রবিবার, ১৮ মার্চ, ২০১২

মনের জানালা

সমস্যা: আমার খালার বয়স ৪১ বছর। মানুষের ছোটখাট জিনিস, যেমন—সাবান, চিনি, জামাকাপড়, মোবাইল ফোন, এমনকি টাকা-পয়সার প্রতি তাঁর প্রচণ্ড লোভ। কয়েক বছর আগে তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল এবং এ কারণেই তাঁর এই প্রবৃত্তিটা বদভ্যাসে পরিণত হয়েছে। যদিও তিনি বর্তমানে সচ্ছল, তার পরও কারও কোনো জিনিস দেখলে তিনি লোভ সামলাতে পারেন না। এ জন্য সবাই তাঁকে চোর বলে। তাঁর স্বামী, ছেলেমেয়ে এমনকি আত্মীয়স্বজন—সবাই তাঁকে এ কাজ থেকে বিরত থাকতে বলে। কিন্তু তেমন লাভ হয় না। কয়েক মাস পরে আবার চুরি করেন। এ জন্য তাঁকে অনেক বোঝানো হয়েছে এমনকি শারীরিক নির্যাতনও করা হয়েছে। তাতেও কোনো কাজ হচ্ছে না। খালা প্রতি মাসে কিছু না কিছু চুরি করেন। তিনি কি চোর, নাকি মানসিক রোগী, বোঝা যাচ্ছে না। এমনিতে তাঁর কাজকর্ম স্বাভাবিক। এখন কী ব্যবস্থা নিলে তিনি ভালো হনে? তিনি একজন গৃহিণী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

পরামর্শ

তোমার খালার বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ। এটা অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে, আর্থিক সচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও তিনি নিজেকে সংযত রাখতে পারছেন না। তাঁর এই বদভ্যাসের কারণে তোমাদের পরিবারের লোকেরা যে তাঁকে লজ্জা দিয়েছে এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছে তা মোটেও ঠিক হয়নি। প্রত্যেকের ব্যক্তিত্ব গড়ে ওঠার সময় তাঁর শৈশবের অভিজ্ঞতা খুব গুরুত্বপূর্ণ। শৈশবের অভিজ্ঞতা নেতিবাচক হলে আমাদের ব্যক্তিত্বও ত্রুটিপূর্ণ হতে পারে। তোমার খালা কি পরে স্বীকার করেন যে তিনি জিনিসগুলো নিয়েছেন; নাকি তোমরা তাঁর কাছে জিনিসগুলো পাওয়ার পর নিশ্চিতভাবে ধরে নিচ্ছ যে তিনি সেগুলো চুরি করেছেন? ক্লেপেটাম্যানিয়া (Kleptomania) নামে মানসিক যে অসুস্থতা আছে, তাতে দেখা যায়, অপ্রতিরোধ্য আবেগের বশে মানুষটি যে জিনিস ভালো লাগে সেটি যেকোনো জায়গা থেকে তুলে নিয়ে আসে। অনেক সময় অপ্রয়োজনীয় জিনিসও নিয়ে এসে পরে ভুলে যায়। কখনো কখনো পরে সেটি নিজের কাছে দেখতে পেয়ে ফেরত দেয়, আবার কখনো লজ্জায় পড়ে না-ও দিতে পারে। তোমার খালার বিষয়টি এ ধরনের কি না তা বোঝা যাচ্ছে না। তিনি জিনিসগুলো নিজে ব্যবহার করার জন্য আনেন কি না তা তুমি জানাওনি। এমনও হতে পারে, তিনি নিজেকে বঞ্চিত মনে করেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। তোমরা তাঁর সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ না করে তাঁকে সবাই মিলে বলতে পারো যে, এই কাজ তিনি না করলে তাঁকে সবাই অনেক ভালোবাসবে এবং শ্রদ্ধা করবে। সবচেয়ে ভালো হয়, তোমরা যদি তাঁকে কাউন্সেলিং বা সাইকোথেরাপির জন্য নিয়ে যাও। ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারে (ফোন: ৮৩২১৮২৫ ও ০১৭১৩১৭৭১৭৫) বিনা খরচে নারী ও শিশুদের এই সেবা দেওয়া হয়। এ ছাড়া ক্রিয়া বা ঢাকা কমিউনিটি হাসপাতালেও তাঁকে নিয়ে যেতে পারো। আশা করি, তোমরা তাঁকে এই চিকির‌্যাসাসেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করবে। তাঁকে এ কারণে দোষারোপ করতে থাকলে তাঁর এই প্রবণতা আরও বেড়ে যেতে পারে।

সমস্যা: আমি একজন এইচএসসি পরীক্ষার্থী। আমি পরিবারের বড় ছেলে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই মায়ের স্নেহের বদলে পেয়েছি শুধু অমানুষিক কষ্ট আর নির্যাতন। যেকোনো বিষয় নিয়ে মা আমাকে আমার দুই ভাইয়ের চেয়ে ছোট করে দেখেন। মায়ের কথার ব্যতিক্রম হলে আমার ওপর চরম মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চলে। বাবা বেকার ও মাদকাসক্ত হওয়ায় সংসারে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। আর সব ঝাল মেটানো হয় আমার ওপর দিয়ে। প্রতিবাদ করতে গেলে জুটে মারধর, বের করে দেওয়া হয় ঘর থেকে। এই রকম অনেক কষ্ট সহ্য করে এসএসসি পরীক্ষায় আমি জিপিএ-৫ লাভ করি। কিন্তু এখন যেন পৃথিবী আমার কাছে হয়ে উঠেছে বিষময়। মাঝেমধ্যে মনে হয় পৃথিবী ছেড়ে চলে যাই চিরদিনের মতো।

আদনান
চট্টগ্রাম কলেজ।

পরামর্শ

আমাকে এ পর্যন্ত অনেক মায়ের কান্নাজড়িত বক্তব্য শুনতে হয়েছে যার বিষয়বস্তু ছিল, স্বামীর আচরণে হতাশ হয়ে তাঁরা কীভাবে তাঁদের নিরীহ ও দুর্বল সন্তানকে অত্যাচার করেছেন। আমার মনে হয় কাজটি যে তিনি খুব সচেতনভাবে করেছেন, তা নয়। এর জন্য পরে তাঁর মনে অপরাধবোধেরও সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তুু তার পরও তিনি বারবার একই কাজ করেছেন। এর ফলে তাঁর সন্তানের মধ্যে যখন আচরণগত সমস্যা দেখা দিয়েছে তখন তিনি বুঝতে পেরেছেন তাঁর রাগের বহিঃপ্রকাশের জন্যই এমনটি ঘটেছে। কিন্তু তত দিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তুমি মায়ের প্রথম সন্তান বলে তোমার ওপরই এর বেশি প্রয়োগ ঘটেছে। তোমার বাবা বেকার ও মাদকাসক্ত হওয়া সত্ত্বেও তাঁরা তিনটি সন্তান পৃথিবীতে এনে খুব বড় একটা ভুল করেছেন। এটি শিশু-অধিকার লঙ্ঘনের পর্যায়ে পড়ে। এ ছাড়া তোমাকে ছোট দুই ভাইয়ের চেয়ে কম মূল্য দেওয়ার কারণে তুমি কষ্ট পাচ্ছ, যদিও আমাদের অভিভাবকেরা এতে ভালো হবে মনে করে ভুল এই পদ্ধতি অনুসরণ করছেন। আমি তোমাকে অনেক প্রশংসা করছি যে, এ ধরনের প্রতিকূল পরিবেশে থেকেও তুমি এসএসসিতে ভালো ফল করেছ। পৃথিবী ছেড়ে তুমি কেন যাওয়ার কথা ভাবছ? আমরা যারা বড়রা তোমাদের ঠিকমতো পথ দেখাতে পারছি না, শাস্তি তো আমাদের হওয়া উচিত। তুমি নিশ্চয়ই এইচএসসিতেও ভালো ফল করবে এবং একসময় তুমি তোমার বাবা-মাকে সুন্দরভাবে বোঝাতে সক্ষম হবে যে তাঁরা কী কী ভুল করেছেন। আশা করি, তুমি ভালো থাকবে। তোমার জীবন সুন্দর ও সাফল্যমণ্ডিত হোক।

নতুন আইপ্যাড নিয়ে সারা বিশ্বে উন্মাদনা

বিশ্বখ্যাত প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপলের ট্যাবলেট কম্পিউটারের সর্বশেষ সংস্করণ ‘নিউ আইপ্যাড’ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে উন্মাদনা। আইপ্যাডের নতুন সংস্করণ আসবে বলে নানা ধরনের আলোচনা অনেক দিন ধরেই চলছে বিশ্ব প্রযুক্তি অঙ্গনে। আর একাধিকবার বাজারে আসার তারিখ পরিবর্তন হওয়ায় আইপ্যাডের নতুন সংস্করণটি পাওয়ার জন্য ক্রেতারাও ছিলেন মুখিয়ে। এসবের প্রমাণ মিলল অ্যাপলের ভক্তদের লাইনে দাঁড়িয়েছেন নতুন ট্যাবলেটটি পাওয়ার জন্য অপেক্ষা দেখে। আগ্রহীদের পাশাপাশি উদ্যোক্তাদের মধ্যেও এটি পাওয়ার আগ্রহও দেখা গেছে বেশ।
গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও নয়টি দেশে আইপ্যাড বিক্রি শুরু হওয়ার পর পুরো রাত ধরেই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন অসংখ্য অ্যাপলপ্রেমী। আগেই অর্ডার দিয়েও হাতে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে আগ্রহী নন অনেকেই। আর তাই ভিড় জমিয়েছেন অ্যাপল স্টোরের সামনে!
প্রথম নিউ আইপ্যাড হাতে পাওয়া ব্যক্তি ছিলেন নিউইয়র্কের এরিক লেড। ব্রাজিল থেকে উড়ে এসে ৩০ ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে হাতে পেয়েছেন প্রিয় নিউ আইপ্যাড! জানালেন, ব্রাজিলের মানুষের নতুন এ ট্যাবলেটটি পেতে সময় লাগবে আরও তিন-চার মাস। আর তাই সে অপেক্ষায় না থেকে নিজে চলে এসেছেন নতুন আইপ্যাড কিনতে।
এমন উন্মাদনায় থাকা আগ্রহীদের নতুন আইপ্যাড দেওয়ার ব্যাপারে সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছেন অ্যাপল কর্মকর্তারা। ইতিমধ্যে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, কানাডা, জার্মানি, জাপান, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, হংকংয়ে বিক্রি শুরু হয়েছে।
চলতি মাসের ২৩ তারিখের মধ্যে আরও ২৪টির বেশি দেশে নিউ আইপ্যাড বিক্রি শুরু হবে বলে জানা গেছে। —এএফপি

শনিবার, ১৭ মার্চ, ২০১২

'অন্যনারীকে মুগ্ধ করতেই নারীর সাজগোজ'


পুরুষসঙ্গীকে খুশী করতে নারীরা আয়নার সামনে বেশি সময় কাটায় বলে প্রচলিত ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, পুরুষসঙ্গী নয় অন্যনারীর কাছ থেকে বাহবা পাওয়ার উদ্দেশ্যেই নারীরা সাজগোজ করে থাকে।

২ হাজার নারীর ওপর পরিচালিত সিম্পল স্কিন কেয়ারের গবেষণা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এনডিটিভি এ তথ্য জানায়।

এতে দেখা যায়, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশই অন্য নারীর কাছ থেকে প্রশংসাসূচক মন্তব্য পাওয়ার জন্য পোশাক নির্বাচন করে। অপরদিকে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন পোশাক নির্বাচন করে তাদের বান্ধবীদের কথা মাথায় রেখে।

এক চতুর্থাংশেরও বেশি অংশগ্রহণকারী জানিয়েছে, তারা পুরুষ নয় বরং অপরিচিত নারীদের কাছ থেকেই বেশি মন্তব্য পেয়ে থাকে।

সিম্পল স্কিন কেয়ারের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে দ্য ডেইলি মেইল বলেছে, "প্রচলিত একটি ধারণা রয়েছে যে, বিপরীতলিঙ্গের সঙ্গীকে খুশী করতেই নারীরা সব কিছু করে থাকে। তবে গবেষণায় দেখা গেছে এটা সবসময় ঠিক নয়।"

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী নারীদের ২২ শতাংশ দাবি করেন, পুরুষরা কেমন মন্তব্য করল তা তারা মোটেও পরোয়া করেন না। আর ৪৮ শতাংশ নারী জানান, তারা মূলত অপরিচিত নারীদের কাছ থেকে প্রশংসা পেতেই বেশি পছন্দ করেন।

তরুণদের ডেটিং প্রবণতায় বিয়ের প্রতি আগ্রহ কমছে

 একসঙ্গে বাস না করে প্রতিশ্র"ত সম্পর্ক উপভোগ করার সুযোগ পাওয়ায় তরুণদের মধ্যে বিয়ের প্রবণতা কমছে।

মিসৌরি-কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, বিয়ের বিকল্প হিসেবে তারা পুরোপুরি দাম্পত্য জুটির মত সপ্তাহে তিন বা তারো বেশি রাত একসঙ্গে কাটায়।

প্রথম দেখায় প্রেমে বিশ্বাসী পুরুষ, নারী নয়

নারীদের তুলনায় পুরুষরাই বেশি প্রথম দেখায় প্রেমে বিশ্বাসী। এ সংখ্যা প্রতি ৫ জনে একজন। নতুন এক জরিপে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

'দ্য হিন্দুস্তান টাইমস' এ প্রকাশিত এ জরিপের ফলে দেখা গেছে, প্রতি পাঁচ জনে একজন পুরুষ বলেছেন, তারা প্রথম দেখায় প্রেমে পড়েছেন।

অর্ধেকেরও বেশি পুরুষ বলেছেন, প্রথম দেখার পরই তারা মেয়েটির প্রেমে হাবুডুবু খেয়েছেন। আর তিনদিন ডেটিং এর পর মন হারিয়েছেন এমন পুরুষের সংখ্যা প্রায় তিন-চতুর্থাংশ।

অন্যদিকে, প্রতি দশ জনে মাত্র একজন নারী বলেছেন, তারা প্রথম দেখায় প্রেমে পড়েছেন। বেশির ভাগ নারীই ভালোলাগার মানুষের কাছে 'প্রকৃত চাওয়া' পেয়েছেন কিনা তা
জানতে ষষ্ঠবারের মতো দেখা করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন মনোবিজ্ঞানী ও 'ব্রিটিশ সাইকোলজিক্যাল
সোসাইটি'র সদস্য অধ্যাপক অ্যালেকজান্ডার গর্ডন। গবেষণার এ ফলে লিঙ্গভেদে যে বৈপরীত্য ধরা পড়েছে তাতে অবাক হয়েছেন তিনি।

গর্ডন বলেন, "পুরুষের চেয়ে নারীরা সামাজিক পরিস্থিতি বেশি বুঝতে
পারে এবং কোনো পুরুষের সঙ্গে প্রথম দেখার পর তাদের মনে নানা প্রশ্ন উদয় হয়।

এর মধ্য দিয়ে তারা বোঝার চেষ্টা করে ওই পুরুষকে ভালোবাসা কতটা নিরাপদ? সে তার সন্তানের জন্য কেমন বাবা হবেন?- এরকম আরো অনেক কিছু।"

"সারা জীবনের জন্য কাউকে পছন্দের ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে
নারীরা অনেক বেশি বিচক্ষণ," বলেন গর্ডন।

জরিপের ফলে আরো দেখা গেছে, ব্রিটেনে পুরুষরা গড়ে জীবনে তিন বারের
বেশি প্রেমে পড়ে। অন্যদিকে, নারীরা গড়ে প্রেমে পড়ে একবারই।

এ গবেষণার জন্য ১৬ থেকে ৮৬ বছর বয়স্ক ১ হাজার ৫০০ নারী ও ১ হাজার ৫০০
পুরুষের ওপর জরিপ চালানো হয়েছে।