বিয়ের পর ঝগড়া অতি কমন একটা ব্যাপার। বিভিন্ন কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে
নিয়মিত ঝগড়া হয়ে থাকে। সেই আদিকাল থেকেই চলে আসছে একই স্টাইলের ঝগড়া।
সবকিছুতেই পরিবর্তন আসছে। তাই এই ঝগড়ায়ও কিছু পরিবর্তন আনা দরকার।
ঝগড়ার নতুন কিছু স্টাইল নিয়ে এবার গবেষণা করেছেন আলিম আল রাজি
জাতীয় সংসদ স্টাইল
স্বামী: মাননীয় অর্ধাঙ্গী, প্রথমেই অন্তরের অন্তস্তল থেকে আপনাকে ধন্যবাদ যে আমাকে আপনি কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। সুযোগ না পেলে অনেক কথাই অব্যক্ত থাকত।
স্ত্রী: মাননীয় অর্ধাঙ্গ, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: এই মহান বেডরুমে বসে আমি কিছু বলতে চাই। আপনি মহান। আপনি এই পরিবারের কান্ডারি। আপনি না থাকলে এই পরিবারের আলো নিভু নিভু করে।
স্ত্রী: মাননীয় অর্ধাঙ্গ, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: আপনি যেন হতাশার মাঝে এক বিন্দু আশার আলো। আপনার অনুপস্থিতিতে এই সংসারের সবার হিয়া কাঁপাকাঁপি করে। কাঁপতে কাঁপতে উলটে পড়ে যায়।
স্ত্রী: আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: আমি এখানে কথা বলছি। কিন্তু আমার মন পড়ে আছে অতীতে। এককালে আপনি আর আমি কত কিছু করতাম। প্রিয় অর্ধাঙ্গী, অতীত হোক, বর্তমান হোক, আপনার গুণের কথা কখনোই বলে শেষ করা যাবে না। আপনি যেন জয় করেছেন সকল অতীত।
স্ত্রী: অর্ধাঙ্গ সাহেব, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: ইয়ে মানে...চিনির কৌটাটা আপনি কোথায় রেখেছেন?
টক শো স্টাইল
স্বামী: খাওয়াদাওয়া শেষ। এখন আমি এবং আমার স্ত্রী করব একটা ম্যারাথন লেটনাইট ঝগড়া। ঝগড়ায় আমার শালা-শালি, শ্বশুর-শাশুড়ি সবাই অংশ নিতে পারেন।
এ জন্য আপনাকে আমার ফোনে কল করতে হবে। আর শালিকে বলছি, তোমার কল দিতে হবে না। মিসড কল দিলেই চলবে।
স্ত্রী: ঝগড়া শুরু করো, প্লিজ।
স্বামী: হুঁ। প্রথমে আমি বলি।
স্ত্রী: ফাজলামো পাইছ? তুমি বলবা কেন? তোমার সাহস তো কম না।
স্বামী: ইয়ে... মানে!
ক্রিং ক্রিং... (শালির টেলিফোন)
স্বামী: প্রিয় শালি, আপনার নাম বলে প্রশ্ন করুন, প্লিজ।
শালি: আপা, দুলাভাই আমাকে মিসড কল দেয় কেন? বিচার চাই।
স্বামী: ইয়ে... মানে একটা বিজ্ঞাপন বিরতি নিলে কেমন হয়?
কবিতা স্টাইল
স্বামী: হাজার বছর থেকে আমি মশারি টানাইতেছি
খাটের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়াদৌড়ি করিয়া
অনেক চেষ্টা করি আমি।
কিন্তু আমি হালকা খাটো হওয়ায়
প্রায়ই মশারি টানাতে পারি না।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতো
সন্ধ্যা আসে, আর আমার ভয় বাড়তে থাকে,
এই বুঝি টানাতে হবে মশারি।
আমি বলছি না, মশারি টানাতে হবে।
আমি চাই একজন আমাকে সাহায্য করুক।
টুলটা এনে দিক। এতে আমার সুবিধা হবে।
স্ত্রী: ওরে অভাগা, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে,
তবে একলা মশারি টানাও রে।
একলা টানাও, একলা টানাও একলা টানাও রে।
বিতর্ক স্টাইল
স্ত্রী: মাননীয় পিংকির আব্বা, আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। দেখুন, একবিংশ শতক হচ্ছে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার যুগ। বিশ্বায়নের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে হলে দরকার এটার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করা। কিন্তু দৃষ্টি প্রসারিত করলে আমরা কয়েকটা অন্য রকম ব্যাপার প্রত্যক্ষ করি। কী সেগুলো? সেগুলো হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসন আর তৃতীয় বিশ্বের দুরবস্থা। তাই সব চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি বাপের বাড়ি চলে যাব। এ ব্যাপারে আরও যুক্তি উপস্থাপন করবেন আমার দলের দ্বিতীয় বক্তা আই মিন আমাদের বড় মেয়ে পিংকি। ধন্যবাদ, পিংকির আব্বা।
স্বামী: ধন্যবাদ, পিংকির আম্মা। সংক্ষিপ্তভাবে বলার জন্য। দেখুন, সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনশীল। এখানে সব রীতিনীতি আর সভ্যতা প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়। ইতিহাসের দিকে খেয়াল করলে ব্যাপারটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে আসে। এই পরিবর্তনশীল সময়ে আপনার বাপের বাড়ি চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। আপনি চলে গেলে কে রান্না করবে? কে পিংকি আর মজনুকে স্কুলে নিয়ে যাবে? তাই পিংকি ও পিংকির আম্মা, আপনাদের বলছি, কেবল তর্কের খাতিরে তর্ক নয়, আমাদের যুক্তি মেনে নিন। এ ব্যাপারে আরও যুক্তি তুলে ধরবেন আমার দলের দ্বিতীয় বক্তা, মানে আমাদের পুত্র মজনু মিয়া।
ঝগড়ার নতুন কিছু স্টাইল নিয়ে এবার গবেষণা করেছেন আলিম আল রাজি
জাতীয় সংসদ স্টাইল
স্বামী: মাননীয় অর্ধাঙ্গী, প্রথমেই অন্তরের অন্তস্তল থেকে আপনাকে ধন্যবাদ যে আমাকে আপনি কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। সুযোগ না পেলে অনেক কথাই অব্যক্ত থাকত।
স্ত্রী: মাননীয় অর্ধাঙ্গ, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: এই মহান বেডরুমে বসে আমি কিছু বলতে চাই। আপনি মহান। আপনি এই পরিবারের কান্ডারি। আপনি না থাকলে এই পরিবারের আলো নিভু নিভু করে।
স্ত্রী: মাননীয় অর্ধাঙ্গ, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: আপনি যেন হতাশার মাঝে এক বিন্দু আশার আলো। আপনার অনুপস্থিতিতে এই সংসারের সবার হিয়া কাঁপাকাঁপি করে। কাঁপতে কাঁপতে উলটে পড়ে যায়।
স্ত্রী: আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: আমি এখানে কথা বলছি। কিন্তু আমার মন পড়ে আছে অতীতে। এককালে আপনি আর আমি কত কিছু করতাম। প্রিয় অর্ধাঙ্গী, অতীত হোক, বর্তমান হোক, আপনার গুণের কথা কখনোই বলে শেষ করা যাবে না। আপনি যেন জয় করেছেন সকল অতীত।
স্ত্রী: অর্ধাঙ্গ সাহেব, আপনার প্রশ্নটি করুন।
স্বামী: ইয়ে মানে...চিনির কৌটাটা আপনি কোথায় রেখেছেন?
টক শো স্টাইল
স্বামী: খাওয়াদাওয়া শেষ। এখন আমি এবং আমার স্ত্রী করব একটা ম্যারাথন লেটনাইট ঝগড়া। ঝগড়ায় আমার শালা-শালি, শ্বশুর-শাশুড়ি সবাই অংশ নিতে পারেন।
এ জন্য আপনাকে আমার ফোনে কল করতে হবে। আর শালিকে বলছি, তোমার কল দিতে হবে না। মিসড কল দিলেই চলবে।
স্ত্রী: ঝগড়া শুরু করো, প্লিজ।
স্বামী: হুঁ। প্রথমে আমি বলি।
স্ত্রী: ফাজলামো পাইছ? তুমি বলবা কেন? তোমার সাহস তো কম না।
স্বামী: ইয়ে... মানে!
ক্রিং ক্রিং... (শালির টেলিফোন)
স্বামী: প্রিয় শালি, আপনার নাম বলে প্রশ্ন করুন, প্লিজ।
শালি: আপা, দুলাভাই আমাকে মিসড কল দেয় কেন? বিচার চাই।
স্বামী: ইয়ে... মানে একটা বিজ্ঞাপন বিরতি নিলে কেমন হয়?
কবিতা স্টাইল
স্বামী: হাজার বছর থেকে আমি মশারি টানাইতেছি
খাটের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়াদৌড়ি করিয়া
অনেক চেষ্টা করি আমি।
কিন্তু আমি হালকা খাটো হওয়ায়
প্রায়ই মশারি টানাতে পারি না।
সমস্ত দিনের শেষে শিশিরের শব্দের মতো
সন্ধ্যা আসে, আর আমার ভয় বাড়তে থাকে,
এই বুঝি টানাতে হবে মশারি।
আমি বলছি না, মশারি টানাতে হবে।
আমি চাই একজন আমাকে সাহায্য করুক।
টুলটা এনে দিক। এতে আমার সুবিধা হবে।
স্ত্রী: ওরে অভাগা, যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে,
তবে একলা মশারি টানাও রে।
একলা টানাও, একলা টানাও একলা টানাও রে।
বিতর্ক স্টাইল
স্ত্রী: মাননীয় পিংকির আব্বা, আপনাকে ধন্যবাদ আমাকে কথা বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য। দেখুন, একবিংশ শতক হচ্ছে পুঁজিবাদী সমাজব্যবস্থার যুগ। বিশ্বায়নের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে হলে দরকার এটার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করা। কিন্তু দৃষ্টি প্রসারিত করলে আমরা কয়েকটা অন্য রকম ব্যাপার প্রত্যক্ষ করি। কী সেগুলো? সেগুলো হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদীদের আগ্রাসন আর তৃতীয় বিশ্বের দুরবস্থা। তাই সব চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমি বাপের বাড়ি চলে যাব। এ ব্যাপারে আরও যুক্তি উপস্থাপন করবেন আমার দলের দ্বিতীয় বক্তা আই মিন আমাদের বড় মেয়ে পিংকি। ধন্যবাদ, পিংকির আব্বা।
স্বামী: ধন্যবাদ, পিংকির আম্মা। সংক্ষিপ্তভাবে বলার জন্য। দেখুন, সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনশীল। এখানে সব রীতিনীতি আর সভ্যতা প্রতিনিয়তই পরিবর্তিত হয়। ইতিহাসের দিকে খেয়াল করলে ব্যাপারটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে আসে। এই পরিবর্তনশীল সময়ে আপনার বাপের বাড়ি চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া যায় না। আপনি চলে গেলে কে রান্না করবে? কে পিংকি আর মজনুকে স্কুলে নিয়ে যাবে? তাই পিংকি ও পিংকির আম্মা, আপনাদের বলছি, কেবল তর্কের খাতিরে তর্ক নয়, আমাদের যুক্তি মেনে নিন। এ ব্যাপারে আরও যুক্তি তুলে ধরবেন আমার দলের দ্বিতীয় বক্তা, মানে আমাদের পুত্র মজনু মিয়া।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন