সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

ফেসবুক স্মার্টফোনের শত্রু

ফেসবুক স্মার্টফোনের শত্রু

            
ফেসবুক দ্রুত চার্জ শেষ করে।স্মার্টফোনের ব্যাটারি শেষ হচ্ছে দ্রুত? বরাবরের মতোই ফেসবুককে দায়ী করতে পারেন। স্মার্টফোনের চার্জ দ্রুত শেষ করে ফেসবুক অ্যাপ। সম্প্রতি অ্যাভাস্ট সফটওয়্যার কর্তৃপক্ষ নতুন এক গবেষণায় এসব তথ্য পেয়েছে। ওই গবেষণায় অ্যাপ ব্যবহারের ফলে স্মার্টফোনের ব্যাটারির নেতিবাচক পারফরম্যান্স বিবেচনায় শীর্ষে রয়েছে ফেসবুক। এ ছাড়া ফেসবুকের মালিকানাধীন ইনস্টাগ্রাম রয়েছে ষষ্ঠ অবস্থানে, পেজেস ম্যানেজার নবম ও মেসেঞ্জার আছে দশম স্থানে। অর্থাৎ, শীর্ষ ১০টি চার্জ নিঃশেষকারী অ্যাপের মধ্যে চারটিই ফেসবুকের।
অ্যাভাস্টের জ্যেষ্ঠ ভাইস প্রেসিডেন্ট গগন সিং বলেন, এ ধরনের পারফরম্যান্স চার্ট স্মার্টফোন ব্যবহারকারীকে তাদের অ্যাপ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে করণীয় বিষয়টি বুঝতে সাহায্য করে।
এএফপির খবরে বলা হয়েছে, প্রায় ৩০ লাখ অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতি প্রান্তিকে তালিকা প্রকাশ করে অ্যাভাস্ট।
অ্যাভাস্টের তালিকায় চার্জখেকো অ্যাপের দ্বিতীয় অবস্থানে আছে লিপ সিনক্রিং অ্যাপ মিউজিক্যাল ডটলি। মাত্র দুই ঘণ্টায় এটি স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৬-এর চার্জ শেষ করে দেয়। তৃতীয় অবস্থানে আছে স্ল্যাপফেস নামের সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম।
চতুর্থ অবস্থানে আছে স্কাইপের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে চালু হওয়া হোয়াটসকল। এরপরে পঞ্চম স্থানে আছে ডেইলি মেইল অ্যাপ। তবে চার্জখেকো অ্যাপের শীর্ষ ১০-এর তালিকা থেকে বেরিয়ে গেছে হোয়াটসঅ্যাপ, সাউন্ডক্লাউড, উইচ্যাট, চ্যাটঅন ও বিবিসি আইপ্লেয়ার।

রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ

নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ

           
সম্মেলনে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ দেন সফল উদ্যোক্তারা l ছবি: প্রথম আলোগতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় ডিজিটাল স্টার্টআপ সম্মেলন। এটি আয়োজন করে বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর ফেয়ার কমপিটিশন। ​এই সম্মেলনে নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য পরামর্শ দেন সফল উদ্যোক্তারা
মিলনায়তনজুড়ে উৎসুক তরুণের দল। আগে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা বসার জায়গা পেয়েছেন। বাকিরা যে যাঁর মতো দাঁড়িয়ে শুনছেন বক্তাদের কথা। কারণ, গতকাল রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের মিলনায়তনে আয়োজিত ডিজিটাল স্টার্টআপ সম্মেলন শুরুর আগেই অংশগ্রহণকারীদের উপস্থিতিতে ভরে যায় পুরো কক্ষ। মনোযোগসহকারে শুনেছেন স্টার্টআপ গড়ে তোলার আদ্যোপান্ত।
সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই অধিবেশনে। প্রথম অধিবেশনে কথা বলেন দেশের ২০ জন উদ্যোক্তা। তাঁরা নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং কীভাবে স্টার্টআপ বা নতুন ব্যবসায় উদ্যোগ গড়ে তুলতে হয় তা নিয়ে পরামর্শ দেন। দ্বিতীয় অধিবেশনে ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ, স্টার্টআপ নীতিমালা-সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলেন দেশীয় প্রযুক্তি নেতারা। বাংলাদেশ অ্যালায়েন্স ফর ফেয়ার কমপিটিশনের (বাফকম) উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আইটি সোসাইটি (ডিইউআইটিএস) এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সম্মেলনে আয়োজকদের পক্ষ থেকে ডিইউআইটিএসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুল্লাহ আল ইমরান বলেন, স্বপ্নবান তরুণেরা এ সম্মেলনের মাধ্যমে সুযোগ পাবেন দেশের সফল উদ্যোক্তার মুখোমুখি হওয়ার। জানতে পারবেন স্টার্টআপের খুঁটিনাটি। বক্তারা তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য সেসব পরামর্শ দিয়েছেন, তা এখানে তুলে ধরা হলো।
যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে
কোনো উদ্যোগ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া দরকার বলে জানিয়েছেন বিডি জবসের প্রতিষ্ঠাতা এ কে এম ফাহিম মাশরুর। এর ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে সফলতা। বেশির ভাগ উদ্যোক্তাই তাঁদের বক্তব্যে এ কথায় জোর দেন। চাল-ডালের সহপ্রতিষ্ঠাতা জিয়া আশরাফ বলেন, অনেক সময় বিপদ আসতে পারে। কিন্তু পিছিয়ে পড়া যাবে না। এ জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে আসতে হবে।
দরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা
যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তা যদি পূরণ না হয় তবে কি থেমে যাবেন? আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তবে উদ্যোগ না নেওয়াই ভালো। বরং উদ্যোগকে সফল করার জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করুন।
সহজ পথে সফলতা নয়
ব্যাপারটা এমন না যে উদ্যোগ গড়ে তোলা হলো আর সফলতা হাতে ধরা দেবে। রকমারি ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুল হাসান বলেন, সহজ পথে সফলতা আসে না। উদ্যোগের পেছনে সময় দিতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে। অন্য বক্তারাও পরিশ্রমের বিষয়টি তুলে ধরেন।
পড়তে হবে, জানতে হবে
মাহমুদুল হাসানের পাশাপাশি টিম ইঞ্জিনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সামিরা জুবেরী বলেন, পড়াশোনা ছাড়া সফল হওয়া সম্ভব নয়। চিন্তা করুন, মেধা ব্যবহার করুন।
সফল হওয়ার চার উপায়
ফিফোটেকের সিইও তৌহিদ হোসেন চারটি উপায় তুলে ধরেন সফল হওয়ার জন্য। ব্যবসা শুরুর আগে সেই কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে। প্রথমত, উদ্যোগ গড়ে তোলার আগে দরকার অভিজ্ঞতা। এ জন্য অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে আগে কাজ করা যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, ব্যবসার বৈধ কাগজপত্র থাকতে হবে। তৃতীয়ত, অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার। চতুর্থত, দক্ষ মানবসম্পদ প্রয়োজন।
সম্ভাবনা আছে, তবে খুঁজে বের করতে হবে
ব্যবসায়ে সফল হওয়ার অনেক উপাদান থাকে পারিপার্শ্বিক পরিবেশেই। কিন্তু সঠিক পথটি খুঁজে বের করতে হবে এবং বিশ্বাস রাখতে হবে কাজটি আপনি পারবেন।
পরামর্শক থাকা উচিত
সামিরা জুবেরী বলেন, সব উদ্যোক্তার পরামর্শক থাকা উচিত। যেকোনো বিপদে সাহায্য কিংবা পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করতে পারেন তাঁরা। কিন্তু পরামর্শক হিসেবে কাউকে বেছে নেওয়ার আগে অনেক ভাবতে হবে। পরিবারের সদস্যও হতে পারেন পরামর্শক। পরিবারে কেউ না থাকলে ঘনিষ্ঠ কেউ বা পরিচিত কোনো সফল ব্যক্তির কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।

মহাকাশ স্টেশনের দিনলিপি

মহাকাশ স্টেশনের দিনলিপি

মহাকাশ স্টেশনে গিটার বাজাচ্ছেন এক নভোচারীমহাকাশ স্টেশনে গিটার বাজাচ্ছেন এক নভোচারীদেব দুলাল গুহঘুম থেকে উঠে, আমরা প্রতিদিন রুটিন মোতাবেক এমন কিছু কাজ করি, যা করার জন্য আমাদের কোনো চিন্তাভাবনার দরকার হয় না। যেমন ধরুন, বালিশ থেকে মাথাটাকে উঁচু করে তোলা, তারপর খাট থেকে নেমে কয়েক পা হাঁটা। দিনের পর দিন একই কাজ একইভাবে করতে করতে সবাই অভ্যস্ত এতে। পৃথিবীর প্রায় সব মানুষের ক্ষেত্রেই ব্যাপারটা এমন। তবে পৃথিবী থেকে ৪০০ কিলোমিটার দূরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) থাকা ছয় নভোচারীদের বেলায় ব্যাপারটা আলাদা। আরও একজন নভোচারী শিগগিরই তাঁদের সঙ্গে যোগ দেবেন। জেনে নেওয়া যাক আইএসএসে থাকা একজন নভোচারীর দিনলিপি কেমন হয়!
ঘুম থেকে ওঠামহাকাশ স্টেশনে সূর্যের আলো নয়, বরং
মিশন কন্ট্রোলের কৃত্রিম আলো দেখে হয় ঘুম থেকে জাগরণ, ভোর ছয়টায়। সেখানে ঘুমানোর মানে হলো হারমোনি মডিউলের স্লিপিং ব্যাগে ঢুকে চোখ বুজে পড়ে থাকা, আর সারা রাত ভেসে ভেসে কাটিয়ে দেওয়া! তাই ‘ওঠা’, ‘নামা’ শব্দগুলো এখানে আপেক্ষিক। জাগার পর, বাকি কাজগুলো পৃথিবীর মতোই। তবু সেখানে যেহেতু সবকিছু ওজনহীন, তাই একই রকম হয়েও তা আলাদা। যেমন ব্রাশ করতে গিয়ে পানি ব্রাশের ভেতর আটকে থাকতে পারে, পেস্ট বাতাসেই ভাসতে শুরু করতে পারে!
কাজে লেগে পড়া
কিছু খেয়েই এরপর কন্ট্রোলের সঙ্গে সভা করে যার যার কাজে নেমে পড়তে হয়। স্টেশনটার রুটিন মোতাবেক রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার দিকটি অধিকাংশ দিনই দেখতে হয়। সবকিছুই পূর্বপরিকল্পিত এবং নভোচারীদের নিজ নিজ কাজ ধাপে ধাপে সম্পন্ন করতে হয়।
শরীরচর্চা
মনে হতেই পারে শূন্যে ভেসে বেড়ানো তো মজার কাজ? না, শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। যেহেতু সেখানে চলাফেরায় তেমন পরিশ্রম করতে হয় না, তাই পেশি ধীরে ধীরে কার্যক্ষমতা হারাতে থাকে, হাড় ক্ষয়ে যায়। এ জন্য দিনে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে ঠিক রাখতে হয়। মহাকাশ স্টেশনে আছে ব্যায়ামের তিন ধরনের যন্ত্রপাতি—একটি ট্রেডমিল, একটি ব্যায়ামের বাইক এবং সম্প্রতি যুক্ত হওয়া ‘এআরইডি’।
দুপুরের খাবার
পৃথিবীর মতো সেখানেও সপ্তাহ আছে, ছুটির দিন আছে। সাধারণ দিনে প্রত্যেকেই ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে আলাদা জায়গায় কাজে যায়। তাই ছুটির দিন (রোববার) বাদে বাকি দিনগুলোতে একত্রে খাবার খাওয়ার সুযোগ তেমন হয় না। বাড়ির মতো সেখানেও সরিষা, মরিচ, কেচআপের বিভিন্ন ধরনের সস আছে, আছে লবণ ও মরিচ। কিন্তু এর সবই তরল, না হলে ওজনহীনতার কারণে তা স্টেশনময় ছড়িয়ে যেত! আছে টাটকা ফলও, যা প্রতিটি কার্গোর সঙ্গে পৃথিবী থেকে পাঠানো হয়। কিন্তু ফল পচনশীল, তাই তা দ্রুতই খেয়ে ফেলতে হয়।
গবেষণা
আইএসএস নিজেই একটি বিশাল গবেষণাগার। সেখানে আছে পাঁচটি ল্যাব মডিউল—রাশিয়ার দুটি, যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডেস্টিনি’, ইউরোপের ‘কলম্বাস’ ও অতিসম্প্রতি যুক্ত হওয়া জাপানের ‘কিবো’। স্টেশনের বাইরে উন্মুক্ত মহাশূন্যে পরীক্ষণের জন্যও আছে ব্যবস্থা। কঠোর শৃঙ্খলার ভেতর দিয়ে গবেষণা হয় বিভিন্ন পদার্থ ও জীবের, এমনকি ছোটখাটো বিস্ফোরণের ওজনহীনতা নিয়েও। পৃথিবী থেকে সুবিধাজনক স্থানে হওয়ায়, পৃথিবীর ওপর গবেষণা ও ছবি তোলার কাজটাও সেখানে হয়।
ভ্রমণে বের হওয়া
মাঝেমধ্যে স্টেশনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজটা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। যেমন ধরুন স্টেশনের বাইরের কোনো অংশ মেরামতের কাজ। তখনই মহাশূন্যচারীকে ভ্রমণে বের হতে হয়, যাকে বলে এক্সট্রা-ভেহিকুলার অ্যাক্টিভিটি (ইভা)। নিঃসন্দেহে এটা মনে রাখার মতো অভিজ্ঞতা তাঁদের জন্য। তবে এতে ঝুঁকি প্রচুর। একটু এদিক-সেদিক হলেই আছে মহাশূন্যের বিশালতায় হারিয়ে যাওয়ার ভয়। তাই কেউ একা যান না, যান জোড়ায় জোড়ায়। এ জন্য যে পোশাকটি পরতে হয়, তার নির্দেশিকাটিই ১০০ পৃষ্ঠার। শুধু পোশাক পরতেই লেগে
যায় চার ঘণ্টা! এরপর টানা আট ঘণ্টার মতো কাজও করতে হয়।
অবসরে
দিনের কাজ শেষে অবসর বিকেলে নভোচারীরা যা খুশি করার স্বাধীনতা পান। চাইলে স্লিপিং স্টেশনে গিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে কথা বলতে পারেন ফোনে, পাঠাতে পারেন বার্তা। ইচ্ছা হলে দেখতে পারেন ছবিও। তাঁদের জীবনধারার সঙ্গে সম্পর্কিত ছবি গ্রাভিটি দ্য মারটিয়ান সম্প্রতি যুক্ত হয়েছে সেখানকার ছবির তালিকায়।
গিটার বাজিয়ে ও গানের ভিডিও বানিয়ে টুইটারে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন নভোচারী ক্রিস হ্যাডফিল্ড। সে থেকে অন্যরাও অবসর সময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সময় কাটান, পৃথিবীর মানুষদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা ও তাদের না-বলা গল্প শোনানোর জন্য।
তবে খুব সম্ভবত, ট্রাঙ্কুইলিটি মডিউলের গম্বুজ থেকে এমন সুন্দর পৃথিবীটাকে নিজের চোখের সামনে ঘুরতে দেখাটাই নভোচারীদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়। শুধু দেখাই নয়, বরং সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজটাও তাঁরা আনন্দ নিয়েই করেন।
বিবিসি ও নাসা অবলম্বনে 

বৃহস্পতির কক্ষপথে ঢুকে পড়েছে জুনো

বৃহস্পতির কক্ষপথে ঢুকে পড়েছে জুনো

           
বৃহস্পতির কক্ষপথে জুনোবৃহস্পতির কক্ষপথে জুনোবৃহস্পতির কক্ষপথ পরিভ্রমণ শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার পাঠানো মনুষ্যবিহীন নভোযান জুনো। ২৭০ কোটি কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে গতকাল সোমবার বৃহস্পতির কক্ষপথে ঢুকে পড়ে এ নভোযান। পাঁচ বছর আগে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট এটি যাত্রা শুরু করে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা থেকে ১১০ কোটি মার্কিন ডলার খরচে তৈরি জুনো নামের নভোযানটি বৃহস্পতি গ্রহ পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে পাঠায় নাসা। গবেষকেরা বলছেন, এর মাধ্যমে বৃহস্পতি গ্রহের অজানা অনেক তথ্য জানা সম্ভব হবে।
গতকাল আমাদের সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহের কক্ষপথে জুনোর সফল প্রবেশের পর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির গবেষকেরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। নাসার গবেষণাগারের ধারাবিবরণীতে বলা হয়, ‘বৃহস্পতিতে স্বাগতম’।
গবেষকেরা বলছেন, জুনোর এই মিশনে বৃহস্পতিকে ৩৭ বার প্রদক্ষিণ করার সুযোগ থাকবে। এরপর ২০১৮ সালে এটি বৃহস্পতির বুকে আছড়ে পড়বে।
অবশ্য বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করার হিসেবে জুনো প্রথম কোনো নভোযান নয়। এর আগে ১৯৮৯ সালে পাঠানো গ্যালিলিও নভোযানটিও বৃহস্পতি সম্পর্কে অনেক তথ্য জানিয়েছে। তবে জুনো আরও কাছ থেকে বৃহস্পতিকে জানার সুযোগ করে দেবে।
গ্যালিলিও বৃহস্পতির উপগ্রহ ইউরোপা, গ্যানিমিড ও ক্যালিস্টোর পৃষ্ঠে লোনা পানি থাকার প্রমাণ পেয়েছিল। নাসার গবেষকেরা বলছেন, জুনো গ্যালিলিওর চেয়ে বৃহস্পতির কাছাকাছি যেতে পারবে। এটি বৃহস্পতির ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ১০০ মাইল ওপরে থেকে তথ্য পাঠাতে পারবে।

নাসার প্লানেটারি সায়েন্সের পরিচালক জিম গ্রিন বলেন, ‘এই মিশন সফল করতে আমাদের সাধ্যমতো সব করেছি।’
আজ সকালে নাসার করা এক টুইটে বলা হয়েছে, সফল! ইঞ্জিন পোড়া থেমেছে। বৃহস্পতির অজানা রহস্য জানাতে জুনো এখন বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করা শুরু করেছে।
এক নজরে জুনোর অভিযান:
১. জুনো যাত্রা শুরু করে ৫ আগস্ট ২০১১, পৌঁছায় ৪ জুলাই ২০১৬।
২. এর ওজন ৩ দশমিক ৬ টন (ছোটখাটো হাতির সমান)।
৩. সাড়ে তিন মিটার আকারের এই নভোযানে ৯ মিটার দৈর্ঘ্যের সৌরপ্যানেল রয়েছে।
৪. এতে এক সেন্টিমিটার পুরু টাইটেনিয়ামের স্তর রয়েছে যাতে বৃহস্পতির তেজস্ক্রিয় বলয় পার হয়ে গ্রহটিকে ঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করা যায়।
বৃহস্পতি গ্রহএক নজরে বৃহস্পতিগ্রহ
বৃহস্পতি গ্রহ (ইংরেজি জুপিটার) সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতিসহ আরও তিনটি গ্রহ, অর্থাৎ শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনকে একসঙ্গে গ্যাসদানব বলা হয়। এটি পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান তৃতীয় উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে হাইড্রোজেন ও সামান্য পরিমাণ হিলিয়াম। এতে অপেক্ষাকৃত ভারী মৌলসমূহ দ্বারা গঠিত একটি কেন্দ্রও থাকতে পারে। খুব দ্রুত ঘূর্ণনের কারণে এর আকৃতি হয়েছে কমলাকৃতির গোলকের মতো, বিষুবের নিকটে ক্ষুদ্র, কিন্তু চোখে পড়ার মতো উল্লেখযোগ্য একটি স্ফীতি অংশ রয়েছে। এর ৬৩টি উপগ্রহ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি উপগ্রহ বৃহৎ আকৃতির। এই চারটিকে গ্যালিলীয় উপগ্রহ বলা হয়। কারণ, ১৬১০ সালে গ্যালিলিও প্রথম এই চার উপগ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। সর্ববৃহৎ উপগ্রহ গ্যানিমেডের আকৃতি বুধ গ্রহের চেয়েও বেশি। বৃহস্পতির সবচেয়ে বড় চারটি উপগ্রহ হলো আয়ো, ইউরোপা, গ্যানিমিড ও ক্যালিস্টো।

পানির নিচে প্রশিক্ষণ

পানির নিচে প্রশিক্ষণ
           
নাসার নভোচারীরা মঙ্গল গ্রহে যেতে সমুদ্রের গভীরে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ মানুষের বসবাসের জন্য কতই-না প্রতিকূল হতে পারে! সেই প্রতিকূলতাকে জয় করার স্বপ্ন দেখছে মানুষ। মঙ্গল জয় করার পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার নভোচারীরা নিচ্ছেন বিশেষ প্রশিক্ষণ। এই প্রশিক্ষণ হচ্ছে সমুদ্রের অনেক গভীরে।
গভীর সমুদ্রের মতো মহাকাশের গভীরে নভোচারীদের যে বিষয়গুলোর সম্মুখীন হতে হবে, হাতে-কলমে এরই প্রশিক্ষণ চলছে আটলান্টিকের গভীরে। টানা ১৬ দিন হবে এ প্রশিক্ষণ। এই মিশনের নাম নাসা এক্সট্রিম মিশন অপারেশনস (নিমো)। এ প্রশিক্ষণে ২১টি বিশেষ অভিযান চালানো হবে। এই দলে বিভিন্ন দেশের নভোচারী রয়েছেন। ভবিষ্যতে যে যন্ত্রাংশ ও কায়দাগুলো মহাকাশে ব্যবহার করা হবে, এর পরীক্ষা চালাবেন তাঁরা। আটলান্টিকের নিচে তাঁদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘অ্যাকুয়ারিস’ নামের একটি বাসস্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা কিজ ন্যাশনাল মেরিন স্যাংচুরি এলাকার আটলান্টিকের পৃষ্ঠ থেকে ৬২ ফুট নিচে এই অ্যাকুয়ারিসের অবস্থান। এখানে বসে বিভিন্ন গবেষণা চালানো হবে। এর মধ্যে আছে ডিএনএ সংশ্লেষ ও টেলিমেডিসিন ডিভাইস পরীক্ষা। এ ছাড়া যোগাযোগ ব্যাহত বা দেরি হলে কী করা যাবে, এতে এটাও পরীক্ষা করা হবে। তথ্যসূত্র: আইএএনএস।