মঙ্গলবার, ৭ জুন, ২০২২

টিকটককে টেক্কা দিতে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নতুন টুল

টিকটককে টেক্কা দিতে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নতুন টুল

 টিকটককে টেক্কা দিতে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে নতুন টুল

ফেসবুকের মালিকানাধীন কোম্পানি মেটা বৃহস্পতিবার এক ব্লগ পোস্টে নতুন ঘোষণা দিয়েছে। সেই ঘোষণায় তারা জানিয়েছেন, রিলসে নতুন ক্রিয়েটর টুলস আনছে তারা। ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে রিলসে এ সুবিধা পাওয়া যাবে বিশ্বব্যাপী। টিকটককে টেক্কা দিতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নতুন টুলস আনায় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের শর্ট ক্লিপ এডিট করতে টিকটকের সাহায্য নিতে হবে না। রিলস ব্যবহার করে গ্রাহকদের মৌলিক কন্টেন্ট তৈরিতে উৎসাহ দিতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছে মেটা। 

রিলসে এখন থেকে ৯০ সেকেন্ডের ভিডিও আপ করা যাবে। পাশাপাশি ইনস্টাগ্রাম স্টোরির মতো ভিডিওতে ব্যবহার করা যাবে বাহারি স্টিকার। 

রবিবার, ৫ জুন, ২০২২

স্মার্টফোনে ভাইরাস আছে কিনা যেভাবে বুঝবেন

প্রতীকী দৈনন্দিন ব্যবহারে যেকোনো সময় ভাইরাসের শিকার হতে পারে আপনার স্মার্টফোনটি। প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি দিনের বেশিরভাগ সময়ই ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকে। যার কারণে মোবাইল ফোনটি সহজেই ভাইরাসে প্রভাবিত হতে পারে।

স্মার্টফোনে ভাইরাস আছে কিনা যেভাবে বুঝবেন



ফোনে ভাইরাস আছে কি না তা জানা অত্যন্ত জরুরি। কারণ ইতিমধ্যে মোবাইলটি ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ব্যক্তিগত অনেক তথ্যই আপনার অজান্তে চলে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে। বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলো ভাইরাস বা ম্যালওয়্যারের জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই ব্যক্তিগত তথ্য ও মোবাইল ফোনকে সুরক্ষিত রাখতে আগে থেকেই জেনে নিন ভাইরাসে আক্রান্ত হলে আপনার মোবাইলে ঠিক কী কী সমস্যা দেখা দিতে শুরু করবে।

১. ভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রথমেই আপনার মোবাইল ফোনে যে অসঙ্গতি দেখা দেবে তাহলো স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ডাটা বা ইন্টারনেট প্যাক খরচ হওয়া।

২. হোম স্ক্রিন বার বার বদলে যাওয়া ফোন ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একটি লক্ষণ।

৩. ফোনের ব্যাটারি খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হলে বুঝবেন আপনার ফোনটি ভাইরাসে আক্রান্ত।

৪. অনেক ফোনে সন্দেহজনক বিজ্ঞাপন আসা শুরু হয়। বার বার এই ধরনের বিজ্ঞাপন আপনার কাজে বাধা দিতে শুরু করে।

৫. একই অসঙ্গতি মোবাইলে বার বার লক্ষ্য করলে এটিও ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একটি লক্ষণ হতে পারে।

৬. প্রয়োজনীয় কাজ করার সময় ফোনের স্বাভাবিক গতি আর পাবেন না। প্রায়ই ফোন হ্যাং সমস্যায় ভুগতে শুরু করবে।

ফোনে এমন সমস্যা দেখা দিলে ভাইরাস ঠেকাতে আপনি কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারেন। যেমন-

১. যদি মোবাইলে কোনো নতুন অ্যাপ ইনস্টল করে থাকেন তবে তা ভাইরাস ফাইন্ডিং অ্যাপ দিয়ে দ্রুত চেক করুন। যদি চেক করার পর তা লাল রং দেখাতে থাকে তবে অ্যাপ আনইনস্টল করুন। এরপর ফোনের সেটিংস থেকে আপনার ব্রাউজার ক্যাশ পরিষ্কার করুন। নিয়মিত অ্যান্টি-ভাইরাস অ্যাপসের মাধ্যমে মোবাইল স্ক্যানিং করুন। ব্যবহৃত সফটওয়্যার আপডেট করুন। ফোনের গতি বাড়াতে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস ও ছবি মোবাইল থেকে ডিলিট করুন।

যদি তারপরও মোবাইলে ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সমস্যাগুলো লক্ষ্য করেন তবে ব্যাটারি ড্রেন ঠিক করতে ও মেরামত করতে ফ্যাক্টরি রিসেট করুন। তবে এই কাজটি করার আগে অবশ্যই আপনার মোবাইলের গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো ব্যাক আপ করে নেবেন। তা না হলে রিসেট করার কারণে এই প্রয়োজনীয় ফাইল আপনি আর খুঁজে পাবেন না।

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ কোনটি? এবং তার নিষ্পত্তির ফলাফল কেমন ছিল?

১৯৮৫ সাল। লন্ডনে অবস্থিত নেদারল্যান্ডস দূতাবাস অদ্ভুত একটি চিঠি পায়। চিঠিটি লেখেছেন ইংল্যান্ডের স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রদেশ সিসিলি দ্বীপপুঞ্জের কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় ইতিহাসবিদ রয় ডানকান। তিনি জানান, তাদের এলাকায় একটি লোকগল্প প্রচলিত যে, অনেক অনেক বছর আগে ডাচরা সিসিলিবাসীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে এবং কাগজে-কলমে যুদ্ধটা এখনও চলছে। ডালকান জানান তিনি ঘাঁটাঘাঁটি করে লোকগল্পটির সত্যতার ব্যাপারে কিছু তথ্য-প্রমাণ পেয়েছেন। তিনি এর পুরো রহস্য উন্মোচনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রতি আহ্বান জানান। ডাচ দূতাবাস খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে ঘটনা সত্য। ঘটনাটি ঘটে ইংল্যান্ডের গৃহযুদ্ধের (১৬৪২-১৬৫১) সময়। রাণী প্রথম এলিজাবেথ যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন ডাচরা ইংল্যান্ডের কাছ থেকে অনেক সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছিল। কৃতজ্ঞতাস্বরূপ, নেদারল্যান্ডস ছিল ইংল্যান্ডের বন্ধু রাষ্ট্র। ইংল্যান্ডে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে ডাচরা নিরপেক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে। রয়ালিস্টিক বাহিনী বা পার্লামেন্টারিয়ান বাহিনী কোন পক্ষকেই সেই সময় তারা সমর্থন দেয় নি।

যে দল জিতবে তাদের পক্ষেই তারা যাবে- এমনই ছিল ডাচদের মনোভাব। যুদ্ধে একসময় পার্লামেন্টারিয়ানদের আধিপত্য বিস্তার হতে থাকে। রাজা চার্লসের অনুগত রয়ালিস্টিক বাহিনী পিছু হটতে থাকে, হাতছাড়া হতে থাকে একের পর এক শহর। পার্লামেন্টারিয়ানদের জয় নিশ্চিত দেখে ডাচরা পার্লামেন্টারিয়ানদের সমর্থন দেয়। রাজা ও রাজপরিবারের অনুগত রয়ালিস্টিক বাহিনী এই সিদ্ধান্তকে বিবেচনা করে নিখাদ বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে। পার্লামেন্টারিয়ান বাহিনীর দাপটে রয়ালিস্টিক বাহিনী বলতে গেলে ইংল্যান্ড ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। রয়ালিস্টদের সর্বশেষ শক্ত ঘাঁটি ছিল ইংল্যান্ডের সমুদ্র তীরবর্তী এলাকা কর্নওয়াল ( Cornwall) থেকে ৪৫ কি.মি. পশ্চিমে অবস্থিত ছোট্ট দ্বীপপুঞ্জ সিসিলি। গৃহযুদ্ধের শেষ বছর (১৬৫১) সিসিলিতে অবস্থানরত রয়ালিস্টদের যুদ্ধজাহাজের আক্রমণে ডাচ নেভির একটি জাহাজ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

এ ঘটনার পর ডাচ অ্যাডমিরাল মার্টেন হারপারর্টজোন ট্রুম্প ৩০ মার্চ, ১৬৫১ তারিখে সিসিলিতে আসেন এবং রয়ালিস্টদের কাছে ক্ষতিপূরন দাবি করেন। স্বাভাবিকভাবেই রয়ালিস্টরা সে দাবী প্রত্যাক্ষান করে। ক্ষুব্ধ ডাচ অ্যাডমিরাল সিসিলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। যদিও সিসিলি ছিল ইংল্যান্ডের অধীন, কিন্তু অ্যাডমিরাল ট্রুম্প ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা না করে শুধু সিসিলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। কারণ, সিসিলি বাদে ইংল্যান্ডের অন্যান্য অংশ তখন পার্লামেন্টারিয়ানদের নিয়ন্ত্রণে ছিল, যাদেরকে ডাচরা সমর্থন দিয়েছিল। যুদ্ধ ঘোষণা করে অ্যাডমিরাল ট্রুম্প একটিও গুলি বা গোলা না ছুড়ে জাহাজ নিয়ে দেশে ফিরে যান। সে বছরই, রয়ালিস্টদের হটিয়ে পার্লামেন্টারিয়ানরা সিসিলিতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে। ফলে, রয়ালিস্টদের সাথে আর ডাচদের যুদ্ধ করার সুযোগ হয় না। একসময় ডাচরা তাদের এই যুদ্ধের কথা ভুলেই যায়। লোকগল্প হিসেবে এই যুদ্ধের কথা সিসিলিবাসীর প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। মূল ঘটনার সাথে যুক্ত হয় নানা কাহিনি, নানা রং - কেটে যায় প্রায় তিনশ বছর।

নেদারল্যান্ডসের লন্ডন দূতাবাস আনুষ্ঠানিকভাবে এই যুদ্ধের কথা স্বীকার করে নিলে রয় ডানকান লন্ডনে অবস্থিত ডাচ কূটনীতিককে সিসিলিতে আমন্ত্রণ জানান শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করার জন্য। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ১৯৮৬ সালের ১৭ এপ্রিল ডাচ রাষ্ট্রদূত রেইন হাইডিকপার হেলিকপ্টারে করে লন্ডন থেকে সিসিলি আসেন এবং শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অবসান হয় একটি রক্তপাতহীন যুদ্ধের, রচিত হয় নতুন একটি ইতিহাসের। এ যুদ্ধই পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী যুদ্ধ। যুদ্ধ চলে একটানা ৩৩৫ বছর। গুলি বা গোলা ছোড়া হয় নি একটিও। আহত বা নিহত হয় নি একজনও। চুক্তি স্বাক্ষর করতে গিয়ে ডাচ রাষ্ট্র দূত হেসে মজা করে বলেন, “গত ৩৩৫ বছর যাবত সিসিলিয়ানরা আতঙ্কে থাকত কখন জানি নেদারল্যান্ডস সিসিলি আক্রমণ করে বসে!” এই চুক্তি স্বাক্ষরের বিরুদ্ধে অনেক বিশেষজ্ঞ বলেন, এই চুক্তিস্বাক্ষরের কোন প্রয়োজন ছিল না। একটি দেশ কখনও আরেকটি দেশের একটি অংশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করতে পারে না। তাছাড়া অ্যাডমিরাল ট্রুম্প সিসিলির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার জন্য নেদারল্যান্ডসের উচ্চপর্যায় থেকে অনুমতিপ্রাপ্ত ছিলেন না। তাই রাগের মাথাতেই হোক বা রয়ালিস্টদের ভয় দেখানোর জন্যই হোক, অ্যাডমিরাল ট্রুম্পের এই যুদ্ধ ঘোষণা আইনত কার্যকর হয় নি। আর আইনত যুদ্ধ যদি শুরু হয়েও থাকে তবু এটা ১৬৫৪ সালে অবসান হয়ে যাবার কথা। কারণ, ইংল্যান্ড-হল্যান্ড যুদ্ধের পর ১৬৫৪ সালে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের মাঝে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। সিসিলি যেহেতু ইংল্যান্ডের অধীন তাই সিসিলির ক্ষেত্রেও শান্তিচুক্তিটি কার্যকর হবে। তবে এই চুক্তি স্বাক্ষরের কারণে একটি ইতিহাস নতুন করে জানার মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সিসিলিয়ানদের মাঝে রং-চং মিশিয়ে যে গুজব আর লোকগল্প চালু ছিল তার অবসান হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষরের দিন সিসিলির কাউন্সিলের চেয়ারম্যান রয় ডালকান বলেন, “গত কয়েক শতক ধরে সিসিলিয়ানদের মাঝে একটা হাস্যকর গুজব চালু ছিল, এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে তার অবসান হল।”

হ্যাকিং-এর কাজ করতে কোন ধরণের পিসি লাগবে?

প্রথমেই বলি - হ্যাকিং এর জন্য সাধারণ একটি কম্পিউটার দিয়েও অনেক কাজ করা সম্ভব। Manually বিভিন্ন টুলস সেটাপ দেয়া সম্ভব। তবে কিছু হ্যাকিং টেকনিক এপ্লাইয়ে দ্রুত গতি বা উচ্চ ক্ষমতার প্রয়োজন পড়ে। সেজন্য নূন্যতম যেরকম কম্পিউটার হওয়া উচিত :

১. প্রসেসর : অন্তত core i5 হলে ভাল হয়। i7 বা তার বেশি হলে আরও ভাল। AMD এর প্রসেসর ও নিতে পারেন চাইলে। সেক্ষেত্রেও Ryzen 5 বা তার বেশি কোনটা নিতে পারেন।

২. RAM : নূন্যতম ৮ জিবি থাকা ভাল। তবে ১২-১৬ জিবি বা তার বেশি RAM হলে ভাল। অনেক লোড নিতে পারে কম্পিউটার।

৩. স্টোরেজ : SSD স্টোরেজ অবশ্যই থাকা চাই। অন্তত ২৫৬ জিবি বা এর কাছাকাছি থাকা দরকার। HDD স্টোরেজ যত ইচ্ছা রাখতে পারেন সাথে।

৪. গ্রাফিক্স মেমোরি : গেমিং কম্পিউটারের মতো খুব বেশি মেমোরি দরকার নেই। তবে ২ - ৪ জিবি মেমোরি থাকা ভাল। এতে করে কিছু টুলস রান করতে সুবিধা হয়।

আমি নির্দিষ্ট করে কোন কম্পিউটার মডেল বা সাইটের লিংক দিতে চাই না কারণ সেটাকে কেউ কেউ বিজ্ঞাপন বলে মনে করতে পারে। তবে উপরে লেখা কনফিগারেশন দেখে অনলাইনেই বিভিন্ন কম্পিউটার মডেল খুঁজে পাবেন। এরপর সেগুলোর রিভিউ ভিডিও দেখবেন ইউটিউবে। রিভিউ ভিডিও দেখে কম্পিউটারের পারফরম্যান্স কেমন হচ্ছে সেটা বুঝে তারপর কম্পিউটার কিনে ফেলবেন।


ওয়াই-ফাই প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে, সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ বিবরণ কেউ বলতে পারবেন?

Wi-Fi, WiFi বা Wifi এর পূর্নরূপ Wireless Fidelity। এই নামকরণের মধ্যে তেমন কিছু নেই, শুধুমাত্র মার্কেটিং টার্ম।

ওয়াইফাই টিভি, রেডিও, সেলফোন এর মতোই রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করে ডেটা ট্রান্সমিট করে। রেডিও ওয়েভ হচ্ছে ইলেক্ট্রোম্যাগ্নেটিক ওয়েভ, ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ আলোর বেগে চলে ভ্যাকিউমে এবং পৃথিবীতে আলোর বেগের চেয়ে সামান্য কম বেগে চলে। রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ১ কিলো হার্জ থেকে ১০০ গিগাহার্জ পর্যন্ত। যা আমাদের ভিজিবল স্পেকট্রামের বাইরে তাই আমরা ওয়াইফাই তরঙ্গ দেখতে পাইনা।

ওয়াইফাই ডেটা ট্রান্সমিশনের জন্য ২.৪ গিগাহার্জ এবং ৫ গিগাহার্জ ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে যা মোবাইল, টিভি, রেডিও, ওয়াকি টকি এসব থেকে অনেক বেশি। ২.৪ গিগাহার্জ ফ্রিকোয়েন্সিতে কাভারেজ বেশি পাওয়া যায় কিন্তু গতি কম পাওয়া যায় তবে ৫ গিগাহার্জে কাভারেজ কম থাকলেও গতি অনেক বেশি পাওয়া যায়। ২.৪ গিগাহার্জের সর্বোচ্চ ত্বাত্তিক দূরত্ব ৮২০ ফুট, গতি ৬০০ এম্বিপিএস এবং ৫ গিগাহার্জের সর্বোচ্চ ত্বাত্তিক দূরত্ব ৩৯০ ফুট, গতি ১৩০০ এম্বিপিএস। তবে বাস্তবে দূরত্ব এবং গতি দুটোই অনেক কম পাওয়া যায়।

ওয়াইফাই ফ্রিকোয়েন্সি অন্য সব রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির মতোই বাঁধা প্রাপ্ত হয় অন্য যেকোনো রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির সাথে। ইট, পাথর, কংক্রিট, গ্লাস, কাঠ এসব ভেদ করতে পারলেও সিগন্যাল দুর্বল হয়ে যায়। তাই ডেটা লস বাড়ে এবং সিগন্যাল স্ট্রেন্থ কমে যায়।

ওয়াইফাই এর কিছু ভার্সন এবং স্টান্ডার্ড আছে। যেমন 802.11b, 802.11a, 802.11g, 802.11n, 802.11ac, 802.11ax, 802.11be. ক্রমান্বয়ে এই ভার্সন গুলোতে ওয়াইফাই এর রেঞ্জ, স্পিড এবং সিকিউরিটি উন্নত করা হয়েছে। ওয়াইফাই ভার্সন এবং স্টান্ডার্ড সহ ফিচার গুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে হলে এক্সেস পয়েন্ট বা রাউটার এবং ক্লায়েন্ট ডিভাইস গুলো তা সমর্থন করতে হবে।

ওয়াইফাই রাউটার সাধারণত যেকোনো ডিজিটাল বাইনারি ডেটাকে এনালগ রেডিও ওয়েভে কনভার্ট করে এবং কাভারেজের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়। তাই এই ডিভাইস কে এক্সেস পয়েন্ট বলা হয়। কিন্তু আমাদের হোম রাউটারে একসাথে সুইচ, রাউটার, এক্সেসপয়েন্ট, ফায়ারওয়াল সব একসাথে থাকে তাই তারপরেও একে সহজে বুঝার জন্য রাউটার বলা হয়। এক্সেস পয়েন্টে আমাদের ক্লায়েন্ট ডিভাইস গুলো কানেক্ট হয় এবং এক্সেস পয়েন্টের থেকে আসা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ক্যাপচার করে। এবার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি কনভার্ট করা হয় ইলেকট্রিকাল বাইনারি সিগন্যালে আর আমরা জানি আমাদের সব ডিজিটাল ডিভাইস কাজ করে বাইনারিতে।

এক্সেস পয়েন্ট বা রাউটার এতগুলো ক্লায়েন্টের মধ্যে কিভাবে বুঝে কার ডেটা কাকে দিতে হবে?
প্রথম যখন আমরা এক্সেস পয়েন্টের সাথে কানেক্ট হওয়ার জন্য আমাদের ডিভাইস থেকে ওয়াইফাই সার্চ করি তখন আমারা ওয়াইফাই এর নাম দেখতে পাই। যাকে বলা হয় SSID. এই SSID রাউটার সবসময় ব্রডকাস্ট করতে থাকে। যখন কোন ডিভাইস সেই SSID তে কানেক্ট হওয়ার জন্য রিকোয়েস্ট পাঠায় তখন রাউটার এর নির্দিস্ট পাসওয়ার্ড দিতে হয়। পাসওয়ার্ড সঠিক হলে রাউটার সেই ডিভাইসের আইপি এবং ম্যাক এড্রেস সেইভ করে নেয়। পরবর্তিতে ডেটা ট্রান্সমিট করার সময় আবার আইপি দিয়ে ব্রডকাস্ট করে। ক্লায়েন্ট গুলো নিজেদের আইপির ডাক পেলে ডেটা রিসিভ করে নেয়।

এক্সেস পয়েন্টের চ্যানেল এবং উইথ কি?
ওয়াইফাই তার ফ্রিকোয়েন্সিকে অনেকগুলো ভাগে ভাগ করে এবং সেগুলোতে সুবিধা অনুযায়ী শিফট করে। এসব ভাগকে বলা হয় চ্যানেল আর উইথ হচ্ছে চ্যানেল গুলো কতটুকু প্রসস্থ সেটা। সহজে বুঝার জন্য মনে করুন ওয়াইফাই থেকে আসা ফ্রিকোয়েন্সি হচ্ছে একটা হাইওয়ে। চ্যানেল হচ্ছে সেই হাইওয়ের লেন এবং উইথ হচ্ছে লেন গুলো কতটুকু চওড়া।
এক্সেস পয়েন্ট সব সময় চেষ্টা করে সেই লেন ব্যবহার করতে যে লেনে ভিড় কম সে এবং বেশি ডেটা কম সময়ে পাঠানো যায়। তবে এলগোরিদম সবসময় অপ্টিমাম সলুশান দিতে পারেনা তাই কেউ চাইলে তার লোকেশনের আশেপাশের সিগন্যাল এনালাইজ করে চ্যানেল এবং উইথ কাস্টমাইজ করতে পারে।

ওয়াইফাই ভালো নাকি কেবল কানেকশন ভালো?
অবশ্যই কেবল কানেকশন ভালো। ওয়াইফাই তে প্যাকেট লস বেশি হয় বার বার কনভার্শন কারণে, সিগন্যাল দুর্বল হলে ল্যাটেন্সি বেড়ে যায়। বেশি কায়েন্ট কানেক্ট হলে রাউটার সবাইকে সার্ভ করতে সময় বেশি নেয়। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো সিকিউরিটি। রাউটার হ্যাক করা সম্ভব। হ্যাক করে প্যাকেট এনালাইজ করা সম্ভব। কাস্টম ডিএনএস বসিয়ে সব ক্লায়েন্টের লগ দেখা সম্ভব। যদিও ম্যাক্সিমাম ডেটা এনক্রিপ্টেড থাকে কিন্তু এর মানে এই না যে ক্র্যাক করা যায়না। তবে সময় এবং দক্ষতার প্রয়োজন।

ওয়াইফাই কি শরীরের ক্ষতি করে?
একদমই না। ওয়াইফাই নন আয়োনাইজিং রেডিয়েশন নির্গত করে যা কোনো প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর না। উপরের ছবিতে দেখবেন ভিজিবল আলোর চেয়েও ওয়াইফাই কতটা দূর্বল। যদি ওয়াইফাই রেডিয়েশন আমাদের ক্ষতি করতো তাহলে আমরা সাধারণ লাইট বাল্ব এর রেডিয়েশনে মরে যেতাম।