Translate

বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ, ২০১২

মনের জানালা

সমস্যা: আমার বিয়ে হলো ছয় বছর হচ্ছে। আমার মেয়ের বয়স এখন তিন। বিয়ের পর থেকে খেয়াল করছি, আমার স্বামী ইন্টারনেটে আপত্তিকর ছবি দেখতে অভ্যস্ত। রাতের পর রাত সে এ কাজ করত। একদিন কম্পিউটার খুলে দেখলাম, সে বেশ কিছু বাজে ছবি ডাউনলোড করে রেখেছে। ওকে অনেকবার বুঝিয়েছি যে ওর এসব দেখে আমার কষ্ট হয়। প্রথম প্রথম সে প্রতিজ্ঞা করত যে এসব সে আর করবে না, কিন্তু ঠিকই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখত। বাসায় নেটের লাইন না থাকলে সে অস্থির হয়ে যেত। শেষবার যখন ও ধরা পড়ল, তখন আমি ঠিক করলাম আলাদা হয়ে যাব। কিন্তু ও রাজি হয়নি। ঝগড়ার একপর্যায়ে আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করি। তার পরে ও আমাকে বলে যে আর ওসব দেখবে না। গত পাঁচ মাস ও ওসব আর দেখেনি, অথবা দেখলেও আমি জানি না। আপা, আমি বুঝতে পারছি ওকে আমি আর বিশ্বাস করি না, ভালোবাসি না। আমার স্বামী মেয়েকে খুব ভালোবাসে, আর মেয়েও বাবাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু ওকে এখন আর আমি মেনে নিতে পারছি না।
শৈলী
পরামর্শ: অনেকেই ইন্টারনেটে একধরনের আসক্তির শিকার হচ্ছে। অর্থাৎ, এগুলোর ওপর মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এই নির্ভরশীলতা অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেটি অসুস্থতায় গিয়ে ঠেকে। এ ক্ষেত্রে যে মানুষটি আসক্ত হচ্ছে, সে প্রাপ্তবয়স্ক।
তাকেই নিজের কাছে খুব সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে সে আর এটি কখনো করবে না। তুমি আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং ঝগড়া করে নিজের কষ্ট বাড়িও না। তুমি তো তাকে খুব ভালোভাবেই বোঝাতে পেরেছ যে তার আচরণটি তোমার কতটা অপছন্দ। এখন তোমার ওকে সময় দিতে হবে বিষয়টি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে কি না দেখার জন্য। তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সত্যিই তুমি ওকে ছেড়ে দিতে চাও কি না। আমার ধারণা, শুধু সন্তানের কথা চিন্তা করে তুমি একটি ভালোবাসাহীন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখলে সন্তানের কোনো মঙ্গল হবে না। কারণ, মেয়েটি তার মাকে বিষণ্ন অবস্থায় দেখে বড় হলে ভবিষ্যতে সে-ও বিষণ্নতায় ভুগতে পারে। তোমাকে ধরে নিতে হবে যে তোমার স্বামীর এই আসক্তি কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫০ ভাগ, আর সেটি আবার শুরু করার আশঙ্কাও ৫০ ভাগ। এই আশঙ্কাগুলো মাথায় রেখে তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি ওর সঙ্গে বাকি জীবন কাটাতে চাও কি না। অর্থাৎ, তার সঙ্গে থাকলে তুমি বেশি কষ্টে থাকবে, নাকি না থাকলে তোমার বেশি কষ্ট হবে। খুব ভালো করে ভেবে যেদিকে কষ্টের পরিমাণ একটু হলেও কম হবে, সেদিকটিই বেছে নিতে হবে। পরে যদি মনে হয় তোমার সিদ্ধান্তটি হয়তো ভুল ছিল, তার পরও নিজের সিদ্ধান্তের ওপর শ্রদ্ধা রেখে জীবনে চলতে হবে। নিজেকে বোঝাতে হবে যে তুমি খুব ভালো করে ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলে, কাজেই এর ভালো-মন্দ দিকগুলোর মোকাবিলা করার জন্য তুমি তোমার মানসিক শক্তিগুলো কাজে লাগাবে। নিজের কোনো ক্ষতি করার কথা তুমি আশা করি আর ভাববে না। কারণ, তোমার জীবন অনেক মূল্যবান।

সমস্যা: আমার বয়স ১৮। ২০০৯ সালে একটি প্রেমের প্রস্তাব পাই। ছেলেটি আমাদের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। আমিও একসময় তার প্রেমে পড়ি। ছেলেটি প্রতিষ্ঠিত এবং বয়স ৩০ বছর। তার মন খুব ভালো। আমার কোনো আঘাতে সে নিজে আঘাত পায়, যা প্রমাণিত হয়েছে বহুবার। তার জীবনের প্রতিটি ঘটনাই আমি জানি। তার বিপদে পড়ে বিয়ের ঘটনাও আমি জানি। সে আমার কাছে কিছুই লুকায়নি। তার পরিবারের সবাই আমাকে দেখেছে। সবাই আমাদের সম্পর্কের কথা জানে। বিবাহিত জীবনে সুখ না থাকায় তার পরিবার সুখের জন্য তার পছন্দ মেনে নিতে প্রস্তুত। তার প্রথম বিয়ে ভাঙার জন্য সবাই প্রস্তুত, তার স্ত্রীও। কিন্তু বর্তমানে আমি একটি নতুন সংবাদ পাই, তা হলো সে বাবা হতে চলেছে, যা আমি মানতে পারছি না। তার সব পাপ আমি মাফ করেছি, এটি পারছি না। কারণ, আমি বর্তমানে তার প্রতি অনেক দুর্বল। আমার যে আর ধৈর্য সইছে না। আমি তাকে সুখী হয়ে দেখাতে চাই। আমি কি মাফ করব তাকে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ঢাকা।
পরামর্শ: এই বয়সে ৩০ বছরের একটি বিবাহিত ছেলেকে জীবনসঙ্গী করার কথা ভাবাটা কি খুব যুক্তিযুক্ত? তোমাকে তো লেখাপড়া শেষ করে নিজের ভবিষ্যৎ আগে গড়তে হবে। মনে হচ্ছে, ছেলেটি এখনো স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। এ অবস্থায় তোমাকে তার জীবনের সঙ্গে জড়ানোটা অন্যায় হয়েছে। তুমি এখনো প্রায় বয়ঃসন্ধিতে রয়েছ। কিন্তু ছেলেটি তো তোমার চেয়ে ১২ বছরের বড়। তার তো উচিত ছিল আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করে তারপর তোমার কাছে তার মনের কথাটা প্রকাশ করা। শুধু তা-ই নয়, তোমাকে লেখাপড়া শেষ করার জন্য উৎসাহ দেওয়ারও প্রয়োজন ছিল। তা ছাড়া বিপদে পড়ে সে বিয়ে করেছে—এ কথা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। কারণ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যদি না চায়, তাহলে কেউ তাকে বিয়ে করার জন্য বাধ্য করতে পারে না। ছেলেটির চরিত্র সম্পর্কে তোমার আরও ভালো করে খবর নেওয়া দরকার। তার স্ত্রী যদি সন্তানসম্ভবা হয়, তাহলে সে এ মুহূর্তে স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে না। প্রয়োজনে তুমি তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ভদ্রভাবে ছেলেটি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারো। এতে করে একটি ভিন্ন চিত্র পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে এবং এরপর তুমি তোমার বুদ্ধি ও বিচার ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করো। দাম্পত্য জীবনে দুজনকে অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে হয় ঠিকই, তবে একজন কখনো অন্যজনের ভালো থাকাটা নিশ্চিত করতে পারে না। আমরা আঘাত পেয়ে নিজেরাই সেই আঘাত থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করব। কেউ যদি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়, তবে সেটি যেন বাড়তি পাওনা হয়। আশা করছি, তুমি তাড়াহুড়ো না করে ভালো করে ভেবে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নেবে।

লাবণ্য

ব্যাপারটা অলৌকিকই বটে। কারণ, তদবির ও পূর্ব-অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি যখন সোনার হরিণ এবং দুই দিন আগেও যার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দুটো আশার কথা বলার জো ছিল না, সেই জামিল কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে একটি চাকরির গর্বিত মালিক। যোগদানপত্র হাতে পেয়ে জামিল এতটাই অবাক হলো যে এটা সত্যিই বিশ্বাসযোগ্য কি না, দেখার জন্য সঙ্গে সঙ্গেই অফিসে ছুটে গিয়েছিল সে।
অসম্ভব সুন্দর একটা অফিস। বসও চমৎকার একজন মানুষ। শুরু থেকেই আন্তরিক একটা পরিবেশ পেয়ে যাওয়ায় জামিল নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে শুরু করল। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, কিন্তু বিপত্তিটা বাধল তখনই যখন সকালে তাকে বসের স্পেশাল চেম্বারে ডাকা হলো। রুমের পশ্চিম পাশে তাকিয়ে জামিলের আর চোখ ফেরানোর কোনো উপায় ছিল না। পৃথিবীর সব রূপ শরীরে ধারণ করা এক তরুণী অদ্ভুত মাদকতাময় ভঙ্গি নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে। না, কোনো রক্তমাংসের মানুষ নয়, দেয়ালে একটি সাদাকালো ছবি হয়ে ঝুলে আছে সে। শুরু থেকেই ছবিটা দুর্নিবার আকর্ষণ তৈরি করল জামিলের মনে। কিন্তু বসের রুমে প্রতিদিন গেলেও তার পরিচয় আর জানা হয় না জামিলের। অত্যন্ত লাজুক স্বভাবের হওয়ায় বস তো বটেই অন্যান্য সহকর্মীর কাছেও এটা জিজ্ঞেস করতে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে সে।
শুরুতে আকর্ষণটা সহনীয় পর্যায়েই ছিল। একসময় এটা এমন অবস্থায় দাঁড়াল যে জামিল কোনো কারণ ছাড়াই বসের রুমে যাওয়ার ছুতো খুঁজতে লাগল। জামিল দেখতে মোটামুটি সুদর্শন ও ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হওয়ায় অফিসে অবিবাহিত ও বিবাহিত দুই ধরনের মেয়ে মহলেই তার যথেষ্ট সুখ্যাতি। জামিলের আশপাশে সুন্দরীরও কোনো অভাব নেই। কিন্তু তাদের পাত্তা না দিয়ে জামিল কেন ছবির একটা মেয়ের প্রতি এতটা আকুল হয়ে উঠল, এটা তার বোধগম্য হয় না। ছবির মেয়েটি ক্রমশ দেয়াল থেকে জামিলের প্রতিটি কর্মকাণ্ডের একটা অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠল। তার ঘুমাতে যাওয়া, ঘুম থেকে ওঠা, খাওয়া, অফিসে যাওয়া—সবকিছুর মধ্যে সেটার একটা অপ্রতিরোধ্য চৌম্বকীয় আবেশ তৈরি হতে থাকল। রবিঠাকুরের উপন্যাস শেষের কবিতার নায়িকার নামে জামিল মেয়েটার নাম দিল ‘লাবণ্য’। তার সবকিছুই অতঃপর একসময় ‘লাবণ্যে আবর্তিত’ হতে থাকে। অফিস ছুটির সময় তীব্র মনখারাপ নিয়ে বাড়ি ফেরে জামিল। একটা অদ্ভুত মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা শুরু হয়েছে, এটা সে বুঝতে পারছে; কিন্তু এ থেকে উত্তরণের কোনো পথ জামিলের জানা নেই।
পৃথিবীর চিরাচরিত ধারা—কোনো কিছুই সব সময় এক নিয়মে চলে না। অফিসের একজন সহকর্মীর সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে জামিল একদিন জানতে পারে, ছবিটি তার বসের অকালপ্রয়াত স্ত্রীর। বিষয়টি সে অতি কষ্টে মেনে নিলেও ছবির ‘লাবণ্য’ তার মন থেকে একেবারে মুছে গেল না।
বছর পাঁচেক পর এক ফাগুনসন্ধ্যা। জামিল তত দিনে একটা বহুজাতিক কোম্পানিতে যোগ দিয়েছে। হঠাৎ করেই সাবেক বস তাকে ফোন দিলেন, ‘জামিল, তুমি এখনই চলে এসো আমার অফিসে। একটুও দেরি করা যাবে না কিন্তু।’
জামিল অপ্রত্যাশিত এই আমন্ত্রণে হতবাক হয়েই অফিসে ছুটল। বসের রুমে ঢুকেই জামিল আপাদমস্তক ঝাঁকুনি খেল। এ কী দেখছে সে? এ তো সেই ছবির ‘লাবণ্য’।
তাহলে কি সে যা জেনেছে, সেটা ভুল ছিল? কিন্তু সেটাই বা কীভাবে সম্ভব! কারণ, এত দিনে তাঁর স্ত্রীর বয়স কি তবে একটুও বাড়েনি?
জামিলের সাবেক বস জামিলকে মেয়েটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন, ‘জামিল, এ হচ্ছে আমার একমাত্র মেয়ে সোহানা। লন্ডন থেকে এমবিএ শেষ করে আমার এখানেই ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে জয়েন করেছে।’
সোহানা এগিয়ে এসে জামিলের সঙ্গে হাত মেলাল আর বহুদিনের চেনা সেই বাঁকা হাসি দিয়ে জামিলকে জিজ্ঞেস করল, ‘আপনি কি আমাদের কোম্পানিতে আবার জয়েন করবেন? আপনার মতো বিশ্বস্ত একজনকে আমাদের অনেক প্রয়োজন।’
জামিল বিমূঢ় হয়ে তাকিয়ে রইল।
রিনি জুলিয়েট রোজারিও
গুলশান, ঢাকা।

অন্তত হাসুন ডা ক্তা র রো গী র ঙ্গ


রোগী: ডাক্তার সাহেব, আমাকে বাঁচান!
ডাক্তার: কী হয়েছে আপনার?
রোগী: আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। রাতে খাটে ঘুমাতে গেলে মনে হয় খাটের নিচে কেউ বসে আছে। খাটের নিচে গেলে মনে হয় খাটের ওপর কেউ বসে আছে। এভাবে ওপর-নিচ করে করে আমার রাত পেরিয়ে যায়।
ডাক্তার: হু, বুঝতে পেরেছি। আপনি দুই মাস প্রতি সপ্তাহে তিনবার আমার চেম্বারে আসুন, আপনার রোগ ভালো হয়ে যাবে।
রোগী: ইয়ে মানে, আপনার ভিজিট যেন কত?
ডাক্তার: ২০০ টাকা।
দুই সপ্তাহ পর রোগীর সঙ্গে দেখা হলো ডাক্তারের।
ডাক্তার: কী হলো, আপনি যে আর এলেন না?
রোগী: ধুর মিয়া, একজন কাঠমিস্ত্রি ২০ টাকা দিয়ে আমার সমস্যা সমাধান করে দিয়েছে। আপনাকে অতবার ২০০ টাকা দিতে যাব কেন?
ডাক্তার: কীভাবে?
রোগী: আমার খাটের পায়াগুলো কেটে ফেলেছে!


এক রাতে ডাক্তারের বাড়িতে ফোন করলেন এক ভদ্রমহিলা।
ভদ্রমহিলা: ডাক্তার সাহেব, আমাকে জলদি ওজন কমানোর একটা উপায় বাতলে দিন। আমার স্বামী আমার জন্মদিনে একটা সুন্দর উপহার দিয়েছে, কিন্তু আমি উপহারটার ভেতর ঢুকতেই পারছি না!
ডাক্তার: কোনো চিন্তা করবেন না। আপনি কাল সকালে আমার অফিসে একবার আসুন। ওষুধ দিয়ে দেব। খুব শিগগির আপনার স্বামীর দেওয়া জামাটা আপনি পরতে পারবেন।
ভদ্রমহিলা: জামার কথা কে বলল? আমি তো গাড়ির কথা বলছি!

রোগী: কী হলো, ডাক্তার সাহেব, আপনি আমাকে দুটো প্রেসক্রিপশন দিলেন যে?
ডাক্তার: একটা প্রেসক্রিপশন দিয়েছি যাতে আপনি ভালো বোধ করেন।
রোগী: আর অন্যটা?
ডাক্তার: অন্যটা দিয়েছি যাতে ওষুধ কোম্পানিগুলো ভালো বোধ করে!


রোগী: ডাক্তার সাহেব, আমার দুই সপ্তাহ ধরে ঠান্ডা, জ্বর, মাথাব্যথা, পেটব্যথা, দাঁতে ব্যথা...।
ডাক্তার: কোনো সমস্যা নেই, ওষুধ লিখে দিচ্ছি, সময়মতো খেয়ে নেবেন।
কিছুদিন পর আবার সেই রোগী ডাক্তারের চেম্বারে হাজির।
রোগী: ডাক্তার সাহেব, আমার অসুখ তো ভালো হলো না।
ডাক্তার: ঠিক আছে, আপনাকে কিছু পরীক্ষা করতে দিচ্ছি। পরীক্ষাগুলো করিয়ে নিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করুন।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ডাক্তার আবারও ওষুধ দিলেন, কিন্তু এবারও ফলাফল শূন্য!
রোগী: ডাক্তার সাহেব, এবারও তো কোনো উপায় হলো না! আমার রোগটাই তো ধরা যাচ্ছে না।
কিছুক্ষণ ভেবে নিয়ে ডাক্তার বললেন, ‘হু, আপনি এক কাজ করুন। পাক্কা এক ঘণ্টা ঠান্ডা পানিতে ডুব দিয়ে বসে থাকুন।’
রোগী: বলেন কী! তাহলে তো আমার নিউমোনিয়া বেঁধে যাবে!
ডাক্তার: আমি অন্তত নিউমোনিয়ার চিকিৎসাটা করতে পারব!


ডাক্তার: আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আপনার জন্য দুটো খবর আছে। একটা খারাপ খবর, আরেকটা খুবই খারাপ খবর!
রোগী: কী খবর, বলুন?
ডাক্তার: আপনার পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফলাফল বলছে, আপনি মাত্র ২৪ ঘণ্টা বাঁচবেন।
রোগী: এর চেয়েও খারাপ খবর আর কী হতে পারে?
ডাক্তার: প্রথম খবরটা দেওয়ার জন্য আমি আপনাকে গতকাল থেকে খুঁজছি!


এক চিত্রনায়িকা গেছেন ডাক্তারের কাছে।
ডাক্তার: বাহ্! আপনার ওজন তো দেখছি আগের চেয়ে এক কেজি কমেছে!
চিত্রনায়িকা: হু, এমনটাই হওয়ার কথা।
ডাক্তার: কেন?
চিত্রনায়িকা: কারণ, আমি আজকে মেকআপ করিনি!

সংগ্রহ: মো. সাইফুল্লাহ

কা র্য কা র ণ প্রথম দেখার স্মৃতি ভোলা যায় না কেন?

দুই বছর আগে ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে কখন-কোথায় দেখা হয়েছিল, তার প্রতিটি মুহূর্ত আপনার হুবহু মনে আছে, কিন্তু দুই দিন আগে যে আপনি বইয়ের দোকানে গিয়েছিলেন, সে কথা খুব বেশি মনে নেই। হোক না অনেক আগের ঘটনা। সেই মধুর দৃশ্য আপনার স্মৃতিতে এখনো উজ্জ্বল। কীভাবে নিষ্পলক দৃষ্টিতে আপনি ওকে দেখেছিলেন, চোখে চোখে কী কথা হয়েছিল, ও ঠিক কোন রঙের পোশাক পরেছিল, হাসিটা কত হূদয়গ্রাহী ছিল—সবই আপনি একনিঃশ্বাসে বলে দিতে পারেন। কীভাবে এটা সম্ভব? প্রেমের ব্যাপার বলেই এটা সম্ভব। কারণ, প্রেমে আবেগের সঞ্চার হয়। মনস্তত্ত্ববিদেরা অনেক আগে থেকেই জানেন, আবেগের ঘটনাগুলো সাধারণত স্মৃতিতে চির-অম্লান থাকে। মস্তিষ্কের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ারে ধূসর পদার্থের আমিগডালা অংশ হূদয়ের আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই স্মৃতি দীর্ঘ সময় সযত্নে রক্ষিত হয়। দেখা গেছে, কোনো কারণে কারও মস্তিষ্কের আমিগডালা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার স্মৃতিতে আবেগময় স্মৃতি বেশি দিন সঞ্চিত থাকে না।

যে খবর নাড়া দেয় মায়ের এক ধার দুধের দাম!

মায়ের মতো আপন কে আছে ভুবনে? মা-ই তো আমাদের সর্বদুঃখের দুঃখী, সর্বখুশির খুশি।
ভাবছেন ধারেকাছে ‘মা দিবস’-জাতীয় কিছু নেই। হুট করে এমন মায়ের গুণকীর্তন কেন? হ্যাঁ, খুব স্বার্থপরের মতো কেবল মা দিবসেই মাকে স্মরণ করি আমরা কেউ কেউ। বাকি দিনগুলোতে মাকে ভুলে থাকি অবলীলায়। মাকে আমাদের মনে পড়ে না। মা থাকেন দূরে। মুঠোফোনের এই রমরমার যুগেও তাঁকে ফোন করার ফুরসত পাই না। অথবা মা খুব কাছে থাকলেও দূরের মানুষ। রয়ে-সয়ে তাঁর সঙ্গে দুটো কথা বলার সময় নেই। নাগরিক ব্যস্ততা আমাদের মায়ের কথা ভুলিয়ে রাখে। এমন সন্তান তো আমাদের মধ্যেই আছে। তবুও আমাদের মায়েরা অপেক্ষায় থাকেন। দীর্ঘ দিবস দীর্ঘ রজনী কাটে সন্তানের অপেক্ষায়। তারপর একদিন মায়ের অপেক্ষার পালা ফুরোয় চিরতরে। মা হন অন্য ভুবনবাসী। ঘাড়-মাথা নিচু করে আমরা মায়ের খাটিয়া কাঁধে তুলি। চিতায় আগুন দিই। তারপর? মা হয়ে যান বসার ঘরে বাঁধাই করা ছবি।
মাকে ভুলেই ছিলাম। হুট করে আরও একবার মাকে মনে করিয়ে দিলেন ডেভিড ওয়ারনার। ভদ্রলোক একজন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ। তাঁর লেখা বই, হয়ার দেয়ার ইজ নো ডক্টর অনূদিত হয়েছে ৮৯টি ভাষায়। ওয়ারনার বলছেন, সন্তানদের সবচেয়ে বেশি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারেন মা। (সূত্র: প্রথম আলো, ২৯-০২-২০১২)
নাহ্, ডাক্তার, বদ্যি কেউ নন। এমনকি নয় বিলাসবহুল বহুতল হাসপাতালও। ছোট্টবেলায় আমাদের ছোট্ট শরীরটি অসম্ভব মমতায় আগলে রেখেছিলেন আমাদের মা-ই। ডেভিড ওয়ারনার আরও একটি অভিনব কথা বলেছেন। সুচিকিৎসার জন্য হাসপাতালই আসল কথা নয়। চিকিৎসক না হয়েও একজন মানুষ কীভাবে সহজে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসাসেবা দিতে পারেন, সে উপায়ই বাতলে দিয়েছে ওয়ারনারের বই।
ওয়ারনারের জন্য শ্রদ্ধা। নতুন একটা ধারণার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলেন বলে।
ওয়ারনারকে ধন্যবাদ। মায়ের কথা আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন বলে। —ইকবাল হোসাইন চৌধুরী

চা খেলে রাতে ভালো ঘুম হয়

শারীরিক ও মানসিকভাবে চনমনে থাকার জন্য ভালো ঘুম সবাই চান। কিন্তু অনেকেই ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। আর এ জন্য তাঁরা ঘুমের ওষুধ খান।
যাঁদের এ ধরনের সমস্যা আছে, তাঁদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রতিষ্ঠান বেডেক। একটি জরিপ চালিয়ে তাঁরা দেখেছেন, রাতে ভালো ঘুমের জন্য দরকার হলো রাত নয়টা ১০ মিনিটের দিকে এক কাপ চা খাওয়া এবং ঢিলে ঢালা পোশাক পরে ঠিক রাত ১০টার দিকে ঘুমাতে যাওয়া।
পিটিআইয়ের খবরে বলা হয়, বেডেক যুক্তরাজ্যের দুই হাজার প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তির ওপর জরিপ চালান। তাঁরা বলেন, রাত ১০টায় ঘুমাতে গিয়ে ২০ মিনিট ধরে শুয়ে শুয়ে বই পড়লে ভালো ঘুম হয়। তারা জানায়, ডান হাতের ওপর মাথা রেখে ডান দিকে কাত হয়ে শুয়ে পড়লে ঘুম গভীর হয়।
বেডেকের ওই গবেষণায় আরও বলা হয়, রাতের খাবার সাড়ে আটটার সময় এবং ঘুমানোর আগে নয়টা ১০ মিনিটের দিকে রাতের শেষ কাপ চা খাওয়া ভালো। এতে ঘুম সবচেয়ে ভালো হয়। এ ছাড়া ওই জরিপে সারা দিন পরিশ্রম করার পর সন্ধ্যার দিকে কমপক্ষে দুই ঘণ্টা সাত মিনিট বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে নারীদের বিশ্রামের ওপর বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বেডেকের কর্মকর্তা তানিয়া জনস্টন বলেন, জরিপে দেখা যায়, ভালো ঘুমের জন্য সন্ধ্যার বিশ্রাম এবং নিয়মমাফিক জীবনযাপন খুবই জরুরি।

সঙ্গী সাদা (রয়া মুনতাসীর )

গরমের এই সময়ে সাদা পোশাকটাই যেন সবচেয়ে স্বস্তির। তবে বসন্ত ঋতুতে পোশাক হওয়া চাই বর্ণিল। সাদার সঙ্গে তাই মিলিয়ে নিতে পারেন নানা উজ্জ্বল রং। কামিজটি সাদা আর সালোয়ার ওড়না বর্ণিল। বেশ কয়েক বছর আগের এ ফ্যাশন আবার ফিরে এসেছে। তবে এবার সাদা কামিজেও পাইপিং, বর্ডার ইত্যাদিতে যোগ হচ্ছে কিছু রং। গলায়, কামিজের নিচের অংশেও হালকা নকশা দেখা যাচ্ছে।

রং বাছুন ইচ্ছামতো
সাদা কামিজের মজাটাই অন্য রকম। ওড়না ও সালোয়ারের ক্ষেত্রে বেছে নেওয়া যায় যেকোনো রং। যেকোনো রংই ভালো মানাবে। সালোয়ারটি যদি নীল হয়, তবে ওড়নাটিকে সাজানো যায় নীল, কমলা ও বেগুনির মিশ্রণে। এতে একঘেয়েমি তো আসবেই না। উল্টো পেয়ে যাবেন সবাইকে তাক লাগানোর সুবর্ণ সুযোগটি।
সাদা কামিজটি একদম সাদা না রেখে হালকা কাজ করিয়ে নিতে পারেন। সাদার ওপরই সাদা ব্লকপ্রিন্টের কাজ করানো যায়। অথবা উজ্জ্বল কোনো রঙের এমব্রয়ডারির কাজ করিয়ে নিতে পারেন গলার কাছে। আবার পুরো পোশাকটি সাদা রেখে হাতায় এবং নিচের দিকে করাতে পারেন হালকা পছন্দসই কোনো কাজ।
বেছে নিন উজ্জ্বল রংগুলোকে। সালোয়ার একরঙা রাখলেই ভালো লাগবে দেখতে। ওড়নাটি পছন্দ করুন দুই থেকে তিন রঙা। সাদা সবচেয়ে সুন্দর রং। এর মাঝে যে রংই ব্যবহার করুন না কেন, দেখতে ভালো লাগে। কালো ও লাল রং পরলে গরম বেশি লাগে। এ কারণে বেছে নিতে পারেন নীল, ফিরোজা, হালকা ও গাঢ় সবুজ, ম্যাজেন্টা, হলুদ, সর্ষে হলুদ, কমলা, বেগুনি ইত্যাদি রং।
সালোয়ার ও ওড়নাটিতে হালকা ব্লক কিংবা স্ক্রিন প্রিন্টের নকশা রাখতে পারেন। তবে তা অবশ্যই হতে হবে ছোট কোনো নকশা। ইয়োক আবার ফিরে আসছে ধীরে ধীরে। চাইলে রঙিন কোনো ইয়োকও ব্যবহার করতে পারেন।
সুতি কিংবা হালকা খাদির কাপড় আরাম দেবে এ গরমে। সালোয়ারের ক্ষেত্রেও একই কথা। ফ্যাশন ডিজাইনার আনিলা হক জানান, অ্যান্ডেজ সাদা মেঘের ভেলা নামে নিয়ে এসেছে গরম উপযোগী পোশাক। সাদার প্রাধান্যেই পোশাকগুলো বানানো হয়েছে। লম্বা স্লিম কাটে বানানো সালোয়ার-কামিজগুলোতে দেয়া হয়েছে দেশীয় এবং পাশ্চাত্য ছাটের মিশ্রন। পোশাকগুলোতে বেল্ট এর ব্যবহারও করা হয়েছে।

নকশায় চমক
কামিজটি যেহেতু সাদা, তাই কাটিংয়ে নিয়ে আসতে পারেন অভিনবত্ব। গলায় রাখুন বাহারি কাট। আঙরাখা স্টাইল রাখতে পারেন। কামিজের নিচের অংশে রাউন্ড কাট আনতে পারেন। তবে যে ডিজাইনই আনুন না কেন কামিজটি কিছুটা লম্বা রাখুন। এখনকার ফ্যাশন লম্বা কামিজেরই।
সাদামাটা সালোয়ার না পরে চুড়িদার বা ক্যাপ্রি পরতে পারেন। প্যান্ট সালোয়ারের ফ্যাশনও ফিরে আসছে। আর লেগিংস তো এখন দারুণ জনপ্রিয়।

হালকা সাজই মানানসই
যেহেতু গরম, তাই সাজ যথাসম্ভব হালকা রাখুন। চোখের হালকা কাজলই অনেক কথা বলে দেবে। ক্যাজুয়াল লুক হলেও পরে নিতে পারেন বড় আকারের বিভিন্ন রঙের গয়না। সালোয়ার কিংবা ওড়নার সঙ্গে মিলিয়ে পরে নিতে পারেন রঙিন একটি টিপ। আর ঠোঁটে গোলাপি, কমলা ইত্যাদি রঙের লিপস্টিক দিতে পারেন। ফ্যাশন ডিজাইনার আনিলা হক বলেন, ‘যাঁরা একটু হালকা গড়নের তাদের যে কোনো কাটের এবং রংয়ের পোশাক পরার স্বাধীনতা আছে। তবে যাঁরা একটু ভারী গড়নের তারা লম্বা এবং বড় ওড়না ব্যবহার করলে দেখতে ভাল লাগবে । চুরিদার পরতে পারেন তাহলে কিছুটা লম্বাটে এবং শুকনো দেখাবে।’

পাঠকের উকিল naksha@prothom-alo.info


 কিছুদিন আগে আমি আমার এক পরিচিত ব্যক্তিকে একটি বিশেষ কাজ করার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। টাকা দেওয়ার সময় একটি ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তি করেছিলাম যে সঠিক সময়ে কাজ সম্পূর্ণ করতে না পারলে আমার টাকা ফেরত দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে তিনি আমার কাজ করতে পারেননি। এখন শর্ত অনুুযায়ী তাঁর কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমাকে এড়িয়ে যান। এমনকি তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বলেন যে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পের আজকাল কোনো মূল্য নেই। এই পরিস্থিতিতে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করার ক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?
মো. সুমন
ঠাকুরগাঁও।
 টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আপনাকে আদালতে মোকদ্দমা করতে হবে। এ ধরনের মামলা খরচ ও সময়সাপেক্ষ। ভবিষ্যতে টাকা ধার দেওয়ার ব্যাপারে আপনাকে সতর্ক হতে হবে।

 একটি সরকারি নির্মাণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার গত বছর মারা যান। তিনি তাঁর ছেলেকে এফিডেভিটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মনোনীত করে গেছেন। কিন্তু অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি না জানিয়ে অথবা আইনানুগ অনুমতি ছাড়াই তাঁর ছেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। চুক্তি সম্পাদনে বা মৃত ঠিকাদারের নামে চেক ইস্যুতে কোনো আইনি বাধা আছে কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

 তালিকাভুক্ত ঠিকাদার একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকলে তা ঠিকাদারের মৃত্যুর পরও চলতে পারে। তবে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি অথবা মৃত ব্যক্তির নামে চেক বৈধ নয়।
 আমার দাদা ২০০৪ সালে ফুফুর বিয়েতে খরচের জন্য দেড় বিঘা জমি পাশের গ্রামের এক লোকের কাছে বিক্রি করেন। তাঁর কাছে দাদা ৫০ হাজার টাকা পেতেন কিন্তু তখন তিনি মাত্র ৩০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা দিতে অসমর্থ হন। পরে দাদা আরও আড়াই বিঘা জমি বন্ধক রেখে টাকা জোগান। এই বছর লোকটি জমির দলিল নেওয়ার জন্য দাদার ওপর চাপ দিচ্ছেন কিন্তু আমার দাদা এখন তাঁকে জমি দিতে চান না। উল্লেখ্য, লোকটি ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জমিটি ভোগ করেন এবং বাকি টাকা না দেওয়ায় তাঁকে জমির দলিল বা অন্যান্য কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। এখন লোকটি যদি মামলা করেন, তাহলে দাদা কী করতে পারেন?
সৈকত
মগবাজার, ঢাকা।
 ২০০৪ সালের সংশোধিত নিবন্ধন আইনে সব ধরনের বিক্রয় ও হস্তান্তরের ক্ষেত্রে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যও নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। চিঠির তথ্য অনুযায়ী, চুক্তি বাস্তবায়নের সময়সীমা উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে লোকটি শুধু আপনার দাদার বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের মোকদ্দমা (মানিস্যুট) করতে পারেন।

 আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী। এক বছর আগে আমার এক আত্মীয়ের মেয়েকে বিয়ে করি। কিন্তু বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পরে জানতে পারি, বিয়ের আগে তার অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম। কিন্তু এ কথা জানার পর তাকে আর মেনে নিতে পারছি না। মেয়েটি তার সম্পর্কের কথা স্বীকার করে না। কিন্তু তার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আমাকে বলেছে। তার সঙ্গে আমার দু-একদিন পরপর ঝগড়া হয়। আমি তাঁকে তালাকের কথা বললে সে রাজি হয় না। কিন্তু আমি আর সংসার করতে চাই না। তাঁকে কীভাবে তালাক দেব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

 মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী আপনি আপনার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন। সংশ্লিষ্ট কাজি অফিসে তালাক প্রদানের পর তালাকের কপির একটি আপনার স্ত্রীকে এবং আরেকটি চেয়ারম্যান বা মেয়র অফিসে পাঠাতে হবে। চেয়ারম্যান বা মেয়র কর্তৃক ওই নোটিশ প্রাপ্তির ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। তবে দেনমোহর এবং তালাক চলাকালীন অর্থাৎ ভরণপোষণের খরচ আপনার স্ত্রীর প্রাপ্য।

 আমি স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করছি। আমার বাবা একটি ব্যাংকে কর্মরত। তিনি প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আমার মাকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। তার এক বছর পর আমার জন্ম হয়। আমার জন্মের কিছুদিন পর থেকেই আব্বু এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলে আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করলে এক রাতে মা আমাকে নিয়ে পালিয়ে নানার বাসায় চলে আসেন। এরপর বাবা কাউকে না জানিয়ে মাকে তালাক দেন। কিন্তু মা আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো কাগজপত্র পাননি। বাবা অনেক ক্ষমতাবান এবং অর্থসম্পদের মালিক। তাঁর প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। আমার মায়ের সন্তান আমি একাই। কিছুদিন আগে শুনেছি, বাবার সব সম্পত্তি তাঁর দুই ছেলে এবং এক মেয়ের নামে লিখে দিয়েছেন। বাবার সঙ্গে আমি অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তিনি ও তাঁর স্ত্রী মিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আম্মুর আর্থিক অবস্থা ভালো না। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। তিনি অসুস্থ থাকায় আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। আমি কি আইনসম্মতভাবে বাবার কোনো সম্পদের অংশ পেতে পারি? তাঁর পেনশনের টাকার অংশ আমি পাব কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

 আপনার বাবা জীবিত অবস্থায় তাঁর সম্পত্তি অন্য ছেলেমেয়েকে লিখে দিলে আপনার করণীয় কিছু নেই। জীবিত অবস্থায় তিনি তাঁর সম্পত্তি যাকে খুশি তাকে দান করতে পারেন। পেনশনের ক্ষেত্রে ওই অর্থ শুধু ওনার নমিনির প্রাপ্য। তবে আপনি আপনার ভরণপোষণের জন্য আপনার বাবার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। আইনি সাহায্য সংস্থা আপনাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে।

 আমার খালু এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে রেখে মারা যান। কিছুদিন পর খালার দেবরের সঙ্গে খালার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। প্রথম সংসারের ছেলেমেয়ে নিয়ে দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে তাঁর সুখের সংসার ছিল। ১৯৭০ সালের জলোচ্ছ্বাসে আমার খালার পুরো পরিবার নিহত হয়। শুধু খালার মেয়ের স্বামী বেঁচে যান। এখন তাঁদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে আছি আমি অর্থাৎ তাঁর আপন বোনের মেয়ে, আর তাঁর মেয়ের জামাই। কিন্তু খালার শ্বশুরবাড়ির এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় ওই জমি দখল করে আছে। এ অবস্থায় প্রকৃত উত্তরাধিকারী কে হবেন?
আমেনা খাতুন
 আপনার চিঠির তথ্য অনুযায়ী আপনার খালার রেখে যাওয়া উত্তরাধিকারীদের তালিকা অসম্পূর্ণ। আপনার মৃত খালার অন্য কোনো জীবিত উত্তরাধিকারী না থাকলে তাঁর মেয়ের জামাই মেয়ের প্রাপ্য অংশের অর্ধেক সম্পত্তি পাবেন। সম্পত্তি বেদখল হলে দেওয়ানি আদালতে দখল পুনরুদ্ধারের মামলা করতে হবে।

এই ঋতুতে ত্বকের যত্ন (শারমিন নাহার)

বসন্ত মানেই ঝরাপাতার অবসান আর নতুন পাতার আবির্ভাব। তবে শুষ্কতা আর রুক্ষতার কারণে এ সময় প্রকৃতিতে ধুলাবালি বেড়ে যায়। ধুলাবালির সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের তির্যক আলোতেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় ত্বক। তাই এই ঋতুতে ত্বকের দরকার বিশেষ যত্ন।
হেয়ারোবিক্স ব্রাইডালের রূপ বিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমিন বলেন, এ সময় সানবার্ন খুব বেশি হয়। কেবল মুখেই নয়, পিঠে এবং হাত-পায়েও হয়। তাই ব্যাগে সব সময় রাখতে হবে একটি ছাতা। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন লোশন কিংবা জেল ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া ব্যবহূত অন্য প্রসাধনী—লিপস্টিক ও পাউডারেও যেন এসপিএফ (সান প্রোটেক্টিভ ফিল্টার) ১৫-এর বেশি থাকে। রোদ থেকে চোখ রক্ষা করতে ব্যাগে রাখা যেতে পারে সানগ্লাস।
যাঁরা সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করতে পারেন না, তাঁরা বারবার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলতে পারেন। সারা দিনের কাজ শেষে রাতে নিতে পারেন ত্বকের বাড়তি পরিচর্যা। এ জন্য মুখটা ক্লেনজার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এরপর কোমল সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে ত্বকের ধরন অনুযায়ী রাতে ব্যবহারের (নাইট ময়েশ্চারাইজিং) ক্রিম মাখতে হবে। ধুলাবালির কারণে ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডস জমে নাকে, ঠোঁটের নিচে। ব্ল্যাক ও হোয়াইট হেডসে জমা স্থানে গরম পানির ভাপ দিয়ে পাঁচ মিনিট পর প্লাকার দিয়ে নিজেই তুলে ফেলতে পারেন। ধুলাবালি থেকে চুল রক্ষা করতে পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে মাথায় একটা স্কার্ফ অথবা ব্যান্ডেনা বেঁধে রাখতে পারেন। নারকেল তেল ও জলপাইয়ের তেল একসঙ্গে গরম করে চুলে ম্যাসাজ করে শ্যাম্পু করলে চুল হয় ঝরঝরে। এ ছাড়া চুলের বাড়তি যত্নে টক দই, কলা, পেঁপে দিয়ে ঘরে তৈরি প্যাক ব্যবহার করলে চুল ভালো থাকে।
হাত-পায়ের যত্নে ঘরে বসেই নিজেই করে নিতে পারেন পেডিকিউর, ম্যানিকিউর। এ ছাড়া মাসে একবার পারলারে গিয়ে ফেসিয়াল করলে ত্বক ভালো থাকে।
তবে ত্বকের বাইরের যত্নের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাসের দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার পরামর্শ দেন এই রূপ বিশেষজ্ঞ। দিনে অন্তত আট-নয় গ্লাস পানি এবং প্রচুর পরিমাণে ফল, সবজি আর সালাদ খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

পকেট রস মারুফ রেহমান

ঘুম!!
ঘুম আসে না। কোনোভাবেই ঘুম আসে না। বাদশা মিয়ার সমস্যা শুনে ডাক্তার ওষুধ দিলেন। বাদশা মিয়া ওষুধ খেল। তাও ঘুম আসে না। ডাক্তার টেস্ট দিলেন। বাদশা টেস্ট করাল। উহু! এবারও ঘুমের দেখা নেই। ডাক্তার বললেন, কিছুতেই যখন কাজ হচ্ছে না, তখন ভেড়া গুনুন। বুদ্ধিটা পুরোনো। তবে মাঝেমধ্যে কাজে লাগে। ১০০টা ভেড়া গুনলেই হবে। দুদিন পরে বাদশা মিয়া এল ডাক্তারের কাছে।
—ডাক্তার সাহেব, আগে রাতে ঘুম আসত না। এখন তো দিনের ঘুমও মাথায় উঠেছে।
—কেন? ভেড়া গুনে কাজ হয়নি?
—রাত দেড়টার মধ্যে ১০০ ভেড়া গোনা শেষ। সারা রাত পড়ে আছে। ভেড়াগুলো নিয়ে কী করা যায়? মহা ঝামেলা! রাত দুইটার দিকে ভেড়াগুলোর গা থেকে পশম সংগ্রহ করলাম। উলের ফ্যাক্টরি দিলাম। রাত পৌনে চারটার দিকে সোয়েটারের অর্ডারও পেলাম। কিন্তু শিপমেন্ট পাঠানোর সময় বন্দরে ঝামেলা লেগে গেল। শ্রমিক আন্দোলন। শিপমেন্ট আটকে আছে, ডাক্তার। এ অবস্থায় ঘুমাই কীভাবে?

চোখ
পিন্টুর এসএসসি পরীক্ষা। একই সময়ে বাংলাদেশ বনাম ভারতের খেলা। পরীক্ষা আগামী বছরও দেওয়া যাবে। খেলা মিস করা কোনো কাজের কথা না। বাসায় ঘোষণা দিল, তার চোখে সমস্যা। কোনো কিছুই
ঠিকমতো দেখতে পাচ্ছে না।
মা নিয়ে গেল ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার চোখের কোনো সমস্যাই খুঁজে পাচ্ছে না।
— ওপর থেকে অক্ষরগুলো পড়ো তো বাবা।
— অক্ষর!!
— ওই যে চার্ট। দেখতে পাচ্ছ না?
— উহু!
— দেয়ালে টানানো।
— দেয়াল? সেটা কোন দিকে?

ডাক্তার পিন্টুকে পরীক্ষার জন্য আনফিট সার্টিফিকেট দিলেন।
সেদিনের ডে-নাইট ম্যাচ দেখার জন্য পিন্টু গ্যালারিতে বসল। ভারত টসে জিতল। আর সেই সময়ে পিন্টু খেয়াল করল, তার পাশের চেয়ারে চোখের ডাক্তার বসে আছেন এবং তিনি ভ্রু কুচকে পিন্টুর দিকে তাকিয়ে আছেন।
পিন্টু দুইবার কাশি দিয়ে বলল, ভাই, অনেকক্ষণ ধরে বসে আছি। বাসটা ছাড়ছে না কেন?
আমি চোখে ঠিকমতো দেখতে পাই না। বাস না স্টেডিয়াম ঠিকমতো বুঝিও না!!

কবি আসিফ মেহ্দী

কবিতার জোরে বেচারার নামই হয়ে গেছে ‘কবি’! বাবা-মায়ের দেওয়া নামে কেউ আর তাকে ডাকে না। ‘বেচারা’ বলার কারণ, গ্রামের মানুষ তাকে খ্যাপানোর জন্যই ‘কবি’ শব্দটা ব্যবহার করে; যেন যার কাজকর্মের যোগ্যতা নেই, সে-ই হয় কবি!
আমাদের কবি তারাশঙ্করের কবি উপন্যাসের ‘নিতাই কবি’র মতো নয়। গ্রামের অ্যানালগ পরিবেশে থাকলেও শহরের ডিজিটাল হাওয়া তার চারিত্রিক সনদপত্রের বারোটা বাজিয়েছে। লাভ ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কবি যেন শেয়ারবাজারের রাঘববোয়ালদের মতোই পাকা! ‘পিক আওয়ারে’ প্রেম করে একজনের সঙ্গে আর ‘অফ-পিক আওয়ারে’ গল্প জমায় আরেকজনের সঙ্গে। তবে তার ফেসবুকের প্রোফাইলে দেখা যায়, ‘ইন এ রিলেশনশিপ উইথ কবিতা’। ‘কবিতা’ তারই আরেকটি ফেক আইডি হয়তো!
ঘটনা ঘটল গত মাসের ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’তে। অনেক হিসাব কষে কবি ঠিক করল, মীনার সঙ্গে দেখা করবে সকালে, পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ির উত্তর দিকের পুকুরপাড়ের ডাব গাছতলায়। আর টুনুর সঙ্গে দেখা করবে বিকেলে, কাজলা বুড়ির বাঁশবাগানের কাছে।
শীতের সকালে পিঠা আর খেজুরের রস খেয়ে, গায়ে সোয়েটারের ওপর পাঞ্জাবি চাপিয়ে, শরীরে বিলেতি খুশবু মেখে কবি রওনা দিল পুকুরপাড়ের উদ্দেশে। সেখানে সময়মতো উপস্থিত হয়ে ভালোবাসার প্রথম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলো কবি। অচিরেই ভালোবাসার দ্বিতীয় পরীক্ষারও মুখোমুখি হলো সে। মীনার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য সে নাকি জীবন পর্যন্ত কোরবান করে দিতে পারবে। মীনা তাকে জীবন উৎসর্গ করার মতো বড় কোনো পরীক্ষায় ফেলল না। শুধু গাছ থেকে তার জন্য একটা ডাব পেড়ে দিতে বলল। এ যুগে চাঁদে যাওয়ার জন্য আগ্রহী মানুষের অভাব আছে বলে মনে হয় না; কিন্তু গাছ থেকে ডাব পাড়ার জন্য মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কবি নিজেও গাছবিদ্যায় পারদর্শী নয়। অথচ কবির নিজেরই একটা অণুপ্যারোডি আছে, ‘গ্রন্থগত বিদ্যা আর বৃক্ষগত ডাব, নহে বিদ্যা নহে ডাব হইলে অভাব’! প্রশ্ন কঠিন হওয়ায় এসএসসি পরীক্ষার হল থেকে পালিয়েছিল কবি, কিন্তু এই পরীক্ষা থেকে পালিয়ে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে।
হঠাৎ গুগল কর্তৃপক্ষের ওপর তার ভয়ানক রাগ চাপে। লোকে বলে, গুগলে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর! তবে গুগল কেন এমন করছে না, সার্চ করলে আস্ত জিনিসই এসে হাজির হবে! যা হোক, ডাবের বদলে ফুল দিয়ে যদি কিছুটা মেকআপ করা যায়! কবি পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা লাল গোলাপ বের করল। তারপর চোখ বন্ধ করে, এক হাঁটু মাটিতে গেড়ে কাব্যিক ভঙ্গিতে মীনাকে গোলাপ নিবেদন করল। সে সময় হঠাৎ ‘সমগ্র বাংলাদেশ ৫ টন’ টাইপের এক চড় এসে পড়ল কবির গালে! চোখ খুলে খানিকক্ষণ বেচারা কিছুই দেখতে পেল না। দৃষ্টি পরিষ্কার হলে দেখল, চড় মেরেছে টুনু! কী আশ্চর্য, টুনু এ সময় এখানে এল কী করে! মেয়েটার সময়-স্থান জ্ঞান নেই দেখছি!
টুনু মীনার দিকে তাকিয়ে বলল, ‘আপু, দুষ্ট প্রেমিকের চেয়ে শূন্য গোয়াল ভালো।’ মীনাও একমত হলো, ‘ঠিকই বলেছিস টুনু। দুর্জন বিশ্বপ্রেমিক হলেও পরিত্যাজ্য। পাবলিক পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের ১০-২০টা ভুলও ক্ষমা করে দেওয়া যায়, কিন্তু প্রেমের পরীক্ষায় প্রেমিকের ভুল ক্ষমা করা অসম্ভব! চল যাই।’
দু-দুটো পোষা ময়না পাখি চোখের সামনে দিয়ে উড়ে চলে গেল! ঘটনার আকস্মিকতায় কবি হাসবে না কাঁদবে, ঠিক বুঝে উঠতে পারল না। প্রেমের ঘানি টানতে যে খরচাপাতি হয়েছে, সেগুলোর জন্যও মন ভারী হয়ে উঠল। কবি নিজেকে সান্ত্বনা দিল এই বলে, সে তো হূৎপিণ্ডের চার ভাগের দুই ভাগ দুজনকে দিয়েছিল। আরও দুই ভাগ তো অক্ষতই রয়েছে!

নতুন স্টাইলের ঝগড়া

বিয়ের পর ঝগড়া অতি কমন একটা ব্যাপার। বিভিন্ন কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নিয়মিত ঝগড়া হয়ে থাকে। সেই আদিকাল থেকেই চলে আসছে একই স্টাইলের ঝগড়া। সবকিছুতেই পরিবর্তন আসছে। তাই এই ঝগড়ায়ও কিছু পরিবর্তন আনা দরকার।
ঝগড়ার নতুন কিছু স্টাইল নিয়ে এবার গবেষণা করেছেন আলিম আল রাজি

জাতীয় সংসদ স্টাইল
স্বামী: মাননীয় অর্ধাঙ্গী, প্রথমেই অন্তরের অন্তস্তল থেকে আপনাকে ধন্যবাদ যে আমাকে আপনি কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। সুযোগ না পেলে অনেক কথাই অব্যক্ত থাকত।
স্ত্রী: মাননীয় অর্ধাঙ্গ, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: এই মহান বেডরুমে বসে আমি কিছু বলতে চাই। আপনি মহান। আপনি এই পরিবারের কান্ডারি। আপনি না থাকলে এই পরিবারের আলো নিভু নিভু করে।
স্ত্রী: মাননীয় অর্ধাঙ্গ, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: আপনি যেন হতাশার মাঝে এক বিন্দু আশার আলো। আপনার অনুপস্থিতিতে এই সংসারের সবার হিয়া কাঁপাকাঁপি করে। কাঁপতে কাঁপতে উলটে পড়ে যায়।
স্ত্রী: আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: আমি এখানে কথা বলছি। কিন্তু আমার মন পড়ে আছে অতীতে। এককালে আপনি আর আমি কত কিছু করতাম। প্রিয় অর্ধাঙ্গী, অতীত হোক, বর্তমান হোক, আপনার গুণের কথা কখনোই বলে শেষ করা যাবে না। আপনি যেন জয় করেছেন সকল অতীত।
স্ত্রী: অর্ধাঙ্গ সাহেব, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: ইয়ে মানে...চিনির কৌটাটা আপনি কোথায় রেখেছেন?

টক শো স্টাইল
স্বামী: খাওয়াদাওয়া শেষ। এখন আমি এবং আমার স্ত্রী করব একটা ম্যারাথন লেটনাইট ঝগড়া। ঝগড়ায় আমার শালা-শালি, শ্বশুর-শাশুড়ি সবাই অংশ নিতে পারেন।
এ জন্য আপনাকে আমার ফোনে কল করতে হবে। আর শালিকে বলছি, তোমার কল দিতে হবে না। মিসড কল দিলেই চলবে।
স্ত্রী: ঝগড়া শুরু করো, প্লিজ।
স্বামী: হুঁ। প্রথমে আমি বলি।
স্ত্রী: ফাজলামো পাইছ? তুমি বলবা কেন? তোমার সাহস তো কম না।
স্বামী: ইয়ে... মানে!
ক্রিং ক্রিং... (শালির টেলিফোন)
স্বামী: প্রিয় শালি, আপনার নাম বলে প্রশ্ন করুন, প্লিজ।
শালি: আপা, দুলাভাই আমাকে মিসড কল দেয় কেন? বিচার চাই।
স্বামী: ইয়ে... মানে একটা বিজ্ঞাপন বিরতি নিলে কেমন হয়?

কবিতা স্টাইল
স্বামী: হাজার বছর থেকে আমি মশারি টানাইতেছি
খাটের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়াদৌড়ি করিয়া
অনেক চেষ্টা করি আমি।
কিন্তু আমি হালকা খাটো হওয়ায়
প্রায়ই মশারি টানাতে পারি না।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতো
সন্ধ্যা আসে, আর আমার ভয় বাড়তে থাকে,
এই বুঝি টানাতে হবে মশারি।
আমি বলছি না, মশারি টানাতে হবে।
আমি চাই একজন আমাকে সাহায্য করুক।
টুলটা এনে দিক। এতে আমার সুবিধা হবে।
স্ত্রী: ওরে অভাগা, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে,
তবে একলা মশারি টানাও রে।
একলা টানাও, একলা টানাও একলা টানাও রে।

বিতর্ক স্টাইল
স্ত্রী: মাননীয় পিংকির আব্বা, আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। দেখুন, একবিংশ শতক হচ্ছে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার যুগ। বিশ্বায়নের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে হলে দরকার এটার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করা। কিন্তু দৃষ্টি প্রসারিত করলে আমরা কয়েকটা অন্য রকম ব্যাপার প্রত্যক্ষ করি। কী সেগুলো? সেগুলো হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসন আর তৃতীয় বিশ্বের দুরবস্থা। তাই সব চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি বাপের বাড়ি চলে যাব। এ ব্যাপারে আরও যুক্তি উপস্থাপন করবেন আমার দলের দ্বিতীয় বক্তা আই মিন আমাদের বড় মেয়ে পিংকি। ধন্যবাদ, পিংকির আব্বা।

স্বামী: ধন্যবাদ, পিংকির আম্মা। সংক্ষিপ্তভাবে বলার জন্য। দেখুন, সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনশীল। এখানে সব রীতিনীতি আর সভ্যতা প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়। ইতিহাসের দিকে খেয়াল করলে ব্যাপারটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে আসে। এই পরিবর্তনশীল সময়ে আপনার বাপের বাড়ি চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। আপনি চলে গেলে কে রান্না করবে? কে পিংকি আর মজনুকে স্কুলে নিয়ে যাবে? তাই পিংকি ও পিংকির আম্মা, আপনাদের বলছি, কেবল তর্কের খাতিরে তর্ক নয়, আমাদের যুক্তি মেনে নিন। এ ব্যাপারে আরও যুক্তি তুলে ধরবেন আমার দলের দ্বিতীয় বক্তা, মানে আমাদের পুত্র মজনু মিয়া।

চাঁদের গন্ধ কি মিষ্টি-মধুর?

প্রশ্নটা হাস্যকর মনে হতে পারে। চাঁদের আবার গন্ধ কী, তাই না? কিন্তু চাঁদের গন্ধ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। অনেক আগে ধারণা করা হতো, চাঁদের গন্ধ টাটকা পনিরের মতো। কারণ, সদ্য তৈরি পনিরে বিভিন্ন রঙের মিশ্রণ দেখা যায়, মনে হয় যেন চাঁদ। এ রকম তুলনা কাব্যে চলে, বিজ্ঞানে চলে না। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, চাঁদের গন্ধ এক অর্থে বারুদের মতো। নাসা কীভাবে জানল? জানল নভোচারীদের অভিজ্ঞতা থেকে। এ পর্যন্ত মাত্র ১২ জন নভোচারী চাঁদের মাটিতে পা রেখেছেন। অবশ্য তাঁরা বায়ু অভেদ্য মহাশূন্য-পোশাক পরেছিলেন। তাই তাঁদের পক্ষে চাঁদের গন্ধ নেওয়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু চাঁদের ধুলোবালি সহজেই তাঁদের পোশাকে লেগে যায় এবং প্রচুর ধূলিকণা নিয়ে তাঁরা চাঁদ থেকে মহাশূন্যযানে ফিরে আসেন। তাঁরা বলেছেন, চাঁদের ধূলিকণা ধরলে তুষারের মতো লাগে, গন্ধ শুঁকলে মনে হয় বারুদ, আর স্বাদ মন্দ নয়! নাসার একটি ছোট দল আছে, যারা মহাশূন্য থেকে ফিরে আসা প্রতিটি যানের যন্ত্রপাতি শুঁকে দেখে। আন্তর্জাতিক মহাশূন্য স্টেশনের আবহাওয়া-পরিবেশের সূক্ষ্ম ভারসাম্য নষ্ট করার মতো কোনো কিছু যেন নভোযানে ঢুকে না পড়তে পারে, সে জন্য এটা করা হয়। সুতরাং চাঁদের গন্ধ মিষ্টি-মধুর তো নয়ই বরং কিছুটা ঝাঁজালো।

সাহারার বদলের দিন

সাহারা। কজনই বা চিনত তাঁকে। মাত্র কয়েক বছর আগের কথা। এফডিসিতে পা দিয়েই তিনি বুঝতে পারেন, এ জায়গায় তাঁর কোনো কদর নেই। শুটিং শেষ করে রাতে বাসায় ফিরবেন কী করে? সেদিকেও কোনো খেয়াল নেই যেন কারও। এফডিসির ভেতরে অপেক্ষা করতে করতে একটি অটোরিকশা মিললে, তবেই না ঘরে ফেরা হতো।
ছবিতে কাজ শুরুর পর আকস্মিকভাবেই বাবা মারা গেলেন। মেয়েটি এসএসসির পর আর পড়াশোনা করতে পারলেন না। যেন একাই সংসারের সব দায়িত্ব তুলে নিলেন। তিন-চার মাস পরে দ্বিতীয় সারির নায়কদের সঙ্গে একটি ছবি পেলেন। সেটিই যেন আকাশের চাঁদ তাঁর কাছে। ছবিতে যখন খুব কষ্টের দৃশ্যে কাজ করতেন, তখন মনের মধ্যে জমিয়ে রাখা সব কষ্ট অনুভব করে কাঁদতেন। রূপসজ্জাকর এক দিন বললেন, ‘এই মেয়ে, তুমি কান্নার দৃশ্যের সময় চোখে গ্লিসারিন না দিয়ে কাঁদো কীভাবে?’
সাহারার মুখে তখন বিষণ্ন হাসি। কোনো উত্তর দিতে পারেননি সেদিন।
আজকের দিনগুলোতে সাহারা কী করেন?
পুরো দৃশ্যপটেরই পরিবর্তন হয়েছে। এখন সাহারা দামি গাড়ি চালান, তাঁর দুজন সহকারী আছেন। শুটিংয়ে আসামাত্র তাঁর মাথার ওপর ছাতা ধরা হয়। আলাদা চেয়ার রাখা হয়। তাঁর সেবায় নিয়োজিত থাকেন প্রডাকশন বয়রা।
কিন্তু কীভাবে? সাহারা কি আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন?
না।
তাহলে?
একটি ছবি বদলে দিয়েছে সাহারার জীবন, প্রিয়া আমার প্রিয়া। একটি ছবির গুণে সাহারা এখন এই সময়ে জনপ্রিয় নায়িকাদের একজন। মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহেই মুক্তি পেল সাহারা অভিনীত ৫০তম ছবি আমার চ্যালেঞ্জ। মুক্তির প্রথম দিন থেকেই ছবিটি পেয়েছে ব্যবসায়িক সাফল্য।
বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন তিনি। চলচ্চিত্রের আকালের বাজারে যেখানে অনেক শিল্পী এখন প্রায় বেকার বলা যায়, সেখানে সাহারা মাসের ৩০ দিনের মধ্যে ২০ দিন শুটিং করছেন। প্রতিটি ছবিতেই তাঁর বিপরীতে আছেন শাকিব খান।
জিজ্ঞেস করি, প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির যোগফল কী?
‘এখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তি হয়নি। তবে হয়ে যাবে।’
বেশ আত্মবিশ্বাসী তিনি। হবে, কীভাবে বুঝলেন?
‘আমার ছবিগুলো আমাকে সেই আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে। প্রিয়া আমার প্রিয়া ছবির পরে শাকিবের সঙ্গে আমাদের ছোট সাহেব ছবিটি মুক্তি পেল। এই ছবিটি প্রমাণ করল, অভিনয় জানলে যেকোনো চ্যালেঞ্জিং কাজ করা যায়। সেবারই মুক্তি পেয়েছিল শাবনূর আপার ছবি এক টাকার বউ। সেই ছবির সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছে আমার ছবি। এরপর অনেকেই বলত যে শাকিবের উপস্থিতির জন্যই নাকি আমার ছবিগুলো চলছে। আমি বলেছি, শাকিবের উপস্থিতি যেকোনো ছবি ও শিল্পীর জন্য অনেকটা ইতিবাচক। তাই বলে অন্য শিল্পীরা যদি কাজ না জানেন, তাহলে তো আর সেই কাজটাও শাকিব করবেন না। আমি স্বীকার করব, শাকিব সে সময় আমাকে বন্ধুর মতোই সহযোগিতা করেছেন। আমি কিন্তু ইমন ও মারুফের সঙ্গেও ছবিতে কাজ করেছি এবং সফল হয়েছি। এর পরই আসলে নির্মাতাদের কাছে আস্থার জায়গাটি পেয়েছি,’ বলছিলেন সাহারা।
বর্তমানে সাহারার হাতে যে ছবিগুলো আছে, সেগুলোর কাজ শেষ হতে হতে ২০১২ শেষ হয়ে যাবে। তাঁর লক্ষ্য এখন একটাই, কাজ কম করলেও এমন ছবিতে তিনি অভিনয় করতে চান, যে ছবিগুলোতে তিনি নিজেকে খুঁজে পাবেন। জানালেন, গল্প ভালো না লাগলে তিনি কাজটি মন থেকে করার মতো উৎসাহ পান না। তাই এ নিয়ে দু-একজনের সঙ্গে তাঁর ভুল-বোঝাবুঝিও হয়েছে। তবু নিজের সিদ্ধান্তে অনড় সাহারা। বললেন, ‘আমি ছোট মানুষ। কোনো কথা বললে কে কী মনে করবে, তাই কাউকে কিছু বলি না। শুধু জানাই যে আমার শিডিউল নেই।’
সাহারার দিন বদলেছে। কিন্তু অতীতের সেই দিনগুলোর কথা ভোলেননি। শুটিং শেষ করে মাঝরাতে যখন বাড়ি ফেরেন, তখন গাড়ি চালাতে চালাতে মনে পড়ে দুঃসহ দিনগুলোর কথা। কষ্টের কথা। সেই সাহারা কিনা আজ রুপালি পর্দার প্রিয় মুখ। সব কষ্টের স্মৃতির মধ্যেও আনন্দে চোখ ছলছল করে ওঠে তখনই, যখন ছোট্ট ভাইটির কথা মনে পড়ে। নিজে পড়াশোনা না করতে পারলেও, ভাইটিকে সাহারা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিতে পেরেছেন।

দুর্লভ শঙ্খশালিক,

 আ ন ম আমিনুর রহমান

গত বছরের অক্টোবরে এক দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের দিকে যাচ্ছিলাম। প্রাণিচিকিৎসা ও প্রাণিসম্পদ অনুষদ ভবন থেকে সাত-আট মিনিটের পথ। প্রখর রোদ। সঙ্গে ক্যামেরাটা নিতে ভুলিনি। মিনিট চারেক হাঁটার পর যে মরা গাছটায় একবার একসঙ্গে ৭৫টি তিলামুনিয়া দেখেছিলাম, তার মগডালে দেখলাম ছোট একটা পাখি। কিন্তু প্রখর রোদের ঝলকে কোন প্রজাতির পাখি, তা শনাক্ত করা গেল না। পটাপট দুটো ছবি তুললাম। মনে হলো, যেন কাঠশালিক। বাসায় ফিরে সেদিন আর পিসিতে আপলোড করা হয়নি। দিন পনেরো পর যখন আপলোড করলাম, তখন ছবি দুটো নজরে এল। না, এগুলো কাঠশালিক নয়। ভালো করে পরীক্ষা করতেই মনটা খুশিতে নেচে উঠল। এটি একনজর দেখার জন্য কত না ঘুরেছি; আর এখন সে আমার পিসিতে।
এর পর থেকে প্রতিদিনই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় এর খোঁজ করতে লাগলাম। কিছুদিন পর এক পড়ন্ত বিকেলে অনুষদের সামনের আমলকী বাগানে ওর দেখা পেলাম। বুলবুলির তাড়া খেয়ে পালানোর সময় গ্র্যাজুয়েট ফ্যাকাল্টির সামনে আরেক দিন ও আমার ক্যামেরায় ধরা পড়ল। সাধারণত ছোট দলে ঘুরে বেড়ালেও আমি ওকে সব সময় একাই দেখেছি।
এতক্ষণ যার কথা বললাম, সে হলো শঙ্খশালিক বা বামনশালিক (Brahminy starling or mynah)। এ দেশের বিভিন্ন প্রজাতির শালিকের মধ্যে এরা অত্যন্ত দুর্লভ। মাথার ওপর ছোট্ট কালো টুপি ও ঝুঁটি থাকায় কালো-মাথা ময়না (Black-headed mynah) নামেও পরিচিত। ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কোনো কোনো এলাকার গ্রামীণ পরিবেশে কদাচ দেখা মেলে। শঙ্খশালিকের বৈজ্ঞানিক নাম Sturnus pagodarum।
প্রথম দর্শনে কাঠশালিক মনে হলেও মাথার কালো পালক দেখে সহজেই কাঠশালিক থেকে আলাদা করা যায়। এরা লম্বায় ২০-২২ সেন্টিমিটার। ওজনে ৪০-৫৪ গ্রাম। মাথার পালক ফোলালে ঝুঁটিটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে। স্ত্রীর তুলনায় পুরুষের মাথার টুপি ও ঝুঁটি বড়। এদের চিবুক, ঘাড়, গলা, বুক ও পেট লালচে কমলা রঙের। পিঠ, ডানা ও লেজ ধূসর। লেজের আগা ও নিচটা সাদাটে। ঠোঁটের আগা হলুদ ও গোড়া নীলচে। স্ত্রী-পুরুষনির্বিশেষে পা, পায়ের নালা ও নখ হলুদ। বাচ্চাদের মাথার পালক ধূসর।
শঙ্খশালিক চষা জমি, ঘাসবন, ফলের বাগান, পাতাঝরা বন ও ঝোপ-জঙ্গলময় এলাকা পছন্দ করে। বিচরণ-উপযোগী জায়গা থাকলেও রহস্যজনক কারণে এ দেশে খুব অল্প সংখ্যায় দেখা মেলে। প্রধানত চার-সাতটির ছোট দলে বিচরণ করলেও এ দেশে সাধারণত একাকী বা জোড়ায় চরতে দেখা যায়। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো, এরা মানুষের আবাস এলাকা, বাগান, জমিতে ঘোরাফেরা করলেও মানুষের খুব কাছাকাছি আসে না। শঙ্খশালিক পাকা ফল, ফুলের নির্যাস ও কীটপতঙ্গ খেয়ে থাকে। এরা মাটিতে ও ফুল-ফলের গাছে, এমনকি বিচরণরত গরু-মহিষের পেছন পেছন হেঁটে হেঁটে খাবার জোগাড় করে। শঙ্খশালিক ‘গু-উ-উইর-কুরতি-কেউই-আহ’ স্বরে ডাকে।
মে থেকে আগস্ট এদের প্রজননকাল। এরা ১২-২৫ ফুট উচ্চতার মধ্যে জুতসই কোনো গাছের খোঁড়লে বাসা বাঁধে। স্ত্রী শঙ্খশালিক তিন-চারটি হালকা নীল বা নীলচে সবুজ রঙের ডিম পাড়ে। স্ত্রী-পুরুষ মিলে ডিমে তা দেয়। ডিম ফোটে ১২-১৪ দিনে।

বাংলাদেশের সমুদ্রজয়

উপকূল থেকে বঙ্গোপসাগরের ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে অধিকার প্রতিষ্ঠা হলো বাংলাদেশের। এ ছাড়া ২০০ নটিক্যাল মাইল ছাড়িয়ে মহীসোপানের বাইরের সামুদ্রিক সম্পদেও বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ ও সার্বভৌম অধিকার সুনিশ্চিত হলো। সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের (ইটলস) এক ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে এই অধিকার প্রতিষ্ঠিত হলো।
জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ইটলস গতকাল বুধবার এই রায় দিয়েছেন। জার্মানি থেকে পাঠানো বাংলাদেশ দূতাবাসের বার্তায় বলা হয়েছে, ২১-১ ভোটে স্বীকৃত এই ১৫১ পৃষ্ঠার রায় ইটলসের সভাপতি জোসে লুই জেসাস পড়ে শোনান। রায়ের মাধ্যমে তেল-গ্যাসসমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত সীমানা চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হলো। একই সঙ্গে বঙ্গোপসাগরে সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দুই নিকট প্রতিবেশীর তিন দশকের বেশি সময় ধরে চলা বিরোধেরও নিষ্পত্তি হলো। সালিসি আদালতে দুই বছরের কিছু বেশি সময়ের মধ্যে সমুদ্রসীমা বিরোধের রায়টি দেওয়া হলো।
দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে চলে আসা দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় কোনো ফলপ্রসূ সমাধান না পাওয়ায় বাংলাদেশ ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর মিয়ানমারের বিপক্ষে আলোচ্য আইনি কার্যক্রমের সূচনা করে। ট্রাইব্যুনালের এই রায় চূড়ান্ত। আপিল করা চলবে না।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মতে, ঐতিহাসিক এই রায়ের ফলে প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তির ফলে দেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণের অনেকখানি সুরাহা হলো। আর সমতা ও ন্যায্যতার নীতি অনুসরণের মাধ্যমে মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ায় একই পন্থা অনুসরণ করে ভারতের সঙ্গে বিষয়টি সুরাহার দাবিও জোরালো হলো।
গতকালের রায়ের ফলে বঙ্গোপসাগরের গভীরে ও সমুদ্রের তলদেশের সম্পদে বাংলাদেশের দাবির পথ সুগম হলো।
মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সমদূরত্বের ভিত্তিতে সমুদ্রসীমার যে দাবি করা হচ্ছিল, তাতে ১৩০ নটিক্যাল মাইলে আটকে যাচ্ছিল। এর ফলে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকায় সামুদ্রিক সম্পদে বাংলাদেশের কোনো অধিকার থাকত না।
মিয়ানমারের পক্ষ থেকে ইটলসের দেওয়া রায়ের বিরোধিতা করে বলা হয়েছে, উপকূলের যেকোনো এক পাশ থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইলের বাইরে মহীসোপানে বাংলাদেশকে অধিকার দেওয়ার সুযোগ ট্রাইব্যুনালের নেই। অবশ্য ইটলস মিয়ানমারের এই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন।
বাংলাদেশের উপকূলের এক পাশে আছে ভারত, অন্য পাশে মিয়ানমার।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ২০০ নটিক্যাল মাইলের বাইরের সীমানা অর্থাৎ যা ‘মহীসোপানের বাইরের অংশ’ হিসেবে পরিচিত, সেটা নির্ধারণে কোনো আদালত বা ট্রাইব্যুনালের এটাই প্রথম রায়।
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া: বঙ্গোপসাগরের জলরাশি ও তলদেশের সম্পদে দেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা বাংলাদেশের জন্য গৌরবের ও আনন্দের। রায় হওয়ার পর প্রথম আলোকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এই মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি। তিনি গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় হামবুর্গ থেকে এই প্রতিবেদককে মুঠোফোনে বলেন, ‘ইটলস ন্যায়পরায়ণতার ভিত্তিতে রায় দিয়েছেন। ফলে সমুদ্রসীমায় বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমরা যা যা চেয়েছি, তার সবই পেয়েছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই রায়ের ফলে সম্প্রসারিত মহীসোপানে সার্বভৌমত্বের সুরাহা হয়ে গেল। এখন মহীসোপানের সীমানা নির্ধারণবিষয়ক জাতিসংঘ কমিটিতে (সিএলসিএস) বাইরের সীমানা নির্ধারণ হয়ে গেলে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার নিষ্পত্তি হয়ে যাবে। সমুদ্রবক্ষে তেল-গ্যাসসহ সম্পদ আহরণে এখনই কাজ শুরু করতে পারে বাংলাদেশ।
এই রায়ের ফলে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, জানতে চাইলে দীপু মনি বলেন, ‘সুদীর্ঘ সময় ধরে সমুদ্রসীমা নিয়ে মতপার্থক্য ছিল। আমার বিশ্বাস, এই রায়ের ফলে বিষয়টির সুরাহা হওয়ায় অতীতকে পেছনে ফেলে আগামীতে দুই প্রতিবেশীর পথচলা আরও মসৃণ হবে।’
প্রেক্ষাপট: বঙ্গোপসাগরে দুই প্রতিবেশী মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা অমীমাংসিত থাকায় দীর্ঘ ৩৮ বছর ধরে বাংলাদেশ সমুদ্র সম্পদ আহরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রায় তিন দশক বিরতির পর ২০০৮ সালের জানুয়ারি মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ভারত-মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে আবার আলোচনা শুরু করে। এই প্রক্রিয়া অবশ্য এগোয়নি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় সমুদ্র আইনবিষয়ক জাতিসংঘের কনভেনশন (আনক্লস) মেনেই বাংলাদেশ জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ইটলসে যায়। ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে ইটলসে মামলা দাখিল করে বাংলাদেশ। এরপর এই বিরোধ নিষ্পত্তিতে ইটলসের বিচারিক এখতিয়ার মেনে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে মতৈক্য হয়। ২০১০ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশ নিজের পক্ষে সব দালিলিক প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করে। আর মিয়ানমার তাদের প্রমাণ জমা দেয় সে বছরের ১ ডিসেম্বর। মিয়ানমারের দাবির বিপক্ষে বাংলাদেশ বক্তব্য উপস্থাপন করে ২০১১ সালের ১৫ মার্চ। বাংলাদেশের যুক্তির বিপক্ষে মিয়ানমার তাদের বক্তব্য তুলে ধরে ২০১১ সালের ১ জুলাই।
গত বছরের ৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দফায় মৌখিক শুনানিতে নিজেদের পক্ষে দাবিগুলো তুলে ধরে।

বুধবার, ১৪ মার্চ, ২০১২

LOVE STORY............SCHOOL LIFE........

 My friend is love me.ondy he come my class and talk to me.he said to me i love you.but i said to him i not love you but i like  you jast frien.this time  he told me you not love ....i  will deat for you.......


plz     love me.....................................

সোমবার, ১২ মার্চ, ২০১২

একেবারে অন্য রকম একটি মেয়ে রুনা?

নবী সাহেব একটি জেলা শহরে থাকেন। চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। বড় ছেলে সোহেল অবৈধ ব্যবসা ও মাদক চোরাচালানির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তাকে পুলিশ খুঁজছে। নবী সাহেব ছেলের খোঁজে ঢাকায় আসেন। কিন্তু ছেলেকে পেলেন না। ষড়যন্ত্রের গন্ধ পান তিনি। সোহেলের বোন রুনা। ঢাকায় চাকরি নেয়। এই বিপদের দিনে ভাইয়ের পরিবারে পাশে এসে দাঁড়ায়।

রুনা?
একেবারে অন্য রকম একটি মেয়ে। আসলে মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়েরা যেমন হয়। পড়াশোনা করেছে। নিজে একটি ছেলেকে পছন্দ করে। কিন্তু বাবা চান না তার মেয়ে এভাবে বিয়ে করুক। তাই মেয়েটি নিজের পছন্দের কথা ভুলে যায়।

Baby-faced boy Alfie Patten is father at 13

Baby-faced boy Alfie Patten is father at 13



... BOY dad Alfie Patten yesterday admitted he does not know how much nappies cost — but said: "I think it's a lot."

Baby-faced Alfie, who is 13 but looks more like eight, became a father four days ago when his girlfriend Chantelle Steadman gave birth to 7lb 3oz Maisie Roxanne.

He told how he and Chantelle, 15, decided against an abortion after discovering she was pregnant.

Video: Alfie Patten Exclusive

Watch video that stunned world

* Sun Exclusive


The shy lad, whose voice has not yet broken, said: "I thought it would be good to have a baby.

"I didn't think about how we would afford it. I don't really get pocket money. My dad sometimes gives me £10."

Little family ... Alfie, Chantelle and baby Maisie
Little family ... Alfie, Chantelle and baby Maisie
Lee Thompson

Alfie, who is just 4ft tall, added: "When my mum found out, I thought I was going to get in trouble. We wanted to have the baby but were worried how people would react.

"I didn't know what it would be like to be a dad. I will be good, though, and care for it."

Alfie's story, broken exclusively by The Sun today has sparked a huge political storm with Tory leader David Cameron saying: "When I saw these pictures this morning, I just thought how worrying that in Britain today children are having children.

"I hope that somehow these children grow up into responsible parents but the truth is parenthood is just not something they should be thinking about right now."
Secret

PM Gordon Brown refused to comment directly on the story but said it was important that the Government did all it could to prevent teenage pregnancies.

Alfie's dad Dennis yesterday told how the lad does not really understand the enormity of his situation — but seemed desperate to be a devoted and responsible father.

He wanted to be the first to hold Maisie after the hospital birth. He tenderly kisses the baby and gives her a bottle.

And Dennis, 45, said: "He could have shrugged his shoulders and sat at home on his Playstation. But he has been at the hospital every day."

Maisie was conceived after Chantelle and Alfie — just 12 at the time — had a single night of unprotected sex.

They found out about the baby when Chantelle was 12 weeks pregnant.

But they kept it a secret until six weeks later when Chantelle's mum Penny, 38, became suspicious about her weight gain and confronted her.

Devoted ... Alfie holds and cuddles Maisie
Devoted ... Alfie holds and cuddles Maisie
Lee Thompson

After that Alfie's family told only those closest to them for fear he would be "demonised" at school.

Chantelle gave birth to Maisie on Monday night after a five-hour labour at Eastbourne Hospital, East Sussex.

Last night she told The Sun: "I'm tired after the birth. I was nervous after going into labour but otherwise I was quite excited."

Chantelle told how she discovered she was expecting after going to her GP with "really bad" stomach pains. She said: "Me and Alfie went. The doctor asked me whether we had sex. I said yes and he said I should do a pregnancy test. He did the test and said I was pregnant. I started crying and didn't know what to do.

"He said I should tell my mum but I was too scared.

"We didn't think we would need help from our parents. You don't really think about that when you find out you are pregnant. You just think your parents will kill you."

But Penny figured out what was going on after buying Chantelle a T-shirt which revealed her swelling tum.

Chantelle admitted she and Alfie — who are both being supported by their parents — would be accused of being grossly irresponsible. She said: "We know we made a mistake but I wouldn't change it now. We will be good loving parents.

"I have started a church course and I am going to do work experience helping other young mums.

"I'll be a great mum and Alfie will be a great dad."

Caring ... Alfie bottle feeds his little daughter
Caring ... Alfie bottle feeds his little daughter

Chantelle and Maisie were released from hospital yesterday. They are living with Penny, Chantelle's jobless dad Steve, 43, and her five brothers in a rented council house in Eastbourne. The family live on benefits. Alfie, who lives on an estate across town with mum Nicola, 43, spends most of his time at the Steadmans' house.

He is allowed to stay overnight and even has a school uniform there so he can go straight to his classes in the morning.

Alfie's dad, who is separated from Nicola, believes the lad is scared deep down.

He said: "Everyone is telling him things and it's going round in his head. It hasn't really dawned on him. He hasn't got a clue of what the baby means and can't explain how he feels. All he knows is mum and dad will help.

"When you mention money his eyes look away. And she is reliant on her mum and dad. It's crazy. They have no idea what lies ahead."

Dennis, who works for a vehicle recovery firm, described Alfie as "a typical 13-year-old boy".

He said: "He loves computer games, boxing and Manchester United." Dennis, who has fathered nine kids, told how he was "gobsmacked" when he discovered Alfie was to be a dad, too.

He said: "When I spoke to him he started crying. He said it was the first time he'd had sex, that he didn't know what he was doing and of the complications that could come.

"I will talk to him again and it will be the birds and the bees talk. Some may say it's too late but he needs to understand so there is not another baby."
Lovely

Chantelle's mum said: "I told her it was lovely to have the baby but I wish it was in different circumstances. We have five children already so it's a big financial responsibility. But we are a family and will pull together and get through.

"She's my daughter. I love her and she will want for nothing."

Last night Michaela Aston, of the anti-abortion Christian charity LIFE, said: "We commend these teenagers for their courage in bringing their child into the world.

"At the same time this is symptomatic of the over-sexualisation of our youngsters and shows the policy of value-free sex education just isn't working."

Today Sussex Police and the local council's children services said they have investigated the case and pledged continued support for the young parents.

Britain's youngest known father is Sean Stewart. He became a dad at 12 when the girl next door, 15-year-old Emma Webster, gave birth in Sharnbrook, Bedford, in 1998. They split six months later.

FSS blog

FSS TSTL Photo Gallery

FSS TSTL Photo Gallery
Pictures

I like it

  • Bangla Song
  • Love
  • Move

what is love?

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

লেবেল

লেবেল

ভূমি (1) sex (6)

Wikipedia

সার্চ ফলাফল