শুক্রবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১২

ব্রাউজারে চোখ রেখে দেখুন মহাবিশ্ব

ব্রাউজারে চোখ রেখে দেখুন মহাবিশ্ব

গুগল ক্রোম ব্রাউজারে চোখ রেখেই এখন ঘুরে আসা যাবে মহাবিশ্বের অনেকটা। গুগল আর্থের মূল ভাবনা অবলম্বেনে তৈরি গুগল গ্যালাক্সিতে দেখা যাবে মিল্কি ওয়ে আর অগনিত গ্রহ নক্ষত্র। খবর সিনেট-এর।

গুগলের পরীক্ষামূলক ওয়েবপেইজ গুগল গ্যালাক্সি ব্যবহার করে যে কোনো ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ব্রাউজার থেকেই ঘুরে দেখতে পারবেন অজানা মহাকাশ। আর নক্ষত্রপুঞ্জে ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হবার আগেই আপনি উপলব্ধি করবেন আমাদের সৌরজগৎটি আদতে মহাবিশ্বর কাছে কতোটা ক্ষুদ্র।

গুগল জানিয়েছে, মহাকাশ নিয়ে উৎসাহি প্রোগ্রামার আর সফটওয়্যার ডিজাইনাররা মিলে ওয়েবজিএল, সিএএসথ্রিডি এবং ওয়েবঅডিও সফটওয়্যার ব্যবহার করে দাঁড় করিয়েছেন গুগল গ্যালাক্সি।

গুগল গ্যালাক্সিতে সফটওয়্যার ডিজাইনার ব্যবহার করেছেন নাসা, ইএসএ এবং উইকিপিডিয়ার আঁকিয়েদের তৈরি ছবিগুলো। আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজকের কাজটি করেছেন ভিডিও গেইমসের মিউজিক কম্পোজার স্যাম হিউলিক।


গুলি থামাবে সুপার ম্যাটিরিয়াল

গুলি থামাবে সুপার ম্যাটিরিয়াল

প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসা গুলিকে পুরোপুরি থামিয়ে দেবার মতো শক্তিশালী ‘সুপার ম্যাটিরিয়াল’ বানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এই সুপার ম্যাটিরিয়াল যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো দৃঢ় করবে বলে আশা করছেন তারা। খবর ইয়াহুর।

সুপার ম্যাটিরিয়াল নিয়ে গবেষণা করছেন রাইস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী টমাস, জে হং লি এবং একদল এমআইটি শিক্ষার্থী। আইনশৃক্সখলা রক্ষা বাহিনীর সদস্য এবং সৈনিকদের জন্য প্রথাগত বর্মের তুলনায় হালকা এবং আরো কার্যকর বর্ম তৈরির চেষ্টা করছেন তারা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সৈনিকদের পাশাপাশি স্যাটেলাইট এবং প্লেনে মতো দুর্বল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাসম্পন্ন যানগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে এই সুপার ম্যাটিরিয়াল দিয়ে।

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন পলিইউরিথিন নামের জটিল এক পদার্থ নিয়ে। বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় আবিষ্কার করেন, প্রচণ্ড গতিতে ধেয়ে আসা ৯ মিলিমিটার বুলেটকেও থামিয়ে দিচ্ছে পলিইউরিথিন। শুধু তাই নয়, গুলিটি আঘাত হানার পর বর্মে যে ক্ষতের সৃষ্টি হচ্ছে নিজে থেকেই গলে গিয়ে সেই ক্ষত সাড়িয়ে নিচ্ছে এই আজব পদার্থ।

বিজ্ঞানী টমাস এই পরীক্ষা নিয়ে বলেন, ‘ম্যাটিরিয়ালটিতে কোনো মাইক্রোস্কোপিক ক্ষতি পর্যন্ত হয়নি। এটি ছিড়ে যায় নি, এটি পুরোপুরি সফল।

স্টিফেন হকিংয়ের জন্য ইনটেলের ৬০-কোর প্রসেসর

স্টিফেন হকিংয়ের জন্য ইনটেলের ৬০-কোর প্রসেসর

জিওন সিপিইউতে ব্যবহারের জন্য তৈরি ৬০-কোরের প্রসেসর বিক্রি শুরু করেছে চিপ জায়ান্ট ইনটেল। তবে ৬০ কোরের প্রসেসর ‘ফি’ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন ইনটেলের নির্বাচিত ক্রেতারা। আর ওই নির্বাচিত ক্রেতাদের তালিকার প্রথমেই আছেন প্রফেসর স্টিফেন হকিং। খবর সিনেট-এর।

২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে যাবে ইনটেলের ৬০-কোরের ‘ফি’ প্রসেসর। তবে প্রথাগত সিপিইউ-এর সঙ্গে খুব একটা মিল নেই এর, বরং গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট বা জিপিইউ-এর সঙ্গেই মিল বেশি। জিওন সিপিইউ-এর সঙ্গে যুক্ত করেই ব্যবহার করতে হবে ‘ফি’।

প্রাথমিক অবস্থায় ‘ফি’ ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন প্রফেসর স্টিফেন হকিং এবং কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির মতো শীর্ষস্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো। ইনটেল জানিয়েছে, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির কসমস ল্যাবের এসজিআই সুপার কম্পিউটারে গবেষণার কাজে ‘ফি’ প্রসেসর ব্যবহার করবেন হকিং।

প্রফেসর হকিং এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এসজিআই ইউভি ২০০০ সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করে নতুন আবিষ্কারে মনোযোগ দিতে পারবো আমরা। যা মহাবিশ্বের রহস্য উদঘাটনে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে আমাদের।’

স্পেশালাইজড কম্পিউটিং টাস্ক-এর ক্ষেত্রে ফি প্রসেসরের সঙ্গে তুলনা করলে কোনোভাবেই ধোপে টিকবে না সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য বানানো ইনটেল প্রসেসরগুলো। প্রফেসর হকিং আর কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি বাদে এখনই ফি প্রসেসর ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে টেক্সাস অ্যাডভান্সড কম্পিউটিং সেন্টারের মতো হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।

২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি বাজারে আসার কথা রয়েছে জিয়োন ফি কোপ্রসেসরের। ৬০ কোরের প্রসেসরটির দাম হতে পারে ২৬৪৯ ডলার।

হৃৎপিণ্ডের কোষে চলছে বায়োলজিকাল রোবট

হৃৎপিণ্ডের কোষে চলছে বায়োলজিকাল রোবট

ছোট ইঁদুরের হৃৎপিণ্ডের কোষ থেকে পাওয়া শক্তিতে চলছে বায়োলজিকাল রোবট বা বায়ো-বট। বায়ো-বটগুলো তৈরি করা হয়েছে থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে এবং প্রতিস্থাপন করা হয়েছে হৃৎপিণ্ডের জীবন্ত কোষ। আর হৃৎপিণ্ডের কোষগুলোর ক্রমাগত সংকোচন আর প্রসারণেই সামনে এগিয়ে যায় বায়ো-বট। খবর বিবিসির।

ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়িসের বিজ্ঞানীদের বানানো ৭ মিলিমিটারের বায়ো-বটগুলোর গঠনের একটি অংশের সঙ্গে মিল রয়েছে সুইমিং পুলের ডাইভিং বোর্ডের সঙ্গে। ডাইভিং বোর্ডের মতো লম্বা অংশটি আদতে বায়ো-বটগুলোর একমাত্র পা।

থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তিতে হাইড্রোজেল ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা তৈরি করেন ডাইভিং বোর্ডের মতো পা-টি। হাইড্রোজেল হচ্ছে এক ধরণের বিশেষ জৈবিক পদার্থ, যা ব্যবহার করা হয় টিস্যু ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের কাজে।

ডাইভিং বোর্ডের মতো পায়ের নিচের অংশে প্রলেপ দেয়া হয় ইদুঁরদের হৃৎপিণ্ড থেকে সংগ্রহ করা জীবন্ত কোষ দিয়ে। হৃৎপিণ্ডের কোষগুলো যখন বারবার সংকুচিত এবং প্রসারিত হয়, তখন ডাইভিং বোর্ডের মতো অংশটি আবার প্রসারিত হয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসে। এভাবে ডাইভিং বোর্ডের মতো পা-টি লিভার হিসেবে কাজ করায় সামনে দিকে এগোতে থাকে বায়ো-বট। বায়ো-বটগুলোর সর্বোচ্চ গতি প্রতি ৪ সেকেন্ডে ১ মিলিমিটার।

বায়ো-বট প্রজেক্টের দায়িত্বে থাকা ইউনিভার্সিটি অফ ইলনয়িসের বিজ্ঞানী প্রফেসর রাশিদ বশির বলেন, ‘পরিবেশ পুনরুদ্ধারের কাজে সেন্সর হিসেবে কাজ করতে পারবে বায়ো-বটগুলো। আমাদের লক্ষ হচ্ছে রোবটগুলোকে বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ চিহ্নিত করতে সক্ষম করে তোলা, যাতে রোবটগুলো নিজে নিজেই ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ চিহ্নিত করে তা নিষ্ক্রিয় করতে পারে। চিকিৎসাবিজ্ঞান এবং পরিবেশ রক্ষায় কাজে আসতে পারে রোবটগুলো।’

হৃৎকোষ ছাড়াও শরীরের অন্যান্য অংশের জীবন্ত কোষ ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজে দক্ষতা অর্জনের চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়া বায়ো-বটগুলোর আকার-আকৃতি নিয়ে গবেষণা করে সবচেয়ে কার্যকর আকারটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন তারা।

ব্রেইন ওয়েভ থেকে মিউজিক

ব্রেইন ওয়েভ থেকে মিউজিক

চিন্তা করার সময় মস্তিষ্কে যদি আওয়াজ হতো তবে তা কেমন শোনাতো? এ প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন চীনা বিজ্ঞানীরা। মানব মস্তিষ্কের তরঙ্গগুলোকে ভাষান্তর করে তৈরি করেছেন ব্রেইন মিউজিক। খবর লাইভ সায়েন্স-এর।

বেইন ওয়েভ থেকে ব্রেইন মিউজক বানাতে গবেষণার কাজটি করেন, চীনের ইউনিভার্সিটি অফ ইলেকট্রনিক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিজ্ঞানী জিং হু। জিং হু এবং তার সহকর্মীরা প্রথমে ইলেকট্রোয়েনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) ব্যবহার করে মস্তিষ্কের ইলেকট্রিকাল অ্যাকটিভিটি রেকর্ড করেন। তারপর বিশষ সফটওয়্যার ব্যবহার করে ওই ইলেকট্রিকাল সিগনালগুলোকে রূপান্তর করেন মিউজিকাল নোটে।

তবে ইইজি থেকে পাওয়া ব্রেইন মিউজিক এতোটাই কর্কশ শোনাতো যে একরকম শোনার অযোগ্যই ছিলো সেটি। এই সমস্যা সমাধানে এমআরআই ব্যবহারের স্বিদ্ধান্ত নেন বিজ্ঞানীরা। এফএমআরআই এর মাধ্যমে মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশে রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ নির্ণয় করেন তারা। এরপর ইইজি আর এফএমআরআই থেকে পাওয়া ডেটা এক করে বিজ্ঞানীরা দাঁড় করিয়ে ফেলেন ‘শ্রবনযোগ্য’ ব্রেইন মিউজিক।

বিজ্ঞানীরা জানান, ইইজি আর এফএমআরআইয়ের ডেটা থেকে তৈরি ব্রেইন মিউজক শোনার পর ১০ জন পেশাদার সংগীত শিল্পর মন্তব্য, একজন মানুষের কম্পোজ করা সংগীতের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে ব্রেইন মিউজিকের।

গবেষকরা আশা করছেন, বিজ্ঞান এবং শিল্পের সমন্বয় ঘটানোর মধ্য দিয়ে ব্রেইন মিউজিক ব্যবহার করেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে মস্তিষ্কের তরঙ্গগুলো। এর ফলে মোকাবেলা করা যাবে উদ্বেগ ও বিষন্নতা।