করোনাভাইরাস এবং ক্যান্সার
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া আতঙ্কের নাম করোনাভাইরাস কোভিড-১৯। প্রধানত আক্রান্ত ব্যাক্তির সংস্পর্শে এলেই, তার হাঁচি, কাশির মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায়। এটি অতি মাত্রায় ছোঁয়াছে রোগ। আক্রান্ত ব্যক্তির সংর্স্পশ আসা মাত্রই করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। এ ভাইরাস আক্রান্ত স্থানে হাত পড়লে তা সংক্রামিত হয়। পরবর্তীতে সংক্রামিত হাত চোখে মুখে নাকে লাগলে রোগ দেহে প্রবেশ করে এবং আক্রান্ত হয়। দেহের সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত স্থান হলো ফুসফুস। নিউমোনিয়া হয়। এ নিউমোনিয়াকে বলে নবেল করোনা আক্রান্ত নিউমোনিয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী, এ ধরনের নিউমোনিয়া হলে মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে ৪.৩%।
উপসর্গ
আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলেই বা আক্রান্ত স্থান স্পর্শ করলেই সাথে সাথেই উপসর্গ শুরু হয় না। দুই সপ্তাহ এ রোগ সুপ্ত অবস্থায় থাকে। সাধারণ উপসর্গগুলো হলো অন্যান্য ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের মত। যেমন, জ্বর, সর্দি কাঁশি, হাঁচি, নাক দিয়ে পানি পড়া, নাক বন্ধ, গলা ব্যথা, খাবারের স্বাদ কমে যাওয়া, পাতলা পায়খানা, গা, হাত, পা ব্যথা। ফুসফুস বেশী মাত্রায় আক্রান্ত হতে থাকলে বুকে চাপ, ব্যথা অনুভব, শ্বাসকষ্ট, ঠোঁট, মুখ নীল বর্ণ ও চৈতন্য হারানো।
কভিড-১৯ এর জন্য অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তি
বয়স্ক ব্যক্তি (৬৫ বছর ঊর্ধ), ফুসফুসের দীর্ঘস্থায়ী রোগ (হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, সিওপিডি) আছে, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনির জটিলতা, ক্যান্সার আছে এমন ব্যক্তি।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে এ রোগ আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। ক্যান্সার এবং ক্যান্সার চিকিৎসা উভয়ই দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তবে সকল ক্যান্সার রোগী সমান ঝুঁকিপূর্ণ নয়। ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে বেশী ঝুঁকিপূর্ণ হলো
রক্তরোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত (লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, মাল্টিপল মায়লোমা)
কেমোথেরাপি চিকিৎসারত
রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা স্বাভাবিক মাত্রার নিচে নেমে আসা
খাবারে পুষ্টির ঘাটতি থাকা
রক্তরোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত (লিউকেমিয়া, লিম্ফোমা, মাল্টিপল মায়লোমা)
কেমোথেরাপি চিকিৎসারত
রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা স্বাভাবিক মাত্রার নিচে নেমে আসা
খাবারে পুষ্টির ঘাটতি থাকা
এ সময় ক্যান্সারের উপসর্গ থাকা অর্থাৎ ক্যান্সারের সম্ভাব্য রোগী, ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়া এবং ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়। আতঙ্কের মাত্রা বেড়ে যায়। ক্যান্সার চিকিৎসার সার্থকতা বিপরীতে করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বিবেচনায় ক্যান্সার চিকিৎসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসার রুটিনের পরিবর্তন করা উচিত।
তবে সকল ক্যান্সার রোগীকে করোনাভাইরাস ও প্রতিরোধ সম্পর্কে প্রাথমিক স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা থাকতে হবে যাতে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্রই পরীক্ষা করা যায়, চিকিৎসা নেয়া ও পৃথক থাকা যায়। করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সাধারন বিষয়গুলো যেমন মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, বাড়িতে থাকা, বারবার সাবান দিয়ে নিয়মমত হাত ধোয়া, চোখে মুখে হাত না লাগানো, ব্যক্তি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা (হাত ধরা, কোলাকুলি), কমপক্ষে মিটার দূরত্ব বজায় রাখা।
তবে সকল ক্যান্সার রোগীকে করোনাভাইরাস ও প্রতিরোধ সম্পর্কে প্রাথমিক স্বাস্থ্য বিষয়ক শিক্ষা থাকতে হবে যাতে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়া মাত্রই পরীক্ষা করা যায়, চিকিৎসা নেয়া ও পৃথক থাকা যায়। করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সাধারন বিষয়গুলো যেমন মুখে মাস্ক ব্যবহার করা, বাড়িতে থাকা, বারবার সাবান দিয়ে নিয়মমত হাত ধোয়া, চোখে মুখে হাত না লাগানো, ব্যক্তি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা (হাত ধরা, কোলাকুলি), কমপক্ষে মিটার দূরত্ব বজায় রাখা।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে
এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসা আবিস্কৃত হয়নি। তাই এ মুহূর্তে রোগ মুক্তির একমাত্র উপায় শুধু রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে:
যথেষ্ট পরিমাণ বিশ্রাম নেয়া। কমপক্ষে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো।
ব্যয়াম করা
মুক্ত বাতাসে হাঁটা
পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার গ্রহণ (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, বাদাম, শস্যদানা, শাকসবজি, ফলমূল, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া)
পানি এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ পানীয় পান করা
ধূমপান ও পানের সাথে সাদাপাতা জর্দা কোনভাবে গ্রহণ না করা
দেহের রক্তচাপ, রক্তের সুগার, ফুসফুসের প্রদাহ জনিত রোগ এবং কিডনি কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখা
সর্বোপরি মানসিক চাপ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। তাই সব সময় যতটা সম্ভব নিরুদ্বেগ ও স্বচ্ছন্দ জীবন যাপন করা।
লেখক: মেডিকেল অনকোলজিস্ট,
শান্তি ক্যান্সার ফাউন্ডেশন
সাবেক বিভাগীয় প্রধান, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
ব্যয়াম করা
মুক্ত বাতাসে হাঁটা
পুষ্টিকর এবং সুষম খাবার গ্রহণ (মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, বাদাম, শস্যদানা, শাকসবজি, ফলমূল, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া)
পানি এবং পুষ্টি সমৃদ্ধ পানীয় পান করা
ধূমপান ও পানের সাথে সাদাপাতা জর্দা কোনভাবে গ্রহণ না করা
দেহের রক্তচাপ, রক্তের সুগার, ফুসফুসের প্রদাহ জনিত রোগ এবং কিডনি কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখা
সর্বোপরি মানসিক চাপ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া ফেলে। তাই সব সময় যতটা সম্ভব নিরুদ্বেগ ও স্বচ্ছন্দ জীবন যাপন করা।
লেখক: মেডিকেল অনকোলজিস্ট,
শান্তি ক্যান্সার ফাউন্ডেশন
সাবেক বিভাগীয় প্রধান, জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল