বিশ্বকে পাল্টে দেয়া ওয়েবের ৩০ বছর
সাধারণত যে কোনো তথ্য জানার প্রয়োজন পড়লেই ইন্টারনেটে ঢু মারি আমরা। প্রথমে গুগলে সার্চ করি, ইউটিউবে ভিডিও দেখি- এর বাইরে নয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও। তবে এই সবকিছুর পেছনে একটা ইতিহাস আছে। যার উৎপত্তি হয়েছিল আজ থেকে ঠিক ৩০ বছর আগে ১৯৯১ সালে।
ব্রিটিশ গবেষক টিমোথি বার্নার্স-লি তখন সুইজারল্যান্ডে গবেষণারত ছিলেন। সর্বপ্রথম তার হাত ধরেই চালু হয় ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব বা ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ। যেকোনো ওয়েবসাইটের ঠিকানা লেখার আগে শুরুতেই লিখতে হয় ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ ডটকম। ৩০ বছর আগে টিমোথির এই আবিষ্কার বদলে দিয়েছে আজকের পৃথিবী।
১৯৯৩ সালে ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ সফটওয়্যারকে পাবলিক ডোমেইনে ছেড়ে দেয় সার্ন। উন্মুক্ত লাইসেন্সের মাধ্যমে সবার জন্য এটা সহজলভ্য করা হয়। তার এক বছর বাদে প্রথম ব্লগ চালু হয়। জাস্টিন হল নামে এক ছাত্র তার লেখালেখি প্রকাশের প্লাটফর্ম হিসেবে ওয়েবসাইট ব্যবহার করেন।পরে ১৯৯৫ সালে জেফ বেজোস নামে ওয়াল স্ট্রিট-ফেরত ব্যাংকার প্রতিষ্ঠা করেন অ্যামাজন। শুরুতে বইয়ের ই-কমার্স প্লাটফর্ম হিসেবে যাত্রা করলেও বর্তমানে এটি বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স ওয়েবসাইট। ২০০১ সালে যাত্রা করে উইকিপিডিয়া। এ ডিজিটাল এনসাইক্লোপিডিয়ার ডোমেইনের রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল জিমি ওয়ালেস ও ল্যারি স্যাঙ্গারের নামে।
২০২১ সালের ১৮ জুন নাগাদ বিশ্বে অনলাইন ওয়েবসাইটের সংখ্যা ১৮৬ কোটি। সাইটফি বলছে, বিশ্বজুড়ে গড়ে ৫ লাখ ৪৭ হাজার ২০০টি নতুন ওয়েবসাইট চালু হচ্ছে।
ওয়েবসাইটের ৩০ বছরের পরিক্রমা নিয়ে ডব্লিউপি ইঞ্জিনের শীর্ষ কর্মকর্তা ফেবিও তোরলিনি বলেন, তিন দশক আগে যাত্রার পর এখন সব ব্যবসার কেন্দ্রে রয়েছে ওয়েবসাইট। এখন সব জীবিকার নিত্যসঙ্গী ডব্লিউডব্লিউডব্লিউ।
তিনি আরো বলেন, ওপেন সোর্স প্লাটফর্ম ওয়ার্ডপ্রেসের যে ইকোসিস্টেমে বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে, তার বাজারমূল্য ৫৯ হাজার ৬৭০ কোটি ডলার। যদি ওয়ার্ডপ্রেস কোনো দেশ হতো, তাহলে বিশ্বের ৩৯তম বৃহৎ অর্থনীতি সুইডেনের সমান হতো তার আকার।
উল্লেখ্য, ১৯৯১ সালের ৬ আগস্ট প্রথম ওয়েবসাইটের যাত্রা হয়। গত সপ্তাহে ৩০ বছরে পা দিল ওয়েবসাইট সেবা। এ তিন দশকে চেহারা, কার্যপরিধি ও নকশার জায়গা থেকে ওয়েবসাইটে অনেক বড় পরিবর্তন এসেছে। ওয়েবসাইটের যাত্রার ৩০ বছরের পরিক্রমা আধুনিক বিশ্বের চিত্তাকর্ষক ঘটনাই বটে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন