শুক্রবার, ১০ জুন, ২০১৬

দুই থেকে তিন হাজার টাকায় শুরু হোক মাশরুমের ব্যবসা

দুই থেকে তিন হাজার টাকায় শুরু হোক মাশরুমের ব্যবসা

ce5219fdd8fdb0c7ec1c7c0b2770516e1মাশরুম চাষ কিভাবে করা যায়, চাষ করার জন্য প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে কিনা,  এর পুষ্টিমান এবং সর্বোপরি এর মাধ্যমে কিভাবে বাড়তি আয় করা সম্ভব, সেই বিষয় সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
‘‘মাশরুম” ব্যাঙের ছাতার মতো এক ধরণের ছত্রাক জাতীয় গাছ। মাশরুম ও ব্যাঙের ছাতা দেখতে একই রকম হলেও এদের মাঝে অনেক পার্থক্য আছে। প্রাকৃতিক পরিবেশে জন্ম নেওয়া কোন কোন মাশরুম বিষাক্ত হয় এবং সেগুলো খাওয়া যায় না। সূর্যের আলোয় প্রাকৃতিকভাবে খুব বেশি মাশরুম জন্মাতে পারে না তাই প্রাকৃতিক উপায়ে খাবারের জন্য বেশি করে মাশরুম পাওয়া যায় না। আমাদের দেশে অনেক স্থানে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে মাশরুম চাষ করা হচ্ছে। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষকরা মাশরুম অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। আমাদের দেশের অনেক জায়গায় বিশেষ করে ঢাকা, পার্বত্য চট্টগ্রাম, মধুপুর প্রভৃতি স্থানে এখন ব্যবসায়িক ভিত্তিতে মাশরুম চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে। মাশরুম চাষ করে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বাড়তি আয় করাও সম্ভব। মাশরুম চাষ করতে আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না।
বাজার সম্ভাবনা
আমাদের দেশের বড় বড় শহরগুলোর বিভিন্ন হোটেল ও চাইনিজ হোটেলগুলোতে মাশরুমের চাহিদা আছে। তাই আপাত দৃষ্টিতে মাশরুমের বাজার মূলত শহরে গড়ে উঠেছে। এছাড়া বিদেশে এর চাহিদা রয়েছে। মাশরুম শুকিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি বিদেশে সবজি ও কাঁচামাল পাঠায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে মাশরুম বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব।
প্রয়োজনীয় মূলধন
মাশরুম চাষ করার জন্য ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। যদি ব্যক্তিগত পূঁজি না থাকে তাহলে মূলধন সংগ্রহের জন্য নিকট আত্মীয়স্বজন, ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (এনজিও) সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।
ব্যাংকঃ
সোনালী ব্যাংকঃ http://www.sonalibank.com.bd/
জনতা ব্যাংকঃ  http://www.janatabank-bd.com/
রূপালী ব্যাংকঃ http://www.rupalibank.org/rblnew/
অগ্রণী ব্যাংকঃ http://www.agranibank.org/
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকঃ www.krishibank.org.bd/
e38f43b80c4d0bad0f24a89de35b7562-19এনজিও
আশাঃ http://asa.org.bd/
গ্রামীণ ব্যাংকঃ http://www.grameen-info.org/
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
প্রশিকাঃ http://www.proshika.org/
আয়-ব্যয়
অয়েস্টার মাশরুমের পাপড়ি বেশি ছড়ানোর আগেই তুলে গোড়া থেকে সামান্য কেটে ফেলতে হবে। পলি প্রোপাইলিনের প্যাকেটে কয়েকটা ছিদ্র করে এর মধ্যে মাশরুমগুলো ভার মুখ বন্ধ করে এই প্যাকেট বাজারজাত করতে হবে। প্রতিটি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ২০০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যায়। সুতরাং ২০০টি বীজ বা স্পন থেকে প্রায় ৪০ কেজি মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি মাশরুমের দাম প্রায় ১২০ থেকে ১৫০ টাকা।
আমাদের দেশে সাধারণত খাবারের উপযোগী তিন জাতের মাশরুম চাষ হয় –
স্ট্র মাশরুম : ধানের খড়, শিমুল তুলা, ছোলার বেসন ও চাউলের কুড়া ইত্যাদি উপকরণ ব্যবহার করে স্ট্র মাশরুম চাষ করা হয়। আমাদের দেশে সাধারণত মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এর চাষ করা যায়।
ইয়ার মাশরুম: সাধারণত বর্ষাকালে প্রাকৃতিকভাবে আম গাছে ইয়ার মাশরুম পাওয়া যায়। ইয়ার মাশরুম দেখতে কালচে রঙের। ইয়ার মাশরুম সারাবছর চাষ করা গেলেও সাধারণত বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়।
অয়েস্টার মাশরুম: আমাদের দেশে এই জাতের মাশরুম চাষ সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ফলন ভালো হয়। অয়েস্টার মাশরুম খুব সহজে চাষ করা যায় এবং এর জন্য খুব অল্প জায়গার প্রয়োজন হয়।
মাশরুম উৎপাদন কৌশল
চাষের উপযোগী স্থান
মাশরুম খোলা জায়গায় চাষ করা যায় না। তাই এর জন্য আবাদী জমির প্রয়োজন হয় না। মাশরুম চাষ করার জন্য ছায়াযুক্ত জায়গায় ছন বা বাঁশের চালা দিয়ে ঘর তৈরি করতে হয়। মাটির দেওয়াল দিয়েও ঘর তৈরি করা যায়। আবার বাঁশের বেড়াও দেওয়া যায়। ঘরের ভেতর যাতে আলো ঢুকতে না পারে সেজন্য বাঁশের বেড়ায় মাটি লেপে দিতে হয়।
অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি
অয়েস্টার মাশরুম বীজ বা স্পন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে মাশরুম চাষ শুরু করা যাবে। ধাপে ধাপে মাশরুম চাষ করতে হয়।
১ম পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
মাশরুমের প্যাকেট পানিতে ৩০ মিনিটের জন্য ডুবিয়ে রাখতে হবে। ৩০ মিনিট পরে পানি থেকে মাশরুমের প্যাকেট উঠিয়ে নিতে হবে।
অতিরিক্ত পানি ঝরানোর জন্য মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে। পানি ঝরে গেলে ঘরের নির্ধারিত জায়গায় রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর তিন থেকে চারবার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
সাধারণত ৩ থেকে ৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজায়। অঙ্কুর গজানোর পর মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগে। খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে তা গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
বীজের যে জায়গা কাটা হয়েছিল তা ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। এই বীজ থেকে আবার মাশরুম গজাবে।
একটা আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার মাশরুম পাওয়া যায়। এতে মোট ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।
২য় পদ্ধতি
মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে বীজ বা স্পন সংগ্রহ করতে হবে। এক কেজি ওজনের একটি বীজের পলিথিন খুলে ভিতরের কম্পোস্ট গুঁড়ো করে নিতে হবে।
দুই কেজি পরিমাণ ধানের পরিষ্কার ও শুকনো খড় সংগ্রহ করতে হবে। খড়গুলোকে এক ইঞ্চি মাপে কেটে টুকরা করতে হবে।
পরিমাণ মতো পানি ফুটিয়ে নিতে হবে। খড়গুলো জীবাণুমুক্ত করার জন্য ফুটন্ত পানিতে খড়ের টুকরোগুলো এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে হবে।
খড়গুলো পানি থেকে তুলে চিপে পানি শূন্য করে একটি পাত্রে রাখতে হবে।
পাঁচটি পলিব্যাগ নিয়ে পলিব্যাগের ভেতরে প্রথমে কিছু খড় বিছিয়ে নিতে হবে। খড়ের উপর মাশরুম বীজের গুঁড়ো দিতে হবে। এভাবে একটি পলিব্যাগে চার স্তরে খড় আর মাশরুম বীজের গুঁড়ো বিছিয়ে দিতে হবে। শেষ স্তরে আবার খড় বিছিয়ে দিতে হবে।
খড় বিছানো শেষ হলে খুব শক্ত করে পলিব্যাগ বাঁধতে হবে। এভাবে প্রতিটি পলিব্যাগ বাঁধতে হবে।
পলিব্যাগের চার দিকে ১০-১২টি ছিদ্র করতে হবে। এরপর ব্যাগগুলোকে বীজে পরিণত হওয়ার জন্য ১৫-১৮ দিন রেখে দিতে হবে।
১৫-১৮ দিন পরে পলিব্যাগগুলো খুলে বীজের দলাগুলো বের করে নিতে হবে।
প্রতিটি বীজের দলা শিকায় করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে এবং প্রতিদিন ৪-৫ বার করে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
৩-৪ দিন পর চারদিক দিয়ে মাশরুমের অঙ্কুর গজাতে শুরু করবে। ৪-৬ দিন পর খাওয়ার উপযোগী মাশরুম গোড়া থেকে তুলে নিতে হবে।
এভাবে মাশরুম চাষে লাভ বেশি হবে। কারণ প্রতিটি পলিব্যাগ থেকে প্রায় আধা কেজি মাশরুম পাওয়া যাবে। সুতরাং পাঁচটি ব্যাগ থেকে প্রায় আড়াই কেজি মাশরুম উৎপন্ন হবে।
সাবধানতা
বীজ বা স্পনে কোনভাবেই সূর্যের আলো পড়তে দেওয়া যাবে না। সবসময় ঘরটি ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব বেশি গরম পড়লে ঘরের চারদিকে বস্তা ঝুলিয়ে ভিজিয়ে রাখতে হবে।
মাশরুম ঘর ও ঘরের বাইরের চারদিক সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অপরিচ্ছন্ন জায়গায় মাশরুম ফ্লাই নামের পোকা মাশরুমের ক্ষতি করে।
কীটনাশক ব্যবহার করা যাবে না।
মাশরুমের উপকারিতা
মাশরুমে প্রচুর প্রোটিন, খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন আছে। তাই খাদ্য হিসেবে এটা খুবই পুষ্টিকর। এর উপকারিতাসমূহ হল-
রক্তে চিনির সমতা রক্ষা করে ফলে ডায়াবেটিক রোগী এবং যারা স্থুল বা স্বাস্থ্যবান তাদের জন্য উপযুক্ত খাবার।
মাশরুম দেহের ক্ষয়পূরণ, হাড় গঠন ও দাঁত মজবুত করে।
রক্তহীনতা, বেরিবোধ, হৃদরোগ, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
খাবারের উপযোগী মাশরুম
প্রশিক্ষণ
সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় ঢাকা জেলার সাভারে অবস্থিত ‘মাশরুম চাষ কেন্দ্র’ আছে। এছাড়া বাংলাদেশের নানা স্থানে “মাশরুম চাষ কেন্দ্রের” ১৬টি শাখা আছে। মাশরুম চাষ করে ব্যবসা করার জন্য এসব মাশরুম চাষ কেন্দ্র থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিয়ে নেওয়া যাবে। এছাড়া মাশরুম চাষ সম্পর্কে বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়। এসব বই পড়ার মাধ্যমেও মাশরুম চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে। এছাড়া অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে মাশরুম চাষের বিস্তারিত জেনে নিলে চাষ করতে সুবিধা হবে এবং উন্নতমানের মাশরুম পাওয়া সম্ভব হবে।
প্রশিক্ষন প্রদানকারী সংস্থা:
ব্রাকঃ http://www.brac.net/
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরঃ www.dyd.gov.bd
বিসিকঃ http://www.bscic.gov.bd/
মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরঃ http://www.dwa.gov.bd/
মাশরুম মূল্যবান সবজি। বিদেশে এর যথেষ্ট চাহিদা আছে। মাশরুমের পুষ্টি ও ঔষধি গুণের কথা বলে সাধারণ মানুষকে মাশরুম খাওয়ার জন্য উদ্ধুদ্ধ করতে হবে। তাহলে সাধারণ বাজারেও এর চাহিদা বাড়বে। আমাদের দেশে এখনও যে খাদ্য ঘাটতি আছে, মাশরুম কিছুটা হলেও তা পূরণ করতে পারে।

আর্বজনা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত থেকে হতে পারে ব্যবসা

আর্বজনা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত থেকে হতে পারে ব্যবসা


আবর্জনা থেকে যখন ব্যবসা তখন ব্যাপারটা অবাক করার মত হতে পারে আপনার কাছে। কিন্তু বাস্তবতা বলছে এর ব্যাপক সম্ভাবনার কথা। আর এই ব্যবসার মাধ্যমে আয়ের পথ খুলতে পারেন আপনি। হতে পারেন সম্ভাবনাময় ব্যবসার এক সফল উদ্যোক্তা।
আমাদের প্রতিদিনকার উৎপাদিত বর্জ্য আমরা নানা ভাবে ফেলে দেই। এই ফেলে দেওয়া বর্জ্য আমাদের জন্য বড় একটি সম্পদ। যার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হলে বড় অংকের অর্থ আয়ের পাশাপাশি দেশের কৃষি ক্ষেত্রে ফসলের উৎপাদনে আসতে পারে বড় ধরনের সফলতা। সেই সাথে আমরা পেতে পারি দূর্গন্ধমুক্ত সুন্দর পরিবেশ।
চলুন এবার জানার করি আপনার বর্জ্য ব্যবসা কিভাবে শুরু করতে পারেন সে সম্পর্কে। আপনার এলাকায় এ ব্যবসা গড়ে তোলার জন্য প্রাথমিক ভাবে যে কাজটি করতে হবে তা হল আপনি যে সকল বাসা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করবেন তাদের সাথে যোগাযোগ করুন। প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট পরিমান অর্থের বিনিময়ে আপনি তাদের বাসা বাড়ির আবর্জনা সংগ্রহের জন্য প্রস্তাবনা দিন। এভাবে আপনি আপনার কাংখিত কাষ্টমার খুঁজে নিতে পারবেন।
প্রতিদিনকার আবর্জনা পরিবহনের জন্য এবার আপনার দরকার হবে ক্যারিং ভ্যান। চার সাইডে লোহার শিট তৈরী দিয়ে বক্স ভ্যানগুলো আপনি পনের থেকে বিশ হাজার টাকায় তৈরী করে নিতে পারবেন। ময়লা আর্বজনা গুলো পরিবহনের জন্য আপনাকে লোক নিয়োগ দিতে হবে। যারা প্রতিদিন বাসায় বাসায় গিয়ে ময়লা আর্বজনা গুলো সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট ডাষ্টবিনে ফেলবে।
সংগ্রহকৃত আবর্জনা গুলো থেকে রিসাইক্লিন আবর্জনা যেমন: প্রাষ্টিকের ব্যবহার্য ভাঙা জিনিসপত্র, টিনের বা লোহার টুকরা, কাগজের কার্টুন, সহ আরও বিভিন্ন বস্তু যা ভাঙারী হিসেবে আর্থিক মূল্য আছে সেগুলো সংগ্রহ করে সেখান থেকে বাড়তি অর্থ উপার্জন করাও সম্ভব। এছাড়াও আমাদের বাসাবাড়িতে যে সকল আর্বজনা গুলো তৈরী হয় সেগুলোর প্রায় ৮৫ শতাংশ আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করে জৈবসার উৎপাদন করা সম্ভব।
আবর্জনা প্রক্রিয়াজাত করতে চাইলে আপনার একটি নির্দিষ্ট জায়গার ব্যবস্থা  করতে হবে। যেখানে আবর্জনা গুলো স্তুপকরে বাছাই করে একটা নির্দিষ্ট উপায়ে নির্দিষ্ট সময় পরে সেখান থেকে  উৎপাদিত জৈবসার তৈরী করে বাজারজাত করতে পারবেন। আর এ প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত জৈবসার ফসলের ক্ষেতে ব্যবহার করলে তা থেকে ব্যাপক ফলন পাওয়া সম্ভব। যেখানে রাসায়নিক সার ব্যবহার করলে ফসলের জমির উর্বরতা হ্রাস পায় সেখানে এই জৈবসার জমির উর্বরতা বাড়ায়।
আর্বজনা সংগ্রহ করার মাধ্যমে আপনি যতবেশী বাসা থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করতে পারবেন ততবেশী আয়ের পরিমানও বৃদ্ধি পাবে। এখানে এককালীন ব্যয় বলতে ক্যারিং ভ্যান তৈরীর খরচ আর ঝুকি সর্বনিন্ম পর্যায়ে। প্রতি মাসে বর্জ্য পরিবহন শ্রমিকের বেতন এবং ক্যারিং ভ্যান মেরামত ব্যাতীত আর তেমন কোন বড় আকারের দৃশ্যমান খরচ নেই। একটু সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে আপনার বেকারত্ব ঘুচিয়ে সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে পারবেন।

বিজনেস প্লান তৈরী করবেন কিভাবে

বিজনেস প্লান তৈরী করবেন কিভাবে..?

BUSINESS-PLANব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হলে কার্যকরী একটি ব্যবসার প্লান করতে হবে। বলা হয় পরিকল্পনা কোন কাজের অর্ধেক। আর তাই সঠিক ও সুন্দর ভাবে প্লানিং তৈরী করা সম্ভব হলে ব্যবসায়ে সফলতা পাওয়া অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।
উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম আজ আপনাদের জন্য ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বা প্লানিং সম্পর্কে একটি সুষ্পষ্ট ধারনা দেওয়ার চেষ্টা করবে।
ব্যবসা কোন শর্টকাট ব্যবস্থা নয় যেখান থেকে রাতারাতি অনেক অর্থের মালিক হবেন। সুতরাং ব্যবসায়িক প্রোজেক্ট পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ৩ থেকে ৫ বছরের একটি উন্নয়ন পরিকল্পনা করতে হবে। আপনার ব্যবসার উদ্দেশ্য এবং বিস্তারিত বর্ননা থাকতে হবে অর্থাৎ আপনি কেন, কোন উদ্দেশ্যে, কি লক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করবেন তার বিস্তারিত জানা থাকতে হবে। সেই সাথে কেন ব্যবসায়ের উদ্দেশ্য সফল করবেন এবং কিভাবে করবেন তাও সুর্নিদিষ্ট করতে হবে।
শুরুতেই আপনি নিজের কাছে প্রশ্ন করুন আপনি কে। আপনার কার্যক্ষমতা কতটুকু? কে কে আপনার ব্যবসার আংশীদার হতে পারে? আপনি বর্তমানে কি করেন? আপনি কি সবার থেকে আলাদা? যদি আলাদা হন তাহলে কেন আপনি অন্য সবার থেকে আলাদা? খুজে বের করার চেষ্টা করুন অন্যের থেকে বাড়তি কি যোগ্যতা আছে আপনার সেই সাথে খুঁজুন সীমাবদ্ধতা।
আপনি যে ব্যবসা করবেন বলে ভাবছেন কিংবা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অন্য কারা তা বর্তমানে করেছে? যে ব্যবসায় করবেন সে ব্যবসার পরিধি বা মার্কেট সাইজ কতটুকু হবে? এই ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে আপনার জন্য কি কি সুযোগ অপেক্ষা করছে সেই সাথে আপনার জন্য কি কি হুমকি অপেক্ষা করছে তাও আপনাকে খুজে বের করতে হবে। জানতে হবে বাজারে কারা আপনার প্রতিযোগী। আপনার প্রতিযোগীদের কৌশল ও তাদের আচরন সম্পর্কেও পুর্ন ধারনা নিতে হবে।
আপনি যে পন্য বা সেবাটি নিয়ে ব্যবসায় শুরু করবেন তার সাম্ভাব্য ক্রতা চিহিৃত করার সাথে সাথে তাদের চাহিদা পর্যালোচনা করতে হবে আপনাকে। এক্ষেত্রে আপনার সার্মথ্য এবং দুর্বলতা সমূহ কি কি তা জানার চেষ্টা করুন। কারন সে অনুযায়ী আপনাকে পরিকল্পনার গতিপথ নির্ধারন করতে হবে। আপনার প্রতিযোগীদের থেকে আপনার টার্গেট মার্কেট কিভাবে গুরুত্বপূর্ণ তা জানার চেষ্টা করুন। কারন সে অনুযায়ী আপনাকে সিদ্ধান্ত গ্রহন করতে হবে।
c4bc66d7c0da4431ff562390490850c7আপনাকে সুষ্পষ্ট ভাবে ধারনা রাখতে হবে মার্কেট শেয়ার বা মার্কেটের কত অংশ আপনি দখল করবেন। মার্কেটে কি ধরনের নিয়ন্ত্রক বিদ্যমান আছে? এবং তারা কিভাবে অন্যান্যদের নিয়ন্ত্রন করছে। আপনি কি বিক্রি করবেন? অর্থাৎ আপনি যে পন্য বা সেবা বিক্রি করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি কি? সেই সাথে যে পন্য বা সেবায় আপনি বিক্রয় করবেন তর নির্দিষ্ট লভ্যংশের হার কত? আপনার মেধা সম্পত্তি কতটুকু?
এ পর্যায়ে এসে আপনার ব্যবসা সম্পর্কিত রিসার্চ এবং উন্নয়ন কার্যক্রম কি কি হবে তা সুস্পষ্ট ভাবে ব্যখ্যা করতে হবে। আপনার ব্যবসায়কে পরিচিত করার জন্য মার্কেটিং পরিকল্পনা কি? ব্যবসায়ের টার্গেট মার্কেটে অনুপ্রবেশের কৌশল কি? ক্রেতা বা টার্গেট মার্কেটে আপনার যোগাযোগ কৌশল কি? বিপনন কৌশল কি? মূল্য নির্ধারন কৌশল কি? পন্য বা সেবার বিক্রয় কৌশল কি? সেই সাথে এ্যাকশন প্লান বা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য যা যা করা দরকার তা সুনির্দিষ্ট ভাবে চিহিৃত করতে হবে।
কোম্পানী বা প্রতিষ্ঠানের কাঠামো কি হবে তার পরিকল্পনা করতে হবে আপনাকে। কর্মী সংগ্রহ কৌশল কি হবে? আপনার কর্মী বাহিনীকে দক্ষ করার কৌশল কি? নতুন কর্মীর ক্ষেত্রে যোগ্যতা উন্নয়ন পরিকল্পনা কি? আপনার পন্য তৈরীর জন্য যা যা দরকার তার কতটুকু আছে? কোথা থেকে কিভাবে সংগ্রহ হবে? প্রজেক্ট ব্যয় কত হবে? কত সময় দরকার হবে? কত আয় হবে? কি পরিমান ঝুঁকি নিতে হবে? ঝুঁকি কমানোর জন্য কি ব্যবস্থা করা করা হবে? অর্থায়ন কিভাবে হবে? ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন স্তর কিভাবে কাজ করবে? কিভাবে ম্যানেজ করবেন সবকিছু তা নির্দিষ্ট করতে হবে?
উপরের আলোচনার বিষয় সমুহ সুনির্দিষ্ট করে সংযুক্ত করে ব্যবসার প্লানিং বা পরিকল্পনা করতে পারলে ব্যবসায়ের সফলতার পথ অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে। সুন্দর একটি সাজানো গোছানো পথে হাঁটলে ব্যবসায়ের সমৃদ্ধিতো সময়ের ব্যাপার। আর তাই সুষ্ঠ পরিকল্পনা আপনাকে করতেই হবে।

মোটর গাড়ি মেরামত ব্যবসার আইডিয়া ও বিস্তারিত

মোটর গাড়ি মেরামত ব্যবসার আইডিয়া ও বিস্তারিত

ব্যবসা কোন নতুন ধারনা নয়। সৃষ্টির আদিকাল থেকে মানুষ ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। কত ধরনের ব্যবসায় তো আছে। কিন্তু ব্যবসা শুরু করার জন্য সার্মথ্য আর জ্ঞানেরও দরকার আছে। আপনাদের জন্য উদ্যোক্তার খোঁজে ডটকম বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়িক আইডিয়া ও সে সম্পর্কে বিস্তারিত প্রকাশ করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আজ আমরা আপনাদের জানাব একটি সার্ভিসিং বা মেরামত ব্যবসা সম্পর্কে।
মোটর গাড়ির সার্ভিসিং বা মেরামতের ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আমরা আজকের প্রচ্ছদটি সাজিয়েছি। মোটর গাড়ি সার্ভিসিং ব্যবসার জন্য আপনার সর্বপ্রথমে ব্যবসার স্থান নির্বাচন করতে হবে। সাধারনত শহর অঞ্চল এ ধরনের ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান। কারন অধিকাংশ ধনী মানুষেরা শহরাঞ্চলে বসবাস করে। বাসষ্টান্ড বা পেট্রোল পাম্পের আশপাশ এ ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান। এছাড়াও যেকোন জনবহুল গাড়ি পার্কিং এলাকা কিংবা হাইওয়ে রাস্তার পাশেও এ ব্যবসার জায়গা নির্ধারন করা যেতে পারে।
মোটর গাড়ি বলতে আপনি মোটর সাইকেল, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, মিনিবাস, বাস, ট্রাক ইত্যাদি গাড়ি মেরামতের জন্য নির্বাচন করতে পারেন। এ জাতীয় গাড়ির জন্য ইঞ্জিন ও বডির যাবতীয় কাজ সম্পর্কে আপনার জানা থাকলে সবচেয়ে ভাল করতে পারবেন। আপনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হলে আপনার জন্য এ ব্যবসায়ের সম্ভাবনাকে সর্বোচ্চ কাজে লাগানোর সুযোগ পাবেন। আবার আপনি গাড়ি মেরামত না করতে পারলেও কাজ জানা লোক নিয়োগ করে এ ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারেন।
img_wholesale_epp4মোটরগাড়ি মেরামতের ব্যবসায়ের জন্য আপনাকে প্রাথমিক ভাবে ব্যবসায়ের ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে। আপনার প্রতিষ্ঠানের সুন্দর একটি নাম দিয়ে ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করার পর দোকান বা জায়গা ভাড়া নিতে হবে। অবশ্যই ভাড়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট চুক্তিপত্র করে নিতে ভুল করবেন না। দোকানের সামনে খোলা জায়গা পেলে ভাল হয়। তাতে করে আপনি সেখানে গাড়ি রেখে কাজ করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন।
দোকান ভাড়া নেওয়া হয়ে গেলে আপনি এবার গাড়ি মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনে নিন। আপনার বিনিয়োগের একটি বড় অংশ ব্যয় হবে এ যন্ত্রপাতি ক্রয়ের ক্ষেত্রে। এবার কাজের জন্য লোকবল নিয়োগ দিন। এক্ষেত্রে অবশ্যই অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিন। কারন ব্যবসায়ের শুরুতে কম অভিজ্ঞ কিংবা অনভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিলে আপনাকে সমস্যায় পড়তে হতে পারে। আপনি কাজ জানলেও আপনার পাশাপাশি অভিজ্ঞ লোক নিয়োগ দিবেন কারনে আপনি কোন কারনে সমস্যায় পড়লে যাতে সমাধান পাওয়া সম্ভব হয়।
সাধারনত ইঞ্জিনের ত্রুটি কিংবা বডি বা ইঞ্জিনের বাইরের আবরনের ত্রুটি ও রংয়ের কাজ মোটর গাড়ির মালিকেরা করিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় আপনাকে কাজের জন্য গাড়ির মালিকদের জানানোর প্রয়োজন পড়বে। নতুন অবস্থায় ভাল সেবা দিতে পারলে স্থায়ী সেবা গ্রাহক পেয়ে যাবেন। আপনার প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ও সেবা সম্পর্কে প্রচার অব্যাহত রাখুন। বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মালিক যাদের একাধিক গাড়ি আছে তাদেরকে আপনার গ্রাহকে পরিনত করার জন্য মার্কেটিং কৌশল গ্রহন করুন এবং সুসম্পর্ক তৈরী করুন। আপনার দোকানের বাইরেও সেবা প্রদান করার জন্য পরিকল্পনা করুন। প্রয়োজনে সেবা গ্রাহীতার বাড়িতে অথবা অফিসে উপস্থিত হয়ে সেবা প্রদান করুন।
মোটর গাড়ি মেরামত ব্যবসায় প্রাথমিক ভাবে দুই থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে শুরু করতে পারবেন। খুবই সল্প পরিসরে শুরু করতে চাইলে এক লক্ষ বা তার কম পরিমান টাকায়ও শুরু করতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে আপনাকে মেরামতের কাজ জানতে হবে। এ ব্যবসায়ে প্রতিযোগীতা মোকাবেলা করার জন্য আপনাকে কৌশলী হতে হবে। গ্রাহকের সাথে সুসম্পর্ক ও সর্বোচ্চ মানের সেবা প্রদান নিশ্চিত করে ব্যবসায়ের সফলতা অর্জন করতে পারবেন খুব সহজেই।
একটু হিসেব করে চলতে পারলে এ ব্যবসায় থেকে প্রতি মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় করতে পারবেন। আর ব্যবসার সাথে বিশ্বাস ও সততার যোগসুত্র স্থাপন করতে পারলে আপনার সুনাম ও বৃদ্ধি পেতে থাকবে দিন দিন। সল্প পরিমান ঝুঁকি মোকাবেলা করে এ ব্যবসায় পরিচালনা করতে পারবেন। সেই সাথে পরবর্তীতে ব্যবসার পরিধি বাড়িয়ে খুচরা যন্ত্রাংশ বিক্রয় করে আয় বাড়াতে পারবেন। লেগে থেকে পরিশ্রম করলে নিজে সাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি আরও অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবেন

আপনার ব্যবসার পরিকল্পনা কিভাবে তৈরি করবেন

businessplan আপনার ব্যবসার পরিকল্পনা কিভাবে তৈরি করবেন ?


ব্যবসায় পরিকল্পনার অন্যতম প্রথম পদেক্ষেপ হচ্ছে আপনার অভিষ্ট বাজার নির্ধারণ এবং কেন ক্রেতা আপনার পণ্য ক্রয় করবে তা নির্ধারন করা।
উদাহরনস্বরুপ, যে বাজারে আপনি আপনার পণ্য বা সেবা বিক্রি করবেন তা আপনার জন্য সর্বোত্তম কিনা? আপনার ব্যবসার সুযোগ-সুবিধাসমূহ এবং রীতিনীতিসমূহ স্বচ্ছ কিনা এবং সেগুলো কি ক্রেতা বা ভোক্তাদের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যর্পূন? যদি আপনি এই প্রশ্নগুলোর একটির ব্যাপারেও সন্দিহান থাকেন তবে একধাপ পিছিয়ে গিয়ে আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার কাঠামো পুর্নবিবেচনা করুন।
নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো আপনার ব্যবসায়কে যেসব অফারসমূহ প্রদান করতে হবে তা বিশ্লেষন এবং এর জন্য সঠিক ও কাংঙ্খিত বাজার নির্ধারণ এবং নিজস্ব যথাযোগ্য মর্যাদা তৈরিতে সাহায্য করতে পারে।
নির্দিষ্ট করুন যা আপনাকে প্রদান করতে হবে
নিজেকে প্রশ্ন করুনঃ মূল পণ্য বা সেবার বাইরে আপনি সত্যিকার অর্থে কি বিক্রি করছেন? এই উদাহরনটি বিবেচনা করুনঃ আপনার শহরে বহু সংখ্যক রেস্তোরা রয়েছে যারা সবাই মৌলিক পণ্য- খাবার বিক্রি করছে। কিন্তু এরা প্রত্যেকেই ভিন্ন চাহিদা তৈরি এবং ভিন্ন শ্রেনীর ক্রেতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য অর্জন করছে।
একটি হতে পারে ফাস্টফুড রেস্তোরা, সম্ভবতো অন্যটি সাদামাটা ইটালিয়ান কিচেনে পিৎজা বিক্রি করা রেস্তোরা এবং অন্য আর একটি হতে পারে সামুদ্রিক খাবারের বিশেষায়িত রেস্তোরা যা উড-গ্রিলড মেন্যুর জন্য বিখ্যাত।
এই সকল রেস্তোরাগুলোই খাবার বিক্রি করে, কিন্তু তারা ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা সম্পন্ন ক্রেতাদের কাছে তাদের ভিন্ন ভিন্ন খাবার (ক্রেতাদের নিজস্ব চাহিদানুযায়ী) বিক্রি করছে। প্রকৃতপক্ষে তারা যা বিক্রি করছে তা হলো পণ্য, মূল্য, পরিবেশ এবং ব্র্যান্ড অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ।
যখন একটি ব্যবসায় শুরু করছেন, নিশ্চিত হয়ে নিন যে কি আপনার ব্যবসায়কে অদ্বিতীয় কর তুলবে? আপনার পণ্য বা সেবাকে পরিপূর্নতা দিতে কি প্রয়োজন? কি কি প্রক্রিয়া এবং পার্থক্য সৃষ্টিকারী উপাদান আপনার ব্যবসায়কে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে আলাদাভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে সাহায্য করবে?
সকল ব্যবসায়ের সবজান্তা হবেন না- কৌশল শিখুন
আপনি কি বিক্রি করছেন তা স্বচ্ছভাবে নির্ধারন করা খুব গুরুত্বপূর্ন। আপনি সকল ব্যবসায়ের সবজান্তা হতে চাইবেন না কারন এতে ব্যবসায় উন্নয়নের উপর একটি খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। একটি ক্ষুদ্রতম ব্যবসায় হিসেবে আপনার পণ্য বা সেবাকে নিয়ন্ত্রনসাধ্য বাজারে যথাযথভাবে বিনস্ত্য করা প্রায়শই একটি সর্বোত্তম কৌশল বা নীতি হতে পারে। ছোট ছোট বিভাজন/অপারেশন পরবর্তীতে বিশেষায়িত পন্য বা সেবা অফার করতে পারে যা নির্দিষ্ট শ্রেনীর সম্ভাব্য ক্রেতাদের নিকট আকর্ষণীয় হবে।
আপনার ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করুন
আপনার ব্যবসার জন্য যথাযোগ্য স্থান নির্বাচন করা ব্যবসায়ের সফলতার জন্য অত্যাবশকীয়। প্রায়শই ব্যবসার মালিকরা তাদের নিজস্ব ব্যবসায়িক জ্ঞানের উপর ভিত্তি করে স্হান নির্বাচন করতে পারেন। কিন্তু গুরুত্বপূর্ন ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে বাজার পর্যালোচনা করে স্থান নির্বাচন করা হলে তা আরো বেশি ফলপ্রসু হতে পারে। আর এতে গুরুত্বপূর্ন ক্রেতাদের অজানা প্রয়োজনগুলো উন্মোচিত হয়। আপনার গবেষনা প্রক্রিয়াতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো চিহ্নিত করুনঃ
  • কোন কোন এলাকায় আপনার প্রতিযোগীরা ইতিমধ্যে সুপ্রতিষ্ঠিত
  • কোন এলাকাসমূহ আপনার প্রতিযোগীদের দ্বারা অবহেলিত
  • আপনার ব্যবসার জন্য সম্ভাব্য সুযোগ সুবিধাসমূহ
কোম্পানীর বর্ণনা
ব্যবসায় পরিকল্পনার এই অধ্যায়টি আপনার ব্যবসায়ের সকল উপাদানগুলোর উপর একটি উচ্চ পর্যায়ের পুনর্বিবেচনার সুযোগ প্রদান করবে। ইহা একটি বর্ধিত এলিভেটর পিচ এর সমগোত্রীয় যা পাঠকদের এবং সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদেরকে দ্রুত তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য এবং এর অনন্য বিবৃতি বুঝতে সাহায্য করতে পারে।
আপনার কোম্পানীর বর্ণনায় যা অন্তভুক্ত করতে হবে
  • আপনার ব্যবসায়ের প্রকৃতি বর্ণনা করুন এবং বাজারের যেসকল চাহিদাসমূহ মেটানোর চেষ্টা করছেন তার একটি তালিকা তৈরি করুন।
  • ব্যাখা করুন কিভাবে আপনার পণ্য বা সেবা এসব চাহিদাসমূহ মেটাবে।
  • আপনার কোম্পানী যেসকল নির্দিষ্ট ভোক্তা, প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবসায়কে সেবা প্রদান করছে এবং করবে তাদের একটি তালিকা তৈরি করুন।
  • প্রতিযোগিতামূলক সুবিধাসমূহ বর্ণনা করুন যা আপনার প্রতিষ্ঠানকে সাফল্যমন্ডিত করবে বলে আপনি বিশ্বাস করেন। যেমন- আপনার অবস্থান, অভিজ্ঞ কর্মিবৃন্দ, দক্ষ কার্যবিধি অথবা সামর্থ্য যা আপনার ক্রেতাদের কাছে আপনার মূল্যায়ন এনে দেবে।
বাজার বিশ্লেষন
আপনার ব্যবসায়ের পরিকল্পনায় বাজার বিশ্লেষন অধ্যায়টি আপনার যেকোনো গবেষনালব্ধ বিষয় এবং সিদ্ধান্তের পাশাপাশি আপনার শিল্প এবং বাজার সংক্রান্ত জ্ঞান বৃদ্ধি করবে।
আপনার বাজার বিশ্লেষনে কি বিষয়সমূহ সংযুক্ত করতে হবে
শিল্পেরবর্ণনা এবং আউটলুক- বতর্মান আয়তন এবং ঐতিহাসিক বৃদ্ধির হার এর পাশাপাশি গতিধারা এবং বৈশিষ্ট্যসহ আপনার শিল্পকে বর্ণনা করুন। যেমন- জীবনচক্রের স্তর, পরিকল্পিত উৎপাদনহার ইত্যাদি। পরবর্তীতে, আপনার শিল্পের গুরুত্বর্পূন ক্রেতাদের তালিকা তৈরি করুন।
আপনার ব্যবসায়ের অভিষ্ট বাজার সর্ম্পকে তথ্য- আপনার ব্যবসায়ের অভিষ্ট বাজারকে একটি নিয়ন্ত্রনসাধ্য আকারে সংকুচিত করুন। অনেক ব্যবসায়-ই অসংখ্য অভিষ্ট বাজারে আবেদন তৈরি করতে গিযে ভুল করে। গবেষনা করুন এবং বাজার সম্পর্কে নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ সংযুক্ত করুন।
পার্থক্যসৃষ্টিকারী বৈশিষ্ট্যসমূহ- আপনার সম্ভাব্য ক্রেতাদের জরুরী চাহিদসমূহ কি? সেগুলো কি পূরণ করা যাচ্ছে? ঐ শ্রেনীর সংখ্যাতত্ত্বগুলো কি এবং তারা কোথায় বাস করে? আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনো ঋতুভিত্তিক অথবা চক্রাকার ক্রয়ের প্রবনতা সেখানে রয়েছে কিনা?
প্রাথমিক অভিষ্ট বাজারের আয়তন- আপনার বাজারের আয়তনের ব্যাপারে একটু বিস্তারিত বলতে গেলে যা বুঝায়, আপনার শিল্প থেকে বাজার বার্ষিক কি পরিমাণ পন্য বা সেবা ক্রয় করে থাকে তার কি তথ্য আপনি অর্ন্তভুক্ত করতে পেরেছেন? এই শ্রেনীর জন্য ভবিষৎ বাজার প্রবৃদ্ধি কি হবে?
বাজারের কতটুকু অংশ আপনি অর্জন করতে পারবেন?- নির্দিষ্ট ভৌগলিক এলাকার মধ্যে বাজারের শতকরা কতটুকু অংশ এবং ক্রেতার সংখ্যা আপনি অর্জন করতে পারবেন বলে আশা রাখেন? আপনার গণনার পক্ষে যুক্তি প্রর্দশন করুন।
মূল্য নির্ধারণ এবং মোট প্রান্তিক লক্ষসমূহ- মূল্য নির্ধারনী কাঠামো, মোট প্রান্তিক স্তর এবং মূল্য হ্রাসের পরিকল্পনা যা আপনি ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা নির্দিষ্ট করুন।
যখন আপনাকে কোনো বাজার এর উপর পরীক্ষা বা গবেষনা সম্পন্ন করতে হবে এবং তথ্য সংযুক্ত করতে হবে তখন আপনি কেবল মাত্র এর ফলাফলের উপর গুরুত্ব দিবেন। এক্ষেত্রে অন্য সব বিস্তারিত বর্নণাগুলো পরিশিষ্ট অংশে সংযুক্ত করা উচিৎ।
প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষণ- আপনার প্রতিযোগিতামূলক বিশ্লেষন আপনার প্রতিযোগিতাকে প্রোডাক্ট লাইন অথবা সেবা এবং বাজার বিভাজনের মাধ্যমে চিহ্নিত করা উচিৎ। প্রতিযোগিতামূলক চিত্রের নিন্মোক্ত বৈশিষ্টসমূহ নিরুপন করুনঃ
  • বাজার বিভাজন
  • সবলতা এবং দূর্বলতা
  • আপনার প্রতিযোগীর তুলনায় আপনার অভিষ্ট বাজার কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ?
  • বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনো বাধা আছে কি যা আপনাকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে?
  • বাজারে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনার “উইন্ডো অব অপরচ্যুনিটি” কি?
  • সেখানে কি কোনো পরোক্ষ বা দ্বিতীয় কোনো প্রতিযোগী রয়েছে যা আপনার সাফল্যকে প্রভাবিত করতে পারে?
  • বাজারে কি ধরনের বাধা রয়েছে (যেমন- পরিবর্তনশীল প্রযুক্তি, উচ্চ বিনিয়োগ ব্যয়, মানসম্মত কর্মীর অভাব)?
আইনগত সীমাবদ্ধতাসমূহ- কোনো ক্রেতার বা সরকারী আইনগত শর্ত যা আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করছে এবং কিভাবে আপনি তাতে সম্মত হবেন তা অর্ন্তভুক্ত করুন। এছাড়াও আপনার ব্যবসায়ের উপর যেকোনো ব্যবহারযোগ্য এবং সম্মত্তি প্রক্রিয়ায় মূল্য প্রভাব উল্লেখ করুন।
সংগঠন এবং ব্যবস্থাপনা
সংগঠন এবং ব্যবস্থাপনার এই অংশে অন্তর্ভুক্ত করতে হবেঃ আপনার কোম্পানীর সাংগঠনিক কাঠামো, কোম্পানীর মালিকানার বিস্তারিত বিবরন, ব্যবস্থাপনা দলের সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত এবং পরিচালকমন্ডলীদের যোগ্যতার বিবরন।
এছাড়াও আপনার ব্যবসায়ে কে কি করবে? তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড কি এবং কেন আপনি তাদেরকে আপনার ব্যবসায়ে বোর্ডসদস্য হিসেবে অথবা চাকুরিজীবি হিসেবে নিয়ে এসেছেন? তাদের দায়িত্বসমূহ কি? দু-একজনের কাছে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়া অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে কিন্তু যে ব্যক্তি আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনা পড়ছে সে জানতেই চাইতে পারে কে দায়িত্বরত আছে?
সুতরাং তাদেরকে বলুন। প্রত্যেক বিভাগের বর্ননা এবং তাদের কার্যাবলীর বিস্তারিত বর্ননা দিন।
এই বিভাগে আপনার পরিচালনা পর্ষদে কারা আছেন (যদি আপনার কোনো উপদেষ্টা পর্ষদ থাকে) এবং তাদেরকে আপনি এখানে রাখার ব্যাপারে কেন আগ্রহী তা অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। কি ধরনের বেতন কাঠামো এবং অন্যান্য সুবিধাদি আপনার কমকর্তা এবং কর্মচারীদের জন্য রেখেছেন? কি ধরনের উৎসাহমূলক ব্যবস্থা রেখেছেন? পদোন্নতিরপদ্ধতি কি হবে? আপনার পাঠকগনকে পুনঃনিশ্চিত করুন যে আপনার স্টাফরা কোম্পানীর জন্য তাদের পদবী থেকেও অনেক বেশী মূল্যবান।
সাংগঠনিক কাঠামো
সাংগঠনিক চার্ট এর সাথে বিস্তারিত বর্ণনা করা কোম্পানীর কাঠামোগত চিত্র তুলে ধরার একটি সহজ অথচ কার্যকরী পদ্ধতি। এটা প্রমাণ করবে যে, কোন কিছু আপনি সুযোগের অপেক্ষায় ফেলে রাখেননি, আপনার কোম্পানীতে কে কি করবে এবং কে সকল কাজকর্মের ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তি হিসেবে কর্মরত থাকবেন সেটা আপনি সঠিকভবেই ঠিক করেছেন। কোন কিছুতেই ফাকফোকর থাকবেনা এবং কোনো কিছুই তিন বা চার বার করা হবেনা। এটা একজন সম্ভাব্য উদ্যোক্তা অথবা চাকুরীজীবির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন।
মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য
এ অধ্যায়ে আইনি কাঠামোর সাথে সাথে আপনার ব্যবসায়ের উত্তরসূরী মালিকানার তথ্যও সংযুক্ত করা উচিৎ। আপনি কি আপনার ব্যবসা নিগমবদ্ধ/সমসংস্থাভুক্ত করিয়াছেন? যদি করে থাকেন, তবে এটা কি সি অথবা এস করপোরেশন? অথবা সম্ভবতো আপনি কারো সাথে অংশীদারি ব্যবসায় গঠন করেছেন। যদি তাই হয়, এটা কি সাধারন অথবা লিমিটেড অংশীদারি ব্যবসায়? অথবা হয়তো আপনিই এর একমাত্র সত্ত্বাধিকারী।
নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ন মালিকানা সংক্রান্ত তথ্যগুলো আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার সাথে অর্ন্তুভুক্ত করা উচিৎঃ
  • মালিকদের নাম
  • শতকরা মালিকানার পরিমাণ
  • কোম্পানীর সাথে সম্পৃক্ততার সীমারেখা
  • মালিকানার ধরন (সাধারন স্টক, প্রিফারেড স্টক, সাধারন অংশীদার, সীমাবদ্ধ অংশীদার)
  • অপরিশোধিত সমতুল্য ইক্যুইটি (অর্থাৎ, অপশনস, ওয়ারেন্টস, পরিবর্তনীয় ঋণ)
  • সাধারন স্টক (অর্থাৎ অনুমোদিত অথবা জারিকৃত/ইস্যুকৃত)
  • ব্যবস্থাপনার প্রোফাইল
  • বিশেষজ্ঞগন একমত যে প্রতিষ্ঠিত একটি কোম্পানীর সফলতার অন্যতম একটি শক্তিশালী উপাদান হলো সক্ষমতা এবং ঐ কোম্পানীর মালিক অথবা ব্যবস্থাপনা দলের ট্রেক রেকর্ড বা কর্মপন্থা, সুতরাং আপনার পাঠকদের আপনার কোম্পানীর গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তি এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সর্ম্পকে জানতে দিন। এবং এই গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত তথ্যসংবলিত জীবনবৃত্তান্ত আপনার পাঠকদের নিকট সরবরাহ করুনঃ
  • নাম
  • পদমর্যাদা (প্রাথমিক দায়িত্বসমূহসহ পদমর্যাদার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা অর্ন্তভুক্ত করুন)
  • প্রাথমিক কর্তৃত্ব এবং দায়িত্বসমূহ
  • শিক্ষাগত যোগ্যতা
  • অনন্য অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতাসমূহ
  • পূববর্তী চাকুরির বর্ণনা
  • বিশেষ দক্ষতাসমূহ
  • পূর্ব কর্মপন্থার ইতিবৃত্ত
  • শিল্প স্বীকৃতি
  • সামাজিক সম্পৃক্ততা
  • কোম্পানীতে চাকুরির সময়কাল
  • বেতন কাঠামো এবং স্তর (নিশ্চিত হয়ে নিন এগুলো যেন অবশ্যই খুব কম বা বেশি না হয়)
  • নিশ্চিত হউন যে অর্জনগুলো পরিমাপ করা হয়েছে (যেমন- দশজন সদস্য বিশিষ্ট একটি বিক্রয় দল গঠন করা হয়েছে, পনের সদস্য বিশিষ্ট একটি বিভাগ গঠন করা হয়েছে, প্রথম ৬ মাসের মধ্যে ১৫% আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, প্রত্যেক বছরে ২টি করে খুচরা বিক্রয়কেন্দ্র বেড়েছে, কাস্টমার সার্ভিসের উন্নয়ন হয়েছে এবং এতে কাস্টমার সংখ্যা ৬০% থেকে ৯০% হারে বেড়েছে)। আপনার আশেপাশের লোকজন কিভাবে আপনার নিজের দক্ষতার প্রশংসা করছে তাও তুলে ধরুন। আর যদি আপনি মাত্র শুরু করে থাকেন, তবে প্রত্যেকের অসাধারন অভিজ্ঞতা কিভাবে আপনার ব্যবসার সাফল্যের ক্ষেত্রে অবদান রাখবে তা তুলে ধরুন।
পরিচালক মন্ডলীদের যোগ্যতা
একটি অবৈতনিক উপদেষ্টামন্ডলীর প্রধান সুবিধা হলো এটা কোম্পানীর জন্য যে বিশেষজ্ঞ মতামত দিতে পারে তা আপনার কোম্পানী অন্য কোথা থেকে সরবরাহ করতে পারবেনা। একটি সুপরিচিত, সফল ব্যবসায়ের মালিকগন বা ব্যবস্থাপকগন এর তালিকা আপনার কোম্পানীর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং ব্যবস্থাপনা দক্ষতার উপলদ্ধিকে বৃদ্ধি করতে সুদূর প্রসারী ফলাফল এনে দিতে পারে।
আপনার যদি পরিচালনা পর্ষদ থাকে, তবে আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার রুপরেখা উন্নয়নের সময় নিশ্চিতভাবে নিম্নোক্ত তথ্যসমূহ সংগ্রহ করে নিন।
  • নামসমূহ
  • পরিচালনা পর্ষদে অবস্থান
  • কোম্পানীর সাথে সম্পৃক্ততার সীমারেখা
  • ব্যাকগ্রাউন্ড/ইতিবৃত্ত
  • কোম্পানীর সফলতার ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক এবং ভবিষতব্য অবদান
সেবা বা পন্য সমূহ
আপনার ব্যবসায় পরিকল্পনার সাংগঠনিক এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ক অধ্যায়ের সমাপ্তির পর পরবর্তী ধাপ হলো বিদ্যমান ও সম্ভাব্য ক্রেতাদের প্রতি সুবিধাসমূহ গুরুত্বারোপ করে কোথায় আপনার পন্য অথবা সেবা’র বর্ণনা করবেন তা নির্ধারন করা। এক্ষেত্রে কেন আপনার পণ্যটি অভিষ্ট ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ করবে তার উপর গুরুত্বারোপ করুন।
আপনার পণ্য বা সেবা’র এই অধ্যায়ে যা অর্ন্তভুক্ত করতে হবে
আপনার পণ্য বা সেবার বর্ণনা
আপনার পণ্য বা সেবার সুনির্দিষ্ট সুবিধাসমূহ ক্রেতাদের চাহিদার আলোকে সংযুক্ত করুন। ক্রেতাদের চাহিদা পূরনের জন্য আপনার পণ্য বা সেবার সক্ষমতা, যেকোনো অতিরিক্ত সুবিধা এবং পণ্যের বর্তমান উন্নয়নের ধারা (যেমন- ধারনা, মূলরুপ) ইত্যাদি বিষয়গুলো আপনার বর্ণনা করা উচিৎ।
আপনার পণ্যের জীবনচক্রের বা উৎপাদন প্রক্রিয়ার বিস্তারিত বর্ণনা
আপনার পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া কোথায় হচ্ছে এর পাশাপাশি যেসব উপাদান এই উৎপাদন প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে এই তথ্যসমূহ নিশ্চিতভবে অর্ন্তভুক্ত করুন।
সুনাম
যদি আপনার বিদ্যমান, অমিমাংসিত অথবা কোনো প্রত্যাশিত কপিরাইট অথবা সত্ত্বাধিকার থেকে থাকে তাহলে তাদের একটি তালিকা তৈরি করুন। এছাড়াও পণ্যের যে কোনো একটি প্রধান দিক যা বাণিজ্যিক গোপণীয়তা হিসেবে স্বীকৃত তা প্রকাশ করুন। সবশেষে, বিদ্যমান আইন চুক্তি সমূহের সাথে যে কোনো তথ্য অর্ন্তভুক্ত করুন যেমন- গোপণীয়তা চুক্তি অথবা অপ্রতিদ্বন্দ্বিতা চুক্তি।
গবেষনা এবং উন্নয়নমূলক কার্যাবলী (আর এন্ড ডি)
কোনো গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কার্যাদি যাতে আপনি অর্ন্তভুক্ত আছেন কিংবা ভবিষৎে অর্ন্তভুক্ত থাকার পরিকল্পনা করছেন তা আলোকপাত করুন। ভবিষৎ “আর এন্ড ডি” কার্যাবলী থেকে কতটুকু ফলাফল আপনি আশা করেন? শুধুমাত্র আপনার নিজের ব্যবসার “আর এন্ড ডি” সামর্থ্য নিয়েই বিশ্লেষন নয়, আপনার শিল্পের অন্যান্য সবার “আর এন্ড ডি” সামর্থ্য বিশ্লেষনও নিশ্চিত করুন।
আপনার বাজার বিশ্লেষন
একটি সফল ব্যবসায় পরিচালনা করার জন্য আপনাকে আপনার ক্রেতা, প্রতিযোগী এবং শিল্প সর্ম্পকে জানতে হবে। বাজার গবেষনা হচ্ছে এমন একটি পদ্ধতি যা আপনাকে বাজারে কোন পণ্য বা সেবাগুলো চাহিদাপূর্ণ এবং কিভাবে পণ্য বা সেবাকে প্রতিযোগিতামূলক করা যায় তা বিশ্লেষন করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বাজার গবেষনা আপনাকে মূল্যবান অর্ন্তদৃষ্টি সরবরাহ করে সাহায্য করতে পারেঃ
  • ব্যবসায়ের ঝুকি কমাতে
  • আপনার শিল্পের চলমান এবং আসন্ন সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করতে
  • বিক্রয় সুযোগগুলো চিহ্নিত করতে
কিভাবে বাজার গবেষনা পরিচালনা করবেন
আপনার ব্যবসায় শুরু করার পূর্বে নিন্মোক্ত পদক্ষেপগুলোর মাধ্যমে বাজার গবেষণার মৌলিক বিষয়গুলো বুঝুন।
১. বাজার এবং শিল্পের সরকারী উৎসের তথ্য চিহ্নিত করা
সরকার ব্যবসা, শিল্প এবং অর্থনৈতিক অবস্থা সর্ম্পকে একটি তথ্যভান্ডার সরবরাহ করে থাকে যা বাজার গবেষণায় সহায়ক হতে পারে। এই উৎসগুলো আপনাকে ক্রেতা এবং প্রতিযোগীদের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ সব তথ্য সরবরাহ করেঃ
  • আর্থিক সূচক
  • চাকরির পরিসংখ্যান
  • আয় এবং উপার্জন
২. বিশ্লেষনের অতিরিক্ত উৎস খুজে বের করা
বাণিজ্যিক দল, ব্যবসায়িক ম্যাগাজিন, শিক্ষা প্রথিষ্ঠান এবং অন্যান্য তৃতীয় পক্ষসমূহ ব্যবসায়িক গতিধার সর্ম্পকে তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষন এবং গবেষণা করে থাকে। আপনার অবস্থান এবং শিল্প সর্ম্পকে তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ইন্টারনেট এবং তথ্যপুঞ্জ ব্যবহার করুন।
৩. আন্তজার্তিক বাজারকে বুঝতে হবে
আজকের অর্থনীতি হচ্ছে একটি বৈশ্বিক বাজার। সুতরাং আন্তর্জাতিক পরিস্থিতিসমূহ বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা আপনার ব্যবসায়কে প্রভাবিত করবে।