বৃহস্পতিবার, ৭ জুন, ২০১২

ইন্টারনেট ব্যবহারের মূসক প্রত্যাহারের আহ্বান







ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর আরোপিত ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক) প্রত্যাহারের পক্ষে মত দিয়েছেন তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

বৃহস্পতিবার ঢাকায় রূপসী বাংলা হোটেলে শুরু হওয়া তিন দিনব্যাপী ‘কিউবি সামার ল্যাপটপ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দাবি এসেছে।

সকাল ১১টায় মেলার উদ্বোধন করেন প্রফেসর ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, “ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর ১৫ শতাংশ মূসক প্রত্যাহার করলে দেশ কীভাবে উপকৃত হবে আশা করি আমরা তা সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হব।”

প্রতিবেশী দেশ ভারতে মাত্র ৩০ ডলার মূল্যে ছাত্রদের ল্যাপটপ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বাংলাদেশেও কম দামে ল্যাপটপ সরবরাহের সুপারিশ করেন।

তথ্য প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার বলেন, “ইন্টারনেটের উপর ১৫ শতাংশ মূসক কেন আছে তা বোধগম্য নয়। এক লক্ষ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেটে এ খাত থেকে আসা টাকা তেমন কিছুই না। তবে এ খাতে ছাড় দেওয়া হলে দীর্ঘমেয়াদি ভাবে দেশের অর্থনীতি লাভবান হবে।”

তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কনসালটেন্ট মুনির হোসেন বলেন, “আমাদের ছেলেরা আউটসোর্সিং থেকে দৈনিক এক কোটি টাকা করে আয় করছে। সহযোগিতা পেলে তারা খুব তাড়াতাড়ি আমাদের ফর্মাল আইটি ফার্মগুলোর সম্মিলিত আয়কে ছাড়িয়ে যাবে।”

এবারের মেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান কিউবি। সহ-পৃষ্ঠপোষকতায় থাকছে ল্যাপটপ ব্র্যান্ড এসার, আসুস, এইচপি, স্যামসাং ও বিশ্বের বৃহত্তম চিপ নির্মাতা ইন্টেল।

মেলার মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রয়েছে অনলাইন সংবাদপত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, এবিসি রেডিও, আজকের ডিল, এখনই ডটকম, বিডিওএসএন ও ওরাটর পিআর।

আয়োজক প্রতিষ্ঠান মেকার এবার ১১ জন দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীকে দুই লাখ ২০ হাজার টাকার শিক্ষাবৃত্তি দেবে বলে জানান মেলার সমন্বয়ক বিপ্লব ঘোষ রাহুল।

মেলায় ছয়টি প্যাভিলিয়ন, সাতটি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ৪০টি স্টলে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ, ট্যাবলেট কম্পিউটার, ওয়াইম্যাক্স ইন্টারনেট ডিভাইস ও অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়ার পাওয়া যাচ্ছে। 
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এফএফএস/আরআরডি/এএল/১৭০০ ঘ. 

মূল্যস্ফীতি ৭.৫ শতাংশের মধ্যে রাখার আশা











 নতুন অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রাখার আশা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে তিনি এই আশা প্রকাশ করেন।

মুহিত বলেন, “মধ্যমেয়াদে তা ৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারব বলে আশা করছি।”

বিদায়ী ২০১১-১২ অর্থবছরে এই হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ ধরা হলেও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ মে মাসের হিসাবে পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি) মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ।

দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি দুই অংকের ঘরে অবস্থান করার পর এপ্রিল মাস থেকে তা এক অংকের ঘরে নেমে আসে।

মে মাসে গড় মূল্যস্ফীতি হার (এক বছরের) দাঁড়ায় ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ।

নতুন সেনাপ্রধান ইকবাল করিম

 
মোহাম্মদ আব্দুল মুবীনের উত্তরসূরী হিসেবে সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইকবাল করিম ভূঁইয়াকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।

বঙ্গভবনের একটি সূত্র বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত আদেশে সই করেন।

একইসঙ্গে বর্তমান সেনাপ্রধান আব্দুল মুবীনের চাকরির মেয়াদ আরো ১০ দিন বাড়ানো হয়েছে বলে রাষ্ট্রপতির সচিব শফিউল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।

পদাতিক বাহিনীর কর্মকর্তা ইকবাল বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল মুবীনের সঙ্গেই ১৯৭৬ সালের নভেম্বরে বিএমএর তৃতীয় কোর্সের ক্যাডেট হিসাবে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। জাতিসংঘ মিশনে কমান্ডার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

বহুল আলোচিত ‘ওয়ান-ইলেভেনের’ পর এক পর্যায়ে নবম পদাতিক ডিভিশনের অধিনায়ক করা হয়েছিল ইকবাল করিমকে। ২০১০ সালের মে মাসে তিনি পদোন্নতি পেয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল হন।

তিন বছর আগে সেনাপ্রধান হিসাবে নিয়োগ পাওয়া জেনারেল মুবীনের চাকরির মেয়াদ ফুরিয়ে আসার আগে ওই পদের জন্য ইকবালসহ কয়েকজনের নাম আলোচনায় উঠে আসে।

তাদের মধ্যে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেনেন্ট জেনারেল আব্দুল ওয়াদুদ, ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ডেন্ট লেফটেনেন্ট জেনারেল মোল্লা ফজলে আকবর, সেনাসদরের চিফ অফ জেনারেল স্টাফ ও অর্ডনেন্স কোরের কর্নেল কমান্ডেন্ট লেফটেনেন্ট জেনারেল মো. মইনুল ইসলাম।

এদের মধ্যে থেকে দেশের ত্রয়োদশ সেনাপ্রধান হিসেবে কুমিল্লার বাসিন্দা ইকবালকেই বেছে নিল সরকার। আগামী ২৫ জুন তিনি চার তারকা জেনারেল হিসাবে নতুন দায়িত্বে যোগ দেবেন।

মেধাবী ও চৌকস কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ইকবালের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের মধ্যে বর্তমানে বাহিনীতে আছেন লেফটেনেন্ট জেনারেল আব্দুল ওয়াদুদ। তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কর্মকর্তা। লেফটেনেন্ট জেনারেল ফজলে আকবর গোলন্দাজ বাহিনীর কর্মকর্তা।

এছাড়া ইকবালের এক ব্যাচ জুনিয়র বিডিআরের সাবেক মহাপরিচালক লেফটেনেন্ট জেনারেল মইনুল ইসলাম চৌধুরী ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের কর্মকর্তা

৫২ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট

 
আগামী অর্থবছরের জন্য ৫২ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপিত বাজেট বক্তৃতায় তিনি ২০১২-১৩ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।

সেইসঙ্গে চলতি বা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।

২০১১-১২ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ১ লাখ ৬৩ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা, তা কমিয়ে ১ লাখ ৬১ হাজার ২১৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

বর্তমান মহাজোট সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ২ শতাংশ। মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশে রাখার আশা করা হয়েছে।

বিকাল সাড়ে ৩টায় সংসদ অধিবেশনে বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। এর কিছু সময় আগেই সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা এই বাজেট অনুমোদন করে।

গত কয়েকবারে মতো এবারও বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতেই সংসদে মহাজোট সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট দিলেন অর্থমন্ত্রী মুহিত।

অর্থমন্ত্রী ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করছেন। তবে তিনি বলেছেন, আরো বড় আকারের বাজেট দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তার।

“আমি চুপিচুপি বলি, আমার ইচ্ছা ছিল ২ লাখ কোটি টাকার বাজেট দেব। কিন্তু সম্পদের সীমাবদ্ধতার কারণে তা না করতে ১ লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকার বাজেট দিচ্ছি,” বাজেট বক্তৃতায় বলেন মুহিত।

নির্বাচনের দেড় বছর বাকি থাকতে নতুন অর্থবছরের জন্য বড় ব্যয়ের বাজেট দিল সরকার, যাতে গুরুত্ব পেয়েছে বিদ্যুৎ, সড়ক যোগাযোগ, বন্দর, ভৌত অবকাঠামো, কৃষি-পল্লী ও মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাত।

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ৫২ হাজা ৩৮ কোটি টাকা। বৈদেশিক অনুদান হিসেবে ধরলে এই ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৪৬ হাজার ২৪ কোটি টাকা।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে অনুদানব্যতীত ঘাটতি ছিল ৪৫ হাজার ২০৪ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৪৬ হাজার ২২৮ কোটি টাকা করা হয়েছে।

নতুন অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৩ হাজার ৮৮৪ কোটি টাকা।

এর মধ্যে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া হবে ২৩ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক বহির্ভূত খাত থেকে ১০ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা নেওয়া হবে। এছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে আসবে ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক উৎস থেকে নিট ঋণ নেওয়া হবে ১২ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছর বৈদিশিক উৎস থেকে ২০ হাহার ৩৯৮ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। এর মধ্যে ৭ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা যাবে আগের নেওয়া ঋণ সুদ-আসলে পরিশোধে।

গত অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করলেও বছর শেষে তা ২৯ হাজার ১১৫ কোটি টাকায় দাঁড়ায়।

চলতি অর্থবছরে সরকারের ব্যাংক ঋণের সমালোচনা করে আসছিল বিরোধী দলসহ ব্যবসায়ী মহলও। তাদের বক্তব্য, সরকার ঋণ বেশি নেওয়ায় বেসরকারি খাত যথেষ্ট অর্থ পাচ্ছে না।

২০১২-১৩ অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের ব্যক্তি খাতে করমুক্ত আয়ের সীমা ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা অর্থাৎ আগেরটিই রাখার প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী। তবে ন্যূনতম করের পরিমাণ ২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ হাজার টাকা করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

পুঁজিবাজার স্থিতিশীলে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৭ দশমিক ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব রেখেছেন মুহিত।

তৈরি পোশাকসহ সব রপ্তানি পণ্যের উৎস করের হার বাড়িয়ে ১ দশমিক ২ শতাংশ করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

ঢাবিতে যৌন হয়রানি ১ মাসে শিকার ২৮ ছাত্রী

অজপাড়াগাঁয়ের ছাত্রী রানী (ছদ্মনাম)। কঠোর পরিশ্রম আর সাধনায় সুযোগ পান ঢাবি’তে। হলে উঠতে সাহায্য নেন পারিবারিকভাবে পরিচিত এক ছাত্রনেতার। এ সাহায্য নেয়াই কাল হয়েছে তার। পরিচয়ের সূত্র ধরে নেতা খাতির জমানোর চেষ্টা করেন রানীর সঙ্গে। এক সময় জীবন সঙ্গী করার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয়াতেই শুরু হয় নতুন সমস্যা। প্রতিনিয়ত বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করা হয় তাকে। এ মাসের শুরুতে শামসুন্নাহার হলের সামনে থেকে নেতা কৌশলে মোটরসাইকেলে তুলে নেয় রানীকে। পরের ঘটনা ভয়াবহ। সেখান থেকে কৌশলে পুলিশের সাহায্যে পালিয়ে আসেন রানী। কেবল রানীর ঘটনা নয়, ঢাবিতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে যৌন হয়রানি। শিক্ষক, বন্ধু, বহিরাগত বা ক্যাম্পাসের ছাত্রনেতা পরিচয়ে বড় ভাইদের কাছেই তারা এ যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন। গত মাসেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় ২৮ জন শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছেই অভিযোগ করেছেন ১৬ জন ছাত্রী। এদের অনেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। আবার অনেকে প্রেমিকের ছুরির ফলায় বিদ্ধ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। ঢাবি ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রী অপহরণ করে নির্যাতনের ঘটনাও ঘটেছে। গত ১৯শে এপ্রিল প্রেমিককে অস্বীকার করায় তার উপর্যুপরি ছুরির আঘাতে প্রেমিকা হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন। তাকে বাঁচাতে প্রয়োজন হয়েছে ২৬ ব্যাগ রক্ত। এখনও আশঙ্কামুক্ত নন তিনি।
গত মাসের প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে থেকে অপহরণ করা হয় শ্রেয়া (ছদ্মনাম)-কে। ১৩ ঘণ্টা আটক থাকার পরে কৌশলে শিক্ষকদের ফোন করে তাদের সহযোগিতায় পালিয়ে আসতে সক্ষম হন তিনি।
গত শনিবার ১ম বর্ষের ছাত্রী ত্বহা (ছদ্মনাম)-কে তার পূর্বপরিচয়ের সূত্র ধরে এক বহিরাগত বিভাগে ঢুকে প্রেম প্রস্তাব করে। অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়। গত শনিবার মাস্টার্সের ছাত্রী তামান্না (ছদ্মনাম)-কে স্ত্রী দাবি করে টাকা দাবি করে এক বহিরাগত। স্ত্রী পরিচয় অস্বীকার ও টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে তাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাকে ক্যাম্পাস থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে বলেও জানায়। এমনকি অশ্লীল মেসেজ, পিতা-মাতার কাছে নিয়মিত বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য সরবরাহ করে তাকে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করে। গত মাসের ১৯ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে লিখিত আবেদন করেন ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী তনিমা (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, প্রতিনিয়ত এক শিক্ষার্থী প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে তাকে উত্ত্যক্ত করছে। অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে সমস্যা সৃষ্টি করার হুমকি দেয়।
গত মাসের ২৪ তারিখে বৃষ্টি (ছদ্মনাম) নামের এক শিক্ষার্থী তার নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে আবেদন করেছেন। তিনি জানান, এক ছাত্রনেতা তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। অথচ সে তার বান্ধবীর সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করে আসছে। বিয়ের প্রস্তাব দেয়ায় তাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করায় তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে হলে তাকে বিয়ে করতে হবে। আর না হলে বখাটে লেলিয়ে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া করা হবে।
গত ১১ই এপ্রিল প্রেমের দাবিতে হামলা করে আহত করা হয় ১ম বর্ষের শিক্ষার্থী লাবণ্য (ছদ্মনাম)-কে। হামলাকারী একই বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী। হামলায় আহত হয়েছেন লাবণ্যসহ তার কয়েকজন বান্ধবী। তিনিও নিরাপত্তা চেয়ে প্রক্টরের কাছে আবেদন করেছেন।
এদিকে গত ১৬ই এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন এমফিলের শিক্ষার্থী রাফিয়া (ছদ্মনাম)। তিনি জানান, প্রেম করে বিয়ে করার পরেও মাস্টার্সের ছাত্র প্রতিনিয়ত অত্যাচার করছে। এমনকি বিভিন্ন সময়ে তোলা অন্তরঙ্গ ছবি ব্যবহার করে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করছে। মারপিট করে আহত করেছে। এমনকি তাকে বোঝাতে গিয়ে তার হামলায় আহত হয়েছেন তার বড় বোনসহ পরিবারের অনেকে।
গত মাসের শুরুতে নাজ (ছদ্মনাম) নামের এক শিক্ষার্থীকে প্রেমের দাবি পূরণ না করায় প্রাণনাশের হুমকি দেয় এক শিক্ষার্থী। সেও একই বিভাগের শিক্ষার্থী। সে এর আগে বিভাগের তনিমা (ছদ্ম নাম) নামের এক মেয়েকেও উত্ত্যক্ত করতো। তারা নিরাপত্তা চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কাছে আবেদন করেছেন। এভাবে প্রতিনিয়ত যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটছে ক্যাম্পাসে। অনেকে মানসম্মানের কথা ভেবে কাউকে বিষয়টি জানায় না। ফলে পরে বখাটেদের হামলায় দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ এম আমজাদ আলী বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি ছাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে। তারপরেও মাঝেমধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।