শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

ফ্রিল্যান্সারদের ঠিকানা এখন বিল্যান্সার

ফ্রিল্যান্সারদের ঠিকানা এখন বিল্যান্সার

বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত শ্রমনির্ভর। তবে তথ্যপ্রযুক্তির হাত ধরে পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে মেধানির্ভরতার দিকে। বাংলাদেশেও এই ধারা শুরু হয়েছে। জনপ্রিয় সব অনলাইন কাজের বাজারে (মার্কেটপ্লেস) বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষ দশের মধ্যে। বাংলাদেশি মুক্ত পেশাজীবীদের (ফ্রিল্যান্সার) কাজ যেখানে সারা বিশ্বে সমাদৃত, সেখানে আমাদের নিজস্ব অনলাইন কাজের বাজার নেই—মূলত এমন চিন্তা থেকেই ২০১৩ সালে ‘আমার ডেস্ক’ নামে যাত্রা শুরু করে ফ্রিল্যান্সারদের জন্য একটি দেশি অনলাইন মার্কেটপ্লেস। এখন এর নাম বিল্যান্সার (www.belancer.com)। এই ওয়েবসাইটে দেওয়া কাজগুলো বাংলাদেশের।
বিল্যান্সারের প্রতিষ্ঠাতা মো. শফিউল আলম বললেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি পণ্য আমাদের নেই বললেই চলে। সবাই সেবা দিয়ে যাচ্ছে, যা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে বড় করছে। বিল্যান্সার চালু করার পেছনে এটাও বড় কারণ ছিল।’
ফ্রিল্যান্সিংয়ের এই সাইটের ব্যাপারে মানুষের আস্থা বাড়াতে শফিউল আলম কথা বলেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে। তিনি আমার ডেস্কের বদলে বিল্যান্সার নাম নিয়ে নতুন করে যাত্রা শুরুর কথা বলেন—জানালেন শফিউল।
বাংলাদেশে ১০ লাখের মতো মুক্ত পেশাজীবী অনলাইন কাজের বাজারগুলোতে কাজ করে যাচ্ছেন। কিছুদিন আগেও কাজের টাকা লেনদেনের সহজ কোনো পথ ছিল না। বিল্যান্সারের সুবিধাটা এখানেই। কাজ করার পর টাকা পাওয়ার ব্যাপারটা সহজ হয়ে যাবে। আন্তর্জাতিক অনলাইন কাজের বাজারগুলোর সব সুবিধাই আছে বিল্যান্সারে, কিছু কাজ অবশ্য এখনো চলছে। বায়ার এখানে কাজ দেবেন (পোস্ট), ফ্রিল্যান্সাররা সে কাজের জন্য আবেদন বা বিড করবেন। আবেদনের তালিকা থেকে দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং পোর্টফোলিও দেখে সেরা কর্মী বাছাই করবেন নিয়োগদাতা। কর্মীর প্রোফাইলে আগে করা কাজের তালিকা, তাতে নিয়োগদাতার দেওয়া পর্যালোচনা এবং আয়ের পরিমাণ উল্লেখ থাকে। ফলে সেরা কর্মী নির্বাচন করা সহজ হয়ে যায়।
নতুন কোনো কাজ পোস্ট করার সময় নিয়োগদাতার কাছ থেকে মোট কাজের সমপরিমাণ টাকা তাঁর বিল্যান্সার অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। কাজ বুঝে পেলে তিনি কর্মীকে তার কাজের জন্য সেখান থেকে টাকা পরিশোধ করে দিতে পারেন। এতে কর্মী ও নিয়োগদাতা, উভয়ই আর্থিক প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পান। বিল্যান্সারে আয়ের উৎস দুই পক্ষই। কর্মী ও নিয়োগদাতা উভয়ের কাছ থেকে ৫ শতাংশ কেটে রাখা হয়।
মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হওয়ায় বিল্যান্সারে জালিয়াতির আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। তা প্রতিরোধে কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তা-ই জানালেন শফিউল। বিল্যান্সার চালুর পর ওয়েবসাইটটি ছিল ত্রুটিপূর্ণ। আইসিটি বিভাগের সহায়তায় প্রায় ৩৫০ জন স্বেচ্ছাসেবক ৫৫০টির বেশি ত্রুটি-বিচ্যুতি চিহ্নিত করে জানায়। ত্রুটিগুলো দূর করে ওয়েবসাইটটির নতুন সংস্করণ চালু করার কথা আছে আজ ১ জুন।
ওয়েবসাইটটির নিরাপত্তা যেন বিশ্বমানের হয়, সেদিকেও রাখা হচ্ছে কড়া নজর বলে জানালে শফিউল। আর অনলাইন সেবাকেন্দ্র তো আছেই। লেনদেনের নিরাপত্তার ব্যাপারে শফিউল বলেন, ‘হাইপারট্যাগ নামে আমাদের প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই মোবাইল লেনদেন নিয়ে কাজ করছে। সে অভিজ্ঞতা এখানে কাজে লাগাব।’
শফিউলের জন্ম ময়মনসিংহে, বেড়ে ওঠা সেখানেই। এসএসসির পাট চুকিয়েছেন ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে। এইচএসসি ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতক শেষ করে পেশাজীবন শুরু করেন। সেসব দিনের কথা শফিউল নিজেই জানালেন, ‘বাংলায় মোবাইল গেম তৈরি করেছি অনেক আগে। বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের সঙ্গে মোবাইল রেমিট্যান্স নিয়ে কাজ করি। বাংলাদেশে ইলেকট্রনিক লেনদেন নিয়েও আমরা কাজ শুরু করেছি। আমরা আরেকটি উদ্যোগ নিয়েছিলাম সারা দেশের ডাকঘরগুলোকে আমূল বদলে দিতে, সেটা শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি।’
বিল্যান্সার তৈরির পেছনে অনেকের মেধা-শ্রম আছে বলে জানালেন শফিউল। তাঁদের মধ্যে মোজাফফ্র চৌধুরী, শামসুল আরেফিন, শেকড় আহমেদ, আশিক আহমেদ, আজিজুর রহমান, রোহান রেজা, রহিম এম ইরতেজা, আনোয়ার হোসাইন, অনিন্দ্য আহমেদ, নাজমুস সাকিব, আসিব চৌধুরী, আশরাফুল আলম ও জিয়াউর রহমান উল্লেখযোগ্য। গত ১ মে নতুন পরীক্ষামূলক ওয়েবসাইট নিয়ে বিল্যান্সারের যাত্রা শুরু। এরই মধ্যে ১৫০টি কাজ পোস্ট হয়েছে। যেগুলোর আর্থিক মূল্যমান ৩০ লাখ টাকা। দিন দিন এই সাইটে বাড়ছে নতুন ফ্রিল্যান্সার ও কাজের সংখ্যা।
বিল্যান্সার যেভাবে ব্যবহার করবেন
প্রথমে www.belancer.com ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করে নিতে হবে। নিবন্ধনের পর হবে আপনার নিজের অ্যাকাউন্ট। এরপর কাজ পোস্ট করা বা কাজের জন্য আবেদন করা যাবে এক অ্যাকাউন্ট দিয়েই। কাজে আবেদনের জন্য ‘ব্রাউজ ওয়ার্ক’-এ ক্লিক করতে হবে। এরপর ওয়েবসাইটটিতে সব কাজের তালিকা দেখাবে। আর নির্দিষ্ট কাজের জন্য দক্ষ ফ্রিল্যান্সার পাওয়া যাবে ‘ফাইন্ড ফ্রিল্যান্সার’ অংশে। নতুন কাজ পোস্ট করতে লগ-ইন করে পোস্ট প্রোজেক্ট-এ ক্লিক করতে হবে। ফ্রিল্যান্সারের প্রোফাইলে আগে করা কাজের তালিকা, আগের নিয়োগদাতার দেওয়া পর্যালোচনা এবং পোর্টফোলিও দেখাবে, যা দেখে ফ্রিল্যান্সার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য যোগাযোগ করতে পারবেন ‘সাপোর্ট’ অংশে। সরাসরি যোগাযোগ (লাইভ চ্যাট) যেমন করা যাবে, তেমনই নিজের অভিযোগ জানিয়ে রাখার (টিকিট) সুযোগও আছে।

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সেরা কিছু কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন

ফ্রিল্যান্সিংয়ের সেরা কিছু কাজ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন…

বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় পেশা। বাংলাদেশে কয়েক লক্ষ ছেলেমেয়ে এই পেশায় জড়িত । দিন দিন পেশা হিসেবে ফ্রিল্যান্সিংয়ের গুরুত্ব বাড়ছে। আপনিও ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে চাচ্ছেন? কিন্তু বুঝতে পারছেন না, কোনটা নিয়ে কাজ করবেন? আজ আমরা ফ্রিল্যান্সিং এ বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু কাজের কথা বলব।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টঃ এই সময়ে বিশ্বের ছোট-বড় ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ব্যক্তিগত ও সামাজিক প্রায় সব ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে । সবাই নিজের একটি ভার্চুয়াল ঠিকানা চাচ্ছেন। একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান একদিকে যেমন এর গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারে, অপরদিকে বিভিন্ন শহরে বা দেশে অবস্থিত নিজ নিজ শাখার সাথে সহজে এবং কম খরচে যোগাযোগ করতে পারে। আর এ কারনেই ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে।
ওয়েব ডিজাইন হচ্ছে একটা ওয়েবসাইট দেখতে কেমন হবে তা নির্ধারণ করা। ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে আপনার কাজ হবে একটা পূর্ণাঙ্গ ওয়েব সাইটের টেম্পলেট বানানো। যেমন ধরুন এটার লেআউট কেমন হবে, হেডারে কোথায় মেনু থাকবে, সাইডবার হবে কিনা, ইমেজগুলো কিভাবে থাকবে ইত্যাদি।
একটি সাধারণ ওয়েব পেইজ ডিজাইন করতে সাধারনত ব্যবহার হয় HTML, CSS এর মত মার্ক আপ ল্যাঙ্গুয়েজ। ভাল মানের ওয়েব পেইজ ডিজাইন করতে হলে আরও কিছু ল্যাঙ্গুয়েজ জানা লাগে, যেমন- JavaScript (Basic), JQuery, PHP, HTML5, CSS3 ইত্যাদি । ওয়েব ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ওয়েবসাইটের জন্য এপ্লিকেশন তৈরী করা। যেমন লগিন সিস্টেম, নিউজলেটার সাইনআপ, ফাইল আপলোড করে ডেটাবেসে সেভ করা,ইমেজ ম্যানিপুলেশন, পেজিনেশন, যদি সাইটে বিজ্ঞাপন থাকে তাহলে প্রতিবার পেজ লোড হওয়ার সময় বিজ্ঞাপনের পরিবর্তন এগুলি এপ্লিকেশন, ওয়েব এপ্লিকেশন ইত্যাদি।
অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলোতে ওয়েব ডিজাইনার এবং ওয়েব ডেভেলপারদের অনেক চাহিদা রয়েছে। অনলাইনে উপার্জনের যতগুলো মাধ্যম রয়েছে, তার মধ্যে ওয়েব সাইট ডিজাইন ও ডেভলপমেন্ট হচ্ছে সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ ক্ষেত্র। ওয়েব ডিজাইনার বা ডেভেলপার হতে হলে আপনার প্রচুর ধৈর্য আর সময়ের দরকার ।
গ্রাফিক্স ডিজাইনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন বর্তমান সময়ে একটি জনপ্রিয় পেশা। এ কাজটি একই সাথে আনন্দদায়ক এবং সৃজনশীল।নিজেকে আন্তর্জাতিক মানের ডিজাইনার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে পাড়ি দিতে হবে দীর্ঘ পথ, জানতে হবে নিত্য-নতুন কলা-কৌশল। ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের অন্যতম একটি মাধ্যম হল গ্রাফিক্স ডিজাইন। গ্রাফিক্স ডিজাইন এমনি একটি ক্ষেত্র, যার চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলছে।
আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত মিডিয়াম লেবেল এর গ্রাফিক্স ডিজাইনাররা Free lancer হিসাবে কাজ করে ঘণ্টা প্রতি ২০-৩০ ডলার আয় করতে পারে । যেসব কাজ পাবেন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলিতেঃ লোগো ডিজাইন,বিজনেস কার্ড ডিজাইন, ব্যানার/ পোস্টার ডিজাইন, বুক কাভার ডিজাইন, ওয়েব সাইটের জন্য পিএসডি তৈরি, স্টিকার ডিজাইন, প্রোডাক্ট হলোগ্রাম ডিজাইন, ইমেজ এডিটিংএন্ড রিসাইজ, ফটো রিটাচিং, স্কেচ তৈরি/ড্রয়িং করা ইত্যাদি।
অনলাইনে আয়ের মাধ্যম ডিজাইন প্রতিযোগিতা বিড করে কাজ যোগাড় ডিজাইন বিক্রি। কোথায় কাজ পাবেনঃ ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস বিজ্ঞাপন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পত্রিকা/ম্যাগাজিন/প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনলাইন মার্কেট প্লেইস প্রিন্টিং এবং ডিজাইনিং প্রতিষ্ঠান ডিজাইনের কাজের জন্য প্রয়োজন টুলস এবং সফটওয়্যার । গ্রাফিক ডিজাইনের জন্য ব্যবহৃত দুটি সফটওয়্যার Adobe Photoshop এবং Adobe Illustrator । আর আপনার যদি আঁকাআঁকি করতে ভালো লাগে তাহলে সেটা অবশ্যই প্লাস পয়েন্ট।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ আপনি যদি অনলাইন থেকে কারো পন্য বিক্রি করে দিতে পারেন তাহলে আপনিও সেই পন্য থেকে কিছু টাকা কমিশন পাবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে একজন দক্ষ ডিজিটাল মার্কেটার হতে হবে। আর আপনি যখন আপনার ডিজিটাল মার্কেটিং স্কিল টা ব্যবহার করে অন্য কারও প্রডাক্ট অথবা সার্ভিস কমিশন ভিত্তিক প্রমোশন করবেন সেটা হবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রোডাক্ট মূলত ২ প্রকারের।
1. ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট। 
2. ডিজিটাল প্রোডাক্ট। 
ফিজিক্যাল প্রোডাক্টের জন্য আদর্শ মার্কেটপ্লেস গুলো হচ্ছে অ্যামাজন, ইবে ইত্যাদি। ডিজিটিাল প্রোডাক্টের জন্য আদর্শ মার্কেটপ্লেস গুলো হচ্ছে ক্লিকব্যাংক, জেভিযু, কমিশন জাংকশন ইত্যাদি।
13393121_562527883925628_926392514_nব্লগিংঃ ব্লগিং ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং প্রায় একই বিষয়। ব্লগিং হচ্ছে আপনার আইডিয়া শেয়ারের অন্যতম মাধ্যম। ব্লগ থেকে আয়ের প্রধান উৎসটি হলো বিজ্ঞাপন। একটি ব্লগ খুলে আপনি যদি বেশ ভাল সংখ্যক ভিজিটর আনতে পারেন তাহলে আপনি ব্লগিং করেও বেশ ভাল অর্থ আয় করতে পারেন। এখানে, ভিজিটর হচ্ছে যারা আপনার ব্লগ পড়বে অর্থাৎ আপনার ব্লগের পাঠক। ব্লগ কে আপনি আপনার ডায়েরীর সাথে তুলনা করতে পারেন।
আপনি আপনার প্রতিদিনকার ব্যক্তিগত চিন্তা-ভাবনা, কবিতা, গান, শখ,তথ্য প্রযুক্তি ইত্যাদি নিয়ে সম্পূর্ণ মুক্ত ভাবে লিখে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি নিজেকে,আপনার চিন্তা-চেতনা, আপনার দেশ-সংস্কৃতি-কালচার শেয়ার করছেন সারা পৃথিবীর সাথে। এছাড়া আপনার পণ্য-দ্রব্য- লেখা ও তুলে ধরতে পারেন বিশ্ববাসীর কাছে। ব্লগিং ও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং থেকে প্রতিমাসে ২ থেকে ১০ হাজার ডলার আয় করছেন এমন সফল ফ্রিল্যান্সার এর সংখ্যা এখন অনেক।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO):  সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কাছে যেকোন কিছু (ওয়েবসাইট/ব্লগ/প্রোডাক্ট ইত্যাদি) জনপ্রিয় করে তোলাই হল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর প্রধান প্রধান উদ্দেশ্য গুলো এ রকম
1. একটি সাইটকে সকলের কাছে সহজে পৌছে দেওয়া।
2. ওয়েব সাইটের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করা।
3.সাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি করা।
4.তথ্য বিনিময় ও প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার শক্ত আবস্থান তৈরি করা।
এসইও ২ ধরনের হয়। হোয়াইট হ্যাট এসইও (White Hat SEO): নিয়মনীতি না ভেঙ্গে যদি এসইও করা হয় ব্ল্যাক হ্যাট এসইও (Black Hat SEO):  সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মনীতি ভেঙ্গে যে এসইও করা হয় এসইও এর মাধ্যমে সহজেই আয় করা যায় । কোন প্রোগ্রামিং ভাষা জানার তেমন দরকার নাই বিধায় এই কাজ অতি সহজে রপ্ত করে দ্রুত কাজ শুরু করা যায় বলে বিশ্বব্যাপী এই কাজে নিয়োজিত আছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
ডাটা এন্ট্রিঃ শুধু মাত্র ডাটা এন্ট্রি দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং এর শুরুটা করতে পারেন । ডাটা এন্ট্রি বলতে মুলত টাইপ করা বুঝায়। কাগজে লেখা আছে সেটা দেখে টাইপ করে ডিজিটাল ফাইল তৈরী করবেন। সময়ের সাথে সাথে ডাটা এন্ট্রির ধরনও অনেক পাল্টেছে। বর্তমানে ডাটা এন্ট্রি বলতে মুলত পিডিএফ ফাইল দেখে টাইপ করাই বুঝায়। ডাটা এন্ট্রি কাজের জন্য MS Word, MS Excelএবং MS PowerPoint জানা থাকতে হবে । তবে বিশেষ করে মাইক্রোসফট এক্সেল সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকতে হয় । তবে typing speed এবং mouse handling speedএ firstথাকা টা খুব দরকার ।
ইংরেজীতে তে মোটামুটি দক্ষতা থাকতে হয়। তার সাথে রয়েছে ইন্টারনেটে সার্চ করে কোন একটি তথ্য খুঁজে পাবার দক্ষতা এবং বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট, ফোরাম, ওয়েব ডাইরেক্টরী সম্পর্কে ভাল ধারণা। যারা এখনো ভাবছেন কি করা যায়, দ্বিধা-দ্বন্দে দিন কাটাচ্ছেন, তারা যে কোন একটা বিষয় নিয়ে শুরু করে দিন ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ। দেশে বিদেশে আপনার জন্য আনেক কাজের ক্ষেত্র প্রস্তুত রয়েছে।

ডলার আয় সহজ নয় তাই ফ্রিলাসিং না শিখে নয়

ডলার আয় সহজ নয় তাই ফ্রিলাসিং না শিখে নয়

‘আউটসোর্সিং’, ‘ফ্রিল্যান্স’, ‘আয় করুন বৈদেশিক মুদ্রা ঘরে বসেই’ ইত্যাদি শব্দ বা বাক্যের সঙ্গে এখন অনেকেই পরিচিত। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্ম। এই বিষয়গুলো নানা সময় নানাভাবে প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়ে থাকে। তরুণদের অনেকেই মনে করেন ইন্টারনেটের মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করলেই বুঝি কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার আসতে থাকবে। কিন্তু আউটসোর্সিংয়ের কাজে সাফল্যের খবর যেমন জানা যায়, ব্যর্থতার খবর কম নয়। প্রকৃতপক্ষে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিংয়ে ব্যর্থতার ঘটনা অনেক বেশি। কাজের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জন ছাড়া অনলাইনে আয় করা সম্ভব নয়। শুরুর আউটসোর্সিং বিষয়টা সম্পর্কে জানতে হবে।
ফ্রিল্যান্সার:
ফ্রিল্যান্সার বা মুক্ত পেশাজীবী এমন একজন যিনি নির্দিষ্ট কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে স্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে যুক্ত না থেকেই কাজ করেন। একজন ফ্রিল্যান্সার এক বা একাধিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। আবার নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে চাকরি বা পড়ালেখার পাশাপাশিও ফ্রিল্যান্সার হিসেবে অন্যান্য কাজ করতে পারেন।
আউটসোর্সিং:
কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যখন তার নিজের বা প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো বাইরের কাউকে দিয়ে করিয়ে নেয় তখন সেটি আউটসোর্সিং। প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের কাজ আউটসোর্স করা হয়ে থাকে। এই কাজগুলো অপর কোনো প্রতিষ্ঠান করতে পারে অথবা একজন ফ্রিল্যান্সারও কাজটা করে দিতে পারেন। প্রতিষ্ঠানের কাজগুলো আউটসোর্স করার অনেক ধরনের কারণ রয়েছে, দক্ষ লোককে দিয়ে কাজ করানো, কম মজুরির হার, কম সময়ে কাজ সম্পন্ন করা, সামগ্রিক ব্যয় কমানো, প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের অন্যান্য কাজে নিয়োগ করাসহ আরও কারণ রয়েছে।
অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইট (মার্কেটপ্লেস হিসেবে পরিচিত) যেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজের সুযোগ পাওয়া যায়। আবার আউটসোর্সিং মানেই সব সময় যে অনলাইনে কাজ করা এমন নয়। ধরা যাক একটি তৈরি পোশাক কারখানায় শার্ট তৈরি করা হয় এবং শার্টের বোতামগুলো এই কারখানায় তৈরি করা হয় না। এগুলো সরবরাহ করা হয় অপর একটি প্রতিষ্ঠান থেকে। অর্থাৎ তৈরি পোশাক কারখানাটি বোতাম তৈরির আলাদা ব্যবস্থা না রেখে অন্য কারখানা থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারে।
অনলাইন মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ পাওয়ার পদ্ধতি:
ইন্টারনেটে বেশ কিছু মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ধরনের কাজ পাওয়া যায়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দক্ষ পেশাজীবীরা এখানে নিয়মিত কাজ করছেন। আবার বিষয়ভিত্তিক আলাদা আলাদা মার্কেটপ্লেসও রয়েছে। এই বাজারে কাজগুলোর বর্ণনা থাকে এবং যাঁরা কাজ করতে আগ্রহী তাঁরা কাজটি কত সময়ের মধ্যে এবং কত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে করতে পারবেন তা উল্লেখ করে আবেদন করবেন। এরপর আলোচনার মাধ্যমে যিনি কাজটি করাবেন তিনি কোনো একজনকে নির্বাচন করবেন।
অনলাইন মার্কেটগুলোতে কাজের বর্ণনা সাধারণত ইংরেজিতে দেওয়া থাকে। অর্থাৎ ইংরেজি ভাষা জানেন এবং ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, পৃথিবীর এমন যে কেউই এই কাজগুলো করার জন্য আবেদন করতে পারবেন। কিন্তু আবেদন করলেই কাজ পাওয়া যাবে এমন না, এটি প্রায় সম্পূর্ণভাব নির্ভর করে দক্ষতার ওপর। দক্ষতা ছাড়া কাজের জন্য আবেদন করা হলে হয়তো কখনো যোগাযোগই করা হবে না।
অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতে ৫০০-এরও বেশি বিষয়ের কাজ পাওয়া যায়। যে বিষয় নিয়েই কাজ করা হোক না কেন, ইংরেজিতে পারদর্শী হতে হবে। কাজের জন্য আবেদন করা থেকে শুরু করে কাজ পাওয়া, কাজের বিভিন্ন ধাপে এবং সম্পন্ন করার পর পর্যন্ত কাজদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়। যোগাযোগের দুর্বলতা থাকলে কোনো কারণে কাজ পাওয়া গেলেও নিয়মিতভাবে অনলাইনে কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না।
কাজ শেখা ও দক্ষতা অর্জন:
‘আলাদাভাবে শেখার প্রয়োজন নেই, কাজ করতে করতে শেখা হবে’—ধারণাটি এ ক্ষেত্রে ভুল। কাজ শুরু করার আগে বিষয়টি সম্পর্কে সর্বোচ্চ দক্ষতা না থাকলেও অবশ্যই কাজটি সম্পন্ন করার মতো জ্ঞান থাকতে হবে। কাজের মাধ্যমে শেখা শুরু করলে প্রায় কখনোই নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে প্রকল্প শেষ করা যায় না। নিজের আগ্রহ কোন দিকে রয়েছে, সেটা বুঝতে হবে প্রথমে এবং এরপর সেই বিষয়সংশ্লিষ্ট কাজগুলো খুঁজে বের করতে হবে মার্কেট থেকে। কাজের বর্ণনায় লেখা থেকেও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কী কী বিষয় শেখা প্রয়োজন সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
কাজ শেখার সব থেকে বড় উৎস হলো ইন্টারনেট। সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে খুঁজে নির্দিষ্ট বিষয় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব এবং এখান থেকেই শেখা শুরু করা যেতে পারে। অনলাইনে বিনা মূল্যে প্রায় সব বিষয় সম্পর্কেই জানা সম্ভব। নিয়মিত চর্চা করা হলে ধীরে ধীরে বিষয়টি সম্পর্কে দক্ষ হয়ে ওঠা সম্ভব। পাশাপাশি শেখার জন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া যেতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলে বা কোনো কোর্স করার সঙ্গে সঙ্গেই কাজ পাওয়া শুরু হয়ে যাবে এমন নয়। নিয়মিত চর্চা চালিয়ে যাওয়া জরুরি। আবার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হলেও, পাশাপাশি নিজের আলাদাভাবে শেখার কাজটি চালিয়ে যেতে হয়।
আউটসোর্সিংয়ের ক্ষেত্রে নিজের দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করার ফলেই পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। কোনো বিষয়ে পারদর্শিতা না থাকলে কাজ পাওয়া বা উপার্জনের আশা করাটা ভুল। কত কম সময়ের মধ্যে কত বেশি পরিমাণ উপার্জন সম্ভব, এমন লক্ষ্যের পেছনে দৌড়ালে জয়লাভ করা যাবে না। দক্ষতা বাড়ানোর কাজ চালিয়ে যেতে হবে এবং সঙ্গে সঙ্গে কাজ পাওয়ার জন্য অনুসন্ধান করতে হবে।
লেখক: সফটওয়্যার প্রকৌশলী নাসির খান

ক্যারিয়ার গড়তে আউটসোসিং এর ক্ষেত্র চিনুন

ক্যারিয়ার গড়তে আউটসোসিং এর ক্ষেত্র চিনুন…

ফ্রীলান্সিং কিংবা আউটসোর্সিং যাই বলুন না কেন তরুন প্রজন্মের প্রায় বেশীরভাগের কাছে এ নিয়ে কৌতূহল দিন দিন বেড়েই চলছে । চাকরি নামক সোনার হরিণ দিনে দিনে দুর্মূল্য হয়ে ওঠায় তরুন থেকে বয়স্ক বিশেষ করে বেকারদের কাছে আগ্রহের বিষয়ে পরিনত হয়েছে।
আসুন আমরা প্রথমে শব্দ দুটোর সাথে পরিচিত হই।
আপাত দৃষ্টিতে ফ্রীলান্সিং এবং আউটসোর্সিং একই অর্থে ব্যবহার করা হলেও দুটোর মধ্যে কিছু পার্থক্য আছে।
আউটসোর্সিং বলতে আমরা বুঝি ঘরে বসে ইন্টারনেট এর মাধ্যমে কাজ করে আয় করা।
ফ্রীলান্সিং হচ্ছে স্বাধীন ভাবে কোন কাজ করা। মুক্ত পেশা। যেমন ধরুন, ব্যবসায় করা। এখানে আপনার কোন অফিসিয়াল প্রেসার নাই, আপনি নিজেই নিজের বস। এক্ষেত্রে শুধু ফ্রীলান্সিংকে একক ভাবে আউটসোর্সিং বলা চলে না। আবার নিজ দেশের কাজ বা স্থানীয় কাজকেও আউটসোর্সিং বলা যায় না।
তবে যেহেতু  ইন্টারনেটে  কাজ করা নিজের স্বাধীনতার উপর নির্ভর করে, তাই আউটসোর্সিং ও ফ্রীলান্সিং শব্দ দুটি একই অর্থে  ব্যবহার  করা হয়।
বর্তমানে আউটসোর্সিং এর ক্ষেত্র সমুহঃ
13342205_560357414142675_1017321887_n
•    COMPUTER PROGRAMMING,
•    WEB DESIGN,
•     ‍ৃGRAPHIC DESIGN,
•    WEBSITE DEVELOPMENT,
•     VIDEO EDITING,
•     VIDEO PRODUCTION,
•     TRANSLATING,
•    ILLUSTRATING
•     MUSIC
•     JOURNALISM
•    PUBLISHING
•     SCREENWRITING,
•     FILM MAKING,
•     ACTING,
•     PHOTOJOURNALISM,
•     COSMETICS,
•    FRAGRANCES,
•     EDITING,
•    PHOTOGRAPHY,
•    EVENT PLANNING,
•    EVENT MANAGEMENT,
•     COPY EDITING,
•     PROOFREADING,
•    AUTHOR EDITING,
•     INDEXING,
•    COPY WRITING,
•     WRITING,
•     CONSULTING,
•     TOUR GUIDING,
•    POST-SECONDARY EDUCATION,
ইত্যাদি
ফ্রীলান্সিং মার্কেটপ্লেসে হাজার হাজার  কাজ আপেক্ষা করছে আপনার জন্য । ফ্রীলান্সিং এ সবচেয়ে বড় যে বিষয়টি, সেটি হল আত্মবিশ্বাস । আপনাকে নিজের উপর প্রচুর আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে । তার আগে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে। হুজুগে নয় বরং নিজেকেই প্রশ্ন করুন আপনার পছন্দের বিষয় কোনটি । তারপর প্রয়োজনীয় ট্রেনিং আর প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাস নিয়ে শুরু করুন আজ থেকেই।
আপনি এখন ভাবতে থাকুন আদৌও ফ্রীলান্সিং পেশায় আসবেন কিনা?  আর আসতে চাইলে কোন বিষয়টা আপনি মন থেকে পছন্দ করছেন…।
চলবে…
লেখক: সিরাজুম মুনিরা

বিনামূল্যে এসইও প্রশিক্ষণ

বিনামূল্যে এসইও প্রশিক্ষণ

এসইও কী?
এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) হচ্ছে এমন কিছু পদ্ধতি, যার মাধ্যমে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের (যেমন : Google, Bing, Yahoo) রেজাল্ট পেজে আপনার সাইট/ব্লগের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায় এবং এর ফলে সাইটে কাঙ্ক্ষিত টার্গেটেড ট্রাফিক আনা সম্ভব হয়।
আরো সহজভাবে বললে, বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের (যেমন : Google, Bing, Yahoo) নির্ধারিত নিয়মনীতি অনুসরণ করে আপনার সাইট/ব্লগকে ওই সব সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াটিকেই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলে।
এসইও কেন দরকার?
আমরা আমাদের বিভিন্ন প্রয়োজনে বা সেবাদানের লক্ষ্যে ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকি। কিন্তু এই ওয়েবসাইট তৈরির মূল উদ্দেশ্য থাকে কাঙ্ক্ষিত ট্রাফিক/ভিজিটর। কারণ, আপনার সাইটে যদি ট্রাফিক না আসে, তাহলে ওই সাইট থেকে আপনি কোনো প্রকার সুবিধা ভোগ করতে পারবেন না। আর সাইটে ট্রাফিক/ভিজিটর বেশি পেতে হলে এটিকে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজের ওপরের দিকে নিয়ে আসতে হবে।
কেননা, অধিকাংশ ট্রাফিকই আসে সার্চ ইঞ্জিনে বিভিন্ন কি-ওয়ার্ডের মাধ্যমে সার্চ করে। আর এসব সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্কিংয়ে আসতে হলে আপনার সাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের নিয়মনীতি অনুসরণ করে যথাযথভাবে অপটিমাইজড করতে হবে। তাহলেই আপনি সার্চ ইঞ্জিনগুলো থেকে ভালো মানের ট্রাফিক পেতে পারেন এবং আপনি লাভবান হতে পারবেন। কারণ, ট্রাফিক = প্রফিট। ট্রাফিক যত বাড়বে, আপনার আয়ও তত বৃদ্ধি পাবে।
বাইরের বিভিন্ন দেশে যেকোনো ছোট-বড় ব্যবসা বা ব্যক্তিগত কাজের জন্য ওয়েবসাইটকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। তাদের সব কাজই অনলাইনের মাধ্যমে হয়ে থাকে। আর এ কারণেই তারা যার যার নিজস্ব সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাঙ্কিংয়ে আনতে চায়। তখনই তাদের প্রয়োজন পড়ে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের। কারণ, এসইও ছাড়া কোনো সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থানে নিয়ে আসা সম্ভব নয়।
আমাদের দেশেও এখন ছোট/বড় ব্যবসার জন্য বা ব্যক্তিগত প্রয়োজনে অনেক ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে। আর এসব সাইটের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াতে, অর্থাৎ সাধারণ জনগণের কাছে কাঙ্ক্ষিত কি-ওয়ার্ডের ভিত্তিতে এসব সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের র‍্যাঙ্কিংয়ে আনার জন্য এসইও দরকার।
আর এভাবেই ছোট/বড় সব সাইটের পরিচিতি ও ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনকে বাংলাদেশেও অনেক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে এবং যতই দিন যাচ্ছে, এর চাহিদা ততই বাড়ছে। কারণ, এসইও একটি চলমান বা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।
এসইও কাদের দরকার?
আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, এসইও কেন এতটা গুরুত্বপূর্ণ বা কেন এর চাহিদা এত বেশি। তাহলে এবার আসুন দেখা যাক, কাদের এই এসইও সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
বর্তমান যুগ অনলাইনের। এখন সবার কাছেই যেকোনো তথ্য বা সেবা পাওয়ার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে এই ইন্টারনেট। বাসায় ডেস্কটপ, ল্যাপটপ ছাড়াও আমরা অনেকেই এখন মোবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকি এবং এর ব্যবহার ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা দৈনন্দিন বিভিন্ন চাহিদা পূরণের জন্য এই ডিভাইসগুলো ব্যবহার করে থাকি।
অনলাইন সেবার মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি ঘরে বসেই পেয়ে যাই। যেভাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, সেভাবে অনলাইনে সেবাদানকারী সাইটের সংখ্যাও বাড়ছে। কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরো পরিষ্কার হয়ে যাবে।
মনে করি, আপনি একটি ছোট্ট বুটিক হাউস বা রেস্টুরেন্ট চালাচ্ছেন। আপনি চাইছেন, আপনার শহর বা এলাকার মধ্যে কেউ যদি আপনার এই সেবা অনলাইনে পেতে চায়, তাহলে সে যেন আপনার ওয়েবসাইটটিকে বুটিকস বা রেস্টুরেন্টকেন্দ্রিক যেসব কি-ওয়ার্ড আছে, এমন কিছু কি-ওয়ার্ডের জন্য আপনার সাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম দিকে পায়। তাহলে আপনার ব্যবসার পরিচিতি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আপনার ব্যবসাকেও আরো উন্নতির পথে নিয়ে যাবে।
এখন বিষয়টি হচ্ছে, এটি কীভাবে সম্ভব যে লাখ লাখ ওয়েবসাইটের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট কি-ওয়ার্ডের জন্য আপনার সাইটটিকে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজে নিয়ে আসবে। এর জন্য যা দরকার, তা হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি সাইট, যা একমাত্র যথাযথ এসইও এর দ্বারাই সম্ভব।
তাই যাদের এমন ছোট/বড় ব্যবসা আছে বা ই-কমার্স সাইট আছে বা সাইট করতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই এসইও জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কারণ, এসইও ছাড়া কখনই একটি সাইটকে সার্চ ইঞ্জিনের র‍্যাঙ্কিংয়ে নিয়ে আসা সম্ভব নয়। আর সাইট যদি র‍্যাঙ্কিংয়ে না আসে, তাহলে আপনি ট্রাফিক পাচ্ছেন না আর ট্রাফিক না পেলে সেই সাইট থেকে কোনো প্রকার টাকা আসবে না।
এ ছাড়া এখন অনেকেই নিজের ব্যান্ডিং/পরিচিতির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করেন এবং এর মাধ্যমে অনলাইন/ভার্চুয়াল জগতে নিজের অস্তিত্ব বজায় রাখেন। ধরুন, আপনার নিজের নামে আপনি একটি সাইট তৈরি করেছেন এবং সাইটটি যথাযথ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের দ্বারা সার্চ ইঞ্জিন ফ্রেন্ডলি করেছেন। এখন যদি কেউ আপনাকে সার্চ ইঞ্জিনে (যেমন : গুগল) গিয়ে আপনার নাম লিখে সার্চ করে এবং আপনার সাইটটিকে যদি প্রথমে পায়, তাহলে আপনি নিজেই ভেবে দেখুন আপনার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু বেড়ে যাবে এবং এটি আপনার ব্র্যান্ডিং বা পরিচিতির ক্ষেত্রে কতটুকু ভূমিকা রাখবে।
সুতরাং শুধু ব্যবসার জন্যই নয়, নিজের ব্রান্ডিং/পরিচিতির বা বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে একটি ওয়েবসাইট থাকা দরকার। আর এই ওয়েবসাইটকে বিশ্বের কাছে পৌঁছে দেওয়ার একটা সহজ মাধ্যম হলো এসইও।
seo
কীভাবে এসইও শিখবেন?
এসইও শেখার শুরুটা অনেক সহজ। আপনার বেসিক কিছু জ্ঞান থাকলেই আপনি এসইও শিখতে পারবেন, যেমন—
প্রাথমিক কম্পিউটার জ্ঞান : আপনার কম্পিউটারের সাধারণ ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে। কম্পিউটার সঠিকভাবে চালনা করতে জানতে হবে।
ইন্টারনেট জ্ঞান : আপনার প্রাথমিক ইন্টারনেট জ্ঞান থাকতে হবে। ইন্টারনেট কী এবং এটি ব্যবহার করে আমরা কী করতে পারি, এ সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।
ব্রাউজিং সম্পর্কে ধারণা : আপনাকে ইন্টারনেট ব্রাউজিং সম্পর্কে জানতে হবে। কীভাবে সহজেই আপনি ইন্টারনেট ব্রাউজিং করে সঠিক তথ্য বের করতে পারবেন, এ দক্ষতা থাকতে হবে।
ইংরেজি দক্ষতা : আমি আগেও বলেছি যে, ফ্রিল্যান্সিংয়ে ভালো করতে হলে ইংরেজিতে ভালো দখল থাকতে হবে। আপনার ইংরেজি জ্ঞান ভালো হলে আপনি আরো ভালোভাবে এসইওর কাজ বুঝতে/করতে পারবেন। কেননা, আপনাকে এসইওর আপডেট সম্পর্কে জানতে হলে প্রচুর পড়াশোনা করতে হবে আর এটি অবশ্যই ইংরেজিতে।
যদিও বললাম যে এসইও শেখাটা সহজ, তবে এর গভীরতা অনেক। কেননা, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া এবং আপনার নিজের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখতে হলে সব সময় কাজ চালিয়ে যেতে হবে, নতুন নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে হবে এবং এগুলোর সঠিক প্রয়োগ বুঝতে হবে।
কীভাবে এসইও ক্যারিয়ার শুরু করবেন?
এসইওতে কাজ শুরু করতে চাইলে প্রথমে আপনি যেকোনো আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে পারেন, যারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্টকে এসইও সেবা প্রদান করে। এতে করে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে এবং আপনি বুঝতে পারবেন যে বর্তমানে এসইওর কাজ কীভাবে করা হয়ে থাকে।
এ ছাড়া একটি সাইটের সম্পূর্ণ এসইও কীভাবে করা হয়, এ সম্পর্কেও জানতে পারবেন। কেননা, আপনি ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে সম্পূর্ণ এসইওর কাজ নাও পেতে পারেন। তাই এখান থেকে একটি ভালো ধারণা লাভ করতে পারবেন।
কিন্তু একটি বড় সমস্যা হচ্ছে, এসব প্রতিষ্ঠান আপনাকে অভিজ্ঞতা ছাড়া কাজে নিতে চাইবে না। হয় আপনার এসইও কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে, তা না হলে আপনার কোনো মানসম্মত প্রতিষ্ঠানের সার্টিফিকেশন থাকতে হবে। আপনি যেখান থেকে ট্রেনিং নিচ্ছেন, এর গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু বা আপনাকে যিনি প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, তাঁর জ্ঞানের পরিধি কতটুকু বা তিনি একজন প্রসিদ্ধ প্রশিক্ষক কি না, এ বিষয়গুলো লক্ষ করুন।
একটি ভালো মানের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিলে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যাবে, তাহলে এটি আপনার কাজ পেতে অনেক সাহায্য করবে।
আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোতে কাজ করার মাধ্যমেও আপনার এসইও ক্যারিয়ার শুরু করতে পারেন। বর্তমানে এমন অনেক ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস রয়েছে, যেখানে অসংখ্য এসইও রিলেটেড কাজ পাবেন। এখান থেকে আপনার পছন্দ/যোগ্যতা অনুযায়ী কাজে বিড করে কাজটি করতে পারবেন। এখানে আপনি এসইওর বিভিন্ন অংশের ছোট/বড় অনেক কাজ পাবেন। এখানে কাজ করার মাধ্যমেও আপনি অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন।
বিনামূল্যে এসইও প্রশিক্ষণ
আপনি যদি মানসম্মত এসইও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে চান, তাহলে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে Skills for Employment Investment Program (SEIP) প্রজেক্ট BASIS institute of Technology & Management (BITM)-এর মাধ্যমে এসইও কোর্সে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন এবং এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এখানে গিয়ে আপনি রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন।