বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৩

স্বামী-স্ত্রীর পছন্দে অমিল


স্বামী-স্ত্রীর পছন্দে অমিল

1 / 2
একসঙ্গে থাকতে গেলে অনেক পছন্দের বিষয় বিসর্জন দিতে হয়। তেমনি অন্যের পছন্দের বিষয়ের উপর দিতে হয় গুরুত্ব। বাবা-মা, ভাই-বোনের সঙ্গে অনেক সময় জেদ করে নিজের পছন্দটা চাপিয়ে দিতে পারলেও স্বামী বা স্ত্রী’র ক্ষেত্রে পছন্দ-অপছন্দের বিষয়ে দিতে হবে সম্মান। এসব নিয়েই পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম।

 183
 6
 13      Print Friendly and PDF
একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক। সুপ্তি আর অর্ণবের সংসারে সারাক্ষণই ঝগড়া লেগে থাকে। ছোটখাটো বিষয় হলেও ঝগড়ার মূল কারণ তাদের পছন্দের অমিল। একসঙ্গে টিভি দেখতে বসে দুজনই ঠিক করলেন আজকের রাতের খাবারটা তারা বাইরে করবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাইরে খাওয়াতো হলই না, উল্টো তাদের মধ্যে কথা বন্ধ হয়ে গেল। কারণ অর্ণব চায়নিজ খাবার খেতে চান আর সুপ্তি চান বাঙালি খাবার।
শুধু খাওয়া নিয়েই নয়, পোশাক, বই, গান, বেড়াতে যাওয়ার জায়গা সব ব্যাপারেই তাদের পছন্দ সম্পূর্ণ আলাদা। ইদানীং একসঙ্গে তারা কিছু করতে গেলেই নিজের পছন্দ অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। সেখান থেকে শুরু হয় মনোমলিন্য। পরিবারের অন্য সদস্যদের আশঙ্কা, পছন্দের এই অমিল তাদের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।কীভাবে এ সমস্যা থেকে নিজেদের বের করে আনা যায়, সমস্যার সমাধান করতে পারছেন না দুজনেই।
অনেক স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনে পছন্দের অমিল বিষয়টা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্ত্রী বা স্বামী হিসেবে একজন আশা করতেই পারেন যে, দুজনেই কিছু ভাল সময় কাটাবেন। পছন্দের ফারাকের কারণে যখন সে আশা পূর্ণ হয় না, তখনই স্বামী-স্ত্রী সম্পর্কে সমস্যা তৈরি হয়। একে অন্যকে একটু বোঝার চেষ্টা করলে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।
* স্বামী বা স্ত্রী যখন তার পছন্দের সংগীত, বই বা সিনেমা নিয়ে সময় কাটাবেন, তখন তাকে সঙ্গ দিন। সেক্ষেত্রে তার পছন্দের সংগীত, বই বা সিনেমা আপনার পছন্দের কি না সে ব্যাপারটি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্ব দিন।
* কিছু জিনিস আপনার একান্ত পছন্দের। তবে আপনার স্বামী বা স্ত্রী সেটা এড়িয়ে যেতে চান। এমন কিছু জিনিস আছে যা আপনার সঙ্গীর পছন্দের, আপনার অপছন্দ। আবার এমন কিছু নিশ্চয়ই আছে যা আপনাদের দুজনেরই পছন্দ, অথচ আপনারা সেটার খোঁজও রাখেন না। এমন নতুন কিছু খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন দুজনেই।
* দুজনের পছন্দ আলাদা হলে তা প্রতিদিনের কাজে কিছু সমস্যা তৈরি করতে পারে। তারমানে আপনারা পরস্পরের সঙ্গে থাকতে পারবেন না, এমন আশঙ্কার কোনোই কারণ নেই।প্রতিদিন টুকটাক ঝামেলা থেকেই আপনাদের মধ্যে যাতে বড় কোনো ভুল বোঝাবুঝি না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখুন।
মনে রাখুন
* আপনাদের সম্পর্ক সুন্দর করে তোলার জন্য নিজের পছন্দের বিষয়গুলো চাপিয়ে বা দমিয়ে রাখবেন না।বরং আপনার ভাললাগার জিনিসগুলো উপভোগ করুন।পাশাপাশি সঙ্গীর সঙ্গে তার ভাললাগাগুলোও সম্মান দিন।
* কী কারণে আপনাদের দুজনের পছন্দ একরকম হল না, তা নিয়ে ঝগড়া করে সুন্দর সময় নষ্ট করার কোনো মানে হয়না।
* নিজের স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে আপনার পছন্দ মিলতেই পারে।তাই বলে তার সঙ্গে আপনার স্বামীর বা স্ত্রীর তুলনা করবেন না।এতে আপনাদের সম্পর্কে বড় ধরনের সমস্যার সূত্রপাত হতে পারে।
ছবি: রিফাত
মডেল: অ্যানিন ও তারেক

কোন মন্তব্য নেই: