বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

মানুষের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছ

মানুষের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছ

মানুষের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছ!
যেন জাদুমন্ত্র জানে আমাদের ধানখেতের আলে, খালেবিলে, পুকুরে, নদীতে থাকা ম্যাজিশিয়ান এই মাছটি। অনেকে চিনেন আবার অনেকে নামও জানেন না মাছটির। এই মাছটির নাম জেব্রা ফিশ, যা বাংলায় অঞ্জু মাছ বলে পরিচিত। এর শক্তি সম্পর্কে জানলে আপনি রীতিমতো অবাক হবেন। মূলত গ্রাম বাংলা আর উত্তর-পূর্ব ভারতের নদী, পুকুর, খালবিলে এই জেব্রা ফিশটি পাওয়া যায়। 

হাতের আঙুলের আকারের ও গায়ে ডোরাকাটা দাগের এই মাছটি ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পরেও মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, যকৃত, অগ্ন্যাশয়, মেরুদণ্ডসহ তার শরীরের প্রায় সবকটি অঙ্গকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারে, যা মানুষ কিংবা কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণীও পারে না।

ভারতের পুনের আগরকর রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বিভাগের বিজ্ঞানী চিন্ময় পাত্রের তত্ত্বাবধানে আমাদের দুর্বল হয়ে পড়া হৃদযন্ত্রকে ফের জাগিয়ে তোলার এই সঞ্জীবনী মন্ত্রটি খুঁজে বের করেছেন দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও তার সহযোগীরা। দেবাঞ্জন এখন ফ্রাঙ্কফুর্টে গোথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর কার্ডিওভাসকুলার রিজেনারেশনের গবেষক।

চিন্ময় ও দেবাঞ্জনসহ ১০ জনের গবেষকদল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্বে এই প্রথম দেখালেন, একটি বিশেষ জিন কীভাবে জেব্রা ফিশের ক্ষতবিক্ষত হৃদযন্ত্রকে (‘মায়োকার্ডিয়াল ইনজুরি’) পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে সাহায্য করে। জিনটির নাম- ‘কানেকটিভ টিস্যু গ্রোথ ফ্যাক্টর (সিটিজিএফ)’। আরও একটি নাম রয়েছে জিনটির, তাহলো ‘সেলুলার কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফ্যাক্টর ২-এ’।

এই গবেষণাতেই প্রথম বোঝা গেল কেন হার্ট অ্যাটাকের পর আমরা আর হৃদযন্ত্রকে আগের অবস্থায় ফিরে পাই না এবং তৃতীয়বার হার্ট অ্যাটাকের পর অনিবার্যই হয়ে ওঠে আমাদের মৃত্যু। আর কেনই বা জেব্রা ফিশের হৃদযন্ত্র বার বার ক্ষতবিক্ষত হয়েও পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে প্রায় নতুন হৃদযন্ত্রের মতোই?

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ডেভেলপমেন্ট’-এ। মূল গবেষক দেবাঞ্জন কাজ করেছেন পুনের ‘আগরকর রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এআরআই)’-এর ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক চিন্ময় পাত্রের তত্ত্বাবধানে। সহযোগিতা করেছে জার্মানির ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর হার্ট অ্যান্ড লাং রিসার্চ’ এবং আমেরিকার ডারহ্যামের ‘ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়’-এর মেডিক্যাল সেন্টারও।

গবেষণায় কেন বেছে নেওয়া হলো জেব্রা ফিশ?

সাধারণত ২ থেকে ৩ বছর জেব্রা ফিশ বেঁচে থাকে। তাই ৩ মাস বয়স হয়ে গেলেই এই মাছ প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে। গবেষকরা কাজটা করেছেন অন্তত ৬ মাস বয়সি জেব্রা ফিশ নিয়ে। সেগুলো ছিল প্রাপ্তবয়স্ক জেব্রা ফিশ। হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ও আশঙ্কা যেহেতু শিশুদের চেয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি, প্রবীণদের ক্ষেত্রে আরও বেশি, গবেষকরা তাই কাজটা করেছেন প্রাপ্তবয়স্ক জেব্রা ফিশ নিয়ে।

জেব্রা ফিশ নিয়ে কাজ করার একটা সুবিধা হলো, জন্মের পর ১০-১৫ দিন পর্যন্ত বাইরে থেকেই তাদের হৃদযন্ত্র, যকৃত, অগ্ন্যাশয়সহ শরীরের সবকটি অঙ্গের বিকশিত হয়ে ওঠা আর তাদের কাজকর্ম চাক্ষুষ করা যায়। কীভাবে হৃদযন্ত্রের ভাল্ব তৈরি হচ্ছে, তা-ও দেখা যায়, একেবারে কোষের স্তরে গিয়েও। আর একটা সুবিধা হলো জেব্রা ফিশের বেশির ভাগ কার্যকরী জিনের (প্রাণী বা উদ্ভিদের অনেক জিনই কার্যকরী থাকে না) সঙ্গেই মানুষ ও ইঁদুরের কার্যকরী জিনগুলোর খুব সাদৃশ্য রয়েছে। গত শতাব্দীর ৬-এর দশক থেকেই গ্রাম বাংলার এই ‘ম্যাজিশিয়ান’ মাছটি নিয়ে বিদেশে শুরু হয় গবেষণা। এখন বিশ্বের প্রায় ১ হাজারটি 

হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে বিট রস

হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে বিট রস


হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে বিট রস
বীটরুট একটি উপাদেয় ফল। আমাদের দেশে ফলটির জনপ্রিয়তা কম হলেও গবেষণায় দেখা গেছে যে বিটের রস পান করলে উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। স্নায়ু কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে। আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং ফাইটোকেমিক্যালগুলি রক্তকে বিশুদ্ধ করতে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়িয়ে তোলে।

বিটের খনিজ,নাইট্রিক অক্সাইড,পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নাইট্রিক অক্সাইড আমাদের দেহের দ্বারা উৎপাদিত একটি অণু যা সারা শরীরের কোষগুলিতে সংকেত স্থানান্তর করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন এই রস খেলে শরীর জুড়ে রক্ত প্রবাহকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করে।

জার্নাল অব নিউট্রিশনের গবেষণায় প্রমাণিত হয়, 'প্রতিদিন কমপক্ষে এক গ্লাস বিটের রস রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তারা এক গ্লাস বিট রসের মাধ্যমে তাদের রক্তচাপ কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। বিশেষ করে, ৫৪ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের জন্য বিট রস খুব কার্যকর। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ইতিবাচক লক্ষণ পাওয়া গেছে'। 
 
বিটের রস পান করা ছাড়াও এটি স্যুপ, সালাদ বা স্বাস্থ্যকর মিষ্টি হিসাবে খাওয়া যেতে পারে। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই উপকারী ফলটি অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

চির তারুণ্য ধরে রাখে বরই

চির তারুণ্য ধরে রাখে বরই

চির তারুণ্য ধরে রাখে বরই
খাওয়ার রুচি বাড়ানোর জন্য বরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বরই ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি-কাশির প্রতিরোধ করে। নিদ্রাহীনতা দূর করে আমাদের কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলটি ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে চির তারুণ্য ধরে রাখে।

বরই এর রস অ্যান্টি-ক্যানসার ড্রাগ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এই ফলে রয়েছে ক্যানসার সেল, টিউমার সেল, লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ শক্তি।

আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রজাতির বরই রয়েছে। এর ভিটামিন ‘সি’ গলার ইনফেকশনজনিত বিভিন্ন অসুখ, টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঠাণ্ডাজনিত লালচে ব্রণের মতো ফুলে যাওয়া, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া দূর করে।

রক্ত বিশুদ্ধকারক হিসেবে এই ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। ডায়রিয়া, মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তের হিমোগ্লোবিন ভেঙে রক্তশূন্যতা তৈরি হওয়া, ব্রঙ্কাইটিস নিরাময়ে বরই অত্যন্ত কার্যকরী। উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ফল যথেষ্ট উপকারি। 

পুরো বছর সংরক্ষণ করে খাওয়ার জন্য বরই দিয়ে টক-মিষ্টি-ঝাল আচার তৈরি করে রাখা যায়। এছাড়াও বরই ভর্তা খুবই মুখরোচক।

পেঁপে ক্যান্সারের প্রতিষেধক

পেঁপে ক্যান্সারের প্রতিষেধক

পেঁপে ক্যান্সারের প্রতিষেধক!
আমাদের দেহের কার্যকরী অঙ্গ লিভার সুস্থ ও সক্রিয় রাখতে পেঁপের বীজ এবং গাছের পাতা সমান ভাবে উপকারী। লিভার ভালো রাখতে নিয়মিত খেতে হবে পুষ্টিকর পেঁপে। পেঁপেতে থাকা ড্যানডেলিওন, মিল্ক থিসল লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।  

পেঁপের পাতার রস করতে প্রথমে পাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার পাটা বা হাম্বলদিস্তায় থেঁতো করে নিন। এবার রস ছেকে নিয়ে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে পান করুন। এছাড়াও, পেঁপের বীজ প্রথমে রোদে শুকিয়ে নিন। এটি পিষে নিয়ে এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ মধু দিয়ে পান করুন।  

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পেঁপে লিভারে থাকা সমস্ত অপ্রয়োজনীয় বস্তুকে বের করে বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচায় । পেঁপের পাতার রস পান করলে হজমশক্তি বাড়ে, শরীর দ্রুত প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। এছাড়া সব ধরনের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

অত্যন্ত সুস্বাধু পাকা পেঁপে ত্বক, হজম শক্তি বাড়ায়, হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, ক্যান্সারের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। সকালে খালি পেটে খাঁচা পেঁপে খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দূর হয়। আবার কাঁচা পেঁপে সালাদ বা সবজি হিসেবে রান্না করেও খাওয়া যায়। 

সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০২১

বৃহস্পতির উপগ্রহ থেকে এলো রেডিও সিগন্যাল, জল্পনা তুঙ্গে

বৃহস্পতির উপগ্রহ থেকে এলো রেডিও সিগন্যাল, জল্পনা তুঙ্গে


বৃহস্পতির উপগ্রহ থেকে এলো রেডিও সিগন্যাল, জল্পনা তুঙ্গে
পৃথিবীর বাইরের জগত নিয়ে মানুষের জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। চলছে গবেষণাও। এরইমধ্যে সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বৃহস্পতির উপগ্রহ গ্যানিমেড থেকে রেডিও সিগন্যাল পেয়েছে নাসার পাঠানো মহাকাশ যান জুনো। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।

সাধারণত রেডিও তরঙ্গ বা এফএম সিগন্যাল কোনো জীব থাকার ইঙ্গিত বা যোগাযোগের বিষয়টিকে তুলে ধরে বলেই গ্যানিমেডে প্রাণের অস্তিত্বের বিষয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। তবে মহাকাশবিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এ বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। বৃহস্পতির কোনো প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার জেরেই এই রেডিও তরঙ্গের উৎপত্তি।

এ ব্যাপারে নাসার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জুনো বৃহস্পতির কক্ষপথ ধরেই প্রদক্ষিণকালে সম্প্রতি গ্যানিমেড থেকে এই সংকেত পেয়েছে। বৃহস্পতির ৭৯টি উপগ্রহের মধ্যে অন্যতম হলো গ্যানিমেড। এর আগে কখনও এই উপগ্রহ থেকে কোনোরকম তরঙ্গ বা এফএম সিগন্যাল ধরা পড়েনি।

মহাকাশবিজ্ঞানীদের কথায়, মূলত ইলেকট্রন থেকে এ ধরনের তরঙ্গ বা সিগন্যাল সৃষ্টি হয়। এই গ্রহে হয়তো কোনো প্রাকৃতিক পরিবর্তন ঘটছে। তা থেকেই এমন তরঙ্গের সৃষ্টি হয়েছে।

নাসার গবেষক প্যাট্রিক ইউইংস বলেন, সাইক্লোট্রন ম্যাসার ইনস্ট্যাবিলিটি নামে এক ধরনের প্রক্রিয়ার ফলে এমন হতে পারে। সাধারণত কোনো তড়িৎচুম্বকীয় ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রক্রিয়া ঘটে থাকে। এতে ইলেকট্রনের উপস্থিতিও লক্ষ করা যায়। আর আশপাশের এলাকায় একটি ফ্রিকোয়েন্সি অনুভূত হয়। জুনো সেই ফ্রিকোয়েন্সি ধরতে সক্ষম হয়েছে।