রবিবার, ১ জুলাই, ২০১২

সোশাল নেটওয়ার্কিংয়ে বেশি আকৃষ্ট মেয়েরাই

সোশাল নেটওয়ার্কিংয়ে বেশি আকৃষ্ট মেয়েরাই

দিনদিন সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটের জনপ্রিয়তা ক্রমান্বয়ে বাড়লেও বিজ্ঞানীরা বলছেন, ছেলেদের চেয়ে মেয়েরাই সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বেশি আকৃষ্ট হচ্ছে। খবর টেলিগ্রাফ–এর।

ইউনিভার্সিটি অফ বাথ-এর মনোবিজ্ঞানীদের একটি গবেষণায় জানা গেছে, ছেলেদের ইন্টারনেট ব্যবহারের মাত্রা বিভিন্ন বিনোদন, গান, গ্যাম্বলিং এবং গেইমিং সাইটে বেশি থাকলেও মেয়েদের ইন্টারনেট ব্যবহার বিভিন্ন সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইট যেমন টুইটার, ফেইসবুক ও বিভিন্ন ট্রাভেল রিজারভেশন সাইটেই বেশি। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গড়ে ১১ বছরের শিক্ষার্থীরা দৈনিক প্রায় ৩ ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

একটি অনুশীলনের মাধ্যমে ছয়টি আলাদা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের প্রায় ৫০০ ছাত্র-ছাত্রীর ইন্টারনেট ব্যবহারের তালিকা তৈরি করা হলে প্রাপ্ত  ফলাফল ১০ বছর আগের ফলাফলের মতোই পাওয়া গেছে।

ইউনিভার্সিটি অফ বাথ-এর মনোবিজ্ঞানের প্রভাষক ড. রিচার্ড জয়নারের মতে, ‘আমাদের আগের গবেষণায় সোশাল নেটওয়ার্ক ব্যবহারে ছেলে-মেয়ের এই ভেদাভেদটি পাওয়া যায়নি। তবে সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করছে যে, মেয়েরাই বেশি সোশাল সাইটগুলো ব্যবহার করে।’

ড. জয়নারের মতে, এ বিষয়গুলো নিয়ে আরো গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ ইন্টারনেট ব্যবহার আমাদের জীবনের একটি অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।



বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/সৌরভ/ওএস/এইচবি

মোবাইল পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হচ্ছে শিশুরা

মোবাইল পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হচ্ছে শিশুরা

মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি ব্যবহারে শিশুদের আচরণ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বৃটিশ ডেপুটি চিল্ড্রেন্স কমিশনার। খবর গার্ডিয়ান-এর।

বৃটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কমিটিকে ডেপুটি চিলড্রেন কমিশনার সুই বেরেলোইটজ বলেছেন, ‘সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটের পাশাপাশি অশ্লীল বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুদের আগ্রহ বাড়ছে। এটি শিশুদের নৈরাজ্য বা নৈতিকতার অবক্ষয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’

‘অনেক বাবা মা মনে করেন, তার ছেলে-মেয়ে কিভাবে সময় কাটায় তা তারা জানেন। যদিও মোবাইল ফোনের ব্যবহার সম্পর্কে অনেক বাবা-মা কোন খবরই রাখেন না’, জানান বেরেলোইটজ।

বেরেলোইটজ বলেন, ‘অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশু, তরুণ ও টিনএজরা সোশাল নেটওয়ার্কিং, বিবিএম মেসেঞ্জিং এবং পর্নোগ্রাফিতে যে হারে আসক্ত হচ্ছে তা খুবই উদ্বেগের বিষয়।’

এতে বলা হয়, মোবাইল ফোনেই আছে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ। আর তাই শিশুরাও জড়িয়ে পড়ছে সোশাল নেটওয়ার্কিং সাইটগুলোতে। দেখা গেছে, বেশ কতোগুলো সাইটের মাধ্যমে শিশুরা মোবাইল পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হচ্ছে।




বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/আজিম/ওএস/এইচবি

১৬ হাজার প্রসেসর দিয়ে কৃত্রিম মস্তিস্ক বানালো গুগল

১৬ হাজার প্রসেসর দিয়ে কৃত্রিম মস্তিস্ক বানালো গুগল

১৬ হাজার প্রসেসর ব্যবহার করে গুগল এক্স এর ‘ব্লু স্কাই মিডিয়া’ ল্যাবে আর্টিফিশিয়াল ব্রেইন তৈরি করলেন জেফ ডিন-এর নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী। ইউটিউবের ১ কোটি ভিডিও থেকে এলোমেলোভাবে সংগ্রহ বিভিন্ন ফটো আর্টিফিশিয়াল ব্রেইনটিতে লোড করেন সেটাকে নিজে নিজেই শিখতে শুরু করার জন্য। খবর টেকট্রির।

মজার ব্যপার হচ্ছে বিজ্ঞানীদের তৈরি মেশিনটির বেশি মনযোগ বিড়ালের প্রতি। এ ব্যাপারে ডিন বলেন, ‘আমরা মেশিনটির প্রশিক্ষণের সময় কখনোই বিড়াল চিনিয়ে দেইনি। মেশিনটি নিজেই বিড়ালকে চিনে নিয়েছে।

বিজ্ঞানীদের দলটি তাদের রিপোর্টে বলেন, ‘আমাদের এই পরীক্ষামূলক প্রজেক্টের ফলাফলে আমরা ধারণা করছি, মেশিনটির ডেটাবেজের ছবিগুলোতে কোনোকিছুকে চিহ্নিত করে দেয়া না থাকলেও এটি নিজে থেকে তা চিহ্নিত করতে পারবে। নেটওয়ার্কটিকে এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে যে, এটি প্রায় শতকরা প্রায় ১৫ দশমিক ৮ ভাগ নির্ভূলভাবে ২০ হাজার বস্তু আলাদাভাবে চিনতে পারে।



বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম

রঙের মতো স্প্রে করা যাবে ব্যাটারিবিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/জায়েদ/ওএস/এইচবি/জুন ৩০/১২

রঙের মতো স্প্রে করা যাবে ব্যাটারি

নতুন এক স্প্রে-অন পেইন্ট বানালেন বিজ্ঞানীরা, যা অন্যান্য রিচার্জেবল ব্যাটারির মতোই ইলেকট্রিসিটি স্টোর করতে ও প্রয়োজনমতো সরবরাহও করতে পারবে। এই স্প্রে-অন ব্যাটারিটি বানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের রাইস ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। খবর রয়টার্সের।

বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় এমন একটি অভিনব পন্থা আবিষ্কার করেছেন, যার মাধ্যমে সাধারণ ব্যাটারির উপাদানগুলোকে ভেঙ্গে তরলে রূপান্তর করা যায় এবং স্প্রে-অন পেইন্ট-এর মতোই ব্যবহার করে রং করা যায়। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ব্যাটারির উপাদানগুলোকে ভেঙ্গে তরলে রূপান্তর করলেও কার্যক্ষমতা হারায় না এই স্প্রে-অন ব্যাটারিটি। রিচার্জেবল ব্যাটারির মতোই চার্জ করা এবং প্রয়োজনমতো ব্যবহার করা যায় এটি।

রিচার্জেবল এই ব্যাটারিটি তৈরি হয় স্প্রে-পেইন্ট করা লেয়ার থেকে এবং এর প্রতিটি লেয়ার একটি সাধারণ ব্যাটারির কারেন্ট কালেক্টর, ক্যাথড, অ্যানোড এবং মাঝের পলিমার সেপারেটর হিসেবে কাজ করে। এই স্প্রে-অন পেইন্ট প্লাস ব্যাটারিটি সিরামিক, গ্লাস এবং স্টেইনলেস স্টিলের ওপর সফলভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


শরীরের তাপেই চলবে গ্যাজেট

শরীরের তাপেই চলবে গ্যাজেট

এই সপ্তাহে নিউ ইয়র্কের গ্যাজেট প্রদর্শনীতে পার্পেচুয়ার মার্কেটিং-এর প্রধান জেরি ওয়েন্ট উপস্থিত হয়েছিলেন হাতে একটি কালো ব্যান্ড এবং পুরনো হাতঘড়ি নিয়ে। তারা সেখানে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা দিয়ে গ্যাজেটে পাওয়ার সাপ্লাইয়ের উপায় দেখিয়েছেন। খবর ফক্স নিউজ-এর।

এ প্রযুক্তিটি অবশ্য নতুন নয়। দুই শতক আগেই পদার্থবিদ টমাস জোহান সিবেক মানুষের শরীরের তাপ ব্যবহার করে শক্তি সরবরাহের এ উপায়টি আবিষ্কার করেছিলেন।

মানুষের শরীরের তাপমাত্রা সাধারণত ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট হয়। পার্পেচুয়া একটি ব্যান্ড বানিয়েছে, যা শরীরের তাপ থেকে শক্তি উৎপাদন করতে পারবে। এ শক্তি দিয়ে অল্প শক্তির যন্ত্র চালানো সম্ভব। স্মার্টফোন বাদে ব্লুটুথ ডিভাইস বা এ ধরনের আরো যন্ত্র এভাবে চালানো সম্ভব বলেই জানিয়েছে পার্পেচুয়া। এ ব্যান্ড শরীরের তাপমাত্রা থেকে ৩-৪ ভোল্ট পর্যন্ত শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। যেখানে ব্লুটুথ ডিভাইস চালাতে লাগে ২ ভোল্ট।

এছাড়াও এ ডিভাইসের মাধ্যমে ঘড়ি এবং মেডিক্যাল ডিভাইস যেমন হার্ট মনিটরও চালানো সম্ভব।

ইউএফওতে বিশ্বাসী এক-তৃতীয়াংশ মার্কিনী

ইউএফওতে বিশ্বাসী এক-তৃতীয়াংশ মার্কিনী

৩৬ শতাংশ বা এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি আমেরিকান বিশ্বাস করেন, আন আইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্ট (ইউএফও) বা ভিনগ্রহ থেকে আসা এলিয়েন স্পেসক্র্যাফটের অস্তিত্বে। সম্প্রতি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের ‘চেসিং ইউএফও’ অনুষ্ঠানটির জন্য চালানো এক জরিপে এ তথ্য জানতে পারেন গবেষকরা। আর নিজের চোখে ইউএফও দেখার অভিজ্ঞতা হয়েছে বলে দাবি করেন শতকরা ১০ ভাগ মার্কিন নাগরিক। খবর এবিসি নিউজের।

ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ওই জরিপে গবেষকরা জানতে পারেন, দুই-তৃতীয়াংশ আমেরিকান ইউএফও-ও অস্তিত্বে বিশ্বাস না করলেও তাদের অর্ধেকই নিজের মতামত নিয়ে ছিলেন অনিশ্চিত। আর ৮০ ভাগেরও বেশি মার্কিন নাগরিক মনে করেন, ইচ্ছাকৃতভাবেই ইউএফও-র অস্তিত্বের প্রমাণ লুকিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।

তবে বৈজ্ঞানিক গবেষণার চেয়ে জরিপটি নিয়ে গবেষক দলের মজা করার উদ্দেশ্যটাই বেশি ছিলো বলে জানিয়েছেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড ড্যান্সার। তিনি বলেন, ‘জরিপটি করার সময় আমরা গুরুগম্ভীর বিষয়গুলোর চেয়ে মজা করার চেষ্টাই করেছি বেশি। পপ সংস্কৃতি এলিয়েন আর ইউএফও নিয়ে সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের ওপর কতোটা প্রভাব ফেলেছে সেটাই খুঁজে বের করতে চেয়েছি আমরা।’

ন্যাট-জিও গবেষক দলের এই জরিপের মজার প্রশ্নগুলোর একটি ছিলো পৃথিবীতে এলিয়েনরা আক্রমণ করলে তাদেও ঠেকাতে কে বেশি সফল হবেন- প্রেসিডেন্ট ওবামা নাকি ওবামার রিপাবলিকান প্রতিদ্ব›দ্বী মিট রমনি। এ প্রশ্নের উত্তরে ৬৫ শতাংশ ভোট পেয়ে রমনিকে হারিয়েছেন ওবামা।

মজার ব্যপার হচ্ছে, এলিয়েন আক্রমণ থেকে বাঁচতে কোন সুপার হিরোর সাহায্য চাইবেন, এ প্রশ্নের উত্তরে মার্কিন নাগরিকদের প্রথম পছন্দ ‘দি ইনক্রেডিবল হাল্ক’। মহাকাশের দানবদের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচাতে ব্যাটম্যান আর স্পাইডান ম্যানের চেয়ে ‘দি ইনক্রেডিবল হাল্ক’-ই বেশি সফল হবেন বলে মতামত দিয়েছে আমেরিকানরা।



৫ম জন্মদিনে অ্যাপল আইফোন

৫ম জন্মদিনে অ্যাপল আইফোন


টেক বোদ্ধাদের মতে, একুশ শতকের সবচেয়ে জনপ্রিয় কনজিউমার ইলেকট্রনিক পণ্য অ্যাপল আইফোন। শুরুতে একটি অভিজাত পণ্য হিসেবে বাজারে এলেও ধীরে ধীরে সবধরণের পেশাজীবী মানুষের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই স্মার্টফোনটি। প্রয়াত টেক গুরু স্টিভ জবসের তত্ত্বাবধানে অ্যাপলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট জনি আইভ-এর ডিজাইন করা এই স্মার্টফোনটি গত ৫ বছরে পাল্টে দিয়েছে হ্যান্ডহেল্ড ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের চিত্র; শুরু করেছে নতুন এক টেকনোলজি বিপ্লবের।

২০০৭ সালের ২৮ জুন পর্যন্ত বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ফোন নির্মাতার স্থানটি দখলে ছিলো নোকিয়ার। আর কর্পোরেট অফিসারদের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেটের জায়গা করে নিয়েছিলো ব্ল্যাকবেরি। কিন্তু এ সবই পাল্টে যায় ২০০৭ সালের ৩০ জুন অ্যাপল আইফোন বাজারে আসার পর। ৬০০ ডলার দামের আইফোনটি তখন অনেকের কাছেই মনে হয়েছে ধনীদের জন্য তৈরি একটি মোবাইল ফোন মাত্র। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভুল প্রমাণিত হয়েছে এই ধারণা। এখনও বিশ্বব্যাপী ২০ কোটিরও বেশি মানুষ ব্যবহার করছেন আইফোন। কনস্ট্রাকশন সাইটে ইঞ্জিনিয়াররা ব্লু-প্রিন্টে নজর রাখতে ব্যবহার করছেন আইফোন, রোগীদের চিকিৎসায় হাসপিটালে চিকিৎসকদের সঙ্গী হচ্ছে আইফোন, এমনটি বাচ্চাদের মধ্যেও জনপ্রিয় আইফোন। আইফোন বর্তমান হ্যান্ডহেল্ড গ্যাজেট টেকনোলজিকে এতোভাবে বদলে দিয়েছে যা হয়তো শতাব্দীতে একবারই ঘটে।


টাচ স্ক্রিন বিপ্লব
আইফোনের আগেও বাজারে টাচস্ক্রিন ছিলো, কিন্তু টাচ স্ক্রিন বিপ্লব সম্পন্ন করেছে অ্যাপল এই আইফোন দিয়েই। ২০০৭ সালের আগে নিউম্যারিকাল ফুল সাইজ কিবোর্ডে টেক্সট টাইপ করতে করতেই ক্লান্ত হয়ে পড়তেন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী। কিন্তু অ্যাপল নিউম্যারিকাল কিবোর্ড এড়িয়ে বেছে নেয় ফুল টাচ স্ক্রিন কিবোর্ড। রাতারাতি ছোট শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের মনও জয় করে নেয় অ্যাপলের এই সিম্পল ইউজেবিলিটি। আইফোনের প্রথম মডেলটি নিয়ে টেক বোদ্ধাদের একমাত্র আপত্তিটিও ছিলো এই টাচ স্ক্রিন নিয়ে। ব্ল্যাকবেরির মতো দ্রুত গতিতে আইফোনে টাইপ করা না যাওয়ায় এর সাফল্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু বাজারে আসার ৩ মাসের মধ্যেই ১০ লাখের বেশি আইফোন বিক্রি করে টেক বোদ্ধাদের ওই শঙ্কা মিথ্যে প্রমাণ করে অ্যাপল।

এরপর স্পেল চেক সফটওয়্যার, টেক্সট প্রেডিক্টিভ সফটও্যার আর কাট-পেস্ট অপশন দিয়ে হাই স্পিড কিবোর্ডের অভাব মিটিয়েছে আইফোন। আর এখন সিরি ভয়েস অ্যাসিসটেন্ট ফিচারের বদৌলতে ব্যবহারকারীর ভয়েস কমান্ড থেকেই টেক্সট টাইপ করে নিচ্ছে স্মার্টফোনটি। অ্যাপল আইফোন টাচ স্ক্রিনের এই সাফল্যই মূল শক্তি জোগায় টাচ স্ক্রিন মোবাইল ফোন যুগের।


আইওএস ও অ্যাপ স্টোর
টাচ স্ক্রিন মোবাইল ফোনের ব্যবহার ব্যবহারকারীদের কাছে অনেক সহজ করে দিলেও আইফোনের বিশ্বব্যাপী সাফল্যেও মূল রহস্য এটির আইওএস অপারেটিং সিস্টেম এবং অ্যাপল অ্যাপ স্টোর। আইওএস-এর সহজবোধ্যতা আর কম্পিউটিং ক্ষমতা রাতারাতি পার্সোনাল কম্পিউটারের সুযোগ সুবিধা এন দেয় ব্যবহারকারীর হাতের মুঠোয়। আর অ্যাপল অ্যাপ স্টোরের থার্ড পার্টি অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহারকারীদের সুযোগ করে দিয়েছে নিজের প্রয়োজনমতো অ্যাপ্লিকেশন ডাউনলোড করে ব্যবহার করার।

২০০৮ সালে লঞ্চ করার পর থেকে অ্যাপল অ্যাপ স্টোর আইফোন ব্যবহারকারীদের কাছে একরকম অ্যাপ্লিকেশন স্বর্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সব ধরনের ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের কথা মাথা রেখেই অ্যাপ স্টোরটি তৈরি করে অ্যাপল। দৈনন্দিন জীবনে থেকে শুরু করে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহার করার মতো অ্যাপ্লিকেশনও রয়েছে অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে। অ্যাপ স্টোরের এই অ্যাপ্লিকেশনগুলো ব্যবহার করে যেমন সূর্য পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব, তেমনি সম্ভব রেস্টুরেন্টের রিজার্ভেসনও। শুধু তাই নয়, এই স্টোরটিতে রয়েছে শপিং লিস্ট সিনক্রোনাইজ করার মতো অ্যাপ্লিকেশন, ক্যাশ রেজিস্টার, মিউজিশিয়ানদের জন্য রয়েছে ড্রাম মেশিনের মতো অ্যাপ্লিকেশন। এমনকি পোষা কুকুর-বেড়ালের জন্যেও রয়েছে পেট ফ্রেন্ডলি অ্যাপ্লিকেশন। বর্তমানে অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে রয়েছে সাড়ে ৬ লাখেরও বেশি অ্যাপ্লিকেশন, যা মধ্যে রয়েছে একদম ফ্রি থেকে শুরু করে ১০০০ ডলারের স্পেশালাইজড বিজনেস অ্যাপ্লিকেশন।


মোশন ও অরিয়েন্টেশেন সেন্সর
আইফোনের সাফল্যের আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে, এর মোশন এবং অরিয়েন্টেশেন সেন্সরগুলো। আইফোনের বর্তমান মডেলটিতে রয়েছে অ্যাক্সেলোমিটার, জাইরোস্কোপ এবং কম্পাস। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়াররা আইফোনের গেইমস আর অ্যাপ্লিকেশনগুলোর চোখ ধাঁধানো ইফেক্ট তৈরি করতে নির্ভর করেন এই সেন্সরগুলোর ওপর।


পিসি বনাম ম্যাক যুদ্ধে আইফোনের জয়
মাইক্রোসফট পিসি বনাম অ্যাপল ম্যাকিন্টোশ-এর লড়াই চলে আসছে সেই ৮০র দশক থেকে। পিসি ব্যবহারকারীদের অনেকদির ধরেই ম্যাক-এর জগতে টেনে আনার চেষ্টা করে আসছিলো অ্যাপল। পিসি বনাম ম্যাক লড়াই এখনও শেষ না হলেও আইফোন আর আইপ্যাড-এর কারণে অনেকটাই এগিয়ে গেছে অ্যাপল। পিসি ব্যবহারকারীরা সাধারণত অ্যাপলের পণ্যগুলো থেকে দূরত্ব বজায় রেখেই চলতেন। কিন্তু আইফোন বাজারে আসার পর এই স্মার্টফোনটি দিয়েই গত ৫ বছরে অ্যাপল এর জগতে অভিষেক হয়েছে অনেক পিসি ব্যবহারকারীর। অ্যাপল আইফোনের অপারেটিং সিস্টেমের সহজবোধ্যতা, সিম্পল ইউজেবিলিটি আর অ্যাপ স্টোরের কয়েক লাখ ইউজার ফ্্েরন্ডলি অ্যাপ্লিকেশনের প্রেমে পড়ে পিসি ছেড়ে অ্যাপল ভক্তের খাতায় নাম লিখিয়েছেন অগণিত পিসি ব্যবহারকারী।



আইফোন পাল্টে দিয়েছে মোবাইল গেইমিং দুনিয়া
২০০৮ সালে অ্যাপল অ্যাপ স্টোর লঞ্চ হবার আগ পর্যন্ত মোবাইল গেইমিং মানেই ছিলো নিনটেনডো বা সনির পকেট গেইমিং সিস্টেম। শেষ হয়ে এসছে স্ট্যান্ড অ্যালোন মোবাইল গেইমিং ডিভাইসের যুগ। এক অ্যাপল আইফোনের কাঁধে ভর করেই মোবাইল গেইমিং ইন্ডাস্ট্রি পৌঁছে গেছে সাফল্যের নতুন এক চূড়ায়। অ্যাপলের আগে ২০০৩ সালে নোকিয়া সেল ফোন আর মোবাইল গেইমিং ডিভাইসের সংমিশ্রনে তৈরি করেছিলো এন-গেজ গ্যাজেট। সে সময় অনেক টেক বোদ্ধা মোবাইল গেইমিং প্লাটফর্ম প্লাস সেল ফোন ডিভাইসের যুগ শুরু হচ্ছে বললেও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলো গেইমাররা। কিন্তু সেটা পুরনো কথা, শুধু দৈনন্দিন জীবন বা পেশাগত কাজে ব্যবহার করার জন্য নয়, বরং গেইমিং ডিভাইস হিসেবেও পুরো বিশ্বের গেইমারদের মন জয় করে নিয়েছে আইফোন। গত ৫ বছরে পুরোপুরি পাল্টে দিয়েছে মোবাইল গেইমিংয়ের সংজ্ঞা।


মোবাইল টেকনোলজি ইন্ডাস্ট্রির নতুন যুগ
এমনটা বলাই যায় যে, মোবাইল টেকনোলজির ইতিহাসে ব্ল্যাকবেরি অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়েছে আইফোন। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে আইফোনের অবদানেই শুরু হয়েছে মোবাইল টেকনোলজি ইতিহাসের নতুন এক অধ্যায়। পুরো মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিই বদলে দিয়েছে অ্যাপলের আইফোন। পৃথিবীর সব বড় মোবাইল ফোন নির্মাতাই এখন অনুসরণ করার চেষ্টা করছে অ্যাপল আইফোনের দেখানো পথ। তারপরও আইফোন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হিমশিম খাচ্ছে কোম্পানিগুলো। আইফোনের অনুকরণেই গুগল তৈরি করছে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন। শেষ পর্যন্ত চির প্রতিদ্ব›দ্বী মাইক্রোসফটও আইফোনের কাছে হার মেনে নিয়েছে উইন্ডোজ ৮ ওএস দিয়ে। এক কথায় বলতে গেলে বিশ্বব্যাপী ইউজার ফ্রেন্ডলি মোবাইল ফোন তৈরির মানদণ্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে অ্যাপল আইফোন।

অনেক টেক বোদ্ধার মতে, আইফোন আর আইপড টাচই হচ্ছে অ্যাপল আইপ্যাড-এর পেছনের মূল অনুপ্রেরণা। টেক বোদ্ধাদের এই বক্তব্য কতোটা নির্ভরযোগ্য এমন প্রশ্ন করেন অনেকেই। কিন্তু আইপ্যাডের পেছনের মূল অনুপ্রেরণা আইফোন হোক বা না হোক মজার ব্যপার হচ্ছে আইফোনের পর এখন ট্যাবলেট পিসির বাজার দখলে আইপ্যাডের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে অ্যামাজন, মাইক্রোসফট এবং গুগলের মতো কোম্পানিকে।

৩০ জুন ষষ্ঠ বছরে পা দিলো অ্যাপল আইফোন। গত ৫ বছরে আইফোন শুধু মোবাইল টেকনোলজির জগতটি পুরোপুরি পাল্টেই দেয়নি বরং জন্ম দিয়েছে নতুন এক অধ্যায়ের; অ্যাপল ভক্তদের কাছে যা আইফোন কালচার নামে পরিচিত।