ঢাকা, মে
২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- বিভিন্ন স্থানে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের
বিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় শনিবার দুপুরে রাস্তা আটকে বিক্ষোভ করেছে ঢাকা
মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
তাদের বিক্ষোভের
কারণে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত মিরপুর ১০ নম্বর থেকে ফার্মগেটমুখী
সড়ক রোকেয়া সরণীতে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে দুর্ভোগে পড়তে হয়
যাত্রীদের।
ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদমর্যাদা দ্বিতীয় থেকে তৃতীয়
শ্রেণিতে অবনমন করা হয়েছে দাবি করে বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিভিন্ন
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে
বলা হয়েছে, এই খবরটি ঠিক নয়।
ঢাকা মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা সকাল ১১টার দিকে আগারগাঁও মোড়ে অবস্থান নিয়ে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়।
দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভকারীরা তালতলায় তাদের ইনস্টিটিউটের সামনে আসে। দুপুর ১টায় সড়ক ছাড়ে তারা। এরপর গাড়ি চলাচল পুনরায় শুরু হয়।
সারাদেশে
পলিটেকনিকে এই অসন্তোষ তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ
আতোয়ার রহমানকে আহ্বায়ক করে একি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে এ সম্পর্কে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
শিক্ষা
মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে বলেছে, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের পদমর্যাদা পরিবর্তনের
কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই। একটি ভুল তথ্যের ভিত্তিতে পলিটেকনিক
ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং বিভিন্ন স্থানে
ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ভোলা
প্রতিনিধি জানান, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ভোলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের
শিক্ষার্থীরা সকালে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এক পর্যায়ে তারা ভোলা-চরফ্যাশন সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ গিয়ে তাদের ঠেকায়।
বোরহানউদ্দিন
থানার ওসি এনায়েত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। তবে
অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ঝিনাইদহ
প্রতিনিধি জানান, সকালে ঝিনাইদহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একদল ছাত্র
বাসটার্মিনালে যানবাহনে ভাংচুর চালায়। তখন ছাত্রদের সঙ্গে শ্রমিকদের
সংঘর্ষে দুই পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়েছে। পুলিশ লাঠিপেটা করে উভয়পক্ষকে
ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এই ঘটনার পর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে আগামী ২৮ মে পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া বরগুনায়সহ কয়েকটি জেলায় বিক্ষোভ করেছে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা।
গাজীপুর
প্রতিনিধি জানান, সকালে গাজীপুরে মডেল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড
টেকনোলজির (মিস্ট) ছাত্ররা ক্লাস বর্জন ও মিছিল করেছে। এসময় তারা
গাজীপুর-শিমুলতলী সড়কে টায়ার জ্বলিয়ে অবরোধ করে।
পরিস্থিতি
নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করলে ছাত্রদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ছাত্ররা
পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং পুলিশ মৃদু লাঠিপেটা করে।
এ সময় আহত কয়েকজনকে স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
ইনস্টিটিউটের
পরিচালক সিরাজুল হক মোল্লা বলেন, এ ঘটনার পর প্রতিষ্ঠানটি থেকে এক
সপ্তাহের জন্য গ্রীষ্মকালীন ছুটি দেওয়া হয়েছে। আগামি ২ জুন খুলবে।
জয়দেবপুর থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ ছাত্র-পুলিশ সংঘর্ষের সত্যতা স্বীকার করেছেন।
বরিশাল
প্রতিনিধি জানান, বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বরিশালের বেসরকারি ইনফ্রা
পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও ভাংচুর করেছে। নগরীর
সিএন্ডবি সড়কে ইনস্টিটিউটের সামনে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চার শিক্ষার্থীকে
আটক করেছে পুলিশ।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. ইমরান বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সরকারি পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা তার
ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মিছিল করতে উৎসাহিত করে।
এতে ৪০/৫০ শিক্ষার্থী বিক্ষোভ ও একটি অটোরিকশা ভাংচুর করে। পরে খবর পেয়ে সবাইকে ক্লাসে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।
ভাংচুর করা অটোরিকশা মেরামতের জন্য চালককে তাৎক্ষণিকভাবে দুই হাজার টাকা জরিমানা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শাহিদুজ্জামান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে চার শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
আটকদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, বলেন ওসি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন