সোমবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৬

গুগল চশমার নবজন্মের পেছনে ঢাকার কোম্পানি

গুগল চশমার নবজন্মের পেছনে ঢাকার কোম্পানি

           
.রোগীর দিকে তাকিয়ে তাকে জিজ্ঞেস না করেই চিকিৎসক জেনে যাচ্ছেন তার রোগবালাইয়ের অতীত ইতিহাস। জানছেন রোগীর সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার ফলাফল—রক্তচাপ, রক্তে চিনির পরিমাণ, রোগী এর আগে কী কী ওষুধ খেয়েছে ইত্যাদি। এ তথ্য ভেসে উঠছে চিকিৎসকের চোখে লাগানো এক বিশেষ ধরনের চশমার কাচে। চশমাটির নাম গুগল-গ্লাস।
এ এক অভিনব সেবা। বলা হচ্ছে, চিকিৎসা ব্যবস্থাপনার চেহারা পাল্টে দিতে শুরু করেছে এই সেবা। আর এর পেছনে বুদ্ধি ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব পালন করছে অগমেডিক্স নামে যে কোম্পানি, সেটির সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ইয়ান শাকিল বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান। বাংলাদেশেও প্রতিষ্ঠানটির একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান আছে। তা ছাড়া এই প্রযুক্তির গবেষণা ও উন্নয়নের কাজটি হয়েছে ঢাকায়। আর একে ঘিরে ভবিষ্যতে যে কর্মযজ্ঞের আয়োজন চলছে, সেটির প্রধান কেন্দ্র হতে যাচ্ছে ঢাকা। এ জন্য কোম্পানিটিতে নতুন বিপুল পরিমাণ অর্থ লগ্নি করতে শুরু করেছে সিলিকন ভ্যালির বিনিয়োগকারীরা। ইতিমধ্যে ১ কোটি ৯২ লাখ ডলার অর্থ লগ্নি করেছে ডিসিএম ভেঞ্চারস নামে একটি বড় মার্কিন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে শিগগিরই সাত হাজার তরুণ দক্ষ তথ্যপ্রযুক্তিবিদ গড়ে তুলবে এই কোম্পানি।
শুরুতে এর সেবাগ্রহীতারা হচ্ছেন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক। তবে যেসব দেশে রোগীর স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্যভান্ডার অনলাইনে সংরক্ষণ ও শেয়ার করা হয়, সেসব দেশে শিগগিরই এই সেবা ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
গুগল-গ্লাস হলো টেক-জায়ান্ট গুগলের তৈরি করা একটি স্মার্ট চশমা, যার ভেতর দিয়ে তাকালে বাইরের দৃশ্যের পাশাপাশি দরকারি নানা রকম তথ্য ভেসে ওঠে কাচের পর্দায়। চশমাটি ইন্টারনেট বা ক্লাউডের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং সেখান থেকে প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য দেয়।
চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় বিপ্লব
প্রযুক্তিতে এগিয়ে থাকা দেশগুলোয় রোগীদের সব মেডিকেল তথ্য রাখা হচ্ছে কম্পিউটারে, ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ডে (ইএইচআর)। কিন্তু দেখা যায়, রোগী দেখার সময় একটা বড় অংশজুড়ে চিকিৎসককে ব্যস্ত থাকতে হয় কম্পিউটার ঘাঁটাঘাঁটিতে। আগের রেকর্ড দেখা, ডিজিটাল ডেটা দেখা, পরীক্ষণের ফলাফল দেখা এবং নতুন তথ্য-উপাত্ত ভুক্তি দেওয়ায় নেহাত কম সময় যায় না। আমেরিকার মতো যেসব দেশে স্বাস্থ্য উপাত্ত রাখা বাধ্যতামূলক, সেখানে রোগী দেখার সময়ের ২৫ শতাংশই চলে যায় কম্পিউটারে।
এর একটি চৌকস সমাধান নিয়ে এসেছে অগমেডিক্স। চিকিৎসকদের সামনে থেকে কম্পিউটার সরিয়ে ফেলেছে তারা। গুগল-গ্লাসকে ভিত্তি করে একটি নতুন সেবা অ্যাপ্লিকেশন (সফটওয়্যার) বানিয়েছে তারা।
গুগল-গ্লাস নামক বিশেষ চশমাটি ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকে। এর মাধ্যমে রোগীকে পরীক্ষা করার সময় চিকিৎসক দূরদেশে কম্পিউটারের সামনে বসে থাকা তাঁর ‘লিপিকারের’ (স্ক্রাইবার) সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন। লিপিকারের কম্পিউটার যুক্ত থাকে রোগীর তথ্যভান্ডারের সঙ্গে। একজন লিপিকার রোগীর যাবতীয় রেকর্ডই কেবল দেখছেন না, বরং তা তৎক্ষণাৎ (রিয়েল টাইম) তাঁর চিকিৎসককে জানিয়ে দিতে পারছেন। তথ্যগুলো ভেসে উঠছে রোগীকে পরীক্ষায় ব্যস্ত চিকিৎসকের চশমার পর্দায়। আবার চিকিৎসক রোগী দেখে যেসব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, সেগুলো তিনি মুখে বলামাত্র ওই চশমার মধ্য দিয়ে পৌঁছে যাচ্ছে লিপিকারের কাছে। লিপিকার চার্ট-নোট (রোগীসংক্রান্ত) লিপিবদ্ধ করছেন। চশমাটি এখানে একটি দ্বিমুখী যোগাযোগের মাধ্যম। এ কারণে এটি প্রচলিত মেডিকেল ট্রান্সক্রিপশন সার্ভিসের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে।
আমেরিকার প্রথম সারির দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, ‘এর মাধ্যমে একজন চিকিৎসক একই সময়ে আগের চেয়ে বেশি রোগী দেখতে পারেন। তাঁর দৈনিক দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় বাঁচে। সবচেয়ে বড় কথা, চিকিৎসকেরা রোগী দেখার মূল কাজে তাঁর পুরো সময় ব্যয় করতে পারছেন।’
যেভাবে বাংলাদেশ যুক্ত
যাঁদের হাতে এই প্রযুক্তি উদ্ভাবন হয়েছে, সেই অগমেডিক্সের দুই সহপ্রতিষ্ঠাতার একজন ইয়ান শাকিল। তাঁর বাবা কাজী শাকিল হলেন ফুটবলার কাজী সালাউদ্দিনের ভাই এবং মা দিয়ানে মেলোন একজন আমেরিকান। ডিউক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হওয়ার পর ইয়ান শাকিল ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেন। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার পর ২০১২ সালে পেলু ট্র্যান নামে আরেক আমেরিকান তরুণের সঙ্গে মিলে শাকিল প্রতিষ্ঠা করেন স্টার্টআপ কোম্পানি অগমেডিক্স।
আমেরিকায় জন্ম ও বেড়ে ওঠা হলেও বাবার কারণে ছোটবেলা থেকে নিয়মিত বাংলাদেশে এসেছেন শাকিল। বাংলাদেশের সঙ্গে নাড়ির টানের কারণে এ দেশের তরুণদের কাজে লাগানোর চিন্তাও এসেছে। তাই গুগল চশমার সঙ্গে যুক্ত এই অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কাজটি তিনি শুরু করেন ঢাকাতেই এবং নিবন্ধন করেন অগমেডিক্স (বাংলাদেশ) লিমিটেড নামের সম্পূর্ণ বাংলাদেশি একটি প্রতিষ্ঠান, যার মালিকানা শতভাগ সিলিকন ভ্যালির অগমেডিক্সের। বর্তমানে গুগল-গ্লাসের চিকিৎসকদের জন্য এই লিপিসেবাটি দেওয়া হয় ভারত, ডমিনিকান রিপাবলিক, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ থেকে। এরই মধ্যে আমেরিকার সহস্রাধিক চিকিৎসক এই সেবা ব্যবহার করছেন মাসে দেড় থেকে চার হাজার ডলারের বিনিময়ে।
ঢাকায় অগমেডিক্স
৪ ডিসেম্বর শাকিলের সঙ্গে কথা বলার জন্য হাজির হলাম ঢাকার পান্থপথের অগমেডিক্স কার্যালয়ে। সেই সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন অগমেডিক্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদুল হক। শাকিল বললেন, সিলিকন ভ্যালিতে তাঁদের অফিস থাকলেও গুগল চশমার এই অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের মূল কাজটি হয়েছে ঢাকাতেই এবং এটির বিকাশের কাজও এখানে হচ্ছে।
বাংলাদেশি সফটওয়্যার প্রকৌশলী ও প্রোগ্রামারদের প্রশংসা করে শাকিল বলেন, ‘এঁদের অনেকেই গুগল-ফেসবুক বা এ রকম বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহজে যুক্ত হতে পারেন। কিন্তু আমরা কৃতজ্ঞ যে তাঁরা আমাদের মতো স্টার্টআপের সঙ্গে কাজ করছেন। আমরাও তাঁদের অনেককে কোম্পানির শেয়ার দিচ্ছি।’
অগমেডিক্সের ঢাকার সফটওয়্যার প্রকৌশলীরা যে কাজটি করেছেন, বাণিজ্য বিষয়ক আমেরিকান বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফাস্ট কোম্পানির ভাষায় সেটি হলো ‘গুগল-গ্লাসকে দ্বিতীয় জীবন দেওয়া।’ আর এই উদ্ভাবনী কাজের জন্য ফাস্ট কোম্পানি ২০১৬ সালে অগমেডিক্সকে স্বাস্থ্যসেবা খাতের সবচেয়ে উদ্ভাবনী কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
অগমেডিক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতা ইয়ান শাকিল। ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করে ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক এই স্টার্টআপ কোম্পানি
বাংলাদেশে এই কার্যক্রম চালানোর ইচ্ছে তাঁর কেন হলো, এই প্রশ্নের জবাবে হেসে দিয়ে শাকিল তাঁর পিতৃপরিচয় তুলে ধরেন। তারপর বাংলাদেশের এক বিরাট যুবসম্প্রদায়ের কথা তুলে ধরে বলেন, ঠিকমতো পরিচর্যা করতে পারলে এঁদের বিশ্বমানের কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা মোটেই কঠিন নয়। এ জন্য শাকিল তরুণদের ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ওপর জোর দেন।
অগমেডিক্সে বিনিয়োগ
৮ ডিসেম্বর নতুন করে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলার (১৯২ কোটি টাকা) বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে এই কোম্পানি। নতুনভাবে অগমেডিক্সে বিনিয়োগ করেছে মার্কিন বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ম্যাককেসন ভেঞ্চার ও অরবিমেড। এই কোম্পানিগুলো আমেরিকায় চিকিৎসা খাতে প্রথম সারির বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান। এর আগে রেডমাইল প্রুপ, ডিসিএম ভেঞ্চার, এমারজেন্স ক্যাপিটালসহ আমেরিকার বিভিন্ন স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্ক প্রায় ছয় কোটি ডলার (প্রায় ৪৭০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করেছে অগমেডিক্সে। বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে যে সম্ভাবনা ইয়ান দেখেন, তার প্রতিধ্বনি পাওয়া গেল ডিসিএম ভেঞ্চার কোম্পানির অংশীদার পেটে মোরানের কথায়। ডিসিএম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন কোম্পানিতে প্রায় ৩৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে।
ইয়ান শাকিলইয়ান শাকিলএই প্রতিবেদকের কাছে পাঠানো এক বার্তা পেটে মোরান জানালেন, ১৯৯০ সালের দিকে মার্কিন বিনিয়োগকারীরা চীনের ইন্টারনেট উদ্যোক্তাদের মধ্যে যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখেছিলেন, ঠিক তেমনটি এখন বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে দেখছেন তাঁরা। তিনি বলেছেন, ‘১৯৯৯ সালের দিকে আমরা চীনের ইন্টারনেট উদ্যোক্তাদের পেছনে বিনিয়োগ করেছি এবং তাঁরা অনেকেই এখনকার শীর্ষ কোম্পানিগুলো গঠন করেছেন। আমরা এখন সমমাত্রায় উদ্দীপ্ত যে অগমেডিক্সের মতো কোম্পানির পেছনে আমরা বিনিয়োগ করছি, যারা কার্যত বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিপুল তরুণ জনগোষ্ঠী, ক্রমাগত শক্তিশালী হওয়া শিক্ষাব্যবস্থা, সংহত তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামো এবং কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থান—এসবই বাংলাদেশকে নব্বইয়ের দশকের তথ্যপ্রযুক্তিতে চীনের সমান্তরাল অবস্থানকেই তুলে ধরছে। আর সে জন্য আমরা মনে করছি এশিয়ায় বিনিয়োগের এক সম্ভাবনাময় দেশ হলো বাংলাদেশ।’
নতুন বিনিয়োগের মাধ্যমে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কেবল বাংলাদেশে তাদের সেবার পরিধি পাঁচ থেকে সাত হাজার জনে উন্নীত করতে চান ইয়ান। ঢাকায় অগমেডিক্স কর্মকর্তা আহমেদুল হক বললেন, এরই মধ্যে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ বাংলাদেশি তরুণদের স্ক্রাইবসেবায় দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলার কর্মকাণ্ডে সহায়তা দিচ্ছে। শাকিল বললেন, বিশ্বের জন্য বাংলাদেশ থেকে স্ক্রাইবসেবা দেওয়ার কাজটার সবটুকু তাঁরা একা করতে চান না। এ জন্য অংশীদারদেরও তিনি সঙ্গে নেবেন। অগমেডিক্সের ক্লাউড ও সিস্টেম ব্যবহার করে বাংলাদেশি অন্য কোম্পানিও এই সেবা চালু করতে পারবে।
ইয়ান শাকিলের ইচ্ছা বছর খানেকের মধ্যে বাংলাদেশে তাঁর কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের একটি সভা ঢাকায় আয়োজন করা, যেখানে সিলিকন ভ্যালির বনেদি বিনিযোগকারীরা উপস্থিত থাকবেন। তাঁর ধারণা, অবকাঠামোগত সুবিধার চেয়ে বাংলাদেশের তরুণদের স্বীকৃত মেধার কথা ঠিকমতো তুলে ধরা উচিত। তাতে বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নব্বইয়ের দশকের চীনের মতো বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে পারবে।

বাংলাদেশে ইনফিনিক্সের স্মার্টফোন

বাংলাদেশে ইনফিনিক্সের স্মার্টফোন

 
.বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে স্মার্টফোন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ইনফিনিক্স। ৬ ডিসেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে প্রথম স্মার্টফোন হিসেবে ‘ইনফিনিক্স নোট ৩’ প্রকাশ করা হয়। আগামীকাল বুধবার থেকে ই-কমার্স ওয়েব পোর্টাল দারাজ ডটকম ডটবিডি থেকে স্মার্টফোনটি কেনা যাবে। দারাজ ডটকম ডটবিডি ও ইনফিনিক্স বাংলাদেশের মধ্যে এ নিয়ে এক চুক্তি হয়েছে।
স্মার্টফোন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দারাজ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বেঞ্জামিন দু ফোউসিয়ে, দারাজ গ্রুপের সহপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জোনাথন ডয়ের এবং ইনফিনিক্স বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার কুপার মা।
কুপার মা বলেন, ‘ছয় মাসের প্রস্তুতি শেষে আমরা বাংলাদেশে স্মার্টফোন ছাড়তে যাচ্ছি। প্রাথমিকভাবে দারাজের মাধ্যমে বাজারে মুঠোফোন ছাড়লেও শিগগিরই আমরা যমুনা ফিউচার পার্ক শপিং মলে প্রথম শোরুম উদ্বোধন করব। এ ছাড়া দেশীয় এক মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা চলছে।’|
ছয় ইঞ্চি পর্দার ইনফিনিক্স নোট ৩ স্মার্টফোনে দ্রুত চার্জ এবং সহজে উত্তপ্ত না হওয়ার জন্য অ্যারোস্পেস কুলিং প্রযুক্তি যোগ করা হয়েছে। এতে সাড়ে চার হাজার মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি, অ্যান্ড্রয়েড ৬.০ মার্শমেলো অপারেটিং সিস্টেম, পেছনে ১৩ মেগাপিক্সেল ও সামনে ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা থাকছে। এক বছরের ওয়ারেন্টির পাশাপাশি প্রথম ১০০ দিনের মধ্যে যেকোনো কারণে পর্দা ভেঙে গেলে বিনা মূল্যে তা বদলে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়।

কত দাম হবে নকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের

কত দাম হবে নকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের

এ রকম হতে পারে নকিয়া ডি১সিএ রকম হতে পারে নকিয়া ডি১সিবিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্পেনের বার্সেলোনায় অনুষ্ঠেয় মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যারচালিত নকিয়া ব্র্যান্ডের ফোন বাজারে আনার ঘোষণা দেবে এইচএমডি গ্লোবাল। নকিয়ার কাছ থেকে ব্র্যান্ড নাম ব্যবহারের জন্য লাইসেন্স কিনেছে এইচএমডি গ্লোবাল। নকিয়ার নতুন ফোন বাজারে আসার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে বাজারে এ নিয়ে নানা গুঞ্জন ছড়াচ্ছে। সম্প্রতি নকিয়া পাওয়ার হাউস নামের একটি ওয়েবসাইট থেকে নকিয়ার নতুন ফোন ডি১সির দামের তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

নকিয়া পাওয়ার হাউসের তথ্য অনুযায়ী, নতুন ফোনে এইচএমডি খুব কম লাভ করার চিন্তাভাবনা করছে বলে নকিয়ার অ্যান্ড্রয়েড ফোনের দাম হবে কম। এর ভিত্তিমূল্য হতে পারে ১৫০ মার্কিন ডলার। ডি১সি মডেলের এই ফোনটিতে থাকবে পাঁচ ইঞ্চি মাপের ফুল এইচডি রেজুলেশন দেখাতে সক্ষম ডিসপ্লে, দুই জিবি র‍্যাম। এই ফোনটির আরেকটি সংস্করণের দাম হবে ২০০ ডলার। এতে থাকবে সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি মাপের ডিসপ্লে ও তিন জিবি র‍্যাম।

অবশ্য বাজারে ডি১সি ডিভাইসটি নিয়ে বেশ বিতর্ক আছে। কোনো কোনো ওয়েবসাইটে একে ট্যাবলেট কম্পিউটার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

ফোনটির অন্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে ৬৪ বিটের কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন ৪৩০ অক্টাকোর প্রসেসর, ৩২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। অ্যান্ড্রয়েড নোগাট অপারেটিং সিস্টেমের ফোনটির পেছনে ১৩ ও সামনে ৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা থাকবে।

২৭ ফেব্রুয়ারি মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে ফোনটির ঘোষণা দেবে নকিয়া। এ ছাড়া নতুন ফোন ঘিরে বাড়তি কোনো তথ্য প্রকাশ করেনি নকিয়া কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন পরে নকিয়ার স্মার্টফোন দুনিয়ায় ফেরা হবে এই আয়োজন দিয়ে। তথ্যসূত্র: গ্যাজেটস নাউ।

যে দুই ফোন আনল নকিয়া

যে দুই ফোন আনল নকিয়া

           
ছবি: নকিয়া ১৫০ ও ১৫০ ডুয়াল সিম।মোবাইল ফোনের দুনিয়ায় ফিরে এল নকিয়া। মঙ্গলবার নকিয়া ব্র্যান্ডের দুটি মডেলের ফিচার ফোন উন্মুক্ত করেছে এইচএমডি গ্লোবাল। এই প্রতিষ্ঠানটি নকিয়ার ফোন তৈরি করছে। নকিয়া ১৫০ ও ১৫০ ডুয়াল সিম দুটি ফিচার ফোন। ২০১৭ সালের প্রথম প্রান্তিক থেকেই এশিয়া, ইউরোপের বেশ কিছু বাজারে এ ফোন পাওয়া যাবে।

নকিয়া ১৫০ ও ১৫০ ডুয়াল সিম ফিচার ফোন হওয়ায় এতে ইন্টারনেট সুবিধা নেই। তবে এমপিথ্রি প্লেয়ার, এফএম রেডিও, ব্লুটুথ, এলইডি ফ্ল্যাশসহ ভিজিএ ক্যামেরা আছে। ফোন দুটিতে ২ দশমিক ৪ ইঞ্চি মাপের কিউভিজিএ ডিসপ্লে (২৪০ বাই ৩২০ পিক্সেল) থাকবে। এতে ব্যবহৃত হচ্ছে নকিয়া সিরিজ ৩০ ‍+ অপারেটিং সিস্টেম। এর দাম হবে ২৬ মার্কিন ডলার। দেশ ভিত্তিতে কর যুক্ত হয়ে বিক্রির দাম নির্ধারিত হবে।

এর ব্যাটারি লাইফ ২২ ঘণ্টা। এইচএমডি গ্লোবাল জানিয়েছে, ফিচার ফোনে স্নেক জেনজিয়া গেম থাকবে।

উল্লেখ্য, এত দিন নকিয়ার মোবাইল ফোন বিভাগটি মাইক্রোসফটের অধীনে ছিল। ফিনল্যান্ডের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান এইচএমডি গ্লোবাল নকিয়ার কাছ থেকে ব্র্যান্ড লাইসেন্স ও মাইক্রোসফটের কাছ থেকে নকিয়ার বেসিক ফোনের ব্যবসা কিনে নিয়েছে। আগামী বছর থেকে ফিচার ফোনের পাশাপাশি স্মার্টফোন তৈরি করবে এইচএমডি গ্লোবাল। নকিয়ার নামেই বাজারে পাওয়া যাবে সব ফিচার ও স্মার্টফোন। 

এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপে এখনো নকিয়ার ফিচার ফোনের বাজার রয়েছে।
এক সময়ে মোবাইল ফোন বাজারের শীর্ষস্থানে ছিল নকিয়া। কিন্তু স্মার্টফোনের দুনিয়ায় রূপান্তরের ক্ষেত্রে পেছনে পড়ে যায় ফিনল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানটি। ২০১৪ সালে মাইক্রোসফটের কাছে ফোন ব্যবসা বিক্রি করে দেয়।

অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়েও শক্তিশালী

অ্যান্টিবায়োটিকের চেয়েও শক্তিশালী

           
ক্ষত সারানোর প্রযুক্তিহালকা বিদ্যুৎপ্রবাহ সফলভাবে কাজে লাগিয়ে ওষুধরোধী হয়ে ওঠা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঠেকাতে সক্ষম হয়েছেন গবেষকেরা। তাঁরা ভাবছেন, এ প্রযুক্তি হয়তো দীর্ঘস্থায়ী এবং গুরুতর ক্ষতের সংক্রমণ সারিয়ে তুলতে ব্যবহার করা যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ক্ষত নিরাময়ে অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে হালকা বিদ্যুৎপ্রবাহের সমন্বয়ে সিউডোমোনাস ইরুজিনোসা পিএও ১ ব্যাকটেরিয়া নির্মূলে সফল হন। ‘এনপিজে বায়োফ্লিমস অ্যান্ড মাইক্রোবায়োমিস’ সাময়িকীতে এ গবেষণা-বিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে।
ফুসফুসের রোগ সিসটিক ফিবরোসিসসহ বিভিন্ন দীর্ঘস্থায়ী ক্ষয় রোগের জন্য এ ব্যাকটেরিয়া দায়ী। এ ছাড়া এ ব্যাকটেরিয়ার জন্য নিউমোনিয়াও হতে দেখা যায়।
গবেষকেরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে অ্যান্টিবায়োটিকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষম হয়ে উঠছে ব্যাকটেরিয়া। বিশ শতকের অভূতপূর্ব ওষুধ অ্যান্টিবায়োটিক। কিন্তু এর অতি ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়া এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে।
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণে চিকিৎসকেরা যখন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন, তখন অনেক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায়। কিন্তু যেসব ব্যাকটেরিয়া স্মাইল লেয়ার নামের বায়োফ্লিম তৈরি করে তা অ্যান্টিবায়োটিকেও আর ধ্বংস হয় না। এ ধরনের ব্যাকটেরিয়া কোষ তখন বেড়েই চলে ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষত তৈরি করে।
গবেষকেরা এ ধরনের প্রতিরোধী কোষকে ঠেকাতে অ্যান্টিবায়োটিকের সমন্বয়ে বিদ্যুৎ পরিবাহী কার্বন ফাইবারে তৈরি একধরনের ইলেকট্রনিক ব্যান্ড-এইড ‘ই-স্ক্যাফল্ড’ তৈরি করেছেন। এটি একধরনের বৈদ্যুতিক প্রবাহ তৈরি করে, যা খুব স্বল্পমাত্রার হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড তৈরি করে। এতে ব্যাকটেরিয়া বায়োফ্লিম তৈরি করতে পারে না এবং ব্যাকটেরিয়া ডিএনএ ধ্বংস হয়। এতে অ্যান্টিবায়োটিক ভালো কাজ করে।
গবেষকেরা বলছেন, এই প্রযুক্তিতে যে বিদ্যুৎপ্রবাহ তৈরি হয়, তা সতর্কতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। তা না হলে সঠিক বিক্রিয়া হবে না। এ প্রক্রিয়ায় পাশের কোনো কোষের ক্ষতি হয় না। এই ইলেকট্রো-কেমিক্যাল চিকিৎসার বিরুদ্ধে ব্যাকটেরিয়া কোনো প্রতিরোধ গড়তে পারে না।
গবেষকেরা তাঁদের এ প্রযুক্তির জন্য পেটেন্ট আবেদন করেছেন। এই প্রযুক্তি বাজারে ছাড়তে কাজ শুরু করেছেন তাঁরা। তথ্যসূত্র: পিটিআই।