নিউইয়র্কে ৭ বাংলাদেশিসহ আক্রান্ত ৭২৯
করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় নিউইয়র্ক, কানেকটিকাট এবং নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের সকল পাবলিক স্কুলে ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি ৫০ জনের অধিক লোকসমাগমের বিরুদ্ধে নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
নিউইয়র্ক সিটির স্কুলগুলো ২০ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হলেও অপর রাজ্যদ্বয়ে দুই সপ্তাহের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। একইসাথে এই ৩ রাজ্যে বেশ কয়েকটি সিটিতে কার্ফু জারি করা হয়েছে এবং রেস্টুরেন্ট, বার ও ক্লাবের ধারণ ক্ষমতার অর্ধেক ক্রেতার অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
নিউইয়র্ক সিটির থিয়েটার পাড়ায় গত শুক্রবার থেকেই তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। এর ফলে টাইমস স্কোয়ারসহ চায়না টাউন ভুতুড়ে শহরে পরিণত হয়েছে গত ৩ দিন থেকে। গতকাল রবিবার সন্ধ্যায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, নিউইয়র্ক সিটিতে ৫ জনের মৃত্যু এবং ৩২৯ জন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে বাংলাদেশি রয়েছেন ৭ জন। এতে দুই নারীও রয়েছেন। এসব পরিবারের দেড় ডজন সদস্যকে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে।
নিউইয়র্ক সিটি সংলগ্ন লং আইল্যান্ডের এক ব্যক্তি (৫২) কয়েকদিন আগে হাসপাতালে ভর্তির পর ১৪ মার্চ তার ছোটভাইয়ের স্ত্রীকেও হাসপাতালে নেয়া হয়েছে একই কারণে। উভয়েরই পজিটিভ রেজাল্ট পাওয়ায় এই দুই পরিবারের শিশু সন্তানসহ সকলকেই কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হয়েছে।
এর আগে, লং আইল্যান্ডের এক ব্যবসায়ী, নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনের এক নারী, ওজনপার্কের মধ্য বয়েসী আরেক ব্যক্তি এবং কুইন্সের এক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বয়স এবং ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত থাকায় চিকিৎসকরা শংকামুক্ত হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
এর আগে, লং আইল্যান্ডের এক ব্যবসায়ী, নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনের এক নারী, ওজনপার্কের মধ্য বয়েসী আরেক ব্যক্তি এবং কুইন্সের এক ট্যাক্সি ড্রাইভারকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বয়স এবং ডায়াবেটিসসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত থাকায় চিকিৎসকরা শংকামুক্ত হতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে, সর্বশেষ সংবাদ অনুযায়ী নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ৭২৯ জন আক্রান্ত হবার তথ্য জানিয়েছেন রাজ্য গভর্ণর। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় যে কোন সময় পুরো এলাকায় কার্ফু জারির শংকায় সকলেই খাদ্যসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রি মজুদ করছেন। মুদির দোকানসহ ডিপার্টমেন্টাল স্টোরগুলো চাল, আটা, ডাল, তেল, মরিচ, লবন, টিস্যু পেপারসহ সকল পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে সকলেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেও পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে উচ্চমূল্যেই সবকিছু ক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে, করোনার পরিপ্রেক্ষিতে অধিকাংশ অফিস-আদালতের কর্মকর্তা/কর্মচারীদেরকে ঘরে বসে অনলাইনে কাজের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশেষ জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যেতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। লোকজনকে বাস, রেলসহ ভীড় হয় এমন পরিবহন পরিহারের আহবান জানিয়েছেন রাজ্য কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, করোনা আক্রান্ত লোকজনকে কমপক্ষে দুই সপ্তাহের সবেতন ছুটি মঞ্জুর এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের একটি বিল কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে গত শনিবার ভোর রাতে পাশ হয়েছে। অনুরূপ একটি বিল শীঘ্রই সিনেটে পাশ হবে বলে সকলে আশা করছেন। এরফলে স্বল্প আয়ের লোকজন এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা স্বস্তিবোধ করলেও আক্রান্তদের বেঁচে না থাকার শংকা পুরো কমিউনিটিকে আচ্ছন্ন করেছে।
এদিকে, কমিউনিটির সকল সংগঠনের কার্যক্রম স্থবিরতায় আক্রান্ত হয়েছে। সবকিছু বাতিল করা হয়েছে। মসজিদ, মন্দির এবং গীর্জার পরিবর্তে ঘরেই নামাজ/উপাসনা/প্রার্থনার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উল্লেখ্য, ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শতততম জন্মবার্ষিকীর দিন এবং পরবর্তী পুরো বছরে নিউইয়র্কসহ সারা আমেরিকায় শতাধিক কর্মসূচির প্রস্তুতি ছিল। সবকিছু স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন