Translate

সোমবার, ২৬ মার্চ, ২০১২

মনের জানালা

সমস্যা: আমার বয়স ৩০। ২০০২ সালে বিয়ে করি। আমাদের দুটি কন্যাসন্তান আছে। ২০০৮ সালে সরকারি নৈশপ্রহরী হিসেবে চাকরিতে যোগদান করি। চাকরির সুবাদে আমি চট্টগ্রামে থাকি। দুই সন্তান নিয়ে আমার স্ত্রী গ্রামের বাড়ি থাকে। নৈশপ্রহরী হিসেবে কোনো সাপ্তাহিক ছুটি বা সরকারের অন্যান্য ঘোষিত ছুটি না থাকায় আমার প্রিয় স্ত্রী ও আদরের সন্তানদের দেখতে যাওয়ার তেমন সময় হয় না। বিকেল পাঁচটা থেকে পরের দিন সকাল নয়টা পর্যন্ত অফিসের সব নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে হয়। রাতে আমি ছাড়া অফিসে আর কেউ থাকে না। তাই নিঃসঙ্গতায় আমাকে সারা রাত প্রহর গুনতে হয়। এমন নিঃসঙ্গ জীবন নিয়ে সব সময় হতাশায় ভুগি। মাঝেমধ্যে মন চায় চাকরি ছেড়ে দিই। কিন্তু অবুঝ সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে নিজের বিবেকের কাছে হেরে যাই। আমি সব সময় হীনমন্যতায় ভুগি এবং নিজেকে খুব নগণ্য মনে হয়। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, এমনকি স্ত্রী-সন্তানদের সঙ্গে কথা বলতেও বিরক্তি বোধ করি। মন চায়, সব সময় একা থাকি এবং নীরবতা পালন করি। কেউ ভালো কথা বললেও তা আমার কাছে খারাপ মনে হয়।
পিবিসি
সদরঘাট, চট্টগ্রাম।
পরামর্শ: তুমি লেখাপড়া কতটুকু করেছ জানি না, তবে তুমি কিন্তু সুন্দরভাবে গুছিয়ে নিজের কথাগুলো লিখেছ। শুধু মায়ের পক্ষে সন্তানদের সুন্দরভাবে বড় করা সম্ভব নয়। সন্তানের অধিকার রয়েছে মা-বাবার আদর স্নেহ ও নির্দেশনা নিয়ে পথ চলার। পুরুষদের একটি ভালো অবস্থান তৈরি না করে বিয়ে করা ঠিক নয়। সন্তানকে পৃথিবীতে আনার আগে ভাবা উচিত, মা-বাবা মিলে তাকে একটি সুন্দর পরিবেশ উপহার দিতে পারবেন কি না। তোমার চাকরির শর্তগুলো লিখিতভাবে তোমাকে দেওয়া হয়েছে কি না, তা জানি না; তবে কোনো ছুটি ছাড়া একটি মানুষকে দিয়ে ১৬ ঘণ্টা নৈশপ্রহরীর কাজ করানো অত্যন্ত অমানবিক এবং যেকোনো দেশের প্রচলিত আইনের পরিপন্থী। এ ছাড়া তুমি পাহারা দেওয়ার সময় সম্পূর্ণ একা থাকছ বলে তোমার পক্ষে মানসিকভাবে সুস্থ থাকা সম্ভব হচ্ছে না। স্পষ্টতই তুমি বিষণ্নতায় ভুগছ। সে কারণে কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে অত্যন্ত বিরক্ত বোধ করছ। আমার মনে হচ্ছে, তোমার সঙ্গে খুব বড় ধরনের অন্যায় করা হচ্ছে। তুমি চট্টগ্রামে লেবার ডাইরেক্টরেটের অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে পারো, কোনো চাকরির শর্ত এ ধরনের হতে পারে কি না। যারা রাতে ডিউটি করে, তাদের কিন্তু সাধারণত সপ্তাহান্তে আবার দিনের বেলা ডিউটি দেওয়া হয়। এ ছাড়া ছুটির ক্ষেত্রেও পালা করে তারা ছুটি ভোগ করে। কারও মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর কাজের চাপ যেন নেতিবাচক প্রভাব না ফেলে, সে ব্যবস্থা করা সব সংস্থারই অবশ্য কর্তব্য। তুমি ঠিকই ধারণা করেছ, এ শর্তগুলো মেনে দীর্ঘদিন কাজ করলে ভবিষ্যতে পথ চলতে অসুবিধা হওয়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। তোমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে সুন্দরভাবে অসুবিধার কথাগুলো আলোচনা করতে পারো। আর যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে এ চাকরিতে থাকা অবস্থাতেই অন্য কোনো চাকরির খোঁজ করতে পারো।

সমস্যা: আমার বয়স ২৮ বছর। স্বামীর বয়স ৩২ বছর। বিয়ের বয়স পাঁচ বছর। আমরা একই অফিসে কর্মরত। আমার স্বামীর সমস্যার কারণে আমরা কোনো দিন মা-বাবা হতে পারব না। ও আমাকে খুব ভালোবাসে। আমিও ভালোবাসি। তবে মাঝেমধ্যে আমি কেমন যেন হয়ে যাই। তখন কাউকে আমার সহ্য হয় না। নিজেকে অসুখী মনে হয়। কোথাও শান্তি পাই না। তখন আমার সংসারে অশান্তি শুরু হয়। ওকে একদম সহ্য হয় না। মরে যেতে ইচ্ছে করে। অনেকবার মনের দিক থেকে প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। কিন্তু মা-বাবা কষ্ট পাবে, এ কারণে তা পারিনি। আমার অন্য কোনো কষ্ট নেই। স্বামী খুব ভালো। এখন আমি কী করলে সুন্দরভাবে স্বামীকে নিয়ে সংসার করতে পারব।
নাবা ইসলাম
মানিকগঞ্জ

পরামর্শ: আমি বুঝতে পারছি, তুমি মা হতে পারবে না মনে করে প্রায়ই অসহায় ও হতাশা বোধ করছ। তুমি অবশ্য জানাওনি, বিয়ের আগেও তোমার মধ্যে বিষণ্নতা ছিল কি না। তোমার শৈশব আনন্দময় ছিল কি না, সেটি জানা খুব প্রয়োজন ছিল। তোমার যদি মনে হয়, মায়ের ভূমিকা তোমার মনের শান্তি নিশ্চিত করবে এবং তোমাকে সুখী করবে, তাহলে কোনো একটি অসহায়-এতিম শিশুর অভিভাবকত্ব নিতে পারো। আমার জানামতে অনেকেই এ ধরনের শিশুকে বুকে তুলে নিয়েছেন এবং তাঁদের জীবনের চিত্র অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে একটি শিশুকে সুন্দরভাবে তার শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও আবেগীয় বিকাশ নিশ্চিত করে বড় করা কিন্তু অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। এটি সুষ্ঠুভাবে করার জন্য সুন্দর দাম্পত্য সম্পর্ক ও মা-বাবার সুস্থ মানসিকতা অত্যন্ত প্রয়োজন। তুমি প্রায়ই নিজের ক্ষতি করার কথা ভাবছ বলে আমার মনে হচ্ছে। মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বা কাউন্সেলিং গ্রহণ করলে তুমি এভাবে আবেগের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারাবে না। নিজেকে অনেক ভালোবাসবে এবং জীবনকে একটি উপহার হিসেবে গণ্য করে একে অর্থবহ করে তুলবে। আমাদের ভেতরে যে রাগ, ক্ষোভ, কষ্ট ও ভয় তৈরি হয়, সেগুলো কমিয়ে রেখে সুস্থ ও স্বাভাবিক আচরণ করার দায়িত্ব কিন্তু আমাদের ওপর বর্তায়।
এতে আশপাশের প্রিয় মানুষেরা ভালো থাকতে পারে। আশা করি, তুমি ঢাকায় এসে কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানীর কাছ থেকে কাউন্সেলিংসেবা নিয়ে সুস্থভাবে জীবন যাপনের পথ খুঁজে নেবে। শুভ কামনা রইল।

কোন মন্তব্য নেই:

FSS blog

FSS TSTL Photo Gallery

FSS TSTL Photo Gallery
Pictures

I like it

  • Bangla Song
  • Love
  • Move

what is love?

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

লেবেল

লেবেল

ভূমি (1) sex (6)

Wikipedia

সার্চ ফলাফল