01. আপনাকে কেউ কিছু প্রশ্ন করছে, অথচ আপনি কিছুই বুঝতে পারলেন না, তাহলে আপনি এক কাজ করুন, আপনি কোনো কথা না বলে, তার চোখের দিকে, যতক্ষণ পর্যন্ত তার কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত, তাকিয়ে থাকুন। এরফলে সেই ব্যক্তি আপনাকে সেই প্রশ্নটি আরও বিস্তারিত ভাবে বলবে, অথবা সেটি স্কিপ করবে।
02. আপনার উপড়ে কেউ রাগ করেছে? না কোনো কথা বাড়াবেন না আর। একদম চুপচাপ থাকুন। এরফলে সেই ব্যক্তি আরও রেগে যাবে ঠিকই, কিন্তু কিছুক্ষণ পর সে নিজেই খুব লজ্জা পাবে।
03. কোনো মানুষকে গিফট দেওয়ার সময় আমরা প্রথমেই তাকে বলে ফেলি যে, আমি তোমার জন্য একটি বিশেষ গিফট নিয়ে এসেছি, কিন্তু পরবর্তীতে যখন সে গিফট টি দেখে তখন সে আর সেরকম সন্তুষ্ট হয়না। কারণ আপনি আগেই তাকে বলে ফেলেছেন আপনি তার জন্য একটি বিশেষ গিফট নিয়ে এসেছেন, তাই তার মন আগে থেকেই বড় কিছু পাওয়ার আশায় প্রস্তুত হয়ে থাকছে, তাই সে আর বিশেষ খুশি হয়না। কিন্তু এর পরিবর্তে আপনি যদি বলেন, আমি তোমার জন্য একটি অতি সাধারণ গিফট নিয়ে এসেছি। কিন্তু পড়ে যখন আপনি তাকে গিফট দিবেন, দেখবেন সে গিফট দেখে অনেক খুশি হবে, কারণ আপনি তাকে বলেছেন অতি সাধারণ গিফট দেবেন। তাই তার মন কোনো অতি সাধারণ জিনিসের কথা ভাবে। কিন্তু পড়ে যখন আপনি তাকে গিফট দিবেন, দেখবেন গিফট যেরকমই হোকনা কেন সে অনেক খুশি হবে
04. কেউ আপনার সাথে কথা বলেই যাচ্ছে, থামার কোনো লক্ষণ নেই, অথচ আপনি আর তার কথা শুনতে চান না, তাহলে এক কাজ করুন, আপনার হাঁতে (কলম,পেন্সিল, চাবি) বা কাছে যা আছে তা মাটিতে ফেলে দিন, এরপর ঝুঁকে সেটিকে তুলে নিন, দেখবেন কিছুক্ষণের জন্য সেই ব্যক্তি থেমে যাবে, এরপর সে আর আগের মত কথা বলার পরিস্থিতিতে থাকবে না, তার কথা অনেকটা ছোট হয়ে যাবে। বিশ্বাস না হলে আজই করে দেখুন।
05. কেউ আপনার কাছে সাহায্য চাইলে তাকে যথাসাধ্য সাহায্য করুন। এরফলে সেই ব্যক্তি আপনার উপর ভরসা বাড়াবে, এবং পরবর্তীতে আপনাকেও সে সাহায্য করার রাস্তা খুজবে, যার ফলে আখেরে লাভ কিন্তু আপনারই। তবে স্থান-কাল-পাত্র বুঝেই সাহায্য করুন।
06. কেউ আপনাকে পছন্দ করে কিনা জানতে চান, তাহলে আপনাকে একটি জিনিস লক্ষ্য করতে হবে, যখন কয়েকজন একসাথে থাকবে তখন যদি কোনো কারণে সবাই একসাথে হাঁসে, সেইসময় আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে উপস্থিত ব্যক্তিদের মধ্যে কে, হাঁসতে হাঁসতে কয়েক সেকেন্ডের জন্য হলেও আপনার দিকে দেখছে। যে ব্যক্তি আপনাকে দেখছে সে আসলে আপনাকে অনেকটাই পছন্দ করে।
এভাবে আপনি কে কাকে পছন্দ করে সেটিও যাচাই করতে পাড়বেন, এক্ষেত্রে হাসার সময় সেই মানুষ দুটি একে-অপরের দিকে দেখবে।
07. যদি কেউ আপনার দিকে দেখছে, তাহলে আপনি আশেপাশের দেওয়ালে লাগানো ঘড়ি বা আপনার হাত ঘড়িটির দিকে যদি তাকান, আপনি দেখবেন যে, সেই ব্যক্তিটিও সেই দেওয়াল ঘড়িটির দিকে দেখছে, অথবা তার হাত ঘড়ির দিকে দেখছে।
08. বাজারে গেছেন, জিনিসপত্রের দর কষাকষি করছেন? এখানে আমরা বেশিরভাগ জনই বিশেষ ভুল করে ফেলি, আমরা সরাসরি দোকানদারকে বলে ফেলি, আরেকটু দাম কমান না। কিন্তু এখানেই আমরা ভুল করে বসি, আমরা এখানে একটি নেতিবাচক শব্দ ‘না’ ব্যবহার করে ফেলি, আর মানুষ এই শব্দ শুনতে খুব একটা স্বচ্ছন্দ নয়। যার ফলে দোকানী সরাসরি বলে দেয় ‘না আর কম করা যাবে না।‘ এর পরিবর্তে আপনি যদি বলেন- “আপনি আরেকটু কমাতে পাড়বেন।“ অথবা “আমি আশা করছি আপনি হয়ত আরেকটু কমাবেন।“ আর গলার স্বর হবে একটু কোমল। যার ফলে সেই দোকানীর মনে একটি ইতিবাচক সাড়া পড়বে। অর্থাৎ মুখে সবসময় পজিটিভ ভাব রাখার চেষ্টা করুন।
09. রাস্তায় কয়েকজন বা দুইজন একসাথে চলছেন, কিন্তু আপনার কাছে থাকা ব্যাগটা তাদের কিছু সময়ের জন্য ধরতে বলবেন অথচ বলতে পাড়ছেন না, কারণ যদি ব্যাগ ধরতে না চায়! তাহলে গল্প শুরু করুন, গল্প বলতে বলতে আপনার ব্যাগ কোনো কথা না বলে তাদের হাঁতে দিয়ে দিন, দেখবেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারাও কোনো কথা না বলে আপনার ব্যাগটি ধরে নিবে।
10. এরকম অনেক মানুষ আছেন, যারা আপনার ড্রেস বা জুতো বা ঘড়ি দেখেই সেগুলির সম্পর্কে জানতে চান, কিন্তু আপনি সেগুলোর ব্যাপারে বিশেষ মত প্রকাশ করতে চাননা। এক্ষেত্রে আপনি divert psychology trick ব্যবহার করতে পাড়েন। আপনাকে এরকম প্রশ্ন কেউ করলে আপনি উল্টে তাকে বলুন, “বাঃ তোমার ঘড়ি টা তো দারুন”, অথবা “এই ড্রেসে তোমাকে দারুন লাগছে”, “বাঃ তোমাকে আজ অনেক কিউট লাগছে” ইত্যাদি ইত্যাদি। এরফলে দেখবেন সেই ব্যক্তিটি নিজের প্রশংসা শুনে আপনাকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা প্রশ্ন গুলি নিমেষেই ভুলে যাবে।
11. কেউ কথা বলার সময় সত্য বলছে কি না মিথ্যে তা যাচাই করার জন্য, আপনাকে সেই বক্তার হাতের দিকে নজর দিতে হবে। যদি দেখেন যে, কথা বলার সময় সে তার হাত অনেক নাড়াচ্ছে, তাহলে আপনাকে বুঝতে হবে, সে যা বলছে তা সত্য বা অনেকটাই সত্য। কিন্তু যদি দেখেন সে হাত নাড়াচ্ছে না তাহলে আপনি ধরে নিতে পাড়েন যে সে যা বলছে তা মিথ্যে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
12. অনেক সময় দেখা যায়, কোনো মিটিং বা কয়েকজন বন্ধু মিলে যখন গল্প করছেন, তখন আপনার দিকে বক্তা কিছুতেই দেখছে না, অথচ আপনি চান বক্তা আপনার দিকে দেখুক। এরজন্য আপনি যে সাইকোলজি ট্রিকটি অনুসরণ করবেন সেটি অনেকটা এরকম- আপনি বক্তার কথার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মাথা নাড়ান, দেখবেন কিছুক্ষণ পর বক্তা আপনার দিকেই দেখবে, কারণ বক্তা ভাববে আপনি তার কথা একদম গুরুত্ব সহকারে শুনছেন।
13. একজন মানুষ তখনই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় লাগে যখন সে তার নিজের প্যাশন বা নিজের ভালো লাগার বিষয়ে বলতে থাকে, আর কোনো মানুষের আসল সৌন্দর্য দেখার এটাই হল শ্রেষ্ঠ সময়।
14. অনেক মানুষের সামনে কথা বলতে গেলে কথা আঁটকে যায়? অথচ আপনি সেই আলোচ্য বিষয়ে খুব ভালো জানেন, কিন্তু বলতে পাড়ছেন না? তাহলে এই সমস্যা সমাধানের জন্য আপনাকে প্রতিদিন কিছুটা সময় নতুন নতুন কোনো লেখা পড়ার দিকে দিতে হবে, তারপর নিজের মন থেকে গল্প বা কবিতা অথবা ক্রিয়েটিভ কিছু লেখার চেষ্টা করুন এরফলে আপনার শব্দের জোগান ভালো থাকবে, আর অনর্গল কথা বলার জন্য আপনাকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলা প্র্যাকটিস করতে হবে। কিছুদিন প্র্যাকটিস করুন, পরিবর্তন নিজেই বুঝতে পাড়বেন।