রবিবার, ২৭ মে, ২০১২

উচ্চ রক্তচাপের নতুন চিকিৎসা দেশেই

 
নূরুল ইসলাম হাসিব
স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিবেদক

ঢাকা, মে ২৬ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- রেনাল ডিনার্ভেশন নামে নতুন এক পদ্ধতি ব্যবহার করে ‘জটিল’ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা চালু হয়েছে দেশে।

শনিবার জাতীয় হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল ও গবেষণা ইনস্টিটিউট রক্তচাপের চিকিৎসার এ পদ্ধতি চালু করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা তিনজন রোগীর উপর নতুন এই কৌশলের সফল প্রয়োগ করেছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বাংলাদেশি উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। এদের মধ্যে ১০ থেকে ২০ শতাংশ জীবন-যাপনে পরিবর্তন ও পর্যাপ্ত হারে সর্বোচ্চ পরিমাণ ওষুধগ্রহণ করেও এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। চিকিৎসকরা এ অবস্থাকে জটিল উচ্চ রক্তচাপ আখ্যা দিয়েছেন।

অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ‘একমাত্র’ আধুনিক পদ্ধতি হিসেবে তিন বছর আগে ইউরোপে নতুন এ পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে। এরকম উচ্চ রক্তচাপের কারণে রোগীরা স্ট্রোক, হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া, কিডনি অকেজো হওয়া এবং চোখের জটিল রোগের ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।

নতুন এ পদ্ধতির প্রশিক্ষক ডা. ধীমান বণিক পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “একটি সরু টিউব বা ক্যাথেটার কুঁচকির ধমনীতে প্রবেশ করানো হয় এবং কিডনির ধমনীগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।”

“ওই ক্যাথেটার পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকটি কিডনির ধমনীতে প্রবেশ করে এবং কিডনির স্নায়ুগুলোকে নিঃসাড় করে দেয়। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টিকারী গুরুত্বপূর্ণ সংকেতগুলোর পথে বাধা তৈরি হয় যা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রক্তচাপ কমাতে শুরু করে।”

ডা. ধীমান বলেন, “এই পদ্ধতি প্রয়োগে মাত্র ৩০ মিনিট সময় প্রয়োজন হয় এবং এক রাতের জন্য হাসপাতালে অবস্থান করতে হয়।”

উদ্বোধনী দিনে তারা তিনজন রোগীকে বিনা খরচে এই অপারেশন করিয়েছেন বলে জানান তিনি। দামী ক্যাথেটার ও যন্ত্রপাতির কারণে ভর্তুকি দেওয়ার পরেও এ চিকিৎসা নিতে হলে প্রত্যেক রোগীকে দেড় লাখ টাকা খরচ করতে হবে।

তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এ পদ্ধতির চিকিৎসায় বিশ্বের কোথাও কোনো উল্লেখযোগ্য কোনো জটিলতা দেখা যায়নি।

চিকিৎসা বিষয়ক সাময়িকী দ্য লাংচেট ২০১০ সালে এক প্রতিবেদনে দেখিয়েছে, রেনাল ডিনার্ভেশন পদ্ধতি ‘খুব কার্যকর ও অত্যন্ত নিরাপদ’।

ধরা হয়, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত যাদের অধিকাংশই ধনী দেশের মানুষ। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে শারীরিক পরিশ্রম বৃদ্ধি, ওজন কমানো ও লবণ খাওয়া কমানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা।

কোন মন্তব্য নেই: