শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

কাপড় অথবা কাগজের হ্যান্ড ব্যাগ তৈরী দিয়েই শুরু হোক আপনার ব্যবসা

 

কাপড় অথবা কাগজের হ্যান্ড ব্যাগ তৈরী দিয়েই শুরু হোক আপনার ব্যবসা….

11846707_609320622505063_2915660693566483325_nইতিমধ্যেই আপনাদের অনেকে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন কাপড় অথবা কাগজের হ্যান্ড ব্যাগ তৈরীর ব্যবসা সম্পর্কে। আর তাদের জন্য এ ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর ক্ষুদ্র এ প্রচেষ্টা।
চলুন তাহলে… ভাবছেন কিভাবে শুরু করবেন…?
ব্যগ তৈরীর জন্য সর্বপ্রথমে একটা রুমের প্রয়োজন হবে। আর তাতে স্থাপন করতে হবে দুই থেকে তিনটি সেলাই মেশিন।
মেশিন যখন কিনেই ফেললেন তখন কিছু সেলাই তো করতে হবে। আর এজন্য দরকার হবে আপনি যে কাপড়ের ব্যাগ তৈরী করতে চান সে জাতীয় কাপড়।
সাথে ‍সুতা তো লাগছেই সেলাই করতে। তাই উপযুক্ত সুতা বাছাইয়ের কাজটিও করতে হবে আপনাকে। ব্যাগের হাতল তৈরীর কাজে ব্যবহৃত ফিতা অথবা আলাদা ধরনের সুতাও সংগ্রহ করতে হবে। ব্যাগটি যদি জিপার সিষ্টেম করতে চান তাহলে আপনাকে জিপার সংগ্রহ করতে হবে।
কাগজের ব্যাগের ক্ষেত্রে কাগজ, আঠা, রিপিট সুতা ইত্যাদির প্রয়োজন পড়বে। এ জাতীয় ব্যাগের বাইরে সিমেন্টের ব্যাগ থেকেও তৈরী করতে পারেন হ্যান্ড ব্যাগ। অথবা নেটের ব্যাগও তৈরী করতে পারেন। যার চাহিদা কতটা ব্যাপক তা বাজার করতে গেলে বুঝবেন।
কাপড়ের তৈরী হ্যান্ড ব্যাগকে যদি আকর্ষনীয় রুপ দিতে চান তাহলে সুন্দর রংয়ে রাঙাতে স্ক্রিন প্রিন্ট মেশিনের প্রয়োজন পড়বে।
এ ব্যবসা করতে আপনার বিশেষ কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন পড়বে না। মাত্র দুই থেকে তিন দিন প্রশিক্ষন নিলেই আপনি নিজেই তৈরী করতে পারবেন।
এ ব্যবসা প্রাথমিক অবস্থায় ৫০,০০০ থেকে ৬০,০০০ টাকায় শুরু করতে পারবেন। ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চাইলে তখন বাড়তি পুঁজির প্রয়োজন পড়বে।
নিজে কাজ সম্পর্কে পুরোপুরি ভালভাবে জেনে নিতে পারলে কর্মীদের থেকে পূর্ন আউটপুট বুঝে পাবেন সাথে আপনার কর্মীরাও ফাঁকি দিতে পারবে না।
আপনার তৈরী করা হ্যান্ড ব্যাগ নিকটস্থ বাজেরর দোকান গুলোতে বিক্রয় করতে পারবেন। এছাড়াও ঢাকার চকবাজারে এ জাতীয় ব্যাগের পাইকারী বাজার রয়েছে। সাথে সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে এ জাতীয় পন্যের পাইকারী বাজার পাবেন আপনার তৈরী ব্যাগ বিক্রির জন্য।
তাহলে থেমে আছেন কেন…?
একটু সাহস করেই না হয় কাজে হাত দিয়ে ফেলুন যদি থাকে আত্মবিশ্বাস আর জীবনে সফলতা পাওয়ার অদম্য ইচ্ছা….

ভিন্ন্ আইডিয়ায় করতে পারেন ফাষ্টফুডের দোকান

ভিন্ন্ আইডিয়ায় করতে পারেন ফাষ্টফুডের দোকান

11742880_604786789625113_8037219577888367925_nভিন্ন্ আইডিয়ায় করতে পারেন ফাষ্টফুডের দোকান। হতে পারেন একজন সফল ব্যবসায়ী….
স্বাগতম আপনাদের সকলকে যারা উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে ফাষ্টফুড আমাদের প্রায় সকলের প্রিয় খাবারে পরিনত হয়ে পড়েছে। সময় আর ব্যস্ততার কারনেই ফাষ্টফুড আমাদের কাছে এত জনপ্রিয় হয়েছে কি?
সে যেকারনেই হোক আমাদের বেকারদের জন্য তা কিন্তু সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত হয়ে এসেছে। ইতি মধ্যেই এ ব্যবসায়ের সাথে নিজেকে জড়িয়ে সফলতার মুখ দেখেছেন অনেক উদ্যোক্তা।
এ ব্যবসা করতে আপনার সুুবিধামত একটি এলাকায় ব্যবসার স্থান নির্বাচন করতে পারেন। তবে অবশ্যই লোক সমাগম ঘটে এমন স্থান হতে হবে। না হলে ক্রেতা পাবেন না।
আপনার ব্যবসায়ের পরিধি ও পুঁজি বিবেচনা করে দোকানের আয়তন নির্ধারণ করবেন। দোকানের ডেকোরেশন অবশ্যই চমৎকার করে করার চিন্তা করবেন। এটি আপনি আপনার নিজের আইডিয়ায় অথবা ভাল কোন ডিজাইনার দিয়েও ডিজাইন করিয়ে নিতে পারেন।
আপনার দোকানের সুন্দর একটা নাম দিতে কিন্তু ভুল করবেন না।
দোকানের জন্য ফার্নিচার, ফ্রিজ, ওভেন, জুস মেকার কফি মেকার সহ খাদ্য তৈরীর বিভিন্ন ইলেকট্রিক মেশিন কিনতে হবে আপনাকে। আর সেই সাথে খাদ‌্য পরিবেশনের জন্য আকর্ষনীয় পাত্র কিন্তু চাই। খাদ্য পরিবেশনের জন্য সুন্দর বাচনভঙ্গি এবং আকর্ষনীয় চরিত্রের লোকবল নিয়োগ দিতে হবে আপনাকেই খুব দক্ষতা ও সর্তকতার সাথে।
ফাষ্টফুড হিসেবে রাখতে পারেন স্যান্ডউইচ, বার্গার, নানা ধরনের রোল, শর্মা, পিজা, চিকেন ফ্রাই নুডুলস সহ নানা ধরনের আকর্ষনীয় খাবার। এসব খাবার আগে থেকেই তৈরী করে দোকানে সাজিয়ে রাখতে হবে। ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী গরম করে পরিবেশন করতে হবে। সেই সাথে চাহিদা অনুযায়ী জুস সাথে সাথে তৈরী করে পরিবেশন করতে হবে।
এ জাতীয় ব্যবসা করতে বিশ থেকে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা বিনিয়োগের প্রয়োজন পড়ে। তবে কেউ যদি খূব ছোট আকারে শুরু করতে চান তবে এর থেকে কম মূলধন বিনিয়োগ করেও করতে পারবেন।
এবার এ ব্যবসায়ে আপনার উন্নতির জন্য একটু ভিন্ন আইডিয়া শেয়ার করি। আপনি আপনার দোকানের আসপাশের এলাকার কিছু নিয়মিত ক্রেতার বাসায় হোম ডেলিভারী করতে পারেন। সেই সাথে আশপাশের অফিসে বিকালের নাশতা হিসেবেও ডেলিভারী করতে পারেন। তবে এজন্য দক্ষ ডেলিভারী ম্যান নিয়োগ দিতে হবে আপনাকে। সার্ভিসটি বিনা ডেলিভারী চার্যে করতে পারলে বেশ সাড়া পাবেন।
আপনার মাথায় এ ব্যবসায়ের জন্য আমার থেকেও আরও কোন ভিন্ন আইডিয়া থাকতে পারে। যা আপনাকে নিয়ে যেতে পারবে সফলতার দিকে। নিজের সততা মেধা আর প্ররিশ্রমের সমন্বয় ঘটিয়ে হয়ে উঠুন সফলদের একজন।

ই-কমার্স ব্যবসায়ী হতে চান

ই-কমার্স ব্যবসায়ী হতে চান…?

e-commercee-commerce_r0124l11
পৃথিবীটা এখন আধুনিকতায় মোড়ানো। মানুষের রুচি,কথাবার্তা আর  চালচলনে এসেছে বিপুল পরিবর্তন। শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে নয়,পরিবর্তন এসেছে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই। আর এই পরিবর্তনের বিরাট একটা অংশ এসেছে ইন্টারনেট নামক এক জাদুর কাঠিতে ভর করে। যোগাযোগ ব্যাবস্থা থেকে শুরু করে যেকোনো ক্ষেত্রেই বেড়েছে ইন্টারনেট সেই সাথে এটাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে কোটি কোটি ডলারের ইকমার্স ব্যবসা।
দিন যত যাচ্ছে ততই অনলাইনে কেনাকাটার পরিমান বৃ্দ্ধি পাচ্ছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে অনলাইন শপিং ইতিমধ্যেই জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশে অনলাইনে কেনাকাটা কিছু শ্রেনীর মানুষদের মাঝে সীমাবদ্ধ থাকলেও অচিরেই এটি যে জনপ্রিয় হতে যাচ্ছে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়, কারন প্রতিনিয়তই ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। আর তাই দিন দিন ইকমার্স সাইটগুলোর জনপ্রিয়তাও বাড়ছে।
কিন্তু অনেকেই বুঝে উঠতে পারছেন না ঠিক কিভাবে শুরু করবেন। অথবা শুরু করার চেষ্টা করছেন কিন্তু গাইডলাইনের অভাবে শুরু করতে পারছেন না  চলুন তাহলে ধারনা নেওয়া যাক এ ব্যবসায়ে সফলতা নিশ্চিত করতে কি কি করা দরকার সে সম্পর্কে।

ইকমার্স ওয়েবসাইট তৈরী করতে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হল আপনি কোন ধরনের পন্য বিক্রি করবেন তা নির্দিষ্ট করা। পন্য নির্ধারন করার ক্ষেত্রে অবশ্যই বিচক্ষন হতে হবে। কারন আপনার নির্ধারিত পন্যের  এর চাহিদা কেমন হবে, পন্য বিক্রয় করে কেমন লাভ হবে, পন্য ক্রেতার নিকট পৌছানোর পরিবহন খরচ কেমন পরবে তা চিন্তা না করে যেমন খুশি তেমন সাজো এর মত পন্য সিলেক্ট করলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে ব্যবসার শুরুতেই।
আবার নিজের বিন্দুমাত্র আইডিয়া নেই এরকম পন্য সিলেক্ট করা ও বোকামি। পন্য নির্বাচন করার আগে অবশ্যই আপনার প্রতিদ্ধন্দী কারা, তাদের মার্কেট পজিশন কোন স্তরে তা বিবেচনা করা উচিত। কখোনই এমন পন্য বিক্রির চেষ্টা করবেন না যেটি অন্য বিখ্যাত ইকমার্স ওয়েবসাইট দ্বারা মার্কেটের প্রায় ৭৫ শতাংশ চাহিদা পুরন করা হচ্ছে সফলতার সাথে। আর পন্য মানের সাথে কার্পণ্য করা চলবে না। সব সময় বাজারের সেরা পন্যটি আপনার ক্রেতার হাতে তুলে দেবার চেষ্টা রাখতে হবে।
পন্য নির্ধারনের পর নির্দিষ্ট করুন পন্যগুলো কোন কোন ক্যাটাগরীতে পড়ছে। ক্যাটাগরী নির্দিষ্ট করার সুবিধা হচ্ছে, পন্যগুলো কিনতে সুবিধা হবে এবং দাম নির্ধারন করতেও সুবিধা হবে। তাছাড়া আপনার ওয়েবসাইটে কাস্টোমাররা সহজেই তাদের প্রয়োজনীয় পন্য গুলো খুজে নিতে পারবে।
কোন কোন পন্য বিক্রি করবেন তা নির্ধারন  করার পর আপনি পন্য কীভাবে কাস্টোমারর হাতে পৌছাবেন তা ঠিক করুন। হোম ডেলিভারী দেবার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে কোন কুরিয়ার সার্ভিস/পরিবহন ব্যাবহার করবেন তা নির্ধারন করুন। হোম ডেলিভারী কোন কোন এলাকার জন্য রাখবেন তা নির্ধারন করুন। হোম ডেলিভারীর আগেই পেমেন্ট নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ ওয়েবসাইট তৈরীতে হাত দেওয়ার আগে নির্ধারন করুন পেমেন্ট অপশন হিসেবে আপনি কোনগুলো রাখবেন। অর্থাৎ কোন কোন মাধ্যমে আপনার ক্রেতা আপনার পন্যের মূল্য পরিশোধ করতে পারবে।
মানুষ কোন পেমেন্ট অপশন ব্যাবহারে স্বাচ্ছন্দ্যতা বোধ করে তা বিবেচনা করে পেমেন্ট অপশন নির্ধারন করুন। পেমেন্ট অপশন হিসেবে ব্যাংক ট্রান্সফার, মোবাইল ব্যাকিং  ব্যবস্থা বিকাশ, সহ  পেজা, মানিবুকার রাখতে পারেন। তবে উপরের সবগুলো রাখতে হবে এমন না কারন কাস্টোমারের সেটিসফিকশন যেমন দরকারী তেমন নিজের সুবিধা অনুযায়ী কাজ করতে পারাটাও দরকারি।
একটা ইকমার্স ওয়েবসাইটের অন্যতম সৌন্দর্য হচ্ছে একটি সুন্দর ডোমেইন নেম। আপনার ইকমার্স ওয়েবসাইটের জন্য একটি সুন্দর এবং ইকমার্স রিলেটেড নাম সিলেক্ট করুন। যেমন ইকমার্সের জন্য আপনি যদি চিন্তা করেন অামি-তুমি-সে-ডটকম নাম রাখবেন তাহলে তা মানানসই হবে না, কেউ বুঝবেও না এটা কি ওয়েবসাইট। কিন্তু যদি ইবাজারডটকম রাখেন তবে সবাই বুঝবে এটি কিসের ওয়েবসাইট।
যেকোন ওয়েবসাইটের জন্য ভাল মানের হোস্টিং দরকার আর তা যদি হয় ইকমার্স ওয়েবসাইটের জন্য তাহলে তো কথাই নেই। তাই হোস্টিং কেনার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে আপনাকে।  ইকমার্স ওয়েবসাইট চালুর প্রথম দিকে ভালো শেয়ার্ড বা বিজনেস ক্লাস হোস্টিং ভাল হবে তবে সাইটের ট্রাফিক বাড়লে ভিপিএস বা ডেডিকেটেড এ মাইগ্রেট করাই উত্তম হবে।
কোন স্ক্রিপ্ট দিয়ে তৈরী করবেন অথবা কোন প্রোগামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এ তৈরী করবেন তা আগেই নির্ধারন করুন। যেহেতু এখানে অর্ডার রিসিভ এবং সিকিউরিটি মেইনটেইন করার ব্যাপার আছে তাই ইকমার্স ওয়েবসাইটটি করার সময় সর্তকতার সাথে এগুলো নির্ধারন করতে হবে। আপনার ইকমার্স ওয়েবসাইটের জন্য একটি ইউনিক টেম্পলেট ইউজ করার চেষ্টা করুন এবং নিজে না পারলে তা রেস্পন্সিভ ওয়েবডেভেলপার দিয়ে করুন। সেই সাথে ইকমার্স সাইটের জন্য মোবাইল ভার্সন রাখার চেষ্টা করুন।
এটা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে ইকমার্স ওয়েবসাইটের জন্য একটা ইউজার ফ্রেন্ডলী ইন্টারফেস সবচেয়ে দরকারী। তাই সাইটের ডিজাইন করার ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব ইউজার ফ্রেন্ডলী করে তৈরি করার চেষ্টা করুন। সেই সাথে আপনার ওয়ব সাইটটি সার্চইঞ্জিনে দ্রুত খুজে পাওয়ার জন্য করতে হবে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও এর কাজও।
আপনার ইকমার্স ওয়েবসাইটটি চালু করার আগেই একটু জোরেশোরে প্রচারনা চালানোর চেষ্টা করুন। ইকমার্স ওয়েবসাইটটির ফিচার গুলো কেমন হবে, কেন অন্যদের থেকে আলাদা তা তুলে ধরার চেষ্টা করুন। প্রচারনার জন্য বাজেটের একটা অংশ রাখুন। কারন প্রচারেই প্রসার। প্রচারনার অংশ হিসেবে ফেসবুক প্রোমোট,  বিলবোর্ড এডভার্টাইজিং ইত্যাদি রাখতে পারেন। তাছাড়া ইকমার্স ওয়েবসাইটটি উদ্বোধন উপলক্ষ্যে রাখতে পারেন বিশেষ ছাড় এবং উপহার সামগ্রীও।
ইকমার্স ব্যবসায়ের জন্য ডোমেইন, হোষ্টিং সার্ভার, ওয়েবসাইট ডিজাইন, এসইও অথবা এ সংক্রান্ত যে কোন তথ্যের প্রয়োজনে আপনি উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকমের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭৩৫-২৮৪৬১৭ নাম্বারে। আমরা চেষ্টা করব আপনাদের জন্য সঠিক দিক নির্দেশনা রাখার যাতে করে আপনি এগিয়ে যেতে পারেন ইকমার্স ব্যবসায়ে সাফল্যের পথে।

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার আইডিয়া

ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার আইডিয়া

connessione adsl2ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে দ্রুত গতিতে। আর সেই পথে গতি এনেছে ইন্টারনেট। তথ্যপ্রযুক্তির দিক থেকে বাংলাদেশ খুব বেশী এগোতে না পারলেও সাফল্য কিন্তু কম নয়। মুক্তপেশা ফ্রিল্যান্সিং এ তরুনরা এগিয়ে চলেছে সমান তালে। সফটওয়্যার রপ্তানীতেও বাংলাদেশ সাফল্য দেখিয়েছে। নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করে তরুন প্রজন্ম এগিয়ে চলছে সমান তালে। যদিও উন্নত বিশ্ব যখন ফাইভ জি নেটওয়ার্ক নিয়ে এগিয়ে চলছে সেখানে আমরা এখনও থ্রিজি সেবা পৌছে দিতে পারি নাই প্রতিটি জেলা শহরে। আর এই পিছিয়ে পড়া থেকে এগিয়ে যাওয়ার পথে তৈরী হয়েছে নতুন ব্যবসার সম্ভাবনা।
snekআমাদের অনেকেরই হয়ত জানা নেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা সম্পর্কে। আমি মাসুদুর রহমান আজ আপনাদের এ বিষয়ে ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করব। সাথে থাকবেন আশা রাখছি।
কম টাকায় উচ্চ গতির ইন্টারনেট পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। আনলিমিটেড প্যাকেজ, স্বল্প মূল্য এবং নিরবিচ্ছিন্ন সঠিক গতির নিশ্চয়তার কারণে অধিকাংশ মানুষ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করতে আগ্রহী। কিন্তু আমাদের দেশের খুব কম জায়গাতেই পাওয়া যায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা যদিও অনেক কম ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু এব্যবসা সম্পর্কে জানার সীমাবদ্ধতার কারনে শুরু করতে পারছেন না অনেকেই।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা মূলত ইন্টারনেট ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা। বিভিন্ন ভাবেই মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। যেমন ওয়ারল্যাস, ওয়াইফাই, ওয়াইম্যাক্স, ব্রডব্যান্ড। এগুলোর মধ্যে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সবচেয়ে নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দেওয়া যায় গ্রাহকদের।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করতে সর্বপ্রথম ধারনা নিন আপনার নির্ধারিত ব্যবসায়িক এলাকায় কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কেমন। যদি সন্তোষজনক হয় তাহলে শুরু করতে পারেন। ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করার জন্য বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স নিতে হবে আপনাকে। লাইসেন্স করার জন্য নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে।  ফরমে বর্ণিত সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে বিটিআরসি হেড অফিসে জমা দিতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদন করার তিন মাসের মধ্যেই লাইসেন্স পেয়ে যাবেন আপনি। লাইসেন্স পাওয়ার পর আপনাকে কিনতে হবে ব্যান্ডউইথ।
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য সবার আগে প্রয়োজন হবে ব্যান্ডউইথ। আর ব্যান্ডউইথ আসে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে। তাই প্রথমে দেখতে হবে যে আপনার ব্যবসায়ীক এলাকায় অপটিক্যাল ফাইবার আছে কিনা। শুধু ফাইবার থাকলেই হবে না কানেকশন দেওয়ার পপস পোর্টও থাকতে হবে। বিটিসিএলের ফাইবার লাইনের পপস পোর্ট আছে শুধুমাত্র জেলা শহরগুলোতে। তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। মোবাইল অপারেটরদের ৩জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কারণে এখন গ্রাম পর্যায়েও অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে গেছে। বেসরকারি আইআইজি  (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) গুলো প্রায় সারাদেশে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে। আপনাকে সেসব আইআইজি এর কাছ থেকে জেনে নিতে হবে আপনার এলাকায় তাদের অপটিক্যাল ফাইবারের পপস পোর্ট আছে কিনা।
কম দামে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে ও সারাদেশে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে এমন কয়েকটি আইআইজি হল বিটিসিএল, ম্যাঙ্গো টেলিকম, সামিট কামিউনিকেশন, বাংলা ফোন, ভার্গো কামিউনিকেশন, ফাইবার এ্যাট হোম, নভোকম ও বিডি লিংক কামিউনিকেশন। আমাদের দেশে মোট ৩৬ টি ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার রয়েছে। আপনি এদের কাছ থেকে নির্ধারিত মূল্যে ব্যান্ডউইথ কিনে নিতে পারবেন।
যদি আপনার কাছাকাছি পোর্ট থাকে তাইলে ব্যবসা শুরু করতে আর বাধা নেই। কাছাকাছি না হয়ে একটু দূরে পোর্ট থাকলে সেখান থেকেও রেডিও লিংক করে আনতে পারবেন। আর যদি পপস পোর্টের দূরত্ব বেশি হয় তাইলে স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ নিতে পারবেন বা মাইক্রোওয়েভ দ্বারা কানেক্টেড মোবাইল টাওয়ারের বিটিএস থেকেও নিতে পারবেন ব্যান্ডউইথ। তবে এই দুই পদ্ধতিতেই ব্যান্ডউইথের দাম অনেক বেশি পরবে। বিভাগীয় শহরগুলিতে অনেক আইএসপি কম দামে সাবলাইন দিয়ে থাকে। তাদের থেকে ব্যান্ডউইথ নিয়েও ব্যবসা করতে পারবেন আপনি।
fibre-internet_718ব্রডব্যান্ড ব্যবসা করতে হলে আপনাকে কিছু যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। সেগুলি হল স্পিড কন্ট্রোল করার জন্য মাইক্রোটিক রাউটার, মিডিয়া কনভার্টার, ক্যাবল,  পিসি, বেজ ষ্টেশন স্থাপন করার জন্য সুইচ ও বক্স। সেই সাথে আপনাকে চব্বিশ ঘণ্টা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে মাইক্রোটিক রাউটার চালু রাখার জন্য।
প্রাথমিক ভাবে দুই লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করলেই শুরু করতে পারবেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ব্যবসা।  পর্যায়ক্রমে ব্যবসার পরিধির উপর বিনিয়োগ বাড়াতে হবে আপনাকে। প্রাথমিক বিনিয়োগ থেকে আপনি প্রতি মাসে বিশ থেকে পঁচিশ হাজার টাকা আয় করতে পারবেন। ব্যবসার পরিধি বাড়ার সাথে সাথে আয়ের পরিমানও বাড়বে।
প্রথমেই বলেছি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসায় ঝুঁকি অনেক কম। কারণ এই ব্যবসায় শুরুতেই একবার সব কিছু স্থাপন করে নিলে তারপর ব্যান্ডউইথ কেনা ছাড়া তেমন কোন খরচ নেই। বর্ষাকালটা যদিও ব্রডব্যান্ড ব্যবসার জন্য শত্রুতামুলক আচরন করে। কারন বজ্রপাতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে যন্ত্রপাতি পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়।
আপনার ব্যবসায়িক এলাকায় আপনি যে ব্রডব্যান্ড ইন্টানেটের সার্ভিস নিয়ে এসেছেন সেটা তো মানুষকে জানাতে হবে। আর এর জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রচার করতে হবে। যেহেতু আপনি একটা এলাকা টার্গেট করে ব্যবসায় নামবেন সেহেতু  মার্কেটিং এর জন্য আপনাকে তেমন বড় বাজেট রাখতে হবে না। লিফলেটে আপনার প্যাকেজ সমূহ, প্যাকেজ মূল্য, স্পিড, শর্তাদি ইত্যাদি বিস্তারিত লিখে আপনার টার্গেটকৃত এলাকায় বিতরণ করতে হবে। আগে থেকেই কোন আইএসপি থাকলে তাদের সাথে কম্পেয়ার করে রেট নির্ধারণ করতে হবে। এ ছাড়া সরাসরি বাসায় বাসায় গিয়ে, মাইকিং করে, ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে, পরিচিত মহলকে অনুরোধ করেও মার্কেটিং করতে পারেন।
এই ব্যবসা যেহেতু ব্যবহারকারী ভিত্তিক এবং এক ব্যবহারকারীর সাথে আরেক ব্যবহারকারী সম্পর্কযুক্ত থাকে তাই আপনার বর্তমান ব্যবহারকারীদের বিশেষ ডিসকাউন্টের অফার দিয়ে প্রভাবিত করেও উইজার বাড়াতে পারবেন। এ ছাড়াও এমন ঘোষণা দিতে পারেন প্রথম নির্দিষ্ট সংখ্যার কিছু ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট পার্সেন্ট ডিসকাউন্ট পাবেন। এতে করে দ্রুত কাস্টমার পাওয়া আপনার জন্য সহজ হবে।
এই ব্যবসায় আপনি কর্মী নিয়োগ দিতে চাইলে দেখতে হবে সে মাইক্রোটিক রাউটার কন্ট্রোলিং এর কাজ জানে কিনা, নতুন পোর্ট বানানো, সুইচ, কানেকশন দিতে পারে কিনা, যোগাযোগ দক্ষতা কেমন, মানুষকে প্রভাবিত করার ক্ষমতা কেমন। এ ছাড়াও যোগ্যতা হিসেবে বাই সাইকেল চালানো জানলে বাড়তি সুবিধা পাবেন। কেননা দূর দূরান্তে গিয়ে লাইন ঠিক করতে হবে।
আপনার কাস্টমারদের সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে আপনাকে। তারা খারাপ কিছু করলেও তাদের উপর রাগ করা যাবে না। গভীর রাতেও অনেকে ফোন করতে পারে আপনার সেবার জন্য। তাতে বিরক্ত হওয়া চলবে না আপনাকে।

দুই থেকে তিন হাজার টাকায় শুরু হোক মাশরুমের ব্যবসা

দুই থেকে তিন হাজার টাকায় শুরু হোক মাশরুমের ব্যবসা

ce5219fdd8fdb0c7ec1c7c0b2770516e1মাশরুম চাষ কিভাবে করা যায়, চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কিনা,  এর পুষ্টিমান এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে কিভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
‘‘মাশরুম” ব্যাঙের ছাতার মতো এক ধরণের ছত্রাক জাতীয় গাছ। মাশরুম ও ব্যাঙের ছাতা দেখতে একই রকম হলেও এদের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে জন্ম নেওয়া কোন কোন মাশরুম বিষাক্ত হয় এবং সেগুলো খাওয়া যায় না। সূর্যের আলোয় প্রাকৃতিকভাবে খুব বেশি মাশরুম জন্মাতে পারে না তাই প্রাকৃতিক উপায়ে খাবারের জন্য বেশি করে মাশরুম পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে অনেক স্থানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষকরা মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশের অনেক জায়গায় বিশেষ করে ঢাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মধুপুর প্রভৃতি স্থানে এখন ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাশরুম চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে। মাশরুম চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয় করাও সম্ভব। মাশরুম চাষ করতে আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না।
বাজার সম্ভাবনা
আমাদের দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল ও চাইনিজ হোটেলগুলোতে মাশরুমের চাহিদা আছে। তাই আপাত দৃষ্টিতে মাশরুমের বাজার মূলত শহরে গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। মাশরুম শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিদেশে সবজি ও কাঁচামাল পাঠায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় মূলধন
মাশরুম চাষ করার জন্য ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। যদি ব্যক্তিগত পূঁজি না থাকে তাহলে মূলধন সংগ্রহের জন্য নিকট আত্মীয়স্বজন, ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।
ব্যাংকঃ
সোনালী ব্যাংকঃ http://www.sonalibank.com.bd/
জনতা ব্যাংকঃ  http://www.janatabank-bd.com/
রূপালী ব্যাংকঃ http://www.rupalibank.org/rblnew/
অগ্রণী ব্যাংকঃ http://www.agranibank.org/
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকঃ www.krishibank.org.bd/
e38f43b80c4d0bad0f24a89de35b7562-19এনজিও
আশাঃ http://asa.org.bd/
গ্রামীণ ব্যাংকঃ http://www.grameen-info.org/
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
প্রশিকাঃ http://www.proshika.org/
আয়-ব্যয়
অয়েস্টার মাশরুমের পাপড়ি বেশি ছড়ানোর আগেই তুলে গোড়া থেকে সামান্য কেটে ফেলতে হবে। পলি প্রোপাইলিনের প্যাকেটে কয়েকটা ছিদ্র করে এর মধ্যে মাশরুমগুলো ভার মুখ বন্ধ করে এই প্যাকেট বাজারজাত করতে হবে। প্রতিটি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। সুতরাং ২০০টি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ৪০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মাশরুমের দাম প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের উপযোগী তিন জাতের মাশরুম চাষ হয় –
স্ট্র মাশরুম : ধানের খড়, শিমুল তুলা, ছোলার বেসন ও চাউলের কুড়া ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে স্ট্র মাশরুম চাষ করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এর চাষ করা যায়।
ইয়ার মাশরুম: সাধারণত বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবে আম গাছে ইয়ার মাশরুম পাওয়া যায়। ইয়ার মাশরুম দেখতে কালচে রঙের। ইয়ার মাশরুম সারাবছর চাষ করা গেলেও সাধারণত বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়।
অয়েস্টার মাশরুম: আমাদের দেশে এই জাতের মাশরুম চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়। অয়েস্টার মাশরুম খুব সহজে চাষ করা যায় এবং এর জন্য খুব অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।
মাশরুম উৎপাদন কৌশল
চাষের উপযোগী স্থান
মাশরুম খোলা জায়গায় চাষ করা যায় না। তাই এর জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। মাশরুম চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গায় ছন বা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করতে হয়। মাটির দেওয়াল দিয়েও ঘর তৈরি করা যায়। আবার বাঁশের বেড়াও দেওয়া যায়। ঘরের ভেতর যাতে আলো ঢুকতে না পারে সেজন্য বাঁশের বেড়ায় মাটি লেপে দিতে হয়।
অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি
অয়েস্টার মাশরুম বীজ বা স্পন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে মাশরুম চাষ শুরু করা যাবে। ধাপে ধাপে মাশরুম চাষ করতে হয়।
১ম পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
মাশরুমের প্যাকেট পানিতে ৩০ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে পানি থেকে মাশরুমের প্যাকেট উঠিয়ে নিতে হবে।
অতিরিক্ত পানি ঝরানোর জন্য মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে। পানি ঝরে গেলে ঘরের নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর তিন থেকে চারবার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
সাধারণত ৩ থেকে ৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজায়। অঙ্কুর গজানোর পর মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগে। খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে তা গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
বীজের যে জায়গা কাটা হয়েছিল তা ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। এই বীজ থেকে আবার মাশরুম গজাবে।
একটা আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার মাশরুম পাওয়া যায়। এতে মোট ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।
২য় পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে বীজ বা স্পন সংগ্রহ করতে হবে। এক কেজি ওজনের একটি বীজের পলিথিন খুলে ভিতরের কম্পোস্ট গুঁড়ো করে নিতে হবে।
দুই কেজি পরিমাণ ধানের পরিষ্কার ও শুকনো খড় সংগ্রহ করতে হবে। খড়গুলোকে এক ইঞ্চি মাপে কেটে টুকরা করতে হবে।
পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। খড়গুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য ফুটন্ত পানিতে খড়ের টুকরোগুলো এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
খড়গুলো পানি থেকে তুলে চিপে পানি শূন্য করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।
পাঁচটি পলিব্যাগ নিয়ে পলিব্যাগের ভেতরে প্রথমে কিছু খড় বিছিয়ে নিতে হবে। খড়ের উপর মাশরুম বীজের গুঁড়ো দিতে হবে। এভাবে একটি পলিব্যাগে চার স্তরে খড় আর মাশরুম বীজের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে হবে। শেষ স্তরে আবার খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
খড় বিছানো শেষ হলে খুব শক্ত করে পলিব্যাগ বাঁধতে হবে। এভাবে প্রতিটি পলিব্যাগ বাঁধতে হবে।
পলিব্যাগের চার দিকে ১০-১২টি ছিদ্র করতে হবে। এরপর ব্যাগগুলোকে বীজে পরিণত হওয়ার জন্য ১৫-১৮ দিন রেখে দিতে হবে।
১৫-১৮ দিন পরে পলিব্যাগগুলো খুলে বীজের দলাগুলো বের করে নিতে হবে।
প্রতিটি বীজের দলা শিকায় করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন ৪-৫ বার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
৩-৪ দিন পর চারদিক দিয়ে মাশরুমের অঙ্কুর গজাতে শুরু করবে। ৪-৬ দিন পর খাওয়ার উপযোগী মাশরুম গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
এভাবে মাশরুম চাষে লাভ বেশি হবে। কারণ প্রতিটি পলিব্যাগ থেকে প্রায় আধা কেজি মাশরুম পাওয়া যাবে। সুতরাং পাঁচটি ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে।
সাবধানতা
বীজ বা স্পনে কোনভাবেই সূর্যের আলো পড়তে দেওয়া যাবে না। সবসময় ঘরটি ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব বেশি গরম পড়লে ঘরের চারদিকে বস্তা ঝুলিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
মাশরুম ঘর ও ঘরের বাইরের চারদিক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাশরুম ফ্লাই নামের পোকা মাশরুমের ক্ষতি করে।
কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
মাশরুমের উপকারিতা
মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। তাই খাদ্য হিসেবে এটা খুবই পুষ্টিকর। এর উপকারিতাসমূহ হল-
রক্তে চিনির সমতা রক্ষা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগী এবং যারা স্থুল বা স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার।
মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।
রক্তহীনতা, বেরিবোধ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
খাবারের উপযোগী মাশরুম
প্রশিক্ষণ
সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ঢাকা জেলার সাভারে অবস্থিত ‘মাশরুম চাষ কেন্দ্র’ আছে। এছাড়া বাংলাদেশের নানা স্থানে “মাশরুম চাষ কেন্দ্রের” ১৬টি শাখা আছে। মাশরুম চাষ করে ব্যবসা করার জন্য এসব মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে নেওয়া যাবে। এছাড়া মাশরুম চাষ সম্পর্কে বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়। এসব বই পড়ার মাধ্যমেও মাশরুম চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে মাশরুম চাষের বিস্তারিত জেনে নিলে চাষ করতে সুবিধা হবে এবং উন্নতমানের মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে।
প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা:
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরঃ www.dyd.gov.bd
বিসিকঃ http://www.bscic.gov.bd/
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরঃ http://www.dwa.gov.bd/
মাশরুম মূল্যবান সবজি। বিদেশে এর যথেষ্ট চাহিদা আছে। মাশরুমের পুষ্টি ও ঔষধি গুণের কথা বলে সাধারণ মানুষকে মাশরুম খাওয়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। তাহলে সাধারণ বাজারেও এর চাহিদা বাড়বে। আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য ঘাটতি আছে, মাশরুম কিছুটা হলেও তা পূরণ করতে পারে।

আর্বজনা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত থেকে হতে পারে ব্যবসা

আর্বজনা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত থেকে হতে পারে ব্যবসা


আবর্জনা থেকে যখন ব্যবসা তখন ব্যাপারটা অবাক করার মত হতে পারে আপনার কাছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে এর ব্যাপক সম্ভাবনার কথা। আর এই ব্যবসার মাধ্যমে আয়ের পথ খুলতে পারেন আপনি। হতে পারেন সম্ভাবনাময় ব্যবসার এক সফল উদ্যোক্তা।
আমাদের প্রতিদিনকার উৎপাদিত বর্জ্য আমরা নানা ভাবে ফেলে দেই। এই ফেলে দেওয়া বর্জ্য আমাদের জন্য বড় একটি সম্পদ। যার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে বড় অংকের অর্থ আয়ের পাশাপাশি দেশের কৃষি ক্ষেত্রে ফসলের উৎপাদনে আসতে পারে বড় ধরনের সফলতা। সেই সাথে আমরা পেতে পারি দূর্গন্ধমুক্ত সুন্দর পরিবেশ।
চলুন এবার জানার করি আপনার বর্জ্য ব্যবসা কিভাবে শুরু করতে পারেন সে সম্পর্কে। আপনার এলাকায় এ ব্যবসা গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক ভাবে যে কাজটি করতে হবে তা হল আপনি যে সকল বাসা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন তাদের সাথে যোগাযোগ করুন। প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থের বিনিময়ে আপনি তাদের বাসা বাড়ির আবর্জনা সংগ্রহের জন্য প্রস্তাবনা দিন। এভাবে আপনি আপনার কাংখিত কাষ্টমার খুঁজে নিতে পারবেন।
প্রতিদিনকার আবর্জনা পরিবহনের জন্য এবার আপনার দরকার হবে ক্যারিং ভ্যান। চার সাইডে লোহার শিট তৈরী দিয়ে বক্স ভ্যানগুলো আপনি পনের থেকে বিশ হাজার টাকায় তৈরী করে নিতে পারবেন। ময়লা আর্বজনা গুলো পরিবহনের জন্য আপনাকে লোক নিয়োগ দিতে হবে। যারা প্রতিদিন বাসায় বাসায় গিয়ে ময়লা আর্বজনা গুলো সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট ডাষ্টবিনে ফেলবে।
সংগ্রহকৃত আবর্জনা গুলো থেকে রিসাইক্লিন আবর্জনা যেমন: প্রাষ্টিকের ব্যবহার্য ভাঙা জিনিসপত্র, টিনের বা লোহার টুকরা, কাগজের কার্টুন, সহ আরও বিভিন্ন বস্তু যা ভাঙারী হিসেবে আর্থিক মূল্য আছে সেগুলো সংগ্রহ করে সেখান থেকে বাড়তি অর্থ উপার্জন করাও সম্ভব। এছাড়াও আমাদের বাসাবাড়িতে যে সকল আর্বজনা গুলো তৈরী হয় সেগুলোর প্রায় ৮৫ শতাংশ আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করে জৈবসার উৎপাদন করা সম্ভব।
আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করতে চাইলে আপনার একটি নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা  করতে হবে। যেখানে আবর্জনা গুলো স্তুপকরে বাছাই করে একটা নির্দিষ্ট উপায়ে নির্দিষ্ট সময় পরে সেখান থেকে  উৎপাদিত জৈবসার তৈরী করে বাজারজাত করতে পারবেন। আর এ প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত জৈবসার ফসলের ক্ষেতে ব্যবহার করলে তা থেকে ব্যাপক ফলন পাওয়া সম্ভব। যেখানে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফসলের জমির উর্বরতা হ্রাস পায় সেখানে এই জৈবসার জমির উর্বরতা বাড়ায়।
আর্বজনা সংগ্রহ করার মাধ্যমে আপনি যতবেশী বাসা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করতে পারবেন ততবেশী আয়ের পরিমানও বৃদ্ধি পাবে। এখানে এককালীন ব্যয় বলতে ক্যারিং ভ্যান তৈরীর খরচ আর ঝুকি সর্বনিন্ম পর্যায়ে। প্রতি মাসে বর্জ্য পরিবহন শ্রমিকের বেতন এবং ক্যারিং ভ্যান মেরামত ব্যাতীত আর তেমন কোন বড় আকারের দৃশ্যমান খরচ নেই। একটু সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে আপনার বেকারত্ব ঘুচিয়ে সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে পারবেন।

বিজনেস প্লান তৈরী করবেন কিভাবে

বিজনেস প্লান তৈরী করবেন কিভাবে..?

BUSINESS-PLANব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হলে কার্যকরী একটি ব্যবসার প্লান করতে হবে। বলা হয় পরিকল্পনা কোন কাজের অর্ধেক। আর তাই সঠিক ও সুন্দর ভাবে প্লানিং তৈরী করা সম্ভব হলে ব্যবসায়ে সফলতা পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম আজ আপনাদের জন্য ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বা প্লানিং সম্পর্কে একটি সুষ্পষ্ট ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবে।
ব্যবসা কোন শর্টকাট ব্যবস্থা নয় যেখান থেকে রাতারাতি অনেক অর্থের মালিক হবেন। সুতরাং ব্যবসায়িক প্রোজেক্ট পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ বছরের একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য এবং বিস্তারিত বর্ননা থাকতে হবে অর্থাৎ আপনি কেন, কোন উদ্দেশ্যে, কি লক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করবেন তার বিস্তারিত জানা থাকতে হবে। সেই সাথে কেন ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য সফল করবেন এবং কিভাবে করবেন তাও সুর্নিদিষ্ট করতে হবে।
শুরুতেই আপনি নিজের কাছে প্রশ্ন করুন আপনি কে। আপনার কার্যক্ষমতা কতটুকু? কে কে আপনার ব্যবসার আংশীদার হতে পারে? আপনি বর্তমানে কি করেন? আপনি কি সবার থেকে আলাদা? যদি আলাদা হন তাহলে কেন আপনি অন্য সবার থেকে আলাদা? খুজে বের করার চেষ্টা করুন অন্যের থেকে বাড়তি কি যোগ্যতা আছে আপনার সেই সাথে খুঁজুন সীমাবদ্ধতা।
আপনি যে ব্যবসা করবেন বলে ভাবছেন কিংবা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অন্য কারা তা বর্তমানে করেছে? যে ব্যবসায় করবেন সে ব্যবসার পরিধি বা মার্কেট সাইজ কতটুকু হবে? এই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে আপনার জন্য কি কি সুযোগ অপেক্ষা করছে সেই সাথে আপনার জন্য কি কি হুমকি অপেক্ষা করছে তাও আপনাকে খুজে বের করতে হবে। জানতে হবে বাজারে কারা আপনার প্রতিযোগী। আপনার প্রতিযোগীদের কৌশল ও তাদের আচরন সম্পর্কেও পুর্ন ধারনা নিতে হবে।
আপনি যে পন্য বা সেবাটি নিয়ে ব্যবসায় শুরু করবেন তার সাম্ভাব্য ক্রতা চিহিৃত করার সাথে সাথে তাদের চাহিদা পর্যালোচনা করতে হবে আপনাকে। এক্ষেত্রে আপনার সার্মথ্য এবং দুর্বলতা সমূহ কি কি তা জানার চেষ্টা করুন। কারন সে অনুযায়ী আপনাকে পরিকল্পনার গতিপথ নির্ধারন করতে হবে। আপনার প্রতিযোগীদের থেকে আপনার টার্গেট মার্কেট কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ তা জানার চেষ্টা করুন। কারন সে অনুযায়ী আপনাকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে।
c4bc66d7c0da4431ff562390490850c7আপনাকে সুষ্পষ্ট ভাবে ধারনা রাখতে হবে মার্কেট শেয়ার বা মার্কেটের কত অংশ আপনি দখল করবেন। মার্কেটে কি ধরনের নিয়ন্ত্রক বিদ্যমান আছে? এবং তারা কিভাবে অন্যান্যদের নিয়ন্ত্রন করছে। আপনি কি বিক্রি করবেন? অর্থাৎ আপনি যে পন্য বা সেবা বিক্রি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি কি? সেই সাথে যে পন্য বা সেবায় আপনি বিক্রয় করবেন তর নির্দিষ্ট লভ্যংশের হার কত? আপনার মেধা সম্পত্তি কতটুকু?
এ পর্যায়ে এসে আপনার ব্যবসা সম্পর্কিত রিসার্চ এবং উন্নয়ন কার্যক্রম কি কি হবে তা সুস্পষ্ট ভাবে ব্যখ্যা করতে হবে। আপনার ব্যবসায়কে পরিচিত করার জন্য মার্কেটিং পরিকল্পনা কি? ব্যবসায়ের টার্গেট মার্কেটে অনুপ্রবেশের কৌশল কি? ক্রেতা বা টার্গেট মার্কেটে আপনার যোগাযোগ কৌশল কি? বিপনন কৌশল কি? মূল্য নির্ধারন কৌশল কি? পন্য বা সেবার বিক্রয় কৌশল কি? সেই সাথে এ্যাকশন প্লান বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যা যা করা দরকার তা সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহিৃত করতে হবে।
কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের কাঠামো কি হবে তার পরিকল্পনা করতে হবে আপনাকে। কর্মী সংগ্রহ কৌশল কি হবে? আপনার কর্মী বাহিনীকে দক্ষ করার কৌশল কি? নতুন কর্মীর ক্ষেত্রে যোগ্যতা উন্নয়ন পরিকল্পনা কি? আপনার পন্য তৈরীর জন্য যা যা দরকার তার কতটুকু আছে? কোথা থেকে কিভাবে সংগ্রহ হবে? প্রজেক্ট ব্যয় কত হবে? কত সময় দরকার হবে? কত আয় হবে? কি পরিমান ঝুঁকি নিতে হবে? ঝুঁকি কমানোর জন্য কি ব্যবস্থা করা করা হবে? অর্থায়ন কিভাবে হবে? ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর কিভাবে কাজ করবে? কিভাবে ম্যানেজ করবেন সবকিছু তা নির্দিষ্ট করতে হবে?
উপরের আলোচনার বিষয় সমুহ সুনির্দিষ্ট করে সংযুক্ত করে ব্যবসার প্লানিং বা পরিকল্পনা করতে পারলে ব্যবসায়ের সফলতার পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। সুন্দর একটি সাজানো গোছানো পথে হাঁটলে ব্যবসায়ের সমৃদ্ধিতো সময়ের ব্যাপার। আর তাই সুষ্ঠ পরিকল্পনা আপনাকে করতেই হবে।

মোটর গাড়ি মেরামত ব্যবসার আইডিয়া ও বিস্তারিত

মোটর গাড়ি মেরামত ব্যবসার আইডিয়া ও বিস্তারিত

ব্যবসা কোন নতুন ধারনা নয়। সৃষ্টির আদিকাল থেকে মানুষ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। কত ধরনের ব্যবসায় তো আছে। কিন্তু ব্যবসা শুরু করার জন্য সার্মথ্য আর জ্ঞানেরও দরকার আছে। আপনাদের জন্য উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক আইডিয়া ও সে সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা আপনাদের জানাব একটি সার্ভিসিং বা মেরামত ব্যবসা সম্পর্কে।
মোটর গাড়ির সার্ভিসিং বা মেরামতের ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আমরা আজকের প্রচ্ছদটি সাজিয়েছি। মোটর গাড়ি সার্ভিসিং ব্যবসার জন্য আপনার সর্বপ্রথমে ব্যবসার স্থান নির্বাচন করতে হবে। সাধারনত শহর অঞ্চল এ ধরনের ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান। কারন অধিকাংশ ধনী মানুষেরা শহরাঞ্চলে বসবাস করে। বাসষ্টান্ড বা পেট্রোল পাম্পের আশপাশ এ ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান। এছাড়াও যেকোন জনবহুল গাড়ি পার্কিং এলাকা কিংবা হাইওয়ে রাস্তার পাশেও এ ব্যবসার জায়গা নির্ধারন করা যেতে পারে।
মোটর গাড়ি বলতে আপনি মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মিনিবাস, বাস, ট্রাক ইত্যাদি গাড়ি মেরামতের জন্য নির্বাচন করতে পারেন। এ জাতীয় গাড়ির জন্য ইঞ্জিন ও বডির যাবতীয় কাজ সম্পর্কে আপনার জানা থাকলে সবচেয়ে ভাল করতে পারবেন। আপনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হলে আপনার জন্য এ ব্যবসায়ের সম্ভাবনাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর সুযোগ পাবেন। আবার আপনি গাড়ি মেরামত না করতে পারলেও কাজ জানা লোক নিয়োগ করে এ ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারেন।
img_wholesale_epp4মোটরগাড়ি মেরামতের ব্যবসায়ের জন্য আপনাকে প্রাথমিক ভাবে ব্যবসায়ের ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। আপনার প্রতিষ্ঠানের সুন্দর একটি নাম দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করার পর দোকান বা জায়গা ভাড়া নিতে হবে। অবশ্যই ভাড়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট চুক্তিপত্র করে নিতে ভুল করবেন না। দোকানের সামনে খোলা জায়গা পেলে ভাল হয়। তাতে করে আপনি সেখানে গাড়ি রেখে কাজ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন।
দোকান ভাড়া নেওয়া হয়ে গেলে আপনি এবার গাড়ি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনে নিন। আপনার বিনিয়োগের একটি বড় অংশ ব্যয় হবে এ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে। এবার কাজের জন্য লোকবল নিয়োগ দিন। এক্ষেত্রে অবশ্যই অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিন। কারন ব্যবসায়ের শুরুতে কম অভিজ্ঞ কিংবা অনভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিলে আপনাকে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। আপনি কাজ জানলেও আপনার পাশাপাশি অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিবেন কারনে আপনি কোন কারনে সমস্যায় পড়লে যাতে সমাধান পাওয়া সম্ভব হয়।
সাধারনত ইঞ্জিনের ত্রুটি কিংবা বডি বা ইঞ্জিনের বাইরের আবরনের ত্রুটি ও রংয়ের কাজ মোটর গাড়ির মালিকেরা করিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় আপনাকে কাজের জন্য গাড়ির মালিকদের জানানোর প্রয়োজন পড়বে। নতুন অবস্থায় ভাল সেবা দিতে পারলে স্থায়ী সেবা গ্রাহক পেয়ে যাবেন। আপনার প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ও সেবা সম্পর্কে প্রচার অব্যাহত রাখুন। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক যাদের একাধিক গাড়ি আছে তাদেরকে আপনার গ্রাহকে পরিনত করার জন্য মার্কেটিং কৌশল গ্রহন করুন এবং সুসম্পর্ক তৈরী করুন। আপনার দোকানের বাইরেও সেবা প্রদান করার জন্য পরিকল্পনা করুন। প্রয়োজনে সেবা গ্রাহীতার বাড়িতে অথবা অফিসে উপস্থিত হয়ে সেবা প্রদান করুন।
মোটর গাড়ি মেরামত ব্যবসায় প্রাথমিক ভাবে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করতে পারবেন। খুবই সল্প পরিসরে শুরু করতে চাইলে এক লক্ষ বা তার কম পরিমান টাকায়ও শুরু করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে আপনাকে মেরামতের কাজ জানতে হবে। এ ব্যবসায়ে প্রতিযোগীতা মোকাবেলা করার জন্য আপনাকে কৌশলী হতে হবে। গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক ও সর্বোচ্চ মানের সেবা প্রদান নিশ্চিত করে ব্যবসায়ের সফলতা অর্জন করতে পারবেন খুব সহজেই।
একটু হিসেব করে চলতে পারলে এ ব্যবসায় থেকে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবেন। আর ব্যবসার সাথে বিশ্বাস ও সততার যোগসুত্র স্থাপন করতে পারলে আপনার সুনাম ও বৃদ্ধি পেতে থাকবে দিন দিন। সল্প পরিমান ঝুঁকি মোকাবেলা করে এ ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবেন। সেই সাথে পরবর্তীতে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রয় করে আয় বাড়াতে পারবেন। লেগে থেকে পরিশ্রম করলে নিজে সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবেন

আপনার ব্যবসার পরিকল্পনা কিভাবে তৈরি করবেন

businessplan আপনার ব্যবসার পরিকল্পনা কিভাবে তৈরি করবেন ?


ব্যবসায় পরিকল্পনার অন্যতম প্রথম পদেক্ষেপ হচ্ছে আপনার অভিষ্ট বাজার নির্ধারণ এবং কেন ক্রেতা আপনার পণ্য ক্রয় করবে তা নির্ধারন করা।
উদাহরনস্বরুপ, যে বাজারে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা বিক্রি করবেন তা আপনার জন্য সর্বোত্তম কিনা? আপনার ব্যবসার সুযোগ-সুবিধাসমূহ এবং রীতিনীতিসমূহ স্বচ্ছ কিনা এবং সেগুলো কি ক্রেতা বা ভোক্তাদের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যর্পূন? যদি আপনি এই প্রশ্নগুলোর একটির ব্যাপারেও সন্দিহান থাকেন তবে একধাপ পিছিয়ে গিয়ে আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার কাঠামো পুর্নবিবেচনা করুন।
নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো আপনার ব্যবসায়কে যেসব অফারসমূহ প্রদান করতে হবে তা বিশ্লেষন এবং এর জন্য সঠিক ও কাংঙ্খিত বাজার নির্ধারণ এবং নিজস্ব যথাযোগ্য মর্যাদা তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।
নির্দিষ্ট করুন যা আপনাকে প্রদান করতে হবে
নিজেকে প্রশ্ন করুনঃ মূল পণ্য বা সেবার বাইরে আপনি সত্যিকার অর্থে কি বিক্রি করছেন? এই উদাহরনটি বিবেচনা করুনঃ আপনার শহরে বহু সংখ্যক রেস্তোরা রয়েছে যারা সবাই মৌলিক পণ্য- খাবার বিক্রি করছে। কিন্তু এরা প্রত্যেকেই ভিন্ন চাহিদা তৈরি এবং ভিন্ন শ্রেনীর ক্রেতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করছে।
একটি হতে পারে ফাস্টফুড রেস্তোরা, সম্ভবতো অন্যটি সাদামাটা ইটালিয়ান কিচেনে পিৎজা বিক্রি করা রেস্তোরা এবং অন্য আর একটি হতে পারে সামুদ্রিক খাবারের বিশেষায়িত রেস্তোরা যা উড-গ্রিলড মেন্যুর জন্য বিখ্যাত।
এই সকল রেস্তোরাগুলোই খাবার বিক্রি করে, কিন্তু তারা ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা সম্পন্ন ক্রেতাদের কাছে তাদের ভিন্ন ভিন্ন খাবার (ক্রেতাদের নিজস্ব চাহিদানুযায়ী) বিক্রি করছে। প্রকৃতপক্ষে তারা যা বিক্রি করছে তা হলো পণ্য, মূল্য, পরিবেশ এবং ব্র্যান্ড অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ।
যখন একটি ব্যবসায় শুরু করছেন, নিশ্চিত হয়ে নিন যে কি আপনার ব্যবসায়কে অদ্বিতীয় কর তুলবে? আপনার পণ্য বা সেবাকে পরিপূর্নতা দিতে কি প্রয়োজন? কি কি প্রক্রিয়া এবং পার্থক্য সৃষ্টিকারী উপাদান আপনার ব্যবসায়কে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আলাদাভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে সাহায্য করবে?
সকল ব্যবসায়ের সবজান্তা হবেন না- কৌশল শিখুন
আপনি কি বিক্রি করছেন তা স্বচ্ছভাবে নির্ধারন করা খুব গুরুত্বপূর্ন। আপনি সকল ব্যবসায়ের সবজান্তা হতে চাইবেন না কারন এতে ব্যবসায় উন্নয়নের উপর একটি খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। একটি ক্ষুদ্রতম ব্যবসায় হিসেবে আপনার পণ্য বা সেবাকে নিয়ন্ত্রনসাধ্য বাজারে যথাযথভাবে বিনস্ত্য করা প্রায়শই একটি সর্বোত্তম কৌশল বা নীতি হতে পারে। ছোট ছোট বিভাজন/অপারেশন পরবর্তীতে বিশেষায়িত পন্য বা সেবা অফার করতে পারে যা নির্দিষ্ট শ্রেনীর সম্ভাব্য ক্রেতাদের নিকট আকর্ষণীয় হবে।
আপনার ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন
আপনার ব্যবসার জন্য যথাযোগ্য স্থান নির্বাচন করা ব্যবসায়ের সফলতার জন্য অত্যাবশকীয়। প্রায়শই ব্যবসার মালিকরা তাদের নিজস্ব ব্যবসায়িক জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে স্হান নির্বাচন করতে পারেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ন ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বাজার পর্যালোচনা করে স্থান নির্বাচন করা হলে তা আরো বেশি ফলপ্রসু হতে পারে। আর এতে গুরুত্বপূর্ন ক্রেতাদের অজানা প্রয়োজনগুলো উন্মোচিত হয়। আপনার গবেষনা প্রক্রিয়াতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো চিহ্নিত করুনঃ
  • কোন কোন এলাকায় আপনার প্রতিযোগীরা ইতিমধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত
  • কোন এলাকাসমূহ আপনার প্রতিযোগীদের দ্বারা অবহেলিত
  • আপনার ব্যবসার জন্য সম্ভাব্য সুযোগ সুবিধাসমূহ
কোম্পানীর বর্ণনা
ব্যবসায় পরিকল্পনার এই অধ্যায়টি আপনার ব্যবসায়ের সকল উপাদানগুলোর উপর একটি উচ্চ পর্যায়ের পুনর্বিবেচনার সুযোগ প্রদান করবে। ইহা একটি বর্ধিত এলিভেটর পিচ এর সমগোত্রীয় যা পাঠকদের এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদেরকে দ্রুত তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য এবং এর অনন্য বিবৃতি বুঝতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার কোম্পানীর বর্ণনায় যা অন্তভুক্ত করতে হবে
  • আপনার ব্যবসায়ের প্রকৃতি বর্ণনা করুন এবং বাজারের যেসকল চাহিদাসমূহ মেটানোর চেষ্টা করছেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
  • ব্যাখা করুন কিভাবে আপনার পণ্য বা সেবা এসব চাহিদাসমূহ মেটাবে।
  • আপনার কোম্পানী যেসকল নির্দিষ্ট ভোক্তা, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়কে সেবা প্রদান করছে এবং করবে তাদের একটি তালিকা তৈরি করুন।
  • প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাসমূহ বর্ণনা করুন যা আপনার প্রতিষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করবে বলে আপনি বিশ্বাস করেন। যেমন- আপনার অবস্থান, অভিজ্ঞ কর্মিবৃন্দ, দক্ষ কার্যবিধি অথবা সামর্থ্য যা আপনার ক্রেতাদের কাছে আপনার মূল্যায়ন এনে দেবে।
বাজার বিশ্লেষন
আপনার ব্যবসায়ের পরিকল্পনায় বাজার বিশ্লেষন অধ্যায়টি আপনার যেকোনো গবেষনালব্ধ বিষয় এবং সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আপনার শিল্প এবং বাজার সংক্রান্ত জ্ঞান বৃদ্ধি করবে।
আপনার বাজার বিশ্লেষনে কি বিষয়সমূহ সংযুক্ত করতে হবে
শিল্পেরবর্ণনা এবং আউটলুক- বতর্মান আয়তন এবং ঐতিহাসিক বৃদ্ধির হার এর পাশাপাশি গতিধারা এবং বৈশিষ্ট্যসহ আপনার শিল্পকে বর্ণনা করুন। যেমন- জীবনচক্রের স্তর, পরিকল্পিত উৎপাদনহার ইত্যাদি। পরবর্তীতে, আপনার শিল্পের গুরুত্বর্পূন ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করুন।
আপনার ব্যবসায়ের অভিষ্ট বাজার সর্ম্পকে তথ্য- আপনার ব্যবসায়ের অভিষ্ট বাজারকে একটি নিয়ন্ত্রনসাধ্য আকারে সংকুচিত করুন। অনেক ব্যবসায়-ই অসংখ্য অভিষ্ট বাজারে আবেদন তৈরি করতে গিযে ভুল করে। গবেষনা করুন এবং বাজার সম্পর্কে নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ সংযুক্ত করুন।
পার্থক্যসৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্যসমূহ- আপনার সম্ভাব্য ক্রেতাদের জরুরী চাহিদসমূহ কি? সেগুলো কি পূরণ করা যাচ্ছে? ঐ শ্রেনীর সংখ্যাতত্ত্বগুলো কি এবং তারা কোথায় বাস করে? আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনো ঋতুভিত্তিক অথবা চক্রাকার ক্রয়ের প্রবনতা সেখানে রয়েছে কিনা?
প্রাথমিক অভিষ্ট বাজারের আয়তন- আপনার বাজারের আয়তনের ব্যাপারে একটু বিস্তারিত বলতে গেলে যা বুঝায়, আপনার শিল্প থেকে বাজার বার্ষিক কি পরিমাণ পন্য বা সেবা ক্রয় করে থাকে তার কি তথ্য আপনি অর্ন্তভুক্ত করতে পেরেছেন? এই শ্রেনীর জন্য ভবিষৎ বাজার প্রবৃদ্ধি কি হবে?
বাজারের কতটুকু অংশ আপনি অর্জন করতে পারবেন?- নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকার মধ্যে বাজারের শতকরা কতটুকু অংশ এবং ক্রেতার সংখ্যা আপনি অর্জন করতে পারবেন বলে আশা রাখেন? আপনার গণনার পক্ষে যুক্তি প্রর্দশন করুন।
মূল্য নির্ধারণ এবং মোট প্রান্তিক লক্ষসমূহ- মূল্য নির্ধারনী কাঠামো, মোট প্রান্তিক স্তর এবং মূল্য হ্রাসের পরিকল্পনা যা আপনি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নির্দিষ্ট করুন।
যখন আপনাকে কোনো বাজার এর উপর পরীক্ষা বা গবেষনা সম্পন্ন করতে হবে এবং তথ্য সংযুক্ত করতে হবে তখন আপনি কেবল মাত্র এর ফলাফলের উপর গুরুত্ব দিবেন। এক্ষেত্রে অন্য সব বিস্তারিত বর্নণাগুলো পরিশিষ্ট অংশে সংযুক্ত করা উচিৎ।
প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণ- আপনার প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষন আপনার প্রতিযোগিতাকে প্রোডাক্ট লাইন অথবা সেবা এবং বাজার বিভাজনের মাধ্যমে চিহ্নিত করা উচিৎ। প্রতিযোগিতামূলক চিত্রের নিন্মোক্ত বৈশিষ্টসমূহ নিরুপন করুনঃ
  • বাজার বিভাজন
  • সবলতা এবং দূর্বলতা
  • আপনার প্রতিযোগীর তুলনায় আপনার অভিষ্ট বাজার কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?
  • বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো বাধা আছে কি যা আপনাকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে?
  • বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনার “উইন্ডো অব অপরচ্যুনিটি” কি?
  • সেখানে কি কোনো পরোক্ষ বা দ্বিতীয় কোনো প্রতিযোগী রয়েছে যা আপনার সাফল্যকে প্রভাবিত করতে পারে?
  • বাজারে কি ধরনের বাধা রয়েছে (যেমন- পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি, উচ্চ বিনিয়োগ ব্যয়, মানসম্মত কর্মীর অভাব)?
আইনগত সীমাবদ্ধতাসমূহ- কোনো ক্রেতার বা সরকারী আইনগত শর্ত যা আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করছে এবং কিভাবে আপনি তাতে সম্মত হবেন তা অর্ন্তভুক্ত করুন। এছাড়াও আপনার ব্যবসায়ের উপর যেকোনো ব্যবহারযোগ্য এবং সম্মত্তি প্রক্রিয়ায় মূল্য প্রভাব উল্লেখ করুন।
সংগঠন এবং ব্যবস্থাপনা
সংগঠন এবং ব্যবস্থাপনার এই অংশে অন্তর্ভুক্ত করতে হবেঃ আপনার কোম্পানীর সাংগঠনিক কাঠামো, কোম্পানীর মালিকানার বিস্তারিত বিবরন, ব্যবস্থাপনা দলের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত এবং পরিচালকমন্ডলীদের যোগ্যতার বিবরন।
এছাড়াও আপনার ব্যবসায়ে কে কি করবে? তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কি এবং কেন আপনি তাদেরকে আপনার ব্যবসায়ে বোর্ডসদস্য হিসেবে অথবা চাকুরিজীবি হিসেবে নিয়ে এসেছেন? তাদের দায়িত্বসমূহ কি? দু-একজনের কাছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে কিন্তু যে ব্যক্তি আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনা পড়ছে সে জানতেই চাইতে পারে কে দায়িত্বরত আছে?
সুতরাং তাদেরকে বলুন। প্রত্যেক বিভাগের বর্ননা এবং তাদের কার্যাবলীর বিস্তারিত বর্ননা দিন।
এই বিভাগে আপনার পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন (যদি আপনার কোনো উপদেষ্টা পর্ষদ থাকে) এবং তাদেরকে আপনি এখানে রাখার ব্যাপারে কেন আগ্রহী তা অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। কি ধরনের বেতন কাঠামো এবং অন্যান্য সুবিধাদি আপনার কমকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য রেখেছেন? কি ধরনের উৎসাহমূলক ব্যবস্থা রেখেছেন? পদোন্নতিরপদ্ধতি কি হবে? আপনার পাঠকগনকে পুনঃনিশ্চিত করুন যে আপনার স্টাফরা কোম্পানীর জন্য তাদের পদবী থেকেও অনেক বেশী মূল্যবান।
সাংগঠনিক কাঠামো
সাংগঠনিক চার্ট এর সাথে বিস্তারিত বর্ণনা করা কোম্পানীর কাঠামোগত চিত্র তুলে ধরার একটি সহজ অথচ কার্যকরী পদ্ধতি। এটা প্রমাণ করবে যে, কোন কিছু আপনি সুযোগের অপেক্ষায় ফেলে রাখেননি, আপনার কোম্পানীতে কে কি করবে এবং কে সকল কাজকর্মের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে কর্মরত থাকবেন সেটা আপনি সঠিকভবেই ঠিক করেছেন। কোন কিছুতেই ফাকফোকর থাকবেনা এবং কোনো কিছুই তিন বা চার বার করা হবেনা। এটা একজন সম্ভাব্য উদ্যোক্তা অথবা চাকুরীজীবির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য
এ অধ্যায়ে আইনি কাঠামোর সাথে সাথে আপনার ব্যবসায়ের উত্তরসূরী মালিকানার তথ্যও সংযুক্ত করা উচিৎ। আপনি কি আপনার ব্যবসা নিগমবদ্ধ/সমসংস্থাভুক্ত করিয়াছেন? যদি করে থাকেন, তবে এটা কি সি অথবা এস করপোরেশন? অথবা সম্ভবতো আপনি কারো সাথে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছেন। যদি তাই হয়, এটা কি সাধারন অথবা লিমিটেড অংশীদারি ব্যবসায়? অথবা হয়তো আপনিই এর একমাত্র সত্ত্বাধিকারী।
নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ন মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যগুলো আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার সাথে অর্ন্তুভুক্ত করা উচিৎঃ
  • মালিকদের নাম
  • শতকরা মালিকানার পরিমাণ
  • কোম্পানীর সাথে সম্পৃক্ততার সীমারেখা
  • মালিকানার ধরন (সাধারন স্টক, প্রিফারেড স্টক, সাধারন অংশীদার, সীমাবদ্ধ অংশীদার)
  • অপরিশোধিত সমতুল্য ইক্যুইটি (অর্থাৎ, অপশনস, ওয়ারেন্টস, পরিবর্তনীয় ঋণ)
  • সাধারন স্টক (অর্থাৎ অনুমোদিত অথবা জারিকৃত/ইস্যুকৃত)
  • ব্যবস্থাপনার প্রোফাইল
  • বিশেষজ্ঞগন একমত যে প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানীর সফলতার অন্যতম একটি শক্তিশালী উপাদান হলো সক্ষমতা এবং ঐ কোম্পানীর মালিক অথবা ব্যবস্থাপনা দলের ট্রেক রেকর্ড বা কর্মপন্থা, সুতরাং আপনার পাঠকদের আপনার কোম্পানীর গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সর্ম্পকে জানতে দিন। এবং এই গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত তথ্যসংবলিত জীবনবৃত্তান্ত আপনার পাঠকদের নিকট সরবরাহ করুনঃ
  • নাম
  • পদমর্যাদা (প্রাথমিক দায়িত্বসমূহসহ পদমর্যাদার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা অর্ন্তভুক্ত করুন)
  • প্রাথমিক কর্তৃত্ব এবং দায়িত্বসমূহ
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • অনন্য অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতাসমূহ
  • পূববর্তী চাকুরির বর্ণনা
  • বিশেষ দক্ষতাসমূহ
  • পূর্ব কর্মপন্থার ইতিবৃত্ত
  • শিল্প স্বীকৃতি
  • সামাজিক সম্পৃক্ততা
  • কোম্পানীতে চাকুরির সময়কাল
  • বেতন কাঠামো এবং স্তর (নিশ্চিত হয়ে নিন এগুলো যেন অবশ্যই খুব কম বা বেশি না হয়)
  • নিশ্চিত হউন যে অর্জনগুলো পরিমাপ করা হয়েছে (যেমন- দশজন সদস্য বিশিষ্ট একটি বিক্রয় দল গঠন করা হয়েছে, পনের সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগ গঠন করা হয়েছে, প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ১৫% আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রত্যেক বছরে ২টি করে খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র বেড়েছে, কাস্টমার সার্ভিসের উন্নয়ন হয়েছে এবং এতে কাস্টমার সংখ্যা ৬০% থেকে ৯০% হারে বেড়েছে)। আপনার আশেপাশের লোকজন কিভাবে আপনার নিজের দক্ষতার প্রশংসা করছে তাও তুলে ধরুন। আর যদি আপনি মাত্র শুরু করে থাকেন, তবে প্রত্যেকের অসাধারন অভিজ্ঞতা কিভাবে আপনার ব্যবসার সাফল্যের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে তা তুলে ধরুন।
পরিচালক মন্ডলীদের যোগ্যতা
একটি অবৈতনিক উপদেষ্টামন্ডলীর প্রধান সুবিধা হলো এটা কোম্পানীর জন্য যে বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে পারে তা আপনার কোম্পানী অন্য কোথা থেকে সরবরাহ করতে পারবেনা। একটি সুপরিচিত, সফল ব্যবসায়ের মালিকগন বা ব্যবস্থাপকগন এর তালিকা আপনার কোম্পানীর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং ব্যবস্থাপনা দক্ষতার উপলদ্ধিকে বৃদ্ধি করতে সুদূর প্রসারী ফলাফল এনে দিতে পারে।
আপনার যদি পরিচালনা পর্ষদ থাকে, তবে আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার রুপরেখা উন্নয়নের সময় নিশ্চিতভাবে নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ সংগ্রহ করে নিন।
  • নামসমূহ
  • পরিচালনা পর্ষদে অবস্থান
  • কোম্পানীর সাথে সম্পৃক্ততার সীমারেখা
  • ব্যাকগ্রাউন্ড/ইতিবৃত্ত
  • কোম্পানীর সফলতার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক এবং ভবিষতব্য অবদান
সেবা বা পন্য সমূহ
আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার সাংগঠনিক এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক অধ্যায়ের সমাপ্তির পর পরবর্তী ধাপ হলো বিদ্যমান ও সম্ভাব্য ক্রেতাদের প্রতি সুবিধাসমূহ গুরুত্বারোপ করে কোথায় আপনার পন্য অথবা সেবা’র বর্ণনা করবেন তা নির্ধারন করা। এক্ষেত্রে কেন আপনার পণ্যটি অভিষ্ট ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করবে তার উপর গুরুত্বারোপ করুন।
আপনার পণ্য বা সেবা’র এই অধ্যায়ে যা অর্ন্তভুক্ত করতে হবে
আপনার পণ্য বা সেবার বর্ণনা
আপনার পণ্য বা সেবার সুনির্দিষ্ট সুবিধাসমূহ ক্রেতাদের চাহিদার আলোকে সংযুক্ত করুন। ক্রেতাদের চাহিদা পূরনের জন্য আপনার পণ্য বা সেবার সক্ষমতা, যেকোনো অতিরিক্ত সুবিধা এবং পণ্যের বর্তমান উন্নয়নের ধারা (যেমন- ধারনা, মূলরুপ) ইত্যাদি বিষয়গুলো আপনার বর্ণনা করা উচিৎ।
আপনার পণ্যের জীবনচক্রের বা উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বর্ণনা
আপনার পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া কোথায় হচ্ছে এর পাশাপাশি যেসব উপাদান এই উৎপাদন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এই তথ্যসমূহ নিশ্চিতভবে অর্ন্তভুক্ত করুন।
সুনাম
যদি আপনার বিদ্যমান, অমিমাংসিত অথবা কোনো প্রত্যাশিত কপিরাইট অথবা সত্ত্বাধিকার থেকে থাকে তাহলে তাদের একটি তালিকা তৈরি করুন। এছাড়াও পণ্যের যে কোনো একটি প্রধান দিক যা বাণিজ্যিক গোপণীয়তা হিসেবে স্বীকৃত তা প্রকাশ করুন। সবশেষে, বিদ্যমান আইন চুক্তি সমূহের সাথে যে কোনো তথ্য অর্ন্তভুক্ত করুন যেমন- গোপণীয়তা চুক্তি অথবা অপ্রতিদ্বন্দ্বিতা চুক্তি।
গবেষনা এবং উন্নয়নমূলক কার্যাবলী (আর এন্ড ডি)
কোনো গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কার্যাদি যাতে আপনি অর্ন্তভুক্ত আছেন কিংবা ভবিষৎে অর্ন্তভুক্ত থাকার পরিকল্পনা করছেন তা আলোকপাত করুন। ভবিষৎ “আর এন্ড ডি” কার্যাবলী থেকে কতটুকু ফলাফল আপনি আশা করেন? শুধুমাত্র আপনার নিজের ব্যবসার “আর এন্ড ডি” সামর্থ্য নিয়েই বিশ্লেষন নয়, আপনার শিল্পের অন্যান্য সবার “আর এন্ড ডি” সামর্থ্য বিশ্লেষনও নিশ্চিত করুন।
আপনার বাজার বিশ্লেষন
একটি সফল ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য আপনাকে আপনার ক্রেতা, প্রতিযোগী এবং শিল্প সর্ম্পকে জানতে হবে। বাজার গবেষনা হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যা আপনাকে বাজারে কোন পণ্য বা সেবাগুলো চাহিদাপূর্ণ এবং কিভাবে পণ্য বা সেবাকে প্রতিযোগিতামূলক করা যায় তা বিশ্লেষন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বাজার গবেষনা আপনাকে মূল্যবান অর্ন্তদৃষ্টি সরবরাহ করে সাহায্য করতে পারেঃ
  • ব্যবসায়ের ঝুকি কমাতে
  • আপনার শিল্পের চলমান এবং আসন্ন সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করতে
  • বিক্রয় সুযোগগুলো চিহ্নিত করতে
কিভাবে বাজার গবেষনা পরিচালনা করবেন
আপনার ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে নিন্মোক্ত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে বাজার গবেষণার মৌলিক বিষয়গুলো বুঝুন।
১. বাজার এবং শিল্পের সরকারী উৎসের তথ্য চিহ্নিত করা
সরকার ব্যবসা, শিল্প এবং অর্থনৈতিক অবস্থা সর্ম্পকে একটি তথ্যভান্ডার সরবরাহ করে থাকে যা বাজার গবেষণায় সহায়ক হতে পারে। এই উৎসগুলো আপনাকে ক্রেতা এবং প্রতিযোগীদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য সরবরাহ করেঃ
  • আর্থিক সূচক
  • চাকরির পরিসংখ্যান
  • আয় এবং উপার্জন
২. বিশ্লেষনের অতিরিক্ত উৎস খুজে বের করা
বাণিজ্যিক দল, ব্যবসায়িক ম্যাগাজিন, শিক্ষা প্রথিষ্ঠান এবং অন্যান্য তৃতীয় পক্ষসমূহ ব্যবসায়িক গতিধার সর্ম্পকে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষন এবং গবেষণা করে থাকে। আপনার অবস্থান এবং শিল্প সর্ম্পকে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ইন্টারনেট এবং তথ্যপুঞ্জ ব্যবহার করুন।
৩. আন্তজার্তিক বাজারকে বুঝতে হবে
আজকের অর্থনীতি হচ্ছে একটি বৈশ্বিক বাজার। সুতরাং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিসমূহ বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করবে।

জীবন বদলে নিতে এরকম একটি লেখাই যথেষ্ট


জীবন বদলে নিতে এরকম একটি লেখাই যথেষ্ট….


1660943_650704721699986_3927558007345883469_nসুশান্ত পালের এ লেখাটি আপনারা অনেকেই পড়ে থাকবেন। তারপরও বলছি আবার একবার পড়ুন। ধন্যবাদ সুশান্ত দাদা আপনার অসম্ভব প্রেরণাদায়ক এ লেখাটির জন্য।
২৭ বছর বয়সে যখন হন্যে হয়ে ব্যাংকে চাকরি খুঁজছেন, তখন আপনারই বয়েসি কেউ একজন সেই ব্যাংকেরই ম্যানেজার হয়ে বসে আছেন। আপনার ক্যারিয়ার যখন শুরুই হয়নি, তখন কেউ কেউ নিজের টাকায় কেনা দামি গাড়ি হাঁকিয়ে আপনার সামনে দিয়েই চলে যাচ্ছে। কর্পোরেটে যে সবসময় চেহারা দেখে প্রমোশন দেয়, তা নয়। দিন বদলাচ্ছে, কনসেপ্টগুলো বদলে যাচ্ছে। শুধু বেতন পাওয়ার জন্য কাজ করে গেলে শুধু বেতনই পাবেন। কথা হল, কেন এমন হয়? সবচাইতে ভালটি সবচাইতে ভালভাবে করে কীভাবে? কিছু ব্যাপার এক্ষেত্রে কাজ করে। দুএকটি বলছি।
প্রথমেই আসে পরিশ্রমের ব্যাপারটা। যারা আপনার চাইতে এগিয়ে, তারা আপনার চাইতে বেশি পরিশ্রমী। এটা মেনে নিন। ঘুমানোর আনন্দ আর ভোর দেখার আনন্দ একসাথে পাওয়া যায় না। শুধু পরিশ্রম করলেই সব হয় না। তা-ই যদি হত, তবে গাধা হত বনের রাজা। শুধু পরিশ্রম করা নয়, এর পুরস্কার পাওয়াটাই বড় কথা। অনলি ইওর রেজাল্টস্ আর রিওয়ার্ডেড, নট ইওর এফর্টস্। আপনি এক্সট্রা আওয়ার না খাটলে এক্সট্রা মাইল এগিয়ে থাকবেন কীভাবে? সবার দিনই তো ২৪ ঘণ্টায়। আমার বন্ধুকে দেখেছি, অন্যরা যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সে রাত জেগে আউটসোর্সিং করে। ও রাত জাগার সুবিধা তো পাবেই! আপনি বাড়তি কী করলেন, সেটাই ঠিক করে দেবে, আপনি বাড়তি কী পাবেন।
আপনি ভিন্নকিছু করতে না পারলে আপনি ভিন্নকিছু পাবেন না। বিল গেটস রাতারাতি বিল গেটস হননি। শুধু ভার্সিটি ড্রপআউট হলেই স্টিভ জবস কিংবা জুকারবার্গ হওয়া যায় না। আমার মত অনার্সে ২.৭৪ সিজিপিএ পেলেই বিসিএস আর আইবিএ ভর্তি পরীক্ষায় ফার্স্ট হয়ে যাওয়া যাবে না। আউটলায়ার্স বইটি পড়ে দেখুন। বড় মানুষের বড় প্রস্তুতি থাকে। নজরুলের প্রবন্ধগুলো পড়লে বুঝতে পারবেন, উনি কতটা স্বশিক্ষিত ছিলেন। শুধু রুটির দোকানে চাকরিতেই নজরুল হয় না। কিংবা স্কুলকলেজে না গেলেই রবীন্দ্রনাথ হয়ে যাওয়া যাবে না। সবাই তো বই বাঁধাইয়ের দোকানে চাকরি করে মাইকেল ফ্যারাডে হতে পারে না, বেশিরভাগই তো সারাজীবন বই বাঁধাই করেই কাটিয়ে দেয়।
স্টুডেন্টলাইফে কে কী বলল, সেটা নিয়ে মাথা ঘামাবেন না। আমাদের ব্যাচে যে ছেলেটা প্রোগ্রামিং করতেই পারত না, সে এখন একটা সফটওয়্যার ফার্মের মালিক। যাকে নিয়ে কেউ কোনদিন স্বপ্ন দেখেনি, সে এখন হাজার হাজার মানুষকে স্বপ্ন দেখতে শেখায়। ক্যারিয়ার নিয়ে যার তেমন কোন ভাবনা ছিল না, সে সবার আগে পিএইচডি করতে আমেরিকায় গেছে। সব পরীক্ষায় মহাউত্‍সাহে ফেল করা ছেলেটি এখন একজন সফল ব্যবসায়ী। আপনি কী পারেন, কী পারেন না, এটা অন্যকাউকে ঠিক করে দিতে দেবেন না। পাবলিক ভার্সিটিতে চান্স পাননি? প্রাইভেটে পড়ছেন? কিংবা ন্যাশনাল ভার্সিটিতে? সবাই বলছে, আপনার লাইফটা শেষ? আমি বলি, আরে! আপনার লাইফ তো এখনো শুরুই হয়নি। আপনি কতদূর যাবেন, এটা ঠিক করে দেয়ার অন্যরা কে? লাইফটা কি ওদের নাকি? আপনাকে ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হতেই হবে কেন? কিংবা ডাক্তারি পাস করে কেন ডাক্তারিই করতে হবে?
আমার পরিচিত এক ডাক্তার ফটোগ্রাফি করে মাসে আয় করে ৬-৭ লাখ টাকা। যেখানেই পড়াশোনা করেন না কেন, আপনার এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করে আপনার নিজের উপর। শুধু ‘ওহ শিট’, ‘সরি বেবি’, ‘চ্যাটিংডেটিং’ দিয়ে জীবন চলবে না। আপনি যার উপর ডিপেনডেন্ট, তাকে বাদ দিয়ে নিজের অবস্থানটা কল্পনা করে দেখুন। যে গাড়িটা করে ভার্সিটিতে আসেন, ঘোরাঘুরি করেন, সেটি কি আপনার নিজের টাকায় কেনা? ওটা নিয়ে ভাব দেখান কোন আক্কেলে? একদিন আপনাকে পৃথিবীর পথে নামতে হবে। তখন আপনাকে যা যা করতে হবে, সেসব কাজ এখনই করা শুরু করুন। জীবনে বড় হতে হলে কিছু ভাল বই পড়তে হয়, কিছু ভাল মুভি দেখতে হয়, কিছু ভাল মিউজিক শুনতে হয়, কিছু ভাল জায়গায় ঘুরতে হয়, কিছু ভাল মানুষের সাথে কথা বলতে হয়, কিছু ভাল কাজ করতে হয়।
জীবনটা শুধু হাহাহিহি করে কাটিয়ে দেয়ার জন্য নয়। একদিন যখন জীবনের মুখোমুখি দাঁড়াতে হবে, তখন দেখবেন, পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে, মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ছে। স্কিল ডেভেলাপমেন্টের জন্য সময় দিতে হয়। এসব একদিনে কিংবা রাতারাতি হয় না। “আপনার মত করে লিখতে হলে আমাকে কী করতে হবে? আমি আপনার মত রেজাল্ট করতে চাই। আমাকে কী করতে হবে?” এটা আমি প্রায়ই শুনি। আমি বলি, “অসম্ভব পরিশ্রম করতে হবে। নো শর্টকাটস্। সরি!” রিপ্লাই আসে, “কিন্তু পড়তে যে ভাল লাগে না। কী করা যায়?” এর উত্তরটা একটু ভিন্নভাবে দিই। আপনি যখন স্কুলকলেজে পড়তেন, তখন যে সময়ে আপনার ফার্স্ট বয় বন্ধুটি পড়ার টেবিলে মুখ থুবড়ে পড়ে থাকত, সে সময়ে আপনি গার্লস স্কুলের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এখন সময় এসেছে, ও ওখানে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে আর আপনি পড়ার টেবিলে বসে থাকবেন। জীবনটাকে যে সময়ে চাবুক মারতে হয়, সে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করলে, যে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করার কথা, সে সময়ে জীবনটাকে উপভোগ করতে পারবেন না, এটাই স্বাভাবিক। এটা মেনে নিন। মেনে নিতে না পারলে ঘুরে দাঁড়ান। এখনই সময়!
বড় হতে হলে বড় মানুষের সাথে মিশতে হয়, চলতে হয়, ওদের কথা শুনতে হয়। এক্ষেত্রে ভার্সিটিতে পড়ার সময় বন্ধু নির্বাচনটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সাবকনশাস মাইন্ড আপনাকে আপনার বন্ধুদের কাজ দ্বারা প্রভাবিত করে। আমরা নিজেদের অজ্ঞাতসারেই আমাদের চাইতে ইনফেরিয়র লোকজনের সাথে ওঠাবসা করি, কারণ তখন আমরা নিজেদেরকে সুপিরিয়র ভাবতে পারি। এ ব্যাপারটা সুইসাইডাল। আশেপাশে কাউকেই বড় হতে না দেখলে বড় হওয়ার ইচ্ছে জাগে না। আরেকটা ভুল অনেকে করেন। সেটি হল, ধনীঘরের সন্তানদের সাথে মিশে নিজেকে ধনী ভাবতে শুরু করা। মানুষ তার বন্ধুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়। উজাড় বনে তো শেয়ালই রাজা হয়। আপনি কী শেয়ালরাজা হতে চান, নাকি সিংহরাজা হতে চান, সেটি আগে ঠিক করুন।
বিনীত হতে জানাটা মস্ত বড় একটা আর্ট। যারা অনার্সে পড়ছেন, তাদের অনেকের মধ্যেই এটার অভাব রয়েছে। এখনো আপনার অহংকার করার মত কিছুই নেই, পৃথিবীর কাছে আপনি একজন নোবডি মাত্র। বিনয় ছাড়া শেখা যায় না। গুরুর কাছ থেকে শিখতে হয় গুরুর পায়ের কাছে বসে। আজকাল শিক্ষকরাও সম্মানিত হওয়ার চেষ্টা করেন না, স্টুডেন্টরাও সম্মান করতে ভুলে যাচ্ছে। আপনি মেনে নিন, আপনি ছোটো। এটাই আপনাকে এগিয়ে রাখবে। বড় মানুষকে অসম্মান করার মধ্যে কোন গৌরব নেই। নিজের প্রয়োজনেই মানুষকে সম্মান করুন।
সুশান্ত পাল
৩০ তম বিসিএস মেধা তালিকায় ১ম স্থান অধিকারী

সাফল্যের আকাশ ছুয়ে দেখতে চান, লেগে থাকুন অটুট লক্ষে


সাফল্যের আকাশ ছুয়ে দেখতে চান, লেগে থাকুন অটুট লক্ষে…


আমরা সবাই জীবনে সফলতার জন্য মুখিয়ে থাকি। কিন্তু আমাদের অনেকেরই নাই নির্দিষ্ট কোন লক্ষ। জীবনে কোন পর্যায়ে যেতে চাই, বড় হয়ে কি হতে চাই তা অধিকাংশ মানুষের কাছে জিজ্ঞাসা করলেই বলতে পারে না। কারন তদের নির্দিষ্ট কোন লক্ষই নাই। আবার অনেককে পেয়েছি যারা তাদের লক্ষের সাথে কোন ভাবেই কম্প্রোমাইজ করতে রাজি না। তাদের একটাই চাওয়া যা কিছুর বিনিময়ে হোক তাকে লক্ষে পৌছাতে হবে।
আমাদের অনেকের লক্ষ স্থির আবার অনেকের দোদুল্যমান। একটু ঝড়ো বাতাসেই শুকনা পাতার মত উড়ে যায়। ছোট বেলায় জীবনের লক্ষ কখনও ঠিক করে দেওয়া হয় আবার কখনও বা সিদ্ধান্ত নিজেকে নিতে বলা হলেও থাকে কয়েকটি বেঁধে দেওয়া পছন্দ অপছন্দের বিষয়। ফলাফল যে কাজটি করতে ভাল লাগে না তার সাথেই উঠাবসা করতে হয়। কিছুদিন পর শুরু হয় সেখান থেকে ছুঁটে পালানোর চেষ্টা। আর জীবনের লক্ষের স্থান হয় বাংলা বইয়ের রচনা অধ্যায়ে।
ছোট বেলায় যখন যেটা ভাল লাগত সেটাই হতে মনে চাইত। কখন বা বিমান চালানোর ইচ্ছা হত, কখনও আবার ঝালমুড়িওয়ালা আবার কখনও বাসের ড্রাইভার আবার কখনও বন্দুক হাতে পুলিশ হয়ে চোর ধরার প্রচেষ্টা। পড়াশুনার শুরুতে প্রায়ই মনে হত শিক্ষক হব। এমন অজস্র হওয়ার ইচ্ছা থেকে আসলে যে কি হব সেটাই বুঝতে না পারাটা হয়ে দাড়িয়েছে প্রধান সমস্যা।
সাইন্স, আর্টস, কমার্সের বাইরে বের হয়ে আমরা কেন চিন্তা করতে পারছি না। আমাদের তো আরও অনেক কিছু হওয়ার আছে। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াও তো আরও পেশা আছে। আমাদের চিন্তা ভাবনার যতটুকু পেশার মধ্যেই আটকে থাকছে কেন। আমাদের চিন্তা শক্তির সবটুকু কাজে লাগিয়ে নিজের ইচ্ছাকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে নিজের ভাল লাগার কাজকে কেন গ্রহন করতে পারছি না। হ্যা ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারও দরকার আছে। তাই বলে যে সবাইকে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য ছুটতে হবে সেটাও নয়।
লক্ষ নির্দিষ্ট করুন কি হতে চান। তারপর কাজ একটাই সেই লক্ষের পানে ছুটতে থাকুন। লক্ষে পৌছাতে হলে লেগে থাকার কোন বিকল্প নেই। আপনাকে খেলতে হলে ১২০ মিনিট খেলার মত দম নিয়ে মাঠে নামতে হবে। ৯০ মিনিটে খেলা শেষ নাও হতে পারে। ১০-১৫ মিনিট খেলে মাঠ থেকে বিদায় নেয় তো ভীরুর দল। আরে জয় পরাজয় তো পরের ব্যাপার আগে তো মাঠে খেলুন। সেই সাথে পায়ে বল রাখার চেষ্টা করুন যাতে গোলের সাফল্য আপনার কাছ থেকেই আসে।
ছোট বেলা থেকে আমাদেরকে নিজের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে। কারও সাথে কোন কিছুর শেয়ার করার বিষয়টি শেখানো হয়নি। যার ফলাফল স্যাররা যা শিখিয়েছে তার বাইরে কিছু শিখতেও পারিনি। আমাদের মা-বাবা ছোট বেলা থেকে শিখাচ্ছে স্কুলে সবার থেকে ভাল করতে হলে কাউকে কিছু দেখানো যাবে না। হোমওয়ার্ক বা নোট কাউকে দেয়া যাবে না। ও যদি তোমার নোট পেয়ে যায় তো তোমার থেকে পরীক্ষায় ভাল করবে। তোমাকে হতে হবে সবার থেকে আলাদা।
কিন্তু এই আলাদা কিছুই যে তাকে নেতিবাচক দিকে টেনে নিচ্ছে তা কি কখনও ভেবে দেখেছি। বড় হয়েও সবার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারছে না। তার কর্মস্থলেও সে আলাদা হওয়ার চেষ্টায় থাকছে। কারও সাথে অফিসের কোন কাজের ব্যাপারেও শেয়ার করছে না। কোন কাজে প্রবলেমে পড়লেও তা নিজেই চেষ্টা করছে সমাধান করার। যা তার বস বা সহ কর্মীর সাথে শেয়ার করলে হয়ত সহজেই সমাধান করতে পারত। সেই সাথে নিজেকেও পরবর্তীতে চাকুরি হারানোর মতসমস্যায়ও পড়তে হত না।
পারিবারিক ভাবে জীবনের লক্ষ নির্দিষ্ট না করে দিয়ে তাকে সুযোগ দেওয়া উচিৎ তার লক্ষ নিয়ে কাজ করার। যে যার ভাল লাগার বিষয়টি নিয়ে কাজ করতে পারলে সাফল্য তার সুনিশ্চিত। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা যে ছেলেটি হয়ত তার গ্রামের বাজারের বাইরে আসে নি সেই কিনা ছুটে বেড়িয়েছে বিশ্বের বড় বড় শহর গুলোতে তার লক্ষের শেষ সীমানায় পৌছাতে। যে সুপারির পাতার খোলে চড়ে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেছে সেই তার লক্ষে পৌছে আকাশ ছুয়েছে।
জীবনে সাফল্য পাওয়া অনেক কঠিন কিছু নয়। যারা সফল হয় তারাও আপনার মত একই কাজ করে কিন্তু লেগে থেকে। তাদের ঘাড়ের ওপর দুইটা মাথা নয় একটাই। লক্ষটাকে স্থির রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যান। সাফল্য আপনার গলায় মালা হয়ে ঝুলবে। জীবনে করেকটা বছর পরিশ্রম করে কাটালে যদি বাকীটা জীবন ভাল থাকা যায় তবে লক্ষ স্থির না করে অবহেলায় সময় কাটানোই বোকামী

ক্যারিয়ার এ নেটিশ করা নিয়ে কিছু কথা


ক্যারিয়ার এ নেটিশ করা নিয়ে কিছু কথা….



12096433_632150170222108_9257992418377856_nআজ আমাকে কাছের একজন বন্ধু ইংরেজীতে জিজ্ঞাসা করেছিল আমার নাম্বার কত? আমি কিছু না ভেবেই আমার মোবাইল নাম্বার বলা শুরু করলাম। সে আমাকে পরমূহুর্তে বলতে শুরু করল আমি তোমার মোবাইল নাম্বার জানতে চাই নাই। ওটা আমার মুখস্থ আছে। বুঝতে বাকি রইলনা সে আমার বয়স জানতে চেয়েছিল। আমি কিছু বলার আগেই বলতে শুরু করল সময় বদলেছে সংখ্যার হিসেবে আস….
মাসুদুর রহমান মাসুদ আমন্ত্রন জানাচ্ছি আপনাদের একটু সংখ্যার হিসাব কষে দেখতে। আমরা অনেকেই চাকুরি করছি অনেকদিন ধরেই। কিন্ত সংখ্যার হিসেবটা সেভাবে মিলাতে পারি না। যা অপ্রয়োজনীয় তা আগে উপস্থাপন করি। পরে আসি যা বস জানতে চেয়েছিল সে জায়গাতে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকার প্রবণতা আর কি…বিশেষ করে মার্কেটিং এর চাকুরিতে যারা আছি তাদের মধ্যে এ প্রবণতাটা আরও বেশী।
নেটিশ করা শিখুন কিভাবে করতে হয়। আমার মনে হয়, দিয়ে কথা বলা বাদ দিন। সংখ্যায় কথা বলুন। সংখ্যায় নেটিশ করুন। কারন আপনি আমার দেশের ষোল কোটির একজন। আপনার কি মনে হয় সংখ্যায় নোটিশ এত গুরুত্বপূর্ণ নয়। আপনাকে নোটিশ করা জানতে হবে। আপনি অফিসে নতুন চাকুরি নিয়েছেন। এটা ভাল লাগছে না। এই অফিসের এই নিয়ম ভাল না। তো খাবার ভাল না। এটা এমন কেন তো এটা এমন হওয়া উচিৎ ছিল। বাথরুমে তোয়ালে নাই টিস্যু নাই। এগুলো নিয়ে কথা বলে নিজেকে নোটিশ করার দরকার নাই। ভাই সময় নেন। প্রথমে দ্যাখেন, শুনেন, বুঝেন। মানিয়ে চলেন এখানে এটা নেই। তাহলে এটা থাকে না। হুম এটা ‍এভাবেই হয় এখানে। এখানের বাথরুমে তোয়লে টিস্যু থাকে না। এভাবে চার পাঁচ বছর যাক আপনি নিজের অবস্থান তৈরী করেন, বস হোন, এবার আসেন এই সেই বাথরুম…
কেউ আপনাকে কিছু বললে আপনি তাকে বুঝিয়ে দেন কিভাবে পয়েন্ট নিতে হয় বসের কাছ থেকে। আবার কোথাও আপনার পয়েন্ট হারালে সেটা কিভাবে নিতে হয় তা বোঝাতে গিয়ে মাঝে মাঝে বসের কাছে নোটিশ হন। এভাবে শুরু করতে করতে দেখা যায় নানা ঝামেলায় জড়িয়ে শেষ পর্যন্ত চাকুরি নিয়েই টানাটানি করা শুরু হয়ে যায়। এ জাতীয় পলেটিক্স বাদ দিয়ে প্রশংসা করা করুন আপনার সহকর্মীর কাজের। প্রশংসা করা অনেক বড় একটি কাজ যা করতে পারে না অনেকেই। যার ফলাফল কর্মক্ষেত্রে নানান ঝামেলা বাড়াতে থাকে।
পরিসংখ্যান নামে একটা সাবজেক্ট আছে ব্যবসায় শিক্ষার ছাত্ররা পড়েছেন। যেটা পড়তে গিয়ে বহুবার হয়ত বলেছেন এই স্বাবজেক্ট কি কাজে আসবে ভবিষ্যতে? কোন একটি মেলায় অংশগ্রহন করার জন্য আপনার বস আপনাকে দায়িত্ব দিল ষ্টল নেওয়ার জন্য। আপনার কাছে জানতে চাইল ষ্টল পাওয়া গেছে কিনা সে সম্পর্কে। আপনি বলা শুরু করলেন বস ঈদের সময়, চাপ অনেক, এই আবলা আবলা ইত্যাদি ইত্যাদি পরে বললেন এখনও পাইনি। কিন্তু আপনার বসকে নোটিশ করেন বস এখনও পাইনি। চেষ্টা করছি। এই সমস্যা এখানে। কিন্তু তা না করে মুল বিষয়ের সাথে লেজ লাগিয়ে টানা হেচড়া শুরু করি।
মেলায় অংশগ্রহন করেছেন দিন শেষে আপনার বস জানতে চাইল। আপনি তাকে নোটিশ করা শুরু করেলেন বস ফাটায় ফেলছি একবারে, বহু লোক আসছিল, তারা ব্যপক সাড়া দিছে, একবারে ধুমমমম তাড়াক্কা অবস্থা। ‍এবার আপনার বস জানতে চাইল কত বেচেছ? আপনি মুখ কাচুমাচু করে ১৫০০ টাকা। এভাবে নোটিশ না করে সংখ্যায় করেন। বস মেলায় যারা আসছিল তাদের মধ্যে এত শতাংশ আমাদের শো রুম ‍ভিজিট করেছে, এত শতাংশ ভাল সাড়া দিয়েছে আমরা এত শতাংশ লোকের কাছে মোট এত টাকা বিক্রি করতে পেরেছি। আপনার বসও যে ব্যাপারটি যে বুঝেন না তা নয়।
ধৈয্য ধরুন। আপনি আপনার নেটিশ টা সঠিক পথে করুন। সংখ্যা পদ্ধতি প্রয়োগ করুন। আপনার সময়ের জন্য অপেক্ষা করুন আর কাজের প্রতি শ্রদ্ধা নিয়ে মনোযোগের সাথে বুদ্ধিমানের মত কাজ করে যান । আপনার ক্যারিয়ারের সাফল্য কে ঠেকায়…

আগামীর উদ্যোক্তা

ছাত্র থেকেই শুরু হোক ব্যবসা যদি হতে চান আগামীর উদ্যোক্তা…..

11949491_618495944920864_4624468202716503951_nআপনাদের অসংখ্য অনুরোধের পরিপেক্ষিতে লিখাটি প্রকাশ করছি। যদিও লিখাটি প্রকাশ করতে গিয়ে নিজেকে দাড় করাতে হয়েছে অনেক বড় একটা চ্যালেঞ্জের সামনে। ধৈয্য সহকারে লেখাটি পড়ার জন্য আমন্ত্রন জানাচ্ছি সকলকে….
আমাদের দেশের কাধে বেকারত্বের হার প্রতি বছরই বাড়ছে। সরকার পারছে না তাদেরকে সুযোগ তৈরী করে দিতে। আর আমাদের নিজেদের মানুষিকতারও পরিবর্তন ঘটাতে পারছি না আমরা। এর পেছনের কারন খুঁজতে চলুন ফেলে আসা সময়ে একটু ঘুরে আসি…. বৃটিশ আমাদের অনেক কিছুই শিক্ষা দিয়েছে কিন্তু আমরা আজও তা অনুভব করতে পারিনি। বাঙালীর হাতে চায়ের কাপ তুলে দিয়ে নিজেদের ব্যবসাকে সে সময় করেছিল সমৃদ্ধ এই বৃটিশ। নীল চাষে বাংলার কৃষকদের বাধ্য করে মসলিন কারিগরদের সমৃদ্ধ ব্যবসার ইতি টানতেও বাধ্য করেছিল তারা।
বৃটিশরা নিজেরা ব্যবসায়িক সফলতার শীর্ষে থাকলেও তারা এ বাংলার মানুষের মনে দাসত্বটা ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে। তারা বাঙালীর মনে খুব ভালভাবে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে যে চাকুরীতেই সম্মান আর নিশ্চয়তা। আর আজও আমরা সেই শৃঙ্খল ভাঙতে পারিনি। নিজেকে তাই চাকর যার শ্রুতিমধুর উচ্চারন চাকুরীর মধ্যে আটকে রেখেছি।
সেই বৃত্ত থেকে নিজেকে বের করে আনতে হবে। প্রতিষ্ঠিত করতে হবে নিজের স্বকীয়তাকে। প্ররিশ্রম আর মেধার সমন্বয় করতে হবে ছাত্র জীবন থেকেই। আপনি নিশ্চয় জানেন ছাত্র জীবনের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ উক্তিটি। সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। তাহলে আপনি কেন ছাত্র অবস্থায় ব্যবসা করতে পারবেন না? আপনি লেখাপড়া শেষ করবেন তারপর ব্যবসা করবেন ততদিনে আপনি আপনার জীবন থেকে কতটা বছর পিছিয়ে পড়বেন তা কি ভেবেছেন? যে সময়ে এসে পড়াশুনা শেষ করবেন ততদিনে আপনার ব্যবসায়িক জীবনে প্রতিষ্ঠাও পেয়ে যেতে পারেন।
আপনি প্রথমত সিদ্ধান্ত নিন আপনি কি শিক্ষা জীবন শেষে শিক্ষিত চাকর হবেন নাকি নিজেই হবেন শিক্ষিত চাকরদের বস?
আপনি পড়াশুনা করেন, কি ধরনের ব্যবসা করবেন পড়াশুনার পাশাপাশি? পড়াশুনার সাথে ব্যবসা করার টাইম কিভাবে ম্যানেজ করবেন? আপনার পারিবারিক ভাবে কতটা সাপোর্ট পাবেন? পড়াশুনা আর ব্যবসা দুটো একসাথে কি করে করা সম্ভব? এসব প্রশ্ন জট থেকে বেড়িয়ে আসুন।
নিজেকে স্থির করুন আপনার দুটোই করা সম্ভব। প্ররিশ্রম আর মেধাকে কাজে লাগান। লাজ লজ্জার মাথা খেয়ে কাজে নেমে পড়ুন। আর ব্যবসার আয়কে ভবিষ্যতের বড় বিনিয়োগ করতে সঞ্চয় করুন।
ছোট থেকে কিছু করার চেষ্টা করুন। শর্টকাটে বড় হওয়ার চিন্তা মাথায় থাকলে আগে থেকেই বাদ দিয়ে দিন। বিলগেটস এর থেকে বড় ধনী হতে আপনাকে খুব বেশী ভাল ছাত্র হতে হবে না। তবে ধৈয্যের প্রয়োজন হবে। লেগে পড়ে থেকে এগিয়ে যাওয়ার রাস্তা খুজতে হবে। সুযোগের সদ্ব্যবহার করা জানতে হবে। আপনার কাজ নিয়ে যে যা মন্তব্য করুক তাতে আপনার কি যায় আসে? আগে আপনি সন্তুষ্ট হন আপনি যে কাজ করবেন তার ওপর।
কত ধরনের ব্যবসা মানুষ করছে? আপনার কাছে যেটা পছন্দ তা থেকেই বেছে নিন না একটা। হতে পারে সেটা মোবাইল রিচার্জ এর ব্যবসা, কিংবা কোচিং সেন্টার, নার্সারী কিংবা বাড়িতে বসেই হাস, মুরগী, কোয়েল পাখি পালন, গরুর মাংশ উৎপাদন অথবা দুগ্ধ খামার। কবুতর পালন করে মুক্তির স্বাদও নিতে পারেন নিজেকে সাবলম্বী করে।
বেকারত্ব ঘুচাতে করে ফেলতে পারেন হস্ত কিংবা কুটির শিল্পের ছোট্ট একটা শপ কিংবা শো পিসের দোকান। যারা একটু তথ্য প্রযুক্তি নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে ভালবাসেন তারা দিতে পারেন কম্পিউটার বা মোবাইল এর দোকান কিংবা সার্ভিসিং সেন্টার। সৃজনশীল যারা আছেন সেই সাথে ফ্যশন সচেতন তারা কেন ফ্যাশন হাউজ বা গার্মেন্টস এর তৈরী পোষাকের ব্যবসা থেকে দূরে থাকবেন।
অধিকাংশ মেয়েদের প্রিয় খাবার চটপটি ফুসকার দোকানও করতে পারেন কিংবা ফাষ্ট ‍ফুডের দোকান করতে পারেন। অফিস পাড়ায় দুপুরে বিরিয়ানী বিক্রি করে যে আয় কম নয় তাও কিন্তু না।
গ্রামে আছেন শহুরে ব্যবসার সুযোগ নেই। তাতে কি আপনার নিজের জমি অথবা পাশেরই কারো জমি লীজ নিয়ে করতেপারেন শাক-সবজির চাষ। মজা-পচা ‍পুকুরটা পরিস্কার করে মাছ চাষ করতে পারেন। আপনার পাশেরই বাজারে কিংবা হাটে ফসল বেচাকেনার কোন একটা ব্যবসা করেও হতে পারেন সফল। উন্নত প্রযুক্তির সেবা কৃষকদের সরবরাহ করেও হতে পরেন সফল ব্যবসায়ী।
আরও যে কত কত ধরনের ব্যবসা আছে তা আপনি করে যেতে পারেন নিঃসংকোচে। আপনার দ্বারা সৃষ্টি হতে পারে অসংখ্য মানুষের কর্মসংস্থানের। আপনি চাইলেই পারবেন চলমান ব্যবসার নতুন কোন ব্যবসায়িক রুপ দিতে কিংবা নতুন কোন ব্যবসায়ের সৃষ্টি করতে। যেটা আপনার নাম বহন করে এনে দিবে দাসত্বমুক্ত পরিচয়। সফল উদ্যোক্তার পরিচয়।
আপনাদের সকলের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।
লাইক দিয়ে পেইজের সাথে থাকুন ও আপনার বন্ধুদের ইনভাইট করুন পেইজে। এবং এ বিষয় সম্পর্কে অন্যদের জানাতে পোষ্টটি শেয়ার করতে পারেন……

পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা

পেশা হিসেবে সাংবাদিকতা !

11825929_612135242223601_7465189601962997153_nভালভাবে শুরু করা মানে অর্ধেক এগিয়ে যাওয়া কথাটি আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। টেলিভিশন সাংবাদিকতা এবং সংবাদ উপস্থাপনার শুরুটাও ভালভাবে করতে হবে। কিন্তু ভালভাবে শুরুর জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা নয়। প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য কিছুটা সময় নেয়া যেতে পারে।
প্রস্তুতি গ্রহণকে কাজের অংশ ধরা হলে এটাকে শুরু মনে করা যায়। আমি মনে করি এক্ষেত্রে ভাল শুরুর অপেক্ষা না করে আজই শুরু, এ মুহুর্ত থেকেই শুরু করতে হবে। অনেক মুসলমান বলেন আগামীকাল ফজর নামাজ থেকে নিয়মিত নামাজ পড়ব। কিন্তু সেটা আগামীকাল। নামাজ নিয়মিত পড়ার সিদ্ধান্ত নিলে আগামীকাল ফজরের জন্য অপেক্ষা না করে আজ মাগরিব, এশা থেকেই শুরু করতে হবে। টেলিভিশন সাংবাদিকতায় এখন তরুণরা দলে দলে অংশগ্রহন করছে এবং সাফল্য পাচ্ছে। প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা পেশাগত কাজে প্রচুর পরিশ্রম, একাগ্রতা এবং ঝুকি নিয়ে কাজ করত। টেলিভিশন সাংবাদিকতায় যারা আছেন তারা আরো বেশি একাগ্রতা ও ঝুকি নিয়ে কাজ করছেন। হঠাৎ করে যারা টেলিভিশন সাংবাদিকতা শুরু করবেন তাদের পরিশ্রম, একাগ্রতা, নিষ্ঠা, ঝুকি যেমন বেশি তেমনি সাফল্য পেতে একটু সময় লাগতে পারে।
লক্ষ্য করুন, প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা টেলিভিশন সাংবাদিকতায় যেমন সফল তেমনি অনেক সাংবাদিকরা সংবাদ উপস্থাপনায় সফল। সেজন্য টেলিভিশন সাংবাদিকতায় জড়িত হওয়ার পূর্বে প্রিন্ট মিডিয়ায় সাংবাদিকতা করা ভাল। সাংবাদিকতা শুরুর জন্য প্রিন্ট মিডিয়ায় রয়েছে প্রচুর সুযোগ। প্রিন্ট মিডিয়াকে সাংবাদিকতার স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বলতে পারেন।
প্রিন্ট মিডিয়া থেকে যারা টেলিভিশন সাংবাদিকতা শুরু করবেন তারা টেলিভিশন সাংবাদিকতার কিছু টেকনিক্যাল বিষয় জেনে নিয়েই যে কোন টেলিভিশন চ্যানেলে কাজ শুরু করতে পারেন। দেশে এখন ২৫টির অধিক স্যাটেলাইট টেলিভিশন সম্প্রচার অব্যাহত রেখেছে এবং চ্যানেলের সংখ্যা আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেজন্য টেলিভিশন সাংবাদিকতায় প্রচুর সুযোগ তৈরি হচ্ছে। যে কোন টেলিভিশন চ্যানেলে রিপোর্টার, শিক্ষানবিশ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করার জন্য আজই আবেদন করুন এবং সাক্ষাৎকার দিয়ে টেলিভিশন সাংবাদিকতায় যুক্ত হয়ে যান।
এক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় টেলিভিশন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ যেন মনে করে টেলিভিশন সাংবাদিকতা সম্পর্কে আপনার ধারণা আছে এবং আপনি কাজটি পারবেন। সেজন্য আপনার কিছু প্রস্তুতি থাকা দরকার। রাজধানীতে বেশকিছু প্রতিষ্ঠান একমাস বা তিন মাসব্যাপী টেলিভিশন সাংবাদিকতা, সংবাদপাঠ বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। আপনি এসব প্রতিষ্ঠানে একটি কোর্স করতে পারেন। এশিয়ান জার্নালিস্ট হিউম্যান রাইটস এন্ড কালচারাল ফাউন্ডেশন (এজাহিকাফ) ১ দিনের টেলিভিশন সাংবাদিকতা ও সংবাদপাঠ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে।
এ কর্মশালায় অংশ নিয়ে আপনি কিছু ধারণা লাভ করতে পারবেন। সরকারী পর্যায়ে নিমকো ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম বিষয়ক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে থাকে। বেসরকারিভাবে বিসিডিজেসী, বিজেম, জবস এ ওয়ান, যাত্রীসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিয়মিত টেলিভিশন সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কোর্স পরিচালনা করে আসছে। সংবাদ পাঠ বিষয়টি এখন পুরোপুরি সংবাদ উপস্থাপনা।
বর্তমানে সংবাদ উপস্থাপনা অনেক আধুনিক এবং উন্নত। সংবাদ উপস্থাপনার জন্য আপনাকে শুদ্ধ উচ্চারণ জানতে হবে এবং বাচন ভঙ্গি সুন্দর করতে হবে। শুদ্ধ উচ্চারণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসটি কেন্দ্রিক কয়েকটি প্রতিষ্ঠান/সংগঠন ৩ মাসব্যাপী কোর্স পরিচালনা করে। এর মধ্যে কন্ঠশীলন, স্বরশীলন, সংবৃতা, আবৃত্তিশীলনসহ বেশ কিছু সংগঠনের তিন মাসব্যাপী কোর্সে অংশগ্রহণ করলে আপনি শুদ্ধ উচ্চারণ রপ্ত করতে পারবেন।
শুদ্ধ উচ্চারণ রপ্ত করার পাশাপাশি টিভি চ্যানেলের সংবাদ উপস্থাপনা মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করুন। এরপর কোন টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ উপস্থাপনার জন্য আবেদন করুন। যথাসময়ে সাক্ষাৎকার দিন এবং সংবাদ উপস্থাপনা শুরু করুন।

চাকরি পেতে কিভাবে এগিয়ে রাখবেন নিজেকে

চাকরি পেতে কিভাবে এগিয়ে রাখবেন নিজেকে…?

1431002965নামীদামি প্রতিষ্ঠানে উঁচু পদে চাকরি, আকর্ষণীয় বেতন কে না চায়। সব চাকরিপ্রার্থীর মধ্যেই থাকে এই স্বপ্ন পূরণের আশা। কিন্তু সবার স্বপ্ন তো আর সার্থক হয় না। গতানুগতিক নিয়োগ পদ্ধতিতে এ আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য চাই উচ্চমানের পড়াশোনা আর দীর্ঘ কর্ম-অভিজ্ঞতা।
তবে এ ব্যাপারে ভিন্ন কথা বলেছে ক্যারিয়ারবিষয়ক ওয়েবসাইট মনস্টার ডটকম। তাদের মতে, শুধু উচ্চশিক্ষা আর অভিজ্ঞতার মাপকাঠিতেই সব সময় পাবেন না উচ্চপদে চাকরি। পছন্দসই চাকরি পেতে অন্য কিছু পদ্ধতিও অনুসরণ করতে হবে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই, যেগুলো এগিয়ে রাখবে আপনাকে বাকিদের থেকে। তো, চলুন দেখে নেওয়া যাক, কী সেই সফলতার চাবিকাঠিগুলো।
জানুন-শিখুন সবকিছু
জ্ঞানের কোনো শেষ নেই, তাই প্রতিনিয়ত নিজেকে নতুন কিছু জানার কাজে নিয়োজিত রাখতে হবে। কাজ করছেন কোনো ছোট পদে? নিজের কর্মপরিসরের মধ্যে থেকেই নিজেকে মুখোমুখি করুন বিভিন্ন ঝুঁকি আর চ্যালেঞ্জের। এগুলো একজন প্রার্থীকে প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ্য পূরণে সাহায্য তো করবেই, সঙ্গে সঙ্গে আত্মবিশ্বাসীও করে তুলবে। এই প্রাতিষ্ঠানিক সাফল্য আর আত্মবিশ্বাস চাকরিদাতাদের কাছে আপনাকে করে তুলবে অন্যদের থেকে আলাদা।
বাড়িয়ে নিন যোগাযোগ দক্ষতা
নিজ কাজে দক্ষ আপনি। তাহলেই কি পাবেন উচ্চ পদের ভালো চাকরি? অবশ্যই না। কর্মদক্ষতার পাশাপাশি আপনাকে হতে হবে যোগাযোগে দক্ষ। যোগাযোগ ক্ষমতা, যা কর্মীদের সঙ্গে আপনার সম্পর্ক মজবুত করার সঙ্গে সঙ্গে করবে উচ্চপদে চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে একধাপ এগিয়ে দেবে।
কাজ করতে শিখুন দলগতভাবে
উচ্চ পদে কাজ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই দক্ষ হতে হবে ব্যবস্থাপনায়। দলগতভাবে কাজ ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধি করে। তাই প্রথম থেকেই অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে দলগত কাজ করার অভ্যাস। দলের পাঁচজনকে নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে আপনি সঞ্চয় করতে পারেন ৫০০ জনের একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা।
ধৈর্যই সাফল্য
উঁচু পদে চাকরির ক্ষেত্রে আপনাকে হতে হবে ধৈর্যশীল। ঘন ঘন চাকরি বদল কিন্তু ধৈর্যশীলতার লক্ষণ নয়। চাকরি বদলের অভ্যাস অনেক সময় চাকরিদাতাদের কাছে একটি অপছন্দের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পছন্দসই কোনো প্রতিষ্ঠানে চাকরি পেলে সেখানেই এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে নিজের ক্যারিয়ার। কোনো একটি প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ সময়ের সাফল্যের অভিজ্ঞতা অবশ্যই একজনকে এগিয়ে রাখবে।
নেটওয়ার্কিং
নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে একজন প্রার্থী এগিয়ে থাকতে পারেন অনেকটাই। বর্তমানে নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা পেশাগতভাবে চেনাজানাদের অনেকটাই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তাই নিজ চেষ্টায় এই চেনা-পরিচিতদের তালিকাটা একটু বাড়িয়ে নিতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে স্বেচ্ছাসেবকের কাজ, কনফারেন্সে অংশগ্রহণ এবং লেখালিখির মাধ্যমেও বাড়িয়ে নেওয়া যেতে পারে পরিচিতির পরিসর।
আগে জানুন চাকরিদাতার আদ্যোপান্ত
সাক্ষাৎকার দেওয়ার আগে বাসায় বসে কিছুটা হোমওয়ার্ক করে নিন। যে প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে চাইছেন, জেনে নিন প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। প্রতিষ্ঠানটি কেমন, তাদের রীতিনীতি, বিভিন্ন প্রথা, আদর্শ সম্পর্কে ভালো ধারণা নিয়েই যেতে হবে ইন্টারভিউ বোর্ডে। সাধারণত আজকাল এসব তথ্য ইন্টারনেটেই পাওয়া যায়। না পাওয়া গেলে এ ব্যাপারে সাহায্য করতে পারে প্রতিষ্ঠানের কর্মরত কর্তাব্যক্তিরা।

ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হওয়ার যোগ্যতা

freelancer in graphic designটাকাকে নয় কাজকে ভালোবাসতে হবে : ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফলতার জন্য টাকার লোভ ত্যাগ করে কাজে দক্ষতা অর্জনের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। দক্ষ লোকদের সমাদর সব জায়গার মতোই ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে। সেজন্য সবার প্রথমে বিভিন্ন রিসোর্স থেকে কাজ শিখে সেগুলোর বাস্তবভিত্তিক কাজ করে দক্ষতা অর্জন করলেই অনলাইনে কাজের রেট এবং চাহিদা দুটি বৃদ্ধি পাবে। এরকম চাহিদাপূর্ণ অবস্থানে আসার জন্য অবশ্যই কিছুটা সময় দিতে হবে। মনে রাখবেন, অদক্ষ ব্যক্তিদের টাকার পেছনে দৌড়াতে হয়। কিন্তু দক্ষ ব্যক্তিদের পেছনে টাকা দৌড়ায়।
ফ্রিল্যান্সিংকে শুধু পার্টটাইম হিসেবে নয় ফুলটাইম ক্যারিয়ার ভাবা শুরু করতে হবে : সময় এসেছে ফ্রিল্যান্সিং পেশাকে পার্টটাইম চাকরি না ভেবে ফুলটাইম হিসেবে নিতে হবে। তাহলে প্রত্যেকে কাজের ব্যাপারে আরও বেশি সচেতন হবে এবং দক্ষ হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী হবে। তখন বিদেশী বায়াররা এদেশের ফ্রিল্যান্সিংদের কাজ দিতে আরও বেশি স্বস্তি পাবে।
ফ্রিল্যান্সিংকে পার্টটাইম ভাবার কারণে মূলত আমরা তিনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি : ১) দিনের সময়ের সর্বোচ্চ সময়টি ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য বরাদ্দ রাখতে পারছি না। সেজন্য দক্ষ যেমন হতে পারছি না, তেমনি কাজও বেশি করতে পারছি না। ২) যখন ফ্রিল্যান্সিংকে ফুলটাইম হিসেবে ভাবা শুরু হবে তখন আরও বেশি মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়বে। বৈদেশিক মুদ্রা আরও বেশি দেশে ঢুকবে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনীতিতে বড় সুফল নিয়ে আসবে। ৩) ফুলটাইম কাজ ভাবা শুরু করলে ফ্রিল্যান্সিং শুধু অনলাইন আয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, ধীরে ধীরে এটি তখন সম্মানজনক ক্যারিয়ার হিসেবে বিবেচিত হওয়া শুরু হবে। তখন প্রত্যেকের মধ্যে ভালো করার ব্যাপারে উৎসাহ বাড়বে।
যোগাযোগের দক্ষতা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতা অনেক বাড়িয়ে দেয় : এক জরিপে দেখা গেছে, যাদের যোগাযোগ দক্ষতা বেশি তারা অন্যসব জায়গার মতো ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রেও সফল সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। যোগাযোগ দক্ষতা বলতে বোঝায় : বায়ারের বক্তব্য সঠিকভাবে বুঝতে পারা, বায়ারকে নিজের বক্তব্য সঠিকভাবে বোঝাতে পারা এবং সেইসঙ্গে বায়ারকে কনভেন্স করতে পারাটাই হচ্ছে যোগাযোগের মৌলিক দক্ষতা।
যোগাযোগের এ মৌলিক দক্ষতা থাকলে বায়ার কাজ দিয়ে স্বস্তি পায়। আর সেজন্য একবার কাজ করলে পরের কাজটির ক্ষেত্রেও যথাসম্ভব চেষ্টা করেন, একই ফ্রিল্যান্সারকেই কাজটি দেয়ার জন্য। কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাহলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে খুব দ্রুত সফল হওয়া যাবে।
ইংরেজিতে যত ভালো হবেন, তত বেশি সফল হবেন : ইংরেজি হচ্ছে যে কোনো ধরনের বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগের মূল ভাষা। যে যত ভালো ইংরেজি পারে, সে তত বেশি ভালোভাবে বায়ারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে। কারণ বায়ারের নির্দেশনা বুঝতে তার অনেক বেশি সহজ হয়। বায়ারও যাকে দিয়ে কাজ করাবে, তার কথা জড়তা ছাড়া বুঝতে পারে। এ ধরনের ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে বায়ার ?স্বাচ্ছন্দ্যে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারে দেখে দীর্ঘদিনের কাজের সম্পর্ক বজায় রাখে। বেশিরভাগ সময় দেখা যায়, শুধু ভাষাগত সমস্যার কারণে কাজ দিয়ে সন্তুষ্ট করার পরও বায়ার এ ফ্রিল্যান্সারের কাছে আর নতুন কোনো কাজ নিয়ে ফিরে আসে না। একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার জন্য তাই নিজেকে ইংরেজিতে ধীরে ধীরে দক্ষ করে তোলার দিকে নজর দিতে হবে।
যত বেশি কিছুতে যত বেশি দক্ষ হবেন, সফল হতে পারবেন তত বেশি : একজন ফ্রিল্যান্সারের কাছে একটি কাজের বাইরে অন্যান্য আরও কাজের সাপোর্টও পাওয়া যায়, তাহলে তার সঙ্গে বায়ারের দীর্ঘদিনের জন্য সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেজন্য সব কাজেই দক্ষতা তৈরি করতে পারলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রে বায়ারদের কাছে নিজের চাহিদা বৃদ্ধি করা যায়। এক্ষেত্রে মাথাতে রাখতে হবে, সব কাজে সমান দক্ষতা অর্জন করাটা অনেক বেশি কষ্টকর। যেটা করতে হবে, কোনো একটিতে ভালো দক্ষ হতে হবে, বাকিগুলোতে মোটামুটি দক্ষ হলেই চলবে।
সবসময় নিজের আরও বেশি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নেশা থাকতে হবে : ফ্রিল্যান্সার হিসেবে বহুদিন পর্যন্ত বায়ারদের কাছে নিজের চাহিদা ধরে রাখার জন্য সবসময় নতুন কিছু শেখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। কেউ যদি এসইওর কাজের মাধ্যমে আউটসোর্সিং করে থাকেন, তাহলে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় এসইও সম্পর্কিত লেখা পাওয়া যায়, এরকম ব্লগগুলোর পোস্ট নিয়মিত পড়া উচিত। নতুন যত আপডেট আসছে, সবকিছু জেনে সেগুলোতে নিজেকে দক্ষ করতে হবে।
যে যত বেশি গুগলের ওপর নির্ভরশীল, তার সফলতার সম্ভাবনা তত বেশি : কোনো সমস্যায় পড়লে সে বিষয়ে জানার জন্য কোনো ব্যক্তির কাছে প্রশ্ন না করে, সে বিষয়ে গুগলকে প্রশ্ন করা উচিত। গুগলের ওপর এ নির্ভরশীলতা জানার পরিধি অনেক বাড়িয়ে দেয়। গুগলে খোঁজ করলে অনেক উত্তর পাওয়া যাবে, যা চিন্তা শক্তিকে বাড়াবে। ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতার জন্য শুরু থেকেই গুগলের ওপর নির্ভরশীলতা বাড়াতে হবে।
ইন্টারনেটের ওপর জীবনকে নির্ভরশীল করতে পারলে ফ্রিল্যান্সিং সফল হবেন : ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলেই কাজ পেয়ে যায় না। এরকম সফলতার জন্য শুরুর দিকে কষ্ট অনেক বেশি করতে হয়। আর এজন্য ইন্টারনেটে দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যয় করা উচিত। শুধু ফেসবুকে সময় ব্যয় না করে, বিভিন্ন ব্লগ, ফোরাম, ভিডিও কিংবা অনলাইনের অন্য জায়গাগুলো প্রতিদিনের বড় একটা সময় ব্যয় করার অভ্যাস নিজের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। এ জায়গাগুলোতে সারাবিশ্বের বিভিন্ন বড় বড় ফ্রিল্যান্সাররা তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করে। এগুলো সত্যিকারভাবে অনেক নতুন কিছু শিখতে এবং সবকিছুর বিষয়ে আরও অ্যাডভান্স হতে সহযোগিতা করে।
প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি ছাড়া কিছুতেই সফল হওয়া যায় না : যে কোনো কাজের সফলতার জন্য যেমন সবার প্রথমে দরকার ইচ্ছাশক্তি, ফ্রিল্যান্সিংয়ের ক্ষেত্রেও বিষয়টা ব্যতিক্রম নয়। প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তি থাকলে ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফল হওয়ার ব্যাপারে যত প্রস্তুতিমূলক পরিশ্রম করা দরকার, সবকিছু করতে আগ্রহ থাকবে। সুতরাং কারও কথা শুনে হালকাভাবে লক্ষ্য নিয়ে নামলে ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনাটা ৯৫ ভাগ। কিন্তু যদি নিজের তীব্র ইচ্ছা থাকে এবং একাগ্রতা থাকে, তাহলেই ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল হবেন।
ধৈর্য শক্তি এ সেক্টরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ : ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে ধৈর্য শক্তি বাড়িয়ে নেয়া উচিত। কাজ শিখতেও ধৈর্য নিয়ে শিখতে হবে। পরে শুরুতে কাজ পাওয়ার জন্য বহুদিন ধৈর্য সহকারে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। এমন হতে পারে, কাজ শেখার পর ১ম কাজের অর্ডার পেতে ১ বছরও লেগে যেতে পারে। কিন্তু তারপরও ধৈর্য হারালে চলবে না। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, নিজেকে দক্ষ করতে হবে, বায়ারের কাছে কাজ চাওয়ার ধরনে পরিবর্তন এনে দেখা যেতে পারে। হতাশ না হয়ে কাজ পাওয়ার ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
সফল ফ্রিল্যান্সার হতে হলে ওপরের বিষয়গুলো নিজের ভেতরে নিয়ে আসার চেষ্টা শুরু করে দিতে হবে। আন্তর্জাতিকবাজারে টিকে থাকার চ্যালেঞ্জে জিততে হলে নিজের মধ্যে বিশেষ কিছু থাকতেই হবে। কাজের দক্ষতার পাশাপাশি অধ্যবসায়, ধৈর্য এবং নতুন কিছু শেখার নেশা সফলদের কাতারে পৌঁছে দেবে।
সফল হতে জরুরি
* টাকাকে নয় কাজকে ভালোবাসতে হবে।
* ফ্রিল্যান্সিংকে শুধু পার্টটাইম হিসেবে নয়, ফুলটাইম ক্যারিয়ার ভাবা শুরু করতে হবে।
* কমিউনিকেশন দক্ষতা ফ্রিল্যান্সিংয়ের সফলতা অনেক বাড়িয়ে দেয়।
* ইংরেজিতে যত ভালো হবেন, তত বেশি সফল হবেন।
* যত বেশি কিছুতে বেশি দক্ষ হবেন, সফল হতে পারবেন তত বেশি।
* সবসময় নিজের আরও বেশি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য নেশা থাকতে হবে।
* যে যত বেশি গুগলের ওপর নির্ভরশীল, তার সফলতার সম্ভাবনা তত বেশি।
* ইন্টারনেটের ওপর জীবনকে নির্ভরশীল করতে পারলে ফ্রিল্যান্সিং সফল হবেন।
* প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি ছাড়া কিছুতেই সফল হওয়া যায় না।
* ধৈর্য শক্তি এ সেক্টরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

চাকরিতো কারাবাস, উদ্যোক্তার মুক্তআকাশ

চাকরিতো কারাবাস, উদ্যোক্তার মুক্তআকাশ
u75691_815652_412955চাকরি ও কারাবাস/উদ্যোক্তা ও আকাশ:
জীবন-যাপনের জন্য আমাদেরকে কোন না কোন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এখন প্রশ্ন আমরা কোন অর্থনৈতিক জীবন ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে যাব? আমরা কি চাকরি করব? প্রশ্ন করি,আমরা চাকরি করি কেন ? সহজ একটিই উত্তর আর্থিক নিরাপত্তার কারণে। যেহেতু অর্থই পারিবারিক-সামাজিক-রাজনৈতিক সকল নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে সুতরাং কেন সেই অর্থ উপার্জনে চাকরি নয় ? চাকরি ছাড়াও নিজের উদ্যোগে ব্যবসা করে যারা অর্থ উপার্জন করছে তাদের সাথে একজন চাকরিজীবির ভিন্নতা কোথায় ? একটা ছোট্ট উদাহরণ টেনে ব্যাপারটা কিছুটা পরিষ্কার করা যেতে পারে। পাখি খাঁচায় এবং আকাশে দুই জায়গাতেই নিরাপদ। কিন্তু পাখি তার স্বভাবগুনেই আকাশমুখী। মানুষ কি আকাশমুখী নয় ? মানুষ কি জন্ম মাত্রই স্বাধীনতা চায় না ? উত্তরে বিরোধিতা করার কোন সুযোগ নেই, চায়। তাহলে চাকরি কি একজন মানুষকে নিরাপত্তা দিচ্ছে খাঁচায় বন্দি রেখে ? শুনতে খারাপ লাগলেও আসলে এটাই সত্য। মানুষ তাহলে কেন মেনে নিচ্ছে এই বন্দিত্ব ? এসব নিয়ে আরো বিস্তর আলোচনা করা যাক…
নির্ভরশীলতা : নির্ভরশীলতা একটি জটিল রোগ। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজে কিছু করতে চায় না এবং পরজীবি থাকতে ভালোবাসে। পরের দাসত্ব মেনে নিয়ে অধীন থাকতে চায়। অর্থাৎ সে আসলে অন্যের প্রয়োজনে বেঁচে থাকে, অন্যের জীবনে বেঁচে থাকে, নিজের জীবনে বা নিজের প্রয়োজনে তার চাহিদা থাকেনা। এভাবে নিজেকে বঞ্চিত করে আপনি কতটুকু ভালো থাকতে পারেন ?
অনভিজ্ঞতাকে দূবর্লতা মনে করা : একজন মানুষ উদ্যোগি হয়ে কোন ব্যবসায় নামতে চাইলে নিজেকে অনভিজ্ঞ মনে করে সাহসিকতার পরিচয় দিতে ব্যর্থ হয়। এবং মেনে নেয় চাকরি জীবন। কিন্তু পথে না নেমেই কি কেউ পথ থেকে সঞ্চয় করতে পেরেছে? গৃহপালিত জীবন ব্যবস্থা : আমাদের পরিবার-সমাজ অনেক সময় পোষ্যতাকে প্রোমোট করে। তাদের চাওয়া পাওয়াই থাকে তুমি বড় হয়ে একজন চমৎকার পোষ্য হবে এবং আমাদের মুখ উজ্জ্বল করবে। আমাদের চিন্তা-চেতনাকে তারা তাদের আঁচলের চাবির মতো বেঁধে রাখতে চায়। পরিবার-সমাজের এইসব দারিদ্রতা-সংকীর্ণবোধ ভেঙ্গে আমরা কি দেয়ালের ওপাশে যাব না ? দায়িত্বকে চাপ
মনে করা : নিজে উদ্যোগি হয়ে কোন ব্যবসা শুরু করলে তাকে ঘিরে অনেক কর্মসংস্থান তৈরি হয় এবং তার মাধ্যমে তাদের জীবন জীবিকা নিশ্চিত হয়। অনেকে এই দায়িত্বকে চাপ মনে করেন এবং চাকরি জীবন মেনে নেন। আর এভাবেই কমে আসছে কর্মসংস্থান। দেশে এখন তাই বেকার বৃদ্ধির মৌসুম। আমরা কি আমাদের আর আমাদের চারপাশের মানুষের জন্য কিছু করব না ?
ঝুঁকি মুক্ত থাকা : এটা সত্য যে চাকরি মাস অন্তর নির্দিষ্ট অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং একজন চাকরিজীবি নিজেকে ঝুঁকি মুক্ত মনে করেন। আবার এটাও সত্য সে অর্থ নির্দিষ্ট এবং সব সময় যথেষ্ট নয়। স্বপ্নকে বড় করে দেখুন- স্টিভ জবস্ যেটা বলতেন। আমরা কি চাকরিকে ঝুঁকি মুক্ত স্বীকার করে নির্দিষ্ট ফ্রেমে বাঁধা জীবন মেনে নেব ?
প্রভুত্ব স্বীকার করা : কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে চাকরি করতে গেলে আপনাকে হয়তো বার বার বলতে হবে ‘স্যরি বস’। এই ‘বস’ শব্দটি ব্রিটিশ কালচার থেকে এসেছে যার অর্থ প্রভু। তারা আমাদের এই উপমহাদেশে দুইশ বছরের বেশী প্রভুত্ব করেছে। আমরা আর কতদিন এই প্রভুত্বের কালচারে নিজেদেরকে বশীভূত রাখব ?
কাপুরুষতা : অন্যের বেঁধে দেয়া স্বপ্নে আপনি বসবাস করেন। অন্যের মতো করে আপনি মুখস্থ বলেন আপনার জীবন পাঠ। অথচ নিজের মতো করে স্বপ্ন দেখতে নিজের মতো করে জীবন পাঠ করার সাহস আপনার নেই। রোজ দিন একই সময় অফিস যাওয়া, একই সময় ফেরা, সন্তান উৎপাদন,বেঁচে থাকার জন্য খাওয়া এইসব নিরুত্তাপ দিন কেটে যায় অনেকেরই। কি লাভ ? আপনারও স্বপ্ন ছিল; গোপনে তাকে বেড়ে উঠতে দেন নি। আপনি কি হতে পারতেন না সেই সাহসি মানুষের নাম? এইসব প্রশ্নে এখন আর নিরুত্তর-নিরুত্তাপ থাকার সময় নেই। আর চাকরি নয়। নিজের সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে একটি স্বাধীন-স্বপ্নিল জীবনের পথ প্রসারিত হয়ে আছে আমাদের জন্য।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য প্রস্তুতি

ফ্রিল্যান্সিংয়ের জন্য প্রস্তুতি

freelancingফ্রিল্যান্সিং এবং ফ্রিল্যান্সার
বর্তমানে আমরা প্রায়ই ‘ফ্রিল্যান্সিং’ কথাটি শুনে থাকি এবং অনেকের কাছেই এর সঠিক অর্থটি অজানা। ছোট্ট এই শব্দটির অর্থ হচ্ছে, একজন ব্যক্তি যখন সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নিয়ে কিছু নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করে থাকেন। আর যে বা যাঁরা ফ্রিল্যান্সিং করে থাকেন, তাঁদের বলা হয় ফ্রিল্যান্সার।
একজন ফ্রিল্যান্সার একই সঙ্গে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি একাধিক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করতে পারে এবং একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পারিশ্রমিক হিসেবে পেয়ে থাকে।
ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে বড় সুবিধাটি হচ্ছে যে, এখানে আপনি বাড়িতে থেকেও আপনার পছন্দমতো সময়ে কাজটি করতে পারবেন এবং আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাজ ঠিক করতে পারবেন। এখানে আপনি ফুলটাইম বা পার্টটাইমে কাজ করতে পারবেন। আপনার পারিশ্রমিক আপনি ক্লায়েন্টের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করে নিতে পারবেন। আর এসব কাজের পারিশ্রমিকও ভালো হয়ে থাকে।
অসুবিধাটি হচ্ছে, যেহেতু একটি আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসের মাধ্যমে আপনার কাজটি পেতে হবে, এ ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যাও অনেক বেশি থাকে। তাই এখানে কোনো কাজ পেতে আপনাকে অনেক ফ্রিল্যান্সারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে টিকে থাকতে হবে। এখানে আপনি কাজটি দুইভাবে করতে পারেন—নির্দিষ্ট একটি বাজেটে এবং ঘণ্টায় একটি নির্দিষ্ট হারে পারিশ্রমিক নিয়ে।
ফ্রিল্যান্সিং শুরুর পূর্বপ্রস্তুতি
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাইলে আপনাকে প্রথমেই ঠিক করতে হবে যে, আপনি কোন বিষয়ে বা ক্যাটাগরিতে কাজ করতে চান এবং আপনি ওই নির্দিষ্ট বিষয়ে কতটা দক্ষ বা পারদর্শী। বিষয়টি এখানে এমন নয় যে আপনাকে অনেক ক্যাটাগরিতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে; বরং এটিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি নিজে যে বিষয়টি বা বিভাগে কাজ করতে চাইছেন, সেটি সম্পর্কে আপনার জ্ঞানের পরিধি কতটুকু। হতে পারে আপনি একজন প্রোগ্রামার বা ওয়েব ডেভেলপার বা মার্কেটার অথবা অন্য কিছু। কিন্তু এখানে মুখ্য বিষয় হচ্ছে আপনাকে আপনার কাজ মার্কেটপ্লেসে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের সামনে সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে জানতে হবে। তাহলেই একমাত্র আপনি এখানে ভালো একটি পারিশ্রমিক নিয়ে টিকে থাকতে পারবেন।
আর এর পরেই যে বিষয়টি আপনাকে গুরুত্ব দিতে হবে, সেটি হচ্ছে ইংরেজি ভাষা। যদিও আমি আমার লেখায় এটিকে দ্বিতীয় স্থানে রেখেছি, তবে ব্যক্তিগতভাবে আমি এটাই মনে করি যে, এটিই প্রধান গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, আপনাকে যেকোনো বিষয়ে উচ্চশিক্ষা বা জ্ঞান লাভ করতে হলে ইংরেজি ভাষার কোনো বিকল্প নেই।
আর আপনি যে মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করতে যাচ্ছেন, এগুলো সবই আন্তর্জাতিক। যার অর্থ হচ্ছে আপনাকে ইংরেজি ভাষার মাধ্যমেই কাজ পেতে হচ্ছে এবং যে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হয়ে আপনি কাজ করবেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অবশ্যই আপনাকে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করতে হবে।
যেহেতু আমরা জন্মগতভাবে বাংলাভাষী, তাই ইংরেজি ভাষা আমাদের অনেকের কাছে অনেক কঠিন একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আপনি নিজেকে যদি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে পরিচিত করতে চান, তাহলে আজ থেকেই ইংরেজি ভাষাকে গুরুত্ব দিন। প্রয়োজনে ফ্রিল্যান্সিং শুরুর আগে ইংরেজির ওপরে কোনো অতিরিক্ত চর্চা বা কোর্স করে নিতে পারেন। কারণ, এটিই আপনার অনেক বড় একটি প্লাস পয়েন্ট হবে।
এবার আসি আপনার নিজেকে আপডেট রাখার বিষয়ে। কারণ, আপনি যে বিভাগেই কাজ করেন না কেন, আপনাকে সেই বিভাগের সব তথ্য সম্পর্কে আপডেট থাকতে হবে। কেননা, এটি আপনাকে কাজ পেতে অনেক সাহায্য করবে। যখন আপনার ক্লায়েন্ট দেখবে যে আপনি সব নতুন তথ্য ও প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত আছেন, তখন সে আপনাকে বেশি প্রাধান্য দেবে। যেমন—আপনি যদি একজন অনলাইন মার্কেটার হন, তাহলে আপনাকে মার্কেটিংয়ের নতুন নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে।
এ ছাড়া আপনাকে ইন্টারনেট ব্যবহারে পারদর্শী হতে হবে। কেননা, যেকোনো তথ্য জানতে হলে আপনাকে ইন্টারনেটের সাহায্য নিতে হবে। এমনকি আপনি যেসব মার্কেটপ্লেসে কাজ করবেন, এগুলো সবই অনলাইনে ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে আপনাকে কাজ করতে হবে।
এগুলোর পাশাপাশি আপনার মাইক্রোসফট অফিস অ্যাপ্লিকেশনগুলোর ব্যবহারও জানতে হবে। কেননা, যখন আপনি ক্লায়েন্টের কোনো কাজের রিপোর্ট দেবেন, তখন আপনাকে এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করে সুন্দরভাবে রিপোর্ট উপস্থাপন করতে হবে।
আপনারা অনেকেই ভাবছেন, এত বিষয়ে লক্ষ রেখে কাজ করা মনে হয় কষ্টসাধ্য। অথচ একটু লক্ষ করলেই দেখবেন, বাস্তবে আমি যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছি, প্রতিটিই বিষয়ের সঙ্গেই আমরা জড়িত বা কোনো না কোনোভাবে এগুলোর মধ্য থেকেই আমরা কাজ করি। যেমন ধরুন, ইংরেজি ভাষা শিক্ষা নিয়ে আপনি ছোটবেলা থেকে যখন পড়াশোনা শুরু করেছেন, তখন থেকেই ইংরেজি ছিল। আর উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত আসতে আসতে আপনার ফ্রি রাইটিংয়ের দক্ষতা চলে আসে। এর পাশাপাশি বাড়তি হিসেবে যদি কিছু ইংরেজি আর্টিকেল পড়েন, তাহলে একই সঙ্গে যেমন ইংরেজি শেখা হবে, তেমনি ইন্টারনেট ব্যবহারেও আপনি পারদর্শী হয়ে উঠবেন।
তাই যদি একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তাহলে উল্লেখিত বিষয়গুলো লক্ষ করলেই এবং কিছু সময় ব্যয় করলেই আপনি একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন।
আত্মবিশ্লেষণ এবং লক্ষ্য নির্ধারণ
আত্মবিশ্লেষণ বলতে আমি বোঝাতে চাইছি, নিজেকে নিয়ে ভাবা বা চিন্তা করা, ব্যক্তির অবস্থান ও তার চাহিদা এবং এগুলোর ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নির্ধারণ করা। মনে হচ্ছে, একটু কঠিন করেই বলে ফেললাম। যাক, একটি উদাহরণ দিলেই হয়তো পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
ধরুন, আপনি বর্তমানে কলেজপড়ুয়া একজন ছাত্রছাত্রী। আপনি আপনার পড়াশোনার পাশাপাশি অবসর সময়টুকু কী করবেন বা কীভাবে এই সময়টুকু কাজে লাগিয়ে আত্মনির্ভরশীল হবেন, এ নিয়ে ভাবছেন। তখন ফ্রিল্যান্সিং আপনার একটি পছন্দের বিষয় হতে পারে। আপনি ফ্রিল্যান্সিংয়ের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানার জন্য অনলাইনে অনেক লেখা পাবেন এবং আপনি এখান থেকে আপনার প্রাথমিক ধারণাটি পেতে পারেন। কিছুদিন এ বিষয়ে পড়াশোনা করলেই আপনি বুঝতে পারবেন, আপনার অবসর সময়কে কীভাবে কাজে লাগিয়ে আপনি ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন।
আমি এখানে ফ্রিল্যান্সিংকেই আপনার অবসর সময়ে এ জন্যই করতে বলছি যে, ভবিষ্যতে আপনি চাইলে এখান থেকেই নতুন কিছু শুরু করতে পারবেন। এখানে আপনি আপনার পছন্দের বিষয়ে কাজ করতে পারেন, আপনার ইচ্ছামতো সময়ে। এতে করে আপনার পড়াশোনারও খুব বেশি সমস্যা হওয়ার কথা নয়; বরং এটি আপনাকে আত্মনির্ভরশীল হতে সাহায্য করবে।
ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনাকে পর্যাপ্ত সময় ও শ্রম দুটাই দিতে হবে, যা একজন কলেজপড়ুয়া ছাত্রছাত্রীর কাছে রয়েছে। সুতরাং আপনি যদি আগ্রহী হন, তাহলে লক্ষ্য স্থির করে মনোনিবেশ করুন। আশা করছি, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর আপনি ধীরে ধীরে সাফল্য পেতে শুরু করবেন।
তবে আমি এটি বলছি না, আপনাকে ফ্রিল্যান্সিংই করতে হবে। আপনি আপনার পছন্দ অনুযায়ী যেকোনো কাজই করতে পারবেন। আমি এখানে আপনাকে শুধু একটি উপায় বা পথ দেখালাম মাত্র। একজন ফ্রিল্যান্সার হতে হলে আপনাকে ইংরেজি ভাষা নিয়েও পড়তে হবে, যা আপনার লেখাপড়ার জন্য উপকারী। এতে করে একই সঙ্গে আপনি আয়ও করছেন এবং আপনার ইংরেজি ভাষাও উন্নত হলো।

মার্কেটপ্লেস নির্ধারণ
বর্তমানে অনলাইনে বেশ কিছু আউটসোর্সিং মার্কেটপ্লেস রয়েছে। নতুন যাঁরা ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাইছেন, তাঁদের জন্য আমার মতে উপযুক্ত প্ল্যাটফর্মগুলো হচ্ছে—
১. আপওয়ার্ক (www.upwork.com)
২. ফ্রিল্যান্সার (www.freelancer.com)
৩. ফাইভার (www.fiverr.com)
‘আপওয়ার্ক’ এখন বর্তমানে বাংলাদেশে একটি বহুল পরিচিত ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস, যার পূর্বের নাম ছিল ‘ওডেস্ক’। এখানে আপনি একা বা গ্রুপ তৈরি করে কাজ করতে পারবেন। এখানে বিভিন্ন ক্রেতা (বায়ার) তাঁর চাহিদা অনুযায়ী কাজ অফার করে থাকেন এবং আপনি আপনার প্রস্তাব পেশ বা প্রপোজাল সাবমিটের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কাজটি পেতে পারেন। ‘আপওয়ার্ক’-এ অনেক ছোট কাজ রয়েছে, প্রথম দিকে আপনাকে ওই সব কাজ করে একটা ভালো রেটিং অর্জন করতে হবে। আর তাহলেই আপনি পরবর্তী সময়ে বড় কাজগুলোর জন্য প্রপোজাল সাবমিট করতে এবং কাজ পেতে সক্ষম হবেন। এখানে সাধারণত আপওয়ার্ক মেসেজের মাধ্যমে আপনি বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করবেন। কাজ শেষ হয়ে গেলে আপনি একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কাজটি সাবমিট করবেন এবং বায়ার আপনার কাজটি অনুমোদন দিলেই আপনি আপনার পারিশ্রমিক পেয়ে যাবেন।
‘ফ্রিল্যান্সার’ ডটকম বহুল জনপ্রিয় একটি ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস। এটি একটি আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস, যেখানে একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট হারে পারিশ্রমিক দিয়ে তাঁর কাঙ্ক্ষিত কাজটি করিয়ে নিতে পারে। এর মানে এই নয় যে, এখানে কাজের মূল্য বা পারিশ্রমিক কম। এখানে বিভিন্ন দেশের বায়ার বা ক্লায়েন্ট থাকে, যারা তাদের চাহিদা অনুযায়ী কাজের অফার দিয়ে থাকে এবং ফ্রিল্যান্সাররা ওই কাজের জন্য বিড করে কাজটি পেয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে দুই পক্ষের সম্মতিক্রমে একটি নির্দিষ্ট বাজেটে কাজটি করা হয়ে থাকে। এখানে আপনি ঘণ্টাপ্রতি বা নির্দিষ্ট বাজেটে কাজ করতে পারবেন।
‘ফাইভার’ মার্কেটপ্লেসটি ‘ফ্রিল্যান্সার’ এবং ‘আপওয়ার্ক’-এর তুলনায় ছোট; কিন্তু এটিও খুব জনপ্রিয় একটি মাইক্রোফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস। এখানে কাজের ধরনটা একটু ভিন্ন। এখানে আপনি নিজে কী কাজ জানেন বা অভিজ্ঞ, এর ওপর ভিত্তি করে আপনাকে কাজ এর বর্ণনা দিতে হবে, এগুলোকে ‘গিগ’ বলে। এই মার্কেটপ্লেসে সব কাজেরই মূল্য পাঁচ ডলার করে। তাই বিষয়টি মাথায় রেখে আপনাকে আপনার গিগ তৈরি করতে হবে। এথানে ক্লায়েন্টেরও কিছু কাজ পাওয়া যায়, ক্লায়েন্ট তার চাহিদা অনুযায়ী কিছু কাজ দিয়ে থাকে। আপনি চাইলে তাকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে কাজ করতে পারেন। এখানে আপনি একই সঙ্গে অনেক গিগ চালাতে পারবেন।
ওপরের বর্ণিত যেকোনো মার্কেটপ্লেস থেকে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। তবে আপনাকে ধৈর্যশীল ও পরিশ্রমী হতে হবে।