বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

চোখের যেসব লক্ষণে সাবধান হতে হবে

চোখের যেসব লক্ষণে সাবধান হতে হবে


চোখের যেসব লক্ষণে সাবধান হতে হবে
চোখের সমস্যা কম-বেশি সবারই হতে পারে। কিন্তু অনেকে বুঝতে পারেন না যে, তার চোখে সমস্যা হয়েছে। তিনি জানেন না, কখন চোখের ডাক্তার দেখাবেন। এ ক্ষেত্রে নিজের চোখের অবস্থা ও লক্ষণ দেখে বুঝে নিতে হবে। চোখের কিছু লক্ষণে আপনাকে সাবধান হতে হবে। যেতে হবে  চিকিৎসকের কাছে। 

লক্ষণগুলো কী?

১. ঝাপসা দেখা: চোখে ঝাপসা দেখা বা চোখের সামনে অন্ধকার দেখা ক্যানসার, টিউমার বা স্ট্রোকেরও ইঙ্গিত দেয়। এ সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

২. ডাবল ভিশন: ডাবল ভিশন বা দুটো করে সবকিছু দেখার সমস্যা থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মূলত চোখের ভেতরে পেশির সমস্যা হলে ডাবল ভিশন হয়। এ ছাড়া স্নায়ু রোগেও এই সমস্যা দেখা যায়। এ ছাড়া স্ট্রোক বা ব্রেন টিউমার হলেও এই সমস্যা হয়।

৩. হঠাৎ চোখ ধাঁধিয়ে যাওয়া: অনেক সময়ে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। চোখের সামনে আলো ফেললে কিছু দেখা যায় না, তেমন অনেকেরই সাধারণ আলোতেই হঠাৎ চোখ ধাঁধিয়ে যায়। ক্ষণিকের অস্বস্তি হলেও এই সমস্যাকে কেউ খুব একটা গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি এই সমস্যা দেখা যায়, তাহলে চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিন।

৪. চোখ জ্বালা করা বা চোখ চুলকানো: হঠাৎ চোখ জ্বালা করা বা চোখ চুলকানোর সমস্যায় ভুগলেও এড়িয়ে যাবেন না। ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে এই সমস্যা হয়ে থাকে। প্রায়ই এই সমস্যা হতে থাকলে চিকিৎসকের কাছে যান।

৫. চোখ যদি লাল হয়ে যায়: হঠাৎ চোখ যদি লাল হয়ে যায়, তা যথেষ্ট চিন্তার কারণ। কোনও ইনফেকশন হলেও চোখ লাল হয়ে যায়। এ ছাড়া শরীরে অন্যান্য কয়েকটি রোগের উপসর্গ চোখ লাল হয়ে যাওয়া।

অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা বুঝবেন যেভাবে

অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা বুঝবেন যেভাবে


অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা বুঝবেন যেভাবে
পেটে ব্যথা খুবই সাধারণ একটা বিষয় হলেও, তাকে পাত্তা না দিলে সে ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। গ্যাসের ব্যথা বলে অনেক ব্যথা এড়িয়ে যাই আমরা। মূলত, বিভিন্ন জটিলতার সঙ্গে অন্যান্য সমস্যার কারণে অ্যাপেন্ডিক্সের ব্যথা আলাদা করে চিনে ওঠা সম্ভব হয় না।  হঠাৎ একদিন অ্যাপেন্ডিক্সের মারাত্মক ব্যথা ব্যথায় অসহায় করে দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থা হয়ে যায় রোগীর। 

শরীরের অবাঞ্চিত অঙ্গ অ্যাপেন্ডিক্সকে পাত্তা না দিলে প্রাণ সংশয় হতে পারে। তাই ব্যথা সম্পর্কে অবগত হন।

অ্যাপেন্ডিক্স হলে তল পেটের ডান দিকে ব্যথা শুরু হবে।  নাভির চারিদিক থেকে ব্যথাটা  ক্রমশ তল পেটের দিকে ছড়িয়ে পড়ে। তলপেট ফুলে ওঠে। তবে শুরুর দিকে ব্যথা কম হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই ব্য়থা ক্রমশ বাড়তে থাকে। খাবার খেলেই ব্যথা বেড়ে যায়। 

জ্বর আসার সম্ভাবনা থাকে। তবে সবার ক্ষেত্রে জ্বর আসে না। খেতে ইচ্ছা করে না। হজমে সমস্যা হয়। সেখান থেকে শুরু হয় বমি। কিছুক্ষেত্রে রোগীর পেট খারাপও হতে পারে। হাঁটাচলা করলে, বসে ওঠার সময়, অথবা সিড়ি দিয়ে নামার সময় ব্যথা হতে পারে।

এই সকল লক্ষণ দেখলে ভুলেও দেরি করবেন না। পরামর্শ নিন ডাক্তারের থেকে। কারণ অ্যাপেন্ডিক্সকে অবহেলা করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমানে ল্যাপারোস্কোপি করে অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন করা হয়। আধুনিক পদ্ধতিতে পেট না কেটেই বাদ দেওয়া হয় অ্যাপেন্ডিক্স। 

মানুষের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছ

মানুষের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছ

মানুষের হার্টকে সারিয়ে তোলার জাদু জানে ছোট্ট এই মাছ!
যেন জাদুমন্ত্র জানে আমাদের ধানখেতের আলে, খালেবিলে, পুকুরে, নদীতে থাকা ম্যাজিশিয়ান এই মাছটি। অনেকে চিনেন আবার অনেকে নামও জানেন না মাছটির। এই মাছটির নাম জেব্রা ফিশ, যা বাংলায় অঞ্জু মাছ বলে পরিচিত। এর শক্তি সম্পর্কে জানলে আপনি রীতিমতো অবাক হবেন। মূলত গ্রাম বাংলা আর উত্তর-পূর্ব ভারতের নদী, পুকুর, খালবিলে এই জেব্রা ফিশটি পাওয়া যায়। 

হাতের আঙুলের আকারের ও গায়ে ডোরাকাটা দাগের এই মাছটি ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পরেও মস্তিষ্ক, হৃদযন্ত্র, যকৃত, অগ্ন্যাশয়, মেরুদণ্ডসহ তার শরীরের প্রায় সবকটি অঙ্গকে নতুন করে গড়ে তুলতে পারে, যা মানুষ কিংবা কোনও স্তন্যপায়ী প্রাণীও পারে না।

ভারতের পুনের আগরকর রিসার্চ ইন্সটিটিউটের ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বিভাগের বিজ্ঞানী চিন্ময় পাত্রের তত্ত্বাবধানে আমাদের দুর্বল হয়ে পড়া হৃদযন্ত্রকে ফের জাগিয়ে তোলার এই সঞ্জীবনী মন্ত্রটি খুঁজে বের করেছেন দেবাঞ্জন মুখোপাধ্যায় ও তার সহযোগীরা। দেবাঞ্জন এখন ফ্রাঙ্কফুর্টে গোথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট ফর কার্ডিওভাসকুলার রিজেনারেশনের গবেষক।

চিন্ময় ও দেবাঞ্জনসহ ১০ জনের গবেষকদল পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিশ্বে এই প্রথম দেখালেন, একটি বিশেষ জিন কীভাবে জেব্রা ফিশের ক্ষতবিক্ষত হৃদযন্ত্রকে (‘মায়োকার্ডিয়াল ইনজুরি’) পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে সাহায্য করে। জিনটির নাম- ‘কানেকটিভ টিস্যু গ্রোথ ফ্যাক্টর (সিটিজিএফ)’। আরও একটি নাম রয়েছে জিনটির, তাহলো ‘সেলুলার কমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক ফ্যাক্টর ২-এ’।

এই গবেষণাতেই প্রথম বোঝা গেল কেন হার্ট অ্যাটাকের পর আমরা আর হৃদযন্ত্রকে আগের অবস্থায় ফিরে পাই না এবং তৃতীয়বার হার্ট অ্যাটাকের পর অনিবার্যই হয়ে ওঠে আমাদের মৃত্যু। আর কেনই বা জেব্রা ফিশের হৃদযন্ত্র বার বার ক্ষতবিক্ষত হয়েও পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠতে পারে প্রায় নতুন হৃদযন্ত্রের মতোই?

গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে ব্রিটেন থেকে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ডেভেলপমেন্ট’-এ। মূল গবেষক দেবাঞ্জন কাজ করেছেন পুনের ‘আগরকর রিসার্চ ইন্সটিটিউট (এআরআই)’-এর ডেভেলপমেন্টাল বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক চিন্ময় পাত্রের তত্ত্বাবধানে। সহযোগিতা করেছে জার্মানির ‘ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইন্সটিটিউট ফর হার্ট অ্যান্ড লাং রিসার্চ’ এবং আমেরিকার ডারহ্যামের ‘ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়’-এর মেডিক্যাল সেন্টারও।

গবেষণায় কেন বেছে নেওয়া হলো জেব্রা ফিশ?

সাধারণত ২ থেকে ৩ বছর জেব্রা ফিশ বেঁচে থাকে। তাই ৩ মাস বয়স হয়ে গেলেই এই মাছ প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে। গবেষকরা কাজটা করেছেন অন্তত ৬ মাস বয়সি জেব্রা ফিশ নিয়ে। সেগুলো ছিল প্রাপ্তবয়স্ক জেব্রা ফিশ। হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ও আশঙ্কা যেহেতু শিশুদের চেয়ে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি, প্রবীণদের ক্ষেত্রে আরও বেশি, গবেষকরা তাই কাজটা করেছেন প্রাপ্তবয়স্ক জেব্রা ফিশ নিয়ে।

জেব্রা ফিশ নিয়ে কাজ করার একটা সুবিধা হলো, জন্মের পর ১০-১৫ দিন পর্যন্ত বাইরে থেকেই তাদের হৃদযন্ত্র, যকৃত, অগ্ন্যাশয়সহ শরীরের সবকটি অঙ্গের বিকশিত হয়ে ওঠা আর তাদের কাজকর্ম চাক্ষুষ করা যায়। কীভাবে হৃদযন্ত্রের ভাল্ব তৈরি হচ্ছে, তা-ও দেখা যায়, একেবারে কোষের স্তরে গিয়েও। আর একটা সুবিধা হলো জেব্রা ফিশের বেশির ভাগ কার্যকরী জিনের (প্রাণী বা উদ্ভিদের অনেক জিনই কার্যকরী থাকে না) সঙ্গেই মানুষ ও ইঁদুরের কার্যকরী জিনগুলোর খুব সাদৃশ্য রয়েছে। গত শতাব্দীর ৬-এর দশক থেকেই গ্রাম বাংলার এই ‘ম্যাজিশিয়ান’ মাছটি নিয়ে বিদেশে শুরু হয় গবেষণা। এখন বিশ্বের প্রায় ১ হাজারটি 

হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে বিট রস

হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে বিট রস


হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে বিট রস
বীটরুট একটি উপাদেয় ফল। আমাদের দেশে ফলটির জনপ্রিয়তা কম হলেও গবেষণায় দেখা গেছে যে বিটের রস পান করলে উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়। স্নায়ু কার্যকারিতা উন্নত করতে সহায়তা করে। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে। আয়রন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস এবং ফাইটোকেমিক্যালগুলি রক্তকে বিশুদ্ধ করতে সহায়তা করে এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়িয়ে তোলে।

বিটের খনিজ,নাইট্রিক অক্সাইড,পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। নাইট্রিক অক্সাইড আমাদের দেহের দ্বারা উৎপাদিত একটি অণু যা সারা শরীরের কোষগুলিতে সংকেত স্থানান্তর করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন এই রস খেলে শরীর জুড়ে রক্ত প্রবাহকে আরও উন্নত করতে সহায়তা করে।

জার্নাল অব নিউট্রিশনের গবেষণায় প্রমাণিত হয়, 'প্রতিদিন কমপক্ষে এক গ্লাস বিটের রস রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ ওষুধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তারা এক গ্লাস বিট রসের মাধ্যমে তাদের রক্তচাপ কমাতে এবং নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনা। বিশেষ করে, ৫৪ থেকে ৮০ বছর বয়সীদের জন্য বিট রস খুব কার্যকর। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ইতিবাচক লক্ষণ পাওয়া গেছে'। 
 
বিটের রস পান করা ছাড়াও এটি স্যুপ, সালাদ বা স্বাস্থ্যকর মিষ্টি হিসাবে খাওয়া যেতে পারে। দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই উপকারী ফলটি অন্তর্ভুক্ত করা যায়।

চির তারুণ্য ধরে রাখে বরই

চির তারুণ্য ধরে রাখে বরই

চির তারুণ্য ধরে রাখে বরই
খাওয়ার রুচি বাড়ানোর জন্য বরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বরই ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি-কাশির প্রতিরোধ করে। নিদ্রাহীনতা দূর করে আমাদের কর্মশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফলটি ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে চির তারুণ্য ধরে রাখে।

বরই এর রস অ্যান্টি-ক্যানসার ড্রাগ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এই ফলে রয়েছে ক্যানসার সেল, টিউমার সেল, লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার অসাধারণ শক্তি।

আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রজাতির বরই রয়েছে। এর ভিটামিন ‘সি’ গলার ইনফেকশনজনিত বিভিন্ন অসুখ, টনসিলাইটিস, ঠোঁটের কোণে ঘা, জিহ্বাতে ঠাণ্ডাজনিত লালচে ব্রণের মতো ফুলে যাওয়া, ঠোঁটের চামড়া উঠে যাওয়া দূর করে।

রক্ত বিশুদ্ধকারক হিসেবে এই ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। ডায়রিয়া, মোটা হয়ে যাওয়া, রক্তের হিমোগ্লোবিন ভেঙে রক্তশূন্যতা তৈরি হওয়া, ব্রঙ্কাইটিস নিরাময়ে বরই অত্যন্ত কার্যকরী। উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এই ফল যথেষ্ট উপকারি। 

পুরো বছর সংরক্ষণ করে খাওয়ার জন্য বরই দিয়ে টক-মিষ্টি-ঝাল আচার তৈরি করে রাখা যায়। এছাড়াও বরই ভর্তা খুবই মুখরোচক।