বুধবার, ১৩ জুলাই, ২০২২

কেউই চিনত না হলেন বিশ্বতারকা

কেউই চিনত না হলেন বিশ্বতারকা


কেউই চিনত না হলেন বিশ্বতারকা

সেলসম্যানের কাজ করতেন কেএফসির মালিক কর্নেল স্যান্ডার্স

স্যান্ডার্সকে পুরো পৃথিবী চেনে তার কেএফসি রেস্টুরেন্ট ব্যবসার কারণে। কেএফসির পুরো নাম কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন। কর্নেল হারল্যান্ড ডেভিড স্যান্ডার্স কেএফসি বা কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেনের প্রতিষ্ঠাতা। কেএফসি প্রতিষ্ঠার আগে যিনি জগতের এমন কোনো কাজ নেই যার সঙ্গে নিজেকে জড়াননি। খুব ছেলেবেলায় স্কুল থেকে ঝরে পড়েন ডেভিড। এরপর কাজ করেছেন ক্ষেতমজুরের, ট্রেনের ফায়ারম্যান, সেলসম্যান, আইনজীবী, গাড়ির টায়ার বিক্রেতা বা ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী হিসেবে। শুধু কি তাই? শখের বশে বেশ কিছুদিন ধাত্রী বিশারদের কাজও করেছেন। নাম লিখিয়েছিলেন রাজনীতিতেও। শেষমেশ তিনি নেমে পড়েন রেস্টুরেন্ট বিজনেসে। পাঁচ বছর বয়সে তার বাবা মারা গেলে মা পরে আবার বিয়ে করেন। সে সময় দরিদ্রতার কারণে তিনি গৃহহীন ছিলেন।

 

দরিদ্রতার কারণে খাবার কুড়িয়ে খেতে হয়েছে চার্লি চ্যাপলিনকে

শৈশব সম্পর্কে চার্লি চ্যাপলিন বলেন, যদি ভাগ্য সহায় না হতো, তাহলে আমি লন্ডনের পথে পথে চুরি করে বেড়াতাম। আর বেওয়ারিশ লাশ হয়ে কবরে যেতে হতো। মা ও ভাইয়ের সঙ্গে দক্ষিণ লন্ডনের একটি শহরে বিভিন্ন বাড়িতে ভাড়া থাকতেন চ্যাপলিন। ভাড়া দিতে না পারায় প্রায়ই তাদের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হতো। এভাবে তাড়া খাওয়ার চাইতে চ্যাপলিন পার্কের বেঞ্চিতে ঘুমাতেই বেশি পছন্দ করতেন। চার্লি একটি মুদির দোকানেও কিছুদিন কাজ করেছিলেন। সেখানে কাজ চলে যাওয়ার পরে কাজ নিয়েছিলেন একটি ডাক্তারখানায়। সেখানেও কাজ চলে যাওয়ার পরে লোকের বাড়ির বাসন মাজার কাজে লেগে পড়েন চার্লি। এক কাচের কারখানা, রঙের দোকান, লোহার দোকান, ছাপাখানা, খেলনা কারখানা, কাঠচেরাই কল, কাগজ বিক্রি ইত্যাদি নানা কাজের মধ্যে তিনি যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন। বাল্যকাল কেটেছে তার অত্যন্ত দরিদ্রতার মধ্য দিয়ে।  ফুটপাতে রাত কাটানো এমনকি পচা খাবার কুড়িয়েও খেতে হয়েছে তাকে। অবশ্য কর্মগুণে ও অভিনয় প্রতিভা দিয়ে তিনি মানুষের মন কেড়ে নেন। অর্থ ও সম্মান দুটিই কুড়ান।

 

বাড়ি না থাকায় পথে পথে ঘুরতে হয়েছিল হ্যালি বেরিকে

অভিনয় জীবনের দুই যুগেরও বেশি সময় পার করেছেন ‘বেরিনস্টার বল’ খ্যাত অস্কারজয়ী অভিনেত্রী হ্যালি বেরি। কৃষ্ণাঙ্গী এই অভিনেত্রী এখনো অভিনয়শৈলীর মাধ্যমে অজস্র তরুণের মন হরণ করে নিচ্ছেন। ভক্তরা তাকে ডাকে ‘ব্ল্যাক ডায়মন্ড’ বলে। তবে এ অভিনেত্রীর জীবনেও দরিদ্রতার চাবুক লেগেছে। দুটি ব্যর্থ বিয়ে, কিছু ব্যর্থ প্রেমের সম্পর্কের পর আত্মহত্যা করতে বসেছিলেন তিনি। অবশ্য এসবকে ছাপিয়ে যায় তার অতীত। একটা সময় ছিল যখন রাত কাটানোর মতো একটা ছাদ ছিল না তার। সে সময় তিনি অভিনয়ে নামেননি। এত জনপ্রিয়তা ও টাকা কোনোটাই ছিল না। রিডার ডায়জেস্টকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ সত্যটি প্রকাশ করেন। বাড়ি না থাকায় তাকে পথে পথে ঘুরতে হয়েছিল। অস্কারজয়ী এ খ্যাতিমান আফ্রো-আমেরিকান অভিনেত্রী ২৪ বছরের ক্যারিয়ারে অর্ধশতাধিক দর্শকনন্দিত ছবিতে অভিনয় করেছেন।  ২০০৮ সালে তিনি ‘মনস্টার বল’ ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের জন্য অস্কার জয় করেন। অভিনয়গুণে তিনি একাধারে অ্যামি অ্যাওয়ার্ড, গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডসহ অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেন।

 

থাকার ঘর ছিল না স্টিভ জবসের

প্রযুক্তি জগতের বাদশাহ বলে মানা হতো তাকে। তিনি স্টিভ জবস। অ্যাপলের সঙ্গে যার নাম জড়িয়ে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের এই উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবককে পার্সোনাল কম্পিউটার বিপ্লবের পথিকৃৎ বলা হয়। অনেকে এটাও বলেন, বিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে  প্রভাবশালী ও প্রতিভাবান প্রযুক্তি ভাবনার অধিকারী ছিলেন তিনি। তিনি স্টিভ ওজনিয়াক এবং রোনাল্ড ওয়েনের সঙ্গে ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে অ্যাপল কম্পিউটার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি অ্যাপল ইনকরপোরেশনের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

এ ছাড়া পিক্সার অ্যানিমেশন স্টুডিওস-এরও প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। টাকা আর সাফল্য শব্দ দুটিকে তিনি জয় করে নেন। এত বিত্ত ও প্রাচুর্য যে মানুষটিকে ডুবিয়ে দিয়েছিল সেই মানুষটিও এক সময় ছিলেন গৃহহীন। তিনি নিজেই স্বীকার করেছিলেন যে, শিক্ষার্থী থাকাকালীন তার দৈন্যদশা ছিল। সে সময় থাকার একটি ঘরও তার ছিল না। তাই রাত কাটাতে হতো সহপাঠীর কক্ষের মেঝেতে। পকেটে টাকা ছিল না বলে প্রতি রবিবার সাত মাইল হেঁটে এক চার্চে যেতেন ভালোমন্দ কিছু খেতে।

 

ডেনিয়েল ক্রেইগের পকেট ছিল ফাঁকা

হলিউড কাঁপানো অভিনেতা ডেনিয়েল ক্রেইগকে অনেকেই চেনেন হালের জেমস বন্ড হিসেবে। ২০০৫ সালে জেমস বন্ড সিরিজের জন্য প্রস্তাব পান হলিউড অভিনেতা ডেনিয়েল ক্রেইগ। তখন তার বয়স ছিল ৩৭ বছর। ক্যারিয়ার নিয়ে অনেকটা বিপাকেও ছিলেন তিনি। হিট করার মতো কোনো গল্প মনে মনে খুঁজে ফিরছিলেন তিনি। এমন সময় জেমস বন্ড থেকে হঠাৎই অফার আসে তার কাছে। অভিনয়ের সুযোগ পাওয়া মাত্রই রাজি হয়ে যান তিনি। সেই শুরু। টানা এক যুগ এ সিরিজের প্রতিটি মুভিতে দেখা গেছে তাকে। তার সর্বশেষ বন্ড সিনেমাটিও মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করে নেয় খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে। এখন ব্যক্তিগত সম্পদের পাহাড় জমালেও একসময় এই বন্ডের পকেটে কানাকড়িও ছিল না। সেই দুঃসময়ের কথা ডেনিয়েল বারবার বলেছেন। ডেনিয়েল ক্রেইগ তখন সিনেমার জগতে নাম লেখাননি। কাজ নেই। শহরের পথে পথে ঘুরতেন। ভালো০ খেতে পেতেন না। ঘুমানোর জায়গা ছিল না বলে রাত কাটাতেন পার্কে। গৃহহীন তারকার খেতাবটি তাই তার কপালেও জুটেছে।

 

জেলে পরিবারের সন্তান সনাথ জয়সুরিয়া

সনাথ তিরান জয়সুরিয়া, শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপ জয়ী ক্রিকেট দলের সুপারস্টার। খ্যাতিমান তারকা হলেও তার ছেলেবেলা কেটেছিল গরিবি হালতে। শ্রীলঙ্কার মাতারায় একটি জেলে পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন তিনি। বাবা দানস্তান সাগরে মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করতেন। দারিদ্র্যের টানাপড়েনে পরিবার এতটাই অসহায় ছিল যে, বাবা ছেলেকে নিয়ে মাছ ধরতে যেতেন। সেদিন কি কেউ ভেবেছিল যে, সেই জেলের ছেলেই হবে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেট সুপারস্টার? ছোট থেকেই ক্রিকেটের প্রতি তার আগ্রহ ছিল প্রখর। ৯ বছর বয়সে টেনিস বল হাতে নিয়ে মাঠে ছুটে যেতেন। ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ পেয়েই বাজিমাত করেছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় সনাথ জয়সুরিয়া। সময়ের পরিক্রমায় তিনি এখন বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার। ক্রিকেটীয় জীবনে যেমন হ্যারিকেন ছিলেন ব্যক্তিজীবনেও ছিলেন দুরন্ত। জাতিসংঘের গুডউইল দূত হয়েছেন। ২০১০ সালে মূলধারার রাজনীতিতে যোগ দেন। পোস্টাল সার্ভিসের প্রতিমন্ত্রী হন।  তিনি শ্রীলঙ্কার জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

 

ডান্স রুমে ঘুমাতেন জেনিফার লোপেজ

জেনিফার লোপেজ একাধারে অভিনেত্রী, সংগীত শিল্পী, বিনোদন তারকা, ব্যবসায়িক উদ্যোক্তা ও প্রযোজক। এ ল্যাতিন তারকা সবচেয়ে বেশি নাম কুড়িয়েছেন সংগীতে। লাইভ কনসার্টগুলোতে তার গানের সঙ্গে নাচ বেশ জনপ্রিয়। জেনিফার লোপেজ ১৯৮৬ সালে মাই লিটল গার্ল নামক ছবির ছোট্ট একটি চরিত্রের মাধ্যমে বিনোদন জগতে প্রবেশ করেন। তিনি ১৯৯১ সালে ‘ইন লিভিং কালার’ শিরোনামের এক অনুষ্ঠানে নাচের মাধ্যমে বিনোদন জগতে যাত্রা শুরু করেন। সিনেমা জগতেও তার দাপট রয়েছে। চলচ্চিত্রে অভিনয় করে জেনিফার লোপেজ লাতিন আমেরিকার প্রথম অভিনেত্রী হিসেবে ১০ লাখ ডলার পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২৫০ মিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে বহু আগেই। এখনো তার আয়ের ক্ষেত্রগুলো দিয়ে বাতাসের বেগে টাকা আসছে। অথচ এক সময় ছিল পুরো বিপরীত চিত্র। জনপ্রিয়তা পাওয়ার আগে চরম অর্থ সংকটে ভুগতে হয়েছে তাকে। মাকে নিয়ে ঘুমিয়েছেন ডান্স রুমে। সেখানে সোফায় গাদাগাদি করে শুতে হতো তাকে। শুরুর দিকে মা না চাইলেও এক সময় নাচেই প্রতিষ্ঠা পান তিনি।

 

ঘরে ঠিকমতো খাবার মিলত না জিম ক্যারির

সবচেয়ে ধনী কমেডি অভিনেতা জিম ক্যারি। এ কানাডিয়ান-আমেরিকান কমেডি অভিনেতা গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ডের জন্য পাঁচবার মনোনীত হয়েছেন এবং জয় করেছেন দুবার। তার অসাধারণ অভিনয় দক্ষতা এবং প্রখর ব্যক্তিত্বের কারণে তাকে হলিউডের অন্যতম বড় তারকা বিবেচনা করা হয়। ১৯৯০ সালে স্কেচ কমেডি ইন লিভিং কালার মুভিতে প্রথম আবির্ভূত হন জিম। ১৯৯৭ সালে লায়ার লায়ার মুভিতে অভিনয় করে দারুণভাবে প্রশংসিত হন ক্যারি। এ মুভিটি তাকে সেরা অভিনেতা ক্যাটাগরিতে গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড এনে দেয়। এখন ১৫০ মিলিয়ন ডলারের মালিক হলেও এক সময় তার পরিবার দরিদ্রতায় ডুবে ছিল। বাবার চাকরি ছিল না, ঘরে ঠিকমতো খাবার মিলত না তার। বাড়ি নেই বলে ভ্যানে করে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে বেড়াত তার পরিবার।

 

রেস্টুরেন্ট গার্ল শাকিরার বিশ্বজুড়ে খ্যাতি

সিনেমার নায়িকা বা মডেল নন, তবে মঞ্চ কাঁপান কণ্ঠে রিদমিক গান আর কঠিন নাচের কম্বিনেশন দিয়ে। প্রজন্মের হার্টথ্রব শাকিরা। ছোটবেলাতেই দারিদ্র্যের ঝড় হয়তো তাকে উড়িয়ে দিতে পারত। কিন্তু কঠিন লক্ষ্যভেদী এই নারী জয় করেছেন সব কষ্টকে। এক সময় রেস্টুরেন্টে কাজ করলেও আজ বিশ্বতারকা। শাকিরা ইসাবেল মেবারাক রিপোল। গানের জাদুতে পৃথিবী বিখ্যাত শাকিরা। কলম্বিয়ার বারানকিলাতে জন্মেছেন ১৯৭৭ সালে। কলম্বিয়ান এই গায়িকা একই সঙ্গে গীতিকার, সুরকার, সংগীত প্রযোজক, নৃত্যশিল্পী ও জনহিতৈষী হিসেবেও খুব পরিচিত। স্কুল জীবনে সরাসরি উপস্থাপনার মাধ্যমে নিজের প্রতিভার প্রকাশ ঘটাতে শুরু করেন। সেখানে তার নিজস্ব বেলি ড্যান্সিংয়ের সঙ্গে কণ্ঠে সার্থকভাবে রক অ্যান্ড রোল, ল্যাটিন, পূর্ব মধ্যপ্রাচ্যের সংগীত ফুটিয়ে তুলতেন। শাকিরার মাতৃভাষা স্প্যানিস হলেও, তিনি অনর্গল ইংরেজি, পর্তুগিজ এবং ইতালীয় ভাষায় কথা বলতে পারেন। বিত্তশালী পরিবারে জন্ম হলেও হঠাৎই তাদের পরিবারে নেমে আসে চরম অনিশ্চয়তা। তখন শাকিরার বয়স মাত্র আট বছর। ব্যবসায় ধস নামলে শাকিরার বাবা অর্থাভাবে নিজেকে দেউলিয়া ঘোষণা করেন। ভরণপোষণের দায়িত্ব ছেড়ে দেন আত্মীয়দের ওপর। কিছুদিন পর শাকিরা নিজ শহরে ফিরে এসে দেখেন তাদের আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। শাকিরার গান-নাচ সব থেমে যাওয়ার উপক্রম। শত প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি নিজের আত্মবিশ্বাস অটুট রেখে সংগীতচর্চা অব্যাহত রাখেন। গানের টানে শাকিরা নিজ শহর বারানকিলা থেকে চলে যান রাজধানী শহর বোগোটায়। শুরুতে নিজের খরচ চালানোর জন্য বেশ পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। বার, রেস্টুরেন্টসহ বেশ কিছু জায়গায় পার্টটাইম কাজ করেছেন।

পাশাপাশি ঘরে ও বন্ধুদের সামনে অব্যাহত রেখেছেন গান শোনানো। কলম্বিয়ার স্থানীয় প্রযোজকদের সহায়তায় শাকিরার সংগীত জীবনের প্রথম দুটি অ্যালবাম প্রকাশ পায়। দুর্ভাগ্য যে, সেগুলো কলম্বিয়ার বাইরে খুব একটা পরিচিতি পায়নি। পরবর্তীতে শাকিরা নিজেই অ্যালবাম প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নেন। ১৯৯৫ সালে প্রকাশ করেন অ্যালবাম ‘পিয়েস দেসকালসোস’। এই অ্যালবামই তাকে লাতিন আমেরিকা ও স্পেনে খ্যাতি এনে দেয়। শ্রোতাদের কাছে তাকে একজন রহস্যময় সংগীতশিল্পী হিসেবে চিহ্নিত করে। কিন্তু ১৯৯৮ সালে ‘দোন্দে এস্তান লোস লাদ্রোনেস’ অ্যালবামটি শিল্পী হিসেবে তার গুরুত্ব বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে। এই অ্যালবামটির জন্য তিনি রোলিং স্টোন, অল মিউজিক গাইড এবং বিলবোর্ড ম্যাগাজিনের সংগীত সমালোচকদের কাছ থেকে উৎসাহব্যঞ্জক সাড়া পান। তিনি দুই বার গ্র্যামি পুরস্কার, সাতবার ল্যাটিন গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের জন্যও মনোনীত হয়েছিলেন। বিএমআইয়ের তথ্যানুসারে, তিনি ব্যবসায়িকভাবে সফল দ্বিতীয় ল্যাটিন আমেরিকান নারী শিল্পী; যার অ্যালবাম বিশ্বে পাঁচ কোটি কপি বিক্রীত। এ ছাড়াও তিনি দক্ষিণ আমেরিকা থেকে সুযোগ পাওয়া একমাত্র শিল্পী যিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিলবোর্ড হট ১০০, কানাডিয়ান বিলবোর্ড হট ১০০, অস্ট্রেলিয়ান এআরআইএ চার্ট ও ইউকে সিঙ্গেলস চার্টে প্রথম স্থান পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। হলিউড ওয়াক অফ ফেইমে একজন তারকা হিসেবে শাকিরা পুরস্কৃত হয়েছেন।

তার বেড়ে ওঠা

মাত্র চার বছর বয়সে শাকিরা প্রথম কবিতা লিখেন, যার শিরোনাম ছিল ‘লা রোসা দে ক্রিস্টাল’। অর্থাৎ স্ফটিকের গোলাপ। সেই বয়সেই স্থানীয় মিডল ইস্টার্ন রেস্টুরেন্টে প্রথমবার ডোম্বেক শোনেন এবং টেবিলের ওপর উঠে নাচতে শুরু করেন। সাত বছর বয়সে বাবাকে একটি টাইপরাইটারে গল্প লিখতে দেখে আগ্রহী হন। বড়দিনের উপহার হিসেবে একটি টাইপরাইটার চেয়ে নেন। তখন থেকেই তিনি কবিতা লেখা চালিয়ে যান। তার কবিতাগুলো ক্রমেই গানে রূপ নেয়। দুই বছর বয়সে শাকিরার এক বড় সৎভাই মারা গেলে শোকাতুর বাবাকে চার বছর কালো চশমা পরে থাকতে দেখেছেন। সেটা নিয়ে শাকিরা আট বছর বয়সে প্রথম গান লেখেন ‘তুস গ্রাফাস ওসকুরাস’ অর্থ তোমার কালো চশমা। তিনি স্কুলের সহপাঠী ও শিক্ষকদের গান শোনাতে ভালোবাসতেন। প্রতি শুক্রবারে তার শেখা বেলি ড্যান্সিংয়ের ধাপগুলো স্কুলে করে দেখাতেন। এভাবেই তিনি লাইভ পারফরম্যান্সের প্রতি নিজের ভালোবাসা প্রকাশ করেন। কিন্তু দরিদ্র পরিবারে নিজের প্রতিভার চর্চায় বেগ পেতে হয়। বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে জীবিকা অর্জন করেছেন।

সোমবার, ২৭ জুন, ২০২২

পুরুষের জন্য মেথির উপকারিতা কী?

আলাদা করে পুরুষের জন্য মেথীর উপকারিতা বলতে সেক্স পাওয়ার বাড়ানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা ও পুরুষের বীর্যের শুক্রানু বাড়ানোর ক্ষেত্রে বেশ উপকারী হচ্ছে মেথী।

মেথী রাতে পানিতে ভিজিয়ে সকালে মেথীসহ পানি খালি পেটে খেলে পুরুষের বীর্যের শুক্রানু বাড়ে তবে ৩ মাস নাগাতার খেতে হবে। যাদের বাচ্চা কাচ্চা হচ্ছে না পুরুষের সমস্যার কারনে তারা তাদের শুক্রানু বাড়াতে ৩ মাস মেথী গোটা বা গুড়া পানিতে রাতে ভিজিয়ে সকালে খালি পেটে খান। শুক্রানু বেড়ে যাবে। এই পরীক্ষাটি করা হয়েছিলো ২০১৭ সালে ৫০ জন পুরুষের উপরে যারা বন্ধ্যাত্বে ভুগছিলো। তারা ৩ মাস মেথীর পানি খায়। তাদের মধ্যে ৮৫% পুরুষের শুক্রানু বেড়ে যায়।

এছাড়া, সেক্স পাওয়ার বাড়ানো মানে টেস্টেটোরেন হরমোন বাড়ানোর ক্ষেত্রে মেথী কার্যকরী। এই হরমোন কম থাকলে পুরুষের সেক্স করার ইচ্ছে কমে যায়, বউকে রাতে আদর করতে ইচ্ছে করে না। তাই এই হরমোন বাড়াতে মেথী বেশ কার্যকরী। যাদের সেক্স হরমোন কম এবং রাতে খাট কাপাতে পারেন না বা ইচ্ছে করে না তাদের উচিত নিয়মিত মেথী পানি খাওয়া।

এতে কি আছে যাতে সেক্স হরমোন বাড়ে?

সেপোনিন ও সেপোজেনিন এই দুই উপাদান হচ্ছে সেক্স ভিটামিন। যা পর্যাপ্ত পরিমানে পাবেন মেথী গুড়াতে।

বাজার থেকে মেথী গুড়া কিনতে পারেন কিন্তু সবচেয়ে ভালো হয় গোটা মেথী নিজেই ব্লেন্ডারে গুড়া করে নেয়া। বাজারের গুড়া মেথী ভেজাল হতে পারে। তাই গোটা মেথী কিনে গুড়া করে মেথীর পানি খান ৩ মাস নিয়মিত। ভালো রেজাল্ট পাবেন।

২০৩০ সালের মধ্যে সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ পেশা কোনগুলো হবে?

আগামি দশ বছর অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে সবচেয়ে চাহিদাপূর্ণ পেশা সম্পর্কে উল্লেখ করতে হলে এই তিনটি সেক্টর বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হবে।

  • স্বাস্থ্য
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • শিক্ষা

এই সেক্টর গুলোর সাথে সম্পৃক্ত এবং ভবিষ্যতে বেশি চাহিদা থাকবে এমন আরো কিছু পেশাসম্পর্কে উল্লেখ করা হলো

  1. প্রকৌশল-স্থাপনা।
  2. ওয়েব ডেবলপার।
  3. চিকিৎসা এবং নার্সিং।
  4. সেলস ও মার্কেটিং।
  5. সাইবার সিকিউরিটি নিনজা।
  6. মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট।
  7. অনলাইন টিউটর।
  8. ব্যংকিং এন্ড ফিন্যান্স।
  9. ডিজিটাল মার্কেটিং।
  10. রেজিস্ট্রার নার্সিং।
  11. সফটওয়্যার ডেবলফার।
  12. ট্রেইনার এবং শিক্ষকতা।
  13. উদ্ভাবন ও ডিজাইনিং।
  14. কনষ্ট্রাকশন শ্রমিক।
  15. টেলিকম।
  16. ডাটা ডিটেকটিভ

17. কম্পিউটার সম্পৃক্ত সকল পেশা সমুহ।

এমন কিছু মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা কী যা মানুষ জানে না?

এমন কিছু মনস্তাত্ত্বিক ঘটনা কী যা মানুষ জানে না?

শুধুমাত্র শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করা ও বাচ্চার জন্ম দেওয়ার জন্য মানুষ সংসার করে না।

সংসার একটা অভ্যেস, যা একসাথে থাকতে থাকতে গড়ে ওঠে, একে অপরের সাথে কথা বলতে বলতে, একে অপরকে সহ্য করতে করতে এই অভ্যেস গড়ে ওঠে।

সংসার মানে হলো একসাথে থাকতে থাকতে একে অপরের গায়ের গন্ধটা আত্মস্থ করে নেওয়া। সংসার মানে হলো মানুষটা মুখের সামনে এসে দাঁড়ালেই মানুষটার মনের ভেতর কি চলছে, সেটা বুঝে ফেলা।

সংসার মানে হলো বর অফিস থেকে ফিরলে এক গ্লাস জল রোজই মুখের সামনে তুলে ধরা।

সংসার মানে হলো ছেঁড়া বোতাম সেলাই করতে করতে নিজেদের ভেতর ভুল বোঝাবুঝি গুলো মাঝেমধ্যে সেলাই করে নেওয়া।

সংসার মানে হলো এডজাস্টমেন্ট, "তোমার আমার" থেকে আমাদের হয়ে ওঠা। সংসার মানে মাছের ঝোলে নুন বেশি হলেও চুপচাপ হাসিমুখে খেয়ে ফেলা, সংসার মানে হলো রোজই বিছানার উপর রাখা নিজের পার্টনারের ভেজা টাওয়ালটা মেলে দেওয়া।

সংসার মানে হলো বিয়ের ডেট, একে অপরের জন্মদিনের তারিখ ভুলে গেলেও মানিয়ে নেওয়া।

সংসার মানে গাঢ় নীল রং নিজের পছন্দ না হওয়া সত্ত্বেও পার্টনারের পছন্দ বলে একদিন নীল রঙের পাঞ্জাবিটা পরে ফেলা, আবার তেমনি শাড়ি পরতে একটুও ভালো না লাগলেও এক দুটো দিন নিজের পার্টনারের পছন্দকে গুরুত্ব দিয়ে একটা লাল টকটকে শাড়ি পরে পার্টনারের সামনে এসে দাঁড়ানো।

সংসার হলো একটা প্রতিজ্ঞা, যার ভেতর মান, অভিমান, রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ, ব্যথা সবই থাকবে, কিন্তু দিনের শেষে একে অপরের মুখের সামনে ভাতের থালা তুলে দেওয়ার প্রতিজ্ঞাটা একে অপরকে করতে হবে।

সংসার মানে হলো মাসের শেষে টাকাপয়সার হিসেব করতে করতে একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে বলা "আজ তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমাবো, আজ আমায় একটু ঘুম পাড়িয়ে দাও"

সংসার মানে হলো মাঝরাতে বরকে ঘুম থেকে তুলে শিশির ভেজা রাস্তায় হাঁটতে যাওয়ার বায়না ধরা।

সংসার করা সহজ, কিন্তু একটা সংসারকে প্রতি মুহূর্তে যাপন করা সহজ নয়

সংসার মানে হাজারো ব্যস্ততার মধ্যেও একবার অন্তত ফোন করে জিজ্ঞেস করা "খেয়েছো"

সংসারে ওঠানামা, ভাঙাগড়া থাকবেই, কিন্তু হাঁপিয়ে গেলে চলবে না, একে অপরকে মানিয়ে নিতে হবে, একে অপরের সমস্যায় পাশে থাকতে হবে, একে অপরকে সাহস যোগাতে হবে

সংসারে কেউ কারোর থেকে ছোট বা বড় হয় না, দুজনেই দুজনের পরিপূরক হয়, তাই সংসার করতে গেলে একে অপরকে সম্মান ও শ্রদ্ধা করা বড্ড জরুরি....🌸

সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২

রাউটারের সমস্যা সমাধান

রাউটারের সমস্যা সমাধান

বর্তমানে ঘরে ঘরে ব্যবহৃত হয় ওয়াইফাই রাউটার। যা থেকে একাধিক ডিভাইস যুক্ত করা সম্ভব। তবে মাঝেমধ্যেই রাউটারে সমস্যা হয়। এ সমস্যার সমাধান সম্ভব খুব সহজেই। জেনে নিন রাউটারের সমস্যা সমাধানের উপায়-

রাউটারের সমস্যা সমাধান

* রাউটার সেট করার সময় মাঝেমধ্যেই আইপি সেটিংসে সমস্যা হয়। ফলে ইন্টারনেট সংযোগে সমস্যা হতে পারে। রাউটার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ না হলে আইপি সেটিং ভালোভাবে দেখুন। প্রয়োজনে নতুন করে রাউটার কনফিগার করুন।

* ইন্টারনেট ওএফসি বা অপটিক্যাল ফাইবার কেবলে সমস্যা তৈরি হতে পারে। কোনো ওএফসি কেবল সরাসরি রাউটারের ভিতর কানেক্ট থাকে না। ওএফসির সঙ্গে অন্য একটি মডেমের কানেক্ট থাকে। সেখান থেকে রাউটারের কানেক্ট করা হয়। সে ক্ষেত্রে ওএফসিতে কোনো সমস্যা তৈরি হলে ইন্টারনেট কানেক্ট হতে সমস্যা হয়। তাই এফসি কেবল চেক করতে পারেন।

* অনেক সময় ডাটা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়। সে ক্ষেত্রেও ইন্টারনেট স্পিড কমে যেতে পারে। এমনকি ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বন্ধ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে সম্পূর্ণভাবে মডেম পুরোপুরি বন্ধ রাখতে হবে কিছুক্ষণ। তারপর আবারও চালু করতে হবে।

* অনেক সময় ওয়াইফাই-এর ক্ষেত্রে সমস্যা হলে রাউটার থেকে ইন্টারনেট সংযোগ করতে সমস্যা তৈরি হয়। এ জন্য ফোন বা অন্য কোনো ডিভাইস থেকে ওয়াইফাই ফরগট করে আবারও কানেক্ট করতে হবে।

* আইএসপি বা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডারের কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যার জন্য ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সরাসরি আইএসপির সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।