করোনায় আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে থাকলে যেসব বিষয় করণীয়
করোনাভাইরাসে সারা বিশ্বে মৃত্যু হয়েছে ৩০ লাখ ৫৭ হাজারের বেশি মানুষের। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৪ কোটি ৩৫ লাখের বেশি। বিশ্বে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১৪ কোটি ৩৫ লাখ ৪২ হাজার ৫৫০ জন। আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩০ লাখ ৫৭ হাজার ৫৪১ জনের। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস সৃষ্ট মহামারি কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়েছেন ১২ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ১৫৭ জন।
সারাবিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। করোনা কখন হবে, কার হবে কেউ জানে না। নিয়ম মেনে ঘরে বসে থাকলেই যে রক্ষা পাওয়া পাওয়া যাবে, এমনও নয়। এদিকে, করোনার চিকিৎসা নিয়েওরয়েছে প্রচুর ভোগান্তি।
সরকারি হাসপাতালে সহজে জায়গা পাওয়া যায় না। বেসরকারি হাসপাতালের খরচ বেলাগাম, স্থান পাওয়াও দুষ্কর। ফলে যাদের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ কিন্তু উপসর্গ তেমন নেই বা হালকা থেকে মাঝারি উপসর্গ আছে তাদের ঘরেই আর সবার থেকে আলাদা করে আইসোলেশনে থাকতে বলা হচ্ছে। সঙ্গে চলছে চিকিৎসা ও নজরদারি।চিকিৎসকদের মতে, করোনায় আক্রান্ত বেশিরভাগের ক্ষেত্রে হয় হালকা লক্ষণ থাকে বা তাদের কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। যদি কোনও বিশেষ সমস্যা না হয় তবে তারা হাসপাতালে না গিয়ে বাড়িতে বসে ব্যবস্থা নিতে হবে। যাদের আপাতদৃষ্টিতে সুস্থ মনে হয়, কিন্তু তাদের মধ্যে জীবাণু থাকার আশঙ্কা আছে তাদেরই কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। আপনার যদি খুব বেশি সমস্যা না হয় তবে ঘরে বসে নিজেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুস্থ করার চেষ্টা করুন।
লক্ষণগুলি শনাক্ত করুন-
সংক্রমণ মোকাবিলা করার জন্য প্রথমে লক্ষণগুলি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি করোনায় সংক্রামিত হয়েছেন কিনা কীভাবে জানবেন? আপনার যদি জ্বর হয়, ক্রমাগত কাশি হয়, খাবারে স্বাদ না লাগে, গন্ধ চলে যায়, শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, মাথা ব্যথা হয়, ক্লান্তি হয়, শরীরে ব্যথা হয় এবং গলা ব্যথা হয়- তবে নিজেকেই বাড়িতে আলাদা করে নিন। কারণ এগুলি করোনার লক্ষণ। এরপর পরীক্ষা করে যদি পজিটিভ আসে প্রথমে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কীভাবে নিজেকে সকলের থেকে বিচ্ছিন্ন রাখবেন?
কোভিড-১৯ পজিটিভ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রথমে নিজেকে একটি ঘরে লক করুন। বাড়িতে থাকুন এবং জরুরি অবস্থা না থাকলে বাড়ি ছেড়ে বের হবেন না। এমনকি যদি আপনি কোনও সংক্রামিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন তবে ১৪ দিনের জন্য নিজেকে আলাদা করে দিন। এই সময়ে বাড়ির অন্যান্য সদস্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন।
আইসোলেশনে থাকার সময় ঘরটির বাতাস চলাচল যেন পর্যাপ্ত থাকে
আইসোলেশনে থাকার জন্য এমন একটি ঘর বেছে নিন যেখাণে ভালো বাতাস চলাচল করে। মনে রাখবেন, যে আপনাকে এই ঘরে ১৪ দিন থাকতে হবে, তাই ঘরটিতে বাতাস চলাচল করা উচিত। যাতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। ওষুধ এবং খাবার গ্রহণের সময় পরিবারের সদস্যদের সংস্পর্শে আসবেন না। আপনার ব্যবহার করা পাত্র, তোয়ালে এবং বিছানাকে আলাদা রাখুন। কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। ঘরের ভিতরে মাস্ক পরুন। বার বার হাত, নাক এবং মুখ সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
রান্নাঘরে যাবেন না
সংক্রামিত ব্যক্তিকে রান্নাঘরে যেতে দেওয়া হয় না। তবে সেই ব্যক্তি যদি ঘরে একা থাকে বা তিনি নিজে রান্নাঘরের দায়িত্ব নিতে হয় সে ক্ষেত্রে রান্না করে খেতে হবে নিজেকে। বিশেষজ্ঞরা অবশ্য রোগীর ঘরে খাবার দিতেই পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
বাথরুম ব্যবহার কেমন করে করবেন?
করোনা রোগীর সবসময় আলাদা বাথরুম ব্যবহার করা উচিত। ঘরে যদি অন্য কোনও ওয়াশরুম না থাকে তবে রোগীর ব্যবহারের পরে ওয়াশরুমটি ভালো করে পরিষ্কার করুন। সবার ব্যবহারের পর তাকে ব্যবহার করতে দিন।
প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন
এখন আপনি আলাদা ঘরে রয়েছেন, আপনার নিজের যত্নও নিতে হবে। এই কঠিন সময়ে নিজেকে হাইড্রেট করতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন এবং তরল জাতীয় খাবার খান। যতটা সম্ভব গরম পানি পান করুন। ধূমপান এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
কখন চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন?
যদি রোগীর অবস্থার অবনতি ঘটে যেমন- জ্বর বেড়ে যায় বা শ্বাস নিতে সমস্যা হয় তবে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। এছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনও ওষুধ খাওয়া উচিত নয়।