Translate

বৃহস্পতিবার, ১৫ মার্চ, ২০১২

মনের জানালা

সমস্যা: আমার বিয়ে হলো ছয় বছর হচ্ছে। আমার মেয়ের বয়স এখন তিন। বিয়ের পর থেকে খেয়াল করছি, আমার স্বামী ইন্টারনেটে আপত্তিকর ছবি দেখতে অভ্যস্ত। রাতের পর রাত সে এ কাজ করত। একদিন কম্পিউটার খুলে দেখলাম, সে বেশ কিছু বাজে ছবি ডাউনলোড করে রেখেছে। ওকে অনেকবার বুঝিয়েছি যে ওর এসব দেখে আমার কষ্ট হয়। প্রথম প্রথম সে প্রতিজ্ঞা করত যে এসব সে আর করবে না, কিন্তু ঠিকই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখত। বাসায় নেটের লাইন না থাকলে সে অস্থির হয়ে যেত। শেষবার যখন ও ধরা পড়ল, তখন আমি ঠিক করলাম আলাদা হয়ে যাব। কিন্তু ও রাজি হয়নি। ঝগড়ার একপর্যায়ে আমি আত্মহত্যার চেষ্টা করি। তার পরে ও আমাকে বলে যে আর ওসব দেখবে না। গত পাঁচ মাস ও ওসব আর দেখেনি, অথবা দেখলেও আমি জানি না। আপা, আমি বুঝতে পারছি ওকে আমি আর বিশ্বাস করি না, ভালোবাসি না। আমার স্বামী মেয়েকে খুব ভালোবাসে, আর মেয়েও বাবাকে খুব ভালোবাসে। কিন্তু ওকে এখন আর আমি মেনে নিতে পারছি না।
শৈলী
পরামর্শ: অনেকেই ইন্টারনেটে একধরনের আসক্তির শিকার হচ্ছে। অর্থাৎ, এগুলোর ওপর মানসিকভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এই নির্ভরশীলতা অতিরিক্ত হয়ে গেলে সেটি অসুস্থতায় গিয়ে ঠেকে। এ ক্ষেত্রে যে মানুষটি আসক্ত হচ্ছে, সে প্রাপ্তবয়স্ক।
তাকেই নিজের কাছে খুব সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা করতে হবে যে সে আর এটি কখনো করবে না। তুমি আত্মহত্যার চেষ্টা করে এবং ঝগড়া করে নিজের কষ্ট বাড়িও না। তুমি তো তাকে খুব ভালোভাবেই বোঝাতে পেরেছ যে তার আচরণটি তোমার কতটা অপছন্দ। এখন তোমার ওকে সময় দিতে হবে বিষয়টি থেকে বেরিয়ে আসতে পারে কি না দেখার জন্য। তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে সত্যিই তুমি ওকে ছেড়ে দিতে চাও কি না। আমার ধারণা, শুধু সন্তানের কথা চিন্তা করে তুমি একটি ভালোবাসাহীন সম্পর্ক টিকিয়ে রাখলে সন্তানের কোনো মঙ্গল হবে না। কারণ, মেয়েটি তার মাকে বিষণ্ন অবস্থায় দেখে বড় হলে ভবিষ্যতে সে-ও বিষণ্নতায় ভুগতে পারে। তোমাকে ধরে নিতে হবে যে তোমার স্বামীর এই আসক্তি কেটে যাওয়ার সম্ভাবনা শতকরা ৫০ ভাগ, আর সেটি আবার শুরু করার আশঙ্কাও ৫০ ভাগ। এই আশঙ্কাগুলো মাথায় রেখে তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি ওর সঙ্গে বাকি জীবন কাটাতে চাও কি না। অর্থাৎ, তার সঙ্গে থাকলে তুমি বেশি কষ্টে থাকবে, নাকি না থাকলে তোমার বেশি কষ্ট হবে। খুব ভালো করে ভেবে যেদিকে কষ্টের পরিমাণ একটু হলেও কম হবে, সেদিকটিই বেছে নিতে হবে। পরে যদি মনে হয় তোমার সিদ্ধান্তটি হয়তো ভুল ছিল, তার পরও নিজের সিদ্ধান্তের ওপর শ্রদ্ধা রেখে জীবনে চলতে হবে। নিজেকে বোঝাতে হবে যে তুমি খুব ভালো করে ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলে, কাজেই এর ভালো-মন্দ দিকগুলোর মোকাবিলা করার জন্য তুমি তোমার মানসিক শক্তিগুলো কাজে লাগাবে। নিজের কোনো ক্ষতি করার কথা তুমি আশা করি আর ভাববে না। কারণ, তোমার জীবন অনেক মূল্যবান।

সমস্যা: আমার বয়স ১৮। ২০০৯ সালে একটি প্রেমের প্রস্তাব পাই। ছেলেটি আমাদের দূরসম্পর্কের আত্মীয়। আমিও একসময় তার প্রেমে পড়ি। ছেলেটি প্রতিষ্ঠিত এবং বয়স ৩০ বছর। তার মন খুব ভালো। আমার কোনো আঘাতে সে নিজে আঘাত পায়, যা প্রমাণিত হয়েছে বহুবার। তার জীবনের প্রতিটি ঘটনাই আমি জানি। তার বিপদে পড়ে বিয়ের ঘটনাও আমি জানি। সে আমার কাছে কিছুই লুকায়নি। তার পরিবারের সবাই আমাকে দেখেছে। সবাই আমাদের সম্পর্কের কথা জানে। বিবাহিত জীবনে সুখ না থাকায় তার পরিবার সুখের জন্য তার পছন্দ মেনে নিতে প্রস্তুত। তার প্রথম বিয়ে ভাঙার জন্য সবাই প্রস্তুত, তার স্ত্রীও। কিন্তু বর্তমানে আমি একটি নতুন সংবাদ পাই, তা হলো সে বাবা হতে চলেছে, যা আমি মানতে পারছি না। তার সব পাপ আমি মাফ করেছি, এটি পারছি না। কারণ, আমি বর্তমানে তার প্রতি অনেক দুর্বল। আমার যে আর ধৈর্য সইছে না। আমি তাকে সুখী হয়ে দেখাতে চাই। আমি কি মাফ করব তাকে?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
ঢাকা।
পরামর্শ: এই বয়সে ৩০ বছরের একটি বিবাহিত ছেলেকে জীবনসঙ্গী করার কথা ভাবাটা কি খুব যুক্তিযুক্ত? তোমাকে তো লেখাপড়া শেষ করে নিজের ভবিষ্যৎ আগে গড়তে হবে। মনে হচ্ছে, ছেলেটি এখনো স্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিন্ন করেনি। এ অবস্থায় তোমাকে তার জীবনের সঙ্গে জড়ানোটা অন্যায় হয়েছে। তুমি এখনো প্রায় বয়ঃসন্ধিতে রয়েছ। কিন্তু ছেলেটি তো তোমার চেয়ে ১২ বছরের বড়। তার তো উচিত ছিল আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে সব সম্পর্ক শেষ করে তারপর তোমার কাছে তার মনের কথাটা প্রকাশ করা। শুধু তা-ই নয়, তোমাকে লেখাপড়া শেষ করার জন্য উৎসাহ দেওয়ারও প্রয়োজন ছিল। তা ছাড়া বিপদে পড়ে সে বিয়ে করেছে—এ কথা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। কারণ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যদি না চায়, তাহলে কেউ তাকে বিয়ে করার জন্য বাধ্য করতে পারে না। ছেলেটির চরিত্র সম্পর্কে তোমার আরও ভালো করে খবর নেওয়া দরকার। তার স্ত্রী যদি সন্তানসম্ভবা হয়, তাহলে সে এ মুহূর্তে স্ত্রীকে তালাক দিতে পারবে না। প্রয়োজনে তুমি তার স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ভদ্রভাবে ছেলেটি সম্পর্কে আলোচনা করতে পারো। এতে করে একটি ভিন্ন চিত্র পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে এবং এরপর তুমি তোমার বুদ্ধি ও বিচার ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিষয়টি বোঝার চেষ্টা করো। দাম্পত্য জীবনে দুজনকে অনেক বিষয়ে ছাড় দিতে হয় ঠিকই, তবে একজন কখনো অন্যজনের ভালো থাকাটা নিশ্চিত করতে পারে না। আমরা আঘাত পেয়ে নিজেরাই সেই আঘাত থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করব। কেউ যদি সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেয়, তবে সেটি যেন বাড়তি পাওনা হয়। আশা করছি, তুমি তাড়াহুড়ো না করে ভালো করে ভেবে এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তটি নেবে।

কোন মন্তব্য নেই:

FSS blog

FSS TSTL Photo Gallery

FSS TSTL Photo Gallery
Pictures

I like it

  • Bangla Song
  • Love
  • Move

what is love?

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

লেবেল

লেবেল

ভূমি (1) sex (6)

Wikipedia

সার্চ ফলাফল