ফেইসবুকে যতো বানোয়াট পোস্ট- তিন
হালের
সবচেয়ে জনপ্রিয় সোশাল নেটওয়ার্কিং ওয়েবসাইট ফেইসবুকে ব্যবহারকারীরা
অনেকটা সময় কাটান পছন্দের ছবি, প্রয়োজনীয় তথ্যসমৃদ্ধ পোস্ট শেয়ার আর লাইক
দিয়ে। কিন্তু তাদের অনেকেই হয়তো জানেন না, মানবতার স্বার্থে বা কৌতুহল
জাগানো যে ছবি এবং পোস্টগুলো তারা শেয়ার করছেন, তার অধিকাংশই গুজব এবং
ধোঁকাবাজি ছাড়া আর কিছুই নয়। ওই পোস্টগুলোর অনেকগুলোতেই ব্যবহার করা হয়েছে
অসত্য, অর্ধসত্য এবং অতিরঞ্জিত তথ্য। ফেইসবুকের ওই সব বানোয়াট পোস্ট
নিয়েই আমাদের এই ধারাবাহিক আয়োজন। আজ থাকছে তৃতীয় পর্ব।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কচ্ছপ ফেইসবুকে?সম্প্রতি
ফেইসবুকে পশুপ্রেমীদের মধ্যে একটি পোস্ট শেয়ারের ধুম পড়ে গেছে। পোস্টটির
ছবিতে রয়েছে ট্রাকের পেছনে বেঁধে রাখা বৃহদাকৃতির এক কচ্ছপের ছবি। আর
পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়েছে ওই কচ্ছপটি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কচ্ছপ।
পোস্টটিতে আরো বলা হয়েছে, কচ্ছপটির বয়স ৫২৯ বছর এবং ওজন ৮০০ পাউন্ড।
পশুপ্রেমিদের জন্য দুঃসংবাদই বটে, পোস্টটি একেবারেই বানোয়াট!
ধোঁকার বাকী আছে আরো! পোস্টটিতে যে কচ্ছপের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে আদতে
সেটি রক্ত মাংসের কোনো প্রাণীই নয়, বরং মানুষের হাতে তৈরি কস্টিউম মাত্র।
ওই ছবিটি নেয়া হয়েছে ২০০৬ সালের জাপানি সাই-ফাই মনস্টার মুভি ‘গামেরা দি
ব্রেভ’-থেকে।
সিনেমার পটভ‚মিতে গড়ে উঠেছে কাল্পনিক দানবীয় কচ্ছপ
‘গামেরা’-কে কেন্দ্র করে। সিনেমার শেষ দৃশ্যে এক মিলিটারি ইউনিট আহত
গামেরাকে ট্রাকের পেছনে বেঁধে নিয়ে যায়।
সিনেমার ওই শেষ দৃশ্যের একটি স্ন্যাপশট ব্যবহার করা হয়ে হয়েছে ফেইসবুক
পোস্টটিতে। সত্য তথ্য হলো ওই পোস্টের পুরো তথ্যই ডাহা মিথ্যা। ছবির
‘গামেরা’র বাস্তব কোনো অস্তিত্ব নেই।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জাতের
কচ্ছপ হচ্ছে গ্যালাপাগোস কচ্ছপ। এটি লম্বায় সাড়ে ৫ ফিট পর্যন্ত হতে পারে।
সর্বোচ্চ ওজন ৫৫০ পাউন্ড আর দেড়শ’ বছরের বেশি সময় বাঁচার রেকর্ড রয়েছে এ
জাতের কচ্ছপের।
গ্যালাপাগোস টরটয়েসের তুলনায় ফেইসবুক পোস্টের গামেরা আকারে অনেক বড়। সেক্ষেত্রে ওই কচ্ছপটির ওজন আরো বেশি হবার কথা।
টাইমলাইন সরাতে ক্রোম এক্সটেনশন!বর্তমানে
ফেইসবুক টাইমলাইন প্রোফাইলের জন্য বিরক্ত অনেক ব্যবহারকারীই। ফেইসবুক
ব্যবহারকারীদের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়েই ক্রোম এক্সটেনশনের মাধ্যমে
টাইমলাইন থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় সমৃদ্ধ একটি পোস্ট বেশ কিছুদিন ধরেই
ঘুরপাক খাচ্ছে ব্যবহারকারীদের ওয়ালে। কিন্তু সত্য ঘটনা হচ্ছে, টাইমলাইন
প্রোফাইল লেআউট থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই অন্তত ওই লিংকে নেই।
ফেইসবুকের
ওই পোস্টটিতে বলা হয়েছে, কেবল গুগল ক্রোম ব্যবহারকারীরাই এক্সটেনশনের
মাধ্যমে এড়াতে পারবেন টাইমলাইন বিড়ম্বনা। গুগল ক্রোমের একটি এক্সটেনশন ফাইল
ইনস্টল করলেই আবার আগের প্রোফাইলে ফিরে যেতে পারবেন ব্যবহারকারী।
বাস্তবে
‘টাইমলাইন রিমুভার’ এক্সটেনশন ফাইল কোনোভাবেই টাইমলাইন ডিসঅ্যাবল করবে না।
এটি কেবল আপনার ব্রাউজারে কিছু পরিবর্তন আনবে, যার ফলে আগের প্রেফাইল
লেআউটের মতো করে দেখা যাবে প্রোফাইলটি। কেউ যদি ভিন্ন একটি কম্পিউটার থেকে
প্রোফাইলটি দেখেন, তবে টাইমলাইনই দেখতে পাবেন তিনি। এমনকি নিজের কম্পিউটারে
টাইমলাইন রিমুভার ইনস্টল করেছেন এমন কেউ যদি টাইমলাইন রিমুভার নেই এমন
কোনো কম্পিউটার থেকে নিজের প্রোফাইলে লগইন করেন, তবে নিজের প্রোফাইলটি
টাইমলাইন লেআউটেই দেখতে পাবেন তিনি।
পোস্টটিতে আরো দাবি করা হয়েছে,
যাদের পিসিতে গুগল ক্রোম রয়েছে কেবল তারাই ব্যবহার করতে পারবেন ওই
এক্সটেনশন ফাইলটি। কিন্তু এই দাবিও মিথ্যা। জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজারগুলোর
প্রায় সবগুলোর জন্যই রয়েছে এমন এক্সটেনশন ফাইল।
সোজা কথায় বলতে
গেলে, এক্সটেনশন ফাইল ব্যবহার করে কেবল নিজের পিসিতেই টাইমলাইন লেআউটের
জায়গায় পুরনো লেআউট দেখা সম্ভব হলেও ফেইসবুকের পুরনো প্রেফাইল লেআউট
পুরোপুরি ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।
ফেইসবুকে যতো বানোয়াট পোস্ট- দুই