আপনার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গী সত্যিই আপনার উপযুক্ত কি?
বিবাহের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করা। কেননা এটা একটা জীবনের শুরু। এই শুরুটা যতটা ভালো হবে, পরের জীবনটা ঠিক ততটাই সুন্দর হবে।আপনার হবু বর বা বউ ঠিক আপনার মনের মতো হবে কিনা তা আপনি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। অ্যারেঞ্জে ম্যারেজের ক্ষেত্রে এই অনিশ্চয়তা আরও বেশি। সেক্ষেত্রে কোনো উপায়ে কি বুঝে নেওয়া সম্ভব আপনার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গী সত্যিই আপনার উপযুক্ত কি না?
নজর না রাখলে ঠকবেন-
বিয়ে করতে চলেছেন। কিন্তু কোনো একটা অজানা কারণে মনটা খচখচ করছে। আপনার হবু বর বা বউ ঠিক আপনার মনের মতো হবে কিনা তা আপনি কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছেন না। অ্যারেঞ্জে ম্যারেজের ক্ষেত্রে এই অনিশ্চয়তা আরও বেশি। সেক্ষেত্রে কোনো উপায়ে কি বুঝে নেওয়া সম্ভব আপনার ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গী সত্যিই আপনার উপযুক্ত কি না? সেটা বুঝতে হলে এই কয়েকটি পরামর্শ মেনে চলতে পারেন—
১. দ্রুত বিয়ের সিদ্ধান্ত নেবেন না। একটি মানুষকে চিনতে সময় লাগে। সেই সময়টা নিন। মনে রাখবেন, একসঙ্গে সময় কাটানোই পরস্পরকে চিনে নেওয়ার সবচেয়ে ভাল উপায়।
২. যাকে জীবনসঙ্গী করতে চলেছেন সে কি আপনার বন্ধু হতে পারে? সে কি আপনার সমস্যাগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল? আপনি নিজেও কি তার সমস্যাগুলো হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারছেন? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি ‘না’হয় তাহলে আপনারা একে অন্যের উপযুক্ত নন।
৩. বিয়ের পরে আপনার জীবনে কিন্তু আমূল পরিবর্তন আসবে। কী ধরনের পরিবর্তন আসবে সেটা অনেকটাই নির্ভর করে আপনি কাকে বিয়ে করছেন তার ওপর। যাকে আপনি বিয়ে করতে চলেছেন তাকে বিয়ের পর কী জাতীয় পরিবর্তন আসবে আপনার জীবনে? ঠাণ্ডা মাথায় ভেবে দেখুন, সেই সব পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা আপনার আছে কি না? যদি না থাকে, তবে এই বিয়েতে এগোবেন না।
৪. খেয়াল রাখুন আপনার সঙ্গী আপনার জন্য কতটা আপোস করতে প্রস্তুত? আপনার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধলে তাকেও অনেকটা ত্যাগ স্বীকার করতে হবে কিন্তু। সে সেইটুকু ছাড়তে প্রস্তুত তো? সে যদি মনে করে একতরফাভাবে আপনিই তার জন্যে ত্যাগ স্বীকার করে যাবেন তাহলে কিন্তু সে আপনার উপযুক্ত নয়।
শেষে এতটুকু বলা যায় দুটি হৃদয়ের মিলনের ক্ষেত্রে সর্বজনীন মানদণ্ড তো কিছু হয় না। কাজেই ওপরের ৪টি বিষয় পরামর্শমাত্র। এসবের ঊর্ধ্বে উঠে কোনো মানুষকে যদি আপনার আদর্শ জীবনসঙ্গী বলে মনে হয় তাহলে আর অপেক্ষা কীসের? তার দিকে বাড়িয়ে দিন হাত, আর ধরুণ তার হাতখানা।
যারা অভিভাবক এক্ষেত্রে তাদেরই দায়িত্বটা বেশি। কেননা হাদিসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘সন্তান জন্ম নেয়ার পর মা-বাবার দায়িত্ব হলো তার সুন্দর নাম রাখা, তাকে শিষ্টাচার শিক্ষা দেয়া এবং সন্তান যখন বড় হবে, প্রপ্ত বয়স্ক হবে তখন তাকে বিবাহ দেয়া, ছেলে এবং মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হলো আর মা-বাবা তাদেরকে বিবাহ করালো না আর সে কোন গুনাহের কাজে লিপ্ত হলো তাহলে সন্তানের গুনাহের একটি অংশ মা-বাবার উপর বর্তাবে।’
পাত্রী নির্বাচন করার ক্ষেত্রে হাদিসে নবী করিম সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমরা চারটা গুণ দেখে পাত্রী নির্বাচন কর, ১. তার সৌন্দর্য দেখো।২.তার বংশ ও মর্যাদা দেখো।৩. তার সম্পদ আছে কি না সেটা দেখা।৪.তার দ্বীন দারি আছে কি না সেটা দেখা। আর তোমরা তার দ্বীন দারিকে প্রাধান্য দাও তাহলে তোমরা পারিবারিক জীবনে শান্তি পাবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ইসলামি বিধি-বিধান মেনে পাত্র-পাত্রী নির্বাচন করার তৌফিক দান করুন। আমীন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন