বিভিন্ন পলিটেকনিকে বিক্ষোভ, ভাঙচুর
ঢাকা, মে ২৪ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদমর্যাদা
দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় শ্রেণিতে অবনমনের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক
ইনিস্টিটিউটে বিক্ষোভ হয়েছে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের
সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে পুলিশের।
এর মধ্যে সংঘর্ষের পর বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ২৮ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিস্তারিত জানাচ্ছেন আমাদের জেলা প্রতিনিধিরা।
বরিশাল:
বুধবার দুপুর থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা লাঠিসোটা নিয়ে নগরীর বিভিন্ন
সড়ক অবরোধ করে। এসময় তারা যাত্রীবাহী বাস, ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর
করে। এসময় অন্তত ৫২ জন বাসাযাত্রী আহত হয়। এছাড়া বেশকিছু দোকানপাটেও ভাঙচুর
চালায় শিক্ষার্থীরা।
ভাঙচুরের অভিযোগে ২৪ শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে বলে জানান কোতোয়ালি থানার ওসি মতিয়ার রহমান।
ইনস্টিটিউটের
অধ্যক্ষ মীর মোশারেফ হোসেন দাবি করেছেন, শিক্ষার্থীরা নিষেধ উপেক্ষা করে
সংঘর্ষ ও ভাঙচুর করেছে। ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বগুড়া:
সকাল থেকে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর বগুড়া পলিটেকনিক
ইনস্টিটিউট আগামী ২৮ মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বিকেলের
মধ্যে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা
জানিয়েছেন, প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত অর্ধশত আহত
হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার পাশাপাশি ১৪ ছাত্রকে আটক
করেছে পুলিশ।
সদর থানার ওসি মাহমুদ আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল
১০টার দিকে পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে
প্রথমে শেরপুর-বগুড়া মহাসড়কে টায়ারে আগুন ধরিয়ে রাস্তা অবরোধ করে। পরে
তারা লাঠিসোটা নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মটরসাইকেলসহ অন্তত ২০টি গাড়ি
ভাঙচুর করে। এছাড়াও অন্তত তিনটি দোকান, চারটি বাড়ি, বগুড়া পুলিশ লাইনের
চেকপোস্টের জানালার কাচ ভাঙচুর করে তারা।
বেলা দেড়টা পর্যন্ত
দফায় দফায় সংঘর্ষ চলাকালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ৪৪ রাউন্ড কাঁদানে
গ্যাস নিক্ষেপ করেছে বলেও জানান ওসি মাহমুদ। এ সময় অন্তত ২০জন পুলিশ সদস্য
আহত হন।
তবে শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, পুলিশের হামলায় কমপক্ষে ৩০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
কক্সবাজার: কক্সবাজার পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও র্যাবের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের
কারণে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের লিংক রোডে প্রায় দুই ঘণ্টা গাড়ি চলাচল
বন্ধ থাকে। এ সময় শিক্ষার্থীরা অন্তত ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করেন।
কক্সবাজার
মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহেদ উদ্দিন জানান, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম
মহাসড়কের লিংক রোড অবরোধ করতে গেলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়। এ সময়
ছাত্ররা ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর এবং একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশায় আগুন ধরিয়ে দেয়।
সংঘর্ষ শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ওই মহাসড়কে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
ময়মনসিংহ:
বিক্ষুব্ধ পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা সকাল থেকেই ইনস্টিটিউটের সামনে জড়ো হয়ে
বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা দুপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে টায়ার
জ্বালিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি
গোলাম সারোয়ার জানান, এ সময় তারা কয়েকটি ট্রাক ও বাস ভাঙচুর করলে পরিবহন
শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে মহাসড়কে প্রায় আধা
ঘণ্টা গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে।
মাগুরা: শহরের সাজিয়াড়া
এলাকায় মাগুরা-ঝিনাইদহ মহাসড়কে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে
পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় শিক্ষার্থী,
বাসযাত্রী, পুলিশ, সাংবাদিকসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২৪ রাউন্ড রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার কথা স্বীকার করেছেন সদর থানার ওসি মুন্সী আসাদুজ্জামান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন