কিছুদিন আগে আমি আমার এক পরিচিত ব্যক্তিকে একটি বিশেষ কাজ করার জন্য ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। টাকা দেওয়ার সময় একটি ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পে চুক্তি করেছিলাম যে সঠিক সময়ে কাজ সম্পূর্ণ করতে না পারলে আমার টাকা ফেরত দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে তিনি আমার কাজ করতে পারেননি। এখন শর্ত অনুুযায়ী তাঁর কাছে টাকা ফেরত চাইলে তিনি আমাকে এড়িয়ে যান। এমনকি তিনি আমাকে ধমক দিয়ে বলেন যে ১৫০ টাকার স্ট্যাম্পের আজকাল কোনো মূল্য নেই। এই পরিস্থিতিতে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করার ক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?
মো. সুমন
ঠাকুরগাঁও।
টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য আপনাকে আদালতে মোকদ্দমা করতে হবে। এ ধরনের মামলা খরচ ও সময়সাপেক্ষ। ভবিষ্যতে টাকা ধার দেওয়ার ব্যাপারে আপনাকে সতর্ক হতে হবে।
একটি সরকারি নির্মাণ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার গত বছর মারা যান। তিনি তাঁর ছেলেকে এফিডেভিটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মনোনীত করে গেছেন। কিন্তু অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি না জানিয়ে অথবা আইনানুগ অনুমতি ছাড়াই তাঁর ছেলে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। চুক্তি সম্পাদনে বা মৃত ঠিকাদারের নামে চেক ইস্যুতে কোনো আইনি বাধা আছে কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
তালিকাভুক্ত ঠিকাদার একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে থাকলে তা ঠিকাদারের মৃত্যুর পরও চলতে পারে। তবে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তি অথবা মৃত ব্যক্তির নামে চেক বৈধ নয়।
আমার দাদা ২০০৪ সালে ফুফুর বিয়েতে খরচের জন্য দেড় বিঘা জমি পাশের গ্রামের এক লোকের কাছে বিক্রি করেন। তাঁর কাছে দাদা ৫০ হাজার টাকা পেতেন কিন্তু তখন তিনি মাত্র ৩০ হাজার টাকা ফেরত দেন। বাকি টাকা দিতে অসমর্থ হন। পরে দাদা আরও আড়াই বিঘা জমি বন্ধক রেখে টাকা জোগান। এই বছর লোকটি জমির দলিল নেওয়ার জন্য দাদার ওপর চাপ দিচ্ছেন কিন্তু আমার দাদা এখন তাঁকে জমি দিতে চান না। উল্লেখ্য, লোকটি ২০০৪ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত জমিটি ভোগ করেন এবং বাকি টাকা না দেওয়ায় তাঁকে জমির দলিল বা অন্যান্য কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। এখন লোকটি যদি মামলা করেন, তাহলে দাদা কী করতে পারেন?
সৈকত
মগবাজার, ঢাকা।
২০০৪ সালের সংশোধিত নিবন্ধন আইনে সব ধরনের বিক্রয় ও হস্তান্তরের ক্ষেত্রে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চুক্তি বাস্তবায়নের জন্যও নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। চিঠির তথ্য অনুযায়ী, চুক্তি বাস্তবায়নের সময়সীমা উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। এ ক্ষেত্রে লোকটি শুধু আপনার দাদার বিরুদ্ধে অর্থ আদায়ের মোকদ্দমা (মানিস্যুট) করতে পারেন।
আমি একজন সরকারি চাকরিজীবী। এক বছর আগে আমার এক আত্মীয়ের মেয়েকে বিয়ে করি। কিন্তু বিয়ের কয়েক সপ্তাহ পরে জানতে পারি, বিয়ের আগে তার অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে খুব ভালোবাসতাম। কিন্তু এ কথা জানার পর তাকে আর মেনে নিতে পারছি না। মেয়েটি তার সম্পর্কের কথা স্বীকার করে না। কিন্তু তার আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আমাকে বলেছে। তার সঙ্গে আমার দু-একদিন পরপর ঝগড়া হয়। আমি তাঁকে তালাকের কথা বললে সে রাজি হয় না। কিন্তু আমি আর সংসার করতে চাই না। তাঁকে কীভাবে তালাক দেব?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী আপনি আপনার স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন। সংশ্লিষ্ট কাজি অফিসে তালাক প্রদানের পর তালাকের কপির একটি আপনার স্ত্রীকে এবং আরেকটি চেয়ারম্যান বা মেয়র অফিসে পাঠাতে হবে। চেয়ারম্যান বা মেয়র কর্তৃক ওই নোটিশ প্রাপ্তির ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে। তবে দেনমোহর এবং তালাক চলাকালীন অর্থাৎ ভরণপোষণের খরচ আপনার স্ত্রীর প্রাপ্য।
আমি স্নাতক পর্যায়ে পড়াশোনা করছি। আমার বাবা একটি ব্যাংকে কর্মরত। তিনি প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও আমার মাকে জোরপূর্বক বিয়ে করেন। তার এক বছর পর আমার জন্ম হয়। আমার জন্মের কিছুদিন পর থেকেই আব্বু এবং তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলে আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করলে এক রাতে মা আমাকে নিয়ে পালিয়ে নানার বাসায় চলে আসেন। এরপর বাবা কাউকে না জানিয়ে মাকে তালাক দেন। কিন্তু মা আজ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো কাগজপত্র পাননি। বাবা অনেক ক্ষমতাবান এবং অর্থসম্পদের মালিক। তাঁর প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। আমার মায়ের সন্তান আমি একাই। কিছুদিন আগে শুনেছি, বাবার সব সম্পত্তি তাঁর দুই ছেলে এবং এক মেয়ের নামে লিখে দিয়েছেন। বাবার সঙ্গে আমি অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। তিনি ও তাঁর স্ত্রী মিলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। আম্মুর আর্থিক অবস্থা ভালো না। তিনি অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। তিনি অসুস্থ থাকায় আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে। আমি কি আইনসম্মতভাবে বাবার কোনো সম্পদের অংশ পেতে পারি? তাঁর পেনশনের টাকার অংশ আমি পাব কি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক
আপনার বাবা জীবিত অবস্থায় তাঁর সম্পত্তি অন্য ছেলেমেয়েকে লিখে দিলে আপনার করণীয় কিছু নেই। জীবিত অবস্থায় তিনি তাঁর সম্পত্তি যাকে খুশি তাকে দান করতে পারেন। পেনশনের ক্ষেত্রে ওই অর্থ শুধু ওনার নমিনির প্রাপ্য। তবে আপনি আপনার ভরণপোষণের জন্য আপনার বাবার বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। আইনি সাহায্য সংস্থা আপনাকে এ ব্যাপারে সহায়তা করতে পারে।
আমার খালু এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে রেখে মারা যান। কিছুদিন পর খালার দেবরের সঙ্গে খালার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। প্রথম সংসারের ছেলেমেয়ে নিয়ে দ্বিতীয় স্বামীর ঘরে তাঁর সুখের সংসার ছিল। ১৯৭০ সালের জলোচ্ছ্বাসে আমার খালার পুরো পরিবার নিহত হয়। শুধু খালার মেয়ের স্বামী বেঁচে যান। এখন তাঁদের সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হিসেবে আছি আমি অর্থাৎ তাঁর আপন বোনের মেয়ে, আর তাঁর মেয়ের জামাই। কিন্তু খালার শ্বশুরবাড়ির এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় ওই জমি দখল করে আছে। এ অবস্থায় প্রকৃত উত্তরাধিকারী কে হবেন?
আমেনা খাতুন
আপনার চিঠির তথ্য অনুযায়ী আপনার খালার রেখে যাওয়া উত্তরাধিকারীদের তালিকা অসম্পূর্ণ। আপনার মৃত খালার অন্য কোনো জীবিত উত্তরাধিকারী না থাকলে তাঁর মেয়ের জামাই মেয়ের প্রাপ্য অংশের অর্ধেক সম্পত্তি পাবেন। সম্পত্তি বেদখল হলে দেওয়ানি আদালতে দখল পুনরুদ্ধারের মামলা করতে হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন