ‘সুখাদ্য’র জীবাণুমুক্ততার ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন তাদের কেউ কেউ।
শুক্রবার, ৩০ মার্চ, ২০১২
আকাশে উড়ল সুবিশাল কাগজের বিমান
বিশালকায় এই কাগজের বিমানটির নাম ‘আর্তুরোস ডেজার্ট ঈগল’। কাগজের বিমানটি ওড়াতে অবশ্য হেলিকপ্টারের সাহায্য নিতে হয়েছে। সিকোরস্কি এস৫৮টি হেলিকপ্টারের সঙ্গে একটি শিকল বেঁধে কাগজের এই বিমানকে দুই হাজার ৭০৩ ফুট ওপরে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর কাগজের বিমানটি ঘণ্টায় ১০০ মাইল গতিতে ছুটতে শুরু করে। কিন্তু ১০ সেকেন্ড পরেই বাতাসের তোড়ে কাগজের এই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
বিশ্বের প্রথম পুরো হীরার আংটি!
এত দিন হীরার আংটিতে মূল্যবান কোনো ধাতুর কাঠামোর কেন্দ্রে হীরার টুকরো
বসানো হতো। সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডের বিখ্যাত অলংকার-নির্মাতা প্রতিষ্ঠান
সাউইশ জুয়েলারি আস্ত একটি হীরা ব্যবহার করে একটি আংটি তৈরি করেছে, যাতে
শুধু হীরাই ব্যবহূত হয়েছে। ১৫০ ক্যারেট হীরার তৈরি এ আংটির দাম সাত কোটি
ডলার। এটিই বিশ্বের প্রথম পুরো হীরার আংটি।
ফ্যাশন-বিষয়ক ওয়েবসাইট স্টাইলিট জানিয়েছে, ১৫০ ক্যারেটের এ আংটি বিখ্যাত সব হীরার আংটিকে টেক্কা দিতে সক্ষম হবে। বিখ্যাত হীরার আংটির মধ্যে রয়েছে জে-জির কাছ থেকে বিওন্সি নোলসের পাওয়া ১৮ ক্যারেটের হীরার আংটি বা রিচার্ড বার্টনের কাছ থেকে এলিজাবেথ টেলরের পাওয়া ৩০ ক্যারেটের আংটি।
সাউইশের প্রধান নির্বাহী মোহামেদ সাওয়েশ জানিয়েছেন, আস্ত একটি হীরার টুকরো লেজার দিয়ে কেটে এ আংটিটি তৈরি করা হয়েছে। এটি তৈরিতে লেজার ছাড়াও প্রচলিত পলিশ ও কাটিং পদ্ধতি ব্যবহূত হয়েছে। আর এর আকার তৈরিতে সময় লেগেছে পুরো এক বছর।
জানা গেছে, আংটি তৈরির বিষয়টি কপিরাইট করিয়ে নিয়েছে সাউইশ।
ফ্যাশন-বিষয়ক ওয়েবসাইট স্টাইলিট জানিয়েছে, ১৫০ ক্যারেটের এ আংটি বিখ্যাত সব হীরার আংটিকে টেক্কা দিতে সক্ষম হবে। বিখ্যাত হীরার আংটির মধ্যে রয়েছে জে-জির কাছ থেকে বিওন্সি নোলসের পাওয়া ১৮ ক্যারেটের হীরার আংটি বা রিচার্ড বার্টনের কাছ থেকে এলিজাবেথ টেলরের পাওয়া ৩০ ক্যারেটের আংটি।
সাউইশের প্রধান নির্বাহী মোহামেদ সাওয়েশ জানিয়েছেন, আস্ত একটি হীরার টুকরো লেজার দিয়ে কেটে এ আংটিটি তৈরি করা হয়েছে। এটি তৈরিতে লেজার ছাড়াও প্রচলিত পলিশ ও কাটিং পদ্ধতি ব্যবহূত হয়েছে। আর এর আকার তৈরিতে সময় লেগেছে পুরো এক বছর।
জানা গেছে, আংটি তৈরির বিষয়টি কপিরাইট করিয়ে নিয়েছে সাউইশ।
উচ্চ ঘনত্বের গ্রহের সন্ধান
ফরাসি
জ্যোতির্গবেষকেরা সম্প্রতি উচ্চ ঘনত্বের একটি গ্রহের সন্ধান লাভ করেছেন।
পৃথিবী থেকে চার হাজারের কিছু বেশি আলোক বর্ষ দূরের এই গ্রহের নাম রাখা
হয়েছে কোরোট-২০বি। গবেষকেরা গ্রহের বর্ণালি পরীক্ষার মাধ্যমে গ্রহের
আকার-প্রকৃতি নির্ণয়ের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বৃহস্পতি গ্রহের চার-পঞ্চমাংশ
আকারের এই গ্রহ পুরোটাই গ্যাসীয় প্রকৃতির। বৃহস্পতি থেকে আকারে ক্ষুদ্র
হলেও গ্রহটির ঘনত্ব চার গুণ বেশি বলে ধারণা করছেন জ্যোর্তিবিদেরা। সূর্যের
মতো একটি তারাকে আবর্তিত এই গ্রহকে সন্ধান পাওয়া উচ্চ ঘনত্বের গ্রহগুলোর
একটি বলে মনে করছেন গবেষকেরা। ফ্রান্সের মার্সেই জ্যোতির্পদার্থ
গবেষণাগারের গবেষকেরা ‘ইউরোপীয় কোরোট মিশন’ প্রকল্প পরীক্ষায় এই গ্রহের
সন্ধান লাভ করেন।
সুদীপ্ত দেবনাথ
সুদীপ্ত দেবনাথ
পারমাণবিক দুর্ঘটনার সেকাল-একাল
১১
মার্চ ছিল জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিস্ফোরণের প্রথম
বার্ষিকী। ১৯৮৬ সালের চেরনোবিল দুর্ঘটনার পর ফুকুশিমা পারমাণবিক দুর্ঘটনা
হলো সবচেয়ে ভয়াবহ। তবে সময়ের কারণেই দুটি দুর্ঘটনার মধ্যে ফারাক ছিল
বিস্তর। এ দুটি দুর্ঘটনার পার্থক্য তুলে ধরেছেন পরমাণু বিজ্ঞানী জাকিয়া
বেগম
প্রায় ৬০ বছরের পারমাণবিক চুল্লির ইতিহাসে বিশ্বে যে কয়েকটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ১৯৮৬ সালের ২৬ মার্চ রাশিয়ার চেরনোবিলে এবং অন্যটি ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের ফুকুশিমায় সংঘটিত দুর্ঘটনা দুটিকে অন্যতম ভয়াবহ বলে চিহ্নিত করা হয়। এ দুটি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু পার্থক্য আছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন। পার্থক্যগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়:
১৯৭১ সালে স্থাপিত ফুকুশিমার চুল্লিটি ৪০ বছরের আয়ুষ্কাল শেষ করে বর্ধিত সময়ের জন্য পরিচালনার অনুমোদনপ্রাপ্ত ছিল। কিন্তু ১৯৭৭ সালে স্থাপিত চেরনোবিলের চুল্লিটি দুর্ঘটনার আগে মাত্র নয় বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
চেরনোবিলের চুল্লিতে প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল। উপরন্তু, নিরাপত্তাসংক্রান্ত সতর্কতা অবলম্বন না করে গবেষণা পরিচালনার সময় ভুলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু চুল্লির নকশায় উচ্চমাত্রার সুনামির সম্ভাবনা বিবেচনায় না রাখায় রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প-পরবর্তী সুনামি ফুকুশিমা দুর্ঘটনার কারণ।
চেরনোবিলের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার সময় চুল্লি সক্রিয় থাকায় ফিশনবিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠে এবং মুহূর্তে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বিস্ফোরিত পারমাণবিক বোমার চেয়ে ভয়াবহ ও মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটে। ফুকুশিমায় ভূমিকম্পের সঙ্গে সঙ্গে ফিশনবিক্রিয়া থেমে গিয়ে চুল্লিগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রে কোনো রকম বিস্ফোরণ ঘটেনি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সুনামির আঘাতে শীতলীকরণ পদ্ধতি অকার্যকর হয়ে পড়ায় চুল্লির কেন্দ্র অতিরিক্ত মাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে কোনোটি আংশিকভাবে এবং কোনোটির অধিকাংশই গলে যায়। ব্যবহূত জ্বালানির আধারগুলোর ঠান্ডাকরণ পদ্ধতিও অকার্যকর হয়ে পড়ে।
১ গিগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন চেরনোবিলের চুল্লিটির কেন্দ্র ইদানীংকালের চুল্লিগুলোর চেয়ে প্রায় তিন গুণ বড় ছিল। এত বিরাট চুল্লি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ায় তা প্রচণ্ডভাবে বিস্ফোরিত হয়। ফুকুশিমারটি ৪ দশমিক ৭ গিগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন।
‘হাইপ্রেশার ওয়াটার রিঅ্যাকটর টাইপ’ চেরনোবিলের চুল্লিতে রিঅ্যাকটর ভেসেল এবং কনটেইনমেন্ট বিল্ডিং ছিল না। ‘বয়েলিং ওয়াটার টাইপ’ ফুকুশিমার চুল্লিতে বর্তমানে ব্যবহূত অন্যান্য চুল্লির মতো জ্বালানিসংবলিত কেন্দ্র খুব পুরু স্টিলের তৈরি চাপযুক্ত আধারের মধ্যে (রিঅ্যাকটর প্রেসার ভেসেল) আর সম্পূর্ণ চুল্লিটি যেকোনো ধরনের তেজস্ক্রিয় পদার্থ আবদ্ধ রাখতে সক্ষম স্টিল ও কংক্রিটের তৈরি বিশেষ ধরনের কাঠামোর মধ্যে স্থাপিত ছিল।
ফুকুশিমার চুল্লিটি ‘লাইট ওয়াটার’ মডারেটরবিশিষ্ট হওয়ায় এটির কেন্দ্রে দাহ্য গ্রাফাইটের উপস্থিতি ছিল না। চেরনোবিল দুর্ঘটনাটি ভয়াবহ হয়ে ওঠার অন্যতম একটি কারণ, ‘গ্রাফাইট মডারেটেড’ চুল্লিতে গ্রাফাইটের উপস্থিতি, যা এটিকে অত্যন্ত দাহ্য করে তোলে। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ডভাবে আগুন ধরে যায়, যার কারণে তেজস্ক্রিয় মেঘ আকাশে বহু ওপরে বিস্তৃতি লাভ করে, যা প্রায় ১০ দিন পর্যন্ত জ্বলতে থাকে।
ফুকুশিমার ছয়টি চুল্লির মধ্যে চারটি এবং ‘স্পেন্ট ফুয়েলে’র আধার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চেরনোবিলের চারটি চুল্লির মধ্যে মাত্র একটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ফুকুশিমার চুল্লিতে জ্বালানির পরিমাণ ছিল এক হাজার ৬০০ টন আর চেরনোবিলে ১৮০ টন।
ফুকুশিমায় অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় চুল্লির ভেতরের বাষ্প থেকে হাইড্রোজেন আলাদা হয়ে যায়, যা চুল্লির স্থাপনার ভেতরে জমা হয়ে বিস্ফোরণের সৃষ্টি করে। ফলে স্থাপনার ছাদের একটি অংশ বিধ্বস্ত হয়, তবে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ নির্গমনের ক্ষেত্রে এর কোনো ভূমিকা ছিল না। তা ছাড়া চুল্লির ভেতরে বাষ্পীয় চাপ কমিয়ে বিস্ফোরণ ঠেকানোর লক্ষ্যে অপারেটররাও ইচ্ছাকৃতভাবে বাষ্পীয় মেঘ বাতাসে বিমুক্ত করে দেয়। এই বাষ্পের মধ্যস্থ তেজস্ক্রিয় কণাগুলোর অর্ধায়ু মাত্র কয়েক সেকেন্ড হওয়ায় এগুলো বাতাসে মিশে যাওয়ার আগে বিকিরণমাত্রা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর পর্যায়ের নিচে নেমে আসে। তা ছাড়া প্রশান্ত মহাসাগরের তীরবর্তী হওয়ায় এবং দুর্ঘটনার সময় বাতাস সাগরের দিকে ধাবিত হওয়ায় এ ক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলোর অধিকাংশ সাগরে গিয়ে পড়ে, যা সাগরের পানির সঙ্গে মিশে তরলকৃত হয়ে পড়ে।
পরবর্তী সময়ে প্রচণ্ড উত্তাপে চুল্লি গলিত অবস্থায় চলে যাওয়ায় এবং স্থাপনার ভেতরের কিছুটা অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় এ ফাটল এবং সেই সঙ্গে উত্তপ্ত স্পেন্ট ফুয়েল দিয়ে তেজস্ক্রিয়তাযুক্ত পানি ও বাষ্প বের হতে থাকে, যা পরিবেশকে দূষণযুক্ত করে তোলে। তা ছাড়া শীতলীকরণের কাজে ব্যবহূত পানি সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়ায়ও বেশ কিছু তেজস্ক্রিয় পদার্থ বাতাস ও পানিতে মিশে যায়।
যদিও দুটি ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার মাত্রা পারমাণবিক দুর্ঘটনার স্কেলে ৭, তাই ফুকুশিমা দুর্ঘটনায় পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরিমাণ চেরনোবিল দুর্ঘটনার মাত্র ১০ শতাংশ।
ফুকুশিমায় তেজস্ক্রিয়ার কারণে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। চেরনোবিলে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ২০০ পিকোবেকারেল তেজস্ক্রিয়ার বিকিরণপাত হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুজন, পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে জরুরি উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৫০ জন মারা যায়। প্রায় ছয় লাখ মানুষ অত্যন্ত উচ্চমাত্রার বিকিরণ দ্বারা সম্পাতিত হয়ে পড়ে। কাছের একটি বনাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়, চারপাশে বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পাশের ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিরাট এলাকাজুড়ে তেজস্ক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ায় এসব দেশের উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল তেজস্ক্রিয় ঝুঁকির সম্মুখীন হয়।
ফুকুশিমায় দুর্ঘটনাস্থল থেকে উত্তর-পশ্চিমে ৬০ কিলোমিটার এবং দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিকিরণমাত্রা বার্ষিক গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে ঊর্ধ্বে এবং সর্বোচ্চ তেজস্ক্রিয়া ৩৭০ পিকোবেকারেল পরিলক্ষিত হয়। এ ক্ষেত্রে বিরাট এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।
তৎকালীন সোভিয়েত সরকার প্রথম দিকে বাসিন্দাদের দুর্ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা থেকে বিরত থাকে এবং দ্রুত পাশের এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করায় আয়োডিনযুক্ত তেজস্ক্রিয়যুক্ত দুধ গ্রহণের কারণে আক্রান্ত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রায় ছয় হাজার জন পরবর্তী সময়ে থাইরয়েড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন মারা যায়।
ফুকুশিমায় ক্ষতিকর আয়োডিন নিঃসরণের পরিমাণ চেরনোবিলের চেয়ে প্রায় সাত গুণ কম। তা ছাড়া জাপান সরকার খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়ায় এবং সময়োপযোগী কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় তেজস্ক্রিয় সম্পাত থেকে অনেকেই রক্ষা পায়। ২০-৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় জন্মানো খাদ্যশস্য গ্রহণ করার ব্যাপারে সতর্ক এবং বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এলাকার পশুর দুধ ও দুগ্ধজাতদ্রব্য শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। এমনকি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টোকিও নগরের কলের পানি শিশুখাদ্যের জন্য সাময়িকভাবে উপযোগী নয় বলে সাবধানতা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। তা ছাড়া শিশুদের স্থায়ী আয়োডিন খাইয়ে তেজস্ক্রিয় আয়োডিন থাইরয়েডে জমা হওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে আনায় থাইরয়েড ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাও কমানো হয়েছে।
চেরনোবিলে কৃষি এলাকাজুড়ে ৩০ বছর অর্ধায়ুবিশিষ্ট সিজিয়াম-১৩৭ এবং ২৮ বছর অর্ধায়ুবিশিষ্ট স্ট্রনশিয়াম-৯০ ছড়িয়ে পড়ে। ফুকুশিমায়ও প্রায় ২০০ মাইল এলাকাজুড়ে সিজিয়াম-১৩৭ ছড়িয়ে পড়ে।
চেরনোবিলে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার মানুষ সরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে বেলারুশ, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়। ফুকুশিমায় দুর্ঘটনাকবলিত স্থাপনা থেকে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার বাসিন্দাকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়।
ফুকুশিমার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলো বহু তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে, যা চেরনোবিলের সময় সম্ভব ছিল না। তা ছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ সহজতর হওয়ায় নানাবিধ পরামর্শ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
লেখক: পরমাণু বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, ইউআইটিএস।a
প্রায় ৬০ বছরের পারমাণবিক চুল্লির ইতিহাসে বিশ্বে যে কয়েকটি পারমাণবিক দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ১৯৮৬ সালের ২৬ মার্চ রাশিয়ার চেরনোবিলে এবং অন্যটি ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানের ফুকুশিমায় সংঘটিত দুর্ঘটনা দুটিকে অন্যতম ভয়াবহ বলে চিহ্নিত করা হয়। এ দুটি দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু পার্থক্য আছে বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন। পার্থক্যগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়:
১৯৭১ সালে স্থাপিত ফুকুশিমার চুল্লিটি ৪০ বছরের আয়ুষ্কাল শেষ করে বর্ধিত সময়ের জন্য পরিচালনার অনুমোদনপ্রাপ্ত ছিল। কিন্তু ১৯৭৭ সালে স্থাপিত চেরনোবিলের চুল্লিটি দুর্ঘটনার আগে মাত্র নয় বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
চেরনোবিলের চুল্লিতে প্রযুক্তিগত ত্রুটি ছিল। উপরন্তু, নিরাপত্তাসংক্রান্ত সতর্কতা অবলম্বন না করে গবেষণা পরিচালনার সময় ভুলের কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু চুল্লির নকশায় উচ্চমাত্রার সুনামির সম্ভাবনা বিবেচনায় না রাখায় রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প-পরবর্তী সুনামি ফুকুশিমা দুর্ঘটনার কারণ।
চেরনোবিলের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার সময় চুল্লি সক্রিয় থাকায় ফিশনবিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে ওঠে এবং মুহূর্তে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বিস্ফোরিত পারমাণবিক বোমার চেয়ে ভয়াবহ ও মারাত্মক বিস্ফোরণ ঘটে। ফুকুশিমায় ভূমিকম্পের সঙ্গে সঙ্গে ফিশনবিক্রিয়া থেমে গিয়ে চুল্লিগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেন্দ্রে কোনো রকম বিস্ফোরণ ঘটেনি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সুনামির আঘাতে শীতলীকরণ পদ্ধতি অকার্যকর হয়ে পড়ায় চুল্লির কেন্দ্র অতিরিক্ত মাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে কোনোটি আংশিকভাবে এবং কোনোটির অধিকাংশই গলে যায়। ব্যবহূত জ্বালানির আধারগুলোর ঠান্ডাকরণ পদ্ধতিও অকার্যকর হয়ে পড়ে।
১ গিগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন চেরনোবিলের চুল্লিটির কেন্দ্র ইদানীংকালের চুল্লিগুলোর চেয়ে প্রায় তিন গুণ বড় ছিল। এত বিরাট চুল্লি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ায় তা প্রচণ্ডভাবে বিস্ফোরিত হয়। ফুকুশিমারটি ৪ দশমিক ৭ গিগাওয়াট শক্তিসম্পন্ন।
‘হাইপ্রেশার ওয়াটার রিঅ্যাকটর টাইপ’ চেরনোবিলের চুল্লিতে রিঅ্যাকটর ভেসেল এবং কনটেইনমেন্ট বিল্ডিং ছিল না। ‘বয়েলিং ওয়াটার টাইপ’ ফুকুশিমার চুল্লিতে বর্তমানে ব্যবহূত অন্যান্য চুল্লির মতো জ্বালানিসংবলিত কেন্দ্র খুব পুরু স্টিলের তৈরি চাপযুক্ত আধারের মধ্যে (রিঅ্যাকটর প্রেসার ভেসেল) আর সম্পূর্ণ চুল্লিটি যেকোনো ধরনের তেজস্ক্রিয় পদার্থ আবদ্ধ রাখতে সক্ষম স্টিল ও কংক্রিটের তৈরি বিশেষ ধরনের কাঠামোর মধ্যে স্থাপিত ছিল।
ফুকুশিমার চুল্লিটি ‘লাইট ওয়াটার’ মডারেটরবিশিষ্ট হওয়ায় এটির কেন্দ্রে দাহ্য গ্রাফাইটের উপস্থিতি ছিল না। চেরনোবিল দুর্ঘটনাটি ভয়াবহ হয়ে ওঠার অন্যতম একটি কারণ, ‘গ্রাফাইট মডারেটেড’ চুল্লিতে গ্রাফাইটের উপস্থিতি, যা এটিকে অত্যন্ত দাহ্য করে তোলে। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ডভাবে আগুন ধরে যায়, যার কারণে তেজস্ক্রিয় মেঘ আকাশে বহু ওপরে বিস্তৃতি লাভ করে, যা প্রায় ১০ দিন পর্যন্ত জ্বলতে থাকে।
ফুকুশিমার ছয়টি চুল্লির মধ্যে চারটি এবং ‘স্পেন্ট ফুয়েলে’র আধার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চেরনোবিলের চারটি চুল্লির মধ্যে মাত্র একটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।
ফুকুশিমার চুল্লিতে জ্বালানির পরিমাণ ছিল এক হাজার ৬০০ টন আর চেরনোবিলে ১৮০ টন।
ফুকুশিমায় অত্যন্ত উচ্চ তাপমাত্রায় চুল্লির ভেতরের বাষ্প থেকে হাইড্রোজেন আলাদা হয়ে যায়, যা চুল্লির স্থাপনার ভেতরে জমা হয়ে বিস্ফোরণের সৃষ্টি করে। ফলে স্থাপনার ছাদের একটি অংশ বিধ্বস্ত হয়, তবে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ নির্গমনের ক্ষেত্রে এর কোনো ভূমিকা ছিল না। তা ছাড়া চুল্লির ভেতরে বাষ্পীয় চাপ কমিয়ে বিস্ফোরণ ঠেকানোর লক্ষ্যে অপারেটররাও ইচ্ছাকৃতভাবে বাষ্পীয় মেঘ বাতাসে বিমুক্ত করে দেয়। এই বাষ্পের মধ্যস্থ তেজস্ক্রিয় কণাগুলোর অর্ধায়ু মাত্র কয়েক সেকেন্ড হওয়ায় এগুলো বাতাসে মিশে যাওয়ার আগে বিকিরণমাত্রা মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর পর্যায়ের নিচে নেমে আসে। তা ছাড়া প্রশান্ত মহাসাগরের তীরবর্তী হওয়ায় এবং দুর্ঘটনার সময় বাতাস সাগরের দিকে ধাবিত হওয়ায় এ ক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলোর অধিকাংশ সাগরে গিয়ে পড়ে, যা সাগরের পানির সঙ্গে মিশে তরলকৃত হয়ে পড়ে।
পরবর্তী সময়ে প্রচণ্ড উত্তাপে চুল্লি গলিত অবস্থায় চলে যাওয়ায় এবং স্থাপনার ভেতরের কিছুটা অংশে ফাটল দেখা দেওয়ায় এ ফাটল এবং সেই সঙ্গে উত্তপ্ত স্পেন্ট ফুয়েল দিয়ে তেজস্ক্রিয়তাযুক্ত পানি ও বাষ্প বের হতে থাকে, যা পরিবেশকে দূষণযুক্ত করে তোলে। তা ছাড়া শীতলীকরণের কাজে ব্যবহূত পানি সমুদ্রে ছেড়ে দেওয়ায়ও বেশ কিছু তেজস্ক্রিয় পদার্থ বাতাস ও পানিতে মিশে যায়।
যদিও দুটি ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার মাত্রা পারমাণবিক দুর্ঘটনার স্কেলে ৭, তাই ফুকুশিমা দুর্ঘটনায় পরিবেশে ছড়িয়ে পড়া তেজস্ক্রিয় পদার্থের পরিমাণ চেরনোবিল দুর্ঘটনার মাত্র ১০ শতাংশ।
ফুকুশিমায় তেজস্ক্রিয়ার কারণে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। চেরনোবিলে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার ২০০ পিকোবেকারেল তেজস্ক্রিয়ার বিকিরণপাত হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে দুজন, পরবর্তী এক সপ্তাহের মধ্যে জরুরি উদ্ধারকাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৫০ জন মারা যায়। প্রায় ছয় লাখ মানুষ অত্যন্ত উচ্চমাত্রার বিকিরণ দ্বারা সম্পাতিত হয়ে পড়ে। কাছের একটি বনাঞ্চল সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়, চারপাশে বিস্তীর্ণ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নিজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পাশের ইউরোপের বিভিন্ন দেশের বিরাট এলাকাজুড়ে তেজস্ক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ায় এসব দেশের উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল তেজস্ক্রিয় ঝুঁকির সম্মুখীন হয়।
ফুকুশিমায় দুর্ঘটনাস্থল থেকে উত্তর-পশ্চিমে ৬০ কিলোমিটার এবং দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে ৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় বিকিরণমাত্রা বার্ষিক গ্রহণযোগ্য মাত্রার চেয়ে ঊর্ধ্বে এবং সর্বোচ্চ তেজস্ক্রিয়া ৩৭০ পিকোবেকারেল পরিলক্ষিত হয়। এ ক্ষেত্রে বিরাট এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম।
তৎকালীন সোভিয়েত সরকার প্রথম দিকে বাসিন্দাদের দুর্ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা থেকে বিরত থাকে এবং দ্রুত পাশের এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিতে ব্যর্থ হয়। খাদ্য গ্রহণ সম্পর্কে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করায় আয়োডিনযুক্ত তেজস্ক্রিয়যুক্ত দুধ গ্রহণের কারণে আক্রান্ত শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে প্রায় ছয় হাজার জন পরবর্তী সময়ে থাইরয়েড ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে কয়েকজন মারা যায়।
ফুকুশিমায় ক্ষতিকর আয়োডিন নিঃসরণের পরিমাণ চেরনোবিলের চেয়ে প্রায় সাত গুণ কম। তা ছাড়া জাপান সরকার খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়ায় এবং সময়োপযোগী কিছু পদক্ষেপ নেওয়ায় তেজস্ক্রিয় সম্পাত থেকে অনেকেই রক্ষা পায়। ২০-৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় জন্মানো খাদ্যশস্য গ্রহণ করার ব্যাপারে সতর্ক এবং বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। এলাকার পশুর দুধ ও দুগ্ধজাতদ্রব্য শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়। এমনকি প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত টোকিও নগরের কলের পানি শিশুখাদ্যের জন্য সাময়িকভাবে উপযোগী নয় বলে সাবধানতা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়। তা ছাড়া শিশুদের স্থায়ী আয়োডিন খাইয়ে তেজস্ক্রিয় আয়োডিন থাইরয়েডে জমা হওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে আনায় থাইরয়েড ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাও কমানো হয়েছে।
চেরনোবিলে কৃষি এলাকাজুড়ে ৩০ বছর অর্ধায়ুবিশিষ্ট সিজিয়াম-১৩৭ এবং ২৮ বছর অর্ধায়ুবিশিষ্ট স্ট্রনশিয়াম-৯০ ছড়িয়ে পড়ে। ফুকুশিমায়ও প্রায় ২০০ মাইল এলাকাজুড়ে সিজিয়াম-১৩৭ ছড়িয়ে পড়ে।
চেরনোবিলে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা থেকে প্রাথমিকভাবে প্রায় এক লাখ ১৫ হাজার মানুষ সরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করা হয় এবং পরবর্তী সময়ে বেলারুশ, রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে প্রায় দুই লাখ ২০ হাজার মানুষ সরিয়ে নেওয়া হয়। ফুকুশিমায় দুর্ঘটনাকবলিত স্থাপনা থেকে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার বাসিন্দাকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হয়।
ফুকুশিমার ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলো বহু তথ্য সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে, যা চেরনোবিলের সময় সম্ভব ছিল না। তা ছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যোগাযোগ সহজতর হওয়ায় নানাবিধ পরামর্শ ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছে।
লেখক: পরমাণু বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগ, ইউআইটিএস।a
সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১২
কোথাও কেউ নেই
আমি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে আর বোন আসমা এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে
ফলাফলের অপেক্ষায়। এমন সময় ওদের দুজনকে দেখি আমরা। প্রথম দেখায়ই রনি ভাইয়ের
নাজু আপাকে ভালো লেগেছিল। অচিরেই আমরা দুই বোন নাজু আপা আর রনি ভাইয়ের
ছায়াসঙ্গী হয়ে উঠলাম। কিন্তু কোন ফাঁকে তাদের দুজনের মধ্যে ভালোবাসা হয়ে
গেছে আমরা টেরও পাইনি। কয়েক দিনের পরই নাজু আপা আমাদের সব খুলে বললেন। এমএ
পরীক্ষা শেষ করে রনি ভাই চাকরি শুরু করেন। অল্পদিনের মধ্যে মহা ধুমধাম করে
তাঁদের বিয়ে হলো। দুই বছরের মাথায় তাঁদের ঘর আলো করে এল আরিয়ান। এত সুন্দর
ফুটফুটে ছেলে! কিন্তু ছোট্ট একটা ফুটো তার ছোট্ট হূৎপিণ্ডে। নাজু আপা, রনি
ভাই দুজনেই স্বচ্ছল পরিবারের। চিকিৎসায় কোনো ত্রুটি হয়নি। দেশে-বিদেশে
চিকিৎসা আর নাজু আপার অনেক মমতা আর যত্নে আরিয়ান অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছিল।
ছোট্ট বয়সে অপারেশনের ধকল নিতে পারবে না, তাই শেষ অস্ত্রোপচারটা একটু
দেরিতেই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ওর বাবা-মা, হ্যাঁ চিকিৎসকের পরামর্শেই।
এর মধ্যে হঠাৎই নাজু আপার আব্বা মারা গেলেন, হার্ট অ্যাটাক। নানা ভাইয়ের জন্য অনেক মন খারাপ করল সাড়ে তিন বছর বয়সী আরিয়ান। বাবার মৃত্যুর শোক সামলে আরিয়ানকে নিয়ে নাজু আপা আর রনি ভাই ভারতে গেলেন। উপমহাদেশের বিখ্যাত শিশু হূদরোগ বিশেষজ্ঞ শেঠী আরিয়ানের অপারেশন করলেন। মা-বাবার সঙ্গে একই বিমানে দেশে ফিরে এসেছিল আরিয়ান কিন্তু হিমশীতল কফিনে করে।
আমরা দুই বোন, একসময় যারা ছিলাম নাজু আপার ছায়াসঙ্গী। দেখতে গেলাম ওঁদের। বিধ্বস্ত দুজনেই। তফাত একটাই, নাজু আপা অনবরত কথা বলছিলেন আর রনি ভাই বাক্রুদ্ধ। এরপর অনেক রাত তাঁরা ঘুমোতে পারেননি। ২৪ ঘণ্টা আলো জ্বালিয়ে রাখতেন। চোখ বন্ধ করতে গেলেই নাজু আপা দেখতেন আরিয়ান বিছানায়...।
সময় চলে যায়। জীবন বহিয়া চলে।
আবারও মা হওয়ার আকুতি রীতিমতো পাগল করে তোলে নাজু আপাকে।
জীবন চলে আপন গতিতে। নাজু আপার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা আত্মার। রক্তের বন্ধন স্থাপনের জন্য আম্মার অপারেশনের সময় জরুরি রক্ত প্রয়োজন। এগিয়ে এলেন আমাদের নাজু আপা। আম্মার প্রতি তাঁর মমতা-শ্রদ্ধা অন্য রকম! আরিয়ানকে ফিরে পাওয়ার জন্য আম্মার কাছে দোয়া চাইতেন, আম্মার কাছে বসে কাঁদতেন। কিছুদিনের মধ্যেই আবদুল্লাহ এল, আরিয়ানের রূপ ধরে। এখন ওর বয়স ছয় বছর। স্কুলে যায়। কিছুদিন আগে ওর আর্ট একজিবিশন হলো।
অনেক দিন নাজু আপার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। মোবাইল ফোনসেটের পরিবর্তন আর ফোন নম্বর না লিখে রাখার কারণে কোনোভাবেই তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়ে ওঠেনি। এর মধ্যে নম্বর খুঁজে পেলাম। ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ফোন করলাম। সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে আমার ফোন পেয়ে নাজু আপা কী যে খুশি হয়েছিলেন, তা আমি এই সাত সমুদ্র তেরো নদী দুরে বসেও টের পাচ্ছিলাম। বললেন, আমি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছি, আমাকে অ্যাড করো। প্রোফাইল ছবি দেখে মনটা ভালো হয়ে গেল। মনে হলো ১৮ বছর আগে প্রথম ওঁদের দেখেছিলাম কিন্তু একটুও যেন বদলাননি ওঁরা দুজন।
১ মার্চ দুপুরে বোন আসমার ফোন—রনি ভাই নেই। হার্ট অ্যাটাক! আরিয়ানের পাশেই শুইয়ে দেওয়া হয়েছে তার বাবাকে।
সালমা শফিক
মেলবোর্ন,
অস্ট্রেলিয়া থেকে
এর মধ্যে হঠাৎই নাজু আপার আব্বা মারা গেলেন, হার্ট অ্যাটাক। নানা ভাইয়ের জন্য অনেক মন খারাপ করল সাড়ে তিন বছর বয়সী আরিয়ান। বাবার মৃত্যুর শোক সামলে আরিয়ানকে নিয়ে নাজু আপা আর রনি ভাই ভারতে গেলেন। উপমহাদেশের বিখ্যাত শিশু হূদরোগ বিশেষজ্ঞ শেঠী আরিয়ানের অপারেশন করলেন। মা-বাবার সঙ্গে একই বিমানে দেশে ফিরে এসেছিল আরিয়ান কিন্তু হিমশীতল কফিনে করে।
আমরা দুই বোন, একসময় যারা ছিলাম নাজু আপার ছায়াসঙ্গী। দেখতে গেলাম ওঁদের। বিধ্বস্ত দুজনেই। তফাত একটাই, নাজু আপা অনবরত কথা বলছিলেন আর রনি ভাই বাক্রুদ্ধ। এরপর অনেক রাত তাঁরা ঘুমোতে পারেননি। ২৪ ঘণ্টা আলো জ্বালিয়ে রাখতেন। চোখ বন্ধ করতে গেলেই নাজু আপা দেখতেন আরিয়ান বিছানায়...।
সময় চলে যায়। জীবন বহিয়া চলে।
আবারও মা হওয়ার আকুতি রীতিমতো পাগল করে তোলে নাজু আপাকে।
জীবন চলে আপন গতিতে। নাজু আপার সঙ্গে আমাদের সম্পর্কটা আত্মার। রক্তের বন্ধন স্থাপনের জন্য আম্মার অপারেশনের সময় জরুরি রক্ত প্রয়োজন। এগিয়ে এলেন আমাদের নাজু আপা। আম্মার প্রতি তাঁর মমতা-শ্রদ্ধা অন্য রকম! আরিয়ানকে ফিরে পাওয়ার জন্য আম্মার কাছে দোয়া চাইতেন, আম্মার কাছে বসে কাঁদতেন। কিছুদিনের মধ্যেই আবদুল্লাহ এল, আরিয়ানের রূপ ধরে। এখন ওর বয়স ছয় বছর। স্কুলে যায়। কিছুদিন আগে ওর আর্ট একজিবিশন হলো।
অনেক দিন নাজু আপার সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। মোবাইল ফোনসেটের পরিবর্তন আর ফোন নম্বর না লিখে রাখার কারণে কোনোভাবেই তাঁর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়ে ওঠেনি। এর মধ্যে নম্বর খুঁজে পেলাম। ২২ ফেব্রুয়ারি তাঁকে ফোন করলাম। সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে আমার ফোন পেয়ে নাজু আপা কী যে খুশি হয়েছিলেন, তা আমি এই সাত সমুদ্র তেরো নদী দুরে বসেও টের পাচ্ছিলাম। বললেন, আমি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলেছি, আমাকে অ্যাড করো। প্রোফাইল ছবি দেখে মনটা ভালো হয়ে গেল। মনে হলো ১৮ বছর আগে প্রথম ওঁদের দেখেছিলাম কিন্তু একটুও যেন বদলাননি ওঁরা দুজন।
১ মার্চ দুপুরে বোন আসমার ফোন—রনি ভাই নেই। হার্ট অ্যাটাক! আরিয়ানের পাশেই শুইয়ে দেওয়া হয়েছে তার বাবাকে।
সালমা শফিক
মেলবোর্ন,
অস্ট্রেলিয়া থেকে
আমি সাবিনা
আমি তখন নামকরা একটি স্কুলের হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করি। গ্রীষ্মকালীন ছুটি
উপলক্ষে স্কুল ১৫ দিনের বন্ধ, তাই আমরা সবাই বাড়ি চলে আসি। একদিন সকালবেলা
ঘুম না ভাঙতেই আমার রুমমেট মিঠুনের ফোন।
ফোন ধরা মাত্রই সে বলে উঠল, ‘দোস্ত, আমার একটা উপকার করো।’
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কী?’
সে বলল, ‘আমি আজ সাত দিন ধরে মনির (মিঠুনের প্রেমিকা) সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। মনির মোবাইল নম্বরটা বন্ধ।’
আমি বললাম, ‘এখন আমি কী করব?’
সে বলল, ‘মনির বাবার নম্বরটা খোলা আছে, তুমি মনির বান্ধবী সেজে উনার সঙ্গে কথা বলবে আর মনিকে বলবে, আমাকে একটা ফোন করতে।’
যেই কথা, সেই কাজ, সারা দিন মেয়েদের মতো কথা বলা চর্চা করলাম। সবশেষে খেয়াল করলাম, আমি যখন চাপাস্বরে, আস্তে কথা বলি, তখন আমার কণ্ঠ মেয়েদের মতো হয়। আমার বন্ধুটাও কয়েকবার ফোন করে যাচাই করে নিল, আমার কণ্ঠ মেয়েদের মতো হচ্ছে কি না।
সে আমাকে মনির বাবার কাছে মনির এক বান্ধবীর পরিচয় দিতে বলল। আমি অনেকটা ভয়ে ভয়ে রাত আটটায় মনির বাবার কাছে ফোন করলাম আর মেয়েদের মতো কণ্ঠস্বরে সালাম দিয়ে বললাম—
‘আংকেল! আমি মনির বান্ধবী সাবিনা, মনিকে ফোনটা দেওয়া যাবে?’
মনির বাবা বলল, ‘মা! আমি তো এখন বাজারে, তুমি এক ঘণ্টা পরে ফোন করো।’
কথাটা শোনামাত্রই আমি অনেকটা আনন্দিত হয়ে গেলাম। কেননা, মনির বাবা আমাকে ধরতে পারেননি। বসে বসে সময় গুনতে লাগলাম, কখন এক ঘণ্টা পার হবে। তা ছাড়া অপেক্ষার সময় যেন কিছুতেই শেষ হয় না। ঠিক এক ঘণ্টা পর আমি আবার ফোন করলাম। ওপাশ থেকে মনির বাবা বলে উঠল—
‘হ্যালো, কে?’
‘আংকেল আমি মনির বান্ধবী সাবিনা।’ কথাটা বললাম চাপাস্বরে, ঠিক মেয়েদের মতো।
মনির বাবা আমার কথা বুঝতে না পেরে আমাকে জোরে বলতে বললেন। আমি আবারও বললাম কিছুটা জোরে। তিনি এবারও বুঝতে পারলেন না। তাই বিরক্ত হয়ে আমি এবার অনেক জোরে বললাম—
‘আংকেল! আমি মনির বান্ধবী সাবিনা।’
কথাটা বলেই আমি থমকে গেলাম। কেননা আমি যখন জোরে কথা বলতে গেলাম, তখন মেয়েদের মতো করে না বলে আমি আমার মতো করেই বলে ফেললাম নিজের অজান্তে। আর তখনই শুনতে পেলাম ওপাশ থেকে গালাগালের আওয়াজ ভেসে আসছে। আমি তখন লাইনটা কেটে মোবাইল ফোনটা বন্ধ করে দিলাম। আর নিজের বোকামির জন্য নিজেকে অভিসম্পাত দিলাম।
সাদ্দাম হোসেন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।
ফোন ধরা মাত্রই সে বলে উঠল, ‘দোস্ত, আমার একটা উপকার করো।’
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কী?’
সে বলল, ‘আমি আজ সাত দিন ধরে মনির (মিঠুনের প্রেমিকা) সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। মনির মোবাইল নম্বরটা বন্ধ।’
আমি বললাম, ‘এখন আমি কী করব?’
সে বলল, ‘মনির বাবার নম্বরটা খোলা আছে, তুমি মনির বান্ধবী সেজে উনার সঙ্গে কথা বলবে আর মনিকে বলবে, আমাকে একটা ফোন করতে।’
যেই কথা, সেই কাজ, সারা দিন মেয়েদের মতো কথা বলা চর্চা করলাম। সবশেষে খেয়াল করলাম, আমি যখন চাপাস্বরে, আস্তে কথা বলি, তখন আমার কণ্ঠ মেয়েদের মতো হয়। আমার বন্ধুটাও কয়েকবার ফোন করে যাচাই করে নিল, আমার কণ্ঠ মেয়েদের মতো হচ্ছে কি না।
সে আমাকে মনির বাবার কাছে মনির এক বান্ধবীর পরিচয় দিতে বলল। আমি অনেকটা ভয়ে ভয়ে রাত আটটায় মনির বাবার কাছে ফোন করলাম আর মেয়েদের মতো কণ্ঠস্বরে সালাম দিয়ে বললাম—
‘আংকেল! আমি মনির বান্ধবী সাবিনা, মনিকে ফোনটা দেওয়া যাবে?’
মনির বাবা বলল, ‘মা! আমি তো এখন বাজারে, তুমি এক ঘণ্টা পরে ফোন করো।’
কথাটা শোনামাত্রই আমি অনেকটা আনন্দিত হয়ে গেলাম। কেননা, মনির বাবা আমাকে ধরতে পারেননি। বসে বসে সময় গুনতে লাগলাম, কখন এক ঘণ্টা পার হবে। তা ছাড়া অপেক্ষার সময় যেন কিছুতেই শেষ হয় না। ঠিক এক ঘণ্টা পর আমি আবার ফোন করলাম। ওপাশ থেকে মনির বাবা বলে উঠল—
‘হ্যালো, কে?’
‘আংকেল আমি মনির বান্ধবী সাবিনা।’ কথাটা বললাম চাপাস্বরে, ঠিক মেয়েদের মতো।
মনির বাবা আমার কথা বুঝতে না পেরে আমাকে জোরে বলতে বললেন। আমি আবারও বললাম কিছুটা জোরে। তিনি এবারও বুঝতে পারলেন না। তাই বিরক্ত হয়ে আমি এবার অনেক জোরে বললাম—
‘আংকেল! আমি মনির বান্ধবী সাবিনা।’
কথাটা বলেই আমি থমকে গেলাম। কেননা আমি যখন জোরে কথা বলতে গেলাম, তখন মেয়েদের মতো করে না বলে আমি আমার মতো করেই বলে ফেললাম নিজের অজান্তে। আর তখনই শুনতে পেলাম ওপাশ থেকে গালাগালের আওয়াজ ভেসে আসছে। আমি তখন লাইনটা কেটে মোবাইল ফোনটা বন্ধ করে দিলাম। আর নিজের বোকামির জন্য নিজেকে অভিসম্পাত দিলাম।
সাদ্দাম হোসেন
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী।
মনের জানালা
সমস্যা: আমার বয়স ৩০। ২০০২ সালে বিয়ে করি। আমাদের দুটি কন্যাসন্তান আছে।
২০০৮ সালে সরকারি নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকরিতে যোগদান করি। চাকরির সুবাদে আমি
চট্টগ্রামে থাকি। দুই সন্তান নিয়ে আমার স্ত্রী গ্রামের বাড়ি থাকে।
নৈশপ্রহরী হিসেবে কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা সরকারের অন্যান্য ঘোষিত ছুটি না
থাকায় আমার প্রিয় স্ত্রী ও আদরের সন্তানদের দেখতে যাওয়ার তেমন সময় হয় না।
বিকেল পাঁচটা থেকে পরের দিন সকাল নয়টা পর্যন্ত অফিসের সব নিরাপত্তার
দায়িত্ব পালন করতে হয়। রাতে আমি ছাড়া অফিসে আর কেউ থাকে না। তাই নিঃসঙ্গতায়
আমাকে সারা রাত প্রহর গুনতে হয়। এমন নিঃসঙ্গ জীবন নিয়ে সব সময় হতাশায়
ভুগি। মাঝেমধ্যে মন চায় চাকরি ছেড়ে দিই। কিন্তু অবুঝ সন্তানদের ভবিষ্যৎ
চিন্তা করে নিজের বিবেকের কাছে হেরে যাই। আমি সব সময় হীনমন্যতায় ভুগি এবং
নিজেকে খুব নগণ্য মনে হয়। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, এমনকি
স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে কথা বলতেও বিরক্তি বোধ করি। মন চায়, সব সময় একা
থাকি এবং নীরবতা পালন করি। কেউ ভালো কথা বললেও তা আমার কাছে খারাপ মনে হয়।
পিবিসি
সদরঘাট, চট্টগ্রাম।
পরামর্শ: তুমি লেখাপড়া কতটুকু করেছ জানি না, তবে তুমি কিন্তু সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিজের কথাগুলো লিখেছ। শুধু মায়ের পক্ষে সন্তানদের সুন্দরভাবে বড় করা সম্ভব নয়। সন্তানের অধিকার রয়েছে মা-বাবার আদর স্নেহ ও নির্দেশনা নিয়ে পথ চলার। পুরুষদের একটি ভালো অবস্থান তৈরি না করে বিয়ে করা ঠিক নয়। সন্তানকে পৃথিবীতে আনার আগে ভাবা উচিত, মা-বাবা মিলে তাকে একটি সুন্দর পরিবেশ উপহার দিতে পারবেন কি না। তোমার চাকরির শর্তগুলো লিখিতভাবে তোমাকে দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানি না; তবে কোনো ছুটি ছাড়া একটি মানুষকে দিয়ে ১৬ ঘণ্টা নৈশপ্রহরীর কাজ করানো অত্যন্ত অমানবিক এবং যেকোনো দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। এ ছাড়া তুমি পাহারা দেওয়ার সময় সম্পূর্ণ একা থাকছ বলে তোমার পক্ষে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব হচ্ছে না। স্পষ্টতই তুমি বিষণ্নতায় ভুগছ। সে কারণে কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে অত্যন্ত বিরক্ত বোধ করছ। আমার মনে হচ্ছে, তোমার সঙ্গে খুব বড় ধরনের অন্যায় করা হচ্ছে। তুমি চট্টগ্রামে লেবার ডাইরেক্টরেটের অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে পারো, কোনো চাকরির শর্ত এ ধরনের হতে পারে কি না। যারা রাতে ডিউটি করে, তাদের কিন্তু সাধারণত সপ্তাহান্তে আবার দিনের বেলা ডিউটি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছুটির ক্ষেত্রেও পালা করে তারা ছুটি ভোগ করে। কারও মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর কাজের চাপ যেন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সে ব্যবস্থা করা সব সংস্থারই অবশ্য কর্তব্য। তুমি ঠিকই ধারণা করেছ, এ শর্তগুলো মেনে দীর্ঘদিন কাজ করলে ভবিষ্যতে পথ চলতে অসুবিধা হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। তোমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুন্দরভাবে অসুবিধার কথাগুলো আলোচনা করতে পারো। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে এ চাকরিতে থাকা অবস্থাতেই অন্য কোনো চাকরির খোঁজ করতে পারো।
সমস্যা: আমার বয়স ২৮ বছর। স্বামীর বয়স ৩২ বছর। বিয়ের বয়স পাঁচ বছর। আমরা একই অফিসে কর্মরত। আমার স্বামীর সমস্যার কারণে আমরা কোনো দিন মা-বাবা হতে পারব না। ও আমাকে খুব ভালোবাসে। আমিও ভালোবাসি। তবে মাঝেমধ্যে আমি কেমন যেন হয়ে যাই। তখন কাউকে আমার সহ্য হয় না। নিজেকে অসুখী মনে হয়। কোথাও শান্তি পাই না। তখন আমার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। ওকে একদম সহ্য হয় না। মরে যেতে ইচ্ছে করে। অনেকবার মনের দিক থেকে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু মা-বাবা কষ্ট পাবে, এ কারণে তা পারিনি। আমার অন্য কোনো কষ্ট নেই। স্বামী খুব ভালো। এখন আমি কী করলে সুন্দরভাবে স্বামীকে নিয়ে সংসার করতে পারব।
নাবা ইসলাম
মানিকগঞ্জ
পরামর্শ: আমি বুঝতে পারছি, তুমি মা হতে পারবে না মনে করে প্রায়ই অসহায় ও হতাশা বোধ করছ। তুমি অবশ্য জানাওনি, বিয়ের আগেও তোমার মধ্যে বিষণ্নতা ছিল কি না। তোমার শৈশব আনন্দময় ছিল কি না, সেটি জানা খুব প্রয়োজন ছিল। তোমার যদি মনে হয়, মায়ের ভূমিকা তোমার মনের শান্তি নিশ্চিত করবে এবং তোমাকে সুখী করবে, তাহলে কোনো একটি অসহায়-এতিম শিশুর অভিভাবকত্ব নিতে পারো। আমার জানামতে অনেকেই এ ধরনের শিশুকে বুকে তুলে নিয়েছেন এবং তাঁদের জীবনের চিত্র অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে একটি শিশুকে সুন্দরভাবে তার শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আবেগীয় বিকাশ নিশ্চিত করে বড় করা কিন্তু অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। এটি সুষ্ঠুভাবে করার জন্য সুন্দর দাম্পত্য সম্পর্ক ও মা-বাবার সুস্থ মানসিকতা অত্যন্ত প্রয়োজন। তুমি প্রায়ই নিজের ক্ষতি করার কথা ভাবছ বলে আমার মনে হচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বা কাউন্সেলিং গ্রহণ করলে তুমি এভাবে আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাবে না। নিজেকে অনেক ভালোবাসবে এবং জীবনকে একটি উপহার হিসেবে গণ্য করে একে অর্থবহ করে তুলবে। আমাদের ভেতরে যে রাগ, ক্ষোভ, কষ্ট ও ভয় তৈরি হয়, সেগুলো কমিয়ে রেখে সুস্থ ও স্বাভাবিক আচরণ করার দায়িত্ব কিন্তু আমাদের ওপর বর্তায়।
এতে আশপাশের প্রিয় মানুষেরা ভালো থাকতে পারে। আশা করি, তুমি ঢাকায় এসে কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানীর কাছ থেকে কাউন্সেলিংসেবা নিয়ে সুস্থভাবে জীবন যাপনের পথ খুঁজে নেবে। শুভ কামনা রইল।
পিবিসি
সদরঘাট, চট্টগ্রাম।
পরামর্শ: তুমি লেখাপড়া কতটুকু করেছ জানি না, তবে তুমি কিন্তু সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিজের কথাগুলো লিখেছ। শুধু মায়ের পক্ষে সন্তানদের সুন্দরভাবে বড় করা সম্ভব নয়। সন্তানের অধিকার রয়েছে মা-বাবার আদর স্নেহ ও নির্দেশনা নিয়ে পথ চলার। পুরুষদের একটি ভালো অবস্থান তৈরি না করে বিয়ে করা ঠিক নয়। সন্তানকে পৃথিবীতে আনার আগে ভাবা উচিত, মা-বাবা মিলে তাকে একটি সুন্দর পরিবেশ উপহার দিতে পারবেন কি না। তোমার চাকরির শর্তগুলো লিখিতভাবে তোমাকে দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানি না; তবে কোনো ছুটি ছাড়া একটি মানুষকে দিয়ে ১৬ ঘণ্টা নৈশপ্রহরীর কাজ করানো অত্যন্ত অমানবিক এবং যেকোনো দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। এ ছাড়া তুমি পাহারা দেওয়ার সময় সম্পূর্ণ একা থাকছ বলে তোমার পক্ষে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব হচ্ছে না। স্পষ্টতই তুমি বিষণ্নতায় ভুগছ। সে কারণে কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে অত্যন্ত বিরক্ত বোধ করছ। আমার মনে হচ্ছে, তোমার সঙ্গে খুব বড় ধরনের অন্যায় করা হচ্ছে। তুমি চট্টগ্রামে লেবার ডাইরেক্টরেটের অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে পারো, কোনো চাকরির শর্ত এ ধরনের হতে পারে কি না। যারা রাতে ডিউটি করে, তাদের কিন্তু সাধারণত সপ্তাহান্তে আবার দিনের বেলা ডিউটি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছুটির ক্ষেত্রেও পালা করে তারা ছুটি ভোগ করে। কারও মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর কাজের চাপ যেন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সে ব্যবস্থা করা সব সংস্থারই অবশ্য কর্তব্য। তুমি ঠিকই ধারণা করেছ, এ শর্তগুলো মেনে দীর্ঘদিন কাজ করলে ভবিষ্যতে পথ চলতে অসুবিধা হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। তোমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুন্দরভাবে অসুবিধার কথাগুলো আলোচনা করতে পারো। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে এ চাকরিতে থাকা অবস্থাতেই অন্য কোনো চাকরির খোঁজ করতে পারো।
সমস্যা: আমার বয়স ২৮ বছর। স্বামীর বয়স ৩২ বছর। বিয়ের বয়স পাঁচ বছর। আমরা একই অফিসে কর্মরত। আমার স্বামীর সমস্যার কারণে আমরা কোনো দিন মা-বাবা হতে পারব না। ও আমাকে খুব ভালোবাসে। আমিও ভালোবাসি। তবে মাঝেমধ্যে আমি কেমন যেন হয়ে যাই। তখন কাউকে আমার সহ্য হয় না। নিজেকে অসুখী মনে হয়। কোথাও শান্তি পাই না। তখন আমার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। ওকে একদম সহ্য হয় না। মরে যেতে ইচ্ছে করে। অনেকবার মনের দিক থেকে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু মা-বাবা কষ্ট পাবে, এ কারণে তা পারিনি। আমার অন্য কোনো কষ্ট নেই। স্বামী খুব ভালো। এখন আমি কী করলে সুন্দরভাবে স্বামীকে নিয়ে সংসার করতে পারব।
নাবা ইসলাম
মানিকগঞ্জ
পরামর্শ: আমি বুঝতে পারছি, তুমি মা হতে পারবে না মনে করে প্রায়ই অসহায় ও হতাশা বোধ করছ। তুমি অবশ্য জানাওনি, বিয়ের আগেও তোমার মধ্যে বিষণ্নতা ছিল কি না। তোমার শৈশব আনন্দময় ছিল কি না, সেটি জানা খুব প্রয়োজন ছিল। তোমার যদি মনে হয়, মায়ের ভূমিকা তোমার মনের শান্তি নিশ্চিত করবে এবং তোমাকে সুখী করবে, তাহলে কোনো একটি অসহায়-এতিম শিশুর অভিভাবকত্ব নিতে পারো। আমার জানামতে অনেকেই এ ধরনের শিশুকে বুকে তুলে নিয়েছেন এবং তাঁদের জীবনের চিত্র অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে একটি শিশুকে সুন্দরভাবে তার শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আবেগীয় বিকাশ নিশ্চিত করে বড় করা কিন্তু অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। এটি সুষ্ঠুভাবে করার জন্য সুন্দর দাম্পত্য সম্পর্ক ও মা-বাবার সুস্থ মানসিকতা অত্যন্ত প্রয়োজন। তুমি প্রায়ই নিজের ক্ষতি করার কথা ভাবছ বলে আমার মনে হচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বা কাউন্সেলিং গ্রহণ করলে তুমি এভাবে আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাবে না। নিজেকে অনেক ভালোবাসবে এবং জীবনকে একটি উপহার হিসেবে গণ্য করে একে অর্থবহ করে তুলবে। আমাদের ভেতরে যে রাগ, ক্ষোভ, কষ্ট ও ভয় তৈরি হয়, সেগুলো কমিয়ে রেখে সুস্থ ও স্বাভাবিক আচরণ করার দায়িত্ব কিন্তু আমাদের ওপর বর্তায়।
এতে আশপাশের প্রিয় মানুষেরা ভালো থাকতে পারে। আশা করি, তুমি ঢাকায় এসে কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানীর কাছ থেকে কাউন্সেলিংসেবা নিয়ে সুস্থভাবে জীবন যাপনের পথ খুঁজে নেবে। শুভ কামনা রইল।
সোমবার, ১৯ মার্চ, ২০১২
গাড়ি ছিনতাই, আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে উদ্ধার
বাগেরহাট, মার্চ ১৮ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)-আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার
করে ছিনতাই হওয়া একটি গাড়ি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এছাড়া ছিনতাইয়ে জড়িত
সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
গাড়িটির মালিকপক্ষ জানিয়েছে, জিপিএস’র (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) সাহায্যে দূর নিয়ন্ত্রিত ভেহিকল ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করে ছিনতাই হওয়া গাড়িটির অবস্থান শনাক্ত এবং এটির ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়।
শনিবার রাত রাত আড়াইটায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ লিংক রোড থেকে গাড়িটি ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। ভোর ৪টার দিকে তা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন নড়াইলের সিংদিয়া বসুপাড়া গ্রামের মো. সাগর মোল্লা ওরফে লাড্ডু (২৬), শিংগা গ্রামের রমজান আলী মোল্লা (২০), নড়াগাতি উপজেলার বাওইসোনা গ্রামের সিফাত ফকির (২২), লোহাগড়ার ইতনা গ্রামের মিন্টু গাজী (৩০) এবং গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর সরাইকান্দি গ্রামের মো. মনির শরীফ (২৪)।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার সবাই পেশাদার অপরাধী এবং মহাসড়কে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের সদস্য।
ছিনতাই হওয়া গাড়িটি (পিকআপ) এনার্জি প্যাক নামে একটি প্রতিষ্ঠানের।
পিকআপ চালক সাগর মোল্লা (২৫) সাংবাদিকদের বলেন, গাড়ি নিয়ে গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানী সড়কের গোপালপুর পৌঁছলে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে পাঁচ ছিনতাইকারী তাদের থামায় এবং পিকআপ নিয়ে চলে যায়।
ছিনতাইকারীরা তাদের দুজনের কাছে থাকা সাড়ে ১১ হাজার টাকা এবং তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
বিষয়টি তারা এনার্জি প্যাক কর্মকর্তাদের ফোনে জানান।
এনার্জি প্যাকের সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো. সালাহ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের কোম্পানি গাড়িটিতে করে স্থানীয় গ্রামীণফোন টাওয়ারে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে।
“খবর পেয়ে আমরা গ্রামীণফোনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা জিপিএস ব্যবহার করে পিকআপের ইঞ্জিন অচল করে দেয় এবং পিকআপটি বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা এলাকায় আছে বলে শনাক্ত করে।
“সেই অনুযায়ী বাগেরহাট পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা তা উদ্ধার এবং ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে,” বলেন এই প্রকৌশলী।
বাগেরহাট হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. আজিজুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছিতাইকারীরা বুঝতে পারেনি যে দূর থেকে গাড়িটির ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা যান্ত্রিক ক্রুটি হয়েছে মনে করে সারানোর জন্য পাঁচজনে ঠেলে গাড়িটে খুলনার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।
গাড়িটির মালিকপক্ষ জানিয়েছে, জিপিএস’র (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) সাহায্যে দূর নিয়ন্ত্রিত ভেহিকল ট্র্যাকিং সিস্টেম ব্যবহার করে ছিনতাই হওয়া গাড়িটির অবস্থান শনাক্ত এবং এটির ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়।
শনিবার রাত রাত আড়াইটায় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ লিংক রোড থেকে গাড়িটি ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। ভোর ৪টার দিকে তা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার পাঁচজন হলেন নড়াইলের সিংদিয়া বসুপাড়া গ্রামের মো. সাগর মোল্লা ওরফে লাড্ডু (২৬), শিংগা গ্রামের রমজান আলী মোল্লা (২০), নড়াগাতি উপজেলার বাওইসোনা গ্রামের সিফাত ফকির (২২), লোহাগড়ার ইতনা গ্রামের মিন্টু গাজী (৩০) এবং গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীর সরাইকান্দি গ্রামের মো. মনির শরীফ (২৪)।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার সবাই পেশাদার অপরাধী এবং মহাসড়কে সংঘবদ্ধ গাড়ি ছিনতাই চক্রের সদস্য।
ছিনতাই হওয়া গাড়িটি (পিকআপ) এনার্জি প্যাক নামে একটি প্রতিষ্ঠানের।
পিকআপ চালক সাগর মোল্লা (২৫) সাংবাদিকদের বলেন, গাড়ি নিয়ে গোপালগঞ্জ-কাশিয়ানী সড়কের গোপালপুর পৌঁছলে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে পাঁচ ছিনতাইকারী তাদের থামায় এবং পিকআপ নিয়ে চলে যায়।
ছিনতাইকারীরা তাদের দুজনের কাছে থাকা সাড়ে ১১ হাজার টাকা এবং তিনটি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।
বিষয়টি তারা এনার্জি প্যাক কর্মকর্তাদের ফোনে জানান।
এনার্জি প্যাকের সিনিয়র অ্যাসিসটেন্ট সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো. সালাহ উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তাদের কোম্পানি গাড়িটিতে করে স্থানীয় গ্রামীণফোন টাওয়ারে জ্বালানি তেল সরবরাহ করে।
“খবর পেয়ে আমরা গ্রামীণফোনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তারা জিপিএস ব্যবহার করে পিকআপের ইঞ্জিন অচল করে দেয় এবং পিকআপটি বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলা এলাকায় আছে বলে শনাক্ত করে।
“সেই অনুযায়ী বাগেরহাট পুলিশকে বিষয়টি জানালে তারা তা উদ্ধার এবং ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করে,” বলেন এই প্রকৌশলী।
বাগেরহাট হাইওয়ে পুলিশের ওসি মো. আজিজুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছিতাইকারীরা বুঝতে পারেনি যে দূর থেকে গাড়িটির ইঞ্জিন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারা যান্ত্রিক ক্রুটি হয়েছে মনে করে সারানোর জন্য পাঁচজনে ঠেলে গাড়িটে খুলনার দিকে নিয়ে যাচ্ছিল।
কেট উইন্সলেটের মঞ্চ অভিষেক অনলাইন ডেস্ক
প্রথমবারের
মতো মঞ্চে অভিনয়ের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত ‘টাইটানিক’খ্যাত ব্রিটিশ
অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট। ব্রিটিশ নাট্যকার ও চিত্রনির্মাতা ডেভিড হেয়ারের
পরিচালনায় ‘স্কাইলাইট’ নাটকে অভিনয় করবেন তিনি। নাটকটিতে তাঁর সঙ্গে আরও
অভিনয় করবেন বর্ষীয়ান ব্রিটিশ অভিনেতা বিল নাইটি।
এ প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ‘মঞ্চে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে আছেন কেট। স্কাইলাইট নাটকটির চিত্রনাট্য খুবই পছন্দ করেছেন তিনি। কেট আন্তরিকভাবেই চাইছেন নাটকটিতে অভিনয় করতে। বিষয়টি নিয়ে পরিচালক ডেভিড হেয়ারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনার টেবিলেও বসেছেন তিনি।’
অবশ্য নাটকটি লন্ডনের ওয়েস্ট এন্ডে, নাকি নিউইয়র্কের ব্রডওয়েতে মঞ্চস্থ হবে, তা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।
এ প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ‘মঞ্চে অভিনয়ের জন্য মুখিয়ে আছেন কেট। স্কাইলাইট নাটকটির চিত্রনাট্য খুবই পছন্দ করেছেন তিনি। কেট আন্তরিকভাবেই চাইছেন নাটকটিতে অভিনয় করতে। বিষয়টি নিয়ে পরিচালক ডেভিড হেয়ারের সঙ্গে বেশ কয়েকবার আলোচনার টেবিলেও বসেছেন তিনি।’
অবশ্য নাটকটি লন্ডনের ওয়েস্ট এন্ডে, নাকি নিউইয়র্কের ব্রডওয়েতে মঞ্চস্থ হবে, তা এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়নি।
গুগলে তথ্য খোঁজার ক্ষেত্রে আসছে পরিবর্তন
জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলের তথ্য খোঁজার (সার্চ) ক্ষেত্রে পরিবর্তন আসছে।
খুব শিগগির অ্যালগরিদম অনুযায়ী কাজ করবে গুগল, যেখানে অতিরিক্ত সার্চ
ইঞ্জিন অপটিমাইজ (এসইও) করা পাতাগুলোর ক্রমন্বতা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কমে যাবে
এবং সেগুলো সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পৃষ্ঠা থেকে সরে যাবে।
ভালো তথ্য আছে, এমন সাইটগুলো যাতে শীর্ষে থাকে, সে জন্যই গুগলের এ উদ্যোগ বলে জানা গেছে। বর্তমানে ভালো তথ্যের অনেক ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষে থাকছে না। আবার দেখা যাচ্ছে, তুলনামূলক কম তথ্যের ওয়েবসাইটগুলো এসইওর মাধ্যমে শীর্ষ স্থান দখল করে আছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্যই গুগলের এমন উদ্যোগ।
এ বিষয়ে গুগলের ফেলো অমিত সিংগাল সম্প্রতি জানান, ‘আমরা ব্যবহারকারীদের দারুণ কিছু নতুন সেবা দিতেই এ ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছি।’ এর আগে ‘ডিয়ার গুগল অ্যান্ড বিং: হেল্প মি র্যাঙ্ক বেটার’ শীর্ষক এক সেমিনারেও গুগলের সার্চ ইঞ্জিন বিভাগের ম্যাট কাটস এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান। তিনি জানান, গুগলবটকে আরও উন্নত করার কাজ চলছে, যাতে করে তথ্য খোঁজার সুবিধাটি আরও সঠিক হবে। এর পাশাপাশি এসইও করার ক্ষেত্রে যাঁরা অযাচিত কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি। অতি মাত্রায় অযাচিত কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা সাইটগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সঠিক ও ভালো তথ্যের ওয়েবসাইটকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এ বিষয়ে গুগলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা।—টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং সার্চ র্যাকিং অবলম্বনে কাজী আশফাক আলম
ভালো তথ্য আছে, এমন সাইটগুলো যাতে শীর্ষে থাকে, সে জন্যই গুগলের এ উদ্যোগ বলে জানা গেছে। বর্তমানে ভালো তথ্যের অনেক ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনের শীর্ষে থাকছে না। আবার দেখা যাচ্ছে, তুলনামূলক কম তথ্যের ওয়েবসাইটগুলো এসইওর মাধ্যমে শীর্ষ স্থান দখল করে আছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্যই গুগলের এমন উদ্যোগ।
এ বিষয়ে গুগলের ফেলো অমিত সিংগাল সম্প্রতি জানান, ‘আমরা ব্যবহারকারীদের দারুণ কিছু নতুন সেবা দিতেই এ ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছি।’ এর আগে ‘ডিয়ার গুগল অ্যান্ড বিং: হেল্প মি র্যাঙ্ক বেটার’ শীর্ষক এক সেমিনারেও গুগলের সার্চ ইঞ্জিন বিভাগের ম্যাট কাটস এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান। তিনি জানান, গুগলবটকে আরও উন্নত করার কাজ চলছে, যাতে করে তথ্য খোঁজার সুবিধাটি আরও সঠিক হবে। এর পাশাপাশি এসইও করার ক্ষেত্রে যাঁরা অযাচিত কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি। অতি মাত্রায় অযাচিত কি-ওয়ার্ড ব্যবহার করা সাইটগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সঠিক ও ভালো তথ্যের ওয়েবসাইটকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আর এ বিষয়ে গুগলের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন তাঁরা।—টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং সার্চ র্যাকিং অবলম্বনে কাজী আশফাক আলম
1pinless.com রসকারণ লাজে রাঙা হই কেন? আব্দুল কাইয়ুম
মনে
করুন সেই দিনটির কথা, যখন সব জড়তা কাটিয়ে আপনি প্রেম নিবেদন করলেন।
ভালোবাসার মানুষটির লজ্জাবনত মুখ লাল হয়ে উঠল, আর আপনি ঘামতে শুরু করলেন।
আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লে চোখ-মুখ লাল হয়ে যায়। কারণ, বিব্রতকর অবস্থা সামাল
দিতে রক্ত সরবরাহ বেড়ে যায়। তখন মুখ ও শরীরের অন্যান্য অংশের রক্তবাহী ধমনি
প্রসারিত হয়। মুখমণ্ডলে তার ছাপ পড়ে। এ জন্য লাল দেখায়। একে ইংরেজিতে বলে
‘ব্লাশিং’, যাকে সাদা বাংলায় বলা হয় ‘লাজে রাঙা’ হওয়া। বাড়তি রক্তপ্রবাহের
কারণে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ে। এই খবর চামড়ার স্নায়ুর মাধ্যমে
মস্তিষ্কে পৌঁছায়। এর প্রতিক্রিয়ায় যেমন চোখ-মুখ গরম হয়ে ওঠে, তেমনি ঘাম
দিয়ে জ্বর ছাড়ার মতো অবস্থা হয়। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ আবেগ-অনুভূতি
নিয়ন্ত্রণ করার কৌশল আয়ত্ত করে নেয়। তাই লাজে রাঙার ব্যাপারটা সাধারণত
তরুণ-তরুণীদের বেলায়ই দেখা যায়।
1pinless.com ফেসবুক সংস্করণ মীনা কার্টুন আসিফ ইয়ামিন
একদিন মীনা আর মিঠু রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ মীনা দেখল, কিছু ছেলেমেয়ে
একসঙ্গে সুর করে কী যেন বলছে! মীনা আর মিঠু চুপি চুপি ছেলেমেয়েগুলোর পেছনে
গিয়ে উঁকি দিল! মীনা দেখতে পেল, তাদের সামনে ল্যাপটপে ফেসবুকের হোমপেজ
খোলা। সেখান থেকে তারা সফদার আলী নামের এক ব্যক্তির স্ট্যাটাস সুর করে
পড়ছে! সফদার আলী সাহেব লিখেছেন—
আতা গাছে তোতা পাখি
নারকেল গাছে ডাব!
এত ডাকি তবু কথা
কও না কেন Love?
বেশ কয়েকবার তারা সুর করে এই স্ট্যাটাসটা পড়ল। তারপর তাদের মধ্যকার একটি ছেলে বলতে শুরু করল, ‘বন্ধুরা, এবার একটা গল্প শোনাই! অনেক দিন আগে ফেসবুকে কিছু পেজ ছিল। পেজগুলোতে অনেক লাইকার ছিল। লাইকার থাকলে কী হবে, তাদের পোস্টে কোনো লাইক ছিল না। একদিন হলো কি, পেজগুলোর অ্যাডমিনরা সবার হোমপেজে এসে ভিক্ষা করা শুরু করল—‘আমাকে লাইক দাও। আমাকে লাইক দাও। ভালো লাগলে লাইক মাস্ট।’
গল্পকথক ছেলেটা গল্প থামিয়ে তার বন্ধুদের প্রশ্ন করল, ‘বলো তো, অ্যাডমিনরা কী বলে ভিক্ষা করছিল?’
পেছন থেকে মিঠু চেঁচিয়ে উত্তর দিয়ে দিল, ‘আমাকে লাইক দাও। ভালো লাগলে লাইক মাস্ট।’
মিঠুর কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে ফেলল। আর তখনই মীনা দৌড়ে পালাল। মিঠুও উড়াল দিল!
মীনা বাড়িতে এসে দেখল, গ্রামের মাতবর চাচা মীনার বাবাকে বলছেন, ‘কাল রাইতে চোরডা আমার পোলার কাছ থেকে ফ্লেক্সিলোড নিয়া নিছে। ফেসবুকে মাইয়া সাইজা আমার পোলারে পটাইছে। আচ্ছা, আমি এহন যাই। তুমি ফেসবুকে চোখকান খোলা রাখবা। চোরডারে ধরতে হইব!’
এ কথা বলে চাচা চলে গেলেন।
তখনই রাজু ফেসবুকিং শেষ করে ঘর থেকে বের হলো! বাবা রাজুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘রাজু, ফেসবুকে কী শিখলা, বাবা?’
রাজু উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, ‘অনেক কিছু! আমি এহন ফেসবুকে স্ট্যাটাস লেখতে পারি।’
ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা বললেন, ‘খুব ভালা কথা। তুমি কিন্তু মন দিয়ে ফেসবুকিং করবা।’
এদিকে মীনা মন খারাপ করে বলল, ‘বাবা, আমিও ফেসবুকে যাইতে চাই।’
রাজুও সমর্থন জানাল, ‘আমার লগে যাইতে পারে। আমি যামু ক্রোম দিয়া, আর মীনা যাইব ফায়ারফক্স দিয়া।’
কিন্তু বাবা শোনালেন নিরাশার বাণী, ‘না, মীনা, তুমি থাকবা তোমার মায়ের লগে।’
মীনার কণ্ঠে আকুতি, ‘কিন্তু, বাবা, আমি ফেসবুকিং শিখতে চাই!’
বাবা বললেন, ‘মাইয়াগো ফেসবুকে যাওনের দরকার নাই।’
মীনার মা বললেন, ‘তুমি শিখবা ঘরবাড়ির কাম।’
মীনা আবারও বলল, ‘কিন্তু, মা, আমারও ফেসবুকে স্ট্যাটাস থাকা উচিত।’
মা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘ক্যান, মীনা? কী দরকার এসবের? অহন একটু টিভিতে স্টার প্লাস ছাইড়া দাও তো। সিরিয়াল শুরু হইয়া গেল!’
পরদিন সকালে রাজু ফেসবুকিং করতে বসল। হঠাৎ মীনার মাথায় একটা বুদ্ধি এল। মীনা মিঠুকে বলল, ‘আচ্ছা, মিঠু, তুমি গতকাইলের ওই জায়গায় যাও! ওই পোলা-মাইয়ারা ফেসবুক নিয়া কী কী কথা কয়, জাইনা আহো। তহন তুমি আমারে শিখাইতে পারবা! লক্ষ্মী মিঠু, যাও।’
মিঠু উড়তে উড়তে সেই ছেলেমেয়েগুলোর কাছে গেল। ছেলেটি সবাইকে বলছিল, আজ আমরা শিখব কীভাবে ফেসবুকের ফেক আইডি শনাক্ত করা যায়।
১. ফেক আইডিগুলো মেয়েরূপী হয়।
২. এদের প্রোফাইল পিকচারগুলোর একটার সঙ্গে অন্যটার কোনো মিল থাকে না!
৩. এদের ফ্রেন্ডলিস্ট পরিপূর্ণ!
৪. এরা স্ট্যাটাস দেয়—আমার খুবই মন খারাপ। কেউ আমার মন ভালো করতে পারবে?
তখনই গাধারা সেই ফেক আইডির ইনবক্সে তেলের বন্যা বানায় ফেলে!
৫. এদের প্রোফাইলে লেখা থাকে, আই অ্যাম সো সুইট, নাইস, কিউট, সিম্পল, ফ্রেন্ডলি garl। (girl বানানটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুল থাকে!)
৬. ...
৭. ...
৮. ...
মিঠু খুব মনোযোগ দিয়ে শুনল! তারপর মীনার কাছে গিয়ে এগুলো বলল! মীনা পয়েন্টগুলো মুখস্থ করে নিল।
দুপুরবেলায় রাজু হঠাৎ ফেসবুকিং ছেড়ে বাইরে দৌড় দিল। এই সুযোগে ঘরে গিয়ে মীনা তখন পিসির স্ক্রিনে চোখ রাখল। হ্যাঁ, লগইন করাই আছে! প্রথমেই সে রাজুর প্রোফাইলে গেল! রাজুর আইডি নেম দেখে তো মীনা অবাক! স্ক্রিনে বড় বড় অক্ষরে লেখা, ‘রোমিও রাজু!’ রাজু আবার স্ট্যাটাস দিয়েছে, ‘who wanna be my ছাম্মাক ছাল্লো??!!’
চ্যাট হিস্টরি দেখে মীনার চক্ষু চড়কগাছ! অ্যাঞ্জেলিনা জোলি—‘hey handsome, ki koro?’
রোমিও রাজু—‘wow!! thanku!! tomar msg peye khub valo asi! tumi kmon aso?’
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি—‘jano, ami valo nai.. amar mobile e balance nai.’
রোমিও রাজু—‘ami thakte how is this possible on planet earth? tomar mob num daOOO!!’
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি—‘eto sweetly bolla! okay, 017********’
রোমিও রাজু—‘plz wait!’
এরপর আর কিছু নেই। তার মানে, রাজু এই মেয়েকেই ফ্লেক্সিলোড দিতে বাইরে গেছে! মীনার মনে একটা সন্দেহ জাগল। এটা ফেক আইডি না তো? মীনা অ্যাঞ্জেলিনা জোলির প্রোফাইলে গেল। অনুসন্ধান শুরু করল মীনা! হ্যাঁ, যা ভেবেছিল!
এর প্রোফাইল পিকচারগুলো একটার সঙ্গে অন্যটার মিল নেই! এর ফ্রেন্ডলিস্ট পরিপূর্ণ! এ স্ট্যাটাস দিয়েছে—‘I am so lonely broken angel...’সেখানে আবার রাজুর তৈলাক্ত কমেন্ট! এর প্রোফাইলে লেখা—‘আই অ্যাম সো সুইট, নাইস, কিউট, সিম্পল, ফ্রেন্ডলি garl!’
মীনার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটা ফেক আইডি! মীনা তার উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির ই-মেইল ঠিকানা লিখে রাখল এবং তখনই ফেক আইডি প্রতিরোধক পুলিশের কাছে ফোন করল।
‘হ্যালো, পুলিশ আংকেল?’
‘পুলিশ ইন্সপেক্টর ওমুক তমুক বলছি! কী করতে পারি?’
‘আমি একটা ফেক ফেসবুক আইডি ধরেছি। অ্যাঞ্জেলিনা জোলির ই-মেইল ঠিকানা : flexi_seeker@yahoo.com’
‘সত্যি! আমরা একেই এত দিন ধরে খুঁজছিলাম! বারবার আইডি ডিঅ্যাকটিভেট আর পরিবর্তন করে শয়তানটা পার পেয়ে যাচ্ছিল। এবার আর কেউ কালপ্রিটটাকে আমার হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না। প্রমোশন আমার হবেই!’
........
‘অ্যাঞ্জেলিনা জোলি’ নামধারী দুষ্টু ছেলে দিপুকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। সব শুনে মাদবর চাচা বললেন, ‘আরেহহহ! এইডাই তো সেই চোর! “অ্যাঞ্জেলিনা জোলি” নামেই আমার পোলাকে মেসেজ পাঠাইছিল! মীনা, তোমার লাইগা চোরডারে ধরতে পারলাম! তুমি এই চোরডারে চিনলা কেমনে?’
মীনা হেসে বলল, ‘আমি একটু ফেসবুকিং করছিলাম।’
মীনার বাবা বললেন, ‘তুমি কি করছিলা কইলা?’ মীনার হাসি হাসি উত্তর, ‘আমি ফেক আইডি শনাক্তকরণের লাইগা অনুসন্ধান করছিলাম।’
চাচা তখন মীনার বাবাকে বললেন, ‘বাহ! তুমি মিয়া তোমার মাইয়ারে ফেসবুকে দিয়া খুবই বুদ্ধিমানের কাজ করছ।’
মীনার বাবা আমতা আমতা শুরু করলেন, ‘ইয়ে মানে, ইয়ে ইয়ে...।’
বুড়ি মহিলা বললেন, ‘হ, মাইয়াগো ফেসবুকিং করানো খুবই ভালা! আমার মাইয়া রত্নার একটা পেজ আছে! কত্তো লাইক পায়!’
অন্য একজন বলল, ‘আমার মাইয়াডা ফেসবুকিং করছে। হে এহন নোট লিখবার পারে।’
চাচা আবার বললেন, ‘হুম, সব মাইয়াগো ফেসবুকে যাওন উচিত।’
মীনার বাবা তাঁর ভুল বুঝতে পেরে মীনাকে বললেন, ‘মীনা, কাল থেইকা তুমি ফেসবুকে যাইবা।’
মীনা আনন্দে ফেটে পড়ল, ‘হাচা কইছ, বাবা?’
বাবা ভরসা দিয়ে বললেন, ‘হাচা কইছি, মা!’
পরদিন থেকে মীনা মনের সুখে ফেসবুকিং শুরু করল।
আতা গাছে তোতা পাখি
নারকেল গাছে ডাব!
এত ডাকি তবু কথা
কও না কেন Love?
বেশ কয়েকবার তারা সুর করে এই স্ট্যাটাসটা পড়ল। তারপর তাদের মধ্যকার একটি ছেলে বলতে শুরু করল, ‘বন্ধুরা, এবার একটা গল্প শোনাই! অনেক দিন আগে ফেসবুকে কিছু পেজ ছিল। পেজগুলোতে অনেক লাইকার ছিল। লাইকার থাকলে কী হবে, তাদের পোস্টে কোনো লাইক ছিল না। একদিন হলো কি, পেজগুলোর অ্যাডমিনরা সবার হোমপেজে এসে ভিক্ষা করা শুরু করল—‘আমাকে লাইক দাও। আমাকে লাইক দাও। ভালো লাগলে লাইক মাস্ট।’
গল্পকথক ছেলেটা গল্প থামিয়ে তার বন্ধুদের প্রশ্ন করল, ‘বলো তো, অ্যাডমিনরা কী বলে ভিক্ষা করছিল?’
পেছন থেকে মিঠু চেঁচিয়ে উত্তর দিয়ে দিল, ‘আমাকে লাইক দাও। ভালো লাগলে লাইক মাস্ট।’
মিঠুর কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে ফেলল। আর তখনই মীনা দৌড়ে পালাল। মিঠুও উড়াল দিল!
মীনা বাড়িতে এসে দেখল, গ্রামের মাতবর চাচা মীনার বাবাকে বলছেন, ‘কাল রাইতে চোরডা আমার পোলার কাছ থেকে ফ্লেক্সিলোড নিয়া নিছে। ফেসবুকে মাইয়া সাইজা আমার পোলারে পটাইছে। আচ্ছা, আমি এহন যাই। তুমি ফেসবুকে চোখকান খোলা রাখবা। চোরডারে ধরতে হইব!’
এ কথা বলে চাচা চলে গেলেন।
তখনই রাজু ফেসবুকিং শেষ করে ঘর থেকে বের হলো! বাবা রাজুকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘রাজু, ফেসবুকে কী শিখলা, বাবা?’
রাজু উচ্ছ্বসিত হয়ে বলল, ‘অনেক কিছু! আমি এহন ফেসবুকে স্ট্যাটাস লেখতে পারি।’
ছেলের সাফল্যে গর্বিত বাবা বললেন, ‘খুব ভালা কথা। তুমি কিন্তু মন দিয়ে ফেসবুকিং করবা।’
এদিকে মীনা মন খারাপ করে বলল, ‘বাবা, আমিও ফেসবুকে যাইতে চাই।’
রাজুও সমর্থন জানাল, ‘আমার লগে যাইতে পারে। আমি যামু ক্রোম দিয়া, আর মীনা যাইব ফায়ারফক্স দিয়া।’
কিন্তু বাবা শোনালেন নিরাশার বাণী, ‘না, মীনা, তুমি থাকবা তোমার মায়ের লগে।’
মীনার কণ্ঠে আকুতি, ‘কিন্তু, বাবা, আমি ফেসবুকিং শিখতে চাই!’
বাবা বললেন, ‘মাইয়াগো ফেসবুকে যাওনের দরকার নাই।’
মীনার মা বললেন, ‘তুমি শিখবা ঘরবাড়ির কাম।’
মীনা আবারও বলল, ‘কিন্তু, মা, আমারও ফেসবুকে স্ট্যাটাস থাকা উচিত।’
মা বিরক্ত হয়ে বললেন, ‘ক্যান, মীনা? কী দরকার এসবের? অহন একটু টিভিতে স্টার প্লাস ছাইড়া দাও তো। সিরিয়াল শুরু হইয়া গেল!’
পরদিন সকালে রাজু ফেসবুকিং করতে বসল। হঠাৎ মীনার মাথায় একটা বুদ্ধি এল। মীনা মিঠুকে বলল, ‘আচ্ছা, মিঠু, তুমি গতকাইলের ওই জায়গায় যাও! ওই পোলা-মাইয়ারা ফেসবুক নিয়া কী কী কথা কয়, জাইনা আহো। তহন তুমি আমারে শিখাইতে পারবা! লক্ষ্মী মিঠু, যাও।’
মিঠু উড়তে উড়তে সেই ছেলেমেয়েগুলোর কাছে গেল। ছেলেটি সবাইকে বলছিল, আজ আমরা শিখব কীভাবে ফেসবুকের ফেক আইডি শনাক্ত করা যায়।
১. ফেক আইডিগুলো মেয়েরূপী হয়।
২. এদের প্রোফাইল পিকচারগুলোর একটার সঙ্গে অন্যটার কোনো মিল থাকে না!
৩. এদের ফ্রেন্ডলিস্ট পরিপূর্ণ!
৪. এরা স্ট্যাটাস দেয়—আমার খুবই মন খারাপ। কেউ আমার মন ভালো করতে পারবে?
তখনই গাধারা সেই ফেক আইডির ইনবক্সে তেলের বন্যা বানায় ফেলে!
৫. এদের প্রোফাইলে লেখা থাকে, আই অ্যাম সো সুইট, নাইস, কিউট, সিম্পল, ফ্রেন্ডলি garl। (girl বানানটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভুল থাকে!)
৬. ...
৭. ...
৮. ...
মিঠু খুব মনোযোগ দিয়ে শুনল! তারপর মীনার কাছে গিয়ে এগুলো বলল! মীনা পয়েন্টগুলো মুখস্থ করে নিল।
দুপুরবেলায় রাজু হঠাৎ ফেসবুকিং ছেড়ে বাইরে দৌড় দিল। এই সুযোগে ঘরে গিয়ে মীনা তখন পিসির স্ক্রিনে চোখ রাখল। হ্যাঁ, লগইন করাই আছে! প্রথমেই সে রাজুর প্রোফাইলে গেল! রাজুর আইডি নেম দেখে তো মীনা অবাক! স্ক্রিনে বড় বড় অক্ষরে লেখা, ‘রোমিও রাজু!’ রাজু আবার স্ট্যাটাস দিয়েছে, ‘who wanna be my ছাম্মাক ছাল্লো??!!’
চ্যাট হিস্টরি দেখে মীনার চক্ষু চড়কগাছ! অ্যাঞ্জেলিনা জোলি—‘hey handsome, ki koro?’
রোমিও রাজু—‘wow!! thanku!! tomar msg peye khub valo asi! tumi kmon aso?’
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি—‘jano, ami valo nai.. amar mobile e balance nai.’
রোমিও রাজু—‘ami thakte how is this possible on planet earth? tomar mob num daOOO!!’
অ্যাঞ্জেলিনা জোলি—‘eto sweetly bolla! okay, 017********’
রোমিও রাজু—‘plz wait!’
এরপর আর কিছু নেই। তার মানে, রাজু এই মেয়েকেই ফ্লেক্সিলোড দিতে বাইরে গেছে! মীনার মনে একটা সন্দেহ জাগল। এটা ফেক আইডি না তো? মীনা অ্যাঞ্জেলিনা জোলির প্রোফাইলে গেল। অনুসন্ধান শুরু করল মীনা! হ্যাঁ, যা ভেবেছিল!
এর প্রোফাইল পিকচারগুলো একটার সঙ্গে অন্যটার মিল নেই! এর ফ্রেন্ডলিস্ট পরিপূর্ণ! এ স্ট্যাটাস দিয়েছে—‘I am so lonely broken angel...’সেখানে আবার রাজুর তৈলাক্ত কমেন্ট! এর প্রোফাইলে লেখা—‘আই অ্যাম সো সুইট, নাইস, কিউট, সিম্পল, ফ্রেন্ডলি garl!’
মীনার আর বুঝতে বাকি রইল না যে এটা ফেক আইডি! মীনা তার উপস্থিত বুদ্ধি দিয়ে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির ই-মেইল ঠিকানা লিখে রাখল এবং তখনই ফেক আইডি প্রতিরোধক পুলিশের কাছে ফোন করল।
‘হ্যালো, পুলিশ আংকেল?’
‘পুলিশ ইন্সপেক্টর ওমুক তমুক বলছি! কী করতে পারি?’
‘আমি একটা ফেক ফেসবুক আইডি ধরেছি। অ্যাঞ্জেলিনা জোলির ই-মেইল ঠিকানা : flexi_seeker@yahoo.com’
‘সত্যি! আমরা একেই এত দিন ধরে খুঁজছিলাম! বারবার আইডি ডিঅ্যাকটিভেট আর পরিবর্তন করে শয়তানটা পার পেয়ে যাচ্ছিল। এবার আর কেউ কালপ্রিটটাকে আমার হাত থেকে বাঁচাতে পারবে না। প্রমোশন আমার হবেই!’
........
‘অ্যাঞ্জেলিনা জোলি’ নামধারী দুষ্টু ছেলে দিপুকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ। সব শুনে মাদবর চাচা বললেন, ‘আরেহহহ! এইডাই তো সেই চোর! “অ্যাঞ্জেলিনা জোলি” নামেই আমার পোলাকে মেসেজ পাঠাইছিল! মীনা, তোমার লাইগা চোরডারে ধরতে পারলাম! তুমি এই চোরডারে চিনলা কেমনে?’
মীনা হেসে বলল, ‘আমি একটু ফেসবুকিং করছিলাম।’
মীনার বাবা বললেন, ‘তুমি কি করছিলা কইলা?’ মীনার হাসি হাসি উত্তর, ‘আমি ফেক আইডি শনাক্তকরণের লাইগা অনুসন্ধান করছিলাম।’
চাচা তখন মীনার বাবাকে বললেন, ‘বাহ! তুমি মিয়া তোমার মাইয়ারে ফেসবুকে দিয়া খুবই বুদ্ধিমানের কাজ করছ।’
মীনার বাবা আমতা আমতা শুরু করলেন, ‘ইয়ে মানে, ইয়ে ইয়ে...।’
বুড়ি মহিলা বললেন, ‘হ, মাইয়াগো ফেসবুকিং করানো খুবই ভালা! আমার মাইয়া রত্নার একটা পেজ আছে! কত্তো লাইক পায়!’
অন্য একজন বলল, ‘আমার মাইয়াডা ফেসবুকিং করছে। হে এহন নোট লিখবার পারে।’
চাচা আবার বললেন, ‘হুম, সব মাইয়াগো ফেসবুকে যাওন উচিত।’
মীনার বাবা তাঁর ভুল বুঝতে পেরে মীনাকে বললেন, ‘মীনা, কাল থেইকা তুমি ফেসবুকে যাইবা।’
মীনা আনন্দে ফেটে পড়ল, ‘হাচা কইছ, বাবা?’
বাবা ভরসা দিয়ে বললেন, ‘হাচা কইছি, মা!’
পরদিন থেকে মীনা মনের সুখে ফেসবুকিং শুরু করল।
1pinless.com মাঝারি ভূমিকম্পও ঢাকায় বিপর্যয় ঘটাতে পারে মেহেদী আহম্মদ আনসারী
রাজধানীর আশপাশের এলাকায় গত চার মাসের মধ্যে দুই দফা মাঝারি মাত্রার
ভূমিকম্প হয়ে গেল। এতে করে মনে হচ্ছে, এ এলাকার ভূ-অভ্যন্তরে ফাটল থাকতে
পারে। তবে এই ফাটল থেকে তীব্র মাত্রার ভূমিকম্পের আশঙ্কা কম। হালকা থেকে
মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প সৃষ্টি হতে পারে।
অবশ্য মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও ঢাকায় বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। কারণ, রাজধানীর ৪৭ শতাংশ আবাসন এলাকা জলাভূমি ভরাট করে ও নরম মাটির ওপর গড়ে উঠেছে।
ঢাকার আশপাশে এর আগে মাঝারি থেকে বড় মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়নি। এত দিন আমাদের ধারণা ছিল, ঢাকার আশপাশে ভূমিকম্পের কোনো উৎসস্থল নেই। গতকাল ও সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলোর ধরন ও উৎসস্থল দেখে মনে হচ্ছে, ঢাকার অদূরেও ভূমিকম্পের আরও উৎসস্থল থাকতে পারে। ফলে সে অনুযায়ী আমাদের ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে আরও সাবধানী হতে হবে।
রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের অপরিকল্পিত নগরায়ন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। কিন্তু মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প প্রতিরোধের মতো ব্যবস্থা ভবনগুলোতে নেই। অন্যদিকে এই নগরগুলোর প্রায় অর্ধেক ভূমি বেশ নরম। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে জলাভূমি ভরাট করে আবাসন প্রকল্প নির্মাণ। এই এলাকাগুলো ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
সরকার একটি ইমারত নির্মাণ বিধিমালা করেছে। তার বেশ কিছু দিক রাজউকের মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু ভূমিকম্প প্রতিরোধের বিষয়টি এখনো উপেক্ষিত। আমাদের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভবনগুলোকে ভূমিকম্প প্রতিরোধক হিসেবে নির্মাণ করতে যে ধরনের ব্যবস্থা থাকা দরকার। বেশির ভাগ ভবনেই তা নেই। ফলে মাঝারি মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্রায় দুই কোটি নগরবাসীর কেউই ভূমিকম্পের ঝুঁকির বাইরে নয়। ফলে সামগ্রিকভাবে নগরগুলোতে ভূমিকম্প প্রতিরোধক ভবন নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা উচিত। নয়তো যেকোনো সময় মহা বিপর্যয় নেমে আসবে।
যেসব ভবন ইতিমধ্যে ভূমিকম্প প্রতিরোধব্যবস্থা ছাড়াই গড়ে উঠেছে, তাদের জন্য পুনরায় ভূমিকম্প সহনীয় (কেট্রোফিটিং) হিসেবে গড়ে তোলার প্রযুক্তিও রয়েছে। তবে এটি বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্প প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়ার খরচ খুব বেশি নয়। এ ক্ষেত্রে ভবন নির্মাণকারীর সদিচ্ছা ও সচেতনতাই যথেষ্ট। রাজউকেরও এ ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে।
রাজউকের উচিত, নিরাপদ নগর নিশ্চিত করতে প্রতিটি ভবন নির্মাণের সময় ও নির্মাণের পরে ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়টি নিশ্চিত করা। সরকারি এই সংস্থাটি চাইলে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ভবন নির্মাণ নজরদারির বিষয়টি দেখভাল করতে পারে।
আমরা আমাদের বিভিন্ন গবেষণায় আরও দেখেছি, ভবন নির্মাতারা নিম্নমানের রড, সিমেন্ট দিয়ে থাকে। এতে সঠিক কাঠামো অনুসরণ করে ভবন ঠিকই নির্মিত হয়। কিন্তু ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েই যায়। অন্যদিকে ভবনের ভিত্তি নির্মাণ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না এবং ভিত্তির নিচের মাটি ভূমিকম্প-সহনীয় হয়েছে কি না, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।
রাজধানীর সাম্প্রতিক ভবন নির্মাণের ধরন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ভবনের নিচতলায় গাড়ি রাখার স্থান হিসেবে ফাঁকা রাখা হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক হলেও এ ক্ষেত্রে গলদ দেখা গেছে। ওপরের তলার তুলনায় নিচতলার অংশের ভবনের স্তম্ভ (কলাম) আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ নির্মাতা এটি অনুসরণ করেন না। অনেক ক্ষেত্রে বিম ছাড়া (ফ্ল্যাট প্লেট) ভবন নির্মিত হচ্ছে। এ ধরনের ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নগরেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু কোন নগরে ভূমিকম্পের কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হবে, তা নির্ভর করে প্রস্তুতির ওপর। যেমন ২০১০ সালে চিলিতে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এতে মাত্র ৫০০ জন মারা যায়। খুব কম ভবনই ভেঙে পড়ে। এটা সম্ভব হয়েছিল চিলি সরকারের ভূমিকম্প প্রতিরোধে নেওয়া পূর্বপ্রস্তুতি ও আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে। অন্যদিকে একই সময়ে সংঘটিত হাইতিতে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই লাখ ২০ হাজার মানুষ মারা যায়। সে দেশের রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সের ৬০ শতাংশ ভবন ভেঙে পড়ে। এমনকি হাইতির প্রেসিডেন্টের বাসভবনও ভেঙে পড়ে।
মেহেদী আহম্মদ আনসারী: অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব বাংলাদেশ ভূমিকম্প সমিতি
অবশ্য মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পও ঢাকায় বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। কারণ, রাজধানীর ৪৭ শতাংশ আবাসন এলাকা জলাভূমি ভরাট করে ও নরম মাটির ওপর গড়ে উঠেছে।
ঢাকার আশপাশে এর আগে মাঝারি থেকে বড় মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়নি। এত দিন আমাদের ধারণা ছিল, ঢাকার আশপাশে ভূমিকম্পের কোনো উৎসস্থল নেই। গতকাল ও সাম্প্রতিক ভূমিকম্পগুলোর ধরন ও উৎসস্থল দেখে মনে হচ্ছে, ঢাকার অদূরেও ভূমিকম্পের আরও উৎসস্থল থাকতে পারে। ফলে সে অনুযায়ী আমাদের ভবন ও অবকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে আরও সাবধানী হতে হবে।
রাজধানী ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার ও গাজীপুরের অপরিকল্পিত নগরায়ন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। কিন্তু মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প প্রতিরোধের মতো ব্যবস্থা ভবনগুলোতে নেই। অন্যদিকে এই নগরগুলোর প্রায় অর্ধেক ভূমি বেশ নরম। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে জলাভূমি ভরাট করে আবাসন প্রকল্প নির্মাণ। এই এলাকাগুলো ভূমিকম্পের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ।
সরকার একটি ইমারত নির্মাণ বিধিমালা করেছে। তার বেশ কিছু দিক রাজউকের মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। কিন্তু ভূমিকম্প প্রতিরোধের বিষয়টি এখনো উপেক্ষিত। আমাদের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভবনগুলোকে ভূমিকম্প প্রতিরোধক হিসেবে নির্মাণ করতে যে ধরনের ব্যবস্থা থাকা দরকার। বেশির ভাগ ভবনেই তা নেই। ফলে মাঝারি মাত্রার একটি ভূমিকম্পে ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। প্রায় দুই কোটি নগরবাসীর কেউই ভূমিকম্পের ঝুঁকির বাইরে নয়। ফলে সামগ্রিকভাবে নগরগুলোতে ভূমিকম্প প্রতিরোধক ভবন নির্মাণ বাধ্যতামূলক করা উচিত। নয়তো যেকোনো সময় মহা বিপর্যয় নেমে আসবে।
যেসব ভবন ইতিমধ্যে ভূমিকম্প প্রতিরোধব্যবস্থা ছাড়াই গড়ে উঠেছে, তাদের জন্য পুনরায় ভূমিকম্প সহনীয় (কেট্রোফিটিং) হিসেবে গড়ে তোলার প্রযুক্তিও রয়েছে। তবে এটি বেশ ব্যয়সাপেক্ষ। নতুন ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে ভূমিকম্প প্রতিরোধক ব্যবস্থা নেওয়ার খরচ খুব বেশি নয়। এ ক্ষেত্রে ভবন নির্মাণকারীর সদিচ্ছা ও সচেতনতাই যথেষ্ট। রাজউকেরও এ ব্যাপারে দায়িত্ব রয়েছে।
রাজউকের উচিত, নিরাপদ নগর নিশ্চিত করতে প্রতিটি ভবন নির্মাণের সময় ও নির্মাণের পরে ভূমিকম্প সহনশীলতার বিষয়টি নিশ্চিত করা। সরকারি এই সংস্থাটি চাইলে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে ভবন নির্মাণ নজরদারির বিষয়টি দেখভাল করতে পারে।
আমরা আমাদের বিভিন্ন গবেষণায় আরও দেখেছি, ভবন নির্মাতারা নিম্নমানের রড, সিমেন্ট দিয়ে থাকে। এতে সঠিক কাঠামো অনুসরণ করে ভবন ঠিকই নির্মিত হয়। কিন্তু ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েই যায়। অন্যদিকে ভবনের ভিত্তি নির্মাণ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না এবং ভিত্তির নিচের মাটি ভূমিকম্প-সহনীয় হয়েছে কি না, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে।
রাজধানীর সাম্প্রতিক ভবন নির্মাণের ধরন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, বেশির ভাগ ভবনের নিচতলায় গাড়ি রাখার স্থান হিসেবে ফাঁকা রাখা হয়েছে। এটি একটি ইতিবাচক দিক হলেও এ ক্ষেত্রে গলদ দেখা গেছে। ওপরের তলার তুলনায় নিচতলার অংশের ভবনের স্তম্ভ (কলাম) আরও শক্তিশালী হওয়া প্রয়োজন। কিন্তু ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ নির্মাতা এটি অনুসরণ করেন না। অনেক ক্ষেত্রে বিম ছাড়া (ফ্ল্যাট প্লেট) ভবন নির্মিত হচ্ছে। এ ধরনের ভবনও ঝুঁকিপূর্ণ।
বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ নগরেই ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু কোন নগরে ভূমিকম্পের কারণে কী পরিমাণ ক্ষতি হবে, তা নির্ভর করে প্রস্তুতির ওপর। যেমন ২০১০ সালে চিলিতে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। এতে মাত্র ৫০০ জন মারা যায়। খুব কম ভবনই ভেঙে পড়ে। এটা সম্ভব হয়েছিল চিলি সরকারের ভূমিকম্প প্রতিরোধে নেওয়া পূর্বপ্রস্তুতি ও আইনের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে। অন্যদিকে একই সময়ে সংঘটিত হাইতিতে ৭ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে দুই লাখ ২০ হাজার মানুষ মারা যায়। সে দেশের রাজধানী পোর্ট অব প্রিন্সের ৬০ শতাংশ ভবন ভেঙে পড়ে। এমনকি হাইতির প্রেসিডেন্টের বাসভবনও ভেঙে পড়ে।
মেহেদী আহম্মদ আনসারী: অধ্যাপক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব বাংলাদেশ ভূমিকম্প সমিতি
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ঢাকায়
গতকাল রোববার সকালে সৃষ্ট ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকার দোহার উপজেলায়।
সকাল আটটা ৫৬ মিনিট ১০ সেকেন্ডে সৃষ্ট এই ভূকম্পনের মাত্রা ছিল রিখটার
স্কেলে ৪ দশমিক ৬।
আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ১৬২ বছরের মধ্যে এই প্রথম ঢাকার এত কাছের একটি উৎপত্তিস্থল (এপিসেন্টার) থেকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের সৃষ্টি হলো। ১৮৫০ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে সংঘটিত ভূমিকম্পের যে তথ্যাদি রয়েছে, তাতে ঢাকার এত কাছে আর কোনো ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল না। গত বছরের ২ নভেম্বর রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ১ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল চাঁদপুরের মতলবে।
গতকাল সকালে সৃষ্ট মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। অনেক এলাকায় মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। অনেকে আজান দিতে শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও লাইব্রেরি চত্বরে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। সাভার এলাকায় একটি ভবন হেলে পড়ে। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, বারিধারা ও পুরান ঢাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের (ইউএসজিএস) পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ভূগর্ভের ১৫ দশমিক ৭ কিলোমিটার গভীরে গতকালের ভূকম্পনটির উৎপত্তি হয়। ঢাকা থেকে ২৪ কিলোমিটার, টঙ্গী থেকে ৩৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও কুমিল্লা থেকে ১০৬ কিলোমিটার পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে উৎপত্তিস্থল হওয়ায় দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলাতেই কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভূতত্ত্ববিদদের মতে, দেশের চারটি এলাকার ভূ-অভ্যন্তরে বড় ধরনের ফাটল বা চ্যুতি রয়েছে। এগুলো হচ্ছে: টাঙ্গাইলের মধুপুর, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, সিলেটের শ্রীমঙ্গল এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত। এই ফাটলগুলো থেকে অতীতে বিভিন্ন সময় ৬ থেকে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পও সৃষ্টি হয়েছে। তবে দীর্ঘকাল ধরে ওই ফাটলগুলো নিষ্ক্রিয়। এগুলো থেকে এখন আর বড় ধরনের ভূমিকম্প সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ১৬২ বছরের মধ্যে এই প্রথম ঢাকার এত কাছের একটি উৎপত্তিস্থল (এপিসেন্টার) থেকে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের সৃষ্টি হলো। ১৮৫০ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চলে সংঘটিত ভূমিকম্পের যে তথ্যাদি রয়েছে, তাতে ঢাকার এত কাছে আর কোনো ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল না। গত বছরের ২ নভেম্বর রিখটার স্কেলে ৪ দশমিক ১ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল চাঁদপুরের মতলবে।
গতকাল সকালে সৃষ্ট মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। অনেক এলাকায় মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসে। অনেকে আজান দিতে শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও লাইব্রেরি চত্বরে শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। সাভার এলাকায় একটি ভবন হেলে পড়ে। রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর, বাসাবো, বারিধারা ও পুরান ঢাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগের (ইউএসজিএস) পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ভূগর্ভের ১৫ দশমিক ৭ কিলোমিটার গভীরে গতকালের ভূকম্পনটির উৎপত্তি হয়। ঢাকা থেকে ২৪ কিলোমিটার, টঙ্গী থেকে ৩৪ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও কুমিল্লা থেকে ১০৬ কিলোমিটার পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে উৎপত্তিস্থল হওয়ায় দেশের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলাতেই কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভূতত্ত্ববিদদের মতে, দেশের চারটি এলাকার ভূ-অভ্যন্তরে বড় ধরনের ফাটল বা চ্যুতি রয়েছে। এগুলো হচ্ছে: টাঙ্গাইলের মধুপুর, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, সিলেটের শ্রীমঙ্গল এবং চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত। এই ফাটলগুলো থেকে অতীতে বিভিন্ন সময় ৬ থেকে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পও সৃষ্টি হয়েছে। তবে দীর্ঘকাল ধরে ওই ফাটলগুলো নিষ্ক্রিয়। এগুলো থেকে এখন আর বড় ধরনের ভূমিকম্প সৃষ্টির আশঙ্কা নেই বললেই চলে।
রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১২
কম্পিউটারের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করবে অ্যানোনিমাস!
সাইবার জগতের অতি পরিচিত অ্যানোনিমাস নামে হ্যাকারদের গ্রুপটি সম্প্রতি
‘অ্যানোনিমাস’ নামে একটি অপারেটিং সিস্টেম ডাউনলোডের জন্য উন্মুক্ত করেছে।
সিস্টেমটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর এ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ওপেন
সোর্সভিত্তিক এ সিস্টেম চালু হলে কম্পিউটারের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে বলে
আশঙ্কা করছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা। বিবিসি এক খবরে এ কথা জানিয়েছে।
খবরে বলা হয়, অ্যানোনিমাস অপারেটিং সিস্টেমে হ্যাকিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওয়েবটুল ও সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে যা হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহূত হয়। এ অপারেটিং সিস্টেমটি ২৬ হাজার বার ডাউনলোড করা হয়েছে।
তবে এই সিস্টেমটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছে অ্যানোনিমাসের একটি পক্ষ। টুইটারে এই সিস্টেম সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এটি ভাইরাসযুক্ত। এদিকে, অপারেটিং সিস্টেম নির্মাতাদের দাবি, শিক্ষামূলক কাজে ও ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা দিতেই এ সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে।
কম্পিউটার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সফোসের বিশ্লেষক গ্রাহাম ক্লুলেই এই অপারেটিং সিস্টেমকে নিরাপদ বললেও তা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
খবরে বলা হয়, অ্যানোনিমাস অপারেটিং সিস্টেমে হ্যাকিংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওয়েবটুল ও সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে যা হ্যাকিংয়ের কাজে ব্যবহূত হয়। এ অপারেটিং সিস্টেমটি ২৬ হাজার বার ডাউনলোড করা হয়েছে।
তবে এই সিস্টেমটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা অস্বীকার করেছে অ্যানোনিমাসের একটি পক্ষ। টুইটারে এই সিস্টেম সম্পর্কে সতর্ক করে বলা হয়েছে, এটি ভাইরাসযুক্ত। এদিকে, অপারেটিং সিস্টেম নির্মাতাদের দাবি, শিক্ষামূলক কাজে ও ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা দিতেই এ সিস্টেম তৈরি করা হয়েছে।
কম্পিউটার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সফোসের বিশ্লেষক গ্রাহাম ক্লুলেই এই অপারেটিং সিস্টেমকে নিরাপদ বললেও তা সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)