বুধবার, ৮ আগস্ট, ২০১২

চল্লিশের আগেই সাকসেস আইকন

চল্লিশের আগেই সাকসেস আইকন

প্রভাবশালী বাণিজ্য সাময়িকী ফরচুন সম্প্রতি প্রকাশ করেছে ৪০জন ব্যবসা ব্যক্তিত্বের তালিকা, যাদের বিবেচনা করা হচ্ছে আগামী দিনের তারকা হিসেবেই। এই তালিকায় প্রথম তিন জনের তিন জনই আইটি বা তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত। গোটা তালিকাতেই প্রাধান্য রয়েছে প্রযুক্তির, আরো নির্দিষ্ট করে বললে, অনলাইন প্রযুক্তির তরুণ কুশলীদের। ফরচুনের সেই তালিকা থেকে প্রযুক্তি সেক্টরের ১১ জনকে নিয়ে এই আয়োজন।




Sergey Brin Larry Page

সার্গেই ব্রিন ও ল্যারি পেজ

গুগলের প্রতিষ্ঠাতা


বয়স: দুজনেরই বর্তমান বয়স ৩৬ বছর
বৈবাহিক অবস্থা: দুজনেই বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা: দুজনেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন।

হ্যাঁ, তাদের দুজনের বয়স এখন চল্লিশের নিচে অবস্থান করছে, কিন্তু দুজনের কাছেই রয়েছে সমান সম্পদ। ১৪ বিলিয়ন ডলারের মালিক এই দুজনেই।

তবে এ বছর তারা উভয়েই এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন। এন্টিট্রাস্ট মামলায় তাদের প্রতিষ্ঠান গুগল এখন তদন্তের সম্মুখীন। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিখ্যাত সব লেখকের বই নিয়ে তারা করতে চেয়েছিলেন একটি অনলাইন লাইব্রেরি। এই লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হলে তা প্রকাশনার জগতে গুগলকে একচ্ছত্র আধিপত্য এনে দেবে, যা আমেরিকার প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। পাশাপাশি রয়েছে কপিরাইট বিষয়ক বিভিন্ন ইস্যু, বিজ্ঞাপন থেকে আয় কমে যাওয়ার আশঙ্কা এবং প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার চুক্তিভিক্তিক কর্মচারীকে ছাটাই করার সম্ভাব্য বাস্তবতা।

গুগল নামের কোম্পানিকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এই দুজন- রাশিয়ায় জন্মগ্রহণকারী ব্রিন ও যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানে জন্মগ্রহণকারী পেজ। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের থাকার এক ঘর থেকেই তাদের এই কোম্পানি- গুগলের জন্ম হয়। এখন যার বাজার মূল্য ১৭৪ বিলিয়ন ডলার। তারা দুজনে মিলে এখন মোবাইল যন্ত্র ও সফটওয়্যারও বানাচ্ছেন।

বিশেষ তথ্য: দুজনই এখনো একই অফিস ভাগাভাগি করে কাজ করেন।


MarkZuckerberg1027

মার্ক জুকারবার্গ

ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা

বয়স ২৫
বৈবাহিক অবস্থা: অবিবাহিত।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠ মাড়িয়েছেন তবে পেরোননি।
হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ না করেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কের কাজ শুরু করেন। এই নেটওয়ার্কে এখন ৩০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী আছেন এবং ফেসবুকের বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার। এর মাঝে অনেক সোশ্যাল নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠান এসেছে আবার চলেও গেছে। জুকারবার্গ তার দর্শনে স্থীর রয়েছেন এবং তিনি আন্তঃব্যক্তিক যোগাযোগের এমন এক জগত তৈরি করেছেন যা আসলে আমাদের দৈনন্দিন সামাজিক যোগাযোগেরই প্রতিফলন।

২০০৮ সালে তিনি সিরিল স্যান্ডবার্গ নামের ৪০ বছরের এক মহিলাকে গুগল থেকে নিয়ে আসেন, উদ্দেশ্য আরো টাকা বানানো। এ বছর তাদের আয়ের লক্ষ্য গত বছরের দ্বিগুণ, অর্থাৎ ৫০০ মিলিয়ন ডলার।
বিশেষ তথ্য: ব্যবসায় প্রথম বিজনেস কার্ড ব্যবহার করতেন, তাতে পদমর্যাদা লেখা ছিল- আই অ্যাম সিইও, বিচ।



BizStone_EvanWilliam

বিজ স্টোন ও ইভান উইলিয়ামস

টুইটারের প্রতিষ্ঠাতা

বয়স: ৩৫ ও ৩৭ বছর
বৈবাহিক অবস্থা: উভয়েই বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা: কলেজ পর্যন্ত।

টুইটার হচ্ছে মাইক্রোব্লগিং বা ছোট আকারে নিজের কথা জানানোর একটি মাধ্যম। চার বছরের মাথায় কেবল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই টুইটার সাইট ভিজিটরের সংখ্যা মাসে প্রায় ২১ মিলিয়নে এসে দাঁড়িয়েছে। বিদ্যুৎগতিতে সংবাদ ছড়ানোর জন্য এটি এতো জনপ্রিয় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে যে, এ বছর ইরানের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সরকার এর প্রতিষ্ঠাতাদের অনুরোধ করে যেন সাইট দ্রুত আপডেট না করা হয়।

টুইটারে অবশ্য একটি জিনিসের অভাব রয়েছে, তা হলো- এটি এখনো বিজনেস মডেল হিসেবে দাঁড়ায়নি। এর প্রতিষ্ঠাতা, উইলিয়ামস ও স্টোন (এদের সাথে আরেকজন রয়েছেন, যার নাম জ্যাক ডোরসে, যিনি এখনো এর চেয়ারম্যান) খুব দ্রুত বড়লোক হতে চান না। তবে তারপরেও ইতোমধ্যেই তারা ১ বিলিয়ন মুল্যের সমান অর্থ জমা করে ফেলেছেন।
বিশেষ ঘটনা: উইলিয়ামস তার ব্লগ সার্ভিস ব্লগারডটকম ২০০৩ সালে গুগলের কাছে বিক্রি করে দেন।




MarcAndreessen1027

মার্ক অ্যান্ডারসন

নেটস্কেপ, অপসওয়্যার, নিং, অ্যান্ডারসন হরোইটজ এর প্রতিষ্ঠাতা

বয়স ৩৮
বৈবাহিক অবস্থা; বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা : স্নাতক ডিগ্রি

উইসকনসিনবাসী এই ব্যক্তিটি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন, কারণ তিনি শুনেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পেরোনোর পর এরাই সবচেয়ে বেশি টাকা কামাই করে। তার এই হিসেব সত্য প্রমাণিত হয়েছে: ইলিনয় ইউনির্ভাসিটি থেকে বের হবার পাঁচ বছর পর, অ্যান্ডারসন তার প্রথম কাজ নেটস্ক্যাপ কমিউনিকেশন বিক্রি করে দেন এওএল-এর কাছে ৪.২ বিলিয়ন ডলারে।

এরপর তিনি দু'টি প্রতিষ্ঠান চালু করেন। সফটওয়ার প্রতিষ্ঠান ওপস ওয়্যার (২০০৭ সালে একে তিনি এইচপির কাছে বিক্রি করে দেন) এবং সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্ম নিং।

বিশেষ তথ্য : চাপ মুক্ত হওয়ার জন্য তার হাতিয়ার কড়া অ্যালকোহল।



TimArmstrong1027

টিম আর্মস্ট্রং

সিইও, এওএল

বয়স-৩৮
বৈবাহিক অবস্থা-বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা- ব্যাচেলার ডিগ্রি বা স্নাতক ডিগ্রি
২০০০ সালে গুগলের এক বিক্রয় কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয় যে, সে কোম্পানির সার্চ বা অনুসন্ধান পাতায় বিজ্ঞাপন প্রচার করেছে। আর্মস্ট্রং-এর মাথায় বিদ্যুৎচমকের মত এক চিন্তা খেলে যায়; যদি গুগলের বিজ্ঞাপন বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমের সাইটে দেয়া যায়? এর ফলেই জন্ম নিল অ্যাডসেন্স নামের এক বিজ্ঞাপন নেটওয়ার্কের, যার মুল্য এখন ৬ বিলিয়ন ডলার। এর সঙ্গে আর্মস্ট্রং-এর কপালে জুটে যায় আমেরিকায় গুগল সেলসের প্রধানের চাকরিটিও।
এ বছরের এপ্রিল মাসে এওএলের সিইও হওয়ার জন্য তাকে ডাকা হয়।
বিশেষ তথ্য : কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকা এই ক্ষ্যাপাটের শখ; পাখি পর্যবেক্ষণ করা।




PonyMaHuateng1027

‘পনি’ মা হুয়াটেং

টেনসেন্টের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও

বয়স-৩৮
বৈবাহিক অবস্থা; বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক ডিগ্রি
কে বলেছে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক থেকে টাকা বানানো যায় না? মা এর ইন্টারনেট সাম্রাজ্যের নাম টেনসেন্ট। এটি চীনের শেনজেনে অবস্থিত। এই সাইটে প্রায় ৪৫ কোটি লোক ইনস্ট্যান্ট মেসেজ - বা তৎক্ষণাৎ বার্তা আদান প্রদান করার জন্য এখানে ঢোকেন। গত বছর এই সাইটের আয় ছিলো- ১ বিলিয়ন ডলার।
ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং যখন বাজারে আসে তখন তার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে মা এবং তার ছোটবেলার এক বন্ধু তাদের নিজস্ব সেবা কিউকিউ চালু করেন। সময়টা ছিলো ১৯৯৯ সাল। যখন তার সাইট বেশ জনপ্রিয়তা পায় তখন তিনি সেখানে পেইড সার্ভিস বা টাকার বিনিময়ে সেবা দিতে শুরু করেন। এর মধ্যে ছিলো গেমিং এবং ডেটিং সার্ভিসও।

এবছরের প্রথম ভাগে তার বিক্রি বেড়েছে ৭৮ শতাংশ। টাকার অঙ্কে প্রায় ৭৮৮ মিলিয়ন ডলার। মা এর মোট সম্পদের পরিমাণ এখন ৩.৬ বিলিয়ন ডলার।

বিশেষ তথ্য : তার ডাকনাম পনি বা টাট্টু ঘোড়া (চীনা ভাষায় ‘মা’ মানে টাট্টু ঘোড়া)


MarissaMayer1027

মারিসা মায়ার

গুগল সার্চ, প্রডাক্ট ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট

বয়স-৩৪ বছর
বৈবাহিক অবস্থা: এখনো বিয়ে করেননি তবে বাগদান হয়ে গেছে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা: মাস্টার্স ডিগ্রি
মায়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সিম্বলিক সিস্টেম বিষয়ে পড়ার সময় পড়াশোনার ইতি ঘটান। এতে তার বাবা-মা খুব একটা শংকিত হননি। কিন্তু তারা শংকিত হয়ে উঠেন তখনই যখন, মায়ার ম্যাক কিনসের একটি প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। সে প্রস্তাবটি গ্রহণ করলে মায়ার হতেন ওই প্রতিষ্ঠানের নয় নাম্বার কর্মচারী ও প্রথম মহিলা ইঞ্জিনিয়ার- নতুন প্রতিষ্ঠিত ওই প্রতিষ্ঠানের নাম ছিলো গুগল।
এক দশক পর মায়ার সেই গুগলের ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট। যার মানে তিনি প্রায় ১৪ বিলিয়ন ডলার আয় করা এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০০ ওয়েব প্রোডাক্ট দেখাশোনা করেন। এর মধ্যে রয়েছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে শুরু করে গুগল নিউজ পর্যন্ত।

বিশেষ তথ্য : ‘সব সময় কাজে দেরি করে ফেলি’।



MaxLevchin1027

ম্যাক্স লেভচিন

পেপালের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, ও স্লাইড ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা

বয়স -৩৪ বছর
বৈবাহিক অবস্থা: বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক

ইউক্রেনে জন্মগ্রহণকারী লেভিচিন যখন ২৩ বছর তখন সে পালো অ্যালটোর পথে পা বাড়ায়। সেখানে তিনি এক বিনিয়োগকারীকে খুঁজে বের করেন যে লেভিনের নতুন আইডিয়ার পিছনে বিনিয়োগ করতে পারবে। এর মাধ্যমেই জন্ম নেয় অনলাইনে টাকা প্রদান করার প্রথম পদ্ধতি যার নাম পেপাল.কম। যখন ই-বে এটি কিনে নেয় ১.৫ বিলিয়ন ডলারে তখন লেভিচিন তার নিজের ব্যাংকে ভরেন ৩৪ মিলিয়ন ডলার।
তার নতুন অভিযান স্লাইড.কম। এখনও এটি বাজারে ততোটা হৈচৈ ফেলেনি। তবে স্লাইড ও তার অন্য প্রকল্পগুলো, যেমন ইয়েল্প ডট কম এর উপর নজর রাখা হচ্ছে লেভচিনের সৃজনশীলতার জন্যই।
বিশেষ তথ্য : তিনি গসবেক লেভচিন ফ্রড টেস্টের উদ্ভাবক। অনলাইনে কোন আর্থিক লেনদেন বা অ্যাকাউন্ট খোলার সময় স্ক্রিনে ডিসপ্লে করা টেক্সট একটি বিশেষ বক্সে টাইপ করতে হয়, তিনি এই সিস্টেমের উদ্ভাবক।



TonyHsieh1027

টনি হিস

জাপ্পোস ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা

বয়স:৩৫
বৈবাহিক অবস্থা : সিঙ্গল
শিক্ষাগত যোগ্যতা : স্নাতক ডিগ্রি

হার্ভার্ডে পড়ার সময় হিস পিজা বিক্রি করতেন এবং তার প্রথম কোম্পানি এড নেটওয়ার্ক লিঙ্ক এক্সচেঞ্জ মাইক্রোসফটের কাছে ২৬৫ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেছিলেন। সে সময় তার বয়স ছিলো ২৪ বছর। এরপর তিনি অনলাইনে জুতোর বাজার জাপ্পোসে উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯৯ সালে এই প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেন। পরের বছর তিনি তার সিইও বা প্রধান হন।
তিনি এই প্রতিষ্ঠানের বিক্রি ১.৬ মিলিয়ন ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ বিলিয়নে নিয়ে আসেন। মূলত গ্রাহকদের আস্থা অর্জনের মাধ্যমেই এই সফলতা অর্জন করেন তিনি। জুলাই মাসে আমাজন ঘোষণা দেয় তারা ৮৫০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে তার প্রতিষ্ঠানটিকে কিনে নিচ্ছে।

বিশেষ তথ্য : নতুন রিক্রুট করা সব কর্মীকে ট্রেনিংয়ের সময় তিনি প্রস্তাব দেন ওই মুহুর্তে চাকরী ত্যাগ করলে দুই হাজার ডলার দেয়া হবে। এতে, তার ভাষায়, প্রকৃত কর্মী বাছাই করা যায়।



DannyRimer1027

ড্যানি রিমার

ইনডেক্স ভেঞ্চার্সের অন্যতম মালিক

বয়স-৩৯
বৈবাহিক অবস্থা- বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা: স্নাতক ডিগ্রি

বসবাস লন্ডনে কিন্তু তার জন্ম কানাডায়। তিনি সিলিকন ভ্যালির অন্যতম সফল ভাইস চেয়ারম্যান। ইবে ২.৬ বিলিয়ন ডলারে কিনে নেয়ার এক বছর আগে তিনি স্কাইপিতে বিনিয়োগ করেন। ভয়েস পোর্টাল বা ভিওআইপি সাইট টেলমির জন্য তিনি প্রথম বিনিয়োগ করেন। পরে ২০০৭ সালে এটি মাইক্রোসফটের কাছে ৮০০ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি করে দেন।

তার বানানো ইন্টারনেট রেডিও সাইট লাস্ট ডট এফএম সিবিএসের কাছে ২৮০ মিলিয়নে বিক্রি হয়েছে এবং তার ওপেন সোর্স ডাটাবেজ মাইএসকিউএল ১ বিলিয়ন ডলারে বিক্রি হয়েছে সান মাইক্রোসফটের কাছে।
পরবর্তী চাল: তিনি এখন ক্লাউড কম্পিউটিং বিষয়ে মনোযোগ দিচ্ছেন এবং ই-কমার্সকে উন্নত করার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। বকু নামের মোবাইলে বিল পরিশোধের পদ্ধতি ও অনলাইনে টিকেট বদল করার পদ্ধতি ভায়াগোগো ডেভেলপ করছেন।




GinaBianchini1027

জিনা বিয়াঞ্চিনি

নিং এর প্রধান

বয়স ৩৭
বৈবাহিক অবস্থা: বিবাহিত
শিক্ষাগত যোগ্যতা : মাস্টার্স ডিগ্রি
৯০ এর দশকের শুরুতে তিনি প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর আইপিও (প্রাথমিক শেয়ার) বিষয়ে কাজ করতে শুরু করেন বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস-এ। এর পর তিনি তার এক ক্লায়েন্টের সঙ্গে ডিজিটাল কনসালটেন্সি ফার্ম হারমোনিক কমিউনিকেশন্স প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৩ সালে বিজ্ঞাপনী সংস্থা ডেনসুর কাছে একে বিক্রি করে দেওয়া হয়। তবে এর আগেই তিনি হারমোনিক কমিউনিকেশন্সের আরেক ডিরেক্টর মার্ক এন্ড্রিসনের সঙ্গে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট নিং এর পরিকল্পনা করেন। এটি এমন এক প্ল্যাটফর্ম যা তার ব্যবহারকারীকে নিজস্ব সোশ্যাল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে সাহায্য করে।
নিং এর এখন প্রায় ৫২ মিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে। গত বছর তার মুল্য ৬০ মিলিয়ন বেড়ে মোট ৫০০ মিলিয়নে এসে দাঁড়িয়েছে। বিয়াঞ্চিনি এখন প্রতিদিনের কাজগুলো দেখাশোনা করেন এবং এন্ড্রিসেন এ প্রতিষ্ঠানে একজন উপদেষ্টা হিসেবে আছেন।




বিডিনিউজটোয়েন্টিফোরডটকম/বিজয়/এইচবি/এইচআর/অক্টোবর ২৭/০৯




গুগল'র বর্তমান সভাপতি সারজি ব্রিন

brin.gifগুগল প্রযুক্তির বর্তমান সভাপতি এবং সহ প্রতিষ্ঠাতা সারজি ব্রিন প্রযুক্তি জগতের এক বরেন্য ব্যাক্তিত্ব। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালীন সারজি ব্রিন ইন্টারনেট সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এই সময় তিনি ল্যারি পেইজের সঙ্গে মিলে তৈরি করেন বিজ্ঞানভিত্তিক টেক্সট যা ওয়েব সাইটে সহজে পাঠানো যায়। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক করার সময় ল্যারি পেইজের সাথে মিলে একটি খসড়া তৈরি করেন যার নাম দেন 'বৃহৎ আকারের হাইপারটেক্সটচুয়াল ওয়েব সার্স ইঞ্জিন'। বর্তমান গুগল প্রযুক্তির ভিত্তি তখন থেকেই গড়ে উঠে।

প্রযুক্তি জগতের অন্যতম এই কর্ণধার ১৯৭৩ সালে ২১ আগস্ট রাশিয়ার মস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন। গণিতবিদ ও অর্থনীতিবিদ বাবা মাইকেল ব্রিন ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের একজন স্বনামধন্য অধ্যাপক ছিলেন। সারজী ব্রিনের যখন ছয় বছর বয়স তখন তারা অভিবাসি হয়ে আমেরিকায় চলে আসেন। ১৯৭৩ সালে ব্রিন ম্যারিল্যান্ডের পেইন্ট মন্টেসুরি স্কুলে পড়াশোনা জীবন শুরু করেন। ছোট কাল থেকে ব্রিনের গণিতের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ ছিল। পরিবার তাকে এই ব্যাপারে যথেষ্ট সহযোগিতা করে। ১৯৯০ সালে ব্রিন ভর্তি হন কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং গণিতে। ১৯৯৩ সালে মে মাসে বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন সায়জি ব্রিন।

ম্যারিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ডক্টরেট ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা চলিয়ে যাওয়ার সময় তিনি পিএইডডি করার জন্য প্রস'তি নেন। যদিও তিনি পরে পিএইচডি লাভে ব্যর্থ হন। সারজি ব্রিন বিখ্যাত ডি এমপ্রিসা ইনস্টিটিউট থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

brin1.gif সারজি ব্রিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম ধনী এবং তার স্থান ছাব্বিশতম । তার সম্পদের পরিমাণ আঠারো দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার। ল্যারি পেইজের সাথে মিলে ব্রিন বোয়িং ৭৬৭ বিমান ক্রয় করেন। এটি তাদের ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক দুই কাজেই ব্যবহার করা হয়। বিশেষভাবে ডিজাইনকৃত এই বিমানটি পঞ্চাশ জন যাত্রী বহনে সক্ষম।

বিখ্যাত চলচিত্র 'ব্রোকেন অ্যারো' এর নির্বাহী প্রযোজক ব্রিন এর মিডিয়াতেও রয়েছে সরব উপসি'তি। ২০০৪ সালে এবিসি ওয়ার্ল্ড নিউজ সারজি ব্রিনকে 'পারসন অফ দি উইক' ঘোষণা করে। ২০০৫ সালে ব্রিন অন্যতম 'ইয়াং গ্লোবাল লিডার' হিসাবে মনোনীত হন। টেসলা মটরের অন্যতম কর্ণধার সারজী ব্রিন ইলেকট্রিক চালিত যানের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। ২০০৭ সালের মে মাসে অ্যানি ইউজসিকিকে বিয়ে করেন এই বিখ্যাত প্রযুক্তিবিদ।

কামাল আশরাফ/এমডিকে/এমআইআর/০১০৪ ঘ./০৮.০৩.০৮




'লিনাক্স' অপারেটিং সিস্টেম উদ্ভাবন করেন লিনাস টরভেল্ড

linus-torvalds.jpgইউনিক্স এর মতো গোপনীয় আর জটিল অপারেটিং সিস্টেমকে সহজ আর মুক্তভাবে প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে লিনাস টরভেল্ড 'লিনাক্স' অপারেটিং সিস্টেম উদ্ভাবন করে প্রযুক্তি জগতে বিপ্লবের সূচনা করেন। লিনাস টরভেল্ড এর তত্ত্বের উপর ভিত্তি করেই এগিয়ে চলেছে অপারেটিং সিস্টেম এর উৎকর্ষ বৃদ্ধি।

লিনাস বিশ্বাস করেন, ওপেন সোর্স হচ্ছে সফটওয়্যার ব্যবহারের সবচেয়ে সঠিক পন্থা। যদিও তিনি নন - কারন্যাল ডাটাবেজকে সমর্থন করেন না।

কম্পিউটারের সঙ্গে লিনাস টরভেল্ড এর প্রথম সখ্য গড়ে উঠে কমোডোর ভিক -২০ নামক কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে। এরপর সিনক্লিয়ার কিউএল নামক কম্পিউটার ব্যবহার করতে গিয়ে অপারেটিং সিস্টেম এর ব্যাপক পরিবর্তন আনেন এবং লেখার জন্য প্রোগ্রাম তৈরি করেন। এই সময় তিনি কিছু কম্পিউটার গেইমও তৈরি করেন। ১৯৯০ সালের শেষ দিকে ৮০৩৮৬ ভিত্তিক আইবিএমের ব্যক্তিগত ব্যবহার্য কম্পিউটার ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি লিনাস অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে কাজ শুরু করেন।

বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করেলেও লিনাস টরভেল্ড ফিনল্যাল্ডের হেলসিংকিং শহরে জন্ম গ্রহণ করেন ঊনিশ ঊনসত্তর সালের আটাশে ডিসেম্বর । পিতা আননা টরভেলস এবং মাতা নীলস টরভেলস দু'জনেই সাংবাদিক ছিলেন। আর দাদা ওলি টরভেলস ছিলেন বিখ্যাত কবি।

আমেরিকার বিখ্যাত রসায়নবিদ এবং নোবেল বিজয়ী লিনাস পাউলিং এর নামানুসারে বাবা-মা তার নাম রাখেন 'লিনাস'। তবে লিনাস মনে করেন তার নাম রাখা হয়েছে বিখ্যাত কমিকস বই 'চীনাবাদাম এর চরিত্র লিনাস অনুসারে ।

১৯৮৮ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত টরভেল্ড হেলসিংকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। তাঁর স্নাতকোত্তর থিসিসের শিরোনাম ছিল 'লিনাক্স, একটি গ্রহণযোগ্য অপারেটিং সিস্টেম।' পরের তিন বছর তিনি কাজ করেন লিনাক্স এবং ইউনিক্স এর জন্য একটি আর্দশ বাইনারি ফরম্যাট তৈরি করতে।

কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য টাইম ম্যাগাজিন কর্তৃক নির্বাচিত সেরা একশ' ব্যক্তিত্বের মধ্যে ষোলতম হয়েছিলেন লিনাস। বিজনেস উইক ম্যাগাজিনের জরিপে সেরা ব্যবস্থাপক হিসাবেও স্বীকৃতি পান তিনি।

এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারে ভূষিত হন লিনাক্স টরভেল্ড।

কামাল আশরাফ/এমডিকে/২৩২৫ ঘ./৩১.১০.০৭




অ্যাপল এর প্রধান নির্বাহী স্টিভ জবস

Steve jobs1একবার ভাবুনতো, কম্পিউটার আবিষ্কারের প্রথম দিককার কথা! দৈত্যাকৃতি সেই বিশাল কম্পিউটারগুলো যেগুলো ব্যবহৃত হতো সরকারী কাজে এবং সাধারন মানুষের কাছে ছিল রহস্যময়। বিশাল আকৃতির এই রহস্যময় যন্ত্রটিকে সাধারণ মানুষের কাছে ব্যবহারযোগ্য করে গড়ে তুলতে এর বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটান স্টিভেন পল জবস এবং তার সঙ্গী স্টিভ উইজনিক।

কম্পিউটার প্রযুক্তি এবং বিনোদন শিল্পের উদ্যোক্তা হিসাবে স্টিভ জবস ব্যাপক পরিচিতি নাম। পুরো নাম স্টিভেন পল জবস। তিনি কম্পিউটার ও প্রযুক্তিপন্য তৈরির প্রতিষ্ঠান অ্যাপল'র সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমান প্রধান নির্বাহী। এছাড়া বিনোদনভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠান ডিজনির পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য।

অ্যাপল উদ্ভাবনের মাধ্যমেই কম্পিউটার সম্পর্কে মানুষের ধারনাতে আমূল পরিবর্তন আসে। মূলত জবস এর ধারনা থেকে বর্তমান হার্ডওয়্যার এবং সফটঅয়্যার প্রযুক্তিতে যুগান-কারী উন্নতি হতে চলেছে।

Stevejobsবানিজ্যিক ভাবে কম্পিউটার এর উৎপাদন করার জন্য ১৯৭৬ সালের এপ্রিল মাসে জবস এবং উইজনিক যৌথ বিনিয়োগে 'অ্যাপল কম্পিউটার কোম্পানি' নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। অ্যাপল কম্পিউটার কোম্পানি প্রথমে বাজারে ছাড়ে অ্যাপল ১ এবং পরবর্তীতে অ্যাপল ২ নামে ব্যক্তিগত ব্যবহারযোগ্য কম্পিউটার। এগুলো খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

১৯৮৫ সালে অ্যাপল কোম্পানির তৎকালীন প্রধান নির্বাহী স্কুলির সঙ্গে সর্ম্পকের অবনতি কারনে জবসকে কাজ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। স্কুলির ছুঁড়ে দেয়া চ্যালেঞ্জের কথা ভুলে যাননি জবস। নতুন উদ্যমে শুরু করেন তিনি। নিজের কাঁধে তুলে নিলেন পৃথিবীকে বদলে দেয়ার কাজ। ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নেক্সট কম্পিউটার নামের একটি প্রতিষ্ঠানটি। এই প্রতিষ্ঠানের প্রযুক্তিগত অবকাঠামো ছিলো অনেক অগ্রগামী। এছাড়া নেক্সট কম্পিউটার থেকে বহু জনপ্রিয় গেইম বাজারে ছাড়া হয়। ওয়েব এর উন্নয়নের জন্য নেক্সট দরুন ভূমিকা পালন করে। নেক্সট মেইল ছিল প্রথম দৃশ্যমান গ্রাফিক্সস এবং অডিও সমৃদ্ধ ইমেইল।

১৯৯৬ সালে জবস অ্যাপল কোম্পানি চারশো দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে কিনে নিলে ১৯৯৭ সালে অর্ন্তবর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী হিসাবে যোগ দেন। এই সময় জবস কিছু প্রকল্প হাতে নেন এগুলোর মধ্যে ছিল নিউটন, সইবারডগ, ওপেনডক। ২০০০ সালে এসে অর্ন্তবর্তীকালীন প্রধান নির্বাহী থেকে স্থায়ী প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেন এবং এখন পর্যন- দায়িত্ব পালন করছেন।

১৯৫৫ সালের ২৪ শে ফেব্রুয়ারি ক্যালিফোনির্য়ার সানফ্রান্সিকোতে জন্ম নেন জবস। জন্মের পর তার অবিবাহিত মা তাকে দত্তগ্রহীতা পিতামাতা পল এবং ক্লায়ার কাছে অর্পণ করেন। যদিও তার জন্মদাতা পিতামাতা পরবর্তীতে বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন। কিন' তার বোন উপন্যাসিক মোনা সিমসন এর জন্মের কয়েক বছর পরই আবার বিয়ে ভেঙ্গে যায়। দত্তক গ্রহীতা বাবা-মা তার নতুন নাম রাখেন স্টিভেন পল জবস।

স্টিভেন পল জবস কিউপার টিনো মাধ্যমিক স্কুলে লেখাপড়া শুরু করেন। মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে হোমস্টেড উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্টিভ উইজনিকের সঙ্গে গ্রীষ্মকালীন চাকুরীজীবী হিসাবে কাজ করেন এবং ১৯৭২ সালে জবস স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন।

ফোর্টল্যান্ডের রিড কলেজে ভর্তি হলেও জবস এক সেমিস্টার করার পর তা স্থগিত করে দেন।
 
কামাল/এমডিকে/২৩৩০ ঘ./১২.০৯.০৭ 




ইন্টেলের চেয়ারম্যান ড. ক্রেইগ আর ব্যারেট

BarrettIcon1বিশ্বের বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম ইন্টেল। এই প্রতিষ্ঠানের চতুর্থ প্রেসিডেন্ট এবং বর্তমান চেয়ারম্যান ড. ক্রেইগ আর ব্যারেট। তিনি যে কেবল ইন্টেলের চেয়ারম্যান তাই নয় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা উন্নয়নের অন্যতম প্রধান সংগঠকও।

ক্রেইগ ব্যারেটের জন্ম ১৯৩৯ সালে সানফ্রান্সিসকোতে। তিনি স্নাতক, স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি লাভ করেন বিখ্যাত স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। স্নাতক সম্পন্ন করার পর তিনি যোগ দেন স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা ও প্রকৌশল বিভাগের প্রভাষক হিসেবে। তিনি এই বিভাগে যুক্ত ছিলেন ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত। সে সময় তিনি সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করছিলেন।

ব্যারেট ১৯৭২ সালে ডেনমার্কের ড্যানিশ কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফুলব্রাইট ফেলো লাভ করেন। এর আগে ১৯৬৪-৬৫ সালে ইংল্যান্ডের ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবোরেটরি থেকে লাভ করেন এনএটিও পোষ্ট-ডক্টোরাল ফেলো। তিনি তার শিক্ষকতা জীবনে ম্যাটেরিয়াল প্রোপার্টিজের উপর মাইক্রোস্ট্রাকচারের প্রভাব নিয়ে প্রায় ৪০ টির মতন গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। ম্যাটেরিয়াল সাইন্সের উপর তার লেখা একটা বই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয়।

১৯৭৪ সালে তিনি ইন্টেল কর্পোরেশনে টেকনোলজি ডেভোলপমেন্ট অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৮৪ সালে তিনি এই প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রেসিডেন্ট পদমর্যাদা লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ১৯৯০ সালে হন এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে পদন্নতি পান।

BarrettIcon১৯৯২ সালে তিনি ইন্টেলের পরিচালক পর্ষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৯৩ সালে চিফ অপারেটিং অফিসার পদে অধিষ্ঠিত হন।

১৯৯৭ সালে তিনি ইন্টেলের চতুর্থ প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনিত হন। ১৯৯৮ সালে প্রধান নির্বাহি কর্মকর্তা বা চিফ এক্সিকিউটিভ আফিসার পদ লাভ করেন। ২০০৫ সালের ১৮ই মে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত হন।

ড. ব্যারেট ইন্টেল ছাড়াও বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় কিছু সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আছেন। জাতিসংঘের গ্লোবাল এলায়েন্স ফর ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি অ্যান্ড ডেভোলপমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ট্রেড পলিসি এন্ড নেগোশিয়েশনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা কমিটি এবং আমেরিকান হেলথ ইনফরমেশন কমিউনিটির অন্যতম সদস্য ড. ব্যারেট।

এছাড়াও তিনি বিজনেস কোয়ালিশন ফর স্টুডেন্ট এচিভমেন্ট এবং ন্যাশনাল ইনোভেশন ইনিশিয়েটিভ লিডারশিপ কাউন্সিলের যুগ্ম-চেয়ারম্যান এবং ইউএস কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল এর ট্রাষ্টি বোর্ডের একজন মেম্বার।

এখানেই শেষ নয়, 'ইনোভেশন আমেরিকা' নামের ন্যাশনাল গভার্নরস এসোসিয়েশন টাস্ক ফোর্স, ন্যাশেনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার এডভাইজরি কাউন্সিল এবং সাইন্টিফিক কমিউনিকেশন এন্ড ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির একজন সদস্য এবং ইউএস সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাষ্ট্রি এসোসিয়েশন, ন্যাশেনাল কাউন্সিল ফর মাইনোরিটিস ইন ইঞ্জিনিয়ারিং, দি ন্যাশনাল ফরেষ্ট ফাউন্ডেশন, আর্কাইভ এবং টেকনেকের বোর্ড অফ ডিরেক্টরের একজন সদস্য।

শিক্ষাবিদ এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা হবার কারনে ড. ব্যারেট সবসময় চেষ্টা করেছেন ছাত্রদের জন্য নতুন কিছু করতে। এজন্য তিনি স্কুলগুলোর মান উন্নত করা এবং বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চশিক্ষা ও প্রযুক্তি শিক্ষার পথ উম্মুক্ত করতে চেষ্টা করে গেছেন সর্বদা।

মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তিনি সব সময় পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষার বিভিন্ন দিক সর্ম্পকে। বিভিন্ন স্কুলগুলোর মান বাড়ানোর বিষয়ে ওকালতিতে তার জুড়ি ছিল না।

তার ব্যাক্তিগত উদ্যেগে ২০০০ সালে বোষ্টনে চালু হয় কস্পিউটার ক্লাব-হাউস নেটওয়ার্ক। এই ক্লাবের লক্ষ্য সমাজে প্রযুক্তিগত মতপার্থক্য কমিয়ে আনা। এর পরপরই সাড়া বিশ্বের সুবিধাবঞ্চিত দেশগুলোতে চালু হয় ক্লাবহাউস সংস্কৃতির। এসব ক্লাবহাউসগুলো কাজ করে যাচ্ছে মূলত একটা নিরাপদ পরিবেশে তরুন মেধাবীদেরকে উন্নতমানের প্রযুক্তিগত সেবা দেওয়ার মাধ্যমে তাদের মেধাবিকাশে সাহায্য করা। এছাড়া শিক্ষার মান উন্নয়নে তার গৃহিত অন্য উদ্যেগগুলোর মধ্যে আছে -
১. ইন্টেল সাইন্স ট্যালেন্ট সার্চ অ্যাওয়ার্ড স্কলারশিপ। যার অন্য নাম 'জুনিয়র নোবেল প্রাইজ'।
২. ২০০১ সালে চারটি স্থানে ইন্টেলের অলাভজনক ক্লাবহাউস তৈরি করেন।
৩. শিক্ষায় অবদানের জন্য ন্যাশেনাল অ্যালায়েন্স অফ বিজনেস অনার্স ঘোষণা।
৪. ২০০১ সালে ইন্টেলের সকল 'কে-১২' শিক্ষক এবং প্রি-সার্ভিস ফ্যাক্যাল্টির জন্য টিচার ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রামের প্রসার বাড়ান।
৫. ২০০১ সালে এডুকেশনাল লিডারশিপের জন্য অনার্স ঘোষণা।

তার আরও অবদান
ক্রেইগ ব্যারেট ছিলেন আমেরিকান সেমিকন্ডাক্টর শিল্প সমিতির চেয়ারম্যান। তিনি এই শিল্পের উন্নয়নের রোডম্যাপ তৈরি করেন এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার ব্যবস্থা করেন। তার এই গবেষণা ব্যবস্থা অনুসারেআমেরিকার প্রায় ডজনখানেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ম্যাটেরিয়াল, স্ট্রাকচার, সার্কিট, সিস্টেম, সফটওয়্যার, ইন্টারকানেক্ট, ডিজাইন এবং এগুলো পরীক্ষনে ভবিষ্যতে যে ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে সেই সব বিষয়ে গবেষণা করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের ব্যাবস্থা করেন।

ড. ব্যারেট বিশ্বাস করেন যে 'কম্পিউটার যাদু করতে পারে না, তবে শিক্ষকরা পারেন'। সেই বিশ্বাস থেকেই তিনি একটি প্রকল্প হাতে নেন যেই প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় ২৫ টি দেশের কমপক্ষে দশ লক্ষ শিক্ষককে প্রশিক্ষন দেওয়া হবে যেন তারা শ্রেনীকক্ষে প্রযুক্তি ব্যাবহার করার মাধ্যমে শিক্ষার মান বাড়াতে পারেন।

কোন মন্তব্য নেই: