মঙ্গলবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০১২

দৃষ্টি ফিরিয়ে দিলো বায়োনিক চোখ!

দৃষ্টি ফিরিয়ে দিলো বায়োনিক চোখ!

বংশানুক্রমে পাওয়া রেটিনিটিস পিগমেন্টোসা রোগের কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন ডায়ান অ্যাশওয়ার্থ। কৃত্রিমভাবে তৈরি চোখের বদৌলতে আংশিক দৃষ্টি ফিরে পেয়েছেন ওই অস্ট্রেলিয়ান নারী। বায়োনিক চোখের এই সাফল্য অন্ধত্বের চিকিৎসায় একটি বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করছেন বিজ্ঞানীরা। খবর রয়টার্স-এর।

রেটিনিটিস পিগমেন্টোসা রোগের কারণে চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন অ্যাশওয়ার্থ। এ বছরের মে মাসে অস্ট্রেলিয়ার রয়াল ভিক্টোরিয়ান আই অ্যান্ড ইয়ার হসপিটালে অ্যাশওয়ার্থের বায়োনিক চোখটি স্থাপন করা হয়। এর এক মাস পরে চোখটির চালু করা হলে আংশিক দৃষ্টি ফিরে পান তিনি।

এ ব্যাপারে অ্যাশওয়ার্থ বলেন, ‘আমি হঠাৎ করেই যেন আলোর দেখা পেলাম। এই অভিজ্ঞতাটি ছিলো অভূতপূর্ব।’

বায়োনিক চোখটি তৈরি করেছে বায়োনিক ভিশন অস্ট্রেলিয়া। এতে রয়েছে ২৪টি ইলেকট্রোড। একটি ছোট তার সংযোগ স্থাপন করে চোখের পেছনে থাকা একটি রিসেপ্টর-এর সঙ্গে। বায়োনিক চোখটি বসানো হয়েছে অ্যাশওয়ার্থের রেটিনার ঠিক পাশেই।

অ্যাশওর্থের বায়োনিক চোখের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্পেশালিস্ট সার্জন ড. পেনি অ্যালেন জানান, যন্ত্রটির মধ্যে বিদ্যুৎশক্তি চালিত হয়, যা রেটিনাকে উদ্দীপ্ত করে। এরপর ওই ইলেকট্রনিক পালসগুলো মস্তিষ্কে পৌঁছে যায়, যা রোগীকে দেখতে সাহায্য করে।

বায়োনিক চোখ আংশিকভাবে হলেও রোগীকে ফিরিয়ে দেয় হারানো দৃষ্টিশক্তি। এটির বদৌলতে আলো এবং অন্ধকার বস্তুগুলোর পার্থক্য চিহ্নিত করতে পারেন ব্যবহারকারী।

ড. অ্যালেন জানিয়েছেন, ‘বায়োনিক চোখের প্রথম তিনটির একটি পেয়েছেন ডায়ান অ্যাশওয়ার্থ। আমরা এখন এর কার্যক্ষমতা বিশ্লেষণ করে দেখছি।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে অন্ধ ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি। আরো সাড়ে ২৪ কোটি মানুষ আংশিক অন্ধত্বের শিকার। অ্যাশওয়ার্থের বায়োনিক চোখটিকে বিজ্ঞানীরা বিবেচনা করছেন অন্ধত্বের চিকিৎসায় একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে। এই প্রযুক্তির উন্নতি এবং বিকাশের মাধ্যমে অন্ধরা অদূর ভবিষ্যতে তাদের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন, এমনটাই আশা করছেন তারা।

উড়ছে মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত ড্রোন

উড়ছে মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত ড্রোন

চিন্তা থেকেই রোবোটিক ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির জগতের সর্বশেষ সংযোজন মাইন্ড-কন্ট্রোলড কোয়াড রোটর ড্রোন। ব্রেইন ওয়েভ ব্যবহার করে রোবোটিক ডিভাইস নিয়ন্ত্রণের এই প্রযুক্তিকে বলা হচ্ছে একুশ শতকের সবচেয়ে আলোচিত প্রযুক্তিগুলোর একটি। খবর ইয়াহু নিউজ-এর।

চিন্তা থেকে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ড্রোনটি আদতে একটি প্যারট এ.আর ড্রোন ২.০। ইমোটিভ ইপিওসি ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাফ (ইইজি) হেডসেট ব্যবহার করে নিজের চিন্তা থেকেই ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন চীনের ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা।

আনম্যানড এরিয়াল ভেইকল বা মানববিহীন উরুক্কু যানকেই চলতি ভাষায় ড্রোন বলা হয়।

ইমোটিভ ইপিওসি ইলেকট্রএনসেফালোগ্রাফ (ইইজি) হেডসেট সংযোগ দেয়া হয় কম্পিউটারের একটি বিশেষ সফটওয়্যারে। এরপর চালকের কমান্ডগুলো কম্পিউটার থেকে রিলে হয় ড্রোনটিতে। মাথায় ইইজি হেডসেট পরে চালক একটু জোরে সোরে বামে যাবার কথা ভাবলেই আকাশে উড়তে শুরু করবে ড্রোনটি। আবার হালকা ভাবেই ‘লেফট, রাইট, বা পুশ’ চিন্তা করলেই ডানে বামে উড়বে চার রোটরের ড্রোন, এগোবে সামনের দিকে।

আরও মজার ব্যপার হচ্ছে, চালক দাঁতে দাঁত কামড়ে ধরলেই নিচে নেমে আসবে ড্রোনটি, আর চোখের পলক ফেললেই তুলবে ছবি।

ঝেজিয়াং ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা বলছেন এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে অদূর ভবিষ্যতে আকাশে উড়তে পারবেন পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগীরা। নিজের চিন্তা থেকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন ব্যক্তিগত এয়ারক্র্যাফট।

বিলুপ্তির মুখে অমেরুদণ্ডী প্রাণীজগৎ

বিলুপ্তির মুখে অমেরুদণ্ডী প্রাণীজগৎ

পরিবেশ দূষণের কারণে বিলুপ্তির হুমকিতে রয়েছে অমেরুদণ্ডী প্রাণীজগতের বড় একটি অংশ। অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের বিলুপ্তির এই আশঙ্কার কথা বেরিয়ে এসেছে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)-এর সাম্প্রতিক গবেষণায়। খবর রয়টার্স-এর।

অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের বলা হয় প্রাণীজগতের ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। এদের বড় একটি অংশ বিলুপ্ত হলে ভেঙ্গে পড়তে পারে প্রাণীজগতের ইকোসিস্টেম। আইইউসিএনের গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতি পাঁচটি অমেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে একটি রয়েছে বিলুপ্তির মুখে। এই তালিকায় রয়েছে, শামুক, মাকড়সা, জেলিফিস, চিংড়ি, কোরাল ও কেঁচো থেকে শুরু করে পরাগবাহী মৌমাছি পর্যন্ত।

এ ব্যাপারে আইইউসিএনের বেন কলিন বলেন ‘অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের বলা হয় ইকোসিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার। জীবনধারণের জন্য এই প্রাণীগুলোর ওপর নির্ভরশীল মানবজাতি। নানাভাবে মানবজাতিকে সাহায্য করে প্রাণীজগতের অমেরুদণ্ডী প্রাণীরা। পানি বিশুদ্ধ করা, বর্জ্য পদার্থ রিসাইকল করা, গাছগাছালির পরাগায়ন এমনকি মাটি উর্বর রাখতেও বড় ভুমিকা রাখে প্রাণীজগতের বিভিন্ন অমেরুদণ্ডী প্রাণী।’

আইইউসিএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবেশ দূষণ, আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং যত্রতত্র বন উজাড়। কলিন এ ব্যাপারে বলেন, অমেরুদণ্ডী প্রাণীদের আমরা এতোদিন অবহেলা করে গুরুত্বহীন ভেবে এসেছি। কিন্তু প্রাণীজগতের টিকে থাকার জন্য অমেরুদণ্ডী প্রণীদের রক্ষা করা অতি জরুরি।’

নতুন ডিজায়ার এক্স স্মার্টফোন আনছে এইচটিসি

নতুন ডিজায়ার এক্স স্মার্টফোন আনছে এইচটিসি

গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ৪.০ অপারেটিং সিস্টেম চালিত নতুন স্মার্টফোন ডিজায়ার এক্স বাজারে আনছে মোবাইল ফোন নির্মাতা এইচটিসি। নতুন স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ৪ ইঞ্চি স্ক্রিন। আইফা ২০১২-এ প্রথমবারের মতো স্মার্টফোনটি দেখায় তাইওয়ানের এই মোবাইল ফোন নির্মাতা। খবর টেকট্রির।

ফ্ল্যাগশিপ প্রোডাক্ট ‘ওয়ান এক্স’-এর ব্যর্থতার পর এবার মধ্যস্তরের বাজার ধরার জন্য এইচটিসি বানিয়েছে নতুন ডিজায়ার এক্স স্মার্টফোনটি। স্মার্টফোনটি চলবে গুগলের অ্যান্ড্রয়েড ৪.০ আইসক্রিম স্যান্ডউইচ অপারেটিং সিস্টেমে। আরো রয়েছে এইচটিসির কাস্টম সেন্স ৪.০ ইউজার ইন্টারফেস।

ডিজায়ার এক্স স্মার্টফোনটির উল্লেখযোগ্য ফিচারগুলোর মধ্যে রয়েছে ১ গিগাহার্টজের ডুয়াল কোর সিপিইউ, ৭৬৮ মেগাবাইট র‌্যাম, ৪৮০ বাই ৮০০ পিক্সেলের ৪ ইঞ্চি সুপার এলসিডি ডিসপ্লে, ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা, ৪ জিবি ইন্টারনাল মেমোরি এবং ৩২ জিবি এক্সটারনাল মেমোরি ব্যবহারের সুবিধা। ফোনটিতে আরও থাকবে ওয়াইফাই সুবিধা, ব্লুটুথ ৪.০ মাইক্রোইউএসবি ২.০ এবং ৩.৫ মিলিমিটার অডিও জ্যাক।

নতুন স্মার্টফোনটির বাজারে আসার তারিখ এবং দাম এখনও জানায়নি এইচটিসি। তবে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যেই ইউরোপ এবং এশিয়ার বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে ডিজায়ার এক্স-এর।

বদলে যাচ্ছে ইন্টারনেট আসক্তদের জিন!

বদলে যাচ্ছে ইন্টারনেট আসক্তদের জিন!

সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণার ফলাফল বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ইন্টারনেট আসক্তির মূল কারণগুলোর একটি জিন বিবর্তন। জার্মানির ইউনিভার্সিটি অফ বন-এর ডিপার্টমেন্ট অফ সাইকোলজি অ্যান্ড নিউরোসায়েন্সের বিজ্ঞানীরা এজন্য দায়ী করেছেন সিএইচআরএনএফোর (ঈঐজঘঅ৪) নামে একটি জিনকে। খবর সিনেটডটকম-এর।

ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় আরো বিস্ময়কর তথ্য আবিষ্কার করেছেন। তাদের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যেই এই জিন বিবর্তনের হার বেশি।

বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রতিবেদনের মূল লেখক ক্রিশ্চিয়ান মনটাগ এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘ইন্টারনেট আসক্তি আমাদের কল্পনাপ্রসূত নয়। বর্তমান ডেটাগুলো প্রমাণ করে দিয়েছে যে, ইন্টারনেট আসক্তির সঙ্গে জেনেটিক মিউটেশনের সম্পর্ক রয়েছে। ইন্টারনেট আসক্তি নিরাময় আরো সহজ করে তোলা সম্ভব, যদি আমরা জিন বিবর্তনের ব্যাপারটি আরো ভালোভাবে বুঝতে সক্ষম হই।’

গবেষণার জন্য ৮৪৩ জন ব্যক্তির ইন্টারভিউ নেন বিজ্ঞানীরা। এর মধ্যে ১৩২ জনকে ইন্টারনেট আসক্ত হিসেবে সনাক্ত করেন তারা। ওই ১৩২ ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনযাপনের অধিকাংশ ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল এবং দিনের বড় একটা সময় তাদের মন জুড়ে থাকে ইন্টারনেটের বিভিন্ন বিষয়।

এরপর ওই ১৩২ জনের ডিএনএ সংগ্রহ করে বিজ্ঞানীরা দেখেন, বড় ধরণের পরিবর্তন এসছে ইন্টারনেট আসক্ত ব্যক্তিদের সিএইচআরএনএফোর জিনে।