রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬

ধেয়ে আসছে চীনের মহাকাশ স্টেশন

ধেয়ে আসছে চীনের মহাকাশ স্টেশন

           
.নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধীরে ধীরে পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসছে ‘তিয়ানগং-১’ নামের চীনের প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশ স্টেশন। গত কয়েক মাসে এ নিয়ে নানা খবর বের হলেও চীন তা এত দিন গুজব বলেই উড়িয়ে দিয়ে এসেছে। সেপ্টেম্বর মাসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি স্বীকার করে নেন চীনের মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরা। ২০১৭ সাল নাগাদ পৃথিবীর বুকে তিয়ানগং-১ আছড়ে পড়বে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। বর্তমানে মহাকাশ স্টেশনটি নিজস্ব কক্ষপথে পৃথিবী থেকে প্রায় ২৩০ মাইল ওপরে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করছে।
পৃথিবীর বুকে পতনের সময়ে মহাকাশ স্টেশনটির বেশির ভাগ অংশ পুড়ে যাবে বলেও জানান           চীনের মনুষ্যবাহী মহাকাশ প্রকৌশল কার্যালয়ের উপপরিচালক উ পিং। তিয়ানগং-১-এর গতিবিধি    সর্বক্ষণ পর্যবেক্ষণ করছে দেশটির মহাকাশ  গবেষণাকেন্দ্র। এটি কবে ও কোথায় পতিত হবে, তা পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
তিয়ানগং-১ নামের অর্থ ‘স্বর্গীয় প্রাসাদ’। ২০১১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পৃথিবী থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় ৩৪ ফুট লম্বা এই মহাকাশ স্টেশন। এরপর অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী এর গতিবিধির ত্রুটি লক্ষ করলেও চীন সরকার তা আমলে নেয়নি। তিয়ানগং-১-এর কতটুকু অংশ এখন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলেনি চীন।
এদিকে গত সপ্তাহে চীন তাদের নতুন পরীক্ষামূলক মহাকাশ স্টেশন তিয়ানগং-২ উৎক্ষেপণ করেছে।

ধূমকেতুর বুকে রোসেটার সমাধি

ধূমকেতুর বুকে রোসেটার সমাধি

ধুমকেতু ৬৭পির পৃষ্ঠে আছড়ে পড়ার মাত্র এক দশমিক দুই কিলোমিটার ওপর থেকে এ ছবিটি তোলে রোসেটা। ছবি: ইসাধূমকেতুর অনেক অজানা রহস্যের তথ্য জানিয়ে গেল রোসেটা নামের এক মহাকাশ যান। আজ ধূমকেতুর বুকে রোসেটাকে ‘ক্র্যাশ’ করালেন ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইসা) গবেষকেরা।
৬৭পি নামের ধূমকেতুর বিষয়ে তথ্য জানতে ২০০৪ সালের ২ মার্চ রোসেটা মহাকাশে পাঠানো হয়। বরফে আচ্ছাদিত ওই ধূমকেতুর পৃষ্ঠে আঘাত হেনে ভেঙে পড়ার মাধ্যমে ইতি ঘটে গেল এক যুগ ধরে গবেষকদের উৎসাহের কেন্দ্রে থাকা রোসেটা মিশনের।
জার্মানির ডার্মস্ট্যাটে মিশনটির নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে রোসেটার ইতি ঘটার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। গবেষকেরা দাবি করেছেন, যখন রোসেটার সঙ্গে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তখন বিষয়টি তাঁরা নিশ্চিত হয়েছেন। পরিকল্পনামাফিক এ সংঘর্ষ ঘটানোর আগে রোসেটা থেকে ওই ধূমকেতুর উচ্চ রেজল্যুশনের ছবি ও অন্যান্য পরিমাপ সম্পর্কে তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকেরা।
ইসার মিশন ব্যবস্থাপক প্যাট্রিক মার্টিন বলেন, ‘ধূমকেতু ৬৭পিতে রোসেটার ঐতিহাসিক অবতরণকে পূর্ণ সফলতা বলে ঘোষণা করছি। বিদায় রোসেটা। তুমি তোমার কাজ করেছ। এটা ছিল মহাকাশবিজ্ঞানের দারুণ অধ্যায়।’
রোসেটাগবেষকেরা আশা করছেন, গত দুই বছরে ধূমকেতু সম্পর্কে যে তথ্য মিলেছে, তা গবেষকদের পরবর্তী এক যুগ ব্যস্ত রাখবে।
চার কিলোমিটার প্রশস্ত হাঁস আকৃতির ওই ধূমকেতুর বুকে আছড়ে পড়ার আগে আজ শুক্রবার সকালে গবেষকেরা রোসেটার শেষ মুহূর্তগুলো শেষবারের মতো পর্যবেক্ষণ করেন। ধূমকেতুটি ক্রমশ সূর্য থেকে দূরে সরে যাওয়ায় সৌরশক্তি ব্যবহার করে চলা রোসেটার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়ছিল। গবেষকেরা চাইলে রোসেটাকে নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা এটিকে ধূমকেতুর বুকে আছড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নেন।
গবেষক ম্যাট টেলর বলেন, রোসেটাকে যদি আবার সৌরমণ্ডলে আসা পর্যন্ত নিষ্ক্রিয় রাখা হতো, তবে সেটি আর কাজ করত কি না, তার নিশ্চয়তা ছিল না।
২০০৪ সালে যাত্রা শুরুর ১০ বছর পর ২০১৪ সালের আগস্টে রোসেটা ওই ধূমকেতুর তথ্য পাঠাতে শুরু করে। ২০১৪ সালের নভেম্বরে রোসেটা থেকে ‘ফিলে’ নামের ছোট একটি রোবট ওই ধূমকেতুর বুকে অবতরণ করানো হয়।

সূর্যের চেয়েও গোল

সূর্যের চেয়েও গোল

সূর্যের চেয়েও গোলাকার নক্ষত্রআমাদের সৌরজগতে সবচেয়ে গোলাকৃতি বস্তু কোনটি? গবেষকেরা দীর্ঘদিন ধরে মহাকাশের বিভিন্ন বস্তু ও গ্রহের কাঠামো নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁদের মতে, সৌরজগতের সবচেয়ে গোলাকৃতি সূর্যের। কিন্তু সম্প্রতি গবেষকেরা সূর্যের চেয়েও গোলাকার একটি নক্ষত্রের সন্ধান পেয়েছেন। পৃথিবী থেকে পাঁচ হাজার আলোকবর্ষ দূরের ওই নক্ষত্রকে গবেষকেরা নাম দিয়েছেন ‘কেপলার ১১১৪৫১২৩’। এটি আকারে সূর্যের দ্বিগুণ। জার্মানির ম্যাক্স প্লাংক ইনস্টিটিউট ফর সোলার সিস্টেম রিসার্চ ও জিটিনজেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসার কেপলার স্পেস টেলিস্কোপ দিয়ে নক্ষত্রটি প্রায় চার বছর পর্যবেক্ষণ করেন গবেষকেরা।

সূর্যের চেয়ে গোলাকার নক্ষত্র ‘কেপলার ১১১৪৫১২৩’সায়েন্স অ্যাডভান্সেস সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ। ওই নিবন্ধে বলা হয়েছে, প্রতি ২৭ দিনে সূর্য আবর্তিত হয় এবং মেরু অঞ্চলের তুলনায় নিরক্ষরেখার দিকে ৬ দশমিক ২ মাইল বৃহৎ ব্যাসার্ধ আছে। পৃথিবীর ক্ষেত্রে এই পার্থক্য ১৩ মাইল। তবে ‘কেপলার ১১১৪৫১২৩’ নক্ষত্রটি সূর্যের চেয়ে দ্বিগুণ বড় হওয়ায় এটি আবর্তনের গতি ধীর। সূর্যের চেয়ে তিন গুণ ধীরগতিতে আবর্তিত হয় নক্ষত্রটি।

গবেষকেরা দাবি করেছেন, পৃথিবী, চাঁদ, সূর্যসহ মহাকাশের সব বস্তুর চেয়েও গোলাকার ‘কেপলার ১১১৪৫১২৩’ নক্ষত্রটি। কেন এমন গোলাকার? গবেষকেরা বলেন, ধীরগতির আবর্তন ও চৌম্বকক্ষেত্রের কারণেই নক্ষত্রটি এমন আকার পেয়েছে। তথ্যসূত্র: স্পেস ডটকম

নাসার নতুন ‘চমক’ কি এলিয়েন

নাসার নতুন ‘চমক’ কি এলিয়েন

 
হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ইউরোপা উপগ্রহে অদ্ভুত কার্যক্রম লক্ষ করেছেন গবেষকেরা।মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার বিজ্ঞানীরা শিগগিরই নতুন একটি ‘চমক’ হাজির করতে যাচ্ছেন। এমন আভাস দিয়ে বলা হচ্ছে, এ চমক হতে পারে আমাদের এই সৌরজগতে এলিয়েন বা ভিনগ্রহের প্রাণীর গতিবিধি আবিষ্কারের তথ্য।
বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপার ছবি বিশ্লেষণ করে নাসার গবেষকেরা আসছে সোমবার নাগাদ ওই উপগ্রহপৃষ্ঠের নিচে থাকা সমুদ্র সম্পর্কে তথ্য জানাতে পারেন। ১ হাজার ৯০০ মাইল প্রশস্ত এই উপগ্রহের বরফাছাওয়া খোলসের নিচে বিশাল সমুদ্র থাকতে পারে বলে মনে করছেন গবেষকেরা। এই সমুদ্র গবেষকেদের আরও বেশি আকৃষ্ট করছে ইউরোপার পাথুরে আবরণ। যার মধ্যে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানোর মতো উপাদান থাকতে পারে।
হাবল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ইউরোপার নতুন এই ছবিগুলো তোলা হয়েছে। এর পাশাপাশি ইউরোপার রহস্য উদ্‌ঘাটনে সেখানে নভোযান পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন গবেষকেরা। ওই মিশনে নভোযান ১ হাজার ৭০০ মাইল থেকে শুরু করে ১৬ মাইল উচ্চতায় ৪৫ বার ইউরোপাকে চক্কর দেবে। ওই মিশনের ফলেই ইউরোপার বর্তমান অবস্থার কথা জানা যাবে।
গত মে মাসে নাসার প্লানেটারি ভূপ্রকৃতিবিদ স্টিভ ভ্যান্স বলেন, পৃথিবীর মতোই ইউরোপার সমুদ্রে অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন চক্র সেখানকার সামুদ্রিক রসায়ন ও সেখানকার সম্ভাব্য জীবনের জন্য মূল চালিকা রূপ হতে পারে। তথ্যসূত্র: আইবিটাইমস

সূর্য বুড়ো হলে কেমন হবে পৃথিবীর চেহারা

সূর্য বুড়ো হলে কেমন হবে পৃথিবীর চেহারা

           
সূর্য এক সময় লাল দানবে রূপ নেবে। প্রতীকী ছবিবিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জ্যোতির্বিদেরা একটি মৃতপ্রায় প্রবীণ নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করেছেন। পৃথিবী থেকে ২০৮ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ওই নক্ষত্রটি। এর নাম এল ২ পাপিস। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ওই নক্ষত্রটি পর্যবেক্ষণের ফলে কয়েক বিলিয়ন বছরের মধ্যে সূর্য বুড়ো হলে পৃথিবীর অবস্থা কেমন হবে, সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।
গবেষকেরা বলছেন, ১০ বিলিয়ন বছর বয়স (এক বিলিয়ন সমান ১০০ কোটি) এল ২ পাপিস নক্ষত্রটির। পাঁচ বিলিয়ন বছর আগে এই নক্ষত্রটি ঠিক আজকের সূর্যের মতো ছিল।
বেলজিয়ামের কেইউ লিউভেন ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমির অধ্যাপক লিন ডেসিন বলেন, এখন থেকে পাঁচ বিলিয়ন বছর পরে আমাদের সূর্য লাল দানব (রেড জায়ান্ট) নক্ষত্রে রূপান্তরিত হবে। এ সময় সূর্যের আকার বর্তমানের চেয়ে শতগুণ বেড়ে যাবে।
অধ্যাপক ডেসিন বলেন, শক্তিশালী নাক্ষত্রিক ঝড়ে সূর্যের তীব্র ভর কমে যাবে। এর বিবর্তন-প্রক্রিয়ার শেষে সাত বিলিয়ন বছর পরে এটি ক্ষুদ্র সাদা বামন তারায় রূপান্তরিত হবে। এ সময় এটি পৃথিবীর মতো ছোট আকার ধারণ করবে। কিন্তু এটি হবে আরও ভারী। এই সাদা বামন তারার এক চা-চামচ উপাদানের ভর দাঁড়াবে প্রায় পাঁচ টন। এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় সৌরজগতের গ্রহগুলোর ওপর নাটকীয় প্রভাব ফেলবে। বৃহস্পতি, শুক্রের মতো গ্রহগুলো বিশাল নক্ষত্রের মধ্যে হারিয়ে যাবে এবং ধ্বংস হবে।
ডেসিন বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি যে সূর্য আরও বড় ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। তাই এটি পৃথিবীকেও ধ্বংস করে ফেলবে।’
ডেসিন বলেন, পৃথিবীর পাথুরে অভ্যন্তর সূর্যের সেই লাল দানব দশায় টিকে থেকে সাদা বামন অবস্থা পর্যন্ত একে প্রদক্ষিণ করবে কি না, তা দেখার বিষয়। এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে জ্যোতির্বিদেরা এল ২ পাপিসকে পর্যবেক্ষণ শুরু করেন। পৃথিবী থেকে মাত্র ২০৮ আলোকবর্ষ দূরের এই নক্ষত্রটি মহাজাগতিক হিসেবে খুব কাছের।
গবেষকেরা পর্যবেক্ষণের সময় এল ২ পাপিসের ৩০ কোটি কিলোমিটারের মধ্যে একটি বস্তু দেখেছেন, যা ওই নক্ষত্রটিকে আবর্তন করছে। সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্ব এর অর্ধেক। গবেষকেরা তাই ভাবছেন, নক্ষত্রটি পর্যবেক্ষণ করে পাঁচ বিলিয়ন বছর পরে পৃথিবীর অবস্থা কেমন হবে তা জানা যাবে। তথ্যসূত্র: পিটিআই।