শিশুশিল্পী অপর্ণার কণ্ঠে জোয়ান বায়েজের ‘বাংলাদেশ’ গান
জোয়ান বায়েজ ও অপর্ণা
যুক্তরাষ্ট্রের মানবতাবাদী সংগীতশিল্পী জোয়ান বায়েজ। ১৯৪১ সালের ৯ জানুয়ারি জন্ম নেওয়া এ শিল্পী বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছেন। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হায়েনারা যখন ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশের নিরীহ মানুষের ওপর, তখন বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার জন্যে যেসব বিদেশি বন্ধু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, তাদের অন্যতম জোয়ান বায়েজ।
বাংলাদেশে চালানো গণহত্যার ওপর জোয়ান বায়েজ লিখেছিলেন একটি অনবদ্য গান। ‘দ্য স্টোরি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক গানটি তারই কণ্ঠে আলোড়ন তুলেছিল তখন। কালজয়ী গানটি পরে ১৯৭২ সালে চান্দস মিউজিক থেকে ‘সং অব বাংলাদেশ’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। সেই অমর গানে মোট ২২ বার ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন জোয়ান বায়েজ।
কিংবদন্তি সেই শিল্পীর ‘বাংলাদেশ’ গানটিতে এবার কণ্ঠ দিয়েছে নিউইয়র্ক প্রবাসী ১১ বছরের শিশু অপর্ণা আমিন। লং আইল্যান্ডের গোথাম এভিনিউ স্কুলের সিক্সথ গ্রেডের এই শিক্ষার্থীর কণ্ঠে গানটি এরই মধ্যে বেশ প্রশংসা পেয়েছে। গানটি প্রকাশ করেছে মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি বন্ধুদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘ফ্রেন্ডস অব ফ্রিডম’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস সামনে রেখে এ নিয়ে একটি মিউজিক ভিডিও তৈরি করা হয়েছে, যা পরিচালনা করেছেন অপর্ণার বাবা লেখক ও সাংবাদিক শামীম আল আমিন। ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর ছিলেন অপর্ণার মা ইয়োগা আর্টিস্ট ও ফিটনেস এক্সপার্ট আশরাফুন নাহার লিউজা।
জোয়ান বায়েজের ‘বাংলাদেশ’ গানটি যন্ত্রসংগীতের মাধ্যমে কাভার করেছিলেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বাপ্পা মজুমদার। শিল্পীর সম্মতি নিয়ে সেই মিউজিকটি ব্যবহার করা হয়েছে অপর্ণার গানে। সব ধরনের সহায়তা দিয়েছেন কানাডাপ্রবাসী শিল্পী পাপ্পু আহমেদ, বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী বাবু সরকার ও সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার ডালিম। মিউজিক ভিডিওটি সম্পাদনা করেছেন তানজির ইসলাম রানা। গানটির মিউজিক ভিডিওটি চিত্রায়ণ করা হয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। সেইসঙ্গে ব্যবহার করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভ ফুটেজ।
এ প্রসঙ্গে পরিচালক শামীম আল আমিন বলেন, বাংলাদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলা, সূর্যসেন হল, জগন্নাথ হল এবং কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গানটির জন্য কাজ করেছি। আর নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের টাইমস স্কয়ার, অ্যাস্টোরিয়া পার্কসহ কয়েকটি স্পটে দৃশ্যধারণ করা হয়েছে। আশা করছি কাজটি দর্শকদের মনে দাগ কাটবে।
ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর আশরাফুন নাহার লিউজা বলেন, এই গানটির মধ্য দিয়ে জোয়ান বায়েজের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে চেয়েছি আমরা। সেই সাথে প্রবাসে বেড়ে ওঠা আগামী প্রজন্মের হৃদয় স্পর্শ করতে চেয়েছি। তাদের জানাতে চাই, বাংলাদেশের প্রতি তাদেরও অনেক দায়িত্ব রয়েছে। দেশকে জানতে হবে, ভালোবাসতে হবে।
অপর্ণা আমিন জানায়, বাবা মায়ের কাছ থেকে জোয়ান বায়েজের গানটির কথা আমি শুনি। এরপর আগ্রহ নিয়ে গানটা করার চেষ্টা করি। জোয়ান বায়েজ আমেরিকার গ্রেট সিঙ্গার। উনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে হেল্প করার জন্যে গান গেয়েছেন, এজন্যে আমি গর্বিত। আমেরিকায় থাকলেও, আমি বাংলাদেশকে সবসময় খুব মিস করি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন